স্বপ্নের সমীকরণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বুধ, ০২/১২/২০০৯ - ২:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কিছুদিন থেকে আমি চেষ্টা করছি স্বপ্নকে বর্ণনা করার একটা স্টাইল খুঁজে বের করতে। বিশেষ করে গল্পের জন্য। মানুষ স্বপ্ন দেখার সময় যেভাবে দেখে কোনোভাবেই সেটাকে অন্যের কাছে বর্ণনা করতে পারে না

বর্ণনা করতে গেলে দেখা যায় পুরো স্বপ্নটা একটা সরল কাহিনী হয়ে যাচ্ছে- আমি দেখলাম আমি ডুবে যাচ্ছি। তারপর অমুককে দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে। কিংবা দেখলাম ওরকম একটা জায়গায় গেছি। অনেক লোক। কাউকে চিনি না। হঠাৎ সবাই আমার দিকে তেড়ে এলো...

এরকমই হয়। কিন্তু দেখার সময় এর অনেকগুলো সূক্ষ্মতা থাকে
থাকে সিকোয়েন্স এবং এক আশ্চর্যরকম চেঞ্জওভার
এক ঘটনা থেকে আরেক ঘটনায় যাবার মেকানিজম। কিন্তু ওটা শুধু দেখাই যায়। বর্ণনা করা কঠিন

গল্পের জন্য স্বপ্নের এই সিকোয়েন্স এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর একটা সমীকরণ তৈরির চেষ্টা করছি আমি। কয়েকটা বৈশিষ্ট্য বোধহয় খুঁজে পেয়েছি। সেগুলো হলো:

০১
অনুভূতিহীনতা

স্বপ্নের ঘটনাগুলোতে মানুষের কোনো অনুভূতি থাকে না
যন্ত্রণা- ব্যথা কষ্ট কিছুই থাকে না। গুলি খেয়ে হয়তো মরছি কিন্তু কোনো ব্যথা নেই

০২

নন-জাজমেন্টাল

স্বপ্নে কোনো জাজমেন্ট থাকে না। অমুক এটা করছে কিন্তু সেটা খারাপ কী ভালো তার কোনো বিচার থাকে না। যুক্তি কিংবা তর্ক থাকে না কোনো বিষয় নিয়ে

০৩

আবেগশূন্যতা

স্বপ্নের মধ্যে ঘৃণা-ভালোবাসা- বন্ধুত্ব- শত্রুতা- ভয় এগুলো থাকে না

০৪

সম্পর্কহীনতা

স্বপ্নের মধ্যে পারিবারিক বা সামাজিক সম্পর্কগুলো কাজ করে না
বাবাকে দেখে বুঝি ইনি বাবা। কিন্তু তিনি বাবার মতো আচরণ করেন না
আর অপরিচিত লোকের সাথে কী সম্পর্ক। সেটা ঠিক করা থাকে না

০৫

সর্বদ্রষ্টা

যিনি স্বপ্ন দেখেন তিনি ওখানকার সবকিছুই দেখেন
নিজে খেলোয়াড় হয়েও নিজেই দর্শক
নিজের মৃত্যু স্বপ্নের মধ্যে নিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখার সুযোগ থাকে

০৬

বার্ডস আই সিকোয়েন্স

বাজ পাখি যখন আকাশে উড়লে তার ছায়া যেমন পুকুর থেকে জঙ্গল- জঙ্গল থেকে মাঠ- মাঠ থেকে বাড়ি; একটার পর একটা বিনা বাধায় এবং একই গতিতে পার হয়ে যায়; স্বপ্নের সিকোয়েন্সগুলোও ঠিক তেমনি বাজপাখির ছায়ার মতো সমতল থেকে টিলা; ঘর থেকে উঠান; দেশ থেকে বিদেশ একই গতিতে চলে যায় বিনা বাধায়

সমতলের কোনো উত্থান পতন তাকে বিন্দুমাত্র বাধাগ্রস্ত করে না

০৭

জুম আউট

ক্যামেরার লেন্স কোথাও জুম ইন করে আস্তে আস্তে আউট করলে যেমন ফ্রেমের মধ্যে চারপাশ থেকে অবাধে অবজেক্টগুলো ঢুকতে থাকে; স্বপ্নেও তেমনি কারেকটারগুলো চারপাশ থেকে ঢুকতে থাকে
চেনা অচেনা
সাবজেক্টের সাথে সম্পর্কযুক্ত কি সম্পর্কহীন

আর এক্ষেত্রেও সব সময় ফোকাসে থাকে যে স্বপ্ন দেখছে সে (জুম ইন সাবজেক্ট)

০৮
চেনা অচেনা

সব স্বপ্নেই একটা না একটা পরিচিত জিনিস- স্থান না হয় মানুষ থাকেই
সম্পূর্ণ অপরিচিত স্বপ্ন হয় না

০৯

ওভার ফ্লো

ভাসান বন্যার সময় যেমন পুকুর মাঠ জমির আল উপর দিক থেকে সমান হয়ে যায়। মনে হয় সমান গভীর পানি। কিন্তু পা দিতে গেলেই টের পাওয়া যায় ভাসান পানির নিচে কোথাও গভীর কোথায় ঠাঁই

স্বপ্নের মধ্যেও এরকম একটা উপরে সমান আর ভেতরে অসমান অবস্থা থাকে

১০

আধাবাস্তব

স্বপ্ন দেখার সময় কোনো ঘটনাকেই পুরো অবাস্তব মনে হয় না
একটু খাপছাড়া কিন্তু বেসুরো নয়। সবই লজিক্যাল কিন্তু নন-আর্গুমেন্টাল


স্বপ্নের বৈশিষ্ট্য নিয়ে এগুলো স্রেফ আমার কিছু অবজারভেশন
এগুলোই সঠিক কি না জানি না
ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জিনিসগুলোকে মোটামুটি এভাবেই একটা লাইনআপে দাঁড় করিয়েছি আমি

এখন এই বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের অবজারভেশন কী?

কোনো সংশোধন?
সংযোজন?

বৈজ্ঞানিক ব্যাখা নয়। অভিজ্ঞতাগুলো জানলে কাজে লাগবে আমার
২০০৯.১২.০১ মঙ্গলবার


মন্তব্য

ঘাসফুল [অতিথি] এর ছবি

অনুভূতি,আবেগ থাকে না,এটা ঠিক না।আপনি কখনো ভয়ের স্বপ্ন দেখেন নাই?!!!!
পড়ে যাচ্ছেন,মারা যাচ্ছেন,প্রিয় কেউ ব্যাথা পাইছে,কেউ তাড়া করতেছে.........

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার হিসাবে বলে স্বপ্ন দেখার সময় মানুষ ভয় পায় না
স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যাবার পরে ভয়টা ধরে

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

০১, ০২, ০৩ আমার ক্ষেত্রে ঠিক না। ০৫ ঠিক। ০৬, ০৭ ও ঠিক। তবে ১০ এর ক্ষেত্রে বলি, আমি বৃষ্টিতে ভিজছি। অথচ আমার সামনের ঘরের চালে বেড়ায় বৃষ্টি পড়লেও তা ভিজছে না। যা যুক্তিহীন।

দৌঁড়াচ্ছি... ধুম করে পড়ে গেলাম। গড়াতে গড়াতে খালে। শরীরের ব্যথা ছিলো তিনদিন।

০৮ এর ক্ষেত্রে বলি, এমন অনেক জায়গায় একা একা ঘুরেছি আজও বাস্তবে অথবা টিভি সিনেমা কিংবা ছবিতেও চোখে পড়েনি

অচেনা অনেক মানুষকেই দেখি। বিভিন্ন বয়সের।
শোনা যায় স্বপ্ন সাদা কালো- আমি অনেক রঙিন স্বপ্নও দেখি।

-একবার স্বপ্নে কেউ একজন আমাকে একটি মন্ত্র শিখিয়ে দিলো। তখনই কোনো কারণে ঘুম ভেঙে গেল। বিছানার পাশেই টেবিল। মন্ত্রটা হুবহু লিখে ফেললাম কাগজে। পরে দেখি যার কোনো মাথামুন্ডু নেই! দেঁতো হাসি
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমি বৃষ্টিতে ভিজছি। অথচ আমার সামনের ঘরের চালে বেড়ায় বৃষ্টি পড়লেও তা ভিজছে না। যা যুক্তিহীন।

ইয়েস। একেবারে ঠিক। আমার কাছে যুক্তি বড়ো না এখন। বৈশিষ্ট্যগুলো ধরতে চাচ্ছি আমি

০২

দৌঁড়াচ্ছি... ধুম করে পড়ে গেলাম। গড়াতে গড়াতে খালে। শরীরের ব্যথা ছিলো তিনদিন।

এটা কিন্তু স্বপ্ন পরবর্তী ব্যথা। এর কী জানি একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। কিন্তু আমার অবজারভেশন বলে স্বপ্নের ঘটনায় কোনো ব্যথা থাকে না
(পরে থাকতে পারে হয়তো)

০৩

এমন অনেক জায়গায় একা একা ঘুরেছি আজও বাস্তবে অথবা টিভি সিনেমা কিংবা ছবিতেও চোখে পড়েনি

এক্ষেত্রে অন্তত কোনো না কোনো মানুষ পরিচিত ছিল (আমার ধারণা)

০৪

শোনা যায় স্বপ্ন সাদা কালো- আমি অনেক রঙিন স্বপ্নও দেখি।

রংগুলো বোধহয় আমরা স্বপ্ন পরবর্তীতে বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে চড়াই

০৫

-একবার স্বপ্নে কেউ একজন আমাকে একটি মন্ত্র শিখিয়ে দিলো। তখনই কোনো কারণে ঘুম ভেঙে গেল। বিছানার পাশেই টেবিল। মন্ত্রটা হুবহু লিখে ফেললাম কাগজে। পরে দেখি যার কোনো মাথামুন্ডু নেই!

স্বপ্নকে কিন্তু পরে রিফ্রেজ করা লাগে। না হলে একেবারেই আবোলতাবোল মনে হয়

(ঘুম থেকে উঠে করা আমার নোটগুলোও তাই

অতিথি লেখক এর ছবি

Ann Faraday এর Dream Power পড়ে দেখতে পারেন। উনি স্বপ্নের ম্যালা ব্যবচ্ছেদ করেছেন।

বুনোহাঁস

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বইটা পড়া নেই
তবে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হলে আমার কাজে লাগবে না তেমন
কারণ আমি খুঁজছি স্টাইল অব ন্যারেশান

তবে খোঁজ করব বইটা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়লাম। জিগমুন্ড ফ্রয়েডের দা ইন্টাপ্রিটেইশন অভ ড্রিমস এই বিষয়ের উপর হাদিস বলা চলে। আর গুস্তাভ য়্যুং স্বপ্নের কানা গলি খুঁজতে এদিক ওদিক দৌড় দিছেন খালি।

স্বপ্নের বহিরঙ্গে না তাকিয়ে অন্তরঙ্গে তাকালে কিছু সমীকরণের দেখা মিলে। ফ্রয়েড থেকে হালকা সামারি করি।

আত্মার (Psyche) উপাদান
১। ইদম (Id)
২। স্বাতন্ত্র্য (Ego)
৩। অধ্যহং (Superego)

মস্তিষ্কের এলাকা
১। চেতন(Conscious)
২। প্রাকচেতন(Pre Conscious)
৩। অচেতন (Unconscious)

প্রবৃত্তির বিভাগ
১। ইরোজ (Eros)
২। থানাটোজ (Thanatos)

স্বপ্নতত্ত্বের নীতি
১। কল্পনাবাদ (Pleasure Principle)
২। বাস্তববাদ (Reality Principle)

ব্যাক্তির বিকাশের ধাপ
১। ওরাল
২। এনাল
৩। ফেলিক
৪। লেটেন্ট
৫। জেনিটাল

এই বিভাগগুলোর মধ্যে নিজেদের সমীকরণ আছে। ফ্রয়েড তাঁর বইয়ে বিস্তারিত করেছেন।

ফ্রয়েডের মতে, স্বপ্নের কিছু মেকানিজমঃ
১। দমননীতি (Repression): দুশ্চিন্তা দূর করে। চেতনের অনুভূতিকে বাড়ায়।
২। পশ্চাদ্‌গতি (Regression): পিচ্চিকাল থেকে বড় হওয়ার মধ্যের নানান কিছু।
৩। প্রতিক্রিয়া তৈয়ার (Reaction Formation): ইগো অচেতনে অগ্রহণযোগ্য কিছু বিপরীতমুখী ইম্‌পালস্ তৈরি করে।
৪। প্রক্ষেপণ (Projection): একজনের অগ্রহণযোগ্য ইম্‌পালস্ অন্যের ঘাড়ে চাপানো।
৫। যুক্তিকরণ (Rationalization): বাস্তবের জায়গায় কিছু নিজস্ব ব্যাখ্যা খাড়া করানো।
৬। স্থানান্তর (Displacement): বাসনাকে কম শক্তিশালী কিছুতে স্থানান্তরিত করে দেয়া।

(অনুবাদে হালকা গিয়ানজাম আছে ........)

মাহবুব লীলেন এর ছবি

থ্যাংকস শুভাশীষ

ফ্রয়েড এক আধটু ঘাঁটাঘাঁটি করার কিছু সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু এখানে আমি স্বপ্নের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাগুলো খুঁজছি না
খুঁজছি স্টাইল

ডাক্তারের করা বিশ্বসুন্দরীর এনাটমি নয়
ভক্ত প্রেমিকের উপমাযুক্ত বর্ণনা খুঁজছি আমি

হিমু এর ছবি

তারচে আমার খুব প্রিয় একটা গান শোনেন।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

নৈষাদ এর ছবি

ইন্টারেস্টিং পর্যবেক্ষণ, কিছুটা বিচিত্রও বটে। মোটামোটি ভাবে মিলে যায়।

১ নম্বরের অনুভুতির ব্যাপারে নিশ্চিত নই। ব্যাথার অনুভূতি অবশ্যই থাকে না। কিন্তু সুখ বা দুঃখের অনুভুতি তো থাকে মনে হয়। এমন কী ঘুম ভাঙ্গার পরও আমি সেই অনুভুতির রেশ কিছুক্ষণ থেকে যায়...।

৮ চেনা অচেনা... আমার স্বপ্নের অচেনা প্রায় থাকেই না।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

০১, ০৩, ০৪ আমার ক্ষেত্রে ঠিক না।
সুন্দর বা ভয়ংকর যেটাই হোক না কেন, স্বপ্ন দিয়ে আমি প্রভাবিত হই খুব। তার রেশ থেকে যায় অনেকটা সময় ধরেই। আমার দেখে ফেলা সুন্দর স্বপ্নগুলো আমার কাছে সম্পদের মতো।

...........................

কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

১-৩-৪ আপনার ক্ষেত্রে ঠিক নাও হতে পারে
আপনার অভিজ্ঞতটা বললে অধমের উপকার হয়

০২

কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ

যদ্দুর মনে পড়ে লাইনটা আমার লেখা। আর এটাও একটা স্বপ্নের ফসল

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

০২
আপনার স্মৃতিশক্তি অসাধারণ ! হাসি

...........................

কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

আরো দুইটা বৈশিষ্ট্য মনে পরলো

(ক) এই দেখলাম সিলেট অডিটোরিয়ামে ঢুকছি, দরজা পাস করতেই দেখি ঢাকায় কোনো সেনেমা হলে ঢুকলাম।
আর এই চেন্জের কারনে আমি মোটেও আশ্চর্য হইনা, অনেক সময় বদলানোটাও ধরা পড়েনা। কারন তখন মনে হয় আমি ঢাকায় সিনেমা হলেই এসছি।

(খ) স্বপ্নের মাঝেই কঠিণ কিছু দেখে মাঝে মাঝে ভাবতে থাকি এবং নিরুপন করার চেষ্টা করি এটা স্বপ্ন না বাস্তব, একপর্যায়ে সিদ্ধান্তে পৌছি যে আমি আসলে স্বপ্ন দেখছিলাম, মজার বিষয় হলো, এতো বাছবিচার কিন্তু আমি স্বপ্নেই করি।
জেগে উঠে টের পেয়ে বুঝতে পারিনা ডাবল স্বপ্ন দেখলাম না ডাবল বাস্তব!

০২

আপনার (১) বৈশিষ্টের ব্যাপারে বলি-আমার কথা।
স্বপ্নে ব্যাথার অনুভূতি থাকেনা, ঠিক। যা থাকে তা হলো কঠিণ কিছুতে প্রচন্ড মানসিক উদ্বীগ্নতা, আর ওটাকে অনেকে ব্যাথা বলে ধরে নেন।
তবে আমি-ভয় সুখ ভালোবাসা দুঃখ এইসব আবেগ টের পাই। তবে প্রচন্ড রকম, এমনকি জেগে উঠার পরো অনেক্ষণ এর রেশ থাকলেও তা বাস্তবের মতো এতো নিখুত না, আবেগের বাড়তি কমতি থাকে অস্বাবাভিক।

(২) বিচার তর্কের সংলাপ না থাকলেও আমি মনে মনে ওগুলো মিলাই।
(৪) ধরতে পারি নাই।

(৫) (৬) (৭) (৮) (৯) (১০) মিল্লো।

০৩

বৈশিষ্ট আপনি আস্তে আস্তে অনেক পাবেন,

আমার চিন্তা,
বৈশিষ্টগুলো গল্পে প্রয়োগ করে গল্পো সাজানো খুবই কঠিণ মনে হচ্ছে।
কারণ আপনি চাচ্ছেন গল্পো পড়ে পাঠক আন্দাজ করতে থাকুক যে মনে হয় এটা স্বপ্নের কাহিনি, অথবা স্বপ্নের মতো অথবা স্বপ্ন এটা।

কিন্তু স্বপ্নের বৈশিষ্টগুলোর যে হাল!!! তাতে ট্যাগে স্বপ্নের আভাস না দিয়ে লিখলে পাঠক বলতেও পারে লেখক এতো লাফালাফিফালাফালি করছেন কেনো!সরি

আর নির্দিষ্ট ক্যাটেগড়ী না দিয়ে, সরা সরি বৈশিষ্টগুলো গল্পে প্রয়োগ করে লিখা কতোটা যে কঠিন হবে তাও বুঝতে পারছিনা, অবশ্য আমার উপর বিচার করে এসব বলছি।

আশা করি বৈশিষ্ট গুলোর সমীকরণ করতে পারলে আপনার বেলা গল্প লেখা খুব সহজই হবে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনের নামে নেই তাই নাম ধরতে পার্লাম না। ধরে নিলাম অনামিকা (মেযে হলে) আর না হয় বেওয়ারিশ (ছেলে হলে)

বেওয়ারিশ অনামিকার অভিজ্ঞতাগুলো আমার সাথে মিলে যায়

০৪ নম্বরটার বিষয় ছিল: স্বপ্নে আমরা যাদেরকে দেখি তাদের সাথে স্বপ্ন দেখা লোকের সম্পর্কটা কী (অপরিচিত লোকের ক্ষেত্রে) তা ঠিক করা থাকে না। তারা বন্ধু না ভাই না কলিগ না অন্য কিছু এটার সূত্র স্বপ্নে থাকে না

আর সম্পর্কযুক্ত যাদেরকে দেখা হয় (বাবা মা ভাইবোন) তারা বাস্তবে যে আচরণ করেন; স্বপ্নে তা করেন না

০২

আমার উদ্দেশ্যটা একটু বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী
আমি এমন একটা স্টাইল ধরতে চাচ্ছি যাতে পাঠক গল্পটা পড়ে অনুভব করবে সে মূলত একটা স্বপ্ন দেখলো। ঠিক ঘুমের মধ্যে যেভাবে দেখে সেভাবেই

অতিথি লেখক এর ছবি

বেওয়ারিশ অনামিকা নয়, ভুলবশতঃ বেওয়ারিশ মজনু

কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ

দুই মাস আগে লাইনটা চোখে পড়ার পর ধাক্কা খেয়েছিলাম,
আজ বুঝলাম ধাক্কা খাওয়ার কারণ কী ছিলো।

-মজনু

তুলিরেখা এর ছবি

আমাদের পুরানো পাড়ায় একটা থ্রেডে লোকেরা নিজেদের দেখা স্বপ্ন গুলো বর্ণনা করছিলো, কেউ কেউ মাত্র আউটলাইনটুকু দিচ্ছিলো, কেউ কেউ আরেকটু বিস্তৃত, সেসব পড়লে খুবই অদ্ভুত লাগতো। নানা মানুষের দেখা স্বপ্ন থেকে কি কোনো সাধারণ সুতো খুঁজে পাওয়া সম্ভব আপনি যা চাইছেন তার?

১।যেমন একজন দেখেছিলো জোড়ায় জোড়ায় শত শত চটিজুতো আকাশে উড়ে যাচ্ছে, তারা আবার নাকি বলছিলো মেলায় যাচ্ছে।

২।আরেকজন দেখেছিলো রাজা বিক্রমাদিত্য পুরীর সমুদ্রে হাফপ্যান্ট পরে লাফাতে লাফাতে স্নান করছে।

৩।একজন দেখেছিলো ব্রীজের উপরে এক মহিলা তাকে চা এনে দিচ্ছে। মহিলার মুখ জলের ভিতরে দেখা মানুষের মুখের মতন আবছা।

৪।আরেকজন দেখেছিলো স্বপ্নে সে গল্পের বই পড়ছে, জেগে উঠে গল্পগুলো মনে থাকে না, কিন্তু বই যে পড়ছিলো মনে থাকে। একবার একটা গল্পের নাম পর্যন্ত মনে ছিলো "মৌমাছি ও সাগর বৃত্তান্ত"

৫।একজন দেখেছিলো তার মামাতো ভাই মাছ হয়ে গেছে, আর খুব মুষড়ে পড়েছে। হাজারে হাজারে বিড়াল উড়তে উড়তে জানালা দিয়ে ঢুকছে।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মাহবুব লীলেন এর ছবি

নানা মানুষের দেখা স্বপ্ন থেকে কি কোনো সাধারণ সুতো খুঁজে পাওয়া সম্ভব আপনি যা চাইছেন তার?

তা খুবই সম্ভব বলে আমার মনে হয়। স্বপ্ন দেখার কারণ এবং কোন ধরনের স্বপ্ন মানুষ কেন দেখে তার ব্যাখ্যা এখন বিজ্ঞান বেশ ভালো ভাবেই দিয়ে দিয়েছে

দেখার মনোরাসায়নিক বিশ্লেষণও এখন সহজেই পাওয়া যায় এবং মোটামুটি সবার স্বপ্নই সেই বিজ্ঞানের সূত্রগুলোর মধ্যেই পড়ে

কিন্তু আমি খুঁজছিলাম সিকোয়েন্স- বর্ণনা করার মতো ভাষা
যেমন রূপ কথায় প্রথমে একটা সুখী পরিবেশ থাকে। তারপর সেখানে একটা ঘটনায় দুর্দশার প্রবেশ ঘটে। তারপর সংগ্রাম করে দুর্দশা লাঘব হয় এবং সৎ ও সঠিক মানুষ আবার সুখী হয়- এটা যেমন রূপকথার সাধারণ সিকোয়েন্স

তেমনি স্বপ্নের ঘটনার বৈশিষ্ট্যগুলো ধরতে চাচ্ছিলাম আমি

এবং আপনার দেয়া ৫টি স্বপ্নই কিন্তু আমার অবজারভেশনের কাঠামোতে পড়ে

০২

স্বপ্নের কাঠামো কিংবা সিকোয়েন্স সাজানো নিয়ে এখন আর তেমন একটা ভাবছি না
যা জোগাড় করতে পেরেছি তা দিয়ে বহুকিছু করে ফেলা যাবে
কিন্তু মুশকিলে পড়েছি এর বর্ণনা ঢং নিয়ে

বর্ণনাগুলোকে এমনভাবে দাঁড় করাতে চাচ্ছি যেন যে পড়বে তার মনে হয় সে স্বপ্ন দেখছে। কোনোভাবেই স্বপ্নের ঘটনা শুনছে না কিংবা পড়ছে না

কারণ নিজে দেখা স্বপ্ন নিজে কাগজে লেখার পর যেমন অতি তুচ্ছ মনে হয় ঠিকই একইভাবে অন্যের দেখা স্বপ্নও কিন্তু মনে হয় অতি তুচ্ছ। কিন্তু নিজে দেখার সময় মনে হয় বিশাল- বিস্তৃত

আমার ধারণা এই বিশালতা এবং বিস্তৃতির ইলুশনটা বর্ণনায় ধরতে পারলেই আমি উৎরে যাবো

তুলিরেখা এর ছবি

আমি ইন্দ্রনীল ঘোষদস্তিদারের একটা আশ্চর্য লেখা পড়েছিলাম বাংলায়, যেটাকে স্বপ্ন দেখার খুব কাছাকাছি বলা যায়। দেখুন তো আপনি তেমন কিছু খোঁজেন কিনা!

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

সময় পেলে ইন্দ্রনীলের লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন। সত্যি অন্যরকম!
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।