কথামৃত

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/০৭/২০১৩ - ১২:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কথাই তো সব...

আমরা কিছু দেখেও দেখি না। দেখেছি যে এটা জানানোটাই কাজ।
পাহাড়ের সামনে হাজির হয়েই সবাইকে জানাই, 'জানো আমি এখন পাহাড় দেখছি'। সাগরেও তাই। নামলাম, ঢেউ খেললাম, জানালাম। শেষ। উত্তাল সাগরের পাশে চুপটি করে সময় বহিয়া যায় না আমাদের। বহিয়া যাওয়ার সময় কোথায়?

তেমনিভাবে কী দেখছি বা পড়ছি সেটা মুখ্য না। দেখলাম বা পড়লাম যে, তা জানানোটাই গুরুত্বপূর্ণ।
উপলব্ধি করি না কিছু, অনুভবও না। তবু অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

ভাবি না, শুধু বলি। যতক্ষণ বলছি, ততক্ষণই নিজেকে প্রবোধ দিচ্ছি, এ-ই বুঝি ভাবনা মোর।

শুনি সবচেয়ে কম, সবাইকে ছাপিয়ে শুধু বলি... কথা বলি... জোরে বলি...

আমরা এখন টিকে থাকি শুধু শব্দে, চিৎকার করাকেই জ্ঞান ভাবি।
বাঁচি না প্রাণে আর, আমাদের অস্তিত্ব এখন শুধু শব্দে বা চিৎকারে।

.........................................
ক) মূলত নিজেকে নিয়ে এলোমেলো ভাবনাই এই পোস্ট, 'আমরা'র মধ্যে আপনি নেই।
খ) কদিন আগের একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসের পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত রূপ।
গ) উৎসর্গ করলাম প্রিয় স্যাম'দাকে।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা - জালাইল্যা ভ্রমনের(চরম উদাস দার লেখায়) কথা মনে করিয়ে দিলেন ।

-প্রোফেসর হিজিবিজবিজ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি নিজে চ্যাগানো ভ্রমণের লোক তো, সবাইকে সেই ধারায় টেনে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু পারি না। সবাই অনুতারেক হতে চায়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

হক কথা।

স্বয়ম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মৃষৎ এর ছবি

হ ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়াই সব দায়িত্ব শেষ যেন..............

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দায়িত্বর কিছু নাই। যা কিছু দেখি, তা ভালো করে দেখি। গান শুনলে ভালো করে শুনি। পড়লে ভালো করে পড়ি।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আয়নামতি এর ছবি

আমরা এখন টিকে থাকি শুধু শব্দে, চিৎকার করাকেই জ্ঞান ভাবি।
বাঁচি না প্রাণে আর, আমাদের অস্তিত্ব এখন শুধু শব্দে বা চিৎকারে।

চলুক

এই সময়ের জন্য খুব সত্যি কথা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ছাইপাঁশ  এর ছবি

প্রতিটি লাইনের সাথে এর চেয়ে বেশি বোধহয় আর একমত হওয়া সম্ভব নয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাহ, মতের মিল হলো...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আশালতা এর ছবি

একাডেমিক দরকারে কিছুদিন আগে ফেসবুক নিয়ে একটা ছোটখাট রিসার্চের কাজ করেছিলাম। সেখানেও কিন্তু এই ব্যাপারটাই উঠে এসেছিল। অন্য দেশের কথা জানিনা তবে বাংলাদেশীরা কানেক্টেড থাকার জন্য ফেসবুক যতটা না ব্যাবহার করে তার চাইতে বেশি ব্যাবহার করে দেখনদারির জন্যে। অন্যদের চাইতে একজন কতটা ভালো থাকছে, খাচ্ছে, আনন্দ করছে সেটা অন্যদের জানানো এখন অনেক বেশি জরুরি আর সহজ কাজ। মানে পুরো এম্ফ্যাসিস্টা ওই জানানোর ওপরেই পড়ছে, অন্য কিছুতে তেমন নয়।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শুধু ফেসবুক না, কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি... খোলসে আগ্রহ বাড়ছে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ক:
- একলহমা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

শতভাগ সহমত। লোক দেখানো এখন প্রধান হয় গেছে।
ইসরাত

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাহ্, শতভাগ মতের মিল!

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

তেমনিভাবে কী দেখছি বা পড়ছি সেটা মুখ্য না। দেখলাম বা পড়লাম যে, তা জানানোটাই গুরুত্বপূর্ণ।

নিজের ঢোল নিজেকেই পিটাইতে হপে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মনি শামিম এর ছবি

ভাবনার খোরাক যোগালেন নজরুল ভাই। চিৎকার করে লোক দেখানো প্রবনতা যে আগেও ছিলনা ব্যাপারটা তা নয়। কিন্তু আগে মাধ্যম ছিল অপর্যাপ্ত। এক সময় চিঠি লিখে আমরা মনের কথা জানাতাম। চিৎকার করতাম। এখন মুঠোফোনে চিৎকার করি। ব্লগ কিংবা ফেসবুকে করি। আসলে মাধ্যম সহজলভ্য হলে অনুভুতি জানানোর প্রক্রিয়া সহজতর হয়। এখন সেই অনুভুতি তাৎক্ষনিক হলেও মানুষ তা প্রকাশ করতে চাইবে। সেটা কে কিভাবে নিচ্ছে তা ব্যাক্তিগত বিষয়। তাই বলে সব দোষ তো আর মাধ্যমের ওপর চালিয়ে দিলে চলেনা। ফেসবুকে আমরা নতুন, বড়জোর পাঁচ কি ছয় বছর এর বয়স। এই প্রযুক্তি আর একটু পরিণত হলে আমরাও হয়ত তা ব্যাবহারে কম বালখিল্য হবো, আরও সচেতন হবো! আমি নিজেই তো দেখছি, যেসব বন্ধু ফেসবুকে এক সময় নাওয়া, খাওয়া এবং ঘুমানোর কথা বলতেন, এখন তাঁরা বেশ নীরব। এমনও তো হতে পারে যে প্রযুক্তি আমাদের চাপা থাকা স্বভাবকে অনেক খানি উন্মুক্ত করেছে, প্রকাশিত করেছে। আর তারই এক বিস্ফোরণ অবলোকন করছি আমরা। আগেও আমরা সমুদ্র দেখলে তাৎক্ষনিক ভাবে তা নিকটজনকে বলতে চাইতাম, পাহাড়ের কাছে গেলে তাঁর শব্দ শোনাতে চাইতাম, বৃষ্টির ধ্বনি প্রকাশ করতে চাইতাম। কিন্তু উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাবে তা শুধু চাপা রইত আমাদের মননে! কিংবা চিঠি লিখে তা জানাতাম যদিও এই প্রক্রিয়ায় মনের কথা জানাতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যেত।

আমরা জানি আমাদের খুব কাছের এবং প্রিয় বন্ধুর সংখ্যা সীমিত। এমন বন্ধু যাঁদের মনের কথা না জানানো পর্যন্ত আমাদের শান্তি মেটেনা। এমন বন্ধু আর ফেসবুকের বন্ধু তো এক নয়। ফেসবুকে আমাদের বন্ধু সংখ্যা অগুনতি। দেখা গেল যেসব বন্ধুকে আমার মনের কথা জানাতে চাইনা, তাঁরাও জেনে বসে থাকল। আর সেটা অনেক সময় বিরক্ত করে, বিব্রত করে। যেটা আমার বন্ধুর কাছে সম্পদ তাই অন্যের কাছে চিৎকার বলে মনে হয়। যদিও ফেসবুকে এখন অনেক অপশন। সহজে রেহাই মেলে এইসব বিপত্তি থেকে।

নজরুল ভাই, আমরা এখনও প্রাণে বাঁচি, শব্দে বাঁচি, চিৎকারেও বাঁচি- যেভাবে বেঁচে বর্তে এসেছি এতটা কাল। আমরা যেমন বদলে বদলে নিয়েছি আমাদের সময়ের সাথে, তেমনি বদলেছে আমাদের অনুভূতি প্রকাশ করার প্রক্রিয়া। এই চিৎকার, এই কোলাহল থেমে যাবে একদিন কিংবা হয়ত থামবেনা কখনো। আর না থামলেই বা কি। শব্দ,ধ্বনি, চিৎকারকে আলিঙ্গন করবো, তাঁকে ছেড়ে দেবনা!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এখন তখন সব সময়। কিন্তু তবু আগে যেন কিছুটা অবসর ছিলো। অলস বসে থাকা যেতো। ঘুড়ির পেছনে জীবন হাতে নিয়ে ছুটতে পারা যেতো... মন দিয়ে গান শোনা যেতো। এখন তো গান শোনাই হয় না। ভালো একটা ঘটনা মনে পড়েছে গান শোনা নিয়ে। ওটা নিয়েই আলাদা একটা ব্লগ হতে পারে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্পর্শ এর ছবি

খাঁটি কথা। একাকিত্বের চর্চা বাড়ানো দরকার।
যখন যোগাযোগের অত উপায় ছিলো না, তখন একাকিত্ব নিয়ে বেদনাবিধুর কাব্য লিখতো মানুষ। "নাই টেলিফোন নাই রে পিয়ন" টাইপ। কিন্তু সবাই কানেক্টেড হয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারছি, নিজের মত একা থাকার মর্ম।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

উফ, আমার যে মাঝে মধ্যে একা হতে কী ভালো লাগে। তিন/চারদিন চুপ করে অলস শুয়ে বসে থাকা। ফোন বন্ধ। কারো সঙ্গে যোগাযোগ নেই কোনো। শুধু নিজের সঙ্গে নিজে... আপনার মাঝে আপনি যে জন... কোথায় পাবো তারে?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

দারুণ বলেছেন। আমরা সত্যিই কিছু দেখিনা। তাকাই মাত্র। দেখা আর তাকানোর মধ্যে কিন্তু বিস্তর ফারাক।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হু

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

আব্দুল্লাহ এ এম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ ভাই

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্যাম এর ছবি

ছোট্ট একটা লেখা পড়তে অনেক সময় লাগল, আরো সময় যাবে ভাবনায় ... অসাধারণ!

( বেশিদিন বাঁচবোনা নাকি! প্রিয় সচলদের একজন নজু ভাইয়ের উৎসর্গ দেখে তো নির্বাক! হাসি )

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সেদিন আপনার সঙ্গে কথা বলতে বলতেই মনে হচ্ছিলো, এই লেখাটা ব্লগে তুলে রাখা দরকার। নয়তো হারিয়ে যাবে। তাই তুলে রেখে আপনার কাঁধেই চড়িয়ে দিলাম হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুবোধ অবোধ এর ছবি

চলুক
ব‌লেচেন...

শুভায়ন এর ছবি

কোচবিহার জেলার ভাষা (যেটি আমি অল্পই জানি) বেশ মজার - ওখানে কথায় কথায় 'খাওয়া খায়' বাক্যবন্ধটি কথার শেষে জুড়ে দেওয়া হয়। উদাহরণ - ক্যাশিয়ার বাবু - চা খাওয়া খায় / ভাত খাওয়া খায় / টাকা গোনা খাওয়া খায় প্রভৃতি। এখন কেউ যদি সকাল সকাল মন্দিরে গিয়ে ধ্যানে বসেন - তাহলে দাড়াবে এরকম - উনি **** খাওয়া খান। হয়ত অতিরঞ্জিত - কারণ আমি নিজের কানে এসব শুনিনি তবে - ছোটবেলাকার যে সব গল্প শুনি - তাতে এইসব রয়েছে। এই কথা গুলি সামনা সামনি ঠিকই আছে - কিন্তু এখন তো স্মার্ট ফোন এর যুগ - যেখানে সেখানে চেক ইন করা যায় (উপাসনালয় এর মধ্যিখানেও) - CIA কে নিজের updates দেবার যে আকুলতা - তা দেখেই কে জানি লিখেছেন - জালাইল্যা ভ্রমণ কথা। সত্যি দুনিয়াদারী কতই যে দেখা বাকী।

পুন: স্থানীয় কোনো লোক কে আঘাত দেওয়া আমার উদেশ্য নয় - ওই জেলাটি আমার ছোটোবেলাকার জায়গা - হাতেখড়ির জায়গা - ওখানকার অধীত বিদ্যা (বিড়াল = মেগুটা) আমি আগে - এক ভাষাতাত্ত্বিক লেখার নিচে - মন্তব্য রূপে দিয়েছিলুম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।