অটোগ্রাফে ফটোগ্রাফে

রোমেল চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন রোমেল চৌধুরী [অতিথি] (তারিখ: শনি, ২৩/০২/২০১৩ - ৩:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কদিন ধরেই খবরের কাগজে দেয়া বইয়ের বিজ্ঞাপনগুলো রোদেলার চোখের ঘুম কেড়ে নিচ্ছিল। গতবার মনের সাধ মিটিয়ে বই কেনা হয়নি ওর। বাপরে বাপ, কী ভিড় স্টলগুলোর সামনে! পছন্দের বইগুলো বেছে নেবার জন্য সামান্যটুকু ফুসরত নেই। কিন্তু রোদেলার ইচ্ছে করছিল মজার মজার সব বই কিনে বাবার পকেটটাকে একেবারে গড়ের মাঠ বানিয়ে ফেলতে। ওদিকে বাবার হাতে সময় যেন ঘুলঘুলির ছটফটে চড়ুইয়ের মত। এই আছে, এই নেই। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে হন্যে হয়ে টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছিলেন রোদেলাকে রেসের ঘোড়ার মত। যেন রেস শেষ হলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন। অথচ যেই না কোন বন্ধুর দেখা পেলেন, অমনি জুড়ে দিলেন রাজ্যের খোশগল্প, সময় তখন অফুরন্ত। বাবাটা যে কি! এমন বাবাকে নিয়ে যে কি করবে রোদেলা ভেবেই পায় না!

এই তো সেদিন টিভির অনুষ্ঠানে ঝলমলে পাঞ্জাবি পরা মোটা গোঁফের একজন স্মার্ট মানুষকে দেখিয়ে বাবা বলেছিলেন, “দ্যাখ, দ্যাখ, উনিই সেই লুৎফর রহমান রিটন, প্রখ্যাত ছড়াকার”। তারপর গলার স্বর খানিকটা নামিয়ে, কৃত্রিম কিছুটা গাম্ভীর্য এনে, আত্মতৃপ্তির সাথে উচ্চারণ করলেন, “আমার বন্ধু মানুষ”। রোদেলার বেশ রাগ হচ্ছিল তখন। রিটন কাকুর সব ছড়ার বই কবেই পড়ে শেষ! ওঁর লেখা দুটো লাইন তো রোদেলার মগজে স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেছে,

হাবুটাতো সাদাসিধা, গাবুটাতো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে, “উৎসাহ দিচ্ছি”।

এই পরিচিত মানুষটাকে আবার নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কি আছে? আর বাবার বন্ধু হয়েছে তো তাতে ওর কি লাভ? গতবারের বইমেলাতেও তো দূর থেকে রিটন কাকুকে রোদেলা দেখেছিল। হাসি হাসি মুখ করে টিভি ক্যামেরার সামনে নতুন নতুন বইয়ের পরিচিতি দিচ্ছিলেন। রোদেলার কি যে ইচ্ছে করছিল ওঁর অটোগ্রাফ নিতে! কিন্তু ও কি করে পারবে এমন ভিড় ঠেলে রিটন কাকুর সামনে গিয়ে দাঁড়াতে? ওর লজ্জা করে না বুঝি? কই, বাবা তো খুব পারতেন ওঁর একটা অটোগ্রাফ সংগ্রহ করে দিতে! বাবাটা যে কি বোকা, নিজের মেয়ের মনের কথাটিও বুঝে নেবার মত বুদ্ধি হলো না এখনও।

এই বাবাকে নিয়েই বইমেলায় যেতে হবে এবারও। তবে এবারে আর ভুল করছে না রোদেলা। নিজের পছন্দের বইগুলো ঝটপট কিনে ফেলতে হবে এবার। তাই খবরের কাগজ ঘেঁটে ঘেঁটে লিস্টি তৈরি করে রেখেছিল সে। বইয়ের নামের সাথে সাথে প্রকাশনীর নামটাও লিখে রাখাটা জরুরি। পছন্দের বইটা খুঁজে পেতে মিছেই আর ওদের এদিক ওদিক হেঁটে বেড়াতে হবে না। বাবার পকেট থেকে পয়সা খসাতে হলে ওঁর মেজাজটারও তো একটু যত্ন নেয়া দরকার।

সকালের নাস্তা সেরে বেরুতে বেরুতে নয়টা। না জানি রাস্তায় কতটা ট্রাফিক জ্যাম পড়বে! দশটা নাগাদ পৌঁছুনো যাবে তো! প্রজন্ম চত্বরে তারুণ্যের জাগরণে এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি ভিন্নতর মাত্রা পেয়েছে, বাবার মুখে শুনেছে ও। এখনো পুরোটা বুঝে ওঠবার মত বুদ্ধি হয়নি রোদেলার। তবু বুকের খুব ভেতরে, রক্তের ধারা বেয়ে ছুটে চলা লোহিত কণিকায় তার কিছুটা শিহরণ টের পেয়েছে সে। সে সব দুন্দুভির মাঝেই আজ যাচ্ছে সে, জীবন যেখানে জীবনের আহ্বানে ফাল্গুনের আগুন রঙে প্রস্ফুটিত শিমুলের মতো শতধা বিদীর্ণ হয়েছে।

শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দিতে গিয়ে রোদেলার চোখের কোণে ভোরের শিশিরের মতো অশ্রুকণা জমে। আড়চোখে বাবার দিকে চেয়ে দেখে সে। শ্রদ্ধাভরে ঋজু হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বাবা, এক বুক রক্তের প্রতিজ্ঞা, অন্তরাত্মা যেন মৃত্যুর গর্বে ভরপুর। একসময় নেমে আসে তারা। এগিয়ে যায় দোয়েল চত্বর হয়ে রমনার বটমূলের দিকে। ওখানেই প্রাণের মেলা। সেলফোন বেজে উঠে বাবার। “হ্যাঁ, পাণ্ডব। শহীদুল জহিরকে পাওয়া যাবে কোথায়? ওঁকে তেমন একটা পড়া হয়নি আমার। দু’ একটি গল্প যা পড়েছি তাতে ওঁর মাঝে জীবনানন্দীয় বিচ্ছিন্নতাবোধের একটা প্রতিভাস পাই। কাফকার গল্পসমগ্র কিনবো বলে মনস্থির করেছি। নতুন অনুবাদকের উপর চট করে তেমন একটা ভরসা পাই না। শুনেছি এই অনুবাদক নাকি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে কাফকা-বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন। ছয়-ছয়টি ইংরেজি অনুবাদ পাশাপাশি রেখে ভাষার গভীরে লুকিয়ে থাকা ব্যঞ্জনা, উপমা, রূপক আর প্রতীকগুলোর গোড়ায় পৌছুবার চেষ্টায় ত্রুটি রাখেন নি। হথর্ণের ‘দি স্কারলেট লেটার’-এর কথাই ধর। প্রতিটি বাক্যের ভেতর লুকিয়ে থাকা কী গভীর ব্যঞ্জনা! উপমা, রূপক আর প্রতীকের ছড়াছড়ি। অথচ অজিত কৃষ্ণ বসুর কী চমৎকার অনুবাদ! তেমন হবে কি? তুমি কি বল?”। আরিফ নামের এই কাকুটা, যিনি একবার কত্তবড় একটা চকলেটের প্যাকেট হাতে বাসায় এসেছিলেন, তাকে ষষ্ঠ পাণ্ডব নামে ডাকেন বাবা। আরিফ কাকুর সাথে আরো কি সব আলাপে মেতে উঠেন বাবা। রোদেলা অতশত বুঝে ওঠে না। শুধু এটুকুই অনুভব করে আরিফ কাকুর সাথে কথা বলবার সময় বাবা তাঁর বইয়ের শেলফে রাখা দুর্বোধ্য ক্লাসিকগুলোর মতই ভাব-গম্ভীর হয়ে উঠেন। আরে এত ভাবের কি আছে? মুহম্মদ জাফর ইকবালও তো কত্তবড় জ্ঞানীগুণী মানুষ! কিন্তু কত মজার করে ছোটদের জন্য বই লিখেন। রোদেলা চুপি চুপি হাতে রাখা লিস্টি খুলে চট করে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। ‘গাব্বু’, মাওলা ব্রাদার্স। ‘ব্লাকহোলের বাচ্চা’, সময়। ইশ কখন যে কেনা হবে!

বইমেলা চত্বরে ঢুকবার মুখেই ফুফু-ফুফাজী-রিদামণিদের সাথে দেখা। রিদামণি এসেছে শোলা দিয়ে বানানো একটা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে। সেখানে লেখা, “মোদের গরব মোদের আশা, আমরি বাংলাভাষা।” রোদেলার চট করে মনে পড়ে যায়, ও যখন ক্লাস থ্রিতে পড়ে, একদিন বই হাতে বাবার স্টাডিতে ঢুকে জিজ্ঞেস করেছিল, “বাবা, ‘আমরি’ অর্থ কি?” শেয়াল পণ্ডিতের মতো চশমার উপর দিয়ে চোখ দুটো বের করে বাবা বলেছিলেন, “আমরি অর্থ হলো, আহা মরি”। তারপর বেসুরো গলায় আবেগের জোয়ার তুলে গেয়ে উঠেছিলেন “মোদের গরব মোদের আশা, আমরি বাংলাভাষা।” ‘আহা মরি মরি’ বোঝাতে বুড়ো খোকার সে কী আয়োজন! ভাবতেই রোদেলা ফিক করে হেসে ফেলে। সবাই একসাথে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হলো। রিদামণিও দেখি বই কিনেছে। বুকের কাছে যত্নের সাথে জড়িয়ে ধরে আছে ছোটদের রবীন্দ্রনাথকে। আদর করে ফুফুকে রোদেলা ডাকে ছোটমা বলে। খুব ইচ্ছে করছিল ছোটমার কাছে অন্তত একটি বই কিনে দেবার বায়না ধরতে। কিন্তু ফুপাজী থাকায় লজ্জা করে রোদেলার। অগত্যা বাবাই সম্বল।

বটমূলের কাছাকাছিই পাওয়া গেল মাওলা ব্রাদার্সের স্টলটি। ‘গাব্বু’ কেনা হলো। অল্পক্ষণের মধ্যেই হাতে এলো ‘ব্লাকহোলের বাচ্চা’ও। কি আনন্দ! কি আনন্দ! রোদেলার মনে হচ্ছিল, বটমূলের কাছটাতেই বই খুলে বসে পড়ে। নতুন বইয়ের খাঁজে খাঁজে লেগে থাকা আনকোরা অনুসন্ধিৎচ্ছার গন্ধ, ফাগুনের হাওয়ায় গায়ে লেগে ভেসে আসা ফিকে রোদের গন্ধ, পায়ে পায়ে উড়ে আসা ধূলিকণার মা মা গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে বাবার কাছ ঘেঁষে পথ চলাকে বড়ই নির্ভরতার বলে মনে হচ্ছিল রোদেলার। অন্যরকম এক ভালোবাসায় মন ভরে যাচ্ছিল সারাক্ষণ। নিজের অজান্তেই বাবার হাতটিকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে রোদেলা।

“বাবা, বাবা, ঐ দ্যাখো ‘নীল ডাউনে ফাস্ট বয়’... কিনবো”, আহ্লাদে গদগদ হয়ে আবদার করে রোদেলা। “আচ্ছা চল”, বাবার নিমরাজি কণ্ঠ কেমন ভুতুড়ে শোনায়। শুভ্র প্রকাশের স্টলে গিয়ে ঘটে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা। আহসান হাবীবের একজোড়া বই হাতে পেয়ে রোদেলা তাজ্জব বনে যায়। ‘নীল ডাউনে ফাস্ট বয়’-এর সাথে ‘ফাস্ট সেকেন্ড থার্ড’। ততক্ষণে বাবা দাম মিটিয়ে দিয়েছেন। আরো কেনা হয় তাম্রলিপি থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ইস্টিশন’। মনের সাধ মিটিয়ে বই কিনতে পেরে রোদেলা তখন যেন মেঘ হয়ে আনন্দের হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে।

“আয় মা, এবার হোম মিনিষ্ট্রি ঠিক রাখার কাজে নেমে পড়ি,” বাঁকা হাসি হেসে মিজান পাবলিশার্স এর স্টল খুঁজতে খুঁজতে বাবা এগুতে থাকেন। সেখান থেকে কেনা হয় ‘আধুনিক রান্না-বান্নার’ বইটি। ফেরার পথে পাঠক সমাবেশের স্টল। একদম কাচে ঢাকা শো রুম। ভেতরে ঢুকেই কাফকার দেখা মিলে। এক হাজার টাকার নোট বের করতে বাবাকে এত অনায়াস হতে রোদেলা দেখেনি কখনো। শহীদুল জহিরের বাছাই উপন্যাস আর বাছাই গল্প হাতে তুলে নেন বাবা। নেড়ে চেড়ে উল্টে পাল্টে দেখেন। পাশ থেকে গর্বভরে একজন বিক্রেতা বলে উঠেন, “ওঁর রচনাসমগ্রও আমরাই বের করছি শীগ্রি”। “থাক, তবে ওটাই কিনবো”, হাত থেকে শহীদুল জহির নামিয়ে রাখেন বাবা। একটুখানি ভুলের জন্য খদ্দের ছুটে যাওয়াতে বিক্রেতার মুখ কি খানিকটা পানসে হয়ে যায়? মেমো কেটে বই হাতে ধরিয়ে দেবার সময় কষ্ট করে হাসিটিকে আবার ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। রোদেলার একটু বিব্রত লাগে। আর তক্ষুনি একদল তরুণ-তরুণী বাবাকে উদ্দেশ্য করে হাসিমুখে বলে উঠে, “স্লামালাইকুম স্যার।” সবার সাথে সাথে রোদেলারও হতচকিত হবার পালা। “ওরা সবাই আমার ছাত্র-ছাত্রী”, কিছুটা আনন্দ মিশ্রিত গর্ব বাবার চোখ-জুড়ে মিষ্টি সেভেন ও ক্লক ফুলের মত ফুটে উঠতে দেখে রোদেলা। স্টল থেকে বেরিয়ে এসে পরিচয় পর্ব সারা হয়। “স্যার, আপনার সাথে আমরা সবাই একটা ছবি তুলতে চাই”, একজন ছাত্রী অনুরোধ করে বসে। সবাই মিলে ছবি তোলা হয়। এবারে মধ্যমণি রোদেলার বোকা বাবা। রোদেলার গাল টিপে আদর করে সাগরের উর্মিমালার মতো তারুণ্যের ঢেউ তুলে ওরা বিদায় নেয়। এবার ফিরে আসার পালা।

দূর থেকেই হৃষ্ট পুষ্ট গোঁফের রিটন কাকুকে দেখতে পেয়ে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে রোদেলা। “বাবা, রিটন কাকু...অটোগ্রাফ”। “তাই তো! চল, প্রস্তুতি নিয়েই যাওয়া যাক। এই বইমেলায় ওঁর ‘অর্জুন’ বেরিয়েছে। অনন্যা থেকে। এই তো বাম দিকে, কাছেই।” ‘অর্জুন’ কেনা হয়। বাবা তাজ্জব হয়ে দেখেন তাঁর লাজুক মেয়ে এরই মাঝে অবাঞ্ছিত সব লজ্জাকে জয় করেছে। বই হাতে রোদেলা সরাসরি রিটন কাকুর কাছাকাছি পৌঁছে যায় রোদেলা। অটোগ্রাফ নিতে নিতে পরিচয় ওর ছোট্ট মনটাতে এক অনির্বচনীয় ভালো লাগা কাঁপন তোলে। রিটন ভাইয়ের কথা নতুন করে আর কি বলবার! ছোটদের প্রতি তাঁর অনাবিল মমতার সাক্ষী হয়ে আছে নিচের দু’টো ছবি। যারা এই ছবি দুটো দেখবেন, তারা সবাই নিশ্চিত মানবেন, এমন হৃদয় ভরা মমতা না থাকলে ছোটদের জন্য লিখে আকাশছোঁয়া সাফল্য পাওয়া যায় না।

অটোগ্রাফে......

ফটোগ্রাফে......


মন্তব্য

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ফাঁকিবাজের খাতায় নাম ওঠার পর শেষমেশ কিছু লিখলেন! হো হো হো

অনেকদিন দেখা হচ্ছেনা দাদা।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ঠিক তেমনটি নয় ছোটো, বুড়ো বয়সে এঞ্জিনিয়ারিয়ের ছাত্র হতে গিয়ে কারুবাসনার অন্তর্জলি যাত্রা ঘটতে চলেছে। অনেকদিন দেখা না হলেই তো দেখা হবার বাসনা তীব্র হয়, সেই অর্থে ভালোই ঘটেছে!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাবাটা যে কি বোকা, নিজের মেয়ের মনের কথাটিও বুঝে নেবার মত বুদ্ধি হলো না এখনও।

- মেয়ের মনের কথা বোঝার মতো বুদ্ধিসম্পন্ন বাবা কোনকালেই ছিলো না।

ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে স্যারের ছবি কই?

অটঃ লেখার কিছু অংশ বাদ দিতে পারতেন। কোন অংশ সেটা আপনি জানেন। মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছেন জানলে ফিরতি পথে আপনার গাড়ি বাংলা মোটরে আটকে দেয়া যেত।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

যাক, তবে কিছুটা হলেও দোষস্খলন ঘটলো।

ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তোলা ছবি ওরা কেবলমাত্র ওদের সম্পদ ভেবেই নিয়ে গেল কি?

আমার কাণ্ডজ্ঞান কখনই হবে না পাণ্ডব। সেটা মেয়ের ক্ষেত্রেও যেমন সত্যি বন্ধু-শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটি সত্যি! অগত্যা, "যে আমারে দেখিবারে পায়, অনন্ত ক্ষমায়, ভালোমন্দ মিলায়ে সকলি"

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

জুন এর ছবি

ইশ। মেলাতেই দেখা হয়ে যেতে পারত। আপনার দাওয়াত ভুলিনি। খুব শিঘ্রী আসব। রোদেলার জন্য অনেক আদর। হাসি

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

জুন, আমি সত্যি লজ্জিত! মাঝে মাঝে রক্তের লোহিত কণিকায় এক ধরণের গহন তমসার মতো বিচ্ছিন্নতাবোধ ম্যালেরিয়ার জীবাণুর ধরণে মিশে গিয়ে আমাকে ঘোরগ্রস্ত করে। সে সময় বন্ধুর ভালোবাসা সাগরের সুবিশাল তরঙ্গমালার মতো আমার দিকে এগিয়ে এলে অনেক আনন্দের মাঝেও আমি দমবন্ধ হয়ে হাঁসফাঁস করি। আমার অক্ষমতাকে তখন অনেকেই ঔদ্ধত্য বলে ভুল বুঝে। বসন্তেই এসো।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ক্রেসিডা এর ছবি

রোদেলার জন্য অনেক ভালোবাসা ও দোয়া রইলো।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

শুভপ্রীতি তোমাকেও। তোমার সিগনেচারের Simile-টি চমৎকার!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

বাহ্‌ রোদেলার সঙ্গে আমাকে তো বেশ লাগছে! দেঁতো হাসি

রোদেলার বাবাটাও সুন্দর একটা পাঞ্জাবি পড়েছিলেন! চোখ টিপি

আরেকদিন মেলায় দেখা হলে রোদেলা আমার কাছ থেকে ''গণেশ ধনেশ রণেশ এবং ভূতের বাচ্চা'' বইটি উপহার পাবে। একদম ফ্রি! চিন্তিত

যে বাবা তাঁর মেয়ে বা ছেলেকে আমার বই কিনে দেয় সেই বাবাকে আমার খুবই ভালো লাগে! ইয়ে, মানে...

অনেক আদর রোদেলা নামের মিষ্টি মেয়েটাকে। বাঘের বাচ্চা

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

মেয়ের আবদার রাখতে মন্তব্যসহ এই পোষ্টটি প্রিন্ট করে বাসায় নিয়ে যেতে হয়েছে। রোদেলা এই পোষ্টটি খুব যত্ন করে বালিশের পাশে রেখে দিয়েছে আর বার বার খুলে খুলে দেখছে। আর আমার মনে হচ্ছে, আহা, কৈশোরের সেই দিনগুলি যদি ফিরে পেতাম, যখন আমার ছিল সামান্য প্রাপ্তিতেই মুগ্ধ হবার অনাবিল ক্ষমতা !

আমাদের সংসারের চারপাশ ঘিরে আজ যেন এক আনন্দলোক নেমে এসেছে। এজন্য আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অমি_বন্যা এর ছবি

রিটন ভাই আমার প্রিয় একজন মানুষ। তার সাথে রোদেলার ছবিটিও উঠেছে চমৎকার। আর রোমেল ভাই কি অসাধারণ বর্ণনা দিয়ে গেলেন রোদেলা কে সাথে নিয়ে। আমার ছেলেটিও বড় হচ্ছে। আপনার মত এমন একটা লেখা লিখবো একদিন। ভালো থাকবেন রোমেল ভাই। আপনার কার্টুন দেখি না অনেক দিন।

রোদেলার জন্য ভালবাসা রইলো। অনেক বড় হোক সেই কামনা করি।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

অমি,
আপনাকে ধন্যবাদ। অবশ্যই ছেলেকে নিয়ে লিখবেন, তাকে নিয়ে ভাববেন তারচেয়েও অনেক অনেক বেশী। কৈশোরের সামান্য পরিচর্যা তরুণ তরুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশের পথ খুলে দেবে শতধারায়। ওরাই তো আমাদের ভবিষ্যত। বাংলার মাটি বাংলার জলে যেন ওদের দেহ ও মন খুঁজে পায় জীয়ন রস, এই তো আমাদের একান্ত কামনা।

কার্টুনিষ্ট সুজন চৌধুরী অনেক বড় মাপের শিল্পী। ভুল করে হলেও আপনি রোমেল চৌধুরীকে সুজন চৌধুরী ভেবেছেন, এ কারণে আমি সম্মানিত বোধ করছি!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অনেকদিন পর।
যাহোক, লেখাটি ভাল লাগলো।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বসন্ত রায় ঘরে প্রবেশ করিয়াই হাসিতে হাসিতে গান ধরিলেন,
“আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে।
ভয় নাইকো সুখে থাকো,
অধিকক্ষণ থাকব নাকো,
আসিয়াছি দু-দণ্ডেরি তরে।
দেখব শুধু মুখখানি।
শুনব দুটি মধুর বাণী ।
আড়াল থেকে হাসি দেখে চলে যাব দেশান্তরে।”

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ঘ্যাচাং

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।