১৯৭১

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মেহবুবা জুবায়ের [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৭/২০১১ - ২:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্ব > দ্বিতীয় পর্ব > তৃতীয় পর্ব > চতুর্থ পর্ব > পঞ্চম পর্ব > ষষ্ঠ পর্ব

চারিদিকে বাঁশঝাড়। মাঝখানে খানিকটা জায়গা পরিষ্কার করে মেজবাহ ভাইরা ট্রেনিং নিতেন। আমরা যেখানটায় থাকতাম সেখান থেকে জায়গাটা অনেক দূর, অনেকটা হাঁটতে হতো। ট্রেনিং দিতো একজন তাঁতি, সে ছিলো রঙের মাস্টার। সুতা রঙ করার কেমিকেলগুলো একসাথে মেশাতো ও। নামটা এখনো মনে আছে মনতু মিয়া (অবসর প্রাপ্ত ই.পি.আর)। পায়ে ব্যথা পেয়ে আগেই অবসর নিয়েছিলো। একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটত। বয়স কত, ঠিক জানি না। তখন মনে হতো, অনেক বড়। কিন্তু আসলে বেশি না, ৪৫-এর নিচেই হবে।

কারোই কোনো বন্দুক-টন্দুক ছিলো না। বাঁশের লাঠি দিয়ে বন্দুকের অভাব মেটানো হতো। লুঙ্গি কাছা দিয়ে পরে খালি পায়ে ১৫-১৬ জনের একটা দল ট্রেনিং নিতো। খুব ভোরে ট্রেনিং শুরু হতো। কী কনকনে ঠাণ্ডা! সোয়েটার পরেও আমার হাড়ে কাঁপুনি লেগে যেত। আমি আর আমিন আলি পাহারা দিতাম। তাঁদের পানি খাওয়াতাম। মনতু মিয়ার কথাগুলি এখনো স্পষ্ট মনে আছে, “আরাম কইরা খারান, সুজা হইয়া খারান। লেপোটো, রাইটো, লেপোটো, রাইটো।” একটু বেলা হলেই সবাই ফিরে আসতো এক এক করে। যেন গ্রামবাসি কেউ কিছু বুঝতে না পারে। এসেই কাঁচামরিচ দিয়ে মুড়ি খেয়ে তারা ঘুম লাগাতো। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা ওরা দাঁড়িয়াবান্ধা খেলতো। মনতু মিয়ার মতে এটাও ট্রেনিং। দম ধরে রাখা আর গায়ের জোরে ধস্তাধস্তি যুদ্ধের জন্য নাকি খুবই দরকারি।

রাতে আটচালার নিচে পুরো গ্রামবাসি জড়ো হতো। হোগলার চাটাই বিছিয়ে সবাই চাদর মুড়ি দিয়ে বসে বসে রেডিও শুনতো। আকাশবাণী আর বিবিসি। স্বাধীন বাংলা বেতার শোনা যেত না। ফাঁকে ফাঁকে রেডিও পাকিস্তান শোনা হতো। পূর্ব-পাকিস্তানে কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী শান্তিপ্রিয় মানুষকে যে হয়রানি করেছিলো, সে সব কঠোর হাতে দমন করে প্রদেশে শান্তি ও স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। শুনলে রাগে গা জ্বলতো। আমরা গ্রামে পালিয়ে চলে এসেছি, আর মিথ্যুকগুলি বলে কিনা স্বাভাবিক জীবন! মনতু মিয়া তার পাকিস্তানি আর্মিতে যাবার ঘটনা বলতো। পূর্ব-পাকিস্তান থেকে জাহাজে করে অনেকদিন লেগেছিলো করাচী পৌঁছাতে। পুরো সময়টা মুলা, পেয়াজ আর মোটা মোটা আটার রুটি খেয়ে থেকেছে। ৬৫ সালের যুদ্ধের গল্প করতো।

মাটির চুলোয় মাটির হাঁড়িতে রাতের খাবার রান্না হতো। সেদিকে নির্নিমেশ তাকিয়ে দেখতাম, চুলোর আগুন জ্বলতে জ্বলতে মাঝে মাঝে পট-পট করে শব্দ করে দপদপিয়ে উঠছে। সেই সাথে মিলে-মিশে যাচ্ছে ভাত ফুটানোর ও ডাল বাগাড়ের পাচঁ-ফোড়নের গন্ধ। সব কিছু মিলিয়ে এক অসাধারণ অনুভূতি।

ঢাকা থেকে সবচেয়ে বেশী লোক পালিয়ে জিঞ্জিরাতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো। ঢাকার কাছে, আর যেতেও সুবিধা, তাই। আওয়ামী লীগ ও অন্যদলের বড় বড় নেতারাও এই পথেই পালিয়ে ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন। আমাদেরও প্রথম জিঞ্জিরাতেই যাওয়ার কথা ছিলো। আমার মেজমামার শ্বশুরবাড়ি বিক্রমপুর, জিঞ্জিরাতে আমার মেজমামীর অনেক আত্নীয়-স্বজন থাকতেন। কিন্তু আয়েস আলী চলে আসাতে আমাদের প্ল্যান বদলানো হয়। ডেমরা আসবার ক’দিন পরে খরব এলো, জিঞ্জিরাতে পাক-আর্মিরা ট্যাঙ্ক আর স্যাবর জেট থেকে গুলি করে নিষ্ঠুর ভাবে বাঙালিদের খুন করেছে। কাউকেই রেহাই দেয় নি। পরিবারসহ সবাই মারা গেছে, হয়ত একজন মাত্র ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে। আম্মারা সব শুনে শুকুর রোজা রাখলেন একদিন। কী বাঁচাটাই বেঁচে গেছি আমরা।

[পরে মেজমামার কাছে গল্প শুনেছি, তারা ঢাকা ছেড়ে ওখানে গিয়েছিলেন। খুব সকালে সবাই ঘুমাচ্ছিলেন, হঠাৎ প্লেনের শব্দে সবার ঘুম ভেঙে যায়, কিছু বুঝে ওঠবার আগেই গুলি শুরু হলো, জান বাঁচানোর তাগিদে যে যেদিকে পেরেছিলো ছুটতে শুরু করে দিয়েছিলো। এক মা নাকি তার ছোট্ট বাচ্চাটাকে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছিলেন, কিছু দূর আসবার পর দেখেন, তার কাপড়ের পুটলির ভেতর বাচ্চাটা নেই। কোথায় যেন পড়ে গেছে। মা পাগলের মতো বাচ্চার খোঁজে যখন ফিরে যেতে শুরু করেছে তখন ট্যাঙ্কের গোলায় তার দেহ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে আশে পাশের মানুষের গায়ে রক্ত ছিটিয়ে দিয়েছিলো। সেই রক্ত আমার মামা-মামীর গায়ে এসেও লেগেছিলো।]

মনতু মিয়া তখন সবার কাছে একরকম হিরো হয়ে গিয়েছিলো। সবাই ওকে ওস্তাদ নামে ডাকতো। কিন্তু এই মনতু মিয়ার আর একটা দিক ছিলো যেমন লজ্জাজনক তেমনি বিব্রতকর। সেটা হলো মেয়েরা যখন পুকুরে গোসল করতো তখন সে উঁচু গাছে উঠে মেয়েদের গোসল করা দেখতো। ব্যাপারটা কে যেন দেখে ফেলেছিলো। তারপর ওকে ধরে দে মার, নাকে খৎ দেওয়ানো, থুতু ফেলে থুতু চাটানো এসব করানো হলো। এই ঘটনার পর ও আর ট্রেনিং দিতে রাজি হলো না। ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকতো। আমি আর আমিন আলী বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখতাম মনতু মিয়া কী করে? ও শুধু ঘরের মধ্যে পায়চারি করতো, একবার লুঙ্গিটা অর্ধেক করে গিট দিয়ে পরতো আবার গিটটা খুলে ফেলতো। একটু পর পর মাটিতে থুতু ফেলতো আর বলত, “গুষ্টি কিলাই, গুষ্টি কিলাই।”

পরে শুনেছি ডেমরাতে যখন মেলেটারি গিয়েছিলো, তখন এই মনতু মিয়া মিলিটারিদের সাথে যোগ দিয়ে অনেক গ্রামবাসীকে খুন ও মেয়েদেরকে অত্যাচার করেছিলো। যুদ্ধের পর সে অনেক বড় স্বঘোষিত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গিয়েছিলো। প্রচুর লুট-পাট করে অনেক টাকা বানিয়েছিলো। পরে আবার চেয়ারম্যানও হয়েছিলো। এরাই হলো বিশ্বাসঘাতক! গিরগিটির মতো ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো এদের স্বভাব। এরা প্রথম থেকেই ছিলো, এখনো আছে। এদের কোনো দল নেই, কোনো নীতি নেই। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো এরাই।

মেজবাহ ভাই, স্বপন মামারা ঠিক করলেন ইন্ডিয়াতে গিয়েই ট্রেনিং নেবেন। ডেমরা থেকে নরসিংদী, সেখান থেকে কুমিল্লা হয়ে ইন্ডিয়া। ছেলেবেলা থেকেই আমার ছিলো অতিরিক্ত কৌতূহল, উপরন্তু পেটে কোনো কথা চেপে রাখতে পারতাম না। যদি বলা হতো খবরদার কাউকে বলো না, তাহলেই খরব হয়ে যেত। না বলা পর্যন্ত স্বস্তি পেতাম না। কোনো কথা গোপন রাখতে পারতাম না। আর সেই জন্যই আমাকে সব কথা গোপন করা হতো।

একদিন সকালে উঠে দেখলাম, মেজবাহ ভাইরা কেউ নেই। আগের রাত্রে ওনারা সবাই চলে গেছেন। আমি আর আমিন আলী ওদের রাজি করিয়েছিলাম যে ওদের সাথে আমরাও যুদ্ধে যাবো। এখন ওদের সাহায্য-টাহায্য করবো, তারপর একটু বড়ো হলে আমরাও যুদ্ধে করবো। আমি মেয়ে তো কী হয়েছে? চুল কেটে, প্যান্ট-শার্ট পরে ছেলে সাজবো। এমন তো সিনেমাতে কতই হয়!

কিন্তু কথা দিয়েও ওরা আমাকে না বলে চলে গেছে, সেই দুঃখে সারাদিন কেঁদে কাটালাম। আমিন আলী ডাঁট মেরে বললো, সে সবই দেখেছে, সবই জানে। তারা পৌঁছে চিঠি দিলেই ও যুদ্ধ করতে যাবে। “বুঝলা না আমারে তাগো খুবই দরকার, আগে পলায়ে পলায়ে গিয়া কুন হানে মেলেটরি আছে খবর নিয়া আসুম। হের পরে হেরা গিয়া মেলেটরি মারবো।” আল্লার বিচার দেখে সে রাতে অনেক কেঁদেছিলাম। আল্লাহ কেন আমাকে আমিন আলী বানালেন না!


মন্তব্য

পাগল মন এর ছবি

আগেরটা পড়া হয়নি, আজকে দুটোই একসাথে পড়লাম।
চালিয়ে যান, সাথে আছি।

জিঞ্জিরার খুব কাছেই আমার নানা বাড়ি। অবশ্য যুদ্ধের সময় সেখানের অবস্থা কেমন হয়েছিল জানি না। আমার মা তখন বেশ ছোট ছিল। শুধু উনার মনে আছে যে কয়েক জায়গায় লুকিয়ে ছিল সময় সময় কিন্তু উনারা নিজেদের এলাকা ছাড়েননি তখন।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

আমার লেখাটা আগ্রহ করে পড়বার জন্য ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------------------------------

তানিম এহসান এর ছবি

আমি খুব অবাক হই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঘাটতে যেয়ে, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জেনারেল, কর্নেল, মেজর সাহেবেরা লিখেছেন, তার পরের কাতারে আসে আমলা, শিক্ষক, মোদ্দাকথা গাছের মগডালে বসে থাকা ফল দের কথাই পড়তে হয়েছে। তখন ক্লাশ সিক্স এ পড়ি, বাবা ধরিয়ে দিয়েছিলেন ‘আমি বিজয় দেখেছি‘, তারপর থেকে কত জানার চেষ্টা!

আপা, আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম, তাদের অনেক আফসোসের একটা আফসোস হলো - আমাদেরকে দল আর মতের আগ্রাসনে ইতিহাস পড়তে হয়েছে, সেই ইতিহাস কখনো লুঙ্গি পড়ে, খালি গায়ে, লাঙল ছেড়ে আসা কৃষক, কুমোর, মজুর, শ্রমিক আর কৈবর্তদের কথা বড় করে লিখেনি। এত হতভাগা জাতি আমরা যে একদম শুরু থেকেই ইরেজার হাতে নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিলো।

আমিন আলি জানলাম, আপনার কাছ থেকে জনমানুষের কথা শোনার একটা প্রবল আগ্রহ তৈরী হলো, সবগুলো লেখা পড়ার সময় এখন নেই আবার এইটা পড়ে মন্তব্য না করে পারলামনা। আপনি ভালো থাকবেন, আপনার ইতিহাসকথন আমাদের ভালো রাখুক, শুভেচ্ছা!

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

জেনারেল, কর্নেল, মেজর, আমলা, শিক্ষক, ওমগডালে বসে থাকা ফল রা যা লিখেছেন, তাদের লেখার সাথে আমার এই লেখাটার তুলনা করলে বড় লজ্জা পাবো যে ভাই! আর এটা ইতিহাসকথন বা কেমন করে হবে? সময়, তারিখ, ঘটনার প্রমান কোনটাই তো আমি দিতে পারবো না!
তোমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম, ওদের লেখা থেকে দল আর মতের আগ্রাসনে আমিত্বের জাহির টুকু বাদ দিয়ে পড়তে পারলে, হয়ত ওখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস জানতে পারবে।
শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থেকো।

--------------------------------------------------------------------------------

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

সবগুলো পর্ব আজ একসাথে পড়লাম। পরের সবকটা পর্বের অপেক্ষায় আছি। চলুক

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

আমার দিন-রাত যে কী ব্যস্ততায় কাটে! চেষ্টা করবো।

--------------------------------------------------------------------------------

guest_writer এর ছবি

আপনার এই সিরিজ এ নতূন লেখা আসলেই প্রথম পর্ব থেকে পড়ে আসি, লেখাগুলো যতবার পড়ছি তত ভালোই লাগছে, নিজেকে যেন ওই সময়ে খুজে পাই এগুলো পড়ে।
চালিয়ে যান আপু... ... ...
মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে জন্মেছি আমি, কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছে অথবা সমর্থন করেছে তাদেরকে চিরতরুন, নিজের অনেক আপন মনে হয়।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------------------------------

তাওহীদ আহমদ এর ছবি

আপনার লেখা খুব ভালো লাগলো চলুক

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

তাই?
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------------------------------

আয়নামতি1 এর ছবি

এই সিরিজটার জন্য আমরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি হাসি

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

হাসি

--------------------------------------------------------------------------------

কৌস্তুভ এর ছবি

পড়ছি। নিরাপদ সময়ের দূরত্ব থেকে। আরো ক্রমে ক্রমে এসব লেখা এক শ্রেণীর পাঠকের কাছে যুদ্ধের সিনেমার মত পয়সাউসুল বিনোদন হয়েই না দাঁড়ায়। তারা তখন বলবে, ভাবী, এই পর্বে যথেষ্ট থ্রিল পেলাম না, পরের পর্বে পুষিয়ে দেবেন।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এরাই হলো বিশ্বাসঘাতক। গিরগিটির মতন ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো এদের স্বভাব।

আমার মনে হচ্ছিল মনতু মিয়াটা এইরকমই করবে! এরা কখনো ভালো হয় না!

লেখা চলুক। আরো তাড়াতাড়ি পর্বগুলো দেয়া যায় না?

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মাঝখানে কয়দিন নেটে ছিলাম না, আজ পড়লাম...
চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রু (অতিথি) এর ছবি

আমি দেখি বেশ অনেকগুলো পর্ব মিস করে বসে আছি। যাই হোক, পড়ে ফেলবো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।