প্রবাসে দৈবের বশে ০০৩

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/০৯/২০০৭ - ৭:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


বাংলাদেশ থেকে জার্মানীর কোন শহরে গেলে শহরের নতুন যে ব্যাপারটা চোখে পড়বে তা হচ্ছে প্লাৎস। বড়সড় চত্বর। ঢাকায় এমন চত্বর বলতে শহীদ মিনার আর মুক্তমঞ্চ ছাড়া আর কিছু এ মূহুর্তে মনে পড়ছে না। ইঁট বা পাথর দিয়ে বাঁধাই করা এ চত্বরগুলোতে পায়ে হেঁটে বা বাইসাইকেল নিয়ে ঘোরাফেরা করা যায়। বিভিন্ন ছুটির দিনে এ চত্বরগুলিতে সমাবেশ বা মেলা বসে। বড়সড় চত্বরগুলি সাধারণত রাজাগজাদের নামে হয়ে থাকে।

শনিবারে শ্ট্রাসেনমুজিকান্টদের ভিড় বসে সেসব সড়কের পাশে, যেখানে ছুটির দিনে হাঁটতে বের হওয়া লোকজনের সমাগম বেশি। হার্প, বেহালা বা বাঁশি নিয়ে একেকজন বাজিয়ে চলেন, সামনে একটা বাক্স থাকে। এঁদের অনেকের নিজস্ব মিউজিক অ্যালবাম আছে, সেটা বাক্সে রেখে বিক্রি করেন তাঁরা। যাদের অ্যালবাম নেই তাঁদের বাক্সে শ্রোতারা কিছু রেখে যান। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আগত গীটারিস্টদের দেখা যায় অ্যালবামহারাদের দলে।

ট্রামের বহুলব্যবহারের জন্য শহরে বায়ুদূষণ কম। কাজের সূত্রে প্রায়ই ঢাকার বাইরে যেতে হয়েছে আমাকে, ঢাকার বাইরে বাতাস চমৎকার, আর ঢাকায় কখন চলে এসেছি তা বোঝা যায় নিঃশ্বাস ফেলেই। ঢাকায় ট্রাম চালু করতে পারলে হয়তো খারাপ হতো না, কিন্তু সে সুযোগ বোধহয় এখন আর নেই। নতুন যেসব রাস্তা তৈরি হচ্ছে ঢাকায়, সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রাম চালু করে দেখা যেতে পারে অবশ্য।

রিকশার কারণেই বোধহয়, হাঁটা ব্যাপারটা অনেকটা ইচ্ছানির্ভর হয়ে গেছে ঢাকায়। আর হাঁটবোই বা কোনদিক দিয়ে, ফুটপাথগুলি তো আর আমার জন্য ফাঁকা রেখে দেয়নি কেউ। অনেক রাস্তায় ফুটপাথও নেই। জার্মানরা প্রচুর হাঁটে, নয়তো সাইকেল চালায়। কাসেল পাহাড়ি শহর, চড়াই উৎরাই ভরা গোটা শহরের রাস্তায়, ফুটপাথে হনহন করে হাঁটছে লোকজন।

এখানে বাসের ভেতরে পরিষ্কার লেখা দেখলাম, জিৎসপ্লেৎসে ৪১, শ্টেপ্লেৎসে ৬০। ৪১ জন বসে আর ৬০ জন দাঁড়িয়ে যেতে পারবে। অনেক বিশালদেহী জার্মান নির্বিকারচিত্তে দু'টি সীট দখল করে আনমনে রাস্তা দেখতে দেখতে যায়, লোকজনেরও দাঁড়িয়ে যাতায়াতে কোন আপত্তি নেই। সীটে বসা নিয়ে কোন প্রতিযোগিতা এখনও চোখে পড়েনি। খুব বয়স্ক হলে কেউ না কেউ উঠে দাঁড়িয়ে তাকে বসতে দেয়, তবে মেয়েদের প্রতি আলাদা কোন শিভালরি প্রদর্শনের নমুনা দেখিনি। দেশে কোন মহিলা বাসে দাঁড়িয়ে যাবেন, এমনটা সাধারণত সহ্য করেন না অনেকে, আপা বসেন এইখানে বলে জায়গা ছেড়ে দেন। এখানে আপাদের তেমন খাতির নাই। তবে বাচ্চাদের প্যারামবুলেটর, কিন্ডারভাগেন যাকে বলে, সেটার জন্য আলাদা কানুন আছে, কিন্ডারভাগেনের জন্য নির্ধারিত জায়গা আর সীট আছে বাসে আর ট্রামে। একবার মিউনিখে এক বয়স্কা মহিলাকে সীট ছেড়ে জায়গা করে দিয়েছিলাম, তিনি আমার দিকে রোষকষায়িত চোখে তাকিয়ে "মাদাম, মাদাম, জি হাবেন আইনেন প্লাৎস" বলে কোত্থেকে তারচেয়েও বেশি বয়স্ক এক বৃদ্ধাকে যোগাড় করে এনে সেখানে বসালেন, নিজে দাঁড়িয়ে রইলেন বীরের মতো। এরপর থেকে ছড়ি ছাড়া হাঁটছেন এমন কোন বৃদ্ধাকে সীট ছেড়ে জায়গা করে দেবো না ঠিক করেছি।

বাসে ড্রাইভারই টিকেট চেকার, তাকে টিকেট বা মাসিক/সাপ্তাহিক কার্ড দেখিয়ে চড়ছে লোকজন, অথবা উঠে টিকেট কাটছে, তবে ট্রামে সাধারণত চেকিং হয় না। ট্রামে হঠাৎ একদিন সাদা পোশাকের লোক, যে হয়তোবা কোন সীটে বসে ঢুলছিলো, গা ঝাড়া দিয়ে উঠে একটা পরিচয়পত্র দেখিয়ে লোকজনের টিকেট বা কার্ড দেখতে চায়। তখন যদি বিনা টিকেটে ভ্রমণের দায়ে কাউকে পাকড়াতে পারা যায়, তাহলে ৪০ ইউরো খসাতে হয় সেই বেচারাকে। জার্মান নাগরিক হলে তার নাগরিক সংকেত নোট করে নিয়ে যাওয়া হয়, আপনাআপনি তার ব্যাঙ্ক থেকে জরিমানার টাকা কেটে রাখা হবে। দীর্ঘ যাত্রার ট্রেনে কামরায় কামরায় পরিষ্কার লেখা থাকে বিনা টিকেটে ভ্রমণ করলে কী কী হুড়কো তাকে দেয়া হতে পারে। এরকম অনুসন্ধান ঘটতে শুরু করলে কিছু লোক সবসময়ই ব্যস্তসমস্ত হয়ে পরের স্টপেজে নেমে পড়ে।

এখানে যাতায়াত ব্যবস্থার মসৃণ দিকটা দেখে খুব ঈর্ষা হয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি ঢাকায় যানবাহন নিয়ে ভুক্তভোগী, এমন একটা চলাচলব্যবস্থা সেখানে কোন আশরাফুল মখলুকাত চালু করতে পারলে আমি তাকে এক বেলা বিরিয়ানি খাওয়াবো, ঘোষণা দিলাম।


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মাঝে মাঝে ভাবি, আমরা এদের চেয়ে ২০০ বছর পিছনে আছি, শুধু প্রযুক্তিতে নয়, সাধারণ ভব্যতায়, সভ্যতায়, আচরণে, কমনসেন্সের ব্যবহারে। সমস্যা হলো, সেই ২০০ বছর খোঁড়াতে খোঁড়াতে আমরা যখন এগোবো, তখন এরা এগিয়ে যাবে হাজার বছর। দেশের যে খবর শুনছি অহরহ, তাতে অবশ্য মনে হয় সামনে নয়, পেছনে যাওয়ার হুড়োহুড়িই লেগে গেছে আমাদের।

লিখতে থাকো। দুর্দান্ত হচ্ছে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আরিফ জেবতিক এর ছবি

হ,এখন লম্বা লম্বা কথা কইবেন ।হুদা ভাই যে ইলেক্টৃক ট্রেন চালু দিতে চাইছিল তখন তো বাগড়া দিলেন।

তবে বিরিয়ানিতে লাভ হবে না।
কমিশনের বখরা দিতে অস্বীকার করায় গতবছর নাকি ঢাকায় পাতাল রেল করতে এসে ফিরে গেছে কোম্পানি দুইটা।

হিমু এর ছবি

বস, সমস্যা আছে। হুদুসোনা ইলেক্ট্রিক ট্রেন চালু করলে আমি তারে সমর্থন করতাম, কিন্তু সে চিগলাইছিলো ঢাকা-চট্টগ্রাম ম্যাগনেটিক ট্রেন লইয়া। "ম্যাগনেটিক ট্রেন" মানে ম্যাগলেভ টেকনোলজির মাল, সেইটা সেইরকম খরচের ব্যাপার। ইলেক্ট্রিক ট্রেন তো সময়ের দাবি। হুদুসোনা সাইজে গন্ডারের মতো বইলাই মারে গন্ডার লুটে ভান্ডার। ইলেক্ট্রিক ট্রেন চালু করলে বেশি খাইতে পারতো না মনে হয়।

আর পাতাল রেল যদিও ঢাকায় এখন জরুরি, তবুও বলি এর কিছু সমস্যা আছে। আপফ্রন্ট কস্ট অনেক বেশি, তাছাড়া ঢাকায় তো পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না, বৃষ্টির সময় রেল লাইন ঝামেলায় পড়বে (পাতাল রেল সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় চলে)। তারচেয়ে এলিভেটেড রেলওয়ে করা সহজ, যদিও শহরের শ্রী নষ্ট হবে। ডিভাইডার তুলে দিয়ে সেখানে ট্রাম লাইন বসাতে পারলে কাজ হতো।

এ প্রসঙ্গে আমার কথা বলা আসলে সাজে না, এ ব্যাপারে একাডেমিক জ্ঞান আছে এমন কেউ কি সচলে নেই?


হাঁটুপানির জলদস্যু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আধা-সম্পূর্ণ একটা ইংরেজি আর্টিকেল লিখেছিলাম সাও পাওলোর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নিয়ে। সচলে দিয়ে দেবো। ওরা ব্যবহার করে "A train of buses"। আমাদের সেরকম কিছু করা সম্ভব। পাতাল রেল করতে গেলে হাঙ্গামা বেশি হবে। ম্যাগলেভের চেয়ে অটোবান জাতীয় বিশাল রাস্তা করাই শ্রেয়। আমেরিকায় পাঁচ-ছয় ঘন্টায় যেই দূরত্ব অতিক্রম করি, তা দেশে করলেই তো টেকনাফ-তেতুলিয়া হয়ে যায়!

হিমু এর ছবি

বাহ! অপেক্ষায় রইলাম।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অমিত এর ছবি

যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কিছু করার আগে যেই দুইটা কাজ করতে হবে সেটা হল যেকোন প্রকল্প থেকে টাকা মারার ধান্দাবাজি বাদ দিতে হবে আর প্রত্যেকটা মন্ত্রনালয় এর মধ্যে সমণ্বয় সাধন।পাতাল রেলে একটু খরচ স্বাপেক্ষ হবে হয়ত। আর ঘরবাড়ির যে অবষ্থা, স্টেশন বানানো এবং রেললাইন বসানোর জন্য অনেক ফাউন্ডেশন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ব্যাপক মাত্রায় রাস্তা বন্ধ রাখতে হবে না। কিছু পার্টিকুলার জায়গা এক্সকাভেট করে তারপর বোরিং করতে হবে। কিন্তু লাইট রেল বা এলিভটেড রেলের জন্য নগরে ভাল যানজট তৈরি হবে। মাটির উপরে জায়গাও কম। ঢাকার একপাশে যে নদীপথ আছে, সেটাকে ব্যবহার করা উচিত। একটা ফেরি সার্ভিসও চালু হয়েছিল মনে হয়।আর ঢাকার মত ছোট শহরে অটোবান বা ফ্রিওয়ে করার দরকার নাই।দুইটা লুপ হলেই চলে। একটা মোটামুটি সেন্ট্রাল আর একটা চারদিক দিয়ে।

______ ____________________
suspended animation...

ফ্রুলিক্স এর ছবি

ঢাকায় স্ট্রাসেনবান!!চলবে কি দিয়ে?? কলকারখানায় বিদ্যুতের কোন গ্যারান্টি নাই, সেখানে ট্রাম।

ট্রামে সাধারনত বৃদ্ধ/অসুস্হ লোকদের জন্য নিদৃষ্ট কোন সিট দেখা যায় না।তবে আন্ডারগ্রাউন্ডে বৃদ্ধ/অসুস্হ লোকদের জন্য আলাদা জায়গা আছে। আপনাদের ক্যাসেলে তো মনে হয় আন্ডারগ্রাউন্ড নেই (আমার যতোটুকু মনে হচ্ছে)

ওদের প্রতি ঘরেই একটার বেশি সাইকেল। খুবই স্বাস্হ্য সচেতন। সকাল/দুপুর/বিকেল যে যখন সময় পায় তখন এক্সারসাইজ করতে বের হয়ে যায়। প্রথম প্রথম এসে তো হাটতে গিয়ে জান বের হওয়ার উপক্রম।

হিমু এর ছবি

কলকারখানার বেশিরভাগই এখন ক্যাপটিভ পাওয়ার দিয়ে চলছে। তারা আদৌ সরকারী বিদ্যুতের ভরসায় বসে থাকে না। তবে গালি দিতে ছাড়ে না কেউ।

ট্রাম চালানোর জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা খুব জটিল বলে মনে করি না, যদি শুরুতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের রুটে ট্রাম শুরু হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ক্রিসেন্ট রোড আর মিরপুর রোডের সংযোগস্থল থেকে নির্মাণের পরিকল্পনাধীন ড়্যাংসভবনদলনী সড়ক হয়ে তেজগাঁও পর্যন্ত রুটে যদি ট্রাম চালু হয়, তাহলে অনেক কমিউটারের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে। এর জন্যে বিদ্যুৎ আসতে পারে ঢাকার বর্জ্য থেকে। যতদূর শুনেছিলাম, ৪০০ মেগাওয়াটের একটা প্ল্যান্ট করা সম্ভব শুধু জৈব বর্জ্য থেকে। সিটি করপোরেশন নাকি এ প্রকল্পে নানা প্যাঁচ কষে বাতিল করে দিয়েছিলো।

নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে তো সবসময়ই, একটা জায়গা থেকে তো শুরু করতে হবে, নাকি? প্রয়োজনে এ প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা হোক, পাবলিকের হাতে শেয়ার তুলে দেয়া হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

দ্রোহী এর ছবি

চলুক বর্ণনা।


কি মাঝি? ডরাইলা?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমাদের সবচেয়ে বড়ো দূর্ভাগ্য এই যে আমাদের সবচেয়ে বড়ো বলদগুলোই বড়ো বড়ো পদে থাকে।
বর্তমান রিসোর্সগুলোকে কাজে লাগিয়ে এখুনি যা করা যায়:

১.টঙ্গী থেকে একটি অফিস ট্রেন চালু করা হোক অফিস আওয়ারের ১ ঘন্টা আগে।স্টপেজ হবে উত্তরা স্টেশন,বনানী স্টেশন,তেজগাঁ স্টেশন এবং কমলাপুর।
ট্রেনটি হবে বিশাল।এক বগিতে ২০০ লোক ধরলে ৩০ বগিতে ৬,০০০ লোক চলে আসবে শহরে । একই ট্রেন অফিস ফেরতা সময়ে আবার টৃপ দিবে।তাইলেই অফিসগামী মানুষদের এক বিশাল সংখ্যার ট্রাফিক চাপ থেকে আমরা বেচে যাই। মধ্যবিত্ত মানুষও শহর থেকে একটু দুরে কম পয়সায় দিনানিপাত করতে পারে।

২.প্রত্যেকটি স্কুলের জন্য স্কুলবাস বাধ্যতামূলক করা হোক।দেখবেন ট্রাফিক কতো কমে যায়।
ধানমন্ডীর একটা স্কুলের ক্লাসে যদি ১০০ ছাত্র থাকে,তাইলে গাড়ি আসে ১০০টা।স্কুল আছে ১০টি/ ক্লাস ১০টি/প্রত্যেকটিতে ছাত্র গড়ে ১০০=১০,০০০ হাজার ছাত্রের সাথে তাদের অভিবাভকদের আবার বাড়ি ফেরার ট্রাফিক।চিন্তা করেন কী অবস্থা হয় সেখানে।

৩.দোতলা বাসকে ডিউটি ফ্রি করে দেন।দরকার হলে অল্প সাবসিডি দেন।

৪.সবগুলো বাসকে সমন্বিত করে মাসিক পাসের ব্যবস্থা করুন।তাইলে আর রাস্তা ব্লক করে যাত্রী তোলার হুড়োহুড়িতে মাতবে না বাসগুলো।

হিমু এর ছবি

ঢাকায় আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে পশ্চিম থেকে উত্তরে যাবার ব্যাপারটা। ক্যান্টনমেন্টের পেছনে কচুক্ষেত হয়ে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে যাতায়াত একটা বিরাট হ্যাপা। আর ক্রিসেন্ট রোড বা বেগম রোকেয়া সরণী দিয়ে বিজয় সরণী হয়ে এয়ারপোর্ট রোড ধরে যাওয়ার একটি মাত্র রাস্তা পশ্চিম-উত্তরের প্রায় সবটুকু যাতায়াতের লোড বহন করে। এর চাপটা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে।

সিয়েনজি জ্বালানি হিসেবে সস্তা বলে ঢাকায় প্রায় সব প্রাইভেট গাড়িই সিয়েনজি কনভার্শনের আশ্রয় নিয়েছে। আমার মতে এই সিয়েনজির দাম প্রাইভেট গাড়ির জন্য বাড়িয়ে তেলের ৮০% এ নিয়ে আসা উচিত। এতে গাড়ির ব্যবহার মানুষ বুঝেশুনে হিসেব করে করবে। আর পার্কিং এর জন্য টোল দিতে হলেই রাস্তায় অহেতুক গাড়ির চাপ কমবে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এখানে একটা কথা বলতে চাই।প্রাইভেট গাড়ী কমানোর জন্যে ট্যাক্সিকে আর স্কুটারকে এভেইলেবল করে দিতে হবে।
ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র নগর,যেখানে ট্যাক্সিঅলারা কখনোই কোন যাত্রাপথে যায় না।
মধ্যবিত্ত গাড়ী কিনে বহু কষ্ট করে,কিন্তু না কিনেও উপায় নেই।

হিমু এর ছবি

ট্যাক্সি স্কুটারের চেয়ে বেশি জরুরি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। ট্যাক্সি বা স্কুটারের জন্য দুইতিনজনের টীম তৈরি করে চলাফেরা করা যেতে পারে। অফিসে যাওয়ার পথে মাঝে মাঝে অযাচিতভাবেই লিফট দিতাম বা পেতাম। একটা লোক একটা ট্যাক্সি একা নিয়ে অফিসটাইমে যাতায়াতের কোন মানে হয় না।

ট্রাম জিনিসটা ভালো লাগলো এ কারণেই। সে তার জন্যে আলাদা করে রাখা জায়গা দিয়ে চলছে, কারো ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে না, কেউ তাকে আটকাচ্ছে না (সিগনাল ছাড়া), অল্পসময়ে অনেকদূর চলে যেতে পারছে। আমাদের রাস্তার মাঝে বেহুদা ডিভাইডার না বসিয়ে ট্রাম লাইনের জন্য কিছুটা জায়গা নিয়ে নেয়া যেতে পারতো। এতে মূল রাস্তা কিছুটা সরু হয়ে পড়লেও পাবলিকের দ্রুত যাতায়াত নিশ্চিত হচ্ছে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ট্রাম চালু করা যায়,তবে শাহবাগের দিকে দেয়া যাবে না।
ট্রামের নিচে পড়ে জীবনানন্দ মারা গেছেন,এই ফ্যাশনে বহু আজিজীয় কবি ট্রামের নীচে ঢুকে একটা জট পাকিয়ে ফেলতে পারে।

হিমু এর ছবি

হে হে হে ... কবিচাপা পড়ে ট্রাম আহত শীর্ষক খবর আসতে পারে কাগজে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আচ্ছা, জলপাইপাড়ার উপর দিয়ে একটা ফ্লাইওভার করলে কেমন হয়? আমরা উপর দিয়ে যাবার সময় 'জলপাই মডেল টাউন' দেখবো, আদর্শ নাগরিক হতে শিখবো, স্কুলের ছেলেমেয়েদের ওটার উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখিয়ে বলবো, "এই যে দেখ মানুষখানা। বড় হয়ে এদের মত হবে।"

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হিমু ভাই, আপনার লেখার এই আয়তনটা ভালো লেগেছে। বপু সাইজের পাশাপাশি মাঝে মাঝে এরকম হাওয়াই মিঠে পোস্ট পেলে মন্দ হয় না। বিশেষ করে খাওয়ার (পড়ার)ব্যাপারটা যখন চিন্তার খোরাকও হয়ে উঠে।।।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঢাকায় পাতাল রেল দিলে কেমুন হয়?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পাতাল রেল ঢাকার জন্য না। যেসব এলাকায় বন্যা হয়, পানি নিষ্কাশন চরম, সেসব এলাকায় পাতাল রেল অচল। তাছাড়া আমাদের দেশে যেরকম ফাঁকিবাজি কনস্ট্রাকশন হবে, তাতে কখন ভেঙ্গে পড়ে, সেই আশঙ্কায় থাকতে হবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।