পড়া নয়, শুধু শোনা (১) : আমরা কিভাবে সিদ্ধান্ত নেই? - জোনআ লেরার

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৩/২০১০ - ১০:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাকে প্রায় সপ্তাহান্তে সাড়ে তিনশ মাইল করে সাতশ মাইল ড্রাইভ করতে হয়। একলা একলা ছয় ঘন্টা করে বারো ঘন্টার এই দীর্ঘ্য ভ্রমনে আমার সঙ্গে থাকা সমস্ত গান শোনা হয়ে যায়। তারপরও কিছু করার থাকেনা। ইদানীং তাই অডিও বই শোনা শুরু করেছি। প্রথম প্রথম একটু বোরিং লাগলেও এখন মজাই লাগে। পড়া বাদে, এই শোনা বই গুলো থেকে মজার কিছু শিরোনাম এই সিরিজে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। এই সিরিজের প্রতিটি খন্ড স্বয়ং সম্পূর্ণ, সুতরাং সিরিজের শুরুও নেই শেষও নেই।

আমরা কিভাবে সিদ্ধান্ত নেই? - জোনআ লেরার
How We Decide - Jonah Lehrer

মানুষ কিভাবে চিন্তা করে? কিভাবে মানুষ সিদ্ধান্ত নেয় যে ঠিক এই মুর্হুতে এই কাজটি করতে হবে? একজন ক্রিকেটার ঘন্টায় সত্তর মাইল বেগে ছুটে আসা বলটাকে কিভাবে মারতে হবে এই সিদ্ধান্ত কিভাবে নেন? সমস্ত কন্ট্রোল হারিয়ে যাওয়া বিমানের বিমানচালক কিভাবে তার নার্ভ শক্ত রেখে সিদ্ধান্ত নেন ঠিক কী করতে হবে? বাড়ী কিনতে গিয়ে কিভাবে একজন গড়পড়তা মানুষ সিদ্ধান্ত নেন? কিভাবে স্টক মার্কেট যাচাই করেন এক সাধারন শেয়ারহোল্ডার?

আবেগ

কিভাবে মানুষ চিন্তা করে বা সিদ্ধান্তে উপনীত হয় সেটা নিয়ে বিগতে কয়েক দশকে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। ১৯৫৪ সালে আবিষ্কার হয় ডোপামিন নামক এক ধরনের রসায়নের। মস্তিষ্ক কোষগুলি এই পদার্থটি ব্যাবহার করে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করে। সত্তরের দশকে বিজ্ঞানী ওলফ্রাম স্লাজ (Wolfram Schultz) আবিষ্কার করেন যে একদল বাঁদরকে নিয়মিত খেতে দেবার সময় তাদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের পরিমান বেড়ে যায়। দেখা গেল খাবারের আগে একটা ঘন্টা বাজাতে শুরু করলে, ঘন্টা শোনার সাথে সাথে মস্তিষ্ক ডোপামিনের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। এই ডোপামিনের পরিমান বেড়ে গেলে মস্তিষ্ক আনন্দ লাভ করে এবং ফলাফল লাভের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।

ডোপামিনের নিঃসরণ ব্যাখ্যা করে কোন কিছু করে আমরা আনন্দ কেন পাই। অনেকে একটা সমস্যা সমাধান করে আনন্দ পান, অনেকে গান শুনে সেটা পান ইত্যাদি। এই সমস্ত কারন আসলে আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। কৃত্রিম ভাবে ইঁদুরের মধ্যে ডোপামিনের পরিমান বাড়িয়ে দেখা গেছে অতিরিক্ত আনন্দে বুঁদ হয়ে এরা শেষ পর্যন্ত মারা গেছে। তাই অতিরিক্ত ডোপামিন নিঃসরন সব সময় ভালো নয়।

ডোপামিনের কারনে কোন কিছু ঠিক ঠাক মত হচ্ছে বুঝতে পারলে আমাদের মস্তিষ্কে একটা ভালোলাগা বোধ আসে। আর না বুঝতে পারলে আসে একটা খারাপ লাগা বোধ। এই সমস্ত বোধ জমা হয় আমাদের এমিগডালা নামের মস্তিষ্কের একটা অংশে। আমাদের অতীত সমস্ত অভিজ্ঞতার আলোকে কোন একটি বিষয় সামনে আসলে আমাদের মনে আনন্দ, ভয় বা সন্দেহ জেগে ওঠে এই অ্যমিগডলার কল্যাণে।

আবেগের মত অনুভূতি সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে কিভাবে?
আগেই বলেছি যখন আমরা কোন কাজে সফল হই তখন ডোপামিনের নিঃসরনে আমরা আনন্দিত হই। আর কোন কাজে বিফল হলে ব্রেইনে আসে একটা ঋণাত্মক অনুভূতি। এই কাজগুলো তখন ধনাত্মক আর ঋণাত্মক অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা হিসেবে জমা হয়ে থাকে এমিগডালায়। ভবিষ্যতে যখনই আমরা একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীণ হই তখনই চট করে এমিগডালা আমাদের জানান দিতে থাকে এটা ভালো না কিংবা এটা ভালো। তখন আমরা যুক্তিবুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি সে বিষয়ে।

একটা পরীক্ষা করা হয় একদল জুয়াড়ীদের নিয়ে। তাদের দুই সারি র‌্যান্ডম কার্ড দেয়া হয়। ইচ্ছে করে একসারি কার্ডে ভালো কার্ড আরেক সারিতে খারাপ কার্ড দেয়া হয়। দেখা গেল গড়পড়তা ৫০-৬০ টি কার্ড তোলার আগে কেউ বুঝতেই পারেনি যে কার্ডে গন্ডগোল আছে। অর্থাৎ যুক্তি দিয়ে ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করতে ৫০-৬০টি পর্যন্ত কার্ড টানতে হচ্ছে। কিন্তু দেখা গেছে ৩০ পর্যন্ত কার্ড টানতেই লোকজন বুঝতে পারছে একটা সারিতে কিছু ঘাপলা আছে। এবং সে আর সেখান থেকে কার্ড নিতে চাইছে তা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ১০টা কার্ড টানার পরই কিন্তু মস্তিষ্ক জানান দিতে থাকে ঘটনা খারাপ। মানুষের হাত ঘামতে থাকে, হার্টবিট বেড়ে যায়।

এইটা প্রমান করে যে মানুষের আবেগের মত অনুভূতিটা অনেক বেশী ডেভলপড, দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং নিঁখুত। তবে আবেগও অনেক সময় ভুলের জন্ম দেয়।

যুক্তি
মস্তিষ্কের আরেকটা অংশ হচ্ছে প্রিফ্রন্টাল করটেক্স। এটা মাথার কপালের দিকের একটা অংশ। এটা আসলে আমাদের যুক্তিবিদ্যা ধারণ করে। যুক্তি দিয়ে কাজ করবার সময় এটা সক্রিয় হয় এবং আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

১৯৪৯ এর গ্রীষ্মে মন্টানায় এক বিশাল দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। ডজ নামের এক অগ্নিকর্মী নেতা, একদল অগ্ননির্বাপক নিয়ে হেলিকপ্টারে গিয়ে নামে একটা খোলা যায়গায়। উদ্দেশ্য হচ্ছে আগুন টাকে পাহাড় টপকাতে না দেয়া। জায়গাটার একপাশে বন, একপাশে পাহাড়, আরেক পাশে নদী। পরিকল্পনা ছিল সমস্যা দেখলে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়বে সবাই। কিন্তু হঠাৎ করে বাতাসে পরিবর্তন হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে নদীর ধারটায় আর হুড়মুড় করে ধেয়ে আসতে থাকে অগ্নিনির্বাপক দলটির দিকে।

অগ্নিনির্বাপক দলটি ঠিক করে পাহাড়ের দিকে দৌড়ে যাবে তারা পাহাড় টপকাতে পারলেই বাঁচার একটা সম্ভাবনা থাকবে। কিন্তু দলনেতা ডজ দৌড়াতে দৌড়াতে লক্ষ্য করল আগুন তাদের চেয়ে অনেকগুন দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে। পাহাগ টপকানোর আগেই তাদের ধরে ফেলবে সেটা। সেই চরম মুর্হুতে তার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। সে করল কি, নিজের পকেট থেকে একটা দেশলাই বের করে একটা ছোট্ট জায়গা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিল। তারপর সেই পোড়া জায়গায় একটা চাদর মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকল। যেহেতু এই জায়গাটায় পোড়ানোর কিছু নেই, আগুন তার পাশ কাটিয়ে চলে গেল সামনে।

ডজের মাথায় সেই ভীষণ অসময়ে এই বুদ্ধি এল কিভাবে? কিভাবে ডজ তার মনে প্রাণে দৌড়াতে চাওয়ার প্রবনতা রোধ করে প্রিফ্রন্টাল করটেক্সের কথা শুনল?

মানবতা
এছাড়াও আরেকটি বিষয় হল মানবতা। এটা ব্যাখ্যা করা যায় একটা পরীক্ষা দিয়ে। মনে করেন একটা রেললাইনের কাজ হচ্ছে। সেখানে পাঁচজন কাজ করছে। হঠাৎ একটা বিগড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি ছুটে আসতে থাকে সেখানে। এতে করে সেই পাঁচজন মারা পড়তে পারে। অথচ আপনার হাতে ট্রেনের লাইন পরিবর্তন করার লিভার আছে। আপনি চাইল বগিটিকে ঘুরিয়ে অন্য লাইনে পরিচালিত করতে পারেন। এতে করে অন্য লাইনে একজন মারা যাবে। আপনি কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বেশীরভাগ লোক একজনের মৃত্যুর বদলে পাঁচজনকে বাঁচানোর জন্য বগির গতি বদলে দিতে চেয়েছেন।

অথচ প্রশ্নটি যদি একটু ঘুরিয়ে এভাবে বলা যায় তাহলে কি হবে? ধরুন আপনার হাতে বগি ঘুরানোর লিভার নেই। কিন্তু আপনি উঁচু একটি ব্রীজ থেকে দেখছেন বিষয়টা। আপনার পাশে আরেকজন মোটাসোটা লোকও বিষয়টি দেখছে। এখন আপনি যদি লোকটিকে ধাক্কা দিয়ে চলন্ত বগির উপর ফেলে দেন তাহলেও পাঁচজন বেঁচে যায়। কি করবেন?

দেখা যায় এতে করে মানুষের মানবতা জেগে ওঠে এবং বেশীরভাগ লোক ধাক্কা দিয়ে মোটা লোকটিকে মারতে চায় না। যদিও এতে করে বাকি পাঁচজন মারা যায়।

ক্রিকেট খেলায়াড়র মস্তিষ্কের কোন অংশ কাজে লাগায়?

যখন ক্রিকেট খেলা শেখা শুরু করে তখন অবশ্যই প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ব্যবহার করে খেলাটির টেকনিক শিখে খেলায়ার। টেকনিকে শিখে সেটাকে কাজে লাগায়। তারপর মস্তিষ্কে ডোপামিনের তারতম্যে বুঝতে পারে কোনটা কাজের টেকনিক কোনটা অকাজের। এমিগডালা সেই স্কিল বা অভিজ্ঞতাটা সঞ্চয় করে রাখে। এভাবে খেলতে খেলতে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ছেড়ে আস্তে আস্তে নিজের এমিগডালার উপর নির্ভর করতে শেখে খেলোয়াড়। প্রফেশনাল খেলোয়াড় পুরোটাই নিজের বিশ্বাস থেকে শট নেয়।

সমস্যা শুরু হয় যখন এই বিশ্বাসে চিড় ধরে। সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিখ্যাত নার্ভাসনেসের কথা মনে আছে? যখন একবার একটা বল ভুল খেলে ফেলে খেলোয়ার বা অন্য কোন কারনে যখন বিশ্বাসে চিড় ধরে তখন তার মস্তিষ্ক নিজের অজান্তে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের উপর নির্ভর করতে শুরু করে। এতে করে নতুন আনাড়ী খেলোয়াড়ের মত বেশী হিসেব নিকেশ করে খেলতে থাকে। স্বভাবতই খেলাটা নিঁখুত হয় না। ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান।

যে কোন ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে নার্ভাস নাইন্টি যে কারনে ঘটে সেটার কারন বুঝতে পারছেন? এটা অবশ্য একটু ভিন্ন কারনে ঘটে। যেহেতু নার্ভাস থাকেন খেলোয়াড় তাই ১০০ করে বেশী ডোপামিন ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে খেলোয়াড়।

মানুষ আসলে সিদ্ধান্ত নেয় এই যুক্তি আবেগ আর মানবতার সমন্বয়ে। মস্তিষ্কই ঠিক করে কখন কোন অংশটি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু অভ্যাসের বসে আপনি কখন আবেগ, কিংবা কখন যুক্তিকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে সেটা ঠিক করতে পারেন আপনি। আর এখানেই মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব।

কোথায় পাবেন?
বইটিতে প্রচুর উদারহন, গল্প এবং আর্গুমেন্ট দিয়ে চমৎকার করে ব্যাখ্যা করা আছে বিষয়গুলি। সবমিলিয়ে চমৎকার একটি সুপাঠ্য বইটি। পড়ে দেখতে পারেন। ঠকবেন না ধারণা করি।

বইটির আইনতঃ অপরাধমূলক ডাউনলোড পাবেন এখানে: http://atheistmovies.blogspot.com/2010/01/how-we-decide-jonah-lehrer-unabridged.html

তবে অনুগ্রহ করে বইটি কিনে লেখককে প্রাপ্য সম্মানীটা পৌছে দিন।

আর একটা বিজ্ঞাপন মূলক ভিডিও এখানে।

ডোপামিন: http://en.wikipedia.org/wiki/Dopamine
এমিগডালা: http://en.wikipedia.org/wiki/Amygdala
প্রিফ্রন্টাল করটেক্স: http://en.wikipedia.org/wiki/Prefrontal_cortex


মন্তব্য

নৈষাদ এর ছবি

কৌতুহলী হলাম।
প্রথমবার পড়ার পর মনে হল কিছুটা সরলীকরণ করা হয়েছে কিনা? ফ্রেম-অভ-রেফারেন্স, অভিজ্ঞতা এগুলির প্রভাব কোথায়? পরে মনে হল যুক্তির অংশে কাভার করা হয়েছে হয়ত। পড়তে হবে।
(হায়্‌, দেশ থেকে ইচ্ছে করলেই এধরণের বই কেনা যায়না, কিংবা সম্মানী পৌঁছে দেয়া যায়না। তবে একদিন আমাদেরও হবে...)

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ফ্রেম-অভ-রেফারেন্স অর্থ্যাৎ কোথা থেকে যাচাই করা হচ্ছে একটা বিষয়, এটা যুক্তি নির্ভর একটা কাজ। অর্থ্যাৎ প্রিফ্রন্টাল করটেক্স এই অংশটা হ্যান্ডল করে।

অভিজ্ঞতা হচ্ছে এমিগডালার অংশ। এটা নিয়ে আরেকটু লিখছি পরে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আকর্ষনীয় বিষয় ।
তবে দীর্ঘ একাকী যাত্রায় জটিল বিষয় নিয়ে কম শোনাই ভালো, দেখা যাবে চিন্তা করতে করতে গাড়ি চালানোয় মনোযোগ কোন সময় কমে যাবে, আর বিপত্তি ঘটবে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এটা অবশ্য ঠিক ধরছেন বস। মাঝে মাঝে খানিকটা বাদ চলে যায় গাড়ি সামলাতে গিয়ে। সাবধান থাকব অবশ্যই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অবশ্য গাড়ী চালাতে চালাতে আর কি কি করি বললে একটু ঘাবড়েই যাবেন:

১। জ্যাকেট পরি বা খুলি। ক্রুজ কন্ট্রোল চেপে, হাঁটু দিয়ে স্টিয়ারিং চেপে ধরে বহু কসরত করে খুলতে হয়।

২। চ্যাট করি মোবাইলে। রাস্তার দিকে তাকাতে ভুলে যাই।

৩। খাওয়া দাওয়া করি দুহাতে।

৪। একবার ইয়ে করতে চেয়েছিলাম। করা হয়নি। খাইছে

৫। মাঝে মাঝে আশে পাশের গাড়ীরে একটু রাগ দেখাই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ইয়ে, সময় থাকতে থাকতে একটা "সহজ কম্পু শিক্ষা" বই লিখে ই-বুক করে রেখে যান। অচিরেই ঠ্যাঙঠুঙ ভাইঙ্গা যদি কোনো হাসপাতালে শুয়ে থাকেন, তাইলে জগতের কম্পুকানারা বিশেষ ঝামেলায় পড়বে।

হিমু এর ছবি
এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

জার্মান নাকি লোকটা?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বিষয়টা চমৎকার লাগলো... তবে তার চেয়েও বড় ধন্যবাদ লিঙ্কটার জন্যে। এতো দারুণ সব বই আর ভিডিও আছে, সময় করে কিছু নামিয়ে ফেলতে হবে ...

_________________________________________

সেরিওজা

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আরডেসক দেইখেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ফারুক হাসান এর ছবি

চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। খুবই আগ্রহ জাগানিয়া। এরকম ব্লগ পড়তে মজাই আলাদা। আরো লিখবেন আশা করি এই সিরিজে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লিখার খুব ইচ্ছা আছে। অনেক ধন্যবাদ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

বইখাতা এর ছবি

আকর্ষণীয় বিষয়। কৌতুহল জাগলো। লিংকের জন্য ধন্যবাদ ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার জন্যও আরডেসকহাসি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

স্নিগ্ধা এর ছবি

খুবই ভালো লাগলো, মুর্শেদ!! দারুণ পোস্ট হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ধন্যবাদ স্নিগ্ধাপা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আবেগের মত অনুভূতি সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে কিভাবে?
আগেই বলেছি যখন আমরা কোন কাজে সফল হই তখন ডোপামিনের নিঃসরনে আমরা আনন্দিত হই। আর কোন কাজে বিফল হলে ব্রেইনে আসে একটা ঋণাত্মক অনুভূতি। এই কাজগুলো তখন ধনাত্মক আর ঋণাত্মক অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা হিসেবে জমা হয়ে থাকে এমিগডালায়। ভবিষ্যতে যখনই আমরা একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীণ হই তখনই চট করে এমিগডালা আমাদের জানান দিতে থাকে এটা ভালো না কিংবা এটা ভালো। তখন আমরা যুক্তিবুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি সে বিষয়ে।

একটা পরীক্ষা করা হয় একদল জুয়াড়ীদের নিয়ে। তাদের দুই সারি র‌্যান্ডম কার্ড দেয়া হয়। ইচ্ছে করে একসারি কার্ডে ভালো কার্ড আরেক সারিতে খারাপ কার্ড দেয়া হয়। দেখা গেল গড়পড়তা ৫০-৬০ টি কার্ড তোলার আগে কেউ বুঝতেই পারেনি যে কার্ডে গন্ডগোল আছে। অর্থাৎ যুক্তি দিয়ে ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করতে ৫০-৬০টি পর্যন্ত কার্ড টানতে হচ্ছে। কিন্তু দেখা গেছে ৩০ পর্যন্ত কার্ড টানতেই লোকজন বুঝতে পারছে একটা সারিতে কিছু ঘাপলা আছে। এবং সে আর সেখান থেকে কার্ড নিতে চাইছে তা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ১০টা কার্ড টানার পরই কিন্তু মস্তিষ্ক জানান দিতে থাকে ঘটনা খারাপ। মানুষের হাত ঘামতে থাকে, হার্টবিট বেড়ে যায়।

এইটা প্রমান করে যে মানুষের আবেগের মত অনুভূতিটা অনেক বেশী ডেভলপড, দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং নিঁখুত। তবে আবেগও অনেক সময় ভুলের জন্ম দেয়।

ডোপামিন: http://en.wikipedia.org/wiki/Dopamine
এমিগডালা: http://en.wikipedia.org/wiki/Amygdala
প্রিফ্রন্টাল করটেক্স: http://en.wikipedia.org/wiki/Prefrontal_cortex

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আজ সন্ধ্যায় ক্রিকেট খেলোয়ারদের ক্ষেত্রে আবেগ আর যুক্তির একটা ঘটনা আলোচনা করা যাবে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেকদিন পরে ইন্টারেস্টিং একটা সিরিজ পড়া শুরু করলাম। চলুক চলুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

চলুক

করোটির মধ্যের বস্তু নিয়া টেড বক্তিমা।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ক্রিকেট খেলায়াড়র মস্তিষ্কের কোন অংশ কাজে লাগায়?

যখন ক্রিকেট খেলা শেখা শুরু করে তখন অবশ্যই প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ব্যবহার করে খেলাটির টেকনিক শিখে খেলায়ার। টেকনিকে শিখে সেটাকে কাজে লাগায়। তারপর মস্তিষ্কে ডোপামিনের তারতম্যে বুঝতে পারে কোনটা কাজের টেকনিক কোনটা অকাজের। এমিগডালা সেই স্কিল বা অভিজ্ঞতাটা সঞ্চয় করে রাখে। এভাবে খেলতে খেলতে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ছেড়ে আস্তে আস্তে নিজের এমিগডালার উপর নির্ভর করতে শেখে খেলোয়াড়। প্রফেশনাল খেলোয়াড় পুরোটাই নিজের বিশ্বাস থেকে শট নেয়।

সমস্যা শুরু হয় যখন এই বিশ্বাসে চিড় ধরে। সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিখ্যাত নার্ভাসনেসের কথা মনে আছে? যখন একবার একটা বল ভুল খেলে ফেলে খেলোয়ার বা অন্য কোন কারনে যখন বিশ্বাসে চিড় ধরে তখন তার মস্তিষ্ক নিজের অজান্তে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের উপর নির্ভর করতে শুরু করে। এতে করে নতুন আনাড়ী খেলোয়াড়ের মত বেশী হিসেব নিকেশ করে খেলতে থাকে। স্বভাবতই খেলাটা নিঁখুত হয় না। ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান।

যে কোন ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে নার্ভাস নাইন্টি যে কারনে ঘটে সেটার কারন বুঝতে পারছেন? এটা অবশ্য একটু ভিন্ন কারনে ঘটে। যেহেতু নার্ভাস থাকেন খেলোয়াড় তাই ১০০ করে বেশী ডোপামিন ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে খেলোয়াড়।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

ভালো বিষয় মুর্শেদ ভাই।

একটা পরীক্ষা করা হয় একদল জুয়াড়ীদের নিয়ে। তাদের দুই সারি র‌্যান্ডম কার্ড দেয়া হয়। ইচ্ছে করে একসারি কার্ডে ভালো কার্ড আরেক সারিতে খারাপ কার্ড দেয়া হয়। দেখা গেল গড়পড়তা ৫০-৬০ টি কার্ড তোলার আগে কেউ বুঝতেই পারেনি যে কার্ডে গন্ডগোল আছে। অর্থাৎ যুক্তি দিয়ে ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করতে ৫০-৬০টি পর্যন্ত কার্ড টানতে হচ্ছে। কিন্তু দেখা গেছে ৩০ পর্যন্ত কার্ড টানতেই লোকজন বুঝতে পারছে একটা সারিতে কিছু ঘাপলা আছে।

এখানে আমার অপারগতার কারণেই সম্ভবত, একটা বিষয় স্পষ্ট হয় নি। "৫০-৬০ টি কার্ড তোলার আগে কেউ বুঝতেই পারেনি" কিন্তু "দেখা গেছে ৩০ পর্যন্ত কার্ড টানতেই লোকজন বুঝতে পারছে"। বাক্যদুটো পরস্পরবিরোধী মনে হচ্ছে। প্রথমটা দক্ষ জুয়াড়ী আর পরেরটা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে?

এই পরীক্ষায় আবেগের অবদানকে ফোকাস করা হলেও, আমার কাছে

১০টা কার্ড টানার পরই কিন্তু মস্তিষ্ক জানান দিতে থাকে ঘটনা খারাপ। মানুষের হাত ঘামতে থাকে, হার্টবিট বেড়ে যায়

এটাকে অবচেতন যুক্তি-গণনা আর ডোপামিনগত আবেগী প্রতিক্রিয়ার সমন্বয় মনে হচ্ছে। অর্থাৎ মস্তিষ্কের গণনা ইউনিট প্রথমে কার্ডের নমুনায় ঘাপলা সনাক্ত করছে। সেই ঘাপলা সনাক্তটাকে চেতনায় জানান দেবার জন্য হয়ত ডোপামিনিক আবেগী প্রতিক্রিয়া তৈরী হচ্ছে। এটা কেবলি আমার ধারণা। ঠিক এমনটা নাও হতে পারে। কিন্তু আবেগের পাশাপাশি (অন্তত অবচেতন হলেও) যুক্তি-গণনার ব্যাপার আছে এমনটা বোধ করছি।

আমার আগের লেখায় পুলক-বর্ধন উপশিরোনামে এই ডোপামিনভিত্তিক রিওয়ার্ড সিস্টেম বা পুলক-বর্ধন ব্যবস্থার আলোচনা করেছিলাম। আপনার ভালো লাগতে পারে।

ডজের মাথায় সেই ভীষণ অসময়ে এই বুদ্ধি এল কিভাবে? কিভাবে ডজ তার মনে প্রাণে দৌড়াতে চাওয়ার প্রবনতা রোধ করে প্রিফ্রন্টাল করটেক্সের কথা শুনল?

এখানে উত্তরটা কি?

ট্রেনের দ্বিতীয় সংকটটাকে মানবতা বলা হচ্ছে। এখন এটা কি যৌক্তিক? এটা কি কাজের? হয়ত অনেকক্ষেত্রে কাজের, কিন্তু এই পরীক্ষাটার কথা আমি সাধারণত ব্যবহার করতে দেখি এটা বোঝাতে যে মানুষের নৈতিকতা বোধে সঙ্গতি (consistency) নেই, যুক্তি নেই। মানে অনেকটা বোকা বোকা দেখায়। সেটার সাথে মানবতা কথাটা কেন জানি মানানসই লাগছে না অতটা, কারণ তখন মানবতা ব্যাপারটার যুক্তিহীন তুচ্ছতাটাই এখানে প্রকাশ পায় বেশি।

মানুষ আসলে সিদ্ধান্ত নেয় এই যুক্তি আবেগ আর মানবতার সমন্বয়ে। মস্তিষ্কই ঠিক করে কখন কোন অংশটি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু অভ্যাসের বসে আপনি কখন আবেগ, কিংবা কখন যুক্তিকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে সেটা ঠিক করতে পারেন আপনি। আর এখানেই মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব।

এই তিনটি বিষয়ের প্রতিটিই কিন্তু অন্য অনেক প্রাণীতে একসাথে আছে। ফলে এই উপাদানগুলো মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নয়। তাহলে শ্রেষ্ঠত্ব কি এগুলো সমন্বয়ের ক্ষমতায়? নাকি অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় এসব ক্ষেত্রগুলোতে পূর্ণতরতায়?

একবার ভাবুন তো যন্ত্রকে যদি এই পুলক-বর্ধন ব্যবস্থা দিয়ে মডেল করা হয়, ব্যাপারটা কেমন হয়?

আপনার লেখাটা অনেক চিন্তার উদ্রেক ঘটালো। হাসি

আমার হাচলীয় পেলাস। পরের পর্ব নামান।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কার্ডের উদাহরণটি একটু ধোঁয়াটেই শোনাচ্ছে নাকি? চিন্তিত

৬০ টি কার্ড তোলার পর খেলোয়াড়রা যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যার করতে পারছিল যে কোন সারির কার্ডে কি ভেজাল আছে। কিন্তু ৩০ টি কার্ড তুলার পরও বলতে পারছিল, যে "এই সারিতে কিছু একটা ঘাপলা আছে"। অর্থাৎ সচেতন ভাবে আবেগের অনুভুতি জানান দিতে ৩০টা কার্ড পর্যন্ত যেতে হয়েছে।

অথচ এই ঘাপলা তাদের অবচেতন মনে আরো আগেই ধরা পড়েছে। মাত্র ১০টা কার্ড তুলতেই অবচেতন মন সেই সিগনাল পাঠাতে শুরু করে ছিল।

ডজের উদাহরনে উত্তরটা আসলে মজার। তার অভিজ্ঞতা আসলে প্যানিক এটাকটা ঠেকিয়ে রেখেছিল। সে বুঝতে পারছিল যে পালিয়ে লাভ নেই। যুক্তি খাটিয়ে একটা সমাধান বের করতে হবে। এটা প্রমাণ করে যে প্র্যাকটিস বা অভ্যাসের মাধ্যেমে কখন কোন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ট্রেনের ঘটনাটাকে মানবতা বলা হচ্ছে কেননা লোকের জায়গায় অন্য কোন প্রাণী বা বস্তু দিলে সিদ্ধান্তের তারতম্য ঘটত না। শুধুমাত্র একজন মানুষকে নিজ হাতে ধাক্কা দিতে হচ্ছে বলেই যত গন্ডগোল।

অন্যান্যা প্রাণীতে এতটা ডেভলপড স্টেইজে নেই যেটা মানুষের আছে। যন্ত্রে ঢোকালে হয়ত যন্ত্রও এরকম আচরন করবে। এখানেই আমাদের আরও এগিয়ে যাবার সুযোগ আছে।

বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

স্পর্শ এর ছবি

মানবিক সিদ্ধান্তটি হবে নিজেই লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়া।

লেখা ভালো লেগেছে খুব। এই সিরিজ জোরে চলুক।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

নিজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হতে হলে নিজেকেও মোটাসোটা হতে হবে, নইলে বৃথাই জীবন দান। বৃথা জীবন দান কি মানবিক চোখ টিপি

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

পোষ্টের সাথে অপ্রাসঙ্গিক হওয়া সত্তেও ফিনিয়াস গেজের ক্লাসিকাল কাহিনীটা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না। গেজ একবার একটা এক-ইয়ার্ড লম্বা একটা কীলক ব্যবহার করে একটা পাথরের রন্ধ্রের ভেতরে বিষ্ফোরক গুঁড়া প্রবেশ করাচ্ছিলেন। অকস্মাৎ বিষ্ফোরক গুঁড়াটি দুর্ঘটনাবশত জ্বলে উঠে এবং কীলকটি তার গন্ড অস্থির ভেতর দিয়ে মস্তিষ্ক ভেদ করে করোটির উপরের অংশ দিয়ে বের হয়ে যায়। ফিনিয়াস ও যাত্রা বেঁচে গিয়েছিলেন, তার স্মৃতিশক্তি, বোধশক্তি, ভাষাজ্ঞান, চলনশক্তি সবই অক্ষুন্ন ছিল- তবে তার এক সহকর্মীর ভাষায়, "Gage was no longer gage"। ওই একটা লৌহখন্ড তার ventromedial prefrontal cortex(যেটাকে আপনি যুক্তিবিদ্যার ধারক বলেছেন) কে আঘাত করে মস্তিষ্কের পুরো সার্কিটে পরিবর্তন এনেছিল, যার ফলে একজন বিনয়ী, নির্ভরযোগ্য, উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি হয়ে গিয়েছিলেন অভদ্র, অনির্ভরযোগ্য এবং ভবঘুরে। "আমি" আসলে কি জিনিস, সেটা এই ঘটনা কিছুটা হলেও ইঙ্গিত করে।

সূত্র- স্টিভেন পিংকার, দ্যা ব্ল্যাংক স্লেট

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বইটিথেকে একই রকম একটা উদাহরণ দেবার লোভ সামলাতে পারলাম না।

এক ভদ্রলোক একটা বড় অফিসের দায়িত্বশীল পদে চাকুরী করতেন। তার নিউরাল সার্জারী করে টিউমার অপশারনের পর দেখা গেল যুক্তিবোধ টনটনাই আছে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্য তারপর মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা এবং আবেগের অভাব দেখা যেতে লাগল। যেমন, দুপুরে কোথায় খাবে সেটা সে ঘন্টার পর ঘন্টা তথ্য এনালাইসিস করে। তারপর প্রতিটা রেস্টুরেন্টে ড্রাইভ করে গিয়ে দেখে খাবার কেমন, পরিবেশ কেমন। কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়। ফলে তার চাকুরী যায়, ডিভোর্স হয়ে যায়, ইত্যাদি।

পরে দেখা যায় আমাদের আবেগের যে অংশটা (অ্যমিগডালা) সিগনাল পাঠায় কোনটা বাছাই করতে হবে কিংবা কোনটা ভালো সেটার সাথে তার মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই যুক্তি থাকা স্বত্তেও তিনি পরিনত হন আবেগশূণ্য, সিদ্ধান্তহীন একজন মানুষে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।