কিশোরীর বেদনা

বন্দনা এর ছবি
লিখেছেন বন্দনা [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ০৫/১০/২০১১ - ৮:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তখন আমার বয়স কত ই বা হবে, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে প্রবেশ করেছি সবে। মনে হল হঠাৎ করে কেউ যেন আমাকে পুকুর থেকে এনে সাগরে ছুড়ে দিয়েছে। ছুড়ে দিয়েছে বলা ভুল হবে, কারণ মাবাবার অবাধ্য হয়ে সেবারই প্রথম নিজের পছন্দের কলেজে এডমিশন নিয়েছিলাম। ওনারা চাইছিলো আমি বাসার কাছেই আইডিয়াল কলেজে পড়ি, সাথে একটু আকটু ধর্মীয় ভাবাপন্ন হই। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দার মত একগুঁয়ে হয়ে বললাম হলিক্রসেই এডমিশন নিবো। তখন এমন অবস্থা হলিক্রসের রেজাল্ট ও বের হয়নি, আইডিয়ালে ভর্তি না হলে পরে হয়তো আমাকে বদরুন্নেসাতে পড়তে হবে। আমি বললাম তাও সই, তবু ও আমি আইডিয়ালে পড়বোনা। এরকম সারাদিন এপ্রন আর মাথায় স্কার্ফ পরে আমি ঘুরতে পারবোনা।

হলিক্রস কলেজ আমাকে হতাশ করেনি। সব দুর্ভাবনার মেঘ উড়িয়ে দিয়ে আমাকে ভর্তির সুযোগ দিয়েছিলো। বেজার মুখ নিয়ে গিয়ে বাবা ভর্তি করিয়ে দিয়ে এল কলেজে, বললো সব চিনে রাখ, এরপর তোমাকে রোজ একা এতদূরে এসে ক্লাস করতে হবে। আমাদের বাসা ছিলো ইত্তেফাকের কাছে। রোজ সকালে ইত্তেফাকের মোড় পর্যন্ত হেঁটে এসে ওখান থেকে ৮ কিংবা ১২ নম্বর বাস নিতে হোতো। তখন এখনকার মত ফার্মগেট যাবার জন্য সিটিং সার্ভিসের ভালো বাসগুলো ছিলোনা। ভাগ্য ভালো থাকলে স্টাফ বাস পাওয়া যেতো মাঝে মাঝে। আবার আসার সময় দুপুর বেলা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকে বাসে উঠতে হোতো। বাসার কাছের স্কুলে হেঁটে যাওয়া স্কুল বালিকার জন্য বাসে উঠা আর নামাটাই ভীষণ বিভীষিকাময় ছিলো তখন। কিন্তু অসম্ভব জেদ চেপে গিয়েছিলো। এটা যেনো আমার একার যুদ্ধ, আর আমাকে তা পারতেই হবে। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাসে উঠতে না পারলে ও দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যেতাম, বাসায় কিচ্ছুটি বলতামনা। আর যেদিন সেশনাল থাকতো, সন্ধের পর কলেজ থেকে ছাড়া পেতাম, অফিস ফেরত মানুষগুলোর সাথে কম্পিটিশন করে বাসে উঠতে হোতো, প্রায় অসম্ভব একটা কাজ ছিলো। অনেক অনেকদিন এমন ও গেছে বাসে উঠতে পারতামনা, রাত হয়ে যেতো, ভীষণ কান্না পেতো। সন্ধেবেলায় একলা একটা মেয়ের জন্য ফার্মগেটের মত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা যে কি ভয়ঙ্কর তা বলে বোঝানো যাবেনা।

বাসে উঠার কষ্টটা হয়তো অতটা গায়ে লাগতোনা। গায়ে লাগতো মানুষগুলোকে। আমার মত স্কুল বালিকাকে আগে কখনো দুনিয়ার কুৎসিত এই দিকটা দেখতে হয়নি। মানুষ নয় যেনো এক একটা হায়েনা। বাস থেকে নেমে ফার্মগেটের ব্রিজ ক্রস করে কলেজে আসতে হোতো। মনে হত যেন অনন্তকাল ধরে হাঁটছি, কিন্তু ব্রিজ আর শেষ হয়না। মানুষগুলো যে যেভাবে পারছে হাঁটার সময় গায়ে হাত দিয়ে যাচ্ছে। কাঁধের ব্যাগটা বুকের সামনে এনে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হেটে যেতাম তবুও রক্ষে নাই এদের হাত থেকে। প্রথম প্রথম বুঝতামনা, নিজেকে কিভাবে এদের থেকে সেইফ রাখবো, কিশোরী এই শরীরটা নিয়ে বড্ডও বিব্রত হতাম। বাসায় কখনো কাউকে বুঝতে দিতামনা, কিচ্ছুটি বলতামনা, বললেই হয়তো বলবে উনাদের কথা তখন শুনলাম না কেন। একা একা বাথরুমে ঢুকে পানির কল ছেড়ে দিয়ে কাঁদতাম। নিজেকে বড্ড বিশ্রী আর অপবিত্র লাগতো।

শুধু ব্রিজের উপর দিয়ে আসা যাওয়ার সময়ই না, বাসের ভিতরে প্রায়ই অনেকবার বিশ্রী পরিস্থিতি ফেইস করেছি। হেল্পারগুলো বাসে টেনে উঠানোর নামে, নামিয়ে দেবার নামে অহরহ গায়ে হাত দিতে চেষ্টা করতো। মেয়েদের জন্য নির্ধারণ করে দেয়া চালকের পাশেই একটু বসার যে জায়গা ছিলো, ওটা খালি না থাকলে বাসে ও উঠতে দিতোনা। বাসের লোকগুলোকে মানুষ মনে হোতোনা। এক একজন চিৎকার করে বলতো মহিলা উঠাস কেন বেটা, বাসে জায়গা নেই। এমন ও অনেকদিন হয়েছে, সন্ধেবেলায় একটার পর একটা বাস চলে যাচ্ছে চোখের সামনে দিয়ে, কিন্তু উঠতে পারছিনা অফিসফেরত মানুষজনের ভীড়ে। তাই জায়গা না থাকলে ও যখন বাসে উঠতে গিয়েছি, এই ধরনের সংলাপ প্রায়ই শুনতে হয়েছে। খুব অপমানিত-বোধ করতাম কিন্তু আমারতো উপায় ছিলোনা এভাবেই চলাফেরা করতে হোতো। প্রথম প্রথম প্রতিবাদ করার চেষ্টা ও করেছি, কিন্তু কাজে আসতোনা, কারো সমর্থন ও পেতামনা। তাই আস্তে আস্তে এসব অপমান হজম করে বাস উঠার অভ্যাস করতে হয়েছে। আর বাসের ভিতরের কাহিনী সেতো আর ও ভয়ঙ্কর। বাসে উঠতে দিলে ও বসার জায়গা মিলতোনা হয়তো। বাসে দাঁড়িয়ে থাকাটা যে কি জঘন্য ব্যাপার, তা যে মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকেনি সে কখনো বুঝবেনা। কলেজ-বালিকা আমি ও রক্ষে পাইনি বয়স্ক মানুষগুলো হাত থেকে। সবচেয়ে বদ ছিলো বাপের বয়সী বুড়োমানুষগুলো, খুব কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু এটা যে ভয়ঙ্কর সত্য, এড়িয়ে যাবার উপায় নেই এক্কেবারে। ভীড়ের সুযোগ নিয়ে এরা যা নই তাই করতো। কখনো কখনো হয়তো চিৎকার করে বলেছি হাত সরান, কিন্তু এমন একটা ভাব করতো যেনো আমার গায়েই হাত দেয়নি আর আমি বুঝি মিথ্যা বলছি ।আর মাঝে মাঝেতো প্রকাশ্যেই বলতো বাসে উঠলে এমন একটু আকটু লাগবেই, এত লাগলে বাসে উঠি কেনো। অবাক লাগতো, কিন্তু সত্যি এটাই যে আমার মত ছোট্ট একটা কিশোরীর জন্য এই মানুষগুলোর চোখে সমবেদনার দৃষ্টি খুব কমই দেখতে পেয়েছি। রোজই বাসায় ফিরে কাঁদতাম মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়ার জন্য, নিজেকে ঘেন্না হোতো প্রচন্ড। এমন মানসিক টানাপোড়নের মাঝে দিয়ে যাওয়া আমি তখন ছেলেদেরকে ঘৃণা করতে শুরু করলাম, বিশ্বাস করতে চাইতামনা। সেই দিনগুলাতে আমার মানসিক অবস্থা এমন ছিলো যে, নিজের বাবা এসে গায়ে হাত দিয়ে আদর করলেও আমার বিশ্রী লাগতো। যে মেয়ে সবসময় বাবাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতো, সেই মেয়ের কাছে বাবার স্পর্শটুকু পর্যন্ত অসহ্য লাগতো। তবে আস্তে আস্তে নিজেকে সেইফ করে চলতে পারাটা শিখে গিয়েছিলাম। কিন্তু কচি মনে যে বাজে একটা ইমপ্রেশন পরে গিয়েছিলো সেটা থেকে বের হয়ে আসতে আমার অনেকদিন লেগেছিলো। আর ক্ষত শুকালেই যে সবসময় দাগ চলে যায় তাতো নয়। তাই মনের গভীর কোণে পুরানো কিন্তু শুষ্ক একটা দাগ আমি এখন ও অনুভব করি।

আজকে হঠাৎ ই নিজের কিশোরিবেলার কথাগুলো মনে পড়ে গিয়ে একটু মন খারাপ লাগছিল। মনে হোল দুলাইন লিখলে হয়তো মনটা ভালো হয়ে যাবে, এই ভাবনা থেকেই লিখতে বসা। এখনকার কলেজপড়ুয়া মেয়েগুলো আশা করি আমার চেয়ে অনেক অনেকগুন স্মার্ট, কিভাবে আত্নরক্ষা করে চলতে হয় তারা তা ভালোভাবে জানে বলেই বিশ্বাস করতে ভীষণ ইচ্ছে হয়।


মন্তব্য

আশালতা এর ছবি

বাসের চিত্রটা এখনও পাল্টায়নি তেমন, তবে এখনকার মেয়েরা বোধ হয় আমাদের মত এত বোকা বোকা নয়। তারা ভীষণ স্মার্ট। দেখতে ভালো লাগে। তোমার লেখাগুলো ক্রমাগতই ভালতর আর গোছান হয়ে উঠছে। কিপিটাপ। চলুক

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

বন্দনা এর ছবি

তারা ভীষণ স্মার্ট। দেখতে ভালো লাগে।

এটাই আশার কথা আশাদি।

আর আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লিখার ব্যাপারে মতামত দেবার জন্য। তবে আপনার মত লিখতে হলে মনে হয় আর একবার জন্মানো লাগবে।

guest এর ছবি

আমি বাস এ অনেক মেয়ে কে সেভ করেছি .....তবে কেউ কৃতজ্ঞতা জানায়নি কোন দিন ......তবে যারা এমন করে তারা আসলেই মানুষিক রোগী বলে আমার মনে হয় আসলে নোঙরা শহরে থেকে থেকে আমারা নোঙরা হয়ে গেছি .....আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে খারাপ লাগলো ......আমরা কি আসলেই সভ্য জাতি ????

ধুসর গোধূলি এর ছবি

অনেক মেয়েকে 'সেভ' করছেন বলেই 'কৃতজ্ঞতা' কেনো দাবী করছেন? আপনি তো কাউকে ফেভার করেননি। নোংরামি করা সম্প্রদায়ের একজন অন্যরকম ছিলেন মাত্র। আপনারই তো উলটো উচিৎ ছিলো মাথা নিচু করে হাজার বার স্যরি বলা। 'কৃতজ্ঞতা' দাবী করাটা লজ্জার মনে হয় না আপনার কাছে?

পল্লব এর ছবি

চলুক

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

igol এর ছবি

চলুক

পাঠক এর ছবি

চলুক

কনীনিকা এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
It is impossible to be a mathematician without being a poet in soul.

ফাহিম হাসান এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্য করার সাহস নেই। মন খারাপ
একজন পুরুষ হিসেবে আমার মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। আমি এই 'দূর্ভোগ' পোহানো সমস্ত কিশোরী/নারীদের কাছে ক্ষমা চাই।
যদিও আমার ধারণা ব্যপারটা বিশেষ পাল্টায়নি। মেয়েরা এখনো অনেক অপমানিত হয় বাসে, রাস্তায়।
নির্যাতিত মেয়েটি একটু রুখে দাঁড়ালে পরিবেশটা মেয়েটার অনুকুলে চলে আসার কথা। এখন শিক্ষিতের হার বেড়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতাও বেড়েছে।
একটু চোখ কান খোলা রেখে যে কেউ এর প্রতিবাদ করতে পারেন। অন্যের বলে না এড়িয়ে গেলেই হয়।
তবে পরিবার থেকে মেয়েদেরকে যদি আর একটু সাহস দেয়া যায় তবে তার রুখে দাঁড়াবার সাহহ তৈরী হবে যে কোন পরিস্থিতিতে।
জয় হোক নারীর।
*******
আশালতাদির সাথে সহমত - লেখার মন্তব্যে । চলুক

----------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

বন্দনা এর ছবি

আপনাকে অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- রোমেলদা।

মৃন্ময়ী এর ছবি

আমি ব্লগ পড়ি প্রায় ২ বছর যাবত। কোনোদিন কোনো লেখায় কমেন্ট করার ইচ্ছা হয়নি। আজ আপনার লেখাটা পড়ে মনে হল নিজের জীবনের কথা পড়ছি। ধন্যবাদ এত সুন্দর করে লিখার জন্য।

বন্দনা এর ছবি

মৃন্ময়ী, আপনি ও জানেন পুরা সিনিরিওটা হয়তো ঠিক লিখতে পারিনি, এত ভেঙ্গে লিখা যায় ও না।
ভালো থাকুন।

উচ্ছলা এর ছবি

'খারাপ সময়' সবার জীবনেই আসে। ব্যাপার না হাসি

এখন কি মনটা একটু ভালো? গান শোনেন, পারলে হালকা নাচানাচি করে নিন হাসি

বন্দনা এর ছবি

এইসময় পার করে আসছি ১০, ১২ বছর হয় উচ্ছলা। এখনকার মন খারাপ তখনকার কাছে কিচ্ছু নয়যে, তখন এক একবার মনে হোত মরে যাই। গানটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। হাসি

ফারহানা এর ছবি

এখনো বাসের চিত্রটা খুব একটা পাল্টায়নি বললেই চলে।কিন্তু বাস কিছু সিটিং হওয়ায় যা সুবিধা।কিন্তু ফার্মগেটের জায়গাটা আগের মতই ভয়ংকর।
অনেক কথা মনে পড়ে গেল আপু।দিন পালটে যায় কিন্তু কিছু মানুষের মানসিকতা কখনোই পালটায় না।

বন্দনা এর ছবি

আসলেই ফারহানা কিছু মানুষ বোধহয় কখনই পালটায় না । আমার মত আর ও কিশোরীর মন ভাঙ্গার জন্য এরা আজ ও আশে পাশেই ঘুরে বেড়ায়।

অঅসাধারন এর ছবি

বন্দনা, খুব ভালো লিখেছেন। কেউই এগুলো লিখতে চায় না সমাজের ভয়ে। সহপাঠী বন্ধু অথবা কলিগদের কাছে এরকম অনেক ঘটনা শুনেছি, আর নিষ্ফল ক্রোধে হাত কামড়িয়েছি। কখনো সুযোগ পেলে অন্ততঃ কোন একজনকে একহাত দেখে নেবার বাসনা আছে, দেখা যাক কি হয়।

আপনার জন্য সান্ত্বনাবাক্য প্রযোজ্য নয়, আপনি খুব শক্ত মনের মানুষ। কিন্তু তাও একটা উদাহরণ দেই। আমার ঢাকার বাসে চলাচলের অভিজ্ঞতা প্রচুর, গায়ে হাত দেবার অভিযোগ প্রকাশ্যে খুব কম শুনেছি (সবাই মান সম্মানের ভয়ে চেপে যেতো, কোন মহিলা বাসে উঠবে আর কেউ সুযোগ নেবে না, এ অসম্ভব)। কিন্তু যতগুলো অভিযোগ উঠেছে একটি বাদে সবগুলোতেই বাসযাত্রীরা অভিযোগকারিণীর পক্ষ নিয়ে কথা বলেছিলেন। একজনকে তো সবাই মারতে উঠেছিলো, সে তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে পালিয়ে গিয়েছে।

এখানে অবশ্য আরেকটি কথা এসে যায়, অনেকে একমত নাও হতে পারেন। যারা অন্যায়ের বিপক্ষে উঁচুগলায় কথা বলেন (বাসে), তারা নিজেরা সুযোগ পেলে একই কাজে রত হবেন না, এটা শতভাগ ঠিক নয়।

আপনি ভালো থাকবেন।

পাঠক এর ছবি

যারা অন্যায়ের বিপক্ষে উঁচুগলায় কথা বলেন (বাসে), তারা নিজেরা সুযোগ পেলে একই কাজে রত হবেন না, এটা শতভাগ ঠিক নয়।

-হেহেহেহেহে্হেহে। এমনে সন্দেহ কইরা যাইতে থাকলে তো আপনাদেরই মুশ্কিল। কোন এক জায়্গায় সন্দ করা থামাইবেন না?

-মেফিস্টো

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে অঅসাধারন। আমার সেই সময়ে আমি ও এগুলা কারো সাথে শেয়ার করতে চাইতামনা। কিন্তু এখন অবলীলায় বলতে পারি।তবে এখনকার মেয়েগুলা আগের চেয়ে অনেক অনেক স্মার্ট ভাবতেই ভালো লাগে।ওরা এসব সঙ্কোচ কে অবলীলায় পায়ে ঠেলে অনেক দূর যাবে এই প্রত্যাশাই করি।

তাসকিনুর এর ছবি

ছাত্র থাকাকালীন সময়ে ক্যাম্পাসের বাহিরে খুব একটা বের হতাম না । তাই বাসেও উঠতে হতো না । প্রতিদিন বাসে উঠা শুরু করেছি পাশ করার পরে চাকরিতে যোগদানের পরে । তখন ফার্মগেটেই থাকতাম । একদম প্রথম দিক থেকেই এই বিষয়টা দেখছি । প্রথম প্রথম মনে হতো মেয়েগুলো কিছু বলে না কেন ? একটা থাপ্পড় লাগাতে পারেনা ? তারপরে উপলব্ধি করেছি পশুদের মাঝে একলা একটা মেয়ে আসলে কতটা অসহায় ।

কি লিখবো আর বুঝতে পারছি না । মাঝে মাঝে মনে হয় নষ্ট হয়ে যাওয়া পশুদের এই সমাজটাকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেই ।

বন্দনা এর ছবি

বাসে ছাত্ররা কিন্তু নরমালি খারাপ ব্যাবহার করেনা, ওদের কাছ থেকে বরং সহযোগীতা পেয়েছি মাঝেমাঝে।
তবে পারলে কি আর মেয়েরা চুপ করে থাকে ভাই।

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

মন খারাপ

কল্যাণF এর ছবি

পড়ে মন খারাপ
লেখায় চলুক

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ কল্যান আপনাকে।

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

বন্দনা এর ছবি

হাসি

নীরব পাঠক এর ছবি

চলুক
রেগে টং এখন ও আছে কিছু অসভ্য,খাটাশ! অবশ্য আপুরা এখন এক গাল শুনায়ে দেয়। দেঁতো হাসি
ইভটিজিং, সেক্সুয়াল এসল্ট হ্যারাসমেন্ট সবগুলির শাস্তি তৎক্ষনাত হলে উচিত হত। খারাপ চোখে চাইলে সাত্থে সাথে চোখ শেষ...ঢিচ্কাও...গায়ে হাত দিলে হাত শেষ ...ঘ্যাচাং শয়তানী হাসি

বন্দনা এর ছবি

ইস আপনার কথাগুলো সত্যি হোত যদি। হাসি

পথের ক্লান্তি এর ছবি

পরিস্থিতি মনে হয় সামান্য পাল্টেছে। কেউ হাতে-নাতে ধরা পড়লে তো মাইর একটাও মাটিতে পরার কথা না।

বন্দনা এর ছবি

পাল্টালেই ভালো, আর কত কাল মেয়েরা এগুলা সহ্য করে যাবে।

পুতুল এর ছবি

খুব জটিল একটা সমস্যা।
বাংলাদেশের মেয়েরা নিজের ঘরেই নির্যাতনের শিকার।
বাসে মেয়ের জন্য রক্ষিত আসন আসলে একটা ফাদ।
সরকারের উচিৎ কোন মেয়েকে রেখে যে কোন বাস চলে গেলে তাঁর জরিমানা করা।
ট্রান্সপোর্টের বিষয়টা মেয়েদের জন্য একটা নরক বিশেষ।
মেয়েদের জন্য বিষয়টা পরিবারের কোন পুরুষ (ভাই) সদস্যের সামনে ঘটলে আরো বিপদ। আমার মনে হয় সে সব ক্ষেত্রে মেয়েরা একদম প্রতিবাদহীন। লজ্জায় সে কথা বলতেই পারে না।
ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া ছোটবোনকে নিয়ে ঢাকায় আসার বাসে (এর আগে বাস জার্নির অভিজ্ঞতা তার খুব কমই ছিল) অনেক কষ্টে উঠলাম, বোনটাকে বসানোর একটা জায়গাও পেলাম। দু'তিনটে ষ্টেশন পার না হতেই ও বাস থেকে নেমে যাবে। পাগালামী আর কাকে বলে! ভাবলাম হয়তো বাথরুম পেয়েছে, সে ব্যাবস্থাও পথে-ঘাটে মেয়েদের জন্য আমাদের দেশে নাই বললেই চলে। কিন্তু বাস থেকে নেমে বাথরুমে গেল না ও। স্কুটারে করে ঢাকায় গিয়েছিলাম। পরেরদিন চাচীকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন; এই সব মেয়েলী ব্যাপার তুই বুঝবি না। সত্যিই আমার বোন আমাকে সব বলতে পারে, কোন ছেলে চোখটিপ দিলেও অবলিলায় তা বলে দেয়। কিন্তু সে দিনের কথাটি বলেনি কেন?

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

বন্দনা এর ছবি

ভাইয়া আমার মা ও আমাকে এভাবে বড় করতে চাইতো। শারীরিক এই ব্যাপারটা লুকিয়ে রাখার মত কি সেটা আমি ও বুঝতে চাইতামনা। রোজার সময় রোজা না রাখলে ও সবার সামনে মা খেতে দিতে চাইতেন না, আমি উনার কথা মানতামনা। বাবা ভাইদের সামনেই খেতাম অনেক সময়। আমরা পরিবার থেকে এই জিনিসগুলোর ব্যাপারে সঠিক ভাবে শিক্ষা পাইনা, তাই নিজেরা কনফিউজড থাকি কিভাবে এই জিনিসগুলা হেন্ডেল করবো। লুকিয়া রাখা কোন সলুউশন না।

তিথীডোর এর ছবি

পাবলিক বাসে চলাফেরার অভিজ্ঞতা নেহায়েতই কম। দু- একবার যা উঠেছি, সেই অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়। ইয়ে, মানে...

এখন আর মেয়েরা অমন চুপ করে হজম করে না বোধহয়...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

বন্দনা এর ছবি

এখন আর মেয়েরা অমন চুপ করে হজম করে না বোধহয়...

সেটাই।
আপনি অনেক ভাগ্যবানরে ভাই, পাব্লিক বাসে খুব বেশী উঠতে হয়নি।আমাকে টানা ২ বছর এই নরক যন্ত্রনার মাঝে দিয়ে যাওয়া লাগছে।

সুমাদ্রী এর ছবি

খারাপ লাগে, মেয়েদের যে কী বিব্রতকর এবং কষ্টের পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তা বুঝি, কিন্তু বাসে বিকৃত যৌনরুচির, বুড়ো-জোয়ান সে যেই হোকনা কেন, লোকগুলোর হাতে স্কুল পড়ুয়া ছেলেরাও যে কতভাবে নির্যাতিত হয় তা মনে হয় ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। বলতে দ্বিধা নেই, আমিও ভুক্তভোগীদের একজন। বাবার বয়সী, দাদুর বয়সী লোকগুলিই দেখেছি সবচেয়ে বেশী বিকৃতমনা।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

বন্দনা এর ছবি

বিকৃত যৌনরুচির, বুড়ো-জোয়ান সে যেই হোকনা কেন, লোকগুলোর হাতে স্কুল পড়ুয়া ছেলেরাও যে কতভাবে নির্যাতিত হয় তা মনে হয় ভুক্তভোগী মাত্রই জানে

এই ব্যাপারটা জানা ছিলনা।

বাবার বয়সী, দাদুর বয়সী লোকগুলিই দেখেছি সবচেয়ে বেশী বিকৃতমনা।

একদম ঠিক বলেছেন আমার অভিজ্ঞতা ও তাই বলে।

অফটপিকঃ আপনার নামটা অনেক সুন্দর।

pial এর ছবি

চলুক "দিন পালটে যায় কিন্তু কিছু মানুষের মানসিকতা কখনোই পালটায় না।"
আলাদিনের চেরাগ থাকলে এই পশুগুলার মানসিকতা ঠিক করাতে বলতাম মন খারাপ

বন্দনা এর ছবি

এক্কেবারে ঠিক বলেছ ভাইয়া।

পাঠক এর ছবি

@বন্দনা লেখাটা পড়ে কতদিন আগের সেই ফেলে আসা দিনগুলির কথা মনে পরে গেলো। এসব বোধহয় আর কখনই বদলাবে না।

বন্দনা এর ছবি

সবার জীবনেই কম বেশী এই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে বোধহয়। মন খারাপ

দেবানন্দ ভূমিপুত্র এর ছবি

একেবারে চোখে দেখা চিত্র এটা। পড়তে পড়তে আপনাকে দেখতে পাচ্ছিলাম যেন। বুড়োদের নিয়ে যেটা বলেছেন, আমি একশোভাগ একমত। এটা নিজের চোখে দেখা এবং অনেক মেয়ের কাছ থেকে শোনা। শিক্ষিত আর ভদ্র হতে আমাদের আরও অনেক সময় লাগবে। তবে, এটাও ঠিক; মেয়েরা এখন আর মুখ বুজে এতোটা সহ্য করে না। খুব সাবলীল উপস্থাপনা।

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ দেবানন্দদা।

sajib এর ছবি

বুকে সাহস নিয়া প্রতিবাদ কর,আমাদের মত শতশত ভাই তুমার পাশে এসে দারাবে

বন্দনা এর ছবি

আপনাদের সহযোগীতা থাকলে এই ধরনের অনাকাংখিত পরিস্তিতির সংখ্যা কমে আসবে বলেই আমার বিশ্বাস।

সূর্যাস্ত এর ছবি

আপু, আপনার লিখা টা পড়ে মনে পড়ে গেলো আমার নিজের ছোট্ট জীবনে ঘটে যাওয়া খণ্ড কিছু ঘটনা । প্রতিবাদ আমিও করেছি, কিন্তু কারও সাড়া পাইনি কখনও । আর যখন দেখেছি নিজের রক্তও বেইমানি করেছে তখন প্রতিবাদ করার কণ্ঠ টাও আটকে গেল। যে মানুষ গুলোকে পরম শ্রদ্ধা ভরে বাবার জায়গায় স্থান দিলাম, সেই মানুষ গুলোও হায়েনা হয়ে গেলো !

বন্দনা এর ছবি

সূর্যাস্ত, এই ঘটনাগুলো খুব কমন আপু, আম্বারা সবাই কম বেশী এই ধরনের ব্যাপারগুলো ফেইস করেছি, তাই আপনার এমন মনে হচ্ছে।
অনেক অনেক ভালো থাকুন।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

প্রথম প্যারাটা একদম আমার সাথে মিলে গেছে। পরে হলিক্রসে চান্স পাওয়াতে রক্ষা। কলেজে তখন বাসে যাতায়াত করতে হত না। রিক্সাতেই যাতায়াত করতাম। বাসে এ ধরনের সমস্যায় পড়েছি পরে। এই নিয়ে নিজেও কিছু লিখেছিলাম। এখন আর এসব নিয়ে কথা বলতে ভাল লাগে না। লেবু এত বেশি তিত হয়ে গেছে যে, কী বলব! মন খারাপ

বন্দনা এর ছবি

আমার আপনার মত রাজকপাল ছিলোনারে ভাই, বাসই ছিলো একমাত্র ভরসা। বাসে করে কলেজে আসতেই এক ঘন্টা লেগে যেতো। হুম অনেকের ই এসব নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগেনা। তাদেরকে আমি দোষ ও দেয়না, এগুলা বলতে খুব আনন্দ লাগার ও কথা না। তবে লেবু বেশি তেতো হলেই বা কি সত্যটা তো আর মিথ্যা হয়ে যায়না ভাই।

Saima এর ছবি

খুব ভাল লাগল। প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার শিকার হতে হয়। মন খারাপ

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ সায়মা।

guest_writer এর ছবি

সব মেয়ের জীবনেই এই অভিজ্ঞতা আছে ।মনে পরলে খুব খারাপ লাগে ।মেয়েরা কতটা যে বিরূপ পরিবেশে বড় হয় ।একবার এক ছেলে বন্ধু বলেছিলো যে স্কুলে মেয়েরা নাকি পড়াশোনায় ভালো করে কারন তারা বাসায় থাকে ,ছেলেরা প্রতিদিন খেলাতে ব্যস্ত থাকে তাই পড়ার সময় কম পায় তাই তারা আজকাল মেয়েদের চেয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে ।আমি বলেছিলাম তোমরা তো যানোনা যে স্কুল/কলেজে যাওয়া-আসার পথে সব মেয়েকে এই সময়টায় কতটা মানসিক কষ্টে থাকতে হয় বয়স্ক পুরুষদের হাত দুটোর জন্যে ।আগে মনে হত আল্লাহ কানো যে ছেলেদের হাত ছাড়া বানালোনা ।

nawarid nur saba

বন্দনা এর ছবি

সেটাই সাবা, সব মেয়ের ই এই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে বোধহয়, কেউ বলে কেউ বলতে চায়না এই যা পার্থক্য।

দুর্দান্ত এর ছবি

সমবেদনা।

সামাধান কোথায়? মেয়েদের আলাদা বাস করে দেয়াই কি যথেষ্ট পরিবর্তন?
আরেকটি লেখায় ডিজুস প্রজম্নের মাধ্যমে মুদ্রার অন্যপিঠ দেখতে পেলাম। ফাররমগেটের বাসযাত্রী সবাই যদি ডিজুস প্রজন্মের/সংস্কৃতির হত, তাহলে কি আপনার অভিগ্গতা ভিন্ন কিছু হওয়া সম্ভব ছিল?

বন্দনা এর ছবি

সমাধান তো আপনাদের ছেলেদের কাছে। আমরা মেয়েরা সচেতন হতে পারি, কিন্তু যতদিন না ছেলেরা মেয়েদের প্রতি তাদের মনোভাব পরিবর্তন না করবে ততোদিন কিছু হবে বলে মনে হয়না। আর ডিজুস প্রজন্ম হলে কি হোত এখনকার মেয়েরা হয়তো ভালো বলতে পারবে।

দুর্দান্ত এর ছবি

আমরা মেয়েরা সচেতন হতে পারি, কিন্তু যতদিন না ছেলেরা মেয়েদের প্রতি তাদের মনোভাব পরিবর্তন না করবে ততোদিন কিছু হবে বলে মনে হয়না।

সহমত।

সাই দ এর ছবি

অঃটঃ @ বন্দনা- আপু কি মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালইয়ের??

বন্দনা এর ছবি

না ভাইয়া, আমি কামরুন্নসা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েছি হাসি

সুজন সুপান্থ এর ছবি

একটা মন কেমন করা বাতাসের হলকা এসে ধাক্কা দিয়ে গেল মনে।
লেখাটা একটানেই পড়ে ফেলা গেল।
দারুণ
ভালো থাকবেন।
শুভকামনা নিরন্তর।
......................................................................
স্বপ্নের ফেরিঅলা

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে সুপান্থ। আপনি ও অনেক অনেক ভালো থাকুন।

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

মেয়ে হয়ে জন্ম গ্রহণের দুঃখে সব মেয়েই বোধহয় কখনো না কখনো কেঁদেছে!

বন্দনা এর ছবি

মেয়ে হয়ে জন্ম গ্রহণের দুঃখে সব মেয়েই বোধহয় কখনো না কখনো কেঁদেছে!

এক্কেবারে ঠিক বলেছেন সুমিমা আপু।

রিশাদ_ময়ূখ এর ছবি

হুম,এখনো মনে হয় বদলায়নি

বন্দনা এর ছবি

হুম,এখনো মনে হয় বদলায়নি

চিন্তিত

অরফিয়াস এর ছবি

এখনো মানুষ রাস্তায় মেয়েরা বের হলে এমন ভাবে তাকায়, মনে হয় যেনো চোখ দিয়েই হাতের কাজটা করতে চাইছে, আর বয়স্ক মানুষদের ব্যাপারে একমত, ভিড়ের সুযোগে এরাই সবথেকে নোংরা কাজগুলো করে, এবার দেশে এসে দেখলাম আগের থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, একলা পেলে তো কথাই নেই, সাথে কেও থাকলেও কিছু যায় আসেনা এদের, মানুষের চামড়ায় মোড়া এক একটা শূকর ..

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

বন্দনা এর ছবি

এখনো মানুষ রাস্তায় মেয়েরা বের হলে এমন ভাবে তাকায়, মনে হয় যেনো চোখ দিয়েই হাতের কাজটা করতে চাইছে, আর বয়স্ক মানুষদের ব্যাপারে একমত, ভিড়ের সুযোগে এরাই সবথেকে নোংরা কাজগুলো করে,

ঠিক বলেছেন অরফিয়াস।

জ.ই মানিক এর ছবি

সৃষ্টির সেরা জীব বলে দাবিদারদের সিংহ ভাগই কলুষতা, নোংরামী আর দুবৃত্তপনায়ও সৃষ্টি সেরা। সুযোগ পাওয়া মাত্রই খোলস মেলে স্বরুপে।

মানুষের মাঝেই পশুদের বসবাস।

বন্দনা এর ছবি

কি বলবো আর ভাইয়া, এরাই তো কারো ভাই বা বাবা। এদের আচরনের পরিবর্তন কামনা করি শুধু।

সপ্তক এর ছবি

সন্মান করা, এটা কিন্তু শিক্ষার বিষয়, ছটবেলা থেকেই আমাদের দেশে ছেলেরা দেখে অভ্যস্ত মেয়েদের বেশী সন্মান করার দরকার নেই। সন্মান শিসু,যুবক, বৃদ্ধ সবার জন্যই প্রযোজ্য , শুধু যেন নারীর জন্য নয় !! । পরস্পরের প্রতি মানব মাত্রের ই যে সন্মান প্রদর্শন করা যে অবশ্য কর্তব্য তা পারিবারিক ভাবে শিক্ষা প্রদান জরুরী। স্কুলে এ ব্যাপারে বিশেষ পাঠ্যসূচী থাকা উচিৎ। সবশেষে প্রয়োজন কঠিন আইন। নারীর সন্মান রক্ষা শুধুমাত্র নারীর নিজের জন্যই নয় গোটা সমাজের মঙ্গলের জন্যই প্রয়োজন। পৃথিবীর সব দেশেই যেমন নারীর প্রতি অসন্মানের জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে তা শুধুমাত্র নারীকে রক্ষার জন্য তা নয়, সমাজের টিকে থাকা এবং সভ্যতার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরী।

বন্দনা এর ছবি

পৃথিবীর সব দেশেই যেমন নারীর প্রতি অসন্মানের জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে তা শুধুমাত্র নারীকে রক্ষার জন্য তা নয়, সমাজের টিকে থাকা এবং সভ্যতার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরী।

একমত আপনার সাথে।

rater tara এর ছবি

dats d real picz of our society,it'l bunchanged if we dnt change ourslvs

পাঠক এর ছবি

ভাবছি নিজকে বিচার করছি ............তবে একটি কথা মনে হল "কাল বাদে মহাকাল তুমি বিচার করার কে?" কোনদিন এমন ভুল হলে ক্ষমা কর বোনেরা ..................বেশি কথা বলার সাহস নেই এখানে বেশি কিছু বলে লাভ নেই তাই নিজকেই বললাম "অন্তত মানুষ হও"

বন্দনা এর ছবি

আপনার মত সবাই এভাবে ভাবলেই কিন্তু অনেক খানি হয়ে যায় কিন্তু পাঠক ভাই।

আহাদিল এর ছবি

হলিক্রস কলেজ দেখেই লেখাটায় ঢুকেছিলাম! সাথে সাথেই দশ বছর আগের আমার কলেজে পড়ার স্মৃতি হুড়মুড় করে এসে পড়ল! কলেজের পাশেই হোস্টেলে থাকতাম আর প্রাণপণে ওভারব্রীজ টা এভয়েড করার চেষ্টা করতাম! ভাইয়া বা মামা একা চলতে দিতে না চাইলেও বা বাসায় যাওয়ার জন্যে সপ্তাহান্তে গাড়ী পাঠাতে চাইলেও নিজে নিজে চলার আর কাউকে আমার জন্যে বিব্রত না করার চিন্তায় একা একা যাতায়াতের চেষ্টা করতাম! কদর্যতা বোঝার বয়েসও বোধ হয় হয় নি তখন, অথচ এক লহমায় কদর্যতায় প্রবেশ করে যাওয়া হত! দশ বছরে অবস্থা কিছু পালটায় নি মনে হয়, তবে আমাদের মেয়েরা নিশ্চয়ই এখন অনেক বেশী সচেতন আর স্মার্ট!

বন্দনা এর ছবি

কদর্যতা বোঝার বয়েসও বোধ হয় হয় নি তখন, অথচ এক লহমায় কদর্যতায় প্রবেশ করে যাওয়া হত! দশ বছরে অবস্থা কিছু পালটায় নি মনে হয়, তবে আমাদের মেয়েরা নিশ্চয়ই এখন অনেক বেশী সচেতন আর স্মার্ট!

সহমত আহাদিল। আপনি ও একি কলেজে ছিলেন, কোন ব্যাচ আপনি।

সুপ্তি এর ছবি

চোখের পানি আটকাতে পারলাম না। পরিস্থিতি এখন ও অনেকটাই আগের মতই।

বন্দনা এর ছবি

পরিস্তিতি আগের মত থাকলে ও আমরা মেয়েরা যেনো আমার মত না হই সুপ্তি।

guest_writer এর ছবি

আপু, যেখানেই একটু ভীর সেখানেই পশুগুলো সুযোগ নিতে চেষ্টা করে।
লেখায় চলুক

বন্দনা এর ছবি

হেরে আপু এটা তো আর নতুন কিছু না।
নামটে লিখেন নি কেনো কার সাথে কথা বলছি জানলে ভালো লাগে।

তওফা এর ছবি

১০ বছর আগে ফার্মগেট যেমন ছিল এখন ও তেমন ই। মন খারাপ
এর ভিতর ই এগিয়ে যেতে হবে। হাসি

বন্দনা এর ছবি

এর ভিতর ই এগিয়ে যেতে হবে

সহমত তওফা।

জয়ন্তী এর ছবি

হলিক্রস এ পড়ার সময় বাস এ আসাযাওয়া করতে হত। আমি আবার একটু রগচটা টাইপের মেয়ে। বাস এ বেশ কয়েকজন মধ্য বয়স্ক কে পিটিয়েছি। আর এক বার গাওছিয়া মার্কেট এ চড় দিয়ে এক লোকের চশমা ভেঙ্গে ফেলছিলাম। দেঁতো হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি
নীরব পাঠক এর ছবি

গুরু গুরু

বন্দনা এর ছবি

জয়ন্তী আপনি গ্রেট গুরু গুরু

নজমুল আলবাব এর ছবি

লজ্জা

বন্দনা এর ছবি

ভাইয়া যাদের লজ্জা হবার কথা তারাতো লজ্জা পায়না মন খারাপ

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখাটা পড়ে খুব খুব খারাপ লাগল। আমি মিরপুর-মতিঝিল রুটে বহুদিন বাসে যাতায়াত করেছি। একবার এক সাহসী মেয়ে এমন ঘটনার সাথে সাথে প্রতিবাদ করে। বাস ভর্তি নটরডেমের পোলাপান। সবাই মিলে এমন ছ্যাঁচা দিলাম যে খবর হয়ে গেল।

বন্দনা এর ছবি

ফাহিম ভাইয়া, বাসে ছাত্ররা থাকলে অবশ্য আলাদা কথা, ওদের কাছ থেকে সাহায্য পাইনি এটা বলবোনা। তবে আমার বেশিরভাগ অভিজ্ঞতাই ভালো না ভাই।

দিহান এর ছবি

কী দারুণ সব লেখা আসছে সচলে। আশালতা লিখলেন ভ্রুণহত্যা নিয়ে, রাজকন্যা লিখলেন ম্যারিটাল রেপ নিয়ে, বন্দনা লিখলেন সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট নিয়ে। আমি খুব গর্ব নিয়ে পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি!

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

হাসি

বন্দনা এর ছবি

দিহান আপু আপনার গর্ব করাই সার, পরিবর্তন কবে আসবে কে জানে।

আফরিনা হোসেন রিমু এর ছবি

আপু, আপনি হলিক্রসের?
কোন ব্যাচ, জানতে ইচ্ছা হচ্ছে।

বন্দনা এর ছবি

আপু আমি ২০০১ এ বের হয়েছি। আপনি কোন ব্যাচ রিমু?

অতিথি লেখক এর ছবি

অল্প কয়েকদিন আগে শাশুড়ি আর বরের সাথে গেলাম কিছু আত্মীয়বাড়ি। সে এক মফস্বল শহর। ফেরার পথে ফাঁকা বাস দেখে আমি একাই একটা সিটে বসে পড়েছি, বাস ছাড়ার সময় এক লোক ধপাস করে আমার পায়েরই উপর বসে পড়ল! আমি দে বেমক্কা চিৎকার, মেজাজ খারাপ হয় না কার? ইচ্ছামতো বকে গেলাম শাশুড়ির সিটে, ভেবেছিলাম তিনি আমাকে বকেনই নাকি উল্টে দেখলাম তিনিও ওই লোকটাকে বকলেন। আহ্ শান্তি... কিন্তু আমি অবাক, বাসের একটা পুরুষ যাত্রীও তাকে কিছু বললেন না, উল্টো আমাকেই কত কথা শোনালেন কতজন। এ শুধু কিশোরী বেদনা নয়, নারী হবার আজন্ম কালের বেদনা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।