Warning: Creating default object from empty value in theme_img_assist_inline() (line 1488 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/img_assist/img_assist.module).

প্রসঙ্গঃ সোহেল তাজ এবং তাজউদ্দীন

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: সোম, ২৭/০৭/২০০৯ - ২:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দিন বদলের মন্ত্রীসভা থেকে সোহেল তাজের প্রস্থান, দিন যে বদলায়নি বা বদলাবে না তার একটা অশনি সংকেত বলে মনে হলো। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অগ্রনায়ক তাজউদ্দীনের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালীন মতা কাঠামো থেকে সরে যাওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি এত দ্রুত কেউই আশংকা করেছিল বলে মনে হয় না।
তাজউদ্দীনের সরে যাওয়ার নৈপথ্যের ঘটনা অনেকেই জানেন। সে নিয়ে আলোচনার চেয়ে তাজ উদ্দীনের সরে যাওয়ার ফলাফল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাজ উদ্দীনের মত মেধাবী দেশপ্রেমিক দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতাকে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র যারা করেছিল তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি যে পুরোপুরি হয়েছিল তা প্রমাণিত। রাজনৈতিক দুবৃত্তায়নের বাংলাদেশে স্টাইল তৈরীর তৎকালীন অশুভধারাটিই এখন শাখা প্রশাখা ছড়িয়ে এক অনড় বিষবৃক্ষ। তাজউদ্দীনকে বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার উঠোন থেকে সরিয়ে নিয়ে বঙ্গবুন্ধুকে যারা ঘিরে রেখেছিল তারাই বাংলাদেশের ভবিষ্যতযাত্রাকে পিছিয়ে দিয়েছিল এবং তার অশনি ফল ভোগ করছে জনমানুষ আজ পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের পাশে তার রানিং মেট তাজউদ্দীনের প্রশাসনিক কুশলতা বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার সাফল্য কিংবা কিউবার আত্মনির্ভর উন্নয়ন কৌশলের পথে নিয়ে যেত সেটা পাটীগনিতের হিসাব। এটাকে হাইপোথিসিস ভাবার কোন সুযোগ নেই। কারণ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কুশলতা তাজউদ্দীন মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরোপুরি প্রমাণে সক্ষম হয়েছিলেন এটা বিতর্কের অতীত।
তাজউদ্দীনের অপরাধ ছিল তিনি শিক্ষিত, সৎ, দেশপ্রেমিক এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন। তিনি রাজনীতির ঝাঁকের কইদের সঙ্গে বসে হালুয়া রুটির রুচিহীন জলসায় শামিল হতে পারতেন না। রুচিহীন তল্পিবাহক, মোসাহেব কিংবা পরগাছা গোত্রের রাজনীতি ব্যবসায়ীরা ভিলেজ পলিটিক্সের কানভারী করা কিংবা কানপড়া দেয়া বংশগতিলব্ধ দক্ষতায় শিকার করেছিল সুরাজনীতির শিক্ষক তাজউদ্দীনকে।

বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীনের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কতিপয় অসাধু রাজনীতিকের দেয়ালই হয়ে দাঁড়ালো বাংলাদেশের নিয়তি। আজো ঐ অশুভ মানুষদের বিছিন্ন করে রাখার ভিলেজ পলিটিক্সের প্রতীক হয়ে। ঐ দেয়ালটি যতদিন থাকবে বাংলাদেশ ততদিনই নিজভূমে পরবাসী হয়ে থাকবে। ইতিহাস আমাদের তেমনটাই বলছে।

মহাজোটের মহাবিজয়ের রথে চেপে যে নতুন মন্ত্রীসভার অভিষেক হলো সেখানে বেশ কয়েকজন সৎ সাদাসিধে মানুষকে দেখে আমরা বেশ আশান্বিত। ছয়মাসে তারা মি‌রাকল ঘটাবেন তেমনটাও আমরা ভাবিনি। একটি সরকারের পারফরমেন্স যাচাইয়ের জন্য ছয়মাস যথেষ্ট সময় নয়।
তবে সততা, জনপ্রিয়তার পাশাপাশি সমকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বে আরেকটি বিষয় জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটা হলো পেশাদারিত্ব। পনের কোটি মানুষের ভাত, কাপড়, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, গরীবী হ্রাস, নিরাপত্তা এগুলো আর ভাইসব ভাইসব বলে চেচালেই আরব্য রজনীর দৈত্য এসে হুকুম করুন জনাব বলে হাজির করবে না। জরুরী গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো এই মুহুর্তে ব্যবস্থাপনার পেশাদারিত্ব কৌশলের ওপর নির্ভরশীল। মাত্র পাঁচ মাস সময়ে সোহেল তাজ সেই পেশাদারিত্বের ছাপ রেখেছিলেন বা সেই পেশাদারিত্বের ইঙ্গিত তার মাথায় ও কাজে পাওয়া গেছে। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় বিটে যে রিপোর্টাররা কাজ করেছেন তাদের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলে মনে হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের সংস্কারের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতমুখী পরিকল্পনা তৈরীতে তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা লক্ষ্যনীয় ছিল। আধুনিক সময়ে অপরাধ প্রবনতার মধ্যে যে নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে তা দমনে পশ্চিমা নিরাপত্তা বাহিনীর কৌশল সম্পর্কেও সোহেল তাজ পড়াশোনা ও খোজ খবর করেছিলেন। এটিএন বাংলায় প্রচারিত একটি একান্ত সাক্ষাৎকার দেখে তা ধারণা করা গেছে। জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় তার মনোভাব ও প্রত্যয় অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে। সব মিলিয়ে সোহেল তাজকে একবিংশ মন্ত্রীসভার একজন মন্ত্রী বলে মনে হয়েছে। কারণ তারুণ্য সততাই দিন বদলের প্রতীক।

কিন্তু আমাদের মত আমজনতা সোহেল তাজকে দশে সাত কিংবা তাজউদ্দীনকে দশে নয় দিয়ে লাভ কী। এমনকি সৈয়দ আশরাফুলের মত আরেকজন রুচিবান রাজনীতিক ও পারেননি সোহেল তাজের প্রস্থান ঠেকাতে। জানিনা শেখ হাসিনা এবং সোহেল তাজের মাঝে সেই দুষ্টচক্রের দেয়ালটি তাদের ভিলেজ পলিটিক্স নিয়ে সক্রিয় ছিল কিনা। বাংলাদেশের কানভারী করা প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের নজির সঙ্গে নিয়ে ভাইসব বলে গলা খাকারী দেয়া চাটুকার রাজনীতি-ব্যবসায়ীরা সব সময়ই খরগোশের মত এগিয়ে থাকে। এই সব নষ্ট চক্র তাদের পোষা সাংবাদিকদের নিয়ে নানা রকম হলুদ গল্প ফাঁদবে। কারন তাদের বংশগতিতেই রয়ে গেছে তিলকে তাল করা এর কথা ওকে লাগানোর এক রুচিহীন পরচর্চার সংস্কৃতি।

কিন্তু মোদ্দা কথা হলো তাজ উদ্দীনকে যেমন করে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়েছিল। সোহেল তাজকে ও ঠিক তেমনি করে সরিয়ে দেয়া হলো। তাজউদ্দিন তার অভিমান নিয়ে নিজভূমে পরবাসী হয়েছিলেন। আর সোহেল তাজ সত্যিই পরবাসে। কারণ এখনকার ভাইসব বলে গলাখাকারী দেয়া রাজনীতির নষ্টজনেরা সত্তর দশকের চেয়ে অনেক বেশী অশ্লীল রুচিহীন কিংবা সুশিক্ষাবর্জিত। যেমন করে বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ জানতে পারেনি রাজনীতিতে শুভমানুষদের বিছিন্ন রাখার সেই সত্তর দশকের দুষ্টচক্রের দেয়ালটির কথা- একবিংশের এই পূনারাবৃত্তির কথাও হয়তো আড়ালে থেকে যাবে। এই স্ট্র্যাজেডী হয়তো বা বাংলাদেশের রাজনীতির এক অমোঘ নিয়তি।


মন্তব্য

গৌতম এর ছবি

ভেতরে ভেতরে যতো ঘটনাই ঘটুক না কেন, সোহেল তাজের নীরব প্রস্থান কিন্তু মানুষের বিরক্তিই উৎপাদন করেছে। দিনের পর দিন বিদেশে পড়ে থাকাটাকেও মানুষ সহজভাবে নেয় নি। বিদেশে যাওয়ার আগে এক কথা, যাওয়ার পর পত্রিকায় ফোনে আরেক কথা (পদত্যাগ সংক্রান্ত) বিষয়গুলোও কিন্তু সোহেল তাজের পক্ষে যায় না। আউটলুকের কথা বলা হয়তো স্থুলতা, কিন্তু সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চুলে জেল মেখে চুল খাড়া করার সংস্কৃতি চালু করেছিলেন, সেটির প্রতি ব্যক্তিগত ভালো লাগা থাকলেও সোহেল তাজের উচিত ছিলো সেটাকে অনুসরণ না করা। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ইমেজ ভালো হলে কিন্তু এই আউটলুকের কথাটা উঠতো না।

যা হোক, তিনি অসংখ্য মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসেছেন। মন্ত্রী হয়েছেন। কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো সমস্যার মুখোমুখি হন, তাঁর উচিত ছিলো সেগুলোর সমাধান করা, রণাঙ্গন থেকে পলানো নয়। ভিতরে ভিতরে সোহেল তাজ কী করেছেন জানি না, তবে যে রণাঙ্গনে তিনি নেমেছেন, সেখান থেকে বের হওয়া মানেই রণে পরাজয় স্বীকার করা।

তাজউদ্দিন কখনও রণাঙ্গন থেকে পালিয়ে যান নি, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাজউদ্দিনের সাথে সোহেল তাজের পার্থক্যটা এখানেই হতে পারে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

রাগিব এর ছবি

সোহেল তাজের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, সৌখিন রাজনীতি করতে এসেছেন। তার প্রবাসে স্থায়ীভাবে বসবাস দেখে প্রশ্ন জাগে, তিনি কি আমেরিকার নাগরিক/গ্রিন কার্ডের অধিকারী? যদি তাই হন, তাহলে বাংলাদেশের মন্ত্রী হওয়া কি আইনসিদ্ধ? (গ্রিন কার্ড থাকলে হয়তো সমস্যা নাই, কিন্তু নাগরিকত্ব থাকলে সেই ব্যক্তি সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রীয় পদের যোগ্যতা হারান বলেই জানতাম)।

তাজউদ্দিনের সাথে তাঁর ছেলেকে গুলিয়ে ফেলাটা বা তুলনা করাটা একেবারেই ঠিক নয়। রীতিমত আগরতলা-চৌকির-তলা তুলনা হয়ে যায়।

যত যাই বলুন না কেনো, হাল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কাউকে সমরতথন করতে পারছি না। এই ব্যাপারে গৌতম ভাইয়ের সাথে একমত।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

যা বলার গৌতম আর রাগিব ভাই বলে দিয়েছেন ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নীল [অতিথি] এর ছবি

সোহেল তাজ মুখ খুললে আশা রাখি অনেককিছু বের হবে। আর সেজন্যই শেখ হাসিনাও মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না, গোপনে বৈঠক করেন সোহেলের পদত্যাগ নিয়ে।

সাবিহ ওমর [অতিথি] এর ছবি

আমার মনে হয় সোহেল তাজকে অতটা তোলা না দিলেও চলতো। আপনি নিজেই বলেছেন পাঁচ মাস মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে এদেশে যা যা ঘটে গেছে, তার পর কারো উপর আস্থা রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সোহেল তাজের বিদায় আর কিছু না হোক আওয়ামী লীগের নতুন চেন অফ কমান্ডের সমন্বয়হীনতাকে প্রকট করে তুলেছে, যা শুভ লক্ষণ নয়। আশা করি, জাতীয় কাউন্সিলের পর আওয়ামী লীগ এবং সরকার কিছুটা গুছিয়ে উঠবে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

অন্ততঃ এই ক্ষেত্রে আমি সোহেল তাজকে সমর্থন করতে পারছিনা।
বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীনকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারলে অনেকেরই লাভ হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের জন্য তাজউদ্দীন ও জোহরা তাজউদ্দীনের অবদান হাসিনা এড়িয়ে গেছেন বলে তো মনে হয়না। তরুন সোহেলকে দলীয় নমিনেশন দিয়ে দুবার সাংসদ করেছেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব দিয়েছেন।
ছ'মাস বেশী সময় তো নয়। কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হলে সেটা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করা যেতো, তা না করে তিনি প্রথমে পদত্যাগ করেছেন। হাসিনা তবু তাকে ডেকে নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি পদত্যাগ অস্বীকার করেছেন যা মিডিয়াতে ও এসেছে। তারপর আমেরিকা চলে গিয়ে মাস দুয়েক পর বলছেন পদত্যাগ তো আগেই করেছি।

দুঃখিত, শহীদ তাজউদ্দীনের সন্তানের এরকম ফার্স হওয়া কাম্য নয়, একেবারেই নয়।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নৈষাদ এর ছবি

উপরের সবকটা মন্ত্যব্যের সাথে সহমত। সোহেল তাজ এবং সৈয়দ আশরাফুলকে মন্ত্রীসভায় নিয়ে আসায় যে আশার আলো দেখেছিলাম তার অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে সোহেল তাজের কার্যকলাপে। মন্ত্রীসভা গঠনের মাত্র দুমাসের মাথায় বিডিয়ারের ঘটনায় যখন দেশ চরম এক অবস্থার মধ্যে তখনো সোহেল তাজের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পারের দিনগুলো বাদই দিলাম - এধরনের 'ভিলেজ পলিটিক্সের' শিকার হওয়ার জন্য সেই দুমাসের কম সময় কী খুব কম সময় ছিলনা? 'সৌখিন রাজনীতিই' সম্ভবত সঠিক শব্দ - এ ধরনের আচরনের বর্ননার জ্নয়। অথচ সৈয়দ আশরাফুলকে দেখুন - অভিজ্ঞতার তুলনায় কতটুকু ম্যাচিওরড। পিতার সুযোগ্য পুত্র।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

দায়িত্ব ফেলে যাওয়া কোন দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন লোকের কাছ থেকে কাম্য নয়।
সোহেল তাজকে আমার কাছে মনে হয়েছে অপেশাদার, হুজুগে এবং আবেগী একজন মানুষ।

তাজউদ্দীন আর সোহেল তাজ এক নয় ।
সিচুয়েশনও এক নয়। সোহেল তাজ শেখ হাসিনার স্নেহধন্য, কাজ করার ইচ্ছা থাকলে তার পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব ছিল।

কিন্তু সম্ভবত তার বিদেশিনী স্ত্রী এই দেশে আসতে চাচ্ছেন না বা অন্যকিছু , তিনি বিদেশে থেকে বাংলাদেশে মন্ত্রীত্ব করার একটা চেষ্টা চালাচ্ছিলেন যেটা সম্ভব নয়।

শেষ পর্যন্ত তিনি দেশ ও জাতির প্রয়োজনের উপরে তার পরিবারকেই বেছে নিয়েছেন।
আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই ।
এই প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের কাছে পরিবারই প্রথম হয়ে ধরা দিয়েছে। পরিবারতন্ত্রের যুগে এর বাইরের উদাহরন আমার চোখে পড়ে না।

তানবীরা এর ছবি

গৌতম আর আরিফ ভাইয়ের সাথে একমত।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাজউদ্দীন আহমদ দশে নয় হলে সোহেল তাজ কি করে দশে সাত হন? কোন বিচারে? এতে কী সোহেল তাজকে উপরে উঠানোর জন্য তাজউদ্দীন আহমদকে নিচে নামানো হল না?

বিডিআরের ঘটনায় গোটা দেশ যখন উদ্বিগ্ন-উৎকন্ঠিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তখন দিনের পর দিন কোন দ্বায়িত্বজ্ঞানে বিদেশে বসে থাকেন! দেশে ফিরেও এই ব্যাপারে তাঁর কোন ব্যাখ্যা নেই, অনুশোচনার বহিঃপ্রকাশও নেই। বিদেশের কাজ যদি তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে দয়া করে তিনি বিদেশেই থাকুন। দেশকে, সরকারকে এভাবে বেকায়দায় ফেলার কোন অধিকার উনার নেই।

যদি এটা মনে করে থাকেন তাঁকে তাঁর দলের একাংশ সাইজ করেছেন, তাহলে দলের সেই অংশের ব্যাপারে আরো পরিষ্কার ভাবে আমরা শুনতে চাই। বাংলাদেশের বৃহদাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে মান-অভিমান আর ষড়যন্ত্র খেলার জন্য নয়। রাজনীতিবিদদের মাঠের বক্তৃতার মত কোন কিছু হলেই তাতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে পাওয়াটা ভালো লাগে না। সত্য কিছু থাকলে তা স্পষ্ট করেই বলা উচিত। ব্লগতো আর ঢাকার সংবাদপত্র নয়, এখানে যদি আমরা নিজেদের বক্তব্য স্পষ্টভাবে বলতে না পারি তাহলে আর কোথায় বলব!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভেতরের খবর থাকলে প্রকাশ করে দেন। সোহেল তাজের নাটকীয়তা একদম ভাল্লাগেনি। সমস্যা থাকলে হাসিনা সেগুলো ঠিক করার বা সমস্যা দূর করে কাজ করতে বলেছিলেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেকখানি গুনগত পরিবর্তন এসেছে। এটা স্বীকার করতেই হবে। এর পেছনে কাজ করেছে শেখ হাসিনার সদিচ্ছা এবং বিশেষত কিছু পুরনো মাল বাদ দেয়া।

সোহেল তাজ যদি কারো ষড়যন্ত্রের বলি হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য সোহেল তাজই দায়ী। এত অভিমানী আর বিদেশপ্রেম নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না হওয়াই ওর জন্য ভালো ছিল। ওর সদস্যপদই বাতিল করে দেয়া উচিত কিংবা নিজেরই পদত্যাগ করা উচিত। দিনের পর দিন বিদেশে থেকে দেশের সংসদে সে কী অবদান রাখবে?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমিও উপরের মন্তব্যগুলোর সাথে সহমত পোষন করি। সোহেল তাজ ভেগে গেছেন, ব্যাস। রাজনীতিতে কেউ চ্যারিটি করতে আসে না। এটা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। সেখানেও পিতৃ-পরিচয়ের জোরে সোহেল তাজ অনেক এগিয়ে ছিলেন। হাসিনাপুত্র একটি অকালকুষ্মাণ্ড হওয়ায় সোহেল তাজ এবং সৈয়দ আশরাফের জন্য বাংলাদেশের ভবিষ্যতের রাজনীতি সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। একজন এর মূল্য বুঝেছেন, অন্যজন বোঝেননি।

জাতীয় চার নেতাদের প্রতি সে-কালে যাবতীয় অন্যায় বা অমূল্যায়নের শোধ শেখ হাসিনা দিয়েছেন। একে একে প্রতি নেতার সন্তানদের অনেক সম্মান এবং ক্ষমতার আসন দিয়েছেন। নাসিমের মত চোরের জন্য তো ক্ষমতাটা গেলো ২০০১-এ। এবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়েও সোহেল তাজ ড্রামা কুইন হয়ে গেলেন।

সোহেল তাজ গাছ থেকে অনেক দূরে পড়া ফল। বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়া তাজউদ্দীন আহমেদ, আর ছিচকাঁদুনের মত বাংলাদেশ ফেলে পালানো সোহেল তাজের সামর্থ্যের পার্থক্য মাত্র ২০% না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সৈয়দ আশরাফের সাথে আমি যাকে যোগ করতে চাই উনি হলেন হাছান মাহমুদ, সম্ভবত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এ ধরনের মানুষদেরকে শেখ হাসিনা সামনে নিয়ে এসেছেন বলে আওয়ামী লীগের যেমন লাভ হয়েছে, তেমনি হাসিনার সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। এই দুইজন মানুষের প্রতি আমার আশা একটু বেশী।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ইশতিয়াক রউফের মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

রাফি এর ছবি

সোহেল তাজ তার নিজের অবস্থানে সৎ ছিলেন বলে আমি বিশ্বাস করি না; থাকলে দেশ ছাড়ার আগেই পরিস্কার ভাষায় বলে যেতেন আমি পদত্যাগ করেছি। তিনি দেশ ছেড়ে কোন কিছুর অপেক্ষা করছিলেন, ভেবেছিলেন আরাধ্য বস্তু পেলে আবার ক্ষমতায় ফিরব, শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন।

এককথায় সোহেল তাজ তার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার সম্মান রাখতে পারেননি; আর সোহেল তাজের সাথে তাজউদ্দীন এর তুলনা করে লাভ নেই; বাপকা বেটা সবাই হয় না, বিশেষত বাপ যেখানে তাজউদ্দীন আহমেদ

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

ব্লগার এর ছবি

ব্লগ লেখকের কাছে প্রশ্ন। আপনার পোষ্টের নিচে মন্তব্যগুলোতে আপনাকে কোন আলোচনায় অংশগ্রহন করতে দেখা যায় না কেন? আপনার গত তিনটি পোষ্টে বেশ কিছু আলোচনাযোগ্য মন্তব্য এসেছে।

তানভীর এর ছবি

হ। আমারো আগে প্রশ্ন এটাই।

দুর্দান্ত এর ছবি

১। সোহেল তাজকে ভিকটিম বলে মনে করার কারন বুঝিনা। বিডিআরের ঘটনার সময় তার কাছ থেকে যে নেতৃত্ব আশা করার ছিল, তিনি সেটা দেখালেন কই?
২। তাজুদ্দিনের সাথে সোহেলকে মেলাবেন না। বড় বাবার সন্তান হওয়াটাই বড় গুন নয়। বঙ্গবন্ধু আর জিয়ার সাথে কি হাসিনা আর তারেকের তুলনা চলে?

সুজন চৌধুরী এর ছবি

আমার মনে হয় এখন আমরা মাসকাওয়াথ আহসান ভাইয়ের কাছে উপরের মন্তব্যের ভিত্তিতে ১টা উত্তর আশা করতে পারি, অন্তত ওনার বক্তব্যের সমর্থনে।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

যা বলতে চেয়েছি উপরের মন্তব্যগুলোতে বেশিরভাগই বলা হয়ে গেছে। সোহেল তাজ যে দায়িত্বজ্ঞান বর্জিত অপেশাদার একজন ঘরমুখি ব্যক্তি তা তিনি প্রমান করেছেন বহুভাবে। তাকে একটা সুযোগ দেয়া দরকার ছিল দেয়া হয়েছে। সেটা তিনি কাজে লাগাতে পারে নি। এর চেয়ে বেশি কিছু মনে হয় নি। বিদেশে স্ত্রী-পরিজন নিয়ে আয়েশে জীবন কাটানোকে তিনি রাজনীতি আর দেশ সেবার উপরে স্থান দিয়েছেন বলেই মনে করা স্বাভাবিক। সবচেয়ে বিরক্ত লাগল যাবার ব্যপার নিয়ে নাটক। কেমন বালখিল্য! এমন ব্যক্তিকে কেবল তার ত্যাগী বাবার কারনে আর বেশি সুযোগ দেয়া ঠিক হবে বলে মনে হয়না।

দিন যে বদলায়নি বা বদলাবে না তার একটা অশনি সংকেত বলে মনে হলো

দিন বদলানোর জন্যই প্রতিশ্রুতিশিল নেতৃত্বের দরকার। দিন যদি আপনা থেকে বদলে যেত তাহলে তার মত মিডিওকার বিনাকষ্টে রাজনীতি করতে পারতেন হয়ত। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তাকে না হলেও চলে বোধকরি। সোহেল সাহেবের হয়ত খোঁজ রাখবেন কখন দিন বদলে তার উপযোগী দিন আসবে যখন বিদেশে বসেই বাংলাদেশে মন্ত্রিত্ব করা যায়। তবে সে দিন আমরা চাই না। আমার বিশ্বাস তাজউদ্দিন যদি বেঁচে থাকতেন তবে তিনিও সেটা চাইতেন না।

এই সব নষ্ট চক্র তাদের পোষা সাংবাদিকদের নিয়ে নানা রকম হলুদ গল্প ফাঁদবে

তিনি বা তার হয়ে কেউ তাহলে আমাদেরকে সত্যটা বলুন। না বলে পালিয়ে যাওয়াটাকে কিসের ইঙ্গিত মনে করেন? তিনি আভাসে ইঙ্গিতে কিছু বলতে চাইছিলেন মনে হয়েছে। কিন্তু এটাকে একটা হঠকারি কৌশল মনে হয়েছে মাত্র। গাধার মত ঘোলা করে জল খাওয়ার মধ্যে পেশাদারিত্বের কিছু দেখিনি।

রাজনীতি নিজেই নিজস্ব ধারার পেশাদারিত্বের দাবি রাখে। সেখানে পারিবারিক পরিচয় খুব কম ক্ষেত্রেই শুন্যস্থান পুরন করতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি নিজেকে পুরোপুরিই ব্যর্থ প্রমান করেছেন।

অমিত আহমেদ এর ছবি

যা বলার সবাই মন্তব্যের ঘরেই বলেছেন।
তাই শুধু তাঁদের বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে মাসকাওয়াথ ভাইয়ের জবাবের প্রতিক্ষায় রইলাম।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমারো মনে হয় তাজউদ্দিন আহমেদের সাথে সোহেল সাহেবের কেস মিলানোটা ঠিক হচ্ছে না। তাজউদ্দিন আহমেদের কর্মদক্ষতা এবং আওয়ামী লীগের ডানপন্থীদের সাথে শত্রুতা দুটোই ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। সোহেল সাহেবের ক্ষেত্রে তেমন কিছু আমরা জানি কি? মাসকাওয়াথ ভাই বিষয়টার উপরে আলাদা করে আলো ফেলতে পারেন।



অজ্ঞাতবাস

জিজ্ঞাসু এর ছবি

সোহেল তাজ একজন এমপি তথা জনপ্রতিনিধি। তার ছোট থেকে বেড়ে ওঠার পরিবেশ প্রতিবেশ কেমন ছিল জানি না। হঠাৎ করে তার নিজের ইচ্ছায় যতটা না তার পরিবারের সদস্যদের অনেকের ইচ্ছায়ই হয়ত সদ্য আমেরিকা ফেরত তিনি রাজনীতির মাঠে আনাগোনা শুরু করেছিলেন। আমি যতটুকু বুঝি তার নিজের আশেপাশের লোকজনও তাকে হয়ত নানাভাবে বিভ্রান্ত করে থাকতে পারে। তিনি এপর্যন্ত দুইবার এমপি হলেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে একজন রাজনীতিকের দায়িত্ব অনেক বেশি। তিনি যদি আমেরিকা প্রবাসী, পারমানেন্ট রেসিডেন্ট বা আমেরিকার পাসপোর্টধারী হন সেদিক থেকে চিন্তা করলে তার পক্ষে কতটা দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব তা প্রশ্নবিদ্ধ বটে।

উপরে অনেকের মতামতের মত আমারও প্রশ্ন তিনি মন্ত্রীত্ব ছাড়তে চাইলে পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে বা ব্যাখ্যা না দিয়ে (ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে) ছেড়ে দিতে পারতেন। যত সমস্যাই থাকুক নাটকের অবতারনা করা ঠিক হয়নি।

জনগণ তাকে প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে। তিনি এ দায়িত্ব থেকে কীভাবে দূরে থাকবেন? আমেরিকায় অবস্থান করলে তিনি মন্ত্রীত্ব হোক, এমপিত্ব হোক, কোন দায়িত্বই পালন করতে পারবেন না এটা স্পষ্ট। আর তাছাড়া এত অল্পতে ক্লান্ত হয়ে, বা রাগ করে বা গোস্বা করে মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলে বাঙলাদেশের মত কঠিন রাজনীতির ময়দানে রাজনীতি করতে নামার কোন অর্থ নাই। সেক্ষেত্রে আমার প্রথমোক্ত সন্দেহ - তিনি নিজের ইচ্ছায় রাজনীতিতে নামেন নাই - জোরালো হয়।

বাঙলাদেশের রাজনীতির মাঠে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চলে এ কথা নতুন করে বলার প্রয়োজন নাই। দেশের সার্বিক অবস্থা থেকে তা স্পষ্টতই অনুমেয়।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

গৌরীশ রায় [অতিথি] এর ছবি

গৌতম সব বলে দিয়েছেন , তার পর বলার কিছু থাকে না ।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

উপরে যাঁরা মন্তব্য করেছেন, সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই মন খুলে মন্তব্য করেছেন বলে। ব্লগের এই জিনিষটাই খুব আকর্ষণীয়। সবার মন্তব্যের জবাব আলাদা করে না দিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

(টাইপিং-এ সীমাবদ্ধতার কারণে আপনাদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেয়া হয়ে ওঠে না। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। একটু ধাতস্থ হয়ে উঠলেই আপনাদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেবো বলে আশা রাখি।)

সোহেল যতোটা সময় কাজ করেছেন, যোগ্যতার সঙ্গে করেছেন। যে কারণে শেখ হাসিনা এবং সৈয়দ আশরাফ তাঁকে রাখতে চেষ্টা করেছেন। সোহেল দল বা সরকারের কোনো ক্ষতি হয় এমন কথা না বলে কেবল তাঁর ভাষায় "আত্মসম্মানবোধ" নিয়ে সরে গেছেন। একটি চক্র বা ত্রিভূজ পদে পদে বাধার সৃষ্টি করেছে, অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরী করেছে। যদি কাজ-ই করা না যায় তাহলে মন্ত্রী থেকে লাভ কী! তাজউদ্দীনকে অপমান সইতে হয়েছিলো, সোহেলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আমাদের বাপ-চাচাদের জমানায় যা হতো একটু শালিনতা বজায়ে হতো। আর আমরাতো মুখে যা আসে তাই বলি। সময়ের পার্থক্যের কারণে তাজউদ্দীন দেশে ছিলেন, সোহেল থাকতে পারেননি।

আমি একটি আলোচনার সূত্রপাত করেছি মাত্র। আপনারা খোঁজ খবর নিয়ে তাতে আলো ফেলুন। যদি দেখা যায় সোহেল কেবল পারিবারিক কারণেই চাকরী ছেড়েছেন (কষ্ট করে দুবার ইলেকশন করেছেন এতো দুর্বল পারিবারিক সমর্থন নিয়ে), আমি যা লিখেছি তা যুক্তিহীন, তাহলে বুঝবো আমার অভিজ্ঞতায় ভীষন ঘাটতি, আশা করছি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মাসকাওয়াথ ভাই,
ধন্যবাদ আপনার উত্তরের জন্য। আশা করি আপনার টাইপিং সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা দ্রুত সরে যাবে।

আপনার পোস্টের সাথে অধিকাংশই দ্বিমত পোষণ করেছেন। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তবে আপনার একটা পয়েন্টে আমি খানিকটা একমত। সেটা হলো "চক্র"। এই চক্র কিন্তু সবখানেই আছে, রাজনীতিতেও আছে, এবং থাকবে। মানলাম উনি যা কাজ করেছেন যোগ্যতার সাথেই করেছেন। কিন্তু শুধু আত্মসম্মানের কারণ দেখিয়ে উনি সরে গিয়ে তাহলে কি দেশকে বঞ্চিত করলেন না? যতটা জানি শেখ হাসিনা ওনাকে স্নেহের চোখে দেখতেন- এমন ভাগ্য কয়জনের হয়? এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে তো তার পক্ষে সত্যিকার পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা সম্ভব ছিল। হয়তো সফলও হতেন। কিন্তু উনি সবকিছুকে পায়ে ঠেলে, তাঁর এলাকার জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে পরবাসে বসে সুখের এবং "সম্মানের" জীবন কাটাচ্ছেন।

ওনার দেশে আসার তাড়া থাকেনা, দেশে এসে উনি কী করবেন?, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উনি বিদেশে থাকেন, বিদেশে গিয়ে বলেন উনি পদত্যাগ করেই এসেছেন-- এসব নাটক করে নিজেকে তো ডুবিয়েছেনই, আওয়ামী লীগকেও বিব্রত করেছেন।

নিকট ইতিহাস থেকেই দেখি আওয়ামী রাজনীতির অনেক বড় বড় কাকেরা দল ছেড়ে সরে গিয়ে আজ ভাগাড়ের গোবরের মতই অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে আছে। সোহেল তাজ আর রাজনীতিতে ফিরবেন বলে মনে হয়না। না ফিরলেই বুঝব ওনার আত্মসম্মানবোধ আছে।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

সোহেল দল বা সরকারের কোনো ক্ষতি হয় এমন কথা না বলে কেবল তাঁর ভাষায় "আত্মসম্মানবোধ" নিয়ে সরে গেছেন

তাহলে আমাদের জন্য টেক হোম লেসন কি তবে এই যে আত্মসম্মান বোধ নিয়ে বাঁচতে হলে দেশে ফিরে না যাওয়া। আমার মত সাধারন লোকের হয়ত সেটা বলা মানায়। কিন্তু তার কি মানায়? তিনি দেশের বাইরে যদি বেশির ভাগ সময় না কাটাতেন, পদত্যাগ নিয়ে বালখিল্য না করতেন হয়ত তাকে বা তার তত্ত্বকে হয়ত কিছুটা বেনিফিট অফ ডাউট দেয়া যেত। কিন্তু সব মিলিয়ে ভাবার পর আসলে তেমন একটা সহনুভুতি আসে না। কেবল বিরক্তি বোধ জন্মায়।

বিপ্রতীপ এর ছবি

কিছু কারনে সোহেল তাজের আচরণ আমার কাছে নাবালকের মতো মনে হয়েছে।
১। যদি তিনি পদত্যাগ করেই থাকেন তবে মাঝে পদত্যাগের ব্যাপারটিকে 'অস্তিত্বহীন' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন কেন?
২। তিনি একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য, জনগনের প্রতিনিধি। কবে দেশে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিয়েছেন তার দেশে ফেরার তাড়া নেই, আর এতো তাড়াতাড়ি ফিরেইবা কি হবে!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর

একলব্য১৯৭১ এর ছবি

বাংলাদেশ যে ইউটোপিয়া নয় এবং এদেশে রাজনীতি করতে গেলে যে নানামুখী চাপ আসবে এই সত্যতা যদি সোহেল তাজ না বুঝে থাকেন তাহলে তাঁর মন্ত্রীত্ব করার যোগ্যতা নিইয়ে আমি সন্দেহ প্রকাশ করি।সোহেল তাজের উপর প্রথমে বিরক্ত হই পিলখানার ঘটনায় যখন দেশের টালমাটাল অবস্থা তখন তার বিদেশে অবস্থান নিয়ে।আর তারপর ছিঁচকাদুনে মনোভাব নিয়ে এই পদত্যাগ।"আত্মসম্মান" টাইপ ছেঁদো কথায় চিড়ে অন্তত আমার ভেজেনি।রাজনীতির ময়দান যে কঠিন এবং এখানে যে ফেয়ার প্লে হবেনা এই সত্যটা জেনে তাঁর মন্ত্রীত্ব করতে আসা উচিৎ ছিল।আমার কাছে সোহেল তাজ রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া এক কাপুরুষ ছাড়া আর কিছুই নয়।

সুধীর (অতিথি) এর ছবি

এ বিষয়টিতে আমি রাগিবকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি।

আমার জানামতে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিনাগরিকত্ব স্বীকার করে না। অবস্থা দৃষ্টে আমার সন্দেহ তাজের শুধু পরিবার নয়, তিনি নিজেও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক (শুধু গ্রীন কার্ড অধিকারী নন)। সম্ভবত সংশ্লিষ্ট মার্কিন অধিদফতর থেকে তাঁর বর্তমান নাগরিকত্ব সম্পর্কে কেউ জানতে চাইতে পারে। তাজ পরিবারের পরামর্শ এবং নিজের বিবেচনা অনুযায়ী বেশী দীর্ঘস্থায়ী ও নিশ্চিততর পথটি বেছে নিয়েছেন। আসল কথাটি বলা সম্ভব ছিল না বলেই এত নাটক করতে হয়েছে।

দেবপ্রিয়ের রুশ স্ত্রীর কথা বিবেচনা করে বিগত সরকার বাংলাদেশী দূতদের বিদেশী স্ত্রী/স্বামীর ওপর বাধা তুলে নেয়। জাতিসঙ্ঘে দূত ইস্মত তার সুবিধা পায়। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি যিনি নিযুক্ত হয়েছেন, তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রবাসী নন, সেদেশের স্বীকৃত নাগরিক।

এটি কি ঠিক হলো ? ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিল যে, যেহেতু বাংলাদেশে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা একটা ঘাঁটি বানাবার চেষ্টা করছে, এটিকেও আফগানিস্তান, ইরাকের মত ধ্বংস করে ফেলা উচিত। আমাদের দূত কোন পক্ষ নেবেন? তাঁকে আমেরিকার নাগরিকত্বের শপথ পাঠ করার সময় এই প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে যে সেদেশের জন্য প্রয়োজনে সর্বস্ব ত্যাগ করতে হবে। বাংলাদেশের কাছে তাঁর দায় কি রকম ?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এত কিছু জানতামনা। গাছের খেয়ে তলারটাও কুড়াতে আমাদের জুড়ি নেই।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমার তো এ হিসাবটা কিছুতেই মিলছে না যে, দু-দুবারের এমপি সোহেল তাজ কি বাংলাদেশের রাজনীতির প্যাঁচ-ঘোরপ্যাঁচ না বুঝেই হঠাৎ করেই রাজনীতিতে নেমেছিলেন ! কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই ! হঠাৎ করে প্যাঁচ আবিষ্কার করেই কাজের পরিবেশ নেই বলে পাততারি গুটালেন !

নাক দিয়ে দুধ বেরোয় এরকম ছেলেটাও তো বাংলাদেশের রাজনীতির চেহারা সম্পর্কে অবগত হয়ে যায় জানতাম। আর এইসব নেতিবাচক পরিবেশ পরিস্থিতি পাল্টাতেই তো দিন-বদলের রাজনীতির সূচনা। যদি সবকিছুই চেলচেলাইয়া চলার মতো ঠিকঠাক সাবলীল থাকতো, তাহলে আর দিনবদলের রাজনীতির শ্লোগান কেন ? এই শ্লোগান কি সোহেল তাজও ভোটের রাজনীতিতে প্রয়োগ করেন নি ?

বাঙালির ইতিহাসে তাজউদ্দিন আহমেদ যে অবস্থানে, তার কনেআঙুলের যোগ্যতাও কি সোহেল তাজ দেখালেন ? মাসকাওয়াথ ভাই সোহেল তাজের যেসব গুণের প্রশংসা করলেন, তা অবশ্যই গুণ। তবে তা একজন মেধাবী সৎ আমলার গুণ হতে পারে, কিছুতেই একজন লীডারের গুণ নয়। একজন লীডার তো তিনিই, যিনি সব প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে যাবার যোগ্যতা ও সামর্থ রাখেন। তা তিনি নিজেই করুন কিংবা অন্যকে দিয়ে করান সেটা মুখ্য নয়। মুখ্য হচ্ছে তাঁর নেতৃত্বের মাধ্যমে অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানো গেলো কি না।

সেই বিচারে আমার মতে সোহেল তাজ একজন মেধাবী মুখ হতে পারেন, কিন্তু নির্ভর করার মতো নেতা নন। তিনি বারবার মরার মতো প্রস্তুত, কিন্তু বীরের মতো একক মৃত্যুর জন্য নয়।
আমি অন্তত মহান রাজনীতিক তাজউদ্দিন আহমেদের পাশে এই ক্ষেত্রে সোহেল তাজের নাম উচ্চারণে আগ্রহী নই বলে দুঃখ প্রকাশ করছি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।