ক্যাম্পাস থেকেঃ ১৪ই ফেব্রুয়ারী রোজ শনিবার

নিবিড় এর ছবি
লিখেছেন নিবিড় (তারিখ: রবি, ১৫/০২/২০০৯ - ১২:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রেক্ষাপট২০০৬-
মনে পরছে মনে পরছে, বার না মনে পরলেও তারিখ টা মনে পরছে। সেইদিনও ছিল ১৪ফেব্রুয়ারী সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাইছি কিন্তু ভাগ্যে তখন কোন ডিপার্টমেন্ট জুটে নাই। কিন্তু তাতে কি? এমন ভাব নেই যেন পুরা এলাকাটাই আমার। এমন কঠিন ভাবের সময়ে কেমনে ১৪ফেব্রুয়ারী সক্কাল বেলা ঘরে বসে থাকি কেমনে। তাই সোজা হাজির হলাম টিএসসিতে। কিন্তু তখনও দুনিয়ার আসল ভাব বুঝা হয় নাই। চারিদিকে তাকায়ে দেখি জোড়ায় জোড়া, সাদা লাল কাল নানা রঙের জোড়া। এইসব ভাবসাব দেখে আমিতো পুরা বেকুব। কাউকে চিনি না, প্রতিদিন একাএকা এসে ঘুরি কেও কিছু বলে না কিন্তু আজকে সবাই দেখি চীজ দেখার মত করে আমাকে দেখছে। বুঝলাম জোড়াহীন থাকার ফল। কিন্তু মনে মনে নিজেকে আশা দিলাম, গুরু সবে তো শুরু। হবে হবে, একদিন তোমারো সব হবে।

প্রেক্ষাপট২০০৯-
২০০৬-০৯ প্রায় তিন বছর। এর মাঝে অনেক পরিবর্তন হয়েছে, ম্যাডাম জিয়া থেকে ফখরু সাহেব হয়ে ক্ষমতা এখন হাসিনা আপার কাছে। কিন্তু কিসের কি? আমাদের মত আমজনতার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আর হইল না। আজকে ক্লাসে গিয়ে দেখি ঈদের মত চারিদিকে নতুন কাপড়ের গন্ধ, হাজার টা রঙ। আর আমি? সেই পুরান একটা সাদা শার্ট। রঙের মাঝে রঙহীন, বড়ই বেমানান। বুঝলাম গুরু আমাদের শুরু আর কখনো হবে না।

দীর্ঘশ্বাসঃ
আমাদের ক্লাসের পাশের রুম টা বারয়ারি রুম। হাজার টা ডিপার্টমেন্ট এর ক্লাস হয়। দুপুরে ক্লাসের শেষে দাড়িয়ে আছি ঐরুমের সামনে। দেখি অন্য এক ডিপার্টমেন্টের আমাদের ক্লাসমেটরা আসছে ক্লাস করতে। হঠাৎ একজনকে দেখলাম অনেকদিন পর। অনেক স্মৃতি আবার নতুন করে অনুরনন শুরু করল অনেক পুরান কথা নতুন করে বলার জন্য ভীড় করল। কিন্তু টাইম নাইরে ভাই টাইম নাই পরের ক্লাসে যাইতে হবে তাই কথা বলার টাইম নাই।

ফ্লাগুনী বিকেল আর কাকতলীয় ভাবে মারা ভাব অথাবা হারান ইজ্জতঃ
আজকে সারাদিন পুরা ফাউল গেল। বন্ধু বান্ধব কাউকে পাইনা গল্প করার জন্য। সবাই আজ ব্যস্ত কিন্তু তাই বলে তো ক্যাম্পাসের বৈকালিক ভ্রমণ থেমে থাকতে পারে না। টিএসসিতে গিয়ে দেখি মাইলস এর কনর্সাট হচ্ছে, দারুন ভীড়। গান শুনতে শুনতে দেখি বিকেল প্রায় শেষ। সারা সন্ধ্যা কি করব ভেবে বের করতে পারলাম না। একবার ভাবলাম যাই দেখি মেলায় সচলের কার সাথে দেখা হয় কিনা আরেকবার ভাবি না থাক যাই গা। এইসময় দেখি টিএসসির ভীড়ের মাঝে কয়েকটা পাখি কিচকিচ করে বলছে কি ভাইয়া একা নাকি? এতদিনেও কাওকে পাইলেন না! পিছনে ফিরে দেখি একদল কচিঁকাঁচা, ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট ইয়ার। আমি পিছনে ফিরে বলি আরে তোমরা? নারে ভাই, কেও নাই। এরা বলে তাইলে বসি ভাইয়া আপনার সাথে। আমি বললাম বস।

এই কচিঁকাঁচারা কেন যেন আমারে খুব ভালা পায়। এদের যতই বলি ভাই আমার পিছনে ঘুইরা লাভ নাই আমি ভাল ছাত্র না, আমার কাছে ক্লাস নোট পাইবা না এরা তত বেশি দেখি আমারে ভালা পায়। কি ঝামেলা। এরা আমার সাথে বসেই শুরু করে কিচিরমিচির। আমি খালি হুঁ হুঁ করি। এদিকে আসা যাওয়ার সময় অনেকে আমাদের দেখতে পায়। বজ্জাত পুলাপাইন মিসকল মারে অনেকে দেখি যাওয়ার সময় শয়তানী হাসি দেয়। আমি কিছুই বলি না খালি মনে মনে বলি- আল্লার দুনিয়ার কি রকম বিচার, কি ঘটনার কি ব্যাখ্যা।

এদিকে যাই কিনি তার বিল আর দেওয়া আর সম্ভব হয় না, কঁচিকাঁচারা বলে আরে ভাইয়া আমরা দিব। ঠিক এইসময় দেখি ক্লাসের সবচাইতে মিচকা জুটি কই থেকে জানি হাজির হইতাছে। কাছে এসেই কচিকাচাদের বলে কি ব্যাপার কি খবর? এরপর আমার দিকে তাকায়ে বলে আরে দোস্ত তুই এইখানে, বলেই মিচকা একটা হাসি কপোত-কপোতীর। বুঝলাম এরপর আমার কপালে খারাবি আছি। বলে কি ব্যাপার খাওয়াচ্ছে কে? আমি বলি আমি না ওরাই খাওয়াচ্ছে। তখন বিরাট একহাসি দিয়ে এক মিচকা উত্তর দেয় তোর মত কিপটা আর কখনো বিল দিল না। এইবার দাঁতে দাঁত কড়কড় করে মনে মনে বলি- সেলিমের বাচ্চা তোকে এইবার পাঁচ তলা থেকে যদি না ফেলছি।
এইভাবে কঁচিকাঁচাদের সাথে ঘন্টা দুয়েক কাটিয়ে চারিদিকের রঙ দেখতে দেখতে ফিরে চললাম বাসার দিকে। এদিকে মোবাইলে খালি এক্টার পর পর ফোন আসছে। সবার এক কথা- কিরে বিকেলে নাকি পক্ষীদের সাথে বসেছিলি। সবাই কে উত্তর দিই- হুঁ। এর পর প্রশ্ন- আসল পক্ষী কোনটা। এর উত্তরে এমন একটা হাসি যার মানে তুই খুজে দেখ। বিরক্ত হয়ে ঠিক করলাম আর না এইবার একটা কিছু করতেই হচ্ছে।


মন্তব্য

অভ্রনীল এর ছবি

মন খ্রাপ কইরা কুনু লাভ নাই... ফেরেম নাই তো কি হইছে পকেটটাতো বাঁচতাসে... দেঁতো হাসি
_______________

এক ছাগলের দুই কান,
তুই আমার জানের জান।

নিবিড় এর ছবি

দেঁতো হাসি
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আবার কেউ ফুন্দিলে বলবেন, ব্যাটা তোরা হইলো বলদা। একটা নিয়া ঘুরস। আমারে দেখ। একটা না দুইটা না পুরা একটা দল নিয়া ঘুরি। ঐসব মিচকা হাসি দিস না মামা। গিয়া নিজের ম্যাশিনে তেল মার, তেল মাইরা হুইয়া থাক জুত্তি কইরা! চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নিবিড় এর ছবি

ইয়া হাবিবি আপ্নের বুদ্ধি বড়ই উপকার দিল দেঁতো হাসি
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

শালা। তোরা আছস মজায়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নিবিড় এর ছবি

আমার আবার মজা দোস্ত মন খারাপ
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

তানবীরা এর ছবি

তের আর চৌদ্দ তারিখ হলো টি।এস।সি বাংলা একাডেমীর সবচেয়ে সুন্দর দিন। আচ্ছা এখনও কি খালারা সেখানে সবার হাত ভর্তি ভর্তি চুরি পরান, প্যাকেট বিরিয়ানী, কোক, জায়গায় জায়গায় কবিতা উৎসব,
ফেলে আসা দিনগুলো ........................।।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নিবিড় এর ছবি

এখনো কিছু পরিবর্তন হয় নায় আপু। খালারা, চুড়ি, বিরিয়ানি আর কোক সবি আছে খালি আপনাদের জায়গায় আমরা আসছি।
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

কীর্তিনাশা এর ছবি

আরি সাবাশ!!

হবে আপনারে দিয়াই হবে!! হইতেই হবে !!!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নিবিড় এর ছবি

নাশুদা হইলে বহুত আগেই হইত রে ভাই
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মিয়া, দুনিয়ার সব কচিকাঁচা নিজের কব্জায় রেখে দিসো মন খারাপ

ভাব দেখাও যে কিছুই করো না, আবার ফুন নাম্বার চাইলেও দাও না। তোমারে মাইনাস...

নিবিড় এর ছবি

কে যে শাহাবাগের মোড়ে দাড়েয়ে গল্প করে সব খবর আমার কাছে আছে চোখ টিপি
মাইনাস দেন আর প্লাস দেন খালি আমারে লাইনে আগে রাইখেন দেঁতো হাসি
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

শোনা কথায় কান দিতে নাই, উড়া কথায় বিশ্বাস করতে নাই দেঁতো হাসি

কিসের লাইন! কার লাইন! চোখ টিপি

নিবিড় এর ছবি

যে লাইন থেকে আপনার কিছুদিনের মধ্যে খারিজ হওয়ার চান্স আছে চোখ টিপি
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

রায়হান আবীর এর ছবি

দোস্ত তুমি তো নরমাল দিনই সুন্দর সুন্দর শার্ট আর প্যান্ট পইরা ঘুরে বেড়াও।

আমার চোখে ব্যাথা ছিল, নাইলে পহেলা বৈশাখ ভ্যালেন্টাইন সব তোর লগে কাটাইতে পারতাম।

সেলিমটা তো ভালো বদ আছে।

তুই বিরাট মিথ্যুক। তারপরও আমি কচিকাচার ব্যাপারটা প্রায় বিশ্বাস করে ফেলছি। দোস্ত আসলেই আছে? কই আমি যখন তোর লগে ঘুরি তখন তো কাউরে দেখি না।

=============================

নিবিড় এর ছবি

০১।
কি লাভ বল দোস্ত কিছুই হবে না মন খারাপ
০২।
তাই নাকি?? এখন ভালতো ?
০৩।
বদ মানে পুরা বদ রেগে টং
০৪।
কি বললি?? আমি মিথ্যুক রেগে টং তোর সামনে মুহতেরামাদের আসা নিষেধ আছে দেঁতো হাসি
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

তুমি চাপা মারলা নাকি ঠিক বুঝতে পারতেসি না। রায়হান এর মন্তব্য পড়ার আগে সব বিশ্বাস কইরা ফেলসিলাম কিন্তু রায়হান মিয়া সব খিচুড়ি লাগায়ে দিসে আমার মনে। যাই হোক কচিকাঁচা তো ভাল জিনিস। যত্ন কইরা রাখবা কিন্তু। আমার তো কচিকাঁচারও কপাল হইলোনা এদিকে বুড়া হইয়া যাইতেসি।
--------------------------------------------

--------------------------------------------------------

নিবিড় এর ছবি

জনাব রায়হানের কথায় বিশ্বাস করবেন না ব্যাটা পুরা মিথ্যুক কিন্তু এই অধম বড়োই সত্যুক দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

রায়হান আবীর এর ছবি

অফ যা

=============================

নিবিড় এর ছবি

আঙ্গুল উপরে নিচে যেখানেই তোল লাভ নাই দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।