ছেঁড়া স্যান্ডেল, বুটজুতা, স্টেডিয়াম আর নাম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর (তারিখ: রবি, ১৫/১১/২০০৯ - ৬:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কয়দিন ঢাকার বাইরে ছিলাম শুটিংয়ে। নেটবিহীন। কাল সারাদিন ঘুম। আজ সচলায়তনের পাতা খুলে খুলে পড়ে যাচ্ছি একের পর এক লেখা।

পড়লাম যুবরাজের লেখাটা... দেখলাম সেই ছবিটাও।
মজা লাগলো।

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামালের জন্মদাত্রীর পায়ের স্যান্ডেল ছেঁড়া। আর তার পেছনেই দেখা যায় তিনটা চকচকে জুতার ছবি, ঠিক জননীর মাথার কাছে। তারমধ্যে দুটো বুটজুতো।

রাষ্ট্রর এখন সামর্থ নেই সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ জননীকে স্যান্ডেল কিনে দেওয়ার (সবাই বেঁচে আছেন কি না আমার জানা নেই), কিন্তু হাজারে হাজারে বুটজুতো যোগান দিয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে... মাঝে মধ্যেই যেগুলোর খুব উদার ব্যবহার হয় জনতার উপর।

ধন্য হে রাষ্ট্র... আমরা আরো বেশি বুটজুতো কেনার জন্য কর দেই সরকারকে... আমাদের বীরজননীরা ছেঁড়া স্যান্ডেল না পেলে প্রয়োজনে খালিপদে থাকবেন।

অবশ্য এই ব্লগ আমি সেজন্য লিখতেছি না। যুবরাজের ব্লগ পড়ে একটা পুরান ক্যাচাল মাথায় আইলো। কমলাপুরের কাছাকাছি একটা স্টেডিয়াম আছে। পয়লায় সেটার নাম রাখা হইছিলো বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম। কিন্তু জোট সরকার সেই নাম সংক্ষেপ করলো... যতদূর মনে পড়ে নাম রাখছিলো বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা স্টেডিয়াম বা এরকম কিছু।

এই নাম বদলের শানে নুযুল কী? বঙ্গবন্ধুর এক পুত্রর নাম কামাল, শেখ কামাল। তাই কামাল নামের কোনোকিছু দিয়া নাম হবে না রাষ্ট্রীয় কিছুর। তাই বীরশ্রেষ্ঠ হইলেও ‌'কামাল' পরিত্যজ্য।

অনেকদিন ওদিকে যাওয়া হয় না। এখন স্টেডিয়ামটার নাম কী? প্রহসন কি এখনো চলছে?

কিছু কিছু নামের অংশ দেখা যাচ্ছে ব্যাপক শক্তিশালী। মোহাম্মদ থেকে কামাল...

হুম...


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

নজু ভাই, আপনার কথাগুলো সত্যি। কিন্তু এভাবে বললে মনে হয়-- তাইতো রাষ্ট্র শুধু চকচকে বুট কিনছে কিন্তু শহীদদের জননীর জন্য স্যান্ডেল কিনছেনা। এরকম সমীকরণ কিন্তু অনেক দাঁড়া করানো যায়। লেকের পানি পরিষ্কারকরণ প্রকল্প, পরিবারের নিরাপত্তা প্রকল্প, স্ট্যাচু প্রকল্প, স্টেডিয়াম-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-সেতু-র নামকরণ প্রকল্প-- এরকম হাজারটা উদাহরণের সাথেও এই সমীকরণ কাজ করে।

রাজনীতিবিদদের ছানাপোনাদের (আর্থিক) দন্ড মওকুফ তো এই পরিবর্তনের আমলেও ঘটছে, যেমনটা আমার মতো অনেকেই আশা করেনি। কৈ, সে টাকা দিয়েও তো হাজারটা পরিবারের স্যান্ডেল কেনা যেতো, যেতোনা?

নামে আসলেই দেখছি অনেক সমস্যা-- মোহাম্মদ থেকে কামাল সবখানেই হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আসলে পোস্টের মূল উদ্দেশ্য স্টেডিয়ামটা। স্যান্ডেলের সাথে জুতার তুলনাটাই বেশি জায়েজ, তাই সেটাই তুললাম। আর ছবিতেই আসলে চকচকে জুতা দেখলাম তো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানবীরা এর ছবি


নামে আসলেই দেখছি অনেক সমস্যা-- মোহাম্মদ থেকে কামাল সবখানেই

নামহীন - ট্যাগহীন জগতের দিকে যাওয়ার কথা ভাবার সময় এসেছে

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অকুতোভয় বিপ্লবী [অতিথি] এর ছবি

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

....................
................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

দ্রোহী এর ছবি

ইদানিং কোনকিছুই আর ভালো লাগে না।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আমার নানার গুষ্ঠির টাইটেল হলো শেখ। বিগত উগ্র ডানপন্থি জোট সরকারের আমলে আমার এক মামাত ভাই সমস্ত যোগ্যতায় টিকে যাবার পরও শুধু ঐ শেখ টাইটেলের কারণে একটি সরকারি চাকুরিতে অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিলো।

তবে সবচেয়ে Safe হলো নামের শেষে 'উর রহমান' লাগালে, কারন ঐটা Common।

-------------------------------------------------
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

অতিথি লেখক এর ছবি

নজরুল ভাই, আমাদের রাজনীতিবিদরা নাম নিয়ে নাম দেয়া-মুছা খেলা খেলে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকা সত্বে এই হাল!!!! কোথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?? রাজাকারের বিচারের সাথে এই দরিদ্র মুক্তিযুদ্ধাদেরও আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। কোনো শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা কে যেন না খেয়ে অর্ধাহারে থাকতে না হয়, সে দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। এটা রাষ্টের দায়িত্ব। ধন্যবাদ নজরুল ভাই আপনার সুন্দর লেখার জন্য।
===========
দলছুট।
============

মামুন হক এর ছবি

নতুন করে কিছু বলার নাইরে দোস্ত। চেয়ে চেয়ে দেখি...

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

কথায় কয় না- নামে নামে যমে টানে। হয়তো তেমনি কিছু একটা...
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

মূলত পাঠক এর ছবি

লেখা তো খাসা, কিন্তু এইসব প্রতিবেদন লিখে কেটে পড়লে ছাড়ছি না। একটা চিত্রনাট্য নিয়ে লেখার আশায় কবে থেকে বসে আছি, নাট্যকারের আর সময় হয় না। নিজে না লিখুন, প্রিয় কোনো স্ক্রিপ্ট নিয়ে অনুভূতিগিলো শেয়ার করলেও তো পারেন।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গুলির মত ধাক্কা লাগল আপনার লেখা পড়ে

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।