বর্তমান সরকারের আগামী আড়াই বছর

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: সোম, ২২/০৮/২০১১ - ৮:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশের বর্তমান সরকারের বয়স প্রায় আড়াই বছর হতে চললো। এর মধ্যেই মানুষ হতাশ। দিনবদলের যে স্বপ্নে বিভোর হয়ে তারা বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো সে স্বপ্ন আস্তে আস্তে ফিকে হতে শুরু করেছে। বাস্তবতা হলো দেশ গত আড়াই বছর আগে যেখানে ছিলো সেখানেই স্থবির হয়ে আছে। দুর্নীতি, চাদাবাজি, সন্ত্রাস, সরকারি দলের পাতিনেতাদের অনায্য দাপট, মন্ত্রীদের আখের গোছানো, দখলবাজি, টেন্ডরবাজি, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি সহ নানা ধরনের সমস্যা যা আগে ছিলো এখনও আছে। দেশের এসব সমস্যা দিনে দিনে বাড়ছে বই কমছে না। এর সাথে উপরি হিসেবে যুক্ত হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুপ্ত হত্যাসহ নানা ধরনের আইন সন্ত্রাস। পরিস্থিতি এমন যে সাধারণ মানুষের কাছে নাভিশ্বাস ফেলাটাও ভয়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অথচ পাঁচ বছর হাওয়া ভবনের রামরাজত্ব আর দুই বছর ছদ্ম সামরিক শাসনের বেড়াজালে আটক থাকার পর মানুষ এই সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। সে কারণেই এ সরকারের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া। কিন্তু আজ মাত্র আড়াই বছর যেতে না যেতেই সরকারের জনসমর্থন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তৃণমূল সমর্থক গোষ্ঠীতো বটেই, দেশের সুশীল সমাজ যাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের কড়া সমর্থক বলে পরিচিত তারা পর্যন্ত সরকারের কর্মকাণ্ডে হতাশ। এমনকী গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বহুল আলোচিত নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির অন্যতম কারিগর ড. আবুল বারাকাত মত ব্যক্তিও বলছেন ' সরকারকে দাবী মানানোর জন্য রাজপথে নামা ছাড়াতো কোন উপায় দেখছি না'! গণিতবিদ দরকার নেই, একজন পাগলও বলতে পারে এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে তার ফলাফল কী দাঁড়াবে।

এগুলো সরকারের জন্য একটি মারত্মক বিপদ সংকেত। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ক্রমাগত আন্দোলন করে যে কাজটি করতে পারছে না সরকার নিজেরাই সে কাজটি করে দিচ্ছে। অর্থাৎ দেশ এমনভাবে চালাচ্ছে যে জনগণের আস্থার স্থানটি ক্রমশ টলে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম যারা একচেটিয়া ভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল তারা বিকল্প খুঁজছে। যেহেতু আমাদের দেশের রাজনীতিতে বিকল্প বেশি নেই। তাই বিরোধী দল বিএনপি-জামাত জোটই তাদের পরবর্তী ভরসা হয়ে উঠবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

২০০৬ এর নির্বাচনে গো হারা হারার পর দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ সমর্থকদের যে শোচনীয় অবস্থা হয়েছিল তা কোনভাবেই ভুলবার নয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সফল হলে তো পুরো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বই ধ্বংস হয়ে যেতো। সে কথা মাথায় রেখেই বর্তমান সরকারের সামনের দিকে তাকানোটা অতীব জরুরী। বিশেষ করে সরকারের সামনের আড়াই বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জনপ্রিয়তা ও আস্থার স্থানটি পুনরুদ্ধারে এই আড়াই বছরে সরকারকে বেশ কিছু কাজ জরুরী ভিত্তিতে করতে হবে। যেমন-

ক. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা।

সরকারকে আগামী বার ক্ষমতায় আসতে হলে এই বিচার সুসম্পন্ন করতেই হবে। আওয়ামী লীগ যদি ভেবে থাকে যে বিচারের মুলো ঝুলিয়ে সহজেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে তবে তা বোকার স্বর্গে বাস ছাড়া কিছুই নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই নতুন প্রজন্মের ভোট নিশ্চিত করতে পারে।

খ. দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা।


সাধারণ মানুষ ব্যাংক রিজার্ভ বোঝে না। প্রবৃদ্ধি বোঝে না। তারা চায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাদের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে থাকুক। টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) সক্রিয় করার কথা প্রতি সরকারই বলে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। সময় আসলে দেখা যায় সরকার নায্যমূল্যে জিনিসপত্র সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে বেসরকারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লোটে। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে জিনসপত্র বজারে সহজলভ্য করাটা সরকারেই দায়িত্ব। কিন্তু অিন্যন্য সরকারের মত এ দিন বদলের এ সরকারও এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ। নিত্যপণ্যের মূল্য এভাবে বাড়তে থাকলে জনগণ ফুসে উঠতে বাধ্য। তখন ‘আপনারা একবেলা কম খান’ বা ‘বাজারে একদিন কম যান’ বলে পার পাওয়া যাবে না। যেভাবে হোক বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।

গ. দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।


টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ) এর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা আগের চেয়ে বাড়ছে বই কমছে না। তৃণমূল থেকে রাষ্ট্রের উচ্চস্তর পর্যন্ত দুর্নীতির কারণে সাধারন মানুষ অসহায়। ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) কে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকায় দেখা গেছে। তখনকার দুদক চেয়ারম্যান হাসান মাশহুদ চৌধুরী দুর্নীতি দমনে তার শক্ত অবস্থানের কারণে জনগনের বাহবা পেয়েছিলেন। সরকারে নির্বাচনী ইশতেহারেও দুর্নীতি দমনের বিষয়ে অঙ্গীকার রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দুদক প্রায় নখদন্তহীন একটা প্রতিষ্ঠান। এর দায়ভার সরকারের ওপরই বর্তায়। আগের মতোই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য দুদকের ব্যবহার জনগণকে সরকার সম্বন্ধে ভুল বার্তা পাঠাচ্ছে। জনগণের আস্থা অর্জনে এ দিকটাতে নজর দেয়া প্রয়োজন বলে খোদ সরকারি দলের ভেতরেই গুঞ্জন রয়েছে।

ঘ.অযোগ্য মন্ত্রীদের বাদ নিয়ে মন্ত্রীসভা পুর্নগঠন করা।

অনেক আগেই বিশিষ্ট কলামিস্ট গাফফার খান এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে কলম ধরেছিলেন। আওয়ামী লীগের ভেতরেও মন্ত্রীসভা নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। এখন তো জনগনই চোখ বুজে বলে দিতে পারে দেশের কোন কোন মন্ত্রী ব্যর্থ। জনগণ বোঝার আগেই সরকারের থিমট্যাঙ্কদের এটা বোঝা উচিত ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রানলয়, অর্থ মন্ত্রানলয়, যোগাযোগ মন্ত্রানলয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানলয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রানলয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রনালয়- এগুলো সরকারকে বিব্রত করছে বারবার। অতি দ্রুত এসব মন্ত্রনালয়ে রদবদল করে এসব খাতকে গতিশীল করা উচিত। আগামী আড়াই বছরে এই মন্ত্রনালয়গুলো সফল ভাবে চললেই সরকারের সাফল্য অবশ্যম্ভাবী।

চ.দলের নাম ভাঙিয়ে খাওয়া লোকজনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া।


প্রতিবারই এটা হয়। যে দল ক্ষমতায় যায় সেই দলের নেতা কর্মীরা দলের নাম ভাঙিয়ে জনগণকে বিষিয়ে তোলে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ছাত্রলীগতো আছেই, তার সাথে বরাবরের মত যুক্ত হয়েছে অনেক সংসদ সদস্য আর সরকারি দলের পাতি নেতা কর্মী। ২০০১ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির অনেকটা দায় এদের ওপরই বর্তায়। অথচ এবারও আওয়ামী লীগ এই সুবিধাবাদীদের ব্যাপারে উদাসীন। বরঞ্চ সুবিধাবাদীরা রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে খুনিদের সাজা মাফ করানোর মত ঘটনা ঘটিয়ে সরকারের ইমেজের বারোটা বাজাচ্ছে। এদের বিষয়ে এখনই সাবধান না হলে সরকারে ইমেজের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। নির্বাচিত হয়ে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী যেভাবে কঠোর হাতে নেতাকর্মীদের সামলিয়ে তার দলের ইমেজ রক্ষা করছেন, আওয়ামী লীগকেও আগামী আড়াই বছর সে পথেই হাঁটতে হবে। দলের ভেতর জামাত ঢুকে স্যাবোটাজ করছে টাইপের কথা বলে জনগনের কাছে এর দায় এড়ানো যাবে না।

ছ. আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনের আওতায় আনা।


গত আড়াই বছরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দেশে যে তাণ্ডবলীলার ইমেজ তৈরি করেছে তাতে সরকারেরই বদনাম হচ্ছে। র‌্যাবের গুলিতে লিমনের পা হারানো, ছয় ছাত্রকে ডাকাত বানিয়ে হত্যা ঘটনায় পুলিশের নির্বিকার ভূমিকা, ঢাবি ছাত্র কাদের কে ডাকাত বানানো, মিলন নামের এক কিশোরকে ডাকাত বানিয়ে হত্যা, বিরোধী দলীয় চিফ হু্ইপ জয়নাল আবেদীনকে পেটানোসহ নানা ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে জড়িত। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা সরকারের কোন দলীয় অঙ্গসংগঠন হিসেবে কাজ করছে। আদতে কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী লোকজনেরাই এ জন্য দায়ী। সরকারের উচিত এদেরকে বিচারের আওতায় আনা। নয়তো জানমালের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ বলে মানুষের ভেতর যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। নিরাপত্তাহীন মানুষ নিরাপত্তার খাতিরে সরকার বদলে উৎসাহী হবেই।

জ. মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।


এই সরকার আসার পর টেলিভিশনসহ অনেকগুলো পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকও একবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি ফেসবুকে দেয়া জনৈক ব্যক্তির স্ট্যাটাস নিয়ে আদালত রুল জারি করেছে। এসব ঘটনায় মানুষ ক্ষুব্ধ। এই আধুনিক যুগে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার মত বোকামী আর হয় না। অথচ সরকার বুঝে হোক আর না হোক বারবার এই কাজটিই করছে আর নতুন প্রজন্মের কাছে বিরাগভাজন হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণার সাথে এটি পুরোপুরি বেমানান। বরঞ্চ ডিজিটাল মিডিয়ার সাথে, ডিজিটাল কেন্দ্রিক তরুণ সমাজের সাথে সরকারের দূরত্ব কীভাবে কমানো যায় সেটা নিয়েই সরকারের কর্ণধারদের মনযোগ দেয়া উচিত। মনে রাখতে হবে কোন মতেই সদা দোদুল্যমান তরুণ ভোটারদের সমর্থন হারানো যাবে না। আগেরবারের মতোই আগামীবার এরাই ভোটের ব্যবধান গড়ে দেবে।

আমার মতে এই কাজগুলোর উপর আগামী নির্বাচনে সরকারের সাফল্য নির্ভর করবে। সরকারের ভেতরের অনেকেই এটা বোঝেন। তাই এখন দেখা যাচ্ছে যে বিরোধী দল বিহীন সংসদে সরকার দলীয় সংসদেরাই বিরোধী দলের ভূমিকা গ্রহণ করছেন, সরকারের ভুল ত্রুটি তুলে ধরছেন। অস্ট্রেলিয়ায় কেভিন রাড যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তার মন্ত্রীসভার বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের বিপরীতে তিনি বলেছিলেন, আই ওয়াজ, আই আ্যাম আ্যান্ড আই উইল বি উইথ মাই মিনিস্টারস। এর ফলাফল শুভ হয়নি। রাতারাতি দল তাকে সরিয়ে জুলিয়া গিলার্ডকে দলের প্রধান করে প্রধানমন্ত্রী বানায়। আমাদের দেশে যেহেতু রাজনৈতিক দল চলে ব্যক্তি বিশেষ কে কেন্দ্র করে সেহেতু এ ধরনের কিছু প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। সেক্ষেত্রে উপায় হলো সরকার প্রধানকেই শক্ত হতে হবে। সব সিদ্ধান্ত যেহেতু তার মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয় সেহেতু তাকেই সঠিক পথে সরকারকে পরিচালিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী আড়াই বছর সে পরীক্ষাই দিতে হবে। এ পরীক্ষায় ভালোভাবে উত্তোরনের খাতিরে দলের ভেতরে ও দলের বাইরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীক বিরোধী দলের কাছ থেকে পাওয়া সাজেশনকে তার অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া উচিত।

যদিও অনেকেই সরকারের গত আড়াই বছরের কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে এখনই সরকারের পদত্যাগ দাবী করছেন, কিন্তু আমি তাদের সাথে একমত নই। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায়যে কোন সরকারকেই তার মেয়াদ পূর্ণ করতে দেয়া দরকার। এ সময়টাতে সরকারের কাজকর্মের প্রতিবাদ অবশ্যই হবে তবে তা জ্বালাও পোড়াও ভাঙচুর হরতালের মাধ্যমে নয়। বর্তমান রাজনীতি হতে হবে নতুন প্রজন্ম কেন্দ্রিক। বলার অপেক্ষা রাখে না যে দেশের তরুণ প্রজন্ম দেশের সেকেলে রাজনীতির কলাকৌশল নিয়ে অতি মাত্রায় বিরক্ত। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে তাই বর্তমান সময় কেন্দ্রিক আন্দোলন করতে হবে। জনগন এবং দেশের তরুন প্রজন্ম কী কী বিষয়ে সরকারের উপর নাখোশ সেগুলো নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই হতে পারে তাদের আগামীতে ক্ষমতার কাছিাকাছি যাবার একমাত্র চাবিকাঠি।

বিএনপির প্রাগৈতিহাসিক নেতৃত্ব অবশ্য এখন থেকেই মাঠ গরম করার ঘোষণা দিয়ে একে ওকে দলে টানার চেষ্টা করছে। বিএনপির এ কৌশলে আওয়ামী লীগকেও বেশ বিচলিত মনে হচ্ছে। তবে সবাই এ বিষয়ে একমত হবেন যে বিএনপির আন্দোলন নয়, আগামী আড়াই বছর সরকারকে লড়তে হবে নিজের সাথেই। দিন বদলের যে অঙ্গীকার করে তারা ক্ষমতায় এসেছে সেই দিন বদলের চিহ্ণ জনগণ দেখতে চায়। আড়াই বছর হয়ত খুবই কম সময় তবে আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক ইতিহাস তাতে তারা একবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারলে সফলতা অসম্ভব নয়। আর সেটা মাথায় রেখেই, আগামী নির্বাচনে জনগনের ম্যান্ডেট পেতে হলে সময় নষ্ট না করে সরকারের নড়ে চড়ে বসার এখনই চূড়ান্ত সময়।

২২/০৮/২০১১
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।


মন্তব্য

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

যে কয়টা হেডিং উল্লেখ করেছেন তা বোধকরি কোনও দলই কোনওসময় আমলে নেয়না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

guest_writer এর ছবি

ঠিকই বলেছেন রাতঃস্মরণীয়।
TIB র প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অনেক দেশই দুর্নীতি নির্মুলে সক্ষম হয়েছে। একমাত্র বাংলাদেশর সরকারের কর্তাব্যক্তিরাই সবসময় এর বিরোধীতা করেছে।
সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা আমাদের কখন তৈরি হবে?

দীপাবলি।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

হতাশ হতে নেই.....একদিন না একদিনআো জ্বলবেই...

মূর্তালা রামাত

মূর্তালা রামাত এর ছবি

তা ঠিক.....তারপরও বলতে হয়....বলতে বলতে একদিন যদি কাজ হয়

মূর্তালা রামাত

Kamrul Hasan এর ছবি

------------------------ছাত্রলীগ নাম ধারিদের অপরাধের বিচার করা।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আমার লেখঅর চ. পয়েন্টে এদের ফেলা যায়।

মূর্তালা রামাত

নজমুল আলবাব এর ছবি

সিলেটে একটা প্রবাদ আছে, বাবনে বাইগ পড়ইন, পাঠার ... ওউ লাগে না প্রমিত বাংলায় কথাটা এমন যে পূজারী মন্ত্র পড়েই যায় কিন্তু পাঠার বিশেষ অঙ্গটিতে কোন খবরই হয় না।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

মজা পাইলাম...

মূর্তালা রামাত

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পারবে না। পথ পিছলা হয়ে গেছে। যাদের উপর নির্ভর করতাম (যেমন সা. সম্পাদক সাহেব) তারাও এখন বেসামাল কথাবর্তা শুরু করেছেন। আর শে.হা. ঈদের আগে সাড়ে ছ'শ কোটি টাকার কাজ কাকে দিলেন তা বুঝতে কারো বাকী নাই। আসছে বার এই রাস্তা মেরামতের দূর্নীতি মামলার প্রধান আসামী কে হবে তা দেখতে পাচ্ছি।

আড়াই বছর আগের আ.লীগ আর আজকের আ.লীগের পার্থক্য অবিশ্বাস্য মনে হয়। এত বড় প্রতারণা এরা করবে তা কল্পনাতেও আসেনি।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আমারও সেটাই মনে হচ্ছে, সংসদে দাঁড়িয়ে কাল প্রধানমন্ত্রী যা বললেন তাতে আরো হতাশ হতে হচ্ছে,সেক্টরেই নাকী সাফল্য আছে!আমরা খালি খালিই ব্যর্থতা খুঁজিছি। সরকারপ্রধান যখন এমনটা বলেন তখন আর অন্য কিছু বলার বাআশা করার ভাষা থাকে না...

মূর্তালা রামাত

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাংলাদেশের রাজনীতির স্থায়ী ফরমূলাঃ

জেতা দল ক্ষমতায় যাবে। একমাস মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবে। তিনমাস পর একটু টক ঝাল বেরুতে থাকবে। ছমাস পর পুরাই ঝাল। এক বছর পুর্তিতে তেতো ভাব আসবে। দুবছর পর পুরাই বিরক্তিকর। অতিষ্ট জনগন।

হারু দল বিরোধী সিটে বসতে চাইবে না। 'মানি না' 'ফলাফল কারচুপি হইছে' এসব বলে সংসদের প্রথম সেশানে বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াবে। তারপর থেকে মাঝে মাঝে যাবে, ইচ্ছে হলে বাইরে চলে আসবে। আবার বেতন ভাতা সুযোগ সুবিধার কথা উঠলে ফিরে গিয়ে বসবে। দুই দলে চা পানি খাবে। দুই বছর আলসেমি করার পর এরা পরবর্তী ক্ষমতা গ্রহনের প্রস্তুতি নিতে থাকবে, কারণ জনগন ইতিমধ্যে সরকারের উপর ত্যক্ত হয়ে তাদের কুকীর্তিগুলো ভুলে গেছে।

প্রত্যেক আড়াই বছর পর সবাই জানে আগামীবার বিরোধি দলের লোকেরাই ক্ষমতা নেবে। তবু হরতাল আন্দোলন জ্বালাও পোড়াও করে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলবে হারু দল। আন্দোলন ফান্দোলনে কাজ হয় না নির্বাচন করেই সরকারি দল পাচ বছর পূর্ন করে বিদায় নেবে। ফরমূলা শেষ।

বাংলাদেশের জনগনের মেমোরিও আড়াই বছরের বেশী না। আর মান্দার গাছে আম কাঁঠাল ধরে না। রাজনীতিবিদদের উপর জনগনের কোন প্রত্যাশা থাকলে সেটাই ভুল।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মূর্তালা রামাত এর ছবি

কেন জানি শুধু বাংলাদেশেই এমনটা হয়। মমতা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে হরতাল বন্ধের জন্য সর্বদলীয় সভা ডাকছেন......কেবল আমরাই জনগনের কাতারে দাঁড়াতে পারি না!

মূর্তালা রামাত

মাহবুবুল হক এর ছবি

সাত মণ ঘি-ও পুড়বে না রাধাও নাচবে না। সরকারের এ মুহুর্তের করণীয় কী হতে পারে তা সৈয়দ আশরাফ গতকাল বুঝিয়ে দিয়েছেন। শে.হা কে হত্যার ষড়যন্ত্র হচেছ সুতরাং দ্রব্যমূ্ল্য, রাস্তা, দুর্নীতি এসব তাদের মাথায় নেই। মিডিয়াও এর সাথে জড়িত। আর ভেতরকার গ্রিন সিগনাল পেয়ে ব্যাকফুটে থাকা ব্যর্থ মন্ত্রীরা বাঘের মত দাঁত খিঁচিয়ে পাল্টা আঘাত হানার জন্য ব্যগ্র। এই দেশের আসল সমস্যা আসলে কোন জায়গায় সেটাই একটা বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে ও অভিজ্ঞতায় যা বুঝেছি, এ দেশে যে কোন সরকার খুব দ্রুত জনগণের পালস্ বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এটা কেন হয় সে বিষয়ে গবেষণা হতে পারে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি ও গণমাধ্যমের ব্যপকতার যুগেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সরকার যে এতটা অন্ধ হতে পারে তার তুলনা নেই। ক্ষমতার অনৈতিক চর্চাও এতটা নির্লজ্জ আড়ম্বরে হতে পারে তা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও আমলাদের না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। তাই আসুন আমরা আম জনতা ডুবে থাকি টিভি সিরিয়াল, উইনডো শপিং, তাবলীগ, মেসি-শো, টক-শো, লাইভ-শো, ফাস্টফুড, ক্রিকেট, ইত্যাকার আত্মনিমজ্জনের নানা আয়োজনে। না হয়, আসুন, নিদেনপক্ষে লিখে ফেলি একটি তরতাজা কবিতা..

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

সবাই যে এত হতাশ, অথচ সরকার তার খবর রাখছে না। এর পরিণাম খারাপ হতে বাধ্য।

মূর্তালা রামাত

যুমার এর ছবি

স্মৃতি পুরানো হয়ে গেলে আবার আট বছর পরে এদেরকেই মসনদে দেখা যাবে।সড়কে-মহামারিতে যেহেতু এদের মৃত্যু ঝুঁকি নেই বললেই চলে।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

কী বিচিত্র সেলুকাস আমাদের দেশ!অথবাআমরাই যারা বুঝে শুনেআবারও ভোট দেই....

মূর্তালা রামাত

ahasnat এর ছবি

২০০৬ এর নির্বাচনে আওয়ামিলীগের ভরাডুবির দায় এদের উপরই বর্তায়

এটা মনে হয় ২০০১ হবে।

এ হাসনাত

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। শুধরে নিচ্ছি।

মূর্তালা রামাত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।