মফস্বল সংবাদ

নিবিড় এর ছবি
লিখেছেন নিবিড় (তারিখ: সোম, ০৩/০৮/২০০৯ - ১০:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের এই ছোট্ট শহরে আমার মত যুবক বয়সী ছেলেপেলেদের আড্ডা দেওয়ার জায়গা আসলে তেমন একটা নেই। এই পাড়ার মুখে, ঐ পাড়ার চায়ের দোকানে কিংবা বালিকা স্কুলের রাস্তার উপর কালী মন্দিরের সামনে। এইসব জায়গায় অবশ্য বহু পোলাপাইন আড্ডা দেয় কিন্তু আমারা তেমন একটা জুত পাই না। আরে আড্ডা দিলে দিতে হয় দিল খুলে কিন্তু এইসব জায়গায় কি আর তার জো আছে? পাড়ার মুখে আড্ডা দিলে হাজারটা মুরব্বির সামনে পড়তে হয়। তাদের এই প্রশ্ন, সেই প্রশ্ন আর আমাদের হাজারটা কইফিয়ৎ। চায়ের দোকানের সামনে বসলে নির্ঘাত রংবাজ আর কালী মন্দিরের সামনে দাড়ালে বালিকাদের বাবাদের বিচার বাসায় পৌছাতে সপ্তা'খানেক সময় নিবে। তাই কলেজের পুকুর পাড়ের দক্ষিণ কোণের আম গাছ তলাটাই আমাদের ভরসা।

আমাদের গাছ তলার আড্ডার মধ্যে আজিজ হল মহাজ্ঞানী পাবলিক। দুনিয়ার সব বিষয়ে তার একটা মতামত আছে আর সেই কারণে আজকে যখন সকাল বেলা আমাদের মাথার উপর পেপার নাচাতে নাচাতে বলল- খবর শুনছস? আমরা তখন কেউ ব্যাপারটায় তেমন গা করলাম না। শুধু রেদয়ান বেটা একটু শয়তানী হাসি দিয়ে বলল- হ্যা, ওবামা যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সৈন্য সরায়ে নিতাছে ব্যাপারটা আমাদের জন্য খুব ইন্টারেস্টিং। কিন্তু আজিজ আমাদের অবাক করে দিয়ে বল- আরে ধূর, ওবামা-বুশের কথা রাখ। আরে এইটা তো পুরা কেলেংকারী ঘটনা। আমাদের মধ্যে শওকতের আবার কেলেংকারী ঘটনার দিকে নজর বেশী তাই ব্যাটা হ্যাচকা টান দিয়ে আজিজ কে পাশে বসিয়েই প্রশ্ন করল- কিরে ঘটনা কি? এইবার মহামতি আজিজের উত্তর- আরে ব্যাটারা, শরীফ স্যারের ঘটনা শুনছস? পেপার-টেপারে উঠে তো পুরা ব্যাড়া-ছেড়া অবস্থা।

এইবার আমরা আর পাত্তা না দিয়ে পারি না, সবাই নাড়াচাড়া দিয়ে উঠি। রেদয়ান মুখের সিগারেট সরিয়ে প্রশ্ন করে- কোন শরীফ স্যারের কথা কস? একটু বিরক্ত হয়ে আজিজের পালটা প্রশ্ন- এই শহরে আর কয়টা শরীফ স্যার আছে? আরে ব্যাটা বাঘা শরীফ। রেদয়ান আর আজিজের ক্যাচালে বিরক্ত হয়ে আমি তাড়া দেই- ঐ শালা আজিজের বাচ্চা, ঘটনা কি সেইটাই তাড়াতাড়ি বল। এইবার আজিজ আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বাম হাতের পেপারটা সামনে এগিয়ে দেয়। বাঘা শরীফের কেলেংকারীর খবর পড়ার জন্য আমরা সবাই তখন পেপারের উপর হুমড়ি খেয়ে পরি। রেদয়ানের মাথার উপর দিয়ে মারুফ কিংবা আমার কানের পাশ দিয়ে মাথা বের করে শওকত বাঘা শরীফের কাহিনী পড়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকে। এইভাবে হুড়াহুড়ির মাঝে দেশের প্রধান দৈনিকের মফস্বল সংবাদের পাতায় চারকোণা বক্সের খবরটা পড়তে পড়তেই আমরা সবাই শান্ত হয়ে আসি কারণ এতটা অবাক আমরা কেও সম্ভবত অনেকদিন হই নি। অবাক বললে আসলে ভুল বলা হবে আমরা অনেকেই আসলে এই কথা টা বিশ্বাস করে উঠতে পারি নি। তাই রেদয়ান প্রশ্ন করে- এও কি সম্ভব?

আমাদের সবার মধ্যেই আসলে প্রশ্নটা ঘুরছিল, এও কি সম্ভব? তাই এই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচালে আমরা সবাই নিজেরা নিজেরা প্রশ্ন, পালটা প্রশ্ন করতে থাকি। আমরা প্রশ্ন করতে থাকি কারণ লোকটা আর কেউ নয় বাঘা শরীফ। আমাদের লক্ষীপুর ডিগ্রী কলেজের ৩০ বছরের প্রিন্সিপাল শরীফুর রহমান ওরফে বাঘা শরীফ। গত ত্রিশ বছরে এই কলেজের এমন কোন ছাত্র-ছাত্রী নাই যে কিনা বাঘা শরীফের হুংকার শুনে একবারের জন্যও কেঁপে উঠে নি। এমন একটা ইংরেজী ক্লাস নাই যেখানে কার না কারো দিকে খাতা ছুড়ে মেরে শরীফ স্যার বলে নাই- ঐ ব্যাটা গরু, তোকে রেখে আমার কলেজের সামনের ঐ মাঠে হাল চাষ করলেও অনেক লাভ হত। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে কারণ আমাদের মনে পরে যায় আমাদের বাপ-চাচাদের অনেকেই তার ছাত্র ছিল যারা কিনা এখনো এতদিন পর বাজারে, রাস্তায় বাঘা শরীফ কে দেখলে এক কোণায় সরে গিয়ে আস্তে করে সালাম দেয়। তাই আমরা আরেকবার খবরের কাগজের পাতায় সতর্ক দৃষ্টি দেই, চারকোণা বক্সের ভিতর থাকা খবরের মাঝে কোন ভুল হল কিনা তা বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। ভিতরের কাল অক্ষর গুলো তাদের অস্তিতের সাথে আমাদের জানান দেয় ত্রিশ বছর ধরে এই শহরে কিংবা এই কলেজে বাঘা শরীফের রাজত্ব প্রায় শেষ হয়ে এল। তবু কেন জানি আমরা পরষ্পর কে প্রশ্ন করি- এও কি আসলে সম্ভব?

আমাদের মনে বাঘা শরীফের হুংকার এখন জলজ্যান্ত তাজা বলে আরাফাত হয়ত আমাদের হয়ে আর নিশ্চিত হতে চায়। তাই ব্যাটা আমাদের উদ্দেশ্য করেই হয়ত একটা প্রশ্ন ছুড়ে- আচ্ছা কলেজের নাম দিছে, ঘটনার বিবরণ দিছে কিন্তু কলেজের প্রিন্সিপালের তো নাম দেয় নায়, নাকি দিছে? খবরটা আরেক বার পড়তে পড়তেই রেদয়ান উত্তর দেয়- হু , দেয় নায়। আজিজ উত্তর দেয়- আরে লক্ষীপুর ডিগ্রী কলেজের প্রিন্সিপাল যে একজন আর সেইটা যে বাঘা শরীফ তা কি আর পত্রিকা পাতায় লেখা লাগে? এইটা তো একটা বাচ্চা ছেলেও জানে। এই রকম নানা কথা, পালটা কথার মাঝখানে আমরা আস্তে আস্তে বিশ্বাস করতে শুরু করি- সম্ভব, হয়ত ব্যাপারটা সম্ভব। তবে আমরা কেও সেইটা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে চাই না কারণ আমাদের মনে তখনো একটা কথা ঘুরছিল- এও কি সম্ভব?

তবে আমাদের হয়ে উত্তর টা আসলে শওকত দেয়। শওকত সোজা সাপ্টা উত্তর দেয়- কেন সম্ভব নয়? হাজার হইলেও শরীফুর রহমান ওরফে বাঘা শরীফ একটা মানুষ। সেও আমাদের মত ভুল করতে পারে। আরে কত হাজার হাজার বড় বড় লোকের এই বয়সে এসেও এইসব ভুল করছে সেই খানে বাঘা শরীফের ব্যাপারটা অসম্ভব কিছু না। শওকতের কথার কোন উত্তর আমরা না দিলেও আমরা ওর কথাট ফেলতে পারি না। কারণ দেশের বড় বড় কবি সাহিত্যিকরা যেইখানে এই ভুল করছে সেইখানে শরীফ স্যারের পক্ষেও এই ভুল করা সম্ভব। আর শওকতের কথা তো আর ফেলে দেয়া যায় না, হাজার হলেও শালা এই সব গসিপের খবর ভালই রাখে। তাই আমরা একটু অবাক হয়ে চারকোণা বক্সের ভিতর বড় কাল হরফে লেখা " কলেজের প্রিন্সিপাল কর্তৃক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা" খবরের দিকে একটু অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি।

আমাদের বিস্ময়ের ঘোর কাটার আগেই হঠাৎ করে ঢং ঢং করে কলেজের ঘন্টা আমাদের জানান দেয় বেলা এগারটা বাজে। আমরা সবাই নাড়াচাড়া দিয়ে উঠি, হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে পাশের বই খাতা গুলো গুছানোর চেষ্টা করি কারণ এখন ইংরেজী ক্লাস, বাঘা শরীফের ক্লাস। পত্রিকার খবরও আমাদের মনে ক্লাস নিয়ে সন্দেহ জাগায় না কারণ হয়ত গত পরশু বাঘা শরীফের দেওয়া হুংকার আমাদের মনে এখনো জ্বলজ্যান্ত। তাই আমরা পুকুর পাড়ের পাশ দিয়ে হাটতে হাটতে কলেজ বিল্ডিঙ্গের ১১৬ নাম্বার রুমের দিকে এগিয়ে যাই। ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে আমরা আমাদের হাটা আর দ্রুত করি কারণ সোয়া এগারটা বাজলেই বাঘা শরীফ হুংকার দিয়ে বলবে- এই ক্লাসের সব দরজা বন্ধ করে দাও, এখন আর ক্লাসে কেও ঢুকবে না। তবে এগারটা দশে ক্লাসের সামনে এসে আমরা বুঝতে পারি আজ আর সাধারণ দশটা দিনের মত নয় কারণ কেও ক্লাসে শান্ত হয়ে বসার চেষ্টা করছে না, আজমল কে কে গোলমাল করছে সেইটা টুকে রাখার চেষ্টা করছে না। ছোট ছোট দলে দলে ভাল হয়ে ছেলে মেয়েরা আলোচনা করছে। কয়েক জনের হাতের মুঠোতে থাকা পত্রিকা আমাদের নজর এড়ায় না। আমরা বুঝতে পারি পত্রিকার খবরটা শুধু আমারা না আর অনেকের নজরে এসেছে। তাই বাকী সবার মত আমরাও অপেক্ষা করতে থাকি কখন বাঘা শরীফ আসে।

কিন্তু অপেক্ষা করতে করতেই আমরা বুঝে যাই আজকের দিনটা সম্ভবত গত ত্রিশ বছরের মধ্যে লক্ষীপুর ডিগ্রী কলেজে অন্যতম ব্যতিক্রম দিন। তাই শওকত কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে- আরে দূর, ক্লাস হইব না। আরে ব্যাটা এই রকম একটা নিউজের পর বাঘা শরীফের বাপেরও সাধ্য নাই পোলাপাইনের সামনা সামনি দাঁড়ায়। আর তাই অন্য সবার মত আমরাও বের হয়ে আসি ইতস্তত ভংগীতে, যেন ঠিক কী করা উচিত তা বুঝে উঠতে পারছি না। ইতস্তত হাঠতে হাঠতেই আমরা পাঁচ-ছয় জন পৌছে যাই শরীফের টঙ্গের দোকানের সামনে।

শরীফের দোকানের সামনেই আমরা ব্যাপারটার আসল উত্তাপ টের পাই। কারণ দোকানের কোণায় মিঠু ভাই হাত পা নাড়িয়ে নাড়িয়ে ভাষণের স্টাইলে কথা বলে যাচ্ছে। আর মিঠু ভাই এইভাবে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ভাষণের স্টাইলে কথা বলা মানেই বিপদের লক্ষণ, গন্ডগোলের আলামত। কলেজের অনেকেই তাকে ঘিরে কথা শুনার চেষ্টা করতে থাকে এমন কী আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে নিরীহ ভালছেলে মাইনুদ্দীন কে পর্যন্ত দেখা যায় ভীড়ের মাঝে মাথা ঢুকিয়ে মিঠু ভাইয়ের কথা শুনায় ব্যস্ত। আজিজ সব দেখে বলে- ব্যাপার তো সুবিধার মনে হচ্ছে না। শওকত মাথা নাড়তে নাড়তে বলে- আরে ব্যাটা, মিঠু ভাই কি এই সুযোগ ছাড়ব? সারা বাজারের মধ্যে স্যার যে থাপ্পড় টা মারছিল সেইটার শোধ নেওয়ার এমন সুযোগ মিঠু ভাই সারা জীবনে আর কই পাইব। এইবার আমরাও বুঝতে পারি গত আট বছর ধরে আমাদের কলেজের ছাত্র মিঠু ভাই এইবার কলেজে মাথা তুলে দাঁড়াবে, যেই বাঘা শরীফ ছাড়া এই শহরে সে কাউরে ভয় পায় না সেই বাঘা শরীফের কলেজেই ব্যাটা মাথা তুলে দাঁড়াবে।

আমরা তাই আর এই ঝামেলার মাঝে দাড়াই না, সিগারেট টানতে টানতে আস্তে দূরে সরে আসি। দূর থেকে দাড়িয়ে মিঠু ভাই আর সাঙ্গপাঙ্গ সাথে পোলাপাইনের মতিগতি বুঝার চেষ্টা করি। ঠিক এইসময় শওকত প্রশ্ন টা করে, আচমকা। বলে- আচ্ছা পেপারে তো স্যারের কথা কইল কিন্তু মাইয়া টার নাম তো কইল না? এইবার হঠাৎ করে ব্যাপারটা আমাদেরও চোখে পরে, আসলেই পত্রিকায় মেয়েটার নাম ঠিকানা বলা নাই। মহাজ্ঞানী আজিজ আবার তার মতামত জানায়- আরে এখন পেপার গুলা এইসব কেসে ভিক্টিমের নাম সহজে দেয় না, নারী অধিকার বইলা একটা কথা আছে না? নারী অধিকার থাকুক কিংবা নাই থাকুক মনে মনে আমরা সবাই নামটা খুজতে ব্যস্ত হয় পরি। কে হতে পারে মেয়েটা?

আমাদের মধ্যে শওকত প্রথম মুখ খুলে আবার- আরে স্যার যেহেতু তার এত বছরের সুনাম নষ্ট করার ঝুঁকি নিছে তাইলে মেয়ে নিশ্চয় দারুণ সুন্দরী। ব্যাপারটায় অবশ্য আমাদেরও কোন সন্দেহ ছিল না কিন্তু আমরা ভাবতে থাকি কে হতে পারে কলেজের সেই সুন্দরী? আমাদের যুথি? শেফালী কিংবা সি সেকশনের শিমলা? ভাবতে ভাবতে আমরা কোন কুল-কিনারা করতে পারি না তাই তর্ক চলে কে হতে পারে সেই সুন্দরী। আমাদের তর্কের মাঝেই এতক্ষণ চুপ মেরে থাকা রেদয়ান যেন হঠাৎ ফুঁসে উঠে, বলে- কি সব বালছাল আলোচনা লাগাইছস? একটা মানুষ এত বছর তোদের পড়াইল, তোদের বাপ চাচাদের পড়াইল তারে নিয়া এইসব কথা বলতে তোদের লজ্জা লাগে না। এইখানে লজ্জার কি আছে তা বুঝতে না পেরে আমরা অবাক হয় রেদয়ানের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমরা তাকিয়ে থাকতে থাকতেই রেদয়ান মুখের সিগারেট টা দূরে ছুড়ে দিয়ে বই খাতা নিয়ে উঠে পরে ধুপধাপ। আমরা ডাকলেও শালা কিছুই শুনে না বরং বাসায় কাজের ছুতোয় চলে যায় দ্রুত।

হাসতে হাসতে শওকত আবার মুখ খুলে- আরে বুঝস নাই এত দরদ কেন? আমরা মাথা নাড়াই কারণ সত্যি আমরা ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারি নাই। হাসতে হাসতেই শওকত উত্তর দেয়- শালারা ভুইলা গেলি, শরীফ স্যারের ক্লাস টেনে পড়া ছোট মাইয়াটারে রেদয়ানের বাচ্চা লাইক করে। এইবার একটু উচ্চস্বরে হাসি দিয়ে আমরাও বুঝিয়ে দেই ব্যাপারটা আমাদের কাছে ক্লিয়ার, পুরা ক্লিয়ার।

রেদয়ানের ব্যাপারটা আমাদের কাছে ক্লিয়ার হলেও ক্লিয়ার হয় না মেয়েটার নাম। আর সেইটা নিয়ে উত্তেজিত তর্ক বিতর্কের মাঝেই একসময় টের পাই সূর্য ঠিক আমাদের মাথার উপর আর ঠিক তখন আমাদের শরীর আমাদের জানান দেয় ক্ষুধার কথা। তাই বিকেলের সেশনের জন্য এই তর্ক অসমাপ্ত রেখেই আমরা উঠে পরি।

কিন্তু বিকেল বেলা আর আমাদের সেই অসমাপ্ত তর্ক আবার নতুন করে শুরু করা হয় না। কারণ বাড়ি থেকে আসার সময় আমরা সবাই টের পাই আমাদের ছোট্ট এই মফস্বল শহর উত্তেজনায় কাপছে। সম্ভবত শহরের মানুষের এই নিস্তরঙ্গ জীবনে অনেকদিন এমন কোন বিনোদন আসেনি। তাই বাজার থেকে চায়ের দোকান কিংবা বয়েজ স্কুলের খেলার মাঠ সবখানেই শুধু একটাই প্রশ্ন- কিভাবে এইটা সম্ভব? অবশ্য এর সম্ভাব্যতা নিয়ে নানা রকম যুক্তি আসতে থাকে অনেকের কাছ থেকেই। অনেকেই যে এই ব্যাপারটা আগেই টের পেয়েছিল এমন খবরও শহরের বাতাসে ঘুরে বেড়াতে থাকে। আসলে সেইদিনের সেই বিকেল বেলা আমাদের শহর টা হয়ে যায় গুজবের শহর।

কিন্তু আমাদের শহরেই অনেকে এইটা বিশ্বাস করতে পারে না। তাই তারা ছুটে যায় আমাদের শহরে দেশের প্রধান দৈনিকের স্থানীয় সংবাদ দাতার কাছে। কিন্তু সেইখানেও তারা হতাশ হয় কারণ তারা আবিষ্কার করে সেই রিপোর্টার আজ সকালেই হঠাৎ জরুরী কাজে ঢাকায় চলে গেছে। কিন্তু এইবার আর শহরের মানুষের অবিশ্বাস করার কিছু থাকে না, তারা বুঝতে পারে নিশ্চয়ই এক সময়ের নিজের স্যার এর উপর এমন একটা খবর ছাপা হবার পর সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের এই শহরে দারুণ লজ্জা লাগছিল। সারা শহর বুঝে যায় দেশের প্রধান দৈনিকের স্থানীয় সংবাদ দাতা আমিনুল ইসলাম শুধু অত্যন্ত সৎ নয় বরং সাথে সাথে তার একসময়ের শিক্ষা গুরুর প্রতি দারুন শ্রদ্ধাশীলও ছিল। সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের এই কর্তব্য নিষ্টা আর সেই সাথে গুরু ভক্তি আমাদের ছুয়ে যায়। আমাদের সেই বিকেল বেলা এই গুজবের শহরে আমিনুল ইসলাম হঠাৎ হয়ে উঠেন এক নায়ক যার হাতে পতন হয় আমাদের শহরের এক কিংবদন্তীর।

আমাদের শহরে সেই বিকেল বেলা হাজারো গুজবের মাঝে নায়ক হয়ে উঠেন আরেক জন, মিঠু ভাই। আমরা জানতে পারি সেই বিকেল বেলা মিঠু ভাই তার ছেলেপেলেদের নিয়ে মিছিল করে কলেজের প্রিন্সিপালের রূমের তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। আমরা অবাক বিস্ময়ে সেই খবর শুনি কারণ সম্ভবত গত ত্রিশ বছরে কলেজের করিডোরে এই প্রথম কেও মিছিল করার সাহস দেখায়। আমরা আর অবাক হয়ে শুনি মিঠু ভাই আগামীকাল সকালে মিছিল নিয়ে বাঘা শরীফের বাসার সামনে যাবেন, বিচার চাইবেন। বিচার চাইবেন আমাদের শহরের সেই নাম না জানা মেয়েটার জন্য। এত এত সব খবরের মাঝে গুজবে ভারী হয়ে আসা আমাদের শহরের বাতাস উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও শহরের সেই উত্তেজনার রেশ কাটে না। কারণ সবাই অপেক্ষায় থাকে পরের দিন সকালের যেই দিন প্রথম বারের মত এই শহরে কেউ বাঘা শরীফের সামনা সামনি দাড়িয়ে তার বিচার চাইবে। আমরাও অপেক্ষায় থাকি তামাশা দেখার।

কিন্তু আমাদের হতাশ হতে হয়। তাই সারা রাত অপেক্ষায় থাকার পরেও আমাদের আর সকাল বেলা তামাশা দেখা হয় না। আমরা শুনতে পারি মিঠু ভাই আর তার মিছিল পৌছানোর আগেই বাঘা শরীফের বাসায় তালা পরেছিল। আমরা জানতে পারি আজ সকালেই বাঘা শরীফ আর তার পরিবার এই শহর ছেড়ে চলে গেছে। আমরা বুঝতে পারি এত সবের পরেও এই শহরে শরীফুর রহমানের কিছু শুভাকাঙ্খী রয়ে গেছে আর তাই গত রাতেই বাঘা শরীফ শহর ছাড়তে পেরেছে নিঃশব্দে, পলাতকের মত।

কিন্তু এত কিছুর পরেও হয়ত একজন উপর থেকে মুচকি হাসছিলেন তাই সংবাদ পত্রের গাড়ি ঢাকা থেকে সকাল নয়টায় শহরে পৌছানোর দশ মিনিটের মাঝে সমস্ত পেপার নিঃশেষ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পর পাওয়া একটা পেপারে বাকী সবার মত আমরাও আতিঁপাঁতি করে খুজতে থাকি সেই সংবাদ। বাকী আর অনেকের মত পত্রিকার পাতার পর পাতা উল্টাতে উল্টাতে আমাদের উত্তেজনা থিতু হয়ে আসে, আমরা বুঝতে পারি আজকে আর আর মফস্বল সংবাদের পাতায় দারুন উত্তেজনাকর কোন খবর নেই। তাই হতাশ হয়ে আমরা সিগারেট ধরাতেই আজিজ পেপার হাতে চিৎকার দিয়ে উঠে- সর্বনাশ। আর সর্বনাশের কারণ খুজতে আজিজের মাথার পাশ দিয়ে পত্রিকার পাতায় নজর দিতেই আমরা দেখতে পাই সংশোধনী সংবাদ- গত কালের " কলেজের প্রিন্সিপাল কর্তৃক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা" খবরে লক্ষীপুরের জায়গায় ফরিদপুর ডিগ্রী কলেজ পড়তে হবে।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখার ধরণটা চমৎকার।
কিন্তু এও কি সম্ভব? ফরিদপুরবাসীরা কি বলেন??? চোখ টিপি

#ওসিরিস

নিবিড় এর ছবি

ধন্যবাদ ওসিরিস লেখাটা পড়ার জন্য হাসি

আর দেখাই যাক ফরিদপুরবাসীরা কী বলেন চোখ টিপি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

নিবিড় ভাই , পাঁচতারা মার্কা গপ্পো ! ! !
তবে বানানে যে কিছু বিভ্রাট দেখছি। কেনো গুরু ??

কইফিয়ত
সাপ্তা'
সম্ভাবতা
কেও
শ্লিলতাহানী

---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

নিবিড় এর ছবি

ধন্যবাদ শিল্পী সাহেব হাসি
বানানের ব্যাপারে আমি বড়ই কাঁচা ইয়ে, মানে... আর আরেকবার ধন্যবাদ ভুল বানান গুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধইন্যাপাতা দেওনের কিছু নাই। আমার বানান জ্ঞানও খুব সবল নয়। আশা রাখি আমার ভুল কিছু বানান ঠিক করে দিয়ে প্রতি ধন্যবাদ নেবেন...

---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

নিবিড় এর ছবি

ঠিক আছে শিল্পী সাহেব, পরীক্ষা নামক ভ্রান্ত ধারনার অবসান হইলে একটা লেখা দিয়েন তারপর দেখেন প্রতি ধন্যবাদ নেওয়ার জন্য কীভাবে ঝাপিয়ে পড়ি দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

পুতুল এর ছবি

হরলাল রায় বাবুর বাংলা ব্যাকরণ বইয়ে জীবনের স্মরনীয় ঘটনা রচনা পড়ে অনেক দিন ভেবেছি " এমন রচনা অসম্ভব"। আপনাকেও তাই বলি। এটা রচনা নয় বাস্তব। পেপারে ছাপা হয়নি কিন্তু পাড়ায় রটেছিল। তাই না?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নিবিড় এর ছবি

বাস্তব না কল্পনা তাই নিয়ে একটু চিন্তায় পরে গেলাম চিন্তিত


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

পুতুল এর ছবি

এ ধরণের একটা ঘটনার মেয়েটাকে আমি চিন্তাম।
সবাই মেয়েটাকে পাশ কাটিয়ে থাকতো, আমিই শুধু তা পারতাম না। কিন্তু তার সাথে সব বিষয়ে কথা হলেও, এই বিষয়ে কখনো কথা হয়নি। আপনার গল্পটা পড়ে, সে মেয়েটার কথাটা মনে পড়ল।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নিবিড় এর ছবি

হুম


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

হিমু এর ছবি
নিবিড় এর ছবি

এত গুলা গুল্লি দেয়ার জন্য ধন্যবাদ হিমু ভাই দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

চমৎকার গল্প নিবিড়। পড়লাম, পুরোটাই পড়লাম। ছাপার ভুল না হয়ে অন্য কিছু ও হতে পারতো। আরো অন্য কিছু, আমি ঠিক জানিনা।
কিন্তু অন্য কিছু হয়নি বলে যে এটা গল্প হয়নি, আমি কিন্তু সেটা বলছিনা। কোনটা গল্প নয় বরং সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়াই অসম্ভব বোধ করি।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নিবিড় এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ মোরশেদ ভাই। আসলে অনেক কিছুই হয়ত হতে পারত কিন্তু একটা গুজব কে ভিত্তি করে লেখার জন্য আমার কাছে এইটাই ভাল মনে হয়েছে তাই পত্রিকার ভুলের এই অবতারণা।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

গল্পটি ভালো লেগেছে, কিন্তু একদম শেষে এসে মনে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেল। যদি বাঘা শরীফ নির্দোষই হবেন, তাহলে তিনি সমাজের মুখোমুখি হলেন না কেন? কেন তিনি ডাকলেন না রিপোর্টারকে? কেন পত্রিকা অফিসে ফোন করলেন না? কোথায় কোন পত্রিকায় একটা খবর বেরোলো (যেখানে তার নাম পর্যন্ত নেই) আর উনি সুড়সুড় করে উধাও হয়ে গেলেন। তার মানে কি তাহলে উনিও ফরিদপুরের প্রিন্সিপালের মতো অপরাধী ছিলেন?
অবশ্য গল্পের মতো সবকিছুই সম্ভব বাংলাদেশে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

নিবিড় এর ছবি

গল্পটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ জাহিদ ভাই। আপনার প্রশ্নের উত্তরে আসলে বলতে হয়- নির্দোষই হলেও কি সবাই এই চাপ সহ্য করতে পারে। হতে পারে উনি বাঘা শরীফ, ত্রিশ বছর ধরে এই শহরে যার রাজত্ব কিন্তু এরকম ভয়ংকর একটা কালিমা সাথে পুরো শহরের মানুষের চাপ, আর সাথে হঠাৎ করে আসা এই অদ্ভূত আঘাত, এত কিছু সহ্য করা কঠিন বটে। আর যেইখানে উনি যানেন আগামীকাল সকালে মিঠু আসছে মিছিল নিয়ে, সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের থেকে যার কাছে প্রতিশোধ টাই মূখ্য সেইখানে এত কিছু সহ্য করা আসলে বাঘা শরীফের পক্ষেও অসম্ভব, হয়ত বাঘা শরীফ কে মিছিলের প্রতীক্ষায় দেখান যেত কিন্তু আমার মতে তা হয়ে যেত অনেকটা রবিনহুড তাই সেই চেষ্টাও আমি করি নি। আর গল্পের প্রেক্ষাপট আমার শৈশবকালের সময়ের যেখানে একটা মফস্বল শহর থেকে ঢাকায় একটা জাতীয় দৈনিকের কাছে এক বেলার মধ্যে পৌছান অত সহজ ব্যাপার নয়।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

আহমেদুর রশীদ [অতিথি] এর ছবি

ভালো লাগলো খুব।

নিবিড় এর ছবি

এইবার তাইলে টেকা দেন দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গল্প ভালো লাগছে... কিন্তু পড়তে পড়তে আমারও জাহিদ ভাইয়ের মতোই কিছু প্রশ্ন তৈরি হইছিলো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিবিড় এর ছবি

ধন্যবাদ নজু ভাই হাসি
আপনার উত্তর গুলা উপ্রে দিলাম


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

পত্রিকায় রিপোর্ট আসেনি, তবে গুজব রটেছিল আমাদের এক কলেজ শিক্ষককে নিয়ে। সে নিয়ে কলেজে সেকি ধুন্দুমার কাণ্ড! তোমার গল্প পড়তে পড়তে সেই ঘটনার দিনের কথা মনে পড়ে গেল।

গল্প ভালো হইছে।
..................................................................

ঐ যে হাঁটছি মুদ্রা দোষে নাকটা ঘষে
আড্ডা মানেই সেকেণ্ড হাফে খেলছি সোলো
গুজবো না শার্ট আমার পাড়া স্মার্ট পেরিয়ে
সে রোদ্দুরের স্মরণ সভাও লিখতে হল

নিবিড় এর ছবি

ঐ কলেজ শিক্ষকের তারপর কি হইল চিন্তিত


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লেগেছে খুব। বাংলাদেশে সব-ই সম্ভব...আর এসব অভিযোগে যারা দোষী থাকে তাদের প্রতিবাদই জোরালো থাকে বেশি (রাজনীতিবিদ-দের দেখেন...দেঁতো হাসি)...এসব ক্ষেত্রে যারা দোষী নয় অনেকেই ধাক্কাটা সামলাতে পারেনা! বিশেষত সত্যকারের সম্মানিত মানুষ অসম্মানের বোঝা নিতে পারে না!

হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নিবিড় এর ছবি

আসলেই সব সম্ভবের দেশ আমাদের এই দেশ


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ভুতুম এর ছবি

চ্রম হৈছে।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

নিবিড় এর ছবি

দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

আকতার আহমেদ এর ছবি

গল্প ভালো লেগেছে, নিবিড়। চলুক

নিবিড় এর ছবি

আরে আকতার ভাই যে, বহু দিন পর হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

নিবিড় তো ফাটিয়ে ফেল্লা!

নিবিড় এর ছবি

সর্বনাশ, বলেন কী?


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। কিছু অনুচ্ছেদ আরেকটু 'টাইট' হলে ভালো হতো। কয়েক জায়গায় স্রেফ চোখ বুলিয়েই এগিয়ে গেছি। গাঁথুনিটা আরেকটু পোক্ত হলে এটা করতে পারতাম না। প্লট ভালো লেগেছে খুব। সৎ থাকলেও সব সময় জনরোষের মুখোমুখি হওয়া যায় না। লিখতে থাকো আরও।

নিবিড় এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আর আপনার উপদেশ এর কথা মনে থাকবে, পরে চেষ্টা করব আর উন্নতি করার। আমার লেখা লেখির বয়স মাত্র দশ এগার মাস তাই লেখার হাত এখনো কাঁচা রয়ে গেছে। আশা করি কাটিয়ে উঠতে পারব হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সৌরভ এর ছবি

ভালো লাগলো। এরকম গল্প সত্যি সত্যিই মফস্বলে আছে। লটারি বিজয়ী হিসেবে ভুল লোকের বাড়িতে হানা দেয় মফস্বলের সংবাদদাতারা। কিংবা, মুহম্মদ কসিমউদ্দিন এর অপমৃত্য-সংবাদ প্রচার করে জলজ্যান্ত কসিমুদ্দিন এর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের ভীড় তৈরির সুযোগ করে দেয়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নিবিড় এর ছবি

হুম ... এরকম ঘটনা আসলেই বিরল নয়


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

বইখাতা এর ছবি

গল্পটা খুব ভালো লাগলো।
নিয়মিত গল্প লিখুন।

নিবিড় এর ছবি

আইচ্ছা দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ভালু লাগসে গল্পটা।

কচিকাচার ব্যাপারে একটু খিয়াল কৈরা... নাইলে কিন্তু বাঘা শরীফের মতো ছেলেব্রিটি হয়ে যাবা দেঁতো হাসি

নিবিড় এর ছবি

ছেলেব্রেটি হওয়া আপনার কাজ আমার না খাইছে


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

কনফুসিয়াস এর ছবি

গল্পটা ভাল লাগলো, মিস করে গেছিলাম। শুধু কিছু কিছু জায়গায় মনে হয় আরেকটু টাইট বাঁধুনী দিলে আরও ভাল হতো।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হাততালি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।