সেই অদম্য তর্জনীর ইশারা

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০৩/২০১৭ - ২:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গড়পড়তা খাটো বাঙালীর চেয়ে তিনি বেশ দীর্ঘই ছিলেন। কিন্তু দেহের দৈর্ঘ্যের চেয়ে তাঁর হৃদয়ের প্রশস্ততা ছিল আরো অনেক বেশী। তিনি বিপ্লবী ছিলেন না, কিন্তু বিদ্রোহের জ্বলন্ত আগুন ছিলেন।
পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে তিনি রাজনৈতিক বিদ্রোহের আগুনে আমূল দগ্ধ হচ্ছিলেন অত্যাচার, অবিচার, শোষণ প্রতিবাদ করতে গিয়ে। পাকিস্তানের জেলখানার দীর্ঘতম আবাসিক বাসিন্দা ছিলেন আন্দোলনের পুরস্কার হিসেবে। তিনি যুদ্ধের ডাক দেননি। স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে সমগ্র জনগণকে নিয়ে এমন রাজনৈতিক অসহযোগের ঘটনা আর একটিও ঘটেনি। এমনকি মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনেও দেশ এতটা অচল হয়নি।

সেদিন অস্ত্র-সৈন্যবলে মহাপরাক্রমশালী সামরিক সরকারের চেয়েও ওই একটি আঙুলের ইশারা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। যার সামান্য ইশারাতেও পাকিস্তানী দুঃশাসকদের বুকে কাঁপন উঠতো। যার ইশারাতে ৭ কোটি মানুষ নড়ে চড়ে বসতো, উঠে দাঁড়াতো, কাঁচা বাঁশের লাঠি হাতে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে যেতো। ভীরু, দুর্বল, অযোদ্ধা বাঙালী হয়ে গিয়েছিল দুর্জয়। এসব করতে কাউকে জোর করেননি, ভয় দেখাননি। পয়সা দেননি। তিনি শুধু হৃদয়ে বান ডাকা সুরে আহবান করেছিলেন, মানুষ তাতে সাড়া দিয়েছিল।

তিনি কোন ভিনদেশী পরদেশী অর্থ কিংবা অস্ত্র কোন শক্তিতেই বলীয়ান ছিলেন না। তাঁর সমস্ত আত্মবিশ্বাস, সমস্ত শক্তির একমাত্র উৎস ছিল মানুষ, বাংলার মানুষ। যাদেরকে তিনি বারবার উচ্চারণ করেছেন- "আমার বাংলার মানুষ" বলে। বাংলার মানুষের উপর তাঁর অগাধ বিশ্বাস। তাঁর পরিবার ছিল সমগ্র বাংলাদেশ। বুক তাঁর ছিল বাংলাদেশের হৃদয়। আঙুল ছিল তাঁর সংগ্রামের ইশারা।

আজ বাঙালীর হৃদয়ে আঁকা সেই অদম্য তর্জনী উঁচিয়ে চুড়ান্ত ঘোষণা উচ্চারণের দিন - এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম! জয় বাংলা!!


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

এই এক অদ্ভুত আশ্চর্য মানুষ। আশ্চর্য শব্দটা এই মানুষটার সাথে কেমন গুলিয়ে যায়।
৭ই মার্চের অমর কবিতার কবি'র প্রতি, কবিতার প্রতি কুর্নিশ!

এক লহমা এর ছবি

জয় বাংলা!!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সোহেল ইমাম এর ছবি

সেই অদম্য তর্জনী চিরউদ্যত থাকুক।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রাচ্য পলাশ এর ছবি

বঙ্গবন্ধু জিকিরবাজী পছন্দ করতেন না। জিকির না করে মুক্তির পথে মনোনিবেশ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

-প্রাচ্য পলাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।