ওদের আল্লাহর রহমত লাগেনা

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৮/২০১১ - ২:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“আপনে যাইবেন কোই?” চিকন রিডিং গ্লাসটা নাকের ডগায় এসে আটকে আছে। তাই লোকটা যখন ভ্রুকুঞ্চিত করে রাজ্যের যতো বিরক্তিমাখা অভিব্যাক্তিতে সরাসরি তাকালো, তার দৃষ্টি চশমার ফ্রেমের উপর দিয়েই নিবদ্ধ হলো সামনে দাঁড়ানো লোকটার দিকে। সামনের লোকটাও কিঞ্চিৎ বিব্রত। কেউ যদি ‘ক্যাশ ভোদাই’ সাজে, তাতে বিব্রত হওয়ার পাশাপাশি মেজাজটাও খাপ্পা হয়ে থাকে। বিব্রত এবং মেজাজ খাপ্পা হওয়ার কারন হচ্ছে যে সে ভিতরে বসা লোকটাকে সালাম দিয়েছিলো কিন্তু লোকটা সালাম নেয়নি। এমনকি সালামের উত্তরে ‘হুঁ’ শব্দটাও বলেনি, বা মাথাটাও নাড়েনি। তবে সত্যি যে বাইরের লোকটা তার কয়েকবছরের নিয়মিত অভিজ্ঞতায় দেখেছে যে ভিতরে বসা লোকগুলো সালামের উত্তর দেয়না কখোনো। ওরা ওদের উপর আল্লাহর রহমত চায়না, চায়না আল্লাহর রহমত অন্যদের উপরও বর্ষিত হোক। আর ওদের ভ্রু সদাকুঞ্চিত থাকে।

বাড়ির ডানদিকে মেয়েদের হোস্টেলের দিকে তাকাতে তাকাতে রতনের ঘাড় ডান দিকে ফিক্সড হয়ে গিয়েছিলো। পরে রতনের আব্বা হোস্টেলের অন্যপাশে বাসা নিয়েছিলো যাতে রতন আবার বাম দিকে হোস্টেলের দিকে তাকাতে শুরু করে। আস্তে আস্তে রতনের ঘাড় যথন ডান দিক থেকে বাম দিকে একটু একটু করে ঘুরতে শুরু করলো, ঠিক মাঝ বরাবর এসে গেলেই তার আব্বা বাসা ছেড়ে দিয়ে ওই পাড়া থেকে চলে গেলো এমন এক পাড়ায় যেখানো কোনও মেয়েদের হোস্টেল নেই। তবে সম্ভবত রতনের আব্বার কাছেও কুঞ্চিত ভ্রু সমান করার কোনও প্রেসকিপশন নেই।

“জ্বী ভাই, আমি শ্রীলংকায় যাবো।” মৃদু কন্ঠে মিনমিন করে ওঠে সামনে দাড়ানো লোকটা। ভিতরে যে বসা, ওদের সাথে বজ্রকন্ঠে বা মিনমিনে কন্ঠে ছাড়া কথা বলা চরম বেয়াদবী।
“শ্রীলংকায় কি জইন্যে যাইবেন, ট্যুরিস্ট?”
“না ভাই, অফিসের কাজে যাবো।”
“কি কাজ করেন আপনে?”
“এই ছোটখাট একজন রিলিফ ওয়ার্কার, এনজিওতে কাজ করি।”
“শ্রীলংকায় কি কাজ করবেন আপনি?”
“বললাম না যে অফিসের কাজ ............ শ্রীলংকায় আমার অফিস আছে।”
“আরে মিয়া ঠিকঠাক জবাব দ্যান। অফিসের কি কাজ করতে যাইবেন?” খেকিয়ে ওঠে ভিতরের লোকটা।
“আমার অফিসের কাজ আপনে বুঝবেন না। আমরা জটিল কাজকাম করি।”
“আপনে যদি আমারে উত্তর দিয়া স্যাটিসফায়েড না করতে পারেন, তাইলে তো আপনারে যাইতে দিতে পারবো না।”
“ভাই, আপনি আমাদের লাইনের কাজকাম বললেও বুঝবেন না। মিটিং আছে, সেমিনার আছে, ট্রেনিং করাবো, এইসব আর কি।”
“আপনে ভিসা নিছেন?”
“তা তো একটা নিছিলাম।”
“আপনার সাথে কতো ডলার আছে?” চোখদুটো কিন্তু এবার তার চিকচিক করে ওঠে এই প্রশ্ন করার সাথে সাথে।
“এক ডলারও নাই।” বাইরের লোকটা এবার খেলতে শুরু করে ভিতরেরটাকে নিয়ে।
“ডলার এনডোর্সমেন্ট ছাড়া তো আপনারে যাইতে দিতে পারবোনা।”
“৬,৫০০ ডলার এনডোর্স করা আছে পাসপোর্টে। কিন্তু সাথে একটাও ক্যাশ ডলার নেই। টিসিও নেই।”
“সাথে ডলার নাই তাইলে এনডোর্স করলেন কি?”
“আমার ক্যাশ লাগেনা রে ভাই। সাথে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, সব আছে।”
“তবুও ক্যাশ ছাড়া তো আপনে যাইতে পারবেন না।”
“শোনেন ভাই, আপনি আইন জানেন না।”
“ওই মিয়া, কথাবার্তা ঠিকমতো কইয়েন। আমি আইন জানিনা মানে? আমারে আইন শিখান!” ক্ষেপে উটলো ভিতরের লোকটা। বাইরের লোকটার খেলা জমতে শুরু করেছে।
“আইন না জানা থাকলে শিখবেন, অসুবিধা কি! সবাই সব জানবে, এমন তো কথা নেই। তাইলে আইন শোনেন, আমার পার্সপোর্টে যদি বছরের মোট ডলারের কোটা কার্ডের মাধ্যমে এনডোর্স করা থাকে, তাহলে আমি একটা টাকাও ক্যাশ ক্যারি করতে পারিনা। পকেটে ক্যাশ থাকলে মুদ্রাপাচার মামলায় পড়ে যাবো।”
“আচ্ছা ঠিকাছে, আপনার ইনভাইটেশন লেটার দেখান।”
“ওগুলোতো ভাই ভিসা এ্যাপ্লিকেশনের সময় এমব্যাসিতে জমা দিয়েছি। সাথে সাথে নিয়ে তো আর ঘুরিনা।”
“তাইলে তো হবে না। আমি দেখতে চাইছি, আমারে দেখাতে হবে।”
“ঠিকাছে, এই নেন, ইনভাইটেশন লেটার আছে, আর শ্রীলংকার ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের অনুমোদনও আছে।”
“তাইলে প্রথম যখন চাইলাম দিলেন না ক্যান? সব ঠিকঠাক মতো আছে তো?” রিডিং গ্লাসের ফাঁক দিয়ে সে পড়ার বা বোঝর চেষ্টা করলো।
“সেইটা তো বোঝা আপনার দায়িত্ব। আসল নাকি জাল, ঠিক না বেঠিক সেটা আপনে বুঝবেন। আমি আপনারে কিচ্ছু বলবোনা।” বাইরের লোক আরেকটু খেলতে চাইলো। কিন্তু খেলা আর জমলো না। দড়াম করে দুটো সিল পড়লো। একটা পাসপোর্টে এবং আরেকটা এমবারকেশন ফর্মে।
“নেন, যান।” প্রবল বিরক্তিতে ভিতরের লোকটা পাসপোর্টটা ডেস্কের উপর ছুঁড়ে দেয়।

যারা দুজন খেললো, তাদের একজন ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর আর অন্যজন আমি, এই ব্লগের মুহুরী। গতকাল (১৪ অগাস্ট ২০১১) রাতে খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা ইমগ্রেশন পুলিশের কাউন্টারে যখন আমি শ্রীলংকা ভ্রমণের জন্যে সেখানে উপস্থিত ছিলমা।

খেলা শেষ। বাইরের লোকটা ভিতরের জনকে একটু সুর করে ধন্যবাদ দিয়ে তারপর এক সালাম ঠুকলো। ভিতরের লোকটা যথারীতি নির্জবাব। তখনই বাইরের লোকটা মনে পড়লো যে ভিতরের ওদের তো আল্লাহর রহমত লাগেনা।

পাদটীকা

  • ১. [ঢাকার ইমগ্রেশন পুলিশের আচরণ নিয়ে লেখার ইচ্ছে অনেকদিনের। খুব সাধারণ একটা ঘটনা তাই শেয়ার করলাম। জটিলগুলো পরে হয়তো আস্তে আস্তে লিখতে থাকবো। আপনাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতাগুলোও শেয়ার করবেন দয়াকরে।]

মন্তব্য

অপছন্দনীয় এর ছবি

ভালোই ঘোল খাইয়েছেন ব্যাটাকে...

কেন যেন যতবারই বাইরে গেছি, অফিশিয়াল কাজেই হোক আর বেড়াতেই হোক আর শেষবার লেখাপড়ার জন্যই হোক, ইমিগ্রেশন কোন জ্বালাতন করেনি - এমনকি জিজ্ঞেসও করেনি কই যাবো বা কেন যাবো... মনে হয় চেহারা দেখেই বুঝেছে বোকাসোকা ভীতু টাইপ নিরীহ গোবেচারা, এটাকে জ্বালিয়ে লাভ নেই দেঁতো হাসি

সাফি এর ছবি

আমারও এখন পর্যন্ত ইমিগ্রেশন ভাগ্য সুপ্রসন্ন, এমনকি খোদ আমেরিকাতেও!

লেখক ভাই, ভালোই নাচাইছেন খাইছে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

হ্যা, অনেকেরই শুনেছি কোনওরকম প্রবলেম হয়না। কি জানি, আমার জুতামার্কা কপালে বারবার ওদের সাথে দীর্ঘ মোলাকাৎ ঘটে।

আসলে নাচায় তো ওরা, আর আমরা নাচি। মানুষের সাথে ওরা যা করে তা বলে শেষ করার নয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত জনগোষ্ঠীর সাথে ওরা যা করে। আনন্দ পেতাম যদি কোনওদিন কোনও একটা ফাজিলরে কাপড় খুলে নাচাতে পারতাম। বাট, অপরচুনিটি নেভার এন্ডস।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমারে বিভিন্ন সময়ে ওই ব্যাটারা যে পরিমান ঘোল খাওয়াইছে, সেই তুলনায় এটা কিচ্ছু না। কেনো জানিনা, আগে প্রায় সব সময়েই ওদের টার্গেটে পরিনত হতাম। তবে ইদানিং ওদের সাথে একটু শয়তানী করতে ভালোই লাগে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

The Reader এর ছবি

গুরু গুরু গড়াগড়ি দিয়া হাসি গুরু গুরু হাততালি চলুক আর কি বলব বলেন ? চোখ টিপি পুরাই গুল্লি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আর কি বলব বলেন ?

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ খেলা। দেঁতো হাসি

কিন্তু আপনাকে বাইরে যেতে দিতে ওদের অসুবিধা কী? ভারতে তো নেহাত ঘুষটুষ নেওয়ার প্ল্যান না থাকলে কোনো ঝামেলা করে না। আর আমেরিকা বা ইউরোপ তো একেবারেই খোলামেলা, ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্পটা ক্যানসেল করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করে না। ওদের দেশে ঢুকতে গেলেই কেবল কড়াকড়ি, বেরোনোর বেলায় যথেচ্ছা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ভারতে তো নেহাত ঘুষটুষ নেওয়ার প্ল্যান না থাকলে কোনো ঝামেলা করে না।

এইতো, আসল জায়গায় হাত দিয়েছেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

- কই যাইবেন?
- চায়না।
- কী করতে যাইবেন? বেড়াইতে?
- না, অফিসের কাজে।
- জিও আনছেন?
- আমি সরকারী চাকুরী করিনা, আমার জিও দরকার নেই।
- অফিসের পারমিশন লেটার আনছেন?
- অফিসের পারমিশন ছাড়া তো আর অফিসের কাজে দেশের বাইরে যাওয়া সম্ভব না। আর অফিস যে চিঠিটা দিয়েছিলো সেটা তো ভিসা নেবার সময় অ্যাম্বেসিতে জমা দিতে হয়েছে।
- ও ভিসা লইয়া যাইতাছেন? তয় অফিসের একটা পারমিশন লেটার লাগবো না!
- এভাবে তো বহুবার গেলাম, কোনদিন তো অফিসের পারমিশন লেটার দরকার হয়নি!

কী ভেবে উনি আর কথা না বাড়িয়ে পাসপোর্ট আর ভিসা চেক করায় মনোযোগ দিলেন। একটু পরে এক্সিট সীল মেরে বিদায় দিলেন। আমি ভাবলাম এই সম্প্রদায় থার্মোডিনামিক্সের প্রথম সূত্রকে ভুল প্রমাণ করে দিতে সক্ষম। প্রতিবারই এরা "নাই" থেকে কোন না কোন একটা ফ্যাঁকড়া আবিষ্কার করতে পারেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

প্রতিবারই এরা "নাই" থেকে কোন না কোন একটা ফ্যাঁকড়া আবিষ্কার করতে পারেন।

মহা সত্যি। এমনকি কোনও "নাই" না থাকলেও ওরা ফ্যাঁকড়া বের করে ফেলে। একটা উদাহরণ দেই, এক লোকের পাসপোর্টে দাড়িওয়ালা ছবি কিন্তু বাস্তবে শেইভ করা, মধ্যপ্রাচ্যের একজন কর্মী। অনেক নাকানি চুবানি খাওয়ানো হয়েছিলো লোকটাকে। শেষমেষ বোধ হয় কিছু মালও এরা খেয়েছিলো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

প্রতিবারই এরা "নাই" থেকে কোন না কোন একটা ফ্যাঁকড়া আবিষ্কার করতে পারেন।

চলুক

বদ্দা, অভিজ্ঞতা থেকে এই ধরণের গ্যান্জাম উত্তরণের পথ বা প্রয়োজনীয় তথ্য-সতর্কতাটাও বইলা দিয়েন, আমাদের কাজে লাগবে। এত ব্যস্ততার মধ্যে ক্যামনে সময় বাইর করেন বুঝি না!!! অ্যাঁ


_____________________
Give Her Freedom!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বদ্দা, অভিজ্ঞতা থেকে এই ধরণের গ্যান্জাম উত্তরণের পথ বা প্রয়োজনীয় তথ্য-সতর্কতাটাও বইলা দিয়েন, আমাদের কাজে লাগবে।

ফিস দেওয়া লাগবে পরামর্শের জন্যে। তা'ও বলি, কাগজপত্রে ঘাপলা না থাকলেও যদি ঝামেলা করে, সোজা বলে দেবা যে আমার পাসপোর্ট ফেরত দেন, এক্সিট লাগবে না।

অত্যন্ত হতাশার সাথে জানাচ্ছি যে মাঝে পুলিশের একজন সহকারী কমিশনারকে দেখলাম এয়ারপোর্টে, অসভ্যের বাসা। উনি পুরুষ ছেলে হলে মনে হয় অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতো। এইসব বালছাল বিসিএস ক্যাডার হয়ে ক্যাডার সার্ভিসের হোগা পুরাটাই মেরে দিছে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

পরামর্শ চাই; ফিস জমতে থাকুক, যেদিন বদ্দার সাথে দেখা হবে, সেদিন যত টাকা ফিস হিসেবে জমবে তা দিয়া মনে করেন আমার হয়ে আপনিই খাওয়াই দিলেন বদ্দা আর আম্রে!!! দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

তুমি তো ভালোই বান্দর দেখতাসি। চোখ টিপি খাওয়ামু, তয় কইলাম পানি-চুনি খাওয়াইতে পারুম না! পোলাপান মানুষ, জুশ্‌ খাইও।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

বেজায় খুশিতে একটা লাফও দিলাম!!!! জুশ সাথে আরো কিছু...............আহ শান্তি!!!! হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

দুর্দান্ত এর ছবি

ঢাকার ইমিগ্রেশানের সাথে আমার এখনো কোন কাইজা হয়নাই। এই ডিসেম্বরে দেখলাম 'বোর্ড বসাইয়া চিকিতসা' পদ্ধতিতে দুই-তিন জনের দলে পাসপোর্ট কিলিয়ার করা হচ্ছে। একজন পার্সপোর্ট নিয়ে ছোটদুরবিন দিয়ে পরখ করে পরের জনের হাতে দেয়, তিনি সেটার চুম্বক অংশ তিলাওয়াত করে আরেকজনকে শোনায়, যে কিনা কম্পিউটারে খুটখাট করে। কাজশেষে দ্বইতীয় জন পাসপোর্ট মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে ঘাড় কাত করে। তিনজন সমবেত লয়ে চাকুম চুকুম পান চাবায়।

মৃত্যুময় ঈষৎ(offline) এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনি ভাগ্যবান। আমার মনে হয় রাশিতে প্রবলেম আছে।

তবে একটা কথা বলতেই হয়, সবাই কিন্তু এক রকম না। আমি বেশ কয়েকজনকে দেখেছি যারা অত্যন্ত ভদ্রলোক, প্যাঁচাল পাড়েনা, বাখোয়াজ করেনা। তবে বেশিরভাগই কিন্তু ইয়ে .......................।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মিলু এর ছবি

হো হো হো

মিলু এর ছবি

হো হো হো হাসলাম অনেক। জব্বর দেখাইছেন। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ। কিন্তু আশ্‌ মেটে নাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

এরা হলো শক্তের ভক্ত, নরমের যম। দেশে ঢোকার সময় আমার-ও কোনো সমস্যা হয় নি, আসার সময় একজন ঝামেলা করলো। আমার পিত্তি জ্বলে উঠলো, প্রায় বাকযুদ্ধ। পরে অন্যরা এসে থামায়। এবং সে রাগে জ্বলতে জ্বলতে ছাপ মারে, আমি ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড হেসে উঠলাম।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আসলে যতো ঝামেলা, সব হয় কিন্তু বেরোনোর সময়। তবে আমাদের মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের কিন্তু ওরা মাঝে মাঝে ফেরার পথেও হ্যারাস করার চেষ্টা করে। এই যেমন ধরেন, ছুটির ক্লিয়ারেন্স লেটার কই, ইত্যাদি। আমার ধারণা যে ওরা অধিকাংশ সময় বুঝতে পারে কাকে ধরে 'ছিল' দেওয়া যায়। ২০০৬ সালে আমি প্রথম আফ্রিকায় যাওয়ার সময় আমাকে অফিসার বললো যে সে কোনওক্রমেই আমাকে এক্সিট দিতে পারবে না, তার চাকরী চলে যাবে। পরে আবার সেই লোকই সীল দিলো। সে এক জটিল কিচ্ছা, পরে শেয়ার করবো। নাটককেও হার মানায়।

আমি অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে ইউরোপ-আমেরিকাগামীদের বেশিরভাগ ভোগান্তি হয় তাদের প্রথমবারের বা দ্বিতীয়বারের ভ্রমণের সময়। এছাড়া যারা বিভিন্ন ফেয়ারে অংশ নিতে যায়, এদেরকেও অধিকাংশই 'সিস্টেমে' পড়তে হয়, এটা প্রায় নিশ্চিত।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ঝুমন এর ছবি

ভাই জটিল হয়েছে। আফ্রিকারটা খুব দ্রুত আশা করছি।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে ঝুমন। এক্ষুনি একই বিষয়ে আরেকটা লেখা প্রসব করলে হয়তো বিষয়টা মনোটোনাস লাগতে পারে। তবে একটু গ্যাপ দিয়ে অবশ্যই লিখবো। ভালো থাকুন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তাসনীম এর ছবি

এই রকম অভিজ্ঞতা আমার একবারই হয়েছে। সাথে বউ ছিল, বিয়ের কাগজ চেয়ে হম্বিতম্বি করেছিল...বলা যায় না আমি হয়ত নারী পাচার ব্যবসার সাথে যুক্ত।

অভিজ্ঞতায় দেখেছি মার্কিন যাত্রীদের হয়রানি কম করা হয়...আর মিডলইস্টগামী শ্রমিকদের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এরকম আমার একবার ঘটেছে তবে তারা ইমিগ্রেশনের লোক না, এয়ারপোর্ট সিকিউরিটির লোক। ঘটেছে ইমিগ্রেশনের কিউতে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায়। আমার স্ত্রীর কাছ থেকে শোনা দুই কর্মকর্তার ফিসফিসানি। তারা দুজনেই আমার স্ত্রীর পিছনে পিছন ফিরে দাড়িয়ে ফিসফিস করছিলো-

১মঃ যাহ, এই কেসটা ধর।
২য়ঃ তুই যা না।
১মঃ আরে নাহ, আমার যাওয়া যাবেনা। তুই যাহ।
২য়ঃ ক্যান, তোর যাওয়ায় অসুবিধা কি?
১মঃ আরে বাল, তুই যা। এরা আমার পরিচিত।
২য়ঃ তাহলে যাওয়ার দরকার কি তোর যখন পরিচিত!
১মঃ আরে যা না।

কাঁচাপাঁকা চাপদাড়িমণ্ডিত মাথায় টুপি ২য় লোকটা এগিয়ে এসে জিজ্ঞেসে করলেন,
২য়ঃ আপনারা কোথায় যাবেন?
রাতঃ জ্বী, আমরা আফ্রিকায় যাবো।
২য়ঃ আপনারা কি স্বামী-স্ত্রী?
রাতঃ জ্বী।
২য়ঃ আপনাদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখান।
রাতঃ আমরা তো ম্যারেজ সার্টিফিকেট সাথে নিয়ে ঘুরিনা।
২য়ঃ তাহলে তো আপনারা যেতে পারবেন না।
রাতঃ ক্যান?
২য়ঃ কাবিননামা না দেখিয়ে আপনারা যেতে পারবেন না।
রাতঃ পাসপোর্টে আইডেন্টিটির ভেরীফিকেশন আছে তাতে হবেনা?
২য়ঃ জ্বী না।
রাতঃ তাহলে তো বিপদ, তাহলে আমরা আফ্রিকা যাবো কিভাবে? (চিন্তিত হয়ে পড়ার ভঙ্গি করে)।
২য়ঃ আপনি আসেন আমার সাথে, কথা বলি।
রাতঃ আচ্ছা ভাই, ১৮ বছরের বেশি বয়সের কেউ যদি ভিসা নিয়ে বিদেশে যেতে চায়, তার কি কারো স্বামী বা স্ত্রী হয়ে যাওয়া লাগে? একটু বলেন দেখি কোথায় একথা লেখা আছে?
২য়ঃ আচ্ছা ঠিকাছে, আপনারা যান। আমরা মানুষ দেখলেই চিনি। কিন্তু বোঝেন তো, কর্তব্যপালন করতে হয়। কিছু মনে নিয়েন না ভাই।
রাতঃ আচ্ছা ঠিকাছে, ধন্যবাদ।

এই নাটকের ১ম চরিত্র আমাদের সাল্টু মামা। দুর সম্পর্কের মামা। এই ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে আমাদের বাসায় যেয়ে পেটপুরে মিস্টি-নাস্তা সাবাড় করে এসেছে। দয়া করে পাঠক কেউ আশ্চর্য হবেন না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

বোধকরি দেশের ২য় দুর্নীতি প্রবণ এলাকা আমাদের বিমানবন্দর(১ম শিক্ষাবোর্ড+থানা)। পুলিশ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের কর্মীরা ধান্ধায় থাকে কিভাবে আপনার কাছ থেকে মোটা দাগে 'খসাবে'। এদের ১ম পছন্দ মধ্যপ্রাচ্য গামী অনভিজ্ঞ যাত্রী এবং স্টুডেন্ট ভিসা ধারীরা।


love the life you live. live the life you love.

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

যখন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন রিক্রুটেড কোনও ব্যাচ যায় তখন এরা ম্যানপাওয়ার কোম্পানীর কাছে থেকে রেটবাঁধা টাকা পায়। তবুও এরা ইন্ডিভিজুয়াল আদমদের কাছ থেকে কিছু খসাতে চেষ্টা করে। তবে ছুটিতে এসে ফেরার সময় মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী মানুষেরা বেশ ভালোই বাঁটে পড়ে। আর স্টুডেন্ট ভিসাধারীরা সবসময়েই এদের পছন্দের অগ্রাধিকারে থাকে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

দারুণ গড়াগড়ি দিয়া হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমি একবার অফিসের টীম নিয়ে ভিয়েতনাম যাচ্ছি। আমি বাদে টীমের সবাই প্রথমবার যাচ্ছে। লাগেজ ম্যানেজ করে ইমিগ্রেশানের লাইনে দাড়াতে দেরী হয়ে গেল। দলে প্রায় ১৯ জন। বিশাল টীম দেখে ইমিগ্রেশান অফিসার ঘাবড়ে গেল। লাইনের সামনে কয়েকটা হাবাগোবা পড়ছিল আর একটা বেশী চালাক পড়ছিল। বেশী চালাকটা ইমিগ্রেশান ক্লার্কের কোথায় যাইবেন কিল্লাই যাইবেন ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তরে ভুলভাল ইংরেজীতে চাপা মারলো এবং চাপা ভুল জায়গায় পড়লো। সন্দেহ জাগলো ক্লার্কের চেহারায়।

ক্লার্ক কয় 'একটারেও যাইতে দিমু না, এইটা নিশ্চিত আদম পাচার'। সবাইরে প্রায় আটক করে একপাশে নিয়ে গেল। ঘটনাগুলো আমি পৌঁছানোর আগেই ঘটে গেছে। আমি পৌঁছাতে জিজ্ঞেস করলাম,
-ব্যাপার কি?
-আপনে কে?
-আমি এদের টীম লিডার
-আপনি এত মানুষ নিয়া ওই দেশে ক্যান যাইবেন?
-বিজনেস ট্রিপ। ভিসা, ইনভাইটেশন লেটার, এসব দেখেন নাই? ওখানে লেখা আছে।
-কুনো ট্রিপ বুঝি না, এটা আদম পাচার, যেতে পারবেন না আপনারা।
-হোয়াট??? (মেজাজে আগুন ধরে গেল, কারন থাই এয়ারওয়েজ তখন ডাক পাড়ছে প্রিয় যাত্রীদের, সময় গেলে সাধন হবে না।)
-চিৎকার করবেন না
-এখানে আপনাদের ইনচার্জ কে?
-চীফ ইমিগ্রেশান অফিসার
-ডাকেন ওনারে, আমি কথা বলবো।

ইমিগ্রেশান অফিসার আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে আমার পাসপোর্ট ইত্যাদি দেখে বললো, আপনাকে বিশ্বাস হয়, কিন্তু বাকীদের পারছি না। ফিরে আসবে একসপ্তাহ পরে, এই গ্যারান্টি কে দেবে? আমি বললাম, আমার পাসপোর্টের কপি রেখে দেন। কেউ ফিরে না আসলে আমি দায়ী থাকবো। চিফ ইমিগ্রেশান অফিসার রাজী হলো এবং যেতে দিল। কিন্তু ততক্ষণে থাই উড়াল দেয় দেয়।

আমি ফিরে গিয়ে চিফকে বললাম, আপনারা দেরী করিয়েছেন, এবার প্লেন থামান, নইলে সীল ছাপ্পর বাদে উঠতে দেন। চিফ মুশকিলে পড়লো, তাড়াতাড়ি কাকে যেন চিৎকার দিয়ে বললো, ফ্লাইট ৩০ মিনিট ডিলে দেখাতে। আর যাই হোক, জীবনে প্রথমবার একটা প্লেনের চাকাকে খাড়া করাতে পেরে নিজেরে রাজা মনে হইছিল সেদিন।

ফেরার পথে সেই ইমিগ্রেশান অফিসারের সাথে আর দেখা হয়নি। কারণ আমরা ফিরছি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে। বেচারা চিফ অফিসার আমার পাসপোর্টের কপি নিয়ে অপেক্ষা করতে করতে নিশ্চয়ই ভাবতেছিল, "আমি তখনই বুঝছিলাম ব্যাটা নির্ঘাত আদম ব্যবসায়ী" শয়তানী হাসি

............................
আরেকবারের ঘটনা বলতেও লজ্জা হচ্ছে। কিন্তু কই যাবেন, কেন যাবেন, এসবে আটকানোর কোন ক্লু না পেয়ে ইমিগ্রেশানের তরুণ অফিসার, চা খাওয়ার জন্য আমার কাছ থেকে ১০০টা টাকা চেয়ে নিয়েছিল 'ভাই' হিসাবে। হো হো হো

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মৃত্যুময় ঈষৎ(offline) এর ছবি

রাজার মতই থামায় দিছেন, খাইছে!!!! তয় এইসব যন্ত্রণা এরা করে কীযে সুখ পায়!!! রেগে টং

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এসআইঃ আপনি কোথায় যাবেন ভাই?
রাতঃ জ্বী কেনিয়া।
এসআইঃ ভিসা কোই?
রাতঃ কেনিয়া যেতে ভিসা লাগেনা। অন এ্যারাইভাল নেবো।
এসআইঃ আপনাকে কেনো তারা অন এ্যারাইভাল ভিসা দেবে?
রাতঃ দেবে এজন্যে কমনওয়েলথ ট্রিটিতে লেখা আছে বাংলাদেশীদের কেনিয়া প্রবেশে ভিসা অত্যবশ্যক নয়। এছাড়া বাংলাদেশে কেনিয়ান দূতাবাস নেই।
এসআইঃ কমনওয়েলথ ট্রিটির কোথায় লেখা আছে আমাকে দেখান।
রাতঃ সেটা তো আপনার ভালো জানা থাকার কথা। ইমিগ্রেশনের অফিসার আপনি, আপনি তো আমার থেকে ভালো জানবেন এইসব ট্রিটির কথা। না জানলে অবশ্য ভিন্ন কথা।
এসআইঃ না না, এসব বললে হবেনা। ভিসা লাগবে।
রাতঃ দ্যাখেন ভাই, আমি এর আগে অন্তত দশবার কেনিয়ায় ঢুকেছি, সব বারই অন এ্যারাইভাল নিয়ে। আমার পাসপোর্টে ভিসাগুলো দ্যাখেন। আর কমনওয়েলথ ট্রিটির কথা যদি আপনার জানা না থাকে শরমের কিছু নাই। আপনার ওসি সাহেবরে বলেন।

এবার এসআই মহোদয় আমাকে নিয়ে চললেন তার বিসিএস ক্যাডারোর্ত্তীর্ণ পুলিশের সহকারী কমিশনার, ইমিগ্রেশনে যাদের ওসি বলে, সেই ওসি মহোদয়ার চেম্বারে।
এসআইঃ স্যার ইনি কেনিয়ায় যেতে চায় ভিসা ছাড়া। ইনি বলতেছে যে কেনিয়ায় বাংলাদেশীদের ভিসা লাগেনা।
ওসি (রাতঃর উদ্দেশ্যে)ঃ ভিসা লাগেনা একথা পাইছেন কোই?
রাতঃ এটা নতুন কোনও কথা না। কেনিয়ার মিনিস্ট্রি অব ফরেন এ্যাফেয়ার্সের ওয়েবসাইট চেক করেন।
ওসিঃ এ্যাই এস আই সাহেব, আপনি কি এনার ব্যাপারে কিছু সাসপেক্ট করেন?
রাতঃ আপা, এই কথাটা কাইন্ডলি এক্সপাঞ্জ করেন। সাসপেক্ট করা তো হয় চোর-ডাকাইতরে।
ওসিঃ আরে ভাই, চুপ করে বসেন তো! আমাদের পুলিশে পুলিশে কথার মধ্যে আপনি ঢোকেন ক্যান!
রাতঃ না মানে এইসব কথা শুনে অভ্যাস নাই তো, তাই।
ওসিঃ আপনি যান, সামনে যেয়ে বসেন তো! দরকার হলে ডাকবো।

আমি রুমের বাইরে গিয়ে বসলাম। এসআই আমার পাসপোর্ট হাতে বেরিয় আসলো গজগজ করতে করতে করতে।
এসআইঃ আসেন আমার সাথে।
রাতঃ তা কি ফয়সালা হলো ভাই, যেতে দেবেন।
এসআইঃ আসেন তো ভাই! শালার কোন বালের ওসির আন্ডারে কাজ করি, কাজ বোঝেনা কাম বোঝেনা। আবার উল্টাপাল্টা হইলে চোদা খাওয়া লাগে এসআই'র। নিচুস্বরে এসআই গজগজ করতে থাকলেও আমার কান এড়ালো না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ঢাকাইয়্যা যাদুকর () এর ছবি

কাল: জুন ২০০৩ সাল
স্থান: চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট

প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি উচ্চশিক্ষার্থে

ইমিগ্রেশন ঠোলা (ই.ঠো.): কোই যাইবেন?
আমি: অস্ট্রেলিয়া
ই.ঠো. কেন যাইবেন?
আমি: পড়ালিখা করতে
ই.ঠো. কোন শহরে যাইবেন? সিডনী?
আমি: জ্বিনা, টুউম্বা, ব্রিসবেনের কাছে
ই.ঠো. কি সাবজেক্ট?
আমি: আই.টি
ই.ঠো. পাসপোর্টের পাতা উল্টিয়ে কি যেন চেক করলেন, তারপর ভিসার লেবেলটি শুঁকে দেখলেন! আবার কম্পিউটারের কিবোর্ড চাপলেন আর চেক করলেন, তারপর বললেন ভিসাই তো গ্যান্জাম আছে!
আমি: কি সমস্যা?
ই.ঠো. তা জানিনা এখনো কিন্তু গ্যান্জাম আছে - আপনের আগে লাইনের ২জনের গ্যান্জাম ছিল, আপনেরো আছে অবশ্যই।
আমি: (ঘাবড়ে গিয়ে) আন্কেল একটু ভাল করে চেক করে দেখুন, ভিসাতো অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন থেকে দিয়েছে

পাশ থেকে ই.ঠো.'র এক চামচা গোত্রীয় লোক ইশারায় বল্লেন "কিছু ছাড়েন আন্কেল, স্যারের আজকা মেজাজ খারাপ"
আমি: কিন্তু সাথেতো বাংলা টাকা নেই
ই.ঠো.'র চামচা: ডলার আছেনা, ভাংগিয়ে নিন!
আমি: (রেগে গিয়ে) যা খুশি চেক করেন, এক পয়সাও দিতে পারবোনা

ই.ঠো. (অপমানিত) আপনে জানেন আপনারে কোন কারন ছাড়া আটকাইয়া রাখতে পারি? আসেন ভিতরে আসেন, আমার স্যারের (অফিসার ইন চার্জ) কাছে নিয়ে যাই

ই.ঠো.'র স্যার: (ওসি সাহেব): কি সমস্যা?
ই.ঠো. স্যার, এই ভিসাতেও মনে হয় গ্যান্জাম আছে
ওসি: কম্পিউটারে চেক করছেন?
ই.ঠো. জ্বি, কম্পিউটারে চেক ওকে
ওসি: তাইলে?
ই.ঠো. কিন্তু আগের দুইটার তো সমস্যা আছিল, এইটাও যদি একই গ্রুপের হয়?
ওসি: (বিরক্ত হয়ে) যান আবার চেক করেন, ঠিক থাকলে ছাইরা দেন
ই.ঠো. (আমার সামনে অপমানিত হয়ে বিড়বিড় করে ভাগ্যকে গালি দিল) যান আজকের মত ঝামেলা করলামনা, চাইলে আপনের যাওয়া আটকাইতে পারতাম এইটা মানেনতো?
আমি: নিশ্চুপ. . .

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চাইলে আপনের যাওয়া আটকাইতে পারতাম এইটা মানেনতো?

বেশরম, অপমান হওয়ার পরও লজ্জা হয়না।

অনেকবার বলতে শুনেছি যে আমি না ছাড়লে আপনি বিদেশ যেতে পারবেন না। ব্যাটা হরিদাস পাল। চোখ টিপি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ojana pthik এর ছবি

স্থানঃ ঢাকা বিমান বন্দর আন্তর্গমণ
কালঃ ১০/০১/২০১১
পাত্রঃ পান চাবানো ভুরি ওয়ালা (পাচাভুয়া) আমি, আমার বিদেশী বউ আর আমাদের ৩ বছরের ছেলে।
________________________________________________________

পাচাভুয়াঃ (পাসপোর্ট উল্টাইয়া পাল্টাইয়া দেইখা) কই থেকে আইছেন?
বউঃ sorry I don't speak Bangla
পাচাভুয়াঃ আপনার কথা বুঝিনা, কই থেকে আইছেন?
আমিঃ (একটু খেলতে চাইলাম, পেছন থেকে) ভাই পাসপোর্টে তো লেখা আছে, পাসপোর্ট টা দেখেন।
পাচাভুয়াঃ (আবার জিজ্ঞাসা) কোন দেশের আপনি?
আমিঃ ফিনল্যান্ড
পাচাভুয়াঃ ফিলিপাইন?
আমিঃ না ভাই, ফিনল্যান্ড
পাচাভুয়াঃ অহ ফিলিপাইন?
আমিঃ না ভাই বললাম তো ফিনল্যান্ড।
পাচাভুয়াঃ উনি আপনার কি হয়?
আমিঃ আমার বউ।
পাচাভুয়াঃ (ভুরু কুচকিয়ে) ওহ আচ্ছা, তা বিদেশে বিয়া করলেন কেন? দেশে মেয়ে ছিলনা?
আমিঃ ভাই এইটা কি আপনার ইমিগ্রেশন কন্সার্ন? এটাতো আমার ব্যাক্তিগত ব্যপার তাই না?
পাচাভুয়াঃ আরে ভাই চ্যাতেন কেন? এইডা তো আমাগো জব, উনি আসছে, যদি আর ফেরত না যায়!
আমিঃ (হাসবো না কাদবো বুঝতে পারছিনা) what the hell are you talking about? My 3 year old son is waiting here for 1 hour now, behind me almost 10 visitors, if you take 30 minutes for 1 visitor how will you finish your job? and people are suffering, do you understand that?
পাচাভুয়াঃ (ভ্যাবাচ্যাগা খাইয়া, জানিনা বুঝতে পারছে কিনা), আরে ভাই চ্যাতেন কেন? সে কি ভিসা নিয়া আসছে?
আমিঃ তার পাসপোর্ট আপনার হাতে আধা ঘন্টা যাবত আপনি দেখেন নাই ভিসা নিয়া আসছে কি ভিসা নেয় নাই!
পাচাভুয়াঃ এখানে ভিসা নাই।
আমিঃ ওখানে দেখেন স্ট্যাম্প আছে, সেখানে লেখা," No visa required to visit Bangladesh"
পাচাভুয়াঃ ওহ ঐটাই ভিসা... আচ্ছা, ঠিক আছে, এবার তার ছবি তুলতে হইবো, ক্যামেরার সামনে দাড়ান, মাথা আরেকটু উপরে, একটু হাসেন, ইস্মাইল, ইস্মাইল... হুম, ওকে।

(ঘাট করে একটা সীল পড়লো)
তারপর আমার ছেলের পাসপোর্ট চেক, তার ছবি তোলা... এক ই ভাবে...
তারপর আমার পাসপোর্ট চেক এবং ছবি তোলা

বউঃ (ঘামতেছে)
ছেলেঃ (কানতেছে)
আমিঃ বুঝতাছিনা কোথায় আসলাম

পাচাভুয়াঃ (মনে মনে) শালা বিচ্ছুর দল, পইয়সা চাও্যার সুযোগ ই দিলোনা। Next.....

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।