মুসাবচন: বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তির নতুন দলিল

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: শুক্র, ১১/০৯/২০০৯ - ২:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সমুদ্রাঞ্চলে গ্যাস ব্লক চুক্তি নিয়ে নানাপক্ষের মজলিশে অবশেষে নতুন এক মাত্রা যোগ হলো আজকের প্রথম আলো-তে প্রকাশিত এবিএম মুসার কলামের মাধ্যমে । গৃহপালিত বুদ্ধিজীবিকুল বৈতনিক বা অবৈতনিক দু'পদ্ধতিতেই তাদের কেবলা ঠিক রাখেন এই জাতীয় সব প্রবন্ধ পয়দা করে । হালে টিভি রেডিওতে বাতচিত প্রদর্শনী (ইংরেজীতে টকশো) তাদের নতুন এরকম একটা মাধ্যম ।

তো যা বলছিলাম মুসা সাহেবের প্রবন্ধের কথা । প্রথমত আনু মুহাম্মদের "ভাঙা ঠ্যাং" ও সে বিষয়ক দুর্ভাবনাগুলো মুসা সাহেবের প্রবন্ধে পাই আমরা । তিনি প্রথমে বলেছেন এরকমটি আগেও হয়েছে কিন্তু "জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একটি সরকার ক্ষমতায় আসার পর পত্রিকা বা টেলিভিশনে এমন দৃশ্য" দেখবেন "এমনটি কল্পনাও" তিনি করেননি । বোঝা যায় তিনি বর্তমান সরকারের আমলকে বঙ্গালমুলুকে কোন ইউটিপিয়ান কোন সাম্রাজ্য ভাবছিলেন । তবে এখানে তার এই সিদ্ধান্তের কার্যকারন নিয়ে একটা সমস্যা দেখা যায় । জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ভূমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে বিএনপি-জামাত জোটও ক্ষমতায় এসেছিলো । এরপরে জনগণের সেই আশা ভঙ্গের কথা সবারই জানা । এবারও আওয়ামীলীগ বিপুল সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসে দেশের খোল নলচে পাল্টে দেবে এরকমটা আশা করতে অভিজ্ঞতাই বাঁধা দেবে । এছাড়া ক্ষমতায় বসার পরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সহযোগী অঙ্গসংগঠনগুলোর গুন্ডামি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারবাজি, মাস্তানি, নামকরণ-নাম পরিবর্তনের ছিনাল হিড়িক আগের ভূমিধ্বস বিজয় পাওয়া সরকারগুলোর মতোই জারি রেখেছেন তারা । তবে হ্যাঁ, মার্কেটিঙে তারা এবার বেশ প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন । নয়া বিশ্বমোড়ল ওবামার মতোই এরা সবকিছু বদলে দিতে চান বলে তাদের কাজ শুরু করেছেন ! যেকেোন কিছু ভালো, সেটা যত সামান্য ও অকিঞ্চিৎকর হোক না কেন সেটাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে নতুন মোড়কে পুরনো জিনিসের মতো দেখাতে তারা বেশ পারদর্শীতা দেখাচ্ছেন । আগের সরকারগুলোর বিটিভিতে "উন্নয়নের জোয়ার" বিষয়ক সংবাদমালা বা অনুষ্ঠানসূচীর তুলনায় এটাকে বেশ আধুনিক বলতে হবে । পিটিয়ে হাড়গোড় খুলে ফেলে দু:খপ্রকাশ সেরকই একটা মার্কেটিং স্টেটমেন্ট হিসেবেই দেখা যায় । তবে মুসা সাহেব এতে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন । তিনি আনু মুহাম্মদসহ ৫০জন নিরীহ লোককে রাস্তায় পিটিয়ে তক্তা বানানোর পর সরকারের দু:খপ্রকাশের ঘটনায় বলেছেন "বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে দৃষ্টিভঙ্গির এই বদলটি শুধু ব্যতিক্রমী বলে উল্লেখযোগ্য হতে পারে"।

দু:খপ্রকাশের এই পোশাকি বিষয়টি মুসা সাহেবের প্রবন্ধে গুরুত্ব পেলেও এই ৫০টা লোক যেকারনে পিটুনি খেলো সেই তেল গ্যাস বিষয়ে এর পরেই মুসা সাহেব তার অকপট স্বীকারোক্তি প্রকাশ করেছেন । তিনি স্বীকার যাচ্ছেন যে "বিজ্ঞজনের অথবা খনিজ বিশেষজ্ঞের দেওয়া যুক্তি বা উপাত্ত উত্থাপনের বিদ্যা ও জ্ঞান" তার নেই । দিন আসলেই বদলাচ্ছে ! চুক্তির ৮০%-২০%এর মামলা বুঝতে পারতে যে বিজ্ঞজন বা খনিজ বিশেষজ্ঞ হতে হয় সেটা নতুন আমার কাছে । মুসা আরোও বলছেন "তবে সাধারণ জ্ঞানে আমার বোধগম্য নয়, যদি মধ্যপ্রাচ্য আর ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে আমরা তেল আমদানি করতে পারি, তবে নিজেরা কেন বাড়তি গ্যাস বা তেল রপ্তানি করতে পারব না।" এখানে খেয়াল করুন খুব চতুরতার সাথে তিনি বাড়তি গ্যাস তেলের কাহিনী ফেদেছেন । বাংলাদেশের তেল গ্যাস "বাড়তি" একথা শুনলে কাওরানবাজারের ডাস্টবিনের ময়লা খাওয়া কুকুরগুলো হেসে উঠবে । ভাগ্যিস তারা দুপেয়েদের এইসব পত্রিকা পড়ার কথা কখনো ভাবেনি । এই কুযুক্তি জোরদার করতে এর পরমুহুর্তেই মুসা বলছেন - "ঢাকার বাজারে চড়া দামে মাছ-সবজি কিনছি, অথচ রপ্তানিও করছি। কেউ তো বলে না, এসব বাইরে পাঠাচ্ছ কেন? স্বল্পদামে বিদেশে ইলিশ পাঠিয়ে নিজেরা কেন প্রিয় মাছটি কিনতে পারি না, সে প্রশ্ন তো কেউ করে না।" । এখানে দু:খ একটাই. জ্বালানী আর কাঁচা বাজারের পণ্যের পার্থক্য না বোঝা এইসব মুর্খরাই আজকে দেশে রাজত্ব করছে ।

চুক্তির পক্ষে এইসব ওকালতি করার এক মুহুর্ত পরেই তিনি আবার বলছেন "বিদেশিদের কোন শর্তে বা কোন লাভ-লোকসানের হিসাবে সমুদ্রবক্ষের গ্যাস উত্তোলনের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। আগেই বলেছি, আমার সেই বিদ্যা-বুদ্ধি নেই। " । তো আমরা জানলাম তিনি এগুলো বোঝেন না এবং এগুলো নিয়ে তিনি মাথাও ঘামান না । তবে তিনি এই ইস্যুতে সমর্থন অসমর্থনের প্রশ্নে অবস্থান নেন কি করে ? এই সমর্থনটা কি তাহলে তার পার্টিজান আনুগত্য ?

মুসা তার প্রবন্ধে নিজেকে এভাবে মুক্তকচ্ছ মেলে ধরার পরপরই আমাদের জানাচ্ছেন জনগণ আসলে এসব খনি-ফনি নিয়ে কি ভাবে । তিনি বাংলার ভোদাই জনগণকে চিত্রিত করছনে এভাবে - "নতুন কূপ খনন করে নিজেরা পর্যাপ্ত গ্যাস-বিদ্যুৎ পেলে রপ্তানি করা যাবে কি যাবে না−এ নিয়ে তারা মাথা ঘামাবে না। বরং এখন না পেলেও সেই ক্ষুব্ধ জনতা কোনো একদিন শয়ে নয়, হাজারে হাজারে মাঠে নামতে পারে। তারা ভাবে, রপ্তানির পর যদি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে ছিটেফোঁটাও পেয়ে ঘরের চুলায় স্বাচ্ছন্দ্যে আগুন জ্বালানো যাবে কি না। বিদ্যুৎ তাপকেন্দ্রে পর্যাপ্ত গ্যাস দিয়ে যদি লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, তবে উদ্বৃত্ত জ্বালানি কোথায় গেল সে খোঁজ কেউ করবে না। মাগুরছড়ার হাজার-কোটি টাকার গ্যাস পুড়ে গেল, একটি সরকারের আমলে গ্যাস তোলার পূর্বমুহূর্তে বন্ধ করে দেওয়া হলো, কিন্তু তেমন প্রতিবাদ হয়নি। ফুলবাড়িতে কয়লা উত্তোলন বা রপ্তানির বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়নি। উত্তোলন-পদ্ধতির বিরুদ্ধে ঘরছাড়া, ভিটেমাটি হারানো স্থানীয় জনগণ ভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছে, কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে নয়।" ফুলবাড়ি আন্দোলন নিয়ে নতুন থিওরী দেয়ার সাথে সাথে তিনি হয়তো নিজের চিন্তাটা জনগণ নামক কলুর বলদের ঘাড়ে চাপিয়ে জনগণ কি ভাবছের মোড়কে গণতান্ত্রিক সরকারের "গণমুখি" (অর্থাৎ জনগণের চিন্তার কাফেলায় শামিল হওয়া সরকার - সেটা ভুদাই চিন্তা হৈলেও) চিন্তা হিসেবে হালাল করতে চাইছেন । তবে আগেরবারের মতো এখানে তিনি এড়িয়ে গেছেন জনগণকে আদতে অন্ধকারে রেখে চুক্তিটা আসলে কি করা হলো এবং সেই চুক্তির ফলে আদতেই দেশে গ্যাস আসার সম্ভাবনা কতটুকু । তাছাড়া পূর্বতন কিছু বিষয়ে তেমন প্রতিবাদ হয়নি বা প্রতিবাদ হয়নি বলতে উনি কি বোঝাতে চেয়েছেন সেটা পরিস্কার না । উনি কি প্রতিবাদ কতটুকু হচ্ছে এই মানদন্ডে যাবতীয় ইস্যু বিচার করতে চান ? প্রতিবাদের মাত্রা নাকি নীতিগত অবস্থান কোনটা তার কাছে কোন বিষয়ের বিচারে গুরুত্ব পায় সেটা জানতে আগ্রহ বোধ করি ।

প্রবন্ধের এই পর্যায়ে এসে মুসা সাহেব অধ্যাপকদের নিয়ে পড়েছেন । তিনি জনবিচ্ছিন্ন (মানে তার ভাষায় জনগণ যা ভাবছে সেটার তুলনায় ভিন্নমতধারিরা) অধ্যাপকদের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । প্রবন্ধের প্রায় আদ্ধেকটা গ্যাস নিয়ে প্যাচাল পেড়ে তিনি জানাচ্ছেন তার আলোচনার "মুখ্য আলোচ্য বিষয় গ্যাস-তেল উত্তোলন-রপ্তানি নয়।" তিনি মূল বিষয় যেটা পাড়লেন সেটা এরকম - "পুলিশ কেন, কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় কিংবা কার বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সেদিন লাঠি পেটানোর পুরোনো চেহারা নিয়ে মাঠে নেমেছিল বা নামানো হয়েছিল? তথাকথিত বিন্দুসম আন্দোলনকে সিন্ধুতে রূপান্তরের জন্য একটি ‘টেস্ট কেস’ তথা কোনো আগাম পরিকল্পনার অংশ নয় তো?" পাঠকও মুহুর্তে নানা ধোঁয়াশা কাটিয়ে হাফ ছেড়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন - "আহ হা ! এতোক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে !" পুলিশের পিটুনি তাহলে মুসা সাহেবের সন্দেহে কোন বৃহৎ ষড়যন্ত্রের (নাকি সুক্ষ্?) অংশ ! এইজন্যই বলি প্রত্যেক রাজনৈতিক পক্ষের কিছু পতিতবুদ্ধিকে বেতন দিয়ে রাখা উচিৎ । তারা বিপদ আপদে এভাবে দলের মাছ নিজের ক্ষেতের শাক দিয়ে ঢাকার চেষ্টা নেবে !

নিজের ক্ষেতের শাকের শোক ভুলতে মুসা সাহেব আবার আরেক ভাড় (অব.) মেজর জেনারেল আবদুস সালামের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন । সেখানে নিজের নজর অন্যদিকে ঘোরাতে অব. মেজর কি বলছেন সেটার উদ্ধৃতি টানছেন । মেজর নাকি বলেছেন "এক হাতে তালি বাজে না।" অর্থাৎ হাটুরে ভদ্রলোকের মতে আনু মুহাম্মদেরাও পুলিশকে পেটানো কোশেশ নিয়েছিলেন ! এই প্রসঙ্গে মুসা সাহেব বেশ একহাত নিয়েছেন অব. মেজরকে । নিজেকে আরো একটা ভালো করে তুলে ধরার সামান্য সুযোগও মুসা সাহেব হাতছাড়া করেননি এখানে এসে । তবে মুসা সাহেব বোধহয় ঐ প্রবাদটা ভুলে গেছেন যে হাঁচির শব্দ বাতকর্মের আওয়াজ ঢাকতে পারলেও গন্ধ দুর করতে পারে না ।

এই প্রবাদ অনযায়ীই অব. মেজর ধোলাইপর্বের পর আমাদের নাকে আবারো সেই বাতকর্মের দুর্গন্ধ ধাক্কা মারে । মুসা সাহেব তার পার্টিজান খোমা থেকে বলতে থাকেন - "তেল-গ্যাস-কয়লার নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা বা রপ্তানি নিয়ে জাতীয় সম্পদ ‘গেল গেল’ বলে দুশ্চিন্তা করছি না। দুর্ভাবনা হলো, বর্তমান সরকারের প্রশাসনব্যবস্থা কি এমন নিম্নস্তরে নেমে গেছে, এমনভাবে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে যে পুলিশ বিনা কারণে হঠাৎ করে শ দুয়েক লোকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা সরকারের ওপরের মহলের কেউ জানতেন না?" খুব সস্তা বাজারি বক্তব্য হয়ে গেলো না মুসা সাহেব ? চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়া মানে কি ? মানে পুলিশ নিজ উদ্যোগে আনু মুহাম্মদদের পিটিয়েছে ? আবারো সেই হাস্যকর ষড়যন্ত্র খুঁজে নুন হালালের চেষ্টা ।

মুসা সাহেব বা এই জাতীয় নুনখোর বুদ্ধিজীবিদের এরকম পার্টিজান ক্যাম্পেইন নতুন কিছু না । মূল ইস্যু গ্যাস ব্লকের ভাগ বাটোয়ারা থেকে জনগণের নজর অন্যদিকে সরাতেই সব সরকারের আমলেই এই ধরনের পার্টিজান চোগলখোরি চলছে । দরকার সময়মতো এদের চিহ্নিত করা ও সেই অপকর্মের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখা ।


(যূথচারি অলরেডি একটা পোস্ট দিছে এই বিষয়ে । ওখানে সুমনের কমেন্টের পর মনে হৈলো জিনিসটা বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা দরকার । পোস্টটা ব্যক্তিগত ব্লগ আর ফেইসবুকে নোট আকারে প্রকাশিত । মুসা সাহেবের মূল প্রবন্ধটা পাওয়া যাবে এখানে । )


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

চলুক

হিমু এর ছবি

মুসা সাহেব মনে হয় পানিতে লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝে বাড়ি মেরে দেখেন, পানি সরে গিয়ে পথঘাট বাইর হয় কি না।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হাসিব এর ছবি

পোস্ট ক্যাটাগরি বাছতে গিয়া ভাড়ামি টাইপ কোন ক্যাটাগরি খুজতেছিলাম । পাইলাম না ।

হিমু এর ছবি

এইটা কি ইসলামাবাদব্লগ পাইসেন, নাকি মতিচুরব্লগ? তেব্র দিক্কার জানাইয়া রাখলাম।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

যূথচারী এর ছবি

আপনার লেখাটা অনেক ভাল হইছে, আমি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে লেখছি। তবে একটা ব্যাপার আমি এখানেও যোগ করতে চাই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ আজকে সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, গ্যাস রপ্তানির বিরোধিতার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ আগের অবস্থানেই আছে (http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=3&id=109781&hb=1), যদিও বাস্তবে তাদের অবস্থান অনেক বদলে গেছে। আওয়ামী লীগ যেখানে প্রকাশ্যে গ্যাস রপ্তানির পক্ষে অবস্থান নিতে পারছে না, সেখানে এবিএম মুসা রীতিমতো 'সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিকে' কলাম লিখে তার রপ্তানি-মুখী অবস্থানের ঘোষণার কারণ কী? গ্যাস-বাবুদের কাছ থেকে তিনি কি পরিমাণ তুরীয় সুখ পেয়েছেন, তা সহজেই অনুমান করা যায়।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

হাসিব এর ছবি

ঐটা একটা গুরুত্বপূর্ন নিউজ । নিউজটা কে লিখছে জানার শখ । ঐখানে দুইটা পয়েন্ট আশরাফ উল্লেখ করছে ।

১. ৫০ বছরের তেল গ্যাসের মজুদ রেখে রপ্তানির নীতির কারণেই ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, "আওয়ামী লীগ এখনও সেই আগের অবস্থানেই রয়েছে।"

২. উৎপাদন বন্টনের নমুনা চুক্তি 'মডেল পিএসসি ২০০৮' প্রসঙ্গে আশরাফ বলেন, "পিএসসিতে যে নিয়ম রয়েছে আপাতত তাই থাকবে। তবে পরবর্তীতে এই বিষয়গুলো আরও সংশোধন ও পরিশোধন করে নতুন চুক্তি করা হবে।" - এই স্টেটমেন্ট প্রথম পয়েন্টটারে মিথ্যা প্রমান করে । এর সাথে এও প্রমান করে ৮০-২০ ভাগেই বাটোয়ারা হবে ।

অমিত এর ছবি

বহুদিন পর

হাসিব এর ছবি
শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

পাঁচতারা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হাসান মোরশেদ এর ছবি

চলুক
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নজমুল আলবাব এর ছবি

মুসামিতে আর যাই হোক না হোক হাসিবভাইরে সচল করে দিছে। দেঁতো হাসি এইটা খ্রাপ না।

স্বাদু হইছে।

ভাড়ামুর একটা ক্যাটাগরি দরকার তাইলে। চোখ টিপি

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অম্লান অভি এর ছবি

জনাব মুসা সাহেবের কলামটা পড়িনি তবে আপনারটা পড়ে এটা উপলব্ধি হলো- সত্যি আমরা বুঝি তাবেদার ছেড়ে বারবার তাবেদারের স্মরনাপন্ন হই। হায় আমাদের বিচক্ষণতা! হায় আমাদের অভিভাবকবৃন্দ!
পেট্রোবাংলা'র এত কোম্পানী থাকতে গ্যাস অনুসন্ধান আর উত্তোলন এখনও স্ব আয়ত্তে আসল না আটত্রিশ বছরের জাতির ললাটে! আসুন এবার ঐ জাতীয় কোম্পানী গুলির বিলুপ্তির আন্দোলনে নামি। গ্যাস-কয়লা আর কিছু দিন পরে পানি রপ্তানির চুক্তিও হয়তো হবে.......তবে কি দেশীয় সাইনবোর্ড সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলি শুধু মাত্র ঘুষের রাজত্ব কায়ম আর বিদেশীদের তাবেদারী করা জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
আমাদের বোধ গুলি কেমন যেন আলু বোধ হয়ে যাচ্ছে। দূর্নীতি চ্যাপিয়ন হওয়ার পরে আমরা কখনোও কোন রাজনীতিবিদ্য অথবা ঘুষখোর অফিসারকে ধিক্কার দেইনি। যদি প্রথমবার স্ব উদ্যোগে এমন ধিক্কার দিতাম, ধিক্কার সভায় জনগনের মুখমুখি দাঁড় করাতে পারতাম তবে দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ ........বার গুলি আমাদের ললাট স্পর্শ করতে পারতো না। ধিক্কার ধিক্কার ধিক্কার স্ব বিরোধি এমন চুক্তির।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মুসাগংকৃত এইসব বুদ্ধিবিনোদনগুলো কোনো একটা ইবুকে তুলে রাখা যায় না? তাইলে একটা ডকুমেন্ট হয়া থাকতো। তবে তারচেয়ে বড় কথা হইলো মাঝে মধ্যে চরম মেজাজ খ্রাপ থাকলে এগুলা পইড়া একটু হাসি তামাশা কইরা মন ভালো করা যাইতো।
টেকিরা কেউ এই ব্যাপারটা একটু ভাইবা দেখবেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

বহুদিন পর হাসিব ভাইয়ের একটা ফাটাফাটি পোস্ট পাইলাম ! চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সমুদ্র এর ছবি

চলুক

"Life happens while we are busy planning it"

তীরন্দাজ এর ছবি

বাংলাদেশের তেল গ্যাস "বাড়তি" একথা শুনলে কাওরানবাজারের ডাস্টবিনের ময়লা খাওয়া কুকুরগুলো হেসে উঠবে!

আসলেই। দারুন হয়েছে লেখাটি। ১০০ ভাগ সহমত!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কি আর কমু!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হুসায়েন এর ছবি

উইকেডপিডিয়া
__________

আবুল বাশার মুহাম্মদ মূসা ।
জন্ম ঃ ১৯৩০ (আনুমানিক) , তারিখ ১৪ই ফেব্রুয়ারী বলে দাবি করেন, কারণ তাঁর স্ত্রী মামাত বোন সেতারা মূসারও নাকি এটাই জন্মদিন এবং এটি নাকি তাঁদের বিবাহ দিনও , যদিও নাবালিকা বোনটির সাথে এই বিবাহের কোন অফিশিয়াল রেকর্ড নেই। তাঁর ভার্সন সাপ্তাহিক ২০০০ এর ক্রোড়পত্রে কভার স্টোরি হওয়ার পরে এসব তথ্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে শোনা।
জন্মস্থান ঃছাগলনাইয়ার কুতুবপুর গ্রাম, খালেদা জিয়াদের পিতা ইস্কান্দর মজুমদারের আদি বাড়ির কাছেই।
পিতা ঃ আশ্রাফ আলী এক কালে ডেপুটি ম্যাজিসট্রেট, তাঁর মায়ের মৃত্যুর পরে আবার বিয়ে করেন এবং বাড়ি থেকে মূসাকে খেদিয়ে দেন। মামা বাড়িতে আশ্রয়, বালিকার সাথে প্রণয়, এবং সেখান থেকেও বিতাড়িত। কষ্টের টোকাই শ্রেণীর জীবনের শুরু, লেখা পড়া ইন্টারমিডিয়েটে ক্ষান্ত (অনেক পরে শেষ করেছেন)। অবশেষে সংবাদে চাকুরী। বামপন্থীদের সাথে (যেমন ফয়েজ আহমদ) ঘোরাঘুরি।
সেতারার সন্তান প্রসবের পরে মামার বাড়িতে পুনরায় আশ্রয়। মামা সম্পাদক আব্দুস সালামের অব্জার্ভারে চাকুরী শুরু , দ্রুত বার্তা সম্পাদক।
মুক্তি যুদ্ধের সময় মামার সাহায্যে কলকাতায় হিজরত। সেখান থেকে লন্ডনের সান্ডে টাইমস পত্রিকায় "পোগ্রম ইন পাকিস্তান" শিরোনামে প্রথম পাতায় শীর্ষ সংবাদ প্রকাশিত। এইটি তাঁর বাকি জীবনের উন্নতির মূলধন।
দেশের স্বাধীনতার পরে প্রথমে অবাঙ্গালীদের পরিত্যক্ত মর্নিং নিউজ পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত। ১৯৭৩ সালের ভুয়া নির্বাচনে ছাগলনাইয়া থেকে আওয়ামী এম, পি, নির্বাচিত।
ঢাকায় আগে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে প্লট পেয়ে বাড়ি করা থাকলেও গুলশানে নতুন প্লট বরাদ্দ।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পরে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন। তবে মুজিব আমলে চাকুরীচ্যুত মামা আব্দুস সালাম সায়েম সরকারের অপ্রিয় না হওয়াতে কোন বিপদ হয় নি। মামার মৃত্যুর অল্প কিছুদিন পরে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক। এর পরে এক সময় বাসসেরও প্রধান ছিলেন।
এরশাদ আমলে নিজে ক্ষমতার বলয়ে ঢুকতে পারেন নি, তাই স্ত্রী সেতারাকে জাতীয় মহিলা পার্টিতে যোগ দিতে পাঠিয়ে দেন।
পুনরায় আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলেও বিশেষ কোন সুবিধা পান নি। তবে কিছু কিছু কমিটির সদস্য হয়ে বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন -- যেমন জা বি তে ছাত্রলীগের নেতাদের দ্বারা অনেক ছাত্রীর সম্ভ্রমহানির অভিযোগের প্রকৃত বিচার আঁটকে দেন।
২০০১ সালের পরে তারেক রহমান ক্রমশ ক্ষমতাবান হয়ে উঠলে ঃ 'ভাগিনা এক ভালো ছেলে' জাতীয় কলাম লিখে অনেকের বিরাগভাজন হন।
কন্যা পারভিন সুলতানাও সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন নির্বাচনে পরিচিত। প্রাক্তন উপাচার্য, বর্তমানে আওয়ামী উপদেষ্টা আজাদ চৌধুরীর ভাইয়ের বৌ।
জেনারেল মইন (নোয়াখালীর) ক্ষমতায় আসার পরে মূসাকে "জাতীয় মুরুব্বী" অভিধা দেন। মিডিয়ায় উল্লেখযোগ্য নোয়াখাইল্যা গ্রুপের (দলমত নির্বিশেষে) তিনি নেতা।

হাসিব এর ছবি

যেমন জা বি তে ছাত্রলীগের নেতাদের দ্বারা অনেক ছাত্রীর সম্ভ্রমহানির অভিযোগের প্রকৃত বিচার আঁটকে দেন।

এই বক্তব্যের সমর্থনে সূত্র কি ?

যূথচারী এর ছবি

সূত্র ১: তখনকার সিন্ডিকেট সদস্য এএন রাশেদা দৈনিক সংবাদে কলাম লিখে ব্যাপারটা পরিষ্কার করেছেন।
সূত্র ২: তখনকার সরকার মনোনীত সিন্ডিকেট সদস্য এবিএম মুসা দৈনিক প্রথমালো-তে কলাম লিখে নিজেই একথা স্বীকার করেছেন।
দুটোর কপিই আমার কাছে আছে, দরকার হলে বইলেন, স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিবো।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

হাসিব এর ছবি

আপনি দুটো লেখাই স্ক্যান করে সচলে একটা আলাদা পোস্ট হিসেবে দিয়ে দেন । এইসব লোকজন চিনুক সবাই ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চলুক ---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

যূথচারী এর ছবি

খাইছে


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

তানবীরা এর ছবি

একটা জিনিস খেয়াল করলাম। পত্রিকার সম্পাদকরাও ডিজিটাল হয়েছেন। তারাও দিন বদলের পালায় যোগ দিয়েছেন। অন্য ঢং এর সম্পাদকীয় লিখছেন।

হাসিব, সুন্দর লিখেছো, আরো বেশি লেখা আশা করছি।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

গৌতম এর ছবি

আপনারা কেন যেন তাঁর পিছনে লেগেছেন! বেচারা থেকে বুড়ো হয়েছেন, আগের মতো দৌড়ঝাঁপ করতে পারেন না, দু-একটা কলাম লিখে যদি সারা বছরের ভাত-কাপড়ের সংস্থান হয়, তো হোক না! ভোল পাল্টানো আর তেল দেওয়ার সংস্কৃতিটা কি অত সহজে ছাড়া যায়! ঐতিহ্য বলে একটা কথা আছে না!

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঘটনা আসলে ওখানেই। কয়েকদিনের মাঝেই উত্তরা আর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ হবে বলে শুনছি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।