কার্ড চালাচালি বাদ দিয়ে কাজের কথায় আসুন

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: মঙ্গল, ০১/১১/২০১১ - ৫:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খবরে প্রকাশ সরকারি ও বিরোধী দল নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকলেও দুই নেত্রী গতকাল ঈদকার্ডের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনময় করেছেন। অন্যদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলেছেন সরকার সফল। তার মতে এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের তিনটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে-

ক. নির্বাচিত সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।
খ. সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়াই জনগণ নির্ভয়ে ও অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে।
গ. ইভিএম (ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার করে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

কার্ডের কথায় পরে আসছি। আগে সৈয়দ আশরাফের দাবী নিয়ে কথা বলি। সরকারের পক্ষ থেকে সৈয়দ আশরাফ যে দাবী করেছেন তা অসত্য বলে অগ্রাহ্য করা যাবে না। বরঞ্চ নির্বাচনের আগে মিডিয়াগুলো সরকারের নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে যতোটা সরব ছিল, নির্বাচনের পর তারাই সরকারের নির্বাচন সংক্রান্ত এইসব সাফল্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে বাধ্য হয়েছে।

নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার এবং সেই বাহানায় বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় মানুষের ভেতর এই ধারনা বদ্ধমূল হয় যে এটি মাগুরার মত প্রহসনের নির্বাচনই হতে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরেকটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ে পরিণত হয়নি। আর সেজন্যই ইসির অনুরোধে সেনাবাহিনী না পাঠিয়ে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে কী করেনি সেই আলোচনা ছাপিয়ে সরকারের নির্বাচনী সাফল্যের ধারনাই এখন মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু।

সরকার এটাই চেয়েছিল। সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো তুলে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে আগামী সাধারণ নির্বাচনগুলো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে করা ছাড়া উপায় নেই (যদিও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে আগামী দুটো নির্বাচন পুরোনো বা নতুন কোন তত্ত্বাবধায়ক কাঠামোর ভেতর হতে পারে)। তাই সরকার তার অধীনে সমস্ত নির্বাচন এমনভাবে সাজাচ্ছে যাতে মানুষের মনে এই ছাপ পড়ে যে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপনির্বাচন বলুন, আর সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বলুন সব নির্বাচনের লক্ষ্য ছিল ওই একটাই।

আপাতদৃষ্টিতে সরকার তার লক্ষ্যে সফল। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবস্থান কোথায়? নারায়নগঞ্জ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলটি যা করল তা করিমন-নছিমন পার্টির ক্ষেত্রেই শোভা পায়। দলের নেত্রী স্বয়ং অনেক চেষ্টা করেও এই নির্বাচনে দলটির পক্ষ থেকে একক কোন প্রার্থী বাছাই করতে পারেননি! শেষ পর্যন্ত যদিওবা তারা মনস্থির করতে পেরেছে তবে সেই সিদ্ধান্তও গিয়েছে জনগণের চাহিদার বিপরীতে। শামীম ওসমানের মত কুখ্যাত লোককে সমর্থন জানিয়ে আওয়ামী লীগ শুধু জনগণের আকাক্ষার বিপরীতেই যায়নি বরঞ্চ এতে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রকাশ পেয়েছে। ফলে দলটির প্রতি জনগণের আস্থা কমেছে বই বাড়েনি। এমনকী আওয়ামী লীগের ঘোর সমর্থকেরাও এই সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়েছেন, নেতা কর্মীরা মিডিয়ার মাধ্যমে দলের প্রতি সরাসরি উষ্মা প্রকাশ করতে দ্বিধা করেননি।

অন্যদিকে, শেষ রাতে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপিও জনগণের বিপরীত কাতারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ বিএনপির সমর্থক যারা তাদের প্রার্থীর জন্য রাতদিন খেটে মরেছিলেন দিন শেষে তারা নিজেকে প্রতারিত ভেবেছেন। তাদের এ খেদ আরো বেড়েছে যখন নির্বাচনের পর বিএনপি প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। নির্বাচনের মাঠ থেকে রাতের আঁধারে পলায়নে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি আসলে কতটুকু জনমুখী দল? গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আর নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হলে সেখান থেকে পিঠটান দেয়াটা মারাত্মক নেতিবাচক। এটি জনগণকে ভুল মেসেজ পাঠায়, তাদের সহানুভূতি সরকারের পক্ষে যায়। সরকারও দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে পারে, দেখলেনতো ভাই আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করলাম কিন্তু তারা খামোখাই আসল না। আপামর দেশের মানুষ এটুকু বুঝলেও আমাদের নেতানেত্রী যারা বিরোধী দলে থাকেন তারা এটা কখনোই বুঝতে চান না।

এই বোঝা এবং বুঝেও না বোঝার ভান করে গোয়ারের মত পড়ে থাকাটাই আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রধান অন্তরায়। আমাদের রাজনীতিবিদেরা গায়ের জোরে সবকিছু জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে চান। আমরা পছন্দ করি বা না করি তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না, তারা তাদের মতোই চলেন। এখন পর্যন্ত জনগণ যা করছে তা হলো ভোটের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা দেখানো। কিন্তু দিনে দিনে রাজনীতি মানুষের কাছে অসহ্য হয়ে উঠছে; দিনবদলের প্রতিশ্রুতির কোন বাস্তবায়ন নেই, জিনিসপত্রের দাম হুহু করে বাড়ছে, মানুষের স্বাভাবিকভাবে বাঁচার কোন গ্যারান্টি থাকছে না, জীবনযাত্রা ক্রমশ কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে; মানুষ আক্ষরিক অর্থেই এখন দিশেহারা বোধ করছে। বিরোধী দলও কোন আশার বাণী শোনাতে পারছে না। তারা বলছে এই সরকারকে উৎখাত করে আমাদের ক্ষমতায় আনুন, আমরা এই করব সেই করব- সেই একই পুরোনো বুলি। আর তাই, অনেকের আশঙ্কা মানুষ না আবার ভোটের ক্ষমতার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে!

এই আশঙ্কার চিন্তাটুকু বাদ দিলে বলতে হয়,বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভান্ডার বিশাল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম একেবারে নিশ্চিত যে এই রাজনৈতিক প্রজন্ম দ্বারা কিছুই হবে না। তারা বড়জোর রাজনীতির নতুন ফ্যাশন হিসেবে ঈদ কার্ড বিনময় করবেন। কিন্তু কখনোই দেশের বিরাজমান জনসমস্যা নিরসনে মুখোমুখি সংলাপে বসবেন না, কেবল দূর থেকে কাদা ছোঁড়ছুড়ি করে যাবেন। তাই এদের বদলে প্রয়োজন নতুন রাজনৈতিক প্রজন্ম যারা জনগণের কাতার থেকে উঠে আসবেন। ওমুক নেতার মেয়ে, ওমুক নেত্রীর সুপুত্র পরিচয়ে নয় তারা জনগণের মাঝ থেকে জনগণের জন্য জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয়ে জনগণের হয়ে কথা বলবেন। সে কারণেই সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত শামীম ওসমানের বিপরীতে আইভীর মতো মানুষের উত্থান, সে কারণেই নারায়নগঞ্জ নির্বাচনে বড় দুই দলে প্রার্থীকে টপকিয়ে বাসদের (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল) দুজন প্রর্থীর কমিশনার পদে বিজয়ী হওয়া।

এগুলোই আগামীর বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। শত সহস্র সমস্যার মধ্যে আমরা যারা হতাশ, দিন দিন নুয়ে পড়ছি। তাদের জন্যে এই বিষয়টি আশা জাগানিয়া, একটি শক্তিশালী টনিক। দল বা মার্কা চেনার বদলে জনগণ মানুষ চিনতে শুরু করেছে। এটি একটি সতর্ক সংকেত। বড় দুই দল এই সংকেতে কান না দিলে সেই দিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন গণজাগরণে খড়কুটোর মতোই তারা তছনছ হয়ে যাবে। অতএব, দুনিয়া জুড়ে যে বসন্ত শুরু হয়েছে সে বসন্তের বাতাস আমাদের এখানে ঝড় হয়ে ওঠবার আগেই নেত্রীদ্বয় আপনারা ঈদকার্ড চালাচালি বাদ দিয়ে মুখোমুখি বসুন, কথা বলুন, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে অন্তত জাতীয় বিষয়গুলোতে ঐক্যমতে আসুন।

১/১১/২০১১
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।

তথ্যসূত্র:
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-10-30/news/197950
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-10-30/news/197952
http://www.amadershomoy.net/content/2011/11/01/news0574.php


মন্তব্য

তানজিম এর ছবি

আপনার রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী লেখার হাত ভালো। আশা করি নিয়মিত আপনার লেখা পাবো।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

মূর্তালা রামাত

স্বাধীন এর ছবি

অতএব, দুনিয়া জুড়ে যে বসন্ত শুরু হয়েছে সে বসন্তের বাতাস আমাদের এখানে ঝড় হয়ে ওঠবার আগেই নেত্রীদ্বয় আপনারা ঈদকার্ড চালাচালি বাদ দিয়ে মুখোমুখি বসুন, কথা বলুন, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে অন্তত জাতীয় বিষয়গুলোতে ঐক্যমতে আসুন।

এই অংশটিতে একটু দ্বিমত জানাতে চাই। এই দুই নেত্রীর প্রতি কোন আহবান দিয়ে লাভ নেই। তারা বুঝলে তো বহু আগেই বুঝতো। যার নয়ে হয় না, তার নাকি নব্বইয়েও হয় না। বরং তরুণদের প্রতি আহবান জানাই যেন তারা বসন্তটাকে ঝড়েই রূপান্তরিত করে।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

এ ব্যাপারে আমার একটা নিজস্ব মত আছে। সেটা আগামীতে বড় আকারে লেখার ইচ্ছা থাকলো।

মূর্তালা রামাত

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আইভীকে বিজয়ী করার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের জনগণ দুই বড় দলের প্রতি একটি সন্দেশ পাঠিয়েছে। দলনিরপেক্ষ নীতিনিষ্ঠ জনহিতৈষী কোন কোন প্রার্থীকে আগামী জাতিয় নির্বাচনে বিজয়ী করে বাংলাদেশের জনগণ ইতিহাস সৃষ্টি করে ফেলতেও পারে। আশা করছি নতুন প্রজন্মই এবিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

বিশ্লেষণধর্মী লেখাটি সততার দাবি রাখে। ধন্যবাদ, এমন একটি লেখার জন্য।

প্রৌঢ়ভাবনা

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

মূর্তালা রামাত

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

এরা কোনদিনই বুঝবেনা। নিজের যোগ্যতা দিয়ে যদি রাজনীতিতে আসতো, তাহলে হয়ত বুঝত জনগনের চাওয়া। এরাতো রাজনীতিতে এসেছে আর এক জনের পোস্টার হাতে।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

এতোটা হতাশ হতে মন চায় না....

মূর্তালা রামাত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আচ্ছা, বিএনপি'র তথা তৈমুর খন্দকারের সরে দাঁড়ানোর মূল এজেন্ডা কী ছিলো আসলে? সেটা কি সেনাবাহিনী না দেয়া নাকি 'এই সরকার, এই নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে কোনো নির্বাচন নয়'!

বিএনপি হলো একটা চরম ফাউল দল। কিছু অথর্ব আর প্রতিবন্ধী বসে আছে দলটির শীর্ষভাগে। যে দলের চেয়ারপারসন নিজেকে "আপোষহীন নেত্রী" আখ্যা দিয়ে নিজের সুবিধা বুঝে আপোষ করে ফেলেন, তার আর কী বাকি থাকে? সেদিন তো বেশ উচ্চগলায়, হাজারে হাজারে মানুষের সামনেই নির্লজ্জের মতো বলে দিলেন, নিজামী, মুজাহিদ, কামারুরা কোনো অপরাধ করেনি। নিজের সুবিধার কথা চিন্তা করে এই কথা বলার ধৃষ্টতা দেখানোর সাথে সাথেই তো আপোষহীন নেত্রী তার স্বরূপ দেখিয়ে দিলেন বাংলাদেশের মানুষকে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কথা ভাবেন না, ভাবেন নিজের কথা, নিজের ছেলেদের কথা, রাজনৈতিক সখাদের কথা! তারই ধারাবাহিকতা হলো নারায়নগঞ্জ নির্বাচনে তৈমুরকে বসিয়ে দেয়া।

আওয়ামী লীগ অতীতে ডুবেছে তথা কথিত কিছু নেতাদের কারণে। জয়নাল হাজারী, হাজি সেলিম এদেরকে ঘরে ডেকে হাজীর বিরিয়ানী খাইয়ে আওয়ামী লীগের বালের সুবিধাটাও হয় নাই। পাবলিকের জুতা খেয়েছে। শামীমের মতো দাগী একজন সন্ত্রাসীকে দলের ছত্রছায়ায় রেখে তালপাতার পাখার বাতাস দেয়াটাও বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে আওয়ামী লীগের জন্য। যদি নির্বাচনে গণ্ডগোল হবে, এই আশংকা থেকেই শামীমকে দলের সমর্থন দেয়া হয়ে থাকে তাহলে আওয়ামী লীগের সরকারে থাকার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। শামীমকেই তাহলে দেশের প্রধামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রীও শামীমকে 'সমঝে' চলে, সেখানে শামীমকে ছাড়া ঐ পদ আর কাকে মানায়!

অঅসাধারন এর ছবি

বুইড়া আঙ্গুল উপর দিকে।
গুলি ইমো

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ধন্যবাদ।

মূর্তালা রামাত

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আমার মনে হয় সরকার এখানে পুরোটাই একটা গেম খেলেছে। সরকারের বিপরীতে বিএনপিও গেম খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা দেরি করে ফেলেছে এই যা। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারার কোন শঙ্কা ছিল না। শামীম এবং আইভী দুজনেই তার। তাই শামীমকে দলীয় সমর্থন দিয়েউদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নির্বাচনকে একট রং মাখানো হল এই আর কী। মাঝখান থেকে শামীমেরও একটা ক্লিন ইমেজ তৈরি হল, যা আগামী নির্বাচনে কাজে লাগানো যাবে। ধন্যবাদ।

মূর্তালা রামাত

মরুদ্যান এর ছবি

এই নির্বাচনে সরকারের লক্ষ্য ছিল:
১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সফল নির্বাচনের উদাহরণ প্রতিষ্ঠা করা
২. সেনাবাহিনী ছাড়া সফল নির্বাচন চালানো

আওয়ামী লীগ যদি আইভীকে নির্বাচন করত তাতে কি হত? জনগণ খুশি হত যে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছে, কিন্তু বিএনপির সেক্ষেত্রে বলার সুযোগ থাকত যে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে সরকারি দলের পক্ষে। এখন তো বিএনপি সেটাও বলতে পারছেনা, কারণ সরকারি প্রার্থী হেরেছে। শামীমও কম না, উনি বলেছেন "আমি সরকারি দলের, আমার হাত পা বাঁধা..." এর মানে উনি বুঝালেন সরকার কারচুপির বিরুদ্ধে এতটাই কঠোর যে উনি ....হাহাহা চমৎকার!

আজ বিএনপি নির্বাচনে থাকলে ফলাফলটা একটু অন্যরকম হতে পারত। কারণ বিএনপির কিছু ভোট তো আইভী পেয়েছেনই তৈমুর সরে যাওয়াতে। বিএনপি ব্যাপক মাথামোটা কাজ করেছে এইবার... তবে সরকার হয়তো এটাও ভুলে গেছিল যে আমরাও এখন স্মার্ট। কন্সপিরেসি থিওরিতে আমরাও কম যাইনা। তাই আ.লীগের গেম আমরা ধরে ফেলেছি হাসি

শামীম ওসমানকে কোন একটা মোয়া খাওয়ানো হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নাই। আইভী তো এমনিতেই আ. লীগ, তাই যা ডুবার বিএনপি ই ডুবলো এইবার।

অচেনা আগুন্তুক এর ছবি

ভাল বলেছেন। আপনার সাথে সহমত পোষণ করি।
আজকে দেখলাম এটিএন নিউজ - এর টক শো তে তৈমুর সাহেব এসেছিলেন। আলোচনার বিষয়বস্তু নারায়নগঞ্জ নির্বাচনে বিএনপি'র কৌশল। নির্বাচনের মত টক শো তেও বেচারার লেজে গোবরে অবস্থা। তারপরও তার আস্ফালন দেখে হাসি পায় - নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর পরেও নাকি সুধু ঘরে বসে মেসেজ দিলেই নাকি তিনি পাশ করতেন। খুবই কাঁচা খেলোয়াড়। মুন্নি সাহা বেচারা কে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল।
আওয়ামী লিগ এর এই দফায় চাল টা ছকে ছকে মিলে গেলেও, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার অনেক ব্যাপার আছে। আওয়ামী লিগ কে নিয়ে যে সাধারন জনগন খুব খুশি তা তো নয়। বিশাল বিশাল প্রতিস্রুতি ছিল, তার বলতে গেলে কিছুই এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি শুয়োর গুলোর বিচার নিয়েও এত বেশী সময় নষ্ট করছে, পরে আবার গোটা জিনিষটা বুমেরাং না হয়ে যায়। আমরা ম্যাংগো লোকজন তাও স্বপ্ন দেখি।

অচেনা আগুন্তুক
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------"আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রানে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।