বড়হরিণার দিনলিপি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন রোমেল চৌধুরী [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৪/২০১১ - ৮:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাফাই :
নতুন বাসায় উঠেছি। ট্রাঙ্ক থেকে বইপত্র গুছিয়ে গুছিয়ে আলমারিতে তুলছি। হঠাৎ দেখি ট্রাঙ্কের একপাশে দীর্ঘদিনের অবহেলায় পড়ে আছে আমার তরুণ বয়সের একটি ডায়েরি। একটু মমতা হয়। আজ দিনের শেষে, সকল কাজের শেষে, ওর সাথে কথা হয়। দিনপঞ্জি নয় বরং এলোমেলো কিছু লেখা দিয়ে ঠাসা। তখন কতই বা আমার বয়স। বাইশ কিম্বা তেইশ। এই রচনাগুলো কতটুকু সম্পন্ন হয়েছে সে বিবেচনার চাইতে বোধকরি সে বয়সের আবেগের প্রাবল্য আমাকে বেশী আলোড়িত করে। প্রকাশযোগ্য কিনা জানি না। তবে প্রকাশিত হলে পাঠক সহৃদয় হয়ে আমার সে বয়সটিকে বিবেচনায় নেবেন আশাকরি। কাপ্তাই লেকের দূরবর্তী প্রান্তে যেখানে কর্ণফুলির উদর সন্তানসম্ভাবা নারীর ফুলে উঠা তলপেটের মতো অসামান্য মমতায় ও আশ্রয়ের আশ্বাসে গোল হয়ে বিপুলা হয়েছে সেখানেই বড়হরিণা। তাহলে শুরু হোক 'বড়হরিণার দিনলিপি'।

প্রতীতি

পাহাড়ও নীল হয়, বেদনায় কাঁদে―
দুঃখ তার বোঝে বুঝি নিঃসঙ্গ ডাহুক পাখি
বুঝি আমি। লিখে রাখি প্রহরের ভাঁজে ভাঁজে।
পাহাড়ের পর পাহাড়
গহন অরণ্যের আঁচলে
লুকিয়ে ভেজা মুখ, ছল ছল চোখের চিবুক,
ফুঁপিয়ে কাঁদে।
তির তির বৃষ্টির সুখ নদীর গতরে।
ভিজে যায় জুমচাষ, অলস সময়―
নিঃসঙ্গ বেতবনে হাওয়া বয়,
শূন্য-হাহাকার তোলে,
সর সর শব্দে কান্নার সুরে বেজে উঠে বেদনার গীত।
একটি কি দু’টি একলা জুমঘর
সন্ধ্যের বিষণ্ণ আলো বুকে কাঁপে মিটি মিটি।
পথ ভুলে চলে আসা শীতের সারস
পানি খেতে এসে গুলিবিদ্ধ কুমারী হরিণী
ক্লান্তির কোলে মাথা রেখে ঘুমের তিয়াসে
নদীতীরে মৃত্যুর মতো ঢলে পড়ে।
তারপর সেই নদী দিয়ে ভেসে যায় একটি কালো ছেঁড়া নৌকোর খোল।


মন্তব্য

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

বাইশ তেইশ বছর বয়েস থেকেই আপনি দেখছি মেধাবী রোমেল! চোখ টিপি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

হো হো হো রিটন ভাই, বাইশ তেইশ বছরে মেধা ছিল হয়ত কিছু, এখন তা হাঁটুতে নেমে এসেছে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

বেশ লাগল কবিতাটি। চলুক

তখন কতই বা আমার বয়স। বাইশ কিম্বা তেইশ।

বলেন কি! আমার তো এখনো বাইশ কিম্বা তেইশই চলছে (মানে আমার তা-ই ধারণা)। হাসি আরও আশ্চর্যের ব্যাপার, গত কয়েক বছরে এই ধারণাটা একটুও পালটায়নি! চোখ টিপি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কুটুম,
তোমায় ধন্যবাদ ভাই। চিরযুবা তুমি যে চিরজীবি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

বিবাগিনী এর ছবি

অনেক সুন্দর হাসি
এখন আমার পাহাড় দেখলেই জানতে ইচ্ছা করবে যে সে চুপিচুপি কাঁদে কিনা।

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ বোন। নিশ্চয়ই তাহলে শিগ্রি আপনার কলম থেকে 'কাঁদো পাহাড় কাঁদো' উপন্যাসের কথামালা ফোয়ারাধারায় বেরিয়ে আসবে। অপেক্ষায় থাকলাম।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

বিবাগিনী এর ছবি

আমার ধৈর্য্য ভয়াবহ রকমের কম। উপন্যাস লেখার কোন দুরাশা করিনা তাই দেঁতো হাসি

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কবিতা চমৎকার লাগলো যথারীতি।

আপনি এমনই এক আদম রোমেল চৌধুরী যে নতুন বাসা গোছানো শুরু করে নিজের বইগুলো গোছানোর মধ্যে দিয়ে। আশ্চর্য লাগে যে এমন মানুষ আমি কবে হতে পারবো!

ভাবীকে আমার সালাম আর বাবুদুটোকে আদর জানাবেন। এই নারীদের জন্যেই আমাদের ছন্নছাড়া জীবন ভেসে চলে যায় না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ ছোটো,
সহি সালামতে পৌছে গেছো বুঝে খুশী হলাম। দেশে ফেরো তাড়াতাড়ি। তোমার মত বিরাট মনের মানুষ ও বন্ধু-অন্ত-প্রাণ পাওয়া আজকের দিনে বড়ই দুস্কর। আমরা আজকাল মানুষকে বিচার করি শুধু তাঁর খোলসটা দেখে, খোলস তুলে মনের খোঁজ নেবার সময় কোথায় আমাদের? ঝুঁকির প্রান্তদেশে থেকে কাজ করছো, সাবধানে থেকো। তোমার জন্য আমাদের মন কেমন কেমন করে!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বস, থ্যাংকস দেওয়ার মতো স্পর্ধা দেখাতে পারবোনা। ভালোভাবে পৌছে গেছি। আগামীকাল সারা দিন আমরা বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবো এখানে। সকাল থেকে সন্ধা।

বস একটা কথা বলেন তো দেখি, এই যে বললেন যে আপনার বুদ্ধি এখন হাঁটুতে নেমে এসেছে। আমরা বলে থাকতাম যে লম্বা মানুষের বুদ্ধি থাকে হাঁটুতে। আমি তার সাথে একটু যোগ করেছিলাম যে যারা বেশি লম্বা তাদের বুদ্ধি থাকে হাঁটুরও বেশ উপরে, আই মিন, অন্ডকোষে বা বিচিতে। আর যারা খর্বকায়, তাদের থাকে হাঁটু থেকে বেশ নিচে, পায়ের গিরায়। আমার হিসেব কি ঠিক আছে?

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ভালো বলেছ ছোটো।
হিসেব সঠিক হবেই যদি বলি কি আর সাধে?
জিরাফের বুদ্ধি তবে পৌঁছে যাবে চাঁদে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাহলে বোঝা যাচ্ছে বাইশ-তেইশ বছর বয়সেই আপনার নিয়তি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল যে আপনাকে কবি হতে হবে। ডায়েরীর ধারাবাহিকতায় আরো কবিতা পড়ার সুযোগ পেলে আমার এই অনুসিদ্ধান্ত সত্যতার ভিত্তি পাবে।

অল্প বয়সে মানুষ আবেগী হয় সত্য, তবে সেসময় মানুষ যে অজটিল আর ভাব প্রকাশে সৎ থাকে সেটার প্রমাণ মিললো। যে কবিতাতে আবেগ নেই, প্রাণ নেই সে কবিতা যতোই ব্যাকরণসিদ্ধ হোক, তাকি পাঠকের প্রাণে পৌঁছায়?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কেন মিছে মিছে লজ্জা দিচ্ছেন, ভাই। নিয়তি আমাকে নিয়ে যে নিঠুর খেলা খেলেছে তার কারনেই তো আজ আমার নেশা ও পেশা পরস্পরের অব্যর্থ শত্রু।

যে কবিতাতে আবেগ নেই, প্রাণ নেই সে কবিতা যতোই ব্যাকরণসিদ্ধ হোক, তাকি পাঠকের প্রাণে পৌঁছায়?

ব্যাকরণ কিম্বা প্রকরণসিদ্ধ হলেই তো আর কবিতা হবে না। বড়জোর তা হবে দ্যোতনাহীন বাক্যের ব্যায়াম। কবিতা সুন্দরতম শব্দের সুন্দরতম বিন্যাস নয় শুধু, শব্দোত্তর আরো কিছু।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অমিতাভ দেব চৌধুরী এর ছবি

শুরুতে একটি বর্ণনা ছিল ৷শেষাংশে বর্ণনার সঙ্গে একটি আবছা গল্প এসে মিশলো ৷গল্পটি মানুষের পৃথিবীর সঙ্গে যুক্ত করে দিল বর্ণিত ওই প্রকৃতিকে ৷মানুষ এসে সবকিছু বিষিয়ে দেয় ৷কিন্তু আবার না যদি আসতো সে,যদি শুধুমাত্র প্রকৃতিরই বর্ণনায় অভিভূত হয়ে থাকতো কবিতাটি ,তাহলে কি তার অভিঘাত অতটা তীব্র হতো ? বিশেষত ওই শেষ লাইনটির যার ওপর এই কবিতার অনেকখানিই দাঁড়িয়ে আছে ? তার মানে কি এই দাঁড়াচ্ছে যে মানুষ বদ ,কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে ,তার মহত্বর পাশাপাশি ক্ষুদ্রত্বটুকুকেও বাদ দিয়ে শিল্প হয় না ৷কী জানি ! যেসব কবিতায় মানুষ নেই, শুধুমাত্র এক নিঃসঙ্গ কিংবা হৈ-হৈ-রৈ-রৈ প্রকৃতি আছে---সেসব কবিতারও তো একজন দ্রষ্টা-কবি আছেন যিনি মানুষ ৷আবার যে কবিতাগুলি ঈশ্বরের দিকে চলে যায় ,সেগুলোও তো মানুষেরই কবিতা !কারণ ঈশ্বর নিজেই হয়তো মানুষের সৃষ্ট এক কবিতাই! আপনার কবিতাটি পড়তে গিয়ে একদিকে যেমন জীবনানন্দের ঘাই হরিণীর কথা চকিতে স্মরণে এসে মিলিয়ে গেল ,তেমনি মনে পড়ে গেল আদিকবিটির সেই প্রথম শ্লোক---তা-ও তো প্রকৃতপ্রস্তাবে ছিল এক ব্যাধেরই কীর্তি !অর্থাৎ সেই মানুষেরই ক্ষুদ্রতার কথা ৷
আপনাকে শুভেচ্ছা ও সালাম জানাই ৷শুভ নববর্ষ!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

অমিতাভ,
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ মন লাগিয়ে কবিতাটি পড়ার জন্যে ও বিশ্লেষণী বিশদ মন্তব্যের জন্যে। মানতেই হয়, বোধকরি শুধু কবিরাই হয়ে উঠেন কাব্যের অন্তর্ভেদী সমালোচক। যতদূর মনে করতে পারি, বুদ্ধদেব বসু অনূদিত রাইনের মারিয়া রিলকের লেখা "ভেনাসের জন্ম" কবিতাটির প্রকরণ অনুসরণ করে এই কবিতাটি লিখেছিলাম। আপনার বিশ্লেষণের মাহত্ব্যটুকু এ কবিতার প্রাপ্য কি না জানি না। বিশেষতঃ "ক্যাম্পে"র সাথে তুলনীয় তো নয়ই। 'আমার হৃদয় এক পুরুষ হরিণ' কিম্বা 'বসন্তের জ্যোৎস্নায় ওই মৃত মৃগদের মতো আমরা সবাই' এমন সত্যদর্শন আমার কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনাকেও অশেষ শুভপ্রীতি ও নমস্কার।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সত্যি বলি, কবিতাটি পড়ার আগে তার শিরোনাম পড়তেই ঘাই হরিনী আমার মাথায় ঘাই মেরেছিলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আর তাইতো, 'বসন্তের জ্যোৎস্নায় ওই মৃত মৃগদের মতো আমরা সবাই'।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা. এর ছবি

খুব ভালো লাগলো রোমেল দা।

শুভ নববর্ষ। (দেরীতে বলার জন্য দু:খিত; আসলে ইদানীং খুব ব্যস্ত থাকতে হয়। মন খারাপ )

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ রাজাসাহেব,
নববর্ষের শুভতা আপনাকেও ঘিরে থাক। সেই পরিচিত ইংরেজী উক্তি আওড়াতে চাই, "বেটার লেট দ্যান নেভার"। আপনি তো তবু বলেছেন, অসভ্য আমি তাও পারিনি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

আয়নামতি1 এর ছবি

বাজে বকা ছাড়া বাদবাকী বিষয়ে আমি ভীষণ রকমের কাঁচা। তাই বড়হরিণার ভৌগোলিক অবস্হানটা আমার ঠিক জানা ছিলনা। আপনি কেমন চমৎকার করে তার বর্ণনাটা দিলেন! খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে। কবিতা বিষয়ক একটা ইবুক বের হবে, আপনি কিন্তু ওটায় লেখা দিতে ভুলবেন না ভাইয়া। শুভেচ্ছা হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সবাই যখন ব্যস্ত র'বে নানান জটিল কাজে
প্রাণটি খুলে আয়নামতি বকুক তখন বাজে! হাসি
লেখা দেবার চেষ্টা থাকবে, বোন। শুভপ্রীতি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সুন্দর...
আমারও ক্যাম্পে কবিতাটার কথাই মনে পড়ছিলো...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চলুন না একদিন ক্যাম্প পাতা যাক, কোনখানে হোক না আমাদের নক্‌টার্ন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।