স্মার্ট ফোন কি আসলেই দরকার

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: রবি, ০৪/০৮/২০১৩ - ২:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্মার্টফোন নিয়ে আগ্রহ আছে, কিন্তু অতগুলো টাকা খরচের আগে ভালভাবে জেনে নেয়া দরকার, তাই প্রায়ই বিভিন্ন ফোনের রিভিউ পড়ি। রিভিউগুলোতে টেকনিক্যাল দিকগুলো বেশ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। তবে সেই তথ্যগুলো আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করতে পারেন না -- কারণ আমার নিজের আসলে কতটুকু এই অতিরিক্ত স্মার্ট-চাহিদাগুলো আছে (চাহিদা = যার জন্য খরচ করা যায়, অর্থনীতির ভাষায়) তা ঠিকমত বুঝতে পারিনা। তাই ভাবলাম লিখে ফেলি -- বুঝতে সুবিধা হবে এতে। এখানে লিখিত পুরা বক্তব্যই ব্যক্তিগত অভিমত, যা সকলের জন্য সত্য হবে এমন কোনো কথা নাই।

‍১।
প্রথমবার যখন বসুন্ধরা সিটি শপিংএর নিচের লাউঞ্জে সুবেশী তরুণ তরুণীরা স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট-২ ডিসপ্লে করছিলো তখন এর ৬২হাজার টাকা দাম দেখে ভীমড়ি খেয়েছিলাম। তখন টিভিতেও এটার একটা বিজ্ঞাপন দেখাতো। একজন লোক এই ফোনের মধ্যে একটা টাওয়ারের ছবি/স্কেচ এঁকে ফেললো। পরবর্তীতে স্মার্টফোনের আরো অনেক বিজ্ঞাপন দেখেছি -- একজনের বার্থডে, বন্ধু ছবি তুললো। আরেকজন আরেকটা ছবি তুলে এডিট করে মাথায় কি জানি একটা বসিয়ে দিলো -- হৈ হুল্লোড়। আমি জানি যে শখের দাম লাখ টাকা, কিন্তু তাই বলে ছবি তুলে হৈ-হুল্লোড় করার জন্য এ্যাত টাকা! অনেক পরিবারের একমাসের খরচের চেয়ে বেশি, একটা মোটামুটি ভাল মানের ল্যাপটপের চেয়ে বেশি। আমি খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিটা টাকা ইনকাম করতে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয় -- এটা অবশ্য অনেকের জন্যই সত্য। তবে বিজ্ঞাপনে দেখানো ছবি তুলে যাঁরা এডিট করে হৈ-হুল্লোড় করে ওরা নির্ঘাৎ নিজেরা ইনকাম করে না -- এই রকম একটা বয়স শ্রেণীকেই দেখিয়েছে।

২। দাম:
একটা ল্যাপটপ কিনেছিলাম। দাম প্রায় এই ফোনের সমানই। এটা দিয়ে কাজ করে এক বছরের মধ্যেই আমার রেগুলার ইনকামের বাইরে এর দাম উশুল করা ইনকাম যোগ করতে পেরেছি। কিন্তু আমার মাথায় কোনক্রমেই আসছে না যে এই ফোন দিয়ে কিভাবে সেইরকম প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানো সম্ভব। হ্যাঁ আমার ইমিডিয়েট ছোটভাইয়ের একটা এই জিনিষ আছে (পরবর্তীতে দাম কমার পর কেনা) সেটা তাঁর অনেক কাজেও লাগে -- কারণ তাঁকে সবসময় অফিসিয়াল কারণেই অনলাইন কাজের সুপারভাইজার হিসেবে কানেক্টেড থাকতে হত; মোটরসাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যায়, তাই জিপিএসটাও প্রায়ই কাজে লাগে। এখন স্মার্টফোনের দাম আরও কমে এসেছে - যাকে বলে একেবারে নাগালের মধ্যে। এমনকি নামী মেকারের বেশি দামীগুলোও শূণ্য সুদের ১২ কিস্তিতে কেনা যায় -- অর্থাৎ পকেটে এই মুহুর্তে টাকা না থাকলেও সমস্যা নাই। এইতো সেদিন দোকানে লেটেস্ট গ্যালাক্সি এস ৪ মিনি দেখলাম ৪২,৫০০ টাকা - যা ক্রেডিট কার্ডে ১২ কিস্তিতে কেনা যায়।

৩। মাল্টিমিডিয়া:
এবার আসি মাল্টিমিডিয়া ব্যাপারে। স্মার্ট ফোটগুলোতে মাল্টিমিডিয়া সাপোর্ট যেমন গান, রেডিও শোনা, মুভি দেখা যায় বলে জানি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার গান বা রেডিও শোনা অথবা সিনেমা দেখার তেমন কোনো শখ বা অভ্যাস নাই। আমার কোনো এমপিথ্রি প্লেয়ার নাই, কম্পুতে তেমন গান নাই (পাইরেসী এভয়ড করার জন্য), মুভি দেখার টাইম নাই। তার মানে এই না যে এগুলো কী জিনিষ আমি জানি না। এক সময় ওয়াকম্যান, ডিস্কম্যান (জাপান থেকে সবচেয়ে ভাল কোয়ালিটিরটা কিনেছিলাম) বিস্তর চালিয়ে শরীর মনে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী সেই বিষয়ের হরমোনগুলো শেষ। রাস্তায় চলার সময়তো কখনই কানে ওয়াকম্যান দিতাম না -- কারণ চারপাশের শব্দগুলোই আমার কাছে বেশি ইন্টারেস্টিং লেগেছে সর্বদা। মুভি রেন্টালে ১০০০ ইয়েনে ১ সপ্তাহের জন্য ৫ মুভি করে নিয়ে আসতাম; এমনও সময় গেছে রিলিজের পর পরই অনেক বেশি খরচে লর্ড অব দ্যা রিং-এর তিন পর্ব ১ রাতে দেখে ফেরত দিতে হয়েছিলো; বছরে চারবার করে দেশে আসার সময়ে ফ্লাইটগুলো আর লম্বা ট্রানজিট মুভি দেখেই কাটতো। তবে কোনক্রমেই সেগুলো দেখার হার এখনকার পাইরেসি করে নামানো মুভিফ্রিকদের মত ছিল না। ইদানিং হয়তো বছরে গড়ে ১২টা মুভি দেখা হয় -- যার অর্ধেক সিনেপ্লেক্সে আর অর্ধেক মুভি চ্যানেলে। কম্পিউটারে মুভি দেখাটা আমি চরম অপছন্দ করি, কারণ এই যন্ত্রটা আমার কাজের জিনিষ - বিনোদনের জিনিষ নয়। তবে কম্পিউটারে অকাজ খুব একটা কম করি তা নয় -- যেমন এই লেখাটাও কম্পিউটারে বসেই লেখা। মোদ্দা কথা হল একেই মুভি দেখার মত সেরকম নিরবিচ্ছিন্ন অবসর থাকে না, আরেকদিকে আমি কম্পিউটার কিংবা এর চেয়েও ছোট স্ক্রিনে মুভি দেখি না, দেখবো বলেও মনে হয় না - আর এ্যাত মুভি পাব কোথায় (লিগাল)। তাই স্মার্ট ফোনের এই ফীচারটা খুব একটা কাজে লাগবে না। আবার দেখা যাবে, এখানে হয়তো কার্টুন চালিয়ে কাজের সময়ে কন্যা এটা বেদখল করে রেখেছে!

৪। গেমস:
গেমসের কথা মনে পড়লে দীর্ঘশ্বাস পড়ে। রাতের পর রাত গেম খেলে নির্ঘুম কাটিয়ে পরদিন ক্লাসে গিয়ে ঢুলেছি, আর এখন -- গেম খেলার সময় বের করা ... ... অসম্ভব! আমার ধারণা স্মার্ট ফোনের গেমগুলোই একটা জেনারেশনের কাছে এটাকে জনপ্রিয় করেছে। আমার একেবারে ছোট সহোদর, ১১ বছরের ছোট -- যে কিনা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বিভাগীয় প্রধান - গেম খেলার জন্য তার আর তার বেস্ট হাফের আলাদা মেশিন!! হুমম -- ঐ বয়সে আমিও খেলেছি। গেমের সেই পর্বগুলো পার হয়ে আসা আমার মত আধবুড়ার জন্য যেটা খুব একটা আকর্ষনীয় না।

৫। ক্যামেরা:
হ্যাঁ স্মার্ট ফোনের এই জিনিষটা আমি মিস করি প্রায়ই। পেশাগত কারণেই বিভিন্ন মূহুর্তের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ তুলতে ইচ্ছা হয় - যা পরবর্তীতে প্রেজেন্টেশন তৈরীতে কাজে লাগবে। কিন্তু পকেটে ফোন, থুক্কু, ক্যামেরা না থাকায় সেটা হয় না। কিংবা হঠাৎ দেখা একটা তথ্যও ছবি তুলে সংরক্ষণ করা যায়। তবে এখানেও কিন্তু আছে -- ক্যামেরার ছবি আর ফোনের ছবিতে বেশ পার্থক্য আছে, বিশেষত কম আলোতে। আমার বেশি পিক্সেল দরকার নাই -- কারণ আমার মনিটর কিংবা প্রেজেন্টেশনে অত রেজুলুশনের ডিসপ্লে থাকে না --- কিন্তু স্পষ্ট ছবির দরকার আছে। যেমন এই মূহুর্তে আমার ল্যাপটপের ডিসপ্লে ১২৮০x৮০০=১০২৪০০০ পিক্সেল অর্থাৎ মাত্র ১.০২ মেগাপিক্সেল। এর চেয়ে বড় ছবি তুললে সেটাকে আসলে এই রেজুলুশনে কমিয়ে নিয়েই দেখতে হবে। আমার পুরাতন ক্যানন পাওয়ার শট দিয়ে যা তোলা যেত সেটাই যথেষ্ট। এখন ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা, ফোনের চেয়ে ভাল অপশন বলে মনে হয়। ঐ টাকা দিয়ে একটা মোটামুটি ভাল ক্যামেরা কেনা যায়, তবে সেই ক্যামেরাটা ফোনের মত সবসময় পকেটে থাকবে না -- এটা ফোনের পক্ষে একটা ভাল পয়েন্ট।

৬। জিপিএস:
স্মার্ট ফোন কেনার ঝোঁকটা উঠেছিলো মূলত এর জিপিএস সুবিধার জন্য। পেশাগত কারণে মাঝে মাঝেই আমাকে জিপিএস (GIS সম্পর্কিত) ব্যবহার করতে হয়। এটা না থাকার কারণে সার্ভেয়ার অন্য কারো সাহায্য ছাড়া বেশ কিছু কাজ করতে পারি না। বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে খোঁজ নিয়ে জেনেছি একটা হ্যান্ডহেল্ড জিপিএস মেশিনের দাম ১৩ হাজার টাকার মত। কিন্তু স্মার্ট ফোনের জিপিএসে একই সাথে গুগল আর্থ আর ম্যাপের সুবিধা আছে যা গারমিনের (Garmin) হ্যান্ডহেল্ড জিপিএস মেশিনে নাই। অনেকবার ভেবেছি একটা জিপিএস মেশিনের বিকল্প হিসেবে কমদামের একটা অ্যানড্রয়েড কিনে রাখবো কিন্তু একটু খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছি ১৩ হাজারের জিপিএস মেশিনের বদলে কম বা কাছাকাছি দামের স্মার্ট ফোনের জিপিএসগুলো বছরখানেকের বেশি কাজ করে না। তবে, আমার ছোট ভাইয়ের ফোনটার বয়স হচ্ছে -- ও নিয়মিত জিপিএস ব্যবহার করে; এখন পর্যন্ত ওটার পারফর্মেন্স ভাল (দামও অবশ্য সেইরকম)।

৭। অ্যাপস, সার্ভে, অটোক্যাড:
এই অ্যাপসগুলো বেশ কাজের জিনিষ হয়ে উঠে মাঝে মাঝে। একটা অ্যাপ আছে যা দিয়ে কোন বস্তুর দুরত্ব আর উচ্চতা মাপা যায়। এটা আসলে সিম্পল ত্রিকোনমিতি ব্যবহার করে, আর এর সঠিকতা ব্যবহারকারীর দক্ষতার উপর নির্ভর করে। এই জিনিষ মাঝে মাঝে কারো কাজে লাগবে নিশ্চিত ভাবেই। আরেকটা অ্যাপ আছে যেটা দিয়ে অটোক্যাডের ফাইল খুলে এডিট করা যায়। যারা ফিল্ডে কাজ করেন তাঁদের জন্য এটা একটা কাজের অ্যাপ নিঃসন্দেহে। আমার অটোক্যাডের মত দামী সফটওয়্যার ব্যবহারের সামর্থ নাই (প্রায় ৪০০০ ইউএস ডলার দাম) - কাজেই এটা কাজে লাগবে বলে মনে হয় না।

৮। কানেক্টিভিটি:
ইন্টারনেট ইউটিলিটিগুলো তথা আরেক লেভেলের কানেক্টিভিটি স্মার্টফোনগুলোকে অনেকের জন্যই আবশ্যম্ভাবী বস্তুতে পরিণত করেছে। গাড়িতে জ্যামে বসে থাকার সময় পেপার, ফেসবুক, ইমেইল পড়া, ইমেইল বা মেসেজ আসা মাত্র নোটিফিকেশন পাওয়া ইত্যাদি খুব ব্যস্ত মানুষের সময়ের আরো দক্ষ ব্যবহারে সহায়তা করে। ব্যক্তিগত ভাবে নিজেকে অ্যাত ব্যস্ত মনে করি না, আর সাথে সাথে জবাব না দিলে ব্যবসা ছুটে যাবে -- এমন কোনো কাজও আমি করি না; আর সত্যিকথা বলতে কি, কয়েকদিন পেপার না পড়লেও আমার কিছু এসে যায় না। ফেসবুক, ইমেইল দিনে একবার চেক করাই যথেষ্ট -- তারপরেও রাস্তার বা যাত্রাপথটুকু বাদ দিলে বাসা এবং অফিসে সর্বদাই নেট কানেক্টেড থাকি। তাই আলাদা করে কানেক্টিভিটি আমার কাছে কতটুকু কাজে আসবে সেই বিষয়ে সন্দিহান।

কেউ মনে করতে পারেন কানেক্টিভিটি বাড়লে খারাপ কী? ব্যাপার হল, এর জন্য খরচের ব্যাপার জড়িত। সাধারণ ফোনের খরচের পাশাপাশি এখন আবার নেটের বিল দেয়া লাগবে। এজন্য নিশ্চয়ই বাসার মডেম ফেলে দেয়া যাবে না -- ওটার খরচও থাকবে। আমাকে একজন বুদ্ধি দিল যে নেট নেয়ার দরকার নাই, বাসা আর অফিসে ওয়াইফাই থাকলে সেখানে এটা ব্যবহার করা যাবে ফ্রী। আরে বাবা, বাসা আর অফিসে তো নেট আছেই! বরং আবার ওয়াই ফাই রাউটার কিনতে হবে বাসার জন্য!

যা হোক, গতকাল নেটে একটা মজার আর্টিকেল পড়লাম। সেখানে একজন লোক তার আইফোন দূর্ঘটনাবশতঃ ভেঙ্গে যাওয়ার পর ভাবলো এক মাস সাধারণ প্রস্তর যুগের ফোন ব্যবহার করে দেখি তো কেমন লাগে! ঐ লোক সেই স্মার্টফোনের শুরু থেকেই মডেল পরিবর্তন করে করে স্মার্টফোন ব্যবহার করছিল এ্যাতদিন। ওনার কিছু নতুন উপলব্ধি হল -- আপাতত আর স্মার্টফোনে ফেরত যাবেন না বলে ঠিক করেছেন। (http://lifehacker.com/5978637/why-im-glad-my-smartphone-broke)

সবশেষে মনে হয়, ইদানিংকার হাফপ্যান্ট মোল্লা টাইপের হুজুররা আঙ্গুর ফল টক আঙ্গুর ফল টক বলে বলে নিজেরে প্রবোধ দিয়ে হাদিস কোরান ঝাড়ে আর এদিকে আবার ঐশ্বরিয়া নিয়ে হা-হুতাশ মার্কা পোস্ট-স্ট্যাটাস দেয় --- আমার এই লেখাটাও সেই টাইপেরই হয়ে গেল বোধহয়।


মন্তব্য

রাগিব এর ছবি

জিপিএস এর ব্যাপারে আপনাকে যে বলেছে ১ বছরের বেশি সস্তা ফোনের জিপিএস কাজ করেনা, সে ভুল বলেছে। আমার সস্তাস্য সস্তা একটা স্যামসাং গ্যালাক্সি ওয়াই ফোন আছে ব্যাকাপ হিসাবে। ২ বছর আগে কেনা, দিব্যি জিপিএস কাজ করছে।

আমার মতে স্মার্ট ফোন খুব কাজের জিনিষ, কারণ আমার ইমেইল চেক করা আর ছবি/জিপিএস এর জন্য। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লোকালাইজ্ড সার্ভিস এখনো না আসাতে সম্ভবত আপনার এর সুবিধাজনক দিকগুলা ওভাবে চোখে পড়ছেনা।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

শামীম এর ছবি

আমি স্যামসাং-এর কথা বুঝাইনি। চাইনিজ একেবারে ৬ -১০ হাজার টাকার রেঞ্জেরগুলোর কথা বলতে চেয়েছিলাম। যা হোক, ভাল ব্র্যান্ডের এইটাই সুবিধা। জিপিএস আর চাহিবামাত্র ক্যামেরার জন্যই কিনবো হয়তো। এই লেখাটা একটা ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট।

তাছাড়া কাজের ধরণের উপর ইউটিলিটিগুলোর চাহিদা নির্ভরশীল।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সাফি এর ছবি

আমি রাগিব ভাইয়ের সাথে একমত। স্মার্ট ফোনে আমি মূলত ব্যাবহার করি ইমেইল আর ম্যাপ জিপিএস। এর সাথে বাড়তি ক্যামেরা/ফেসবুক আছে বলে ব্যাবহার করা হয়, তবে না থাকলেও মিস করতাম না।

শামীম এর ছবি

আমি ডরে কিনিনা। একবার ছিনতাই হইলে পুরা শেষ। অনেক আগে নোকিয়া ৩৩০১ ক্লাসিক ফোন ব্যবহার করতাম, ওটার মডেমটাই নেটে কানেক্টিভিটি দিত। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে সিএনজির দুইপাশ থেকে দুই বড়ভাই ঢুকে সব নিয়ে গেল। আমার কানেক্টিভিটি রিস্টোর করতে দুইদিন লেগেছে; আর যা কন্টাক্টগুলো হারিয়েছি তা তো শেষ।

এর পর থেকে এজন্যই মূলত প্রস্তর যুগের ফোন ব্যবহার করি, গেলে কমের উপর দিয়েই যাবে। তবে কিছুদিন হল সিএনজি'র দুপাশে গ্রীল দেয়া, ওভাবে হয়তো ছিনতাই হবে না। প্রতিবছর গরীব হচ্ছি। বেতন বাড়ে ঠিকই, কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়ে আরো বেশি।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হাসিব এর ছবি

স্মার্টফোন স্মার্টলি ব্যবহার করলে পশ্চিমা দেশগুলোতে এর খরচ উঠিয়ে নেয়া সম্ভব।

১। টিকেটঃ এ্যাপ ব্যবহার করে টিকেট কাটা যায়। বাসায় বা অফিসে থাকতেই টিকেট কাটা, বা শেষ মুহুর্তে দৌড়ে শেষ বাস বা ট্রেইন ধরে ট্রেনে বসে টিকেট কাটা যায়। সবাই এটা করতে শুরু করলে এটা সবার জন্য সময় বাঁচাবে এবং যে অনেক কাগজ কম খরচ হবে যেটা পরিবেশের জন্য ভালো
২। নেট কানেক্টিভিটিঃ এই জিনিসের ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না। এখন মোটামুটি সস্তায় ফ্ল্যাট রেটে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি নিতে পারবেন। এতে যা ফজিলত,

  • ইমেইল চেক করতে পারবেন
  • এ্যাপস ব্যবহার করে এসএমএস/কলের খরচ বাঁচাতে পারবেন।
  • ম্যাপের সুবিধা রাস্তাঘাটে পাবেন। এতে গাড়ির তেল বাঁচাতে পারবেন
  • কিছু এ্যাপ আছে যেগুলোতে আপনি কোন জিনিস (যেমন কফি, গাড়ির তেল) কিনতে গেলে কোথায় কী দাম সেটা দেখতে পাবেন।
  • পড়ালেখা করতে পারবেন অন দ্য মুভ। আইফোন বা স্যামসাঙ এস৪এর স্কৃনে ইবুক পড়া যায় ভালোমতোই।

শামীম এর ছবি

বস্ জানেননা, বাংলাদেশে ইমেইল করার পর ফোন করে সেটা জানাতে হয় শয়তানী হাসি

গাড়ি কিনতে পারলে সাথে স্মার্টফোন ব্যাপার না। আমি এখানে আদার ব্যাপারী, ম্যাক্সিমাম ট্যাক্সিতে চড়ি, আর নাইলে রিক্সা বা বাস। রিক্সাওয়ালারা সবকিছু আমাত্তে বেশি বুঝে -- তাঁদেরকে সোজা রাস্তা দেখানো মুশকিল এবং না-মুমকিন। মাঝে মইধ্যে একটু কম যাওয়া হয় এমন জায়গায় যেতে হোমওয়র্কটা পিসির গুগল-ম্যাপে করে বের হই।

অন দ্যা মুভ পড়লে মাথা ঘুরায়। এ্যাতদিনে টের পাইছি সেটা চোখের সমস্যার কারণে। ০.২৫ পাওয়ারের চশমা পড়লে সেই সমস্যা হয় না। তবে বৃদ্ধ বসদের দেখি, গাড়িতে উঠলেই মোবাইল ফোনে সমস্ত ফোনালাপগুলো করে নিয়ে সময়টা কাজে লাগায় (নিজে তো আর ড্রাইভ করে না)।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাংলাদেশে ইমেইল করার পর ফোন করে সেটা জানাতে হয়

হো হো হো কথা সইত্য

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

স্মার্টফোন স্মার্টলি ব্যবহার করলে পশ্চিমা দেশগুলোতে এর খরচ উঠিয়ে নেয়া সম্ভব।

এমন মানুষও দেখেছি যারা sms করতে জানেনা কিন্তু যুগের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে স্মার্টফোন পকেটে নিয়ে ঘুরছে!
.....জিপসি

অতিথি লেখক এর ছবি

শখ এর তোলা আশি টাকা এই প্রবাদকে সার্থক প্রমাণ করে একটা স্মার্ট ফোন কিনেছি কয়েকদিন আগে কিন্তু তারপর থেকে মোটামুটি আলট্রাপুওর হয়ে গেছি খাইছে , আপনি লেখাটা আরও এক মাস আগে দিলে কাজে দিত
ইসরাত

শামীম এর ছবি

এইটা জানতে পারলে, স্মার্ট ফোন কম্পানি আমাকে দৌড়ানি দিত ... ...

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আমার স‌্যামসাং গ্যালাক্সী এস ৪ এর প্রধান সুবিধা - বই পড়া যায়। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ফিচার (কথা বলা, এসএমএস আর অফিসের মেইল চেক করা ছাড়া)। স্ক্রীন বড়, বই পড়তেও আরাম। এর আগের মোবাইলে বই পড়তাম আসলে কষ্ট করে, সেটা এই ফোন কেনার পর বুঝেছি।
দ্বিতীয় কথা হল - ক্যামেরা। আমার নোকিয়া এন৮২ এর ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা আমার জন্য যথেষ্ট ছিল। অফিসের ক্যামেরা বাদ দিয়ে ওটা দিয়েই ছবি তুলে রিপোর্ট করতাম। এস ৪ এর এত মেগাপিক্সেল আমার লাগে না - তবে থাকাতে খারাপও লাগে না।

শামীম এর ছবি

হুমম এস ৪ এর মালিক দেখে হিংসা করা যায় কি না ভাবতেছি।

বিভিন্ন রিভিউয়ে শুধু হার্ডওয়্যার, মুভি আর গেম চলতে আটকায় কি না এসব দেয়। কামের জিনিষকে প্রায়োরিটি দিয়ে তুলনা দেয় না। পড়ার অভ্যাসটা ফেরত আসলে ভালই লাগতো।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হিংসা কইরেন না ভাই - প্যাটের ভিতর ভুটভুট করবো!!

এটি অফিস মহাশয়ের বদৌলতে পাওয়া, হে হে - পরের পয়সায় ফুটানি আর কি!!

____________________________

শামীম (অফিসে পাসওয়র্ড মনে নাই) এর ছবি

হিংসা কইরেন না ভাই - প্যাটের ভিতর ভুটভুট করবো!!

তাইতো বলি ... ... (ঘটনা ব্যাখ্যা না করাই ভাল খাইছে )

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চোখ টিপি

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

হে হে হে। স্মার্টফোনের পাওয়ার-এফিশিয়েন্সী বা ব্যাটারী ব্যাকাপ নিয়ে কিছু বললেন না? যে হারে পাওয়ার খায়! পুরাই জলহস্তি। এজন্যে ব্যাটারী চার্জ বাবদ যে খরচ হয় সেটার একটা হিসেব থাকলে বেশ মজা হতো। আর কথা হচ্ছে, প্রয়োজন ব্যাপারটাও আপেক্ষিক। আমার নিজের যেমন প্রয়োজন নাই। জেডটিই এর সেটেই আমার ভালো চলে যায়।

শামীম এর ছবি

ঠিকাছে, ছুটিতে ঢাকায় আসো -- প্র্যাকটিক্যাল দেখবো। হাসি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ঘরে বসে কমেন্ট করছি স্মার্টফোন দিয়ে, তো বুঝতেই পারছেন কতটা জড়িয়ে আছে আমার জীবনে এই প্রযুক্তি!
গতকাল ৭৩ বছর বয়সী শাশুরিকেও কিনে দিলাম লো-বাজেটের এক স্মার্টফোন.... যুগ যাচ্ছে পাল্টে.... বদলে যাচ্ছে জীবনধারা!

.....জিপসি

শামীম এর ছবি

আমিও ঘরে বসে লিখছি, কমেন্টাচ্ছি -- স্মার্ট ফোন ছাড়াই চাল্লু

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কিন্তু আমার ৫ বছর বয়সী ছেলেকেও ঘুম পাড়াচ্ছি হাসি
.....জিপসি

শামীম এর ছবি

খুব খ্রাপ অ্যাঁ , তবে পয়েন্ট নোটেড। হাসি

আমি তো আমার প্রায় ৪ বছর বয়সী মেয়েকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমায় পড়ি লইজ্জা লাগে । তারপর মেয়ে ডেকে তুলে বলে বাবা আরেক ফীডার বানায় দাও ... ...

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি অবশ্য স্মার্ট ফোনের পক্ষে। গত চার বছর ধরে আইফোন ব্যবহার করছি, প্রথমে ৩, এখন ৫। আমার খুব কাজে লাগছে- সেটা ছবি তোলাই হোক বা নেট কানেক্টিভিটিই হোক। তবে সবসময় ভয় থাকে ছিনতাই হলে বা হারিয়ে গেলে এতো টাকা শেষ!

-এস এম নিয়াজ মাওলা

শামীম এর ছবি

ছিনতাই, হারানো এবং চুরি যাওয়া -- তিনটাতেই বেশ ভাল রেকর্ডের অধিকারী আমি ওঁয়া ওঁয়া

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ক্রেসিডা এর ছবি

স্মার্ট ফোনের ও দামদরের রকমফের আছে। ওয়েল, ননব্রান্ড কোন ফোন ৫ ফিগারের টাকা খরচ করা থেকে ব্রান্ড স্মার্ট ফোন কেনাটা শ্রেয়। সেক্ষেত্রে একটু টাকা বেশি পড়বে। স্মার্ট ফোন এর চার্জ মেইনটেন করা একটা আর্ট। এক্ষেত্রেও ব্রান্ড স্মার্ট ফোন কেনটা শ্রেয়। তবে অত্যাধিক দাম দিয়ে কেনাটা মাঝে মাঝে শখের ক্ষেত্রে চলতে পারে।তবে সবসময় সেই সখটা কেনার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। যেটা সকলেই জানে,কিন্তু কেনার সময়ে ঝোকটা এড়াতে পারে না।

যারা ফ্রিল‌্যান্সিয়ের সাথে জড়িতো, তাদের জন্যে এটা একদম আবশ্যক। মেইল চেক, কুইক নটিফিকেশন আরো অনেক ফিচার খুব জরুরি। দেখা যায়, আমি সবসময়ই বাসে বসে জ্যামে আটকা পড়লে স্মার্ট ফোনে ফ্রিল্যান্সেয়ের কাজ কিছুটা সেরে রাখি ফোনে ( ওয়ার্ডে)।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

শামীম এর ছবি

কাজের ধরণটা এর উপযোগীতার একটা নির্নায়ক।

আসলে বিভিন্ন পেশার লোকজন কীভাবে স্মার্ট ফোন থেকে উপকৃত হতে পারে এমন থেমাটিক অ্যাড এবং লেখা দরকার; কিংবা নাটিকা।
হৈ হুল্লোড়, বা ফৈচকামি মার্কা অ্যাড দিয়ে কিস্সু হয় না ... ...

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক অণু এর ছবি

আমি প্রতিদিন হাত থেকে মোবাইল ফেলি, মনে হয় স্মার্ট কিছু আমার জন্য না শয়তানী হাসি

শামীম এর ছবি

তারেক অণু নিজেই যথেষ্ট স্মার্ট লুক। আলাদা করে স্মার্ট ফুনের দর্কারনাই। চোখ টিপি

অন্যদের হিংসায় আপনার ফুন জ্বলে পুড়ে যায় নাই - এই ম্যালা ... ...

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রণদীপম বসু এর ছবি

চূড়ান্ত কথা হলো, শামীম ভাই বুড়া হয়ে গেছেন, তাই জীবন ও জগতের উপর আকর্ষণ কমে যাচ্ছে ! এটা খুবই পরিতাপের বিষয় ! হা হা হা !
তবে স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ যাচ্ছেতাই রকমের দুর্বল ! বিশেষ করে সনি এরিকসন এক্সপেরিয়া'র। আমার জন্যে এইটাই সবচাইতে বড় সমস্যা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু এক্সপেরিয়া না দাদা,স্মার্টফোন সব গুলারই একই দশা। যে ডিসপ্লে,তাতে চার্জ যাওয়াটাও স্বাভাবিক।

---------------
সুবোধ অবোধ

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার তো ভালই কাজের জিনিস মনে হয়। বিশেষ করে পড়ার জন্য দারুণ।

------------------------
সুবোধ অবোধ

শামীম এর ছবি

অ্যাঁ! আমারে নিজের দলে টানার চেষ্টা! খাইছে

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সাকিন উল আলম ইভান  এর ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমার কাছে স্মার্টফোনের প্রয়োজনীয়তাটা মনে হয় প্রধানত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, যেকোন মুহুর্তের আপডেট, সেই সাথে অবসর সময় কাটানোর জন্য তো এ্যাপ্স তো আছেই।

তাছাড়া গত কয়েকমাস যেটা মনে হচ্ছে সেটা হল , বেশি উপকারে লাগছে পড়ার জন্য । পুরোদস্তুর ট্যাবলেট বানিয়ে পিডিএফ পড়তে পাচ্ছি। দীর্ঘসময় পিসির সামনে বসে থাকতে হচ্ছে ।

মোদ্দা কথা, একজন নেটিজেন যে কিনা নিয়মিত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং , সেই সাথে ব্লগ , নিউজ আপডেট ও সেই সাথে তার নিজের লাইফের অনুসঙ্গিক অনেক কিছুই স্মার্টফোনের সাথে মানিয়ে নিতে পারে তার স্মার্ট ফোন একটা কিনে ফেলাই বেটার ।

আর ছিনতাই এর কথা বলছেন , ইদানিং দেশী ব্র্যান্ডের অনেক কম দামে স্মার্ট ফোন দিচ্ছে। এন্ড্রয়েড কথন এর লিঙ্ক যেহেতু দিলেন সেহেতু নিশ্চয় ই এ ব্যাপার টা আপনার অজানা থাকার কথা না।

শামীম এর ছবি

দাম দিয়ে জিনিষ কিনে সেটা দিয়ে উদ্দিষ্ট কাজ না করতে পারলে সেই টাকা পুরাটাই নষ্ট। কমদামী ননব্র্যান্ড বা রিব্রান্ডিংগুলোর ক্যামেরা দিয়ে যে ছবি উঠে, আর জিপিএসের যে রেকর্ড শুনছি তাতে কেনার চেয়ে না কেনাই ভাল মনে হয়েছে। কিনলে ভালটাই কিনতে হবে যেন অনেকদিন পরিবর্তন না করে এবং মাথার চুল না ছিড়ে চালানো যায়। টাকা পয়সার পরিমানটা সমস্যা হলেও অসম্ভব না, কিন্তু আমার ট্রেড-অফটা (অর্থাৎ কী এমন উপকার পাবো যাতে এই খরচটা জাস্টিফাইড মনে হয়) এখনও বুঝতে পারি নাই - কারণ ঘরে এবং অফিসে ডেস্কটপ আছে, ল্যাপটপ আছে, কিন্ডেল আছে। বাসায় + অফিসে ফুলটাইম নেট আছে। কিছুদিন আগে একটা নেটবুকও ছিল -- বেচে দিয়েছি। এ্যাত কিছু আর কানেক্টিভিটি থাকার পর আরেকটা এ্যাত পাওয়ারফুল যন্ত্র কেনা কতটা প্রয়োজনীয় সেটা বিবেচ্য (এটা ব্যক্তি এবং সময় অনুযায়ী পরিবর্তনশীল)।

আমার কাজের ধরণটাই এমন, যে অফিসেই থাকতে হয় (মাস্টারি করি) নাহলে বাসায়। দৌড়ের উপর যারা থাকে বা যাদের কাজের ধরণটাই এমন প্রতিদিন দৌড়াতে হয় কিংবা ট্যূরে যেতে হয় তাঁদের জন্য ল্যাপটপ, ডেস্কটপগুলো সবসময় কাজে লাগবে না কিংবা বেশি ভারী। গত বছরে দুয়েকবার পার্সোনাল কাজে ট্যূরে যেতে হয়েছিলো, তখন একটা স্মার্টফোনের অভাব ফিল করেছিলাম।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রাব্বানী এর ছবি

৪৫-৫০ ডলার ফোন বিল দেয়ার ভয়ে স্মার্টফোন কেনা হল না।

অতিথি লেখক এর ছবি

দেশে স্মার্ট ফোন ব্যবহারে আমি কোন ভাল যুক্তি খুঁজে পাই না, আমি মোটরলা সি১১৩ ব্যবহার করতেছি সেই ২০০৪ থেকে, হারানোর ভয় নাই, চার্জ থাকে অনেক, ছিন্তাইকারী ধরলে ইচ্ছা করলে এই ফোন দিয়ে মাথাও ফাটিয়ে দিতে পারবেন। প্রবাসীদের হিসাব ভিন্ন। তবে আমার একটা খুব হালকা (কিন্তু হাই কনফিগারেশন), আবার চার্জ থাকে অনেক প্লাস লিনাক্স ফ্রেন্ডলি এরকম একটা ল্যাপটপ দরকার। লেনোভো কার্বন এক্স-১ কেনার একটা ইচ্ছা আছে।

-- রামগরুড়

শামীম এর ছবি

এইরকম কিছু একটা হইলে চইলতো (দাম ৫১০ ডলারের আশেপাশে) কিন্তু দেশে দেখিনা।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রুবেল এর ছবি

হ্যাঁ আমার ইমিডিয়েট ছোটভাইয়ের একটা এই জিনিষ আছে (পরবর্তীতে দাম কমার পর কেনা) সেটা তাঁর অনেক কাজেও লাগে -- কারণ তাঁকে সবসময় অফিসিয়াল কারণেই অনলাইন কাজের সুপারভাইজার হিসেবে কানেক্টেড থাকতে হত; মোটরসাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যায়, তাই জিপিএসটাও প্রায়ই কাজে লাগে।

উপরের কথা গুলো আপনার,
যেখানে আপনার ভাইয়ের কাজে লাগে বলে আপনিই মত দিয়েছেন, আবার আপনিই বলছেন স্মার্ট ফোন কি আসলেই দরকার ?
প্রশ্নটা কেমন সাংঘর্ষিক হয়ে হয়ে গেলনা ?

শামীম (অফিসে পাসওয়র্ড মনে নাই) এর ছবি

আপনি হয়তো খেয়াল করেননি, লেখার শুরুতেই বলেছি "এখানে লিখিত বক্তব্য ব্যক্তিগত অভিমত, সকলের জন্য সত্য হবে এমন কোনো কথা নাই" --- অর্থাৎ কাজে লাগবে কি না সেটা ব্যক্তির কাজের উপর নির্ভর করে। যে ব্যক্তির কাজ, রুটি রুজিই অনলাইন কানেক্টিভিটির উপর নির্ভরশীল, তাঁর জন্য স্মার্ট ফোন তো কাজের হবেই। আমি আমার বা যে কোন একজন ইনডিভিজুয়ালের জন্য স্মার্টফোন নেয়ার জাস্টিফিকেশন নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম।

আমি সিভিল ইঞ্জিনয়ার, কাজ বেসিকালি মাস্টারি; আর আমার ছোট ভাই করে ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনে মার্চেন্ট সাপোর্টের কাজ + একটা গ্রুপের অনলাইনের কাজের সুপারভাইজার (USA-র একটা ফার্মের আউটসোর্সিংয়ের কাজ)। ওর আর আমার চাহিদা একরকম নয়। আমি ওর চেয়ে বেশিই কম্পিউটিং করি (ছাত্রদের প্রশ্ন, লেকচার, গ্রেড থেকে শুরু করে প্রফেশনাল লেভেলে রিপোর্ট, ডিজাইন, ক্যাড ইত্যাদি) - কিন্তু সেটা অন্য ধরণের।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়া শেষ করে ভিন্নমত পোষন করতে যাচ্ছিলাম স্মার্টফোন নিয়ে। কমেন্ট লিখতে শুরু করার তিন মিনিটের মধ্যে দেখি চোখের সামনে আমার স্মার্টফোনটা জ্ঞান হারালো (sony xperia). ফলে আমিও এখন ভাবতে বাধ্য হচ্ছি স্মার্টফোনে অভ্যস্ত হওয়ার সমস্যার কথা। এটা থাকায়, মাথার মধ্যে কিসসু রাখি না, যত দরকারী জিনিস সব স্মার্টের মেমোরিতে ঢুকানো আছে। ফলে ফোন মারা গেলে আমিও আধমরা। ফোনের জ্ঞান এখন ফিরেছে, কিন্তু আমি সত্যি আতংকিত!

ভালো কথা, আপনার যুক্তিগুলো ঠিক আছে, কিন্তু বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারে কম আরাম হলেও যদি ওয়াইফাই জোনে থাকেন, তাহলে এটা দুর্দান্ত একটা জিনিস। বিশেষ করে গুগলের সবগুলো সার্ভিস স্মার্টফোন ব্যবহারে আমাকে উৎসাহিত করেছিল। দেখাদেখি ও পড়াপড়ির জন্য ল্যাপটপ খোলার দরকার হয় না।

তবে মোবাইল ফোনে তিনটা বেসিক জিনিস থাকলে স্মার্টফোন না হলেও চলে। মেইল, ইন্টারনেট, গুগল ম্যাপ। আমার আগের স্যামসাং আনস্মার্ট মোবাইলে এই তিনটা থাকা সত্ত্বেও আমি স্মার্টফোন কিনতে গেছিলাম কারণ একটু বড় পর্দায় ইবুক ইত্যাদি পড়ার সুবিধা। কিন্তু স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় অসুবিধা চার্জ। এই জিনিসের উন্নতি না ঘটা পর্যন্ত এটি ঠুনকো স্মার্ট হয়েই থাকবে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

শামীম এর ছবি

চলুক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

স্যার, আপনি চাইনীজ র্স্মাটফোনের জিপিএস নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন সেটা মনে হয় ঠিক না। যে আপনাকে এই কথা বলেছে, দুর্ভাগ্যক্রমে তারটাই হয়তো নষ্ট হয়ে গেছে। আমার দেড় বছরের পুরনো ওয়াল্টনে কিন্তু জিপিএস ঠিকই কাজ করছে।

------
মিলন

শামীম (অফিসে পাসওয়র্ড মনে নাই) এর ছবি

কমদামী সেটে ওটাই তো একটা চিন্তা! কিন্তু ওটাই আমার মূল ইউটিলিটি যার জন্য স্মার্টফোন নেয়ার চিন্তা করি --- তবে সেটা কিন্তু রাস্তা বা ম্যাপ দেখার জন্য না --- জিআইএস রিলেটেড কাজ ও গবেষণাতে ডেটা সংগ্রহের জন্য। ছবির ব্যাপারটাও তাই -- এটা আমার স্মার্টফোন নিতে চাওয়ার পেছনে ২য় কারণ, কিন্তু কমদামী সেটের ছবির কোয়ালিটি পছন্দ হয় না (SLR মানের দরকার নাই, পয়েন্ট এন্ড শুট ক্যামেরার মত হলেই চলে)।

অতিথি লেখক এর ছবি

তবে কম্পিউটারে অকাজ খুব একটা কম করি তা নয় -- যেমন এই লেখাটাও কম্পিউটারে বসেই লেখা।

এই লেখাটা অকাজের মধ্যে পড়ে না, অন্য কি অকাজ করেন সেইটা কন। চোখ টিপি

আব্দুল্লাহ এ এম

কল্যাণ এর ছবি

আঙ্গুল বাগায়া যে কথাটা লিখতে চাচ্ছিলাম, নীড়ুদা উপরে বলে দিয়েছেন। ওই ব্যাটারি নিয়ে ঝামেলা এখনও কিন্তু আছেই।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

শামীম এর ছবি

আমার এখন একটা স্মার্ট ফোন আছে --- আমি এই লাইনে নতুন জন্য স্যামসাং গালাক্সি ইয়াং GT-S6312 কিনেছিলাম। এই ফোনে এখন গড়ে তিনদিন চার্জ থাকে। আগে গড়ে ২০ ঘন্টা চার্জ থাকতো।

প্রথমে মোবাইলের স্ক্রিনে যে রঙীন ছবিটা ছিল ওটা বদলে একটা কালো স্ক্রিন লাগিয়েছিলাম - কারণ দেখেছিলাম স্ক্রিনেই সবচেয়ে বেশি ব্যাটারী খায়। এজন্য স্ক্রিন রেজুলুশনের সমান পিক্সেলের একটা কালো jpg ফাইল বানিয়ে সেটা ডেটা কেবল দিয়ে মোবাইলে নিয়ে সেটাকে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে সেট করে দিয়েছিলাম। এতে শুরুতে স্ক্রিনের জন্য প্রায় ৬০% ব্যাটারী খরচ কমে প্রায় ৪০% এ নেমে এসেছিলো। তবে তাতেও একদিনের বেশি চার্জ যেত না।

এরপর দেখলাম আমার নেটে ১জিবি সার্ভিসের বেশিরভাগই অব্যবহৃত থাকে। বদলে নিলাম ২৫ মেগাবাইট/১০ দিনের প্যাকেজ। এখন মোবাইলে প্রতিদিন গড়ে ২০ মিনিটের বেশি ইন্টারনেট চালাই না। মেইল চেক করার জন্য ইন্টারনেট (ডেটা সার্ভিস) অন করি, চেক শেষে বন্ধ করে দেই (বাসায় ও অফিসে ইন্টারনেট আছেই, সবসময়)। এছাড়া ওয়াইফাই, জিপিএস এগুলো সার্ভিসও বন্ধ রাখি। আর এতেই ব্যাটারী সাশ্রয় হয়েছে। গড়ে ৩ দিন যায়।

আমি বর্তমানে এটা নিয়ে সন্তুষ্ট। আমার প্রয়োজন অনুযায়ী এটা সাধারণ ফোনের মত চালানো যাচ্ছে, আবার চাইলেই স্মার্ট ফিচারগুলো (ক্যামেরা, জিপিএস, ইন্টারনেট...) ব্যবহার করতে পারছি। ব্যাটারীর ত্যাঁদরামীও নিয়ন্ত্রণে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।