আহত ভারতীয় ছাত্র এবং অজিদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ-

কনফুসিয়াস এর ছবি
লিখেছেন কনফুসিয়াস (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৬/২০০৯ - ৭:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার সহকর্মী ভারতীয় ছেলেটা আমাকে উত্তেজিত স্বরে জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি গিয়েছিলে আজ, ফেডারেশন স্কয়ারে?
আমি কী একটা খুটখাট করছিলাম কম্পিউটারে। ওর দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, ঘটনা খারাপ, পাশের চেয়ার দেখিয়ে বসতে বলে জানালাম, না যাইনি, আমি তো সকাল থেকেই এখানে। কী খবর বলো তো?
ও বেশ উঁচু গলায় হড়বড় করে অনেক কথা বলে গেলো। সারমর্ম এরকম, আজ নাকি প্রায় হাজার পাঁচেক ভারতীয় ছাত্র প্রোটেস্ট করেছে সেখানে। পুলিশের সাথে ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয়েছে। প্রায় নাকি মারামারি হবার জোগাড় কয়েকবার। ছাত্রদের অভিযোগ ভিক্টোরিয়ান পুলিশ ততটা সক্রিয় নয় নিরাপত্তার ব্যাপারে।

মাত্র কদিন আগের ঘটনা। একটু রাতের দিকে স্টেশানে নেমে বাড়ি ফিরছিলো কয়েকজন ভারতীয় ছাত্র। সেখানে হুট করেই ওদেরকে আক্রমণ করে বসে বেশ কিছু ককেশিয়ান যুবক। আক্রমণটা হেলা ফেলা করার মত নয়। মেরে ধরে সাথে যা ছিলো সবই কেড়ে নেয়া হয়েছে, এবং সেই সাথে দু জনকে মারাত্মক আঘাত করা হয়েছে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে। আমি সেদিন টিভিতে ভিডিও দেখেছিলাম কিছু, দেখে শিউরে উঠেছিলাম, বুকের মাঝামাঝি থেকে একেবারে পেটের তলদেশ পর্যন্ত চিরে ফেলেছে একজনের। তার অবস্থা ভয়াবহ। টিভিতেই দেখালো যে ডাক্তার বলছে বাঁচবে কি না নিশ্চিত নয়। অন্যজনের অবস্থাও তদ্রুপ।

ঘটনার আকস্মিকতায় লোকজন বেশ চমকে গেছে এখানে। ভারতীয় ছাত্ররা বেশ ক্ষেপে গেছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তারা খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে, অস্ট্রেলিয়রা বর্ণবাদী।
ভিক্টোরিয়ান পুলিশ খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে এই মুহুর্তে, তারা বলছে, ঘটনার কারণ আসলে বর্ণবাদ নয়, এর পেছনে দায়ী এলকোহল।

আমি যা বুঝি, দুই পক্ষই মোটামুটি ঠিক।
আক্রমণ যারা করেছে, তাদের সোজা বাংলায় আমরা জান্কিজ বলি। এরা সারাদিন মদ খেয়ে পড়ে থাকে, মূলত রেল স্টেশানের আশপাশেই। অথবা ড্রাগ নেয় কিছুটা আড়ালে পড়া জায়গাগুলোয় দাঁড়িয়ে। এবং পুলিশ দেখলেই ভদ্র হয়ে যায়, অথবা দৌড়ে পালায়। পুলিশের দাবি সত্য, কারণ আক্রমণ করেছে এরকমই জান্কিজদের একটা দল। কিন্তু ছাত্রদের কথাও সত্য এ জন্যে যে, এই জান্কিজরা ওদের ধরেছে ওরা বাদামী চামড়ার বলেই। সাদা চামড়া হলে কখনোই ধরতো না। এ ক্ষেত্রে আমি বলবো, জান্কিজরা বর্ণবাদী নয় ঠিক, অনেকটা সহজ শিকার হিসেবে বাছাই করেছে ছাত্রদের।

আমি নিয়মিত পত্রিকা দেখতে পারিনি কদিন। এই ঘটনা নিয়ে যা কিছু শোনা, বেশিরভাগই পরিচিত ভারতীয় ছাত্র বা সহকর্মীদের কাছ থেকে।
বিশেষ করে ভারতে নাকি এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা জানি না, দিল্লীতে নাকি অজি রাস্ট্রদূতকে তলব করে তিরস্কার করা হয়েছে। এখানে টিভিতে দেখলাম ভারতীয় রাস্ট্রদুত হাসপাতালে গিয়েছেন আহত ছেলেটাকে দেখতে, এবং পরে নাকি সংবাদ মাধ্যমের বেশ অনমনীয় বক্তব্য রেখেছেন।

ছাত্রদের এরকম প্রতিক্রিয়া আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগেনি একদমই।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজনকে চিনি যারা এরকম হ্যারাসমেন্টের শিকার। আমার পরিচিত একজনকে একবার মেরে হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিলো, ঊনি ছয় মাস হাতে ব্যান্ডেজ বেঁধে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আরেকজনের কথা জানি যাকে স্যাটারডে নাইটে রাস্তায় একা পেয়ে একদল ছেলে পেলে ঘিরে ধরে গায়ে বিয়ার ঢেলে দিয়েছে।
ইন্টারেস্টিং হচ্ছে এরকম ঘটনা কিন্তু হরহামেশাই ঘটছে। বিশেষ করে মূল শহর থেকে একটু দুরে যেসব উপশহর ( সাবআর্ব) রয়েছে, সেখানকার নির্জন স্টেশানগুলোয় এরকম প্রায়শই ঘটে। কিন্তু এবারে ব্যাপারটা নিয়ে এত তোলপাড় হবার কারণ, সম্ভবত, এবারই প্রথম ভিক্টিমকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে মুমূর্ষু অবস্থায়।

এদিক ওদিক থেকে ভারতীয় অনেক ছাত্রের নানা অভিযোগ এতদিনে সবার নজরে এলো।
বেশিরভাগেরই অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। একজন বললো, রাতে বাড়ি ফিরতে গেলে জান্কিজরা উৎপাত করতো, পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় তারা নাকি বলেছে, বাসা বদলে ফেলো!
টাকা না পেয়ে মারধর করেছে, এই অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের উত্তর হলো, সবসময়ে সাথে কিছু টাকা-পয়সা রাখো।
ফেডারেশন স্কয়ারের প্রোটেস্টের সময় অনেক ছাত্রই পুলিশের উদ্দেশ্যে মধ্যমা প্রদর্শন করেছে নির্বিকারে। কেউ কেউ বলেছে, পুলিশ যদি না পারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাহলে সেটা খোলাখুলি জানিয়ে দিক, আমরা নিজেরাই সেটার ব্যবস্থা করবো।

পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে আসলেই মাঝে মাঝে অবাক লাগে। আমার বাসায় একবার চুরি হয়েছিলো বেশ অনেকদিন আগে। পুলিশ ডাকার পরে ওরা আমাকেই হাজারো প্রশ্ন করে প্রায় নাস্তানাবুদ করে ফেলেছিলো, তারপর লম্বা সময় ধরে দরজা জানালা থেকে হাতের ছাপ টাপ নিয়ে চলে গিয়েছিলো। এরপরে আর কোন হদিশ পাইনি।
এ দেশে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস পরীক্ষা করা আর পার্কিং ফাইন দেয়া ছাড়া পুলিশের সত্যিই আর কোন কাজ আছে কি না আমার প্রায়শই সন্দেহ হয়।

এই ঘটনাটায় লোকেদের টনক নড়েছে বোঝা গেলো। নড়েছে সরকারেরও, অবশ্য তা ছাড়াও উপায় নেই। যদ্দুর জানি, শিক্ষা "রপ্তানী" করে, অর্থাৎ এই বিদেশী ছাত্রদের কাছ থেকেই প্রতি বছর বিরাট অংকের টাকা আসে অস্ট্রেলিয়ায়, যাদের বেশিরভাগই ভারতীয়।

তাই আর্থিক লাভের কারণেই হোক, অথবা নিজেদের বর্ণবাদী অপবাদ ঘোচানোর জন্যেই হোক, আমি সত্যিই আশা করছি এবারে এর একটা সমাধান এদেশের সরকার নিশ্চয়ই খুঁজে বের করবে।


মন্তব্য

আরিফুর রহমান এর ছবি

আসলে বিদেশ বিভূঁয়ে আমরা বাদামী চামড়ারা কেনো জানি একটু মাথা নিচু করে থাকতে চাই। এই 'আমি ছোট, তাই আমাকে মেরোনা' এটিচ্যুড সহমর্মিতা নয়, বরং ঘৃনার উদ্রেক করে সাদাদের ভেতরে।

তাই টার্গেট প্র্যাকটিসের জন্য সাধারনত বাদামীরাই যুতসই তাদের কাছে।

প্রতিকার হলো.. 'চিন আপ' রাখা।
অথবা... বাটে পড়লে মাপ বুঝে দু'কথা শুনিয়ে দেয়া। (এটা কাজ দেয় দেখেছি। উদ্ধত বদমাশ লাঠির বক্তব্য পরিষ্কার বোঝে। )

কনফুসিয়াস এর ছবি

ঠিক বলেছেন। ব্যাপারটা আমিও দেখেছি। শক্তের ভক্ত নরমের যম- একথাটা আসলে সব জায়গায় সবসময়েই চলে।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই 'আমি ছোট, তাই আমাকে মেরোনা' এটিচ্যুড সহমর্মিতা নয়, বরং ঘৃনার উদ্রেক করে সাদাদের ভেতরে।
ঘৃনা না হলেও ব্যাপারটাকে তারা ভালো করে দেখেনা বলে মন হয়।

স্নিগ্ধা এর ছবি

পড়ে খুবই মেজাজ খারাপ হলো! আচ্ছা, অজিরা কি শুধু বাদামী চামড়ার মানুষদের সাথেই এরকম করে, নাকি বিদেশী হলেই? মানে চীনা বা অন্যান্য এশিয়ানদের কী অবস্থা?

কনফুসিয়াস এর ছবি

এটা নিয়ে পোস্টে হয়তো আরেকটু বিস্তারিত লেখা উচিৎ ছিলো আমার।
এতদিন ধরে আমি যতটুকু বুঝেছি, অজিরা মোটা দাগে বর্ণবাদী নয়। আমি অন্তত এরকম কোন অভিজ্ঞতার মুখে পড়িনি। দু একটা ব্যাতিক্রম হয়তো আছে, কিন্তু সেটা সবখানেই আছে। আমরা বাদামী চামড়ার লোকেরাও কিন্তু একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে বর্ণবাদী, সাদা বা কালোদের ব্যাপারে। অজিরা তার চেয়ে খুব বেশি কিছু নয় বলেই আমার ধারণা।
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমরা বা যে কোন 'রঙের' মানুষই বর্ণবাদী - একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে, বা কিছু নির্দিষ্ট পরিবেশে। অজিরা নিশ্চয়ই তার চাইতে আলাদা কিছু না। কিন্তু, যেখানে এতগুলো ভারতীয় ছাত্র একসাথে প্রতিবাদ করার বা তাদের এতোদিনের সঞ্চিত ক্ষোভ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে কিছুটা বোধহয় সমস্যা থাকতেই পারে। এটা অজি না হয়ে আমেরিকান বা বাংলাদেশীও হতে পারতো, একই কাজই হয়তো করতো - কিন্তু কাজটা করা হয়েছে/হচ্ছে যখন তখন সেটাই আসল।

আমি নিজেও, সত্যি বলতে, আমেরিকাতে সেভাবে কোন বর্ণবাদিতার শিকার হই নি। কিন্তু, কালো বা গরীব আমেরিকান হওয়ার কারণে আমারই পরিচিতরা একই শহরে সেই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে, তাদের নিজেরই দেশে। অতএব, বলার কিছুই নেই।

দিগন্ত এর ছবি

আমার মনে হয় আমেরিকায় ভারতীয়, বাংলাদেশী ও পাকিস্তানীদের খুঁটির জোর আছে, সেটা অস্ট্রেলিয়াতে এখনও তৈরী হয়নি। আমেরিকাতেও ইমিগ্রান্ট বিদ্বেষ আছে - তবে সেটা চামড়ার রং-এর ওপর নির্ভরশীল নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

আমরা বাদামী চামড়ার লোকেরাও কিন্তু একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে বর্ণবাদী, সাদা বা কালোদের ব্যাপারে।

- আপনি সঠিক কিন্তু এখানে বাদামীরা মাইনরিটি, তাই তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাকে এক বন্ধু অভিযোগ করে যে অস্ট্রেলিয়াতে চাকরি পেতে বা পদোন্নতি করতে চামড়ার রঙ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, মানে একই যোগ্যতাপূর্ণ সাদা আর বাদামী থাকলে সাদা আগে যাবেই - এ নিয়ে আপনার কি মত?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সিরাত এর ছবি

দুঃখজনক! অসিদের কেন জানি এভারেজ হোয়াইটদের চেয়ে একটু বেশি রেসিস্ট বলে মনে হয় আমার। ক্রিমিনাল হেরিটেজের জন্য কি না কে জানে।

আশা করি টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপে ভারত অসিদের উড়িয়ে দিয়ে প্রতিশোধ নেবে!

মূলত পাঠক এর ছবি

ক্রিমিনাল হেরিটেজের ব্যাপারটা কী?

দিগন্ত এর ছবি

আমারও অনেকটা একই মত। তবে ক্রিমিনাল হেরিটেজের জন্য আশাকরি নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এসব খবর পড়তে একদমই ভাল্লাগে না!! কেন যে মানুষ এমন করে!!

হিমু এর ছবি
প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পুলিশের সংশোধন দরকার।

তুলিরেখা এর ছবি

কী আর বলবো!

-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

অস্ট্রেলিয়ান পুলিশদের মতন অলস প্রজাতির পুলিশ কোনও দেশে আছে বলে আমি মনে করিনা। সিডনীতে এসব জাঙ্কিজদের পাশাপাশি আইল্যান্ডার এবং লেবানিজদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতন। পুলিশ বরাবরের মতন সবসময়ই নিষ্ক্রিয়। কিছুদিন আগে একটা ছোটখাটো সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। এর পেছনে আসল ঘটনা তারা তদন্ত করে বের করতেই পারেনি। তাও প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেল। তাহলে পুলিশ গুলা করে কি আপনারাই বুঝে নিন।
------------------------------------------------

--------------------------------------------------------

দময়ন্তী এর ছবি

সাবধানে চলাফেরা করিস৷
------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

এনকিদু এর ছবি

যতই দিন যায় ততই একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয় আমার কাছে । হয় সারা পৃথিবী বাংলাদেশের মতই খারাপ আর নাহয় বাংলাদেশ পৃথিবীর আর সব দেশের সমানই ভাল ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

দ্রোহী এর ছবি

আমেরিকায় মাসখানেক থাকলেই এই কথাটা উপলব্দি করা যায়।

আমি এখনো বুঝতে পারি না ঠিক কী কারণে আমেরিকা প্রথম বিশ্ব ও বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ব্যাপারটা প্রথম আঁচ করি আমার বন্ধু যখন ওহাইওতে চলে গেলো। যাওয়ার মাস কয়েক পরের ঘটনা। রাত আটটা নাগাদ সে তার বন্ধুর সাথে বাসায় ফিরছিল। হঠাৎ দুই কালো-আমেরিকান তাদের উপর চড়াও হয়। কোন কারণ ছাড়াই কিল ঘুসি, লাথি। মার খেয়ে কোনমতো জান নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছে।

সেদিন মনে পড়ে গিয়েছিল হ্যামিলটনের সেই দিন গুলো। এক রাতে বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেয়ে প্রায় মাঝরাত হয়ে গেল। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে না থেকে হাঁটা ধরলাম। ২০ মিনিটের দূরত্ব। মেইন স্ট্রীটর উপর সোডিয়ামের হলুদ আলোয় একটা ঘোলা ঘোলা ভাব চারিদিকে। সুনসান সিল্কি নীরবতা। একটু দূরে আসতেই দেখি রাস্তার অদূরে একজোড়া হরিণ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে।

বন্ধুকে বললাম, দোস্ত, কানাডা ছেড়ে কোথায় গেলা তুমি। এখানে দেখতা হরিণ আর ওখানে খাও মাইর!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দেখলাম বিবিসিতে। আমি বাকরুদ্ধ। তোমরা অন্তত সাবধানে থাকো। আক্রান্ত হওয়ার আগমুহুর্ত পর্যন্ত সবাই নিরাপদে থাকে। কিন্তু সেটা কোন নিরাপদ বাস্তবতা না।



অজ্ঞাতবাস

সাইফ এর ছবি

খুবই ভয়ংকর খবর, অজির মামুদের সমস্যা কি? আমার হিসাবে আমেরিকার পুলিশ যথেষ্ট কার্যকরি।

আমার একবার রাস্তায় গাড়ী নষ্ট হয়ে যায়, ট্রানসমিশন ডেড, পুলিশ ডাকলাম, কারন আর কাউকে চিনি না, এক মামু আসলো, আমাকে বলল, কি ব্যাপার, বললাম, গাড়ী ডেড, স্টার্ট হয় কিন্ত চলে না। মামু বলল, কি করতে চাও, বল্লাম বুঝতেছিনা, ষে বলল, হয় বাসায় যাও আর না হলে টোট্রাক ডেকে দেই, ততদিনে টো ওয়ালাদের হাতে অন্যদের ধরা খাওয়ার কথা শুনে ফেলেছি, তাই বল্লাম, আমাকে একটু বাসায় নামিয়ে দাও, আমার মেয়েও ছিল আমার সাথে, আমাকে পুলিশের গাড়ীতে করে বাসায় নামিয়ে দিল, তআরপর বলে, তোমার তো কারসিট আছে, তুমি তোমার মেয়েকে নাও, আমি তোমার কারসিট নিচ্ছি, এই বলে সে আমার বাসার দরজা পর্যন্ত কারসিটটা দিয়ে গেল।

এজন্য আমি বলব, আমেরিকাতে আমরা ভাগ্যবান, কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও গড়ে এখানে পুলিশ ভালো।

মামুন হক এর ছবি

বর্ণবাদের স্থায়ী কোন সমাধান জানা নাই, তবে এটুকু খুব পরিস্কারভাবে জানি যে বর্ণবাদী শালারা ভিত্রে ভিত্রে একেকটা ভীতুর ডিম। এরা সাংঘাতিক রকমের কমপ্লেক্সে ভোগে নিজেদের নিয়ে। এবং এর মোকাবেলা খুব কঠিন হাতে করতে হয়, মিন মিন করলেই মাইর খাইতে হবে। তবে মদোমাতাল হিংস্র দলবদ্ধ বর্ণবাদীদের একলা বাহাদুরী দেখানোর চাইতে সাবধানে চলাফেরা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
নিজে দেশে বিদেশে চলতে গিয়ে বেশ কয়েকবারই এর শিকার হইছি, বর্ণবাদী দল বল দেখলে এড়িএ গেছি, কিন্তু একলা কোন বাঞ্চোৎ অপমান করতে আসলেই ডাবল জবাব দিছি। বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে আমিও চরম বর্ণবাদী।
অনেক কথা। কনফু ভাই অনুমতি দিলে আলাদা পোস্টে কইতাম। তয় আমার কিচ্ছায় ভায়লেন্স আছে, ঔদ্ধত্যও আছে, রিস্ক অ্যান্ড রিটার্ন ও আছে। সার কথা হইল কুনদিন পিডা খাইনাই, কিন্তু চান্স বুইঝা পিডা দিছি।

এনকিদু এর ছবি


বর্ণবাদের স্থায়ী কোন সমাধান জানা নাই

আমি একটা সমাধান প্রস্তাব করতে পারি । দুনিয়ার সমস্ত বাদামী, সাদা, কালো, বে নি আ স হ ক লা রঙের নারী ও পুরুষেরা একে অপরের সাথে জোড়া বান্ধা শুরু করে দিক । কয়েক প্রজন্মের মধ্যেই পৃথিবীর চেহারা বদলায় যাবে । সিস্টেমটা ঠিক মত চালাইতে পারলে দশ প্রজন্ম পরে পৃথিবীতে সবাই বাদামী রঙের মানুষ হয়ে যাবে ।


আমার এক চাচা আমেরিকায় গিয়েছিলেন লেখাপড়া করতে, আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের কথা । ক্লাসে বিশালদেহী এক সাদা পোলা ছিল । প্রথম দিন থেকেই নাকি বলত, "you know what your color is, its the color of shit" । একদিন বিরক্ত হয়ে চাচা বললেন, "and you are pale like a shit eating maggot " । তারপর থেকে নাকি আর কিছু বলত না ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সচেতনা এর ছবি

এই নিয়ে কিছু লিখবো ভাবছিলাম। কনফুই লিখে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় এখন যে ঘটনাগুলো ঘটছে এ নিয়ে যে হৈচৈ হচ্ছে সেগুলোর দিকে তাকিয়ে একটা কথা কিন্তু আমার মনে হচ্ছে যে এগুলো একেবারে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভারতীয় ছাত্ররা এখন এত বেশী পরিমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা চাকরীর জায়গায় দখল নিচ্ছে স্থানীয় ছাত্ররা প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ছে বা একেবারেই পারছেনা। আর এই যে রাস্তাঘাটে ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্যবহার কিন্তু শুধুমাত্র সফট টার্গেট নয়।

আমি যেখানে থাকি সেটা মেলবোর্ণের মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কাছে। স্বভাবতঃই চারপাশে ভারতীয় ও বাংলাদেশী ছাত্রদের ভীড়। পাবলিক লাইব্রেরীতে বসে পড়া আজকাল আমি নিজেই ছেড়ে দিয়েছি কেননা জায়গা পাওয়া দুষ্কর। চীনেও আছে এদিকে প্রচুর। কিন্তু ভারতীয়দের প্রতি গাত্রদাহের প্রধান কারণই হল, চাকরী ক্ষেত্রে বিশেষ করে কল সেন্টার গুলোয় এখন প্রায় সব ভারতীয় ছাত্ররা, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের প্রায় সব ড্রাইভার, সুপার মার্কেটের চেক আউট ওপারেটর থেকে শুরু করে সার্ভিস স্টেশনের সব জায়গায় এখন ভারতীয় বা অন্য বাদামী চামড়ার ছেলে/মেয়েরা। আগে যেখানে এদেশি ছেলেমেয়েরা কোনরকমে স্কুল পাশ করেই কোন দোকানে চাকরী পেয়ে যেত সেখানে এই মারাত্মক প্রতিযোগীতায় তারা সহজেই পিছিয়ে পড়ছে। প্রথমতঃ বেশিরভাগ ভারতীয়ের ইংরেজী ভাল সেই সাথে তাদের কাজের সময় নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই। আবার অনেকে আসে যারা হয়তো সম্পূর্ণ নিজের পরিবারের খরচে পড়াশোনা করে। অনেকের আবার জামাকাপড়, আনুষঙ্গিক জিনিষপত্র দেখলেই বোঝা যায় তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান। এসবও যে খুব এফেক্ট করে সেও বোঝা যায়। বিদ্বেষ একেবারে বিশ্রিরকমভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে এইসব নানান কারণে।

এদিকে এখানের আইটি সেক্টর, ফিনান্সিয়াল সেক্টর প্রায় ভারতীয়দের দখলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধ্যাপকদের একটা বড় অংশ ভারতীয়। ভারতীয়রা সব থেকে শিক্ষিত গ্রুপ। এখন এই সমস্ত গুলোও এদের গাত্রদাহের কারণ। আর পড়াশোনার জায়গায় যে ভারতীয়রা ভাল ফল করে সেও বলাই বাহূল্য। কিন্তু যারা পড়াশোনা করেনা বা যাদের কোন রকমে এখানে থেকে যাওয়ায় উদ্দেশ্য সেই সমস্ত ভারতীয়রাও কোন কাজ করতেই পেছপা হয়না। হোয়াইট কালার বা অন্যান্য ম্যানুয়াল কাজের সব জায়গার কমপিটিশনে এদেশিরা মার খাচ্ছে। আবার ভারতীয় টেক এওয়েতে(রেষ্টুরেন্ট)/গ্রসারিতে ভরে গেছে শহর। ব্যবসা বাণিজ্যেও ভারতীয়রা ভালই করছে।

যদিও একদল ভারতীয় ছাত্রদের সম্পর্কে অবশ্যএকটা বড় অভিযোগ যে তারা পাব্লিক প্লেসে জোরে কথা বলে, রুড, সোশ্যাল স্কিল নেই। এখন রাস্তাঘাটে আমি নিজেও দেখেছি যে অনেক ভারতীয় ছাত্ররা সত্যিই খুব রুড। এই সব কারণেও তারা টার্গেট হচ্ছে। কিন্তু সবাই তা নয়, তাছাড়া এজন্য কোনরকম অত্যাচারই যাস্টিফায়েড নয়। কিছুতেই না। এখানের ছেলেমেয়েদের কথাবার্তাও মোটেও সব সময় ভাল না।
কিন্তু, এই অবস্থা এখানে মোটেও ছিলনা। আমি বহুবছর এই দেশে, কখনোও কোন অসুবিধে হয়নি। এখানে যতটা সেফ ফিল করি আমি নিজের দেশেই সেভাবে ফিল করিনা। আর বললে হয়তো কেউ বিশ্বাস করবে না, আমি নিজে দুবার হ্যারাসড হয়েছি, দুবারই ভারতীয় ছাত্রদের কাছে। একবার গাড়িতে তেল নিতে গিয়ে। সার্ভিস স্টেশনে দুটো ভারতীয় ছাত্রদের কাছ থেকে আমি যা বাজে ব্যবহার পেয়েছি বলা যায় না। ওই দোকানে আমি বহুদিন ধরেই যায়। আর একবার একটা ক্যাবে আমার সাথে ভারতীয় ছাত্র ড্রাইভার এত বাজে ব্যবহার করেছিল, শেষকালে যখন বুঝলো যে আমি ওর থেকে রাস্তাঘাট ভাল চিনি ও আমি ওর আইডি নাম্বার টুকে নিলাম তখন ভদ্র হল। আমি কমপ্লেন করবো ভেবেও করিনি তারা শুধু ভারতীয় ভেবে। আমি নিজে অনেক দোকানে দেখেছি যে ভারতীয়রা ভারতীয়দের সাথেই কিন্তু বেশ খারাপ করে কথা বলে। অনেক ভারতীয় ছেলেমেয়ের মধ্যেই নিজের দেশের লোকজনকে বোকা বা আনস্মার্ট ভাবার একটা টেন্ডেসি আমি দেখেছি। কিন্তু বেশিরভাগ ছাত্ররাই এরকম একেবারেই নয়। যদিও অনেকেরই কালাচারাল অ্যাডাপ্টেশন সম্পর্কে ধারণা নেই বলেই আমার মনে হয়। আমাদের দেশেও কিন্তু বিদেশের লোকজনের কাছ থেকে আমরা এক্সপেক্ট করি আমাদের দেশের কালচার সম্পর্কে রেস্পেক্টফুল থাকুক।

তবে আজকাল এদেশি ছেলেমেয়েরা দোকানে ইগ্নোর করছে প্রায়ই, আগে এরকম ছিলনা। একেবারেই না। আর রাস্তাঘাটেও দেখছি এদেশের লোকেরা দেখলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই দুর্দিনের বাজারে ভারতীয়রা যে টার্গেট হয়ে উঠছে বুঝতেই পারছি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও আমি বলবো যে পরিবর্তন খুব চোখে পড়ার মত। আগে আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি পুলিশের তৎপরতা। আজ থেকে প্রায় বছর পনেরো আগে একবার ট্রেনে ফিরছি হঠাৎ বাইরে থেকে পাথর এসে পড়ে আমার চোখের পাশে। একটা বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে সেদিন বেঁচে ফিরেছিলাম। যারা করেছিল তারা টিনএজার স্কুলের ছেলেমেয়েরা। এদের এই মজার খেলায় তার কিছুদিন আগেই একজন অসি নিজের গাড়িতেই মারা যান। আমার ক্ষেত্রে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ট্রেন বন্ধ করে পুলিশ-অ্যাম্বুলেন্স কেমন করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিল ভাবলে আমার এখনও অবাক লাগে। তারপর থেকে অন্তত এক মাস ঐ স্টেশনে পুলিশ পাহারা ছিল। এখনোও প্রায়ই এদিকের লাইনে পুলিশ থাকে। এখন পুলিশ যে এরকম অ্যালুফ ব্যবহার করছে আমিও দুয়েকজনের কাছে শুনলাম। আমার নিজের পুরো ব্যাপারটাকে জাতিগত বিদ্বেষ বলতে বাধছে। কেননা আমি নিজে সেভাবে টার্গেট হইনি। বরং, অন্যান্য মাইগ্রেন্টদের মধ্যে বিদ্বেষ অনেক বেশি দেখেছি। কিন্তু এই ব্যাপারটাকে উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছেনা। কোথাও কিছুতো হচ্ছে। আমরা নিজেরা সেভাবে এসবের সংস্পর্শে নেই তাই বোঝা হয়তো সম্ভব হচ্ছেনা পুরো ব্যাপার। কনফুর কথামত, এটা ঠিক অষ্ট্রেলিয়ান সরকার নিজের স্বার্থেই আশাকরি একটা নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে বা করা উচিৎ। কেননা, এই ভারতীয় ছাত্রদের কল্যাণেই আজ বিশ্ববিদ্যালয় বা এডুকেশন সেক্টরের মোটা আয় হয়। আর অন্যান্য সার্ভিস ও যে কোলাপ্স করে যাবে সেও ঠিক। ভারতীয় ছাত্রদের এককাট্টা হয়ে এই মাথাতুলে দাঁড়ানো খুবই জরুরী বলেই মনে হয়েছে। যতই নানারকম অ্যানালিসিস করে নিজেদের বোঝানোর চেষ্টা করিনা কেন। আর ভবিষ্যতে যদি সরকার স্ট্রং স্ট্যান্ড না নেয় তাহলে এদের ভাঙা হাট জোড়া দেওয়ার কেউ থাকবেনা। কোন ভরতুকি দিয়েই ঠেকিয়ে রাখা যাবেনা এই পরগাছা দেশকে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভিক্টোরিয়া পুলিশের ব্যাপারে জানি না, কিন্তু এনএসডব্লিউ পুলিশের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের ভিডিও প্রমাণ টিভিতে প্রকাশ পেয়েছিলো। একবার সিডনীর মতো জনারণ্য স্থানেও আমার এক বন্ধুকে আক্রমন করা হয়েছিলো। টাকা, গলার সোনার চেইন, মোবাইল- সবই কেড়ে নিয়েছিলো কয়েকজন অজি ছেলে অন্য কয়েকজন লেবানীজের সহযোগিতায়। কিন্তু পরিস্থিতি তো এখন অনেক ভিন্ন হবার কথা। আগের তুলায় অভিবাসীর সংখ্যা (বিশেষতঃ উপমহাদেশীয়) অনেক বেশি। ভারতীয়রা এমনকি ইমিগ্রেশনেও কাজ টাজ করে। তো এই অবস্থায়ও যদি বর্ণবাদের শিকার হতে হয় তাহলে তো খুবই হতাশার কথা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সচেতনা এর ছবি

সেটাই হচ্ছে কথা, এত ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পরেও জাতী বিদ্বেষের শিকার হতে হচ্ছে কেন? আগে যেখানে যেকোন অফিসে বা কাজের জায়গায় একজন/দুজন ভারতীয় দেখা যেত সাকূল্যে। এখন সেখানে ছেয়ে গেছে ভারতীয়রা। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, গ্রীক বা ইটালিয়ান কিংবা অন্য মাইগ্রেন্টরা যারা এখানে বহুদিন ধরে আছে তাদেরও ভারতীয়দের মত সমঅনুপাতে দেখা যায়না অফিস বা অন্য কোন উচ্চপর্যায়ের কাজকর্মে। সেখানে ভারতীয়রা অনেক বেশি সংখ্যায় প্রত্যেকটা জায়গায়। হাসপাতালে গেলে ডাক্তার থেকে শুরু করে নীচুতলার কর্মীরা অনেক বেশি সংখ্যায় ভারতীয় বা অন্য বাদামী মানুষজন। এইসবগুলোয় গাত্রদাহর প্রধান কারণ। চীনেদেরও এরা দেখতে পারেনা, যেহেতু চীনে জিনিষপত্র বাজার জুড়ে আছে। চীনেদের ওপর ঝামেলা হচ্ছেনা কেননা চীনেরা অনেক বেশি গোষ্ঠিবদ্ধ এখানে, একেকটা এরিয়ায় শুধু চীনে অন্যান্য সব দেশের মতই নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। ভারতীয়রা সেভাবে কখনও এই পরিস্থিতিতে পরেনি আগে। চীনা, গ্রীক, ইটালিয়ান এছাড়া আরও অন্যান্যরা নিজেরা নিজেদের মত করে থাকে। বহু বছর ধরে এখানে থাকলেও একটাও ইংরেজী জানেনা এরকম চীনে, গ্রীক বা অন্যান্য দেশের লোকজন প্রচূর আছে এখানে।

তাছাড়া ভারতীয় পুরোন যারা এখানে সেটলড তাদের বাইরের সাথে যোগাযোগ খুব কম কাজকর্মের বাইরে। অফিসে বা কাজের জায়গায় তো কেউ আর এরকম টার্গেট হচ্ছেনা। তারাও অন্যান্যদের মতই টিভি/কাগজের মধ্যেই যা খবর পাচ্ছে। তাদের ছেলেমেয়েরাও এখানে জন্মে, এখানেই বড় হচ্ছে এদেশিদের মত তাই তারাও সেভাবে লক্ষ্য হচ্ছেনা। কিন্তু হচ্ছেও যে না কে জানে? বাইরে তো আসছেনা কোন খবর। যদিও আমার পরিচিত বন্ধুদের ছেলে-মেয়েদের দেখছি, কখনও শুনিনি বা দেখিনি কোনভাবে তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে।

নতুন ভারতীয় ছাত্রদের যে টার্গেট করা হচ্ছে যেহেতু তারা বাইরে এক্সপোসড অনেক বেশি পুরোন অভিবাসীদের তুলনায়। এখন এই কটা খবর বাইরে জানতে পেরে বুঝতে পারছি যে হয়তো আরো অনেক বেশি সংখ্যায় ঘটছে এই ঘটনা। তবে, এইসব যত বেশি বাইরে যায় ততই মঙ্গল। এদেশের কাগজে তো এগুলোকে শুধুই দুষ্কৃতির কান্ড বলে চালানোর চেষ্টা হয়েই যাবে। এখন টাস্কফোর্স তৈরী করে বিভিন্ন অ্যাকশন প্ল্যান নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে দেখা যাক কতদূর কী হয়। তবে এভাবে চলতে পারেনা।

আর এরকম হতে থাকলে ফোর্সড ক্রিমিনালের সংখ্যা বাড়বে, কতদিন মাথা ঠান্ডা রেখে থাকতে পারবে মানুষ এরকম পরিস্থিতিতে। যেমন, গতবছর যে ট্যাক্সি ড্রাইভার ট্যাক্সি চালিয়ে দিয়ে মেরে ফেললো একটি ছেলেকে সেটাও তো ছেলেগুলো ট্যাক্সিতে চড়া ইস্তক ড্রাইভারকে উত্তেজিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এখন সেই ড্রাইভার জেলে। শেন ওয়ার্ন ঘটনাটি নিজের চোখে দেখে এগিয়ে না এলে সাংঘাতিক শাস্তি হতো। এখন তবু প্রাণে বেঁচে আছে।

তানবীরা এর ছবি

একজন বললো, রাতে বাড়ি ফিরতে গেলে জান্কিজরা উৎপাত করতো, পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় তারা নাকি বলেছে, বাসা বদলে ফেলো!
টাকা না পেয়ে মারধর করেছে, এই অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের উত্তর হলো, সবসময়ে সাথে কিছু টাকা-পয়সা রাখো।

যাক বাংলাদেশী পুলিশের উপর ভক্তি ছেদ্দা বেড়ে গেলো

---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।