সংবাদ শিরোণাম।

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: শনি, ২২/০৩/২০০৮ - ৪:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছু কিছু অনুরোধ আদেশের মতো- কিছু কিছু চাওয়া আমাদের বাধ্য করে- পররাষ্ট্র অধিদপ্তর থেকে জারি হওয়া একটা নির্দেশনায় বলা হয়েছে কোনো কোনো গণমাধ্যম মনে করছে এদেশে কোনো কোনো রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদুত এমন বক্তব্য রাখছে যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অবমাননা।

বলবার ভঙ্গিটাই আশ্চর্য করেছে আমাকে- মৃদু অনুরোধ কিংবা মিনতি ছিলো এখানে- আমরা অসহায়, আমরা বাধ্য হচ্ছি এই প্রজ্ঞাপন জারি করতে, আমাদের বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিলো না এটা বলার, মাননীয় দাতাগোষ্ঠি এতে রুষ্ট হয়ে কোনো পদক্ষেপ নিবেন না।

গীতা পাসি বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ২০০৮ সালের ভেতরেই একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সহায়তা করবার জন্যই তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে মিলিত হচ্ছেন।

প্রশ্নটা আমারও- গীতা পাসী কিংবা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতা কুৎনৈতিকদের নির্বাচন হবে হবে বলবার এই মোসাহেবী কেনো বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঁধে ভর করেছে। ফখরুদ্দীন আহমেদ আল জাজিরার সাথে সাক্ষাৎকারেও বলেছেন নির্বাচন হবে- তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে চান না- কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান না। তার লক্ষ্য একটা সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

নির্বাচন হলে কি দ্রব্যমূল্য কমবে? এমনটাই ধারণা করছে আই এম এফ- তাদের বক্তব্যে এটাই ফুটে উঠেছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অসহায়ত্ব প্রকট হয়ে উঠছে দিন দিন। তারা ট্রুথ কমিশন গঠন করতে চাইছেন। সেটাতে অবশ্য যারা বর্তমানে বিচারে অভিযুক্ত তাদের ক্ষমা পাওয়ার সম্ভবনা নেই- কারণ আইনটা জারি হওয়ার আগে যা কিছু ঘটে গেছে এই আইনের আঁওটায় সেসব আসবে না-

চমৎকার আইনানুগ বক্তব্য- তবে এই একই বক্তব্য জরুরি বিধিমালার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে বিষয়টা কেমন হবে? তারা একই রকম ভাষ্য দিতে পারবেন? জনগুরুত্ব বিবেচনা করে তারা দ্রুত বিচারে সমাধান করবার জন্যই জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোকে জরুরি বিধিমালার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে এটা মনে হয় সে কারণে করা হয় নি।

মামলাগুলো জরুরি বিধামালার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিলো যেনো বাদীরা জামিন না পেতে পারেন- হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের রায় বাতিল করে সুপ্রীম কোর্ট ক্ষমতাসীনদের এই অভিপ্রায়কে সম্মান করেছেন।
ভারতের সাথে চাল রপ্তানি চুক্তি সম্পাদিত হলো না, এখনও নানা রকম বিধিতে আটকে আছে চাল আমাদানি- এটা কবে সমাপ্ত হবে জানা যাচ্ছে না- তবে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিকৃত চালের কারণে বাজারে চালের দাম কমবে এমন আশা করা বৃথা। আশা করা যাচ্ছে না ভোজ্য তেলের দাম কমবে।
তেল পরিশোধিত করে বাজারজাত করতে গিয়ে ক্রয়মূল্যের প্রায় দ্বিগুন দামে মিল গেটে বেচছে সিটি ওয়েল মিল। সেটাতে বাধা দেওয়ার কোনো পদ্ধতি কি খুঁজে পেয়েছে সরকার?
সরকার কি চাইছে দ্রব্যমূল্য কমুক? সচিবালয়ের লাল ফিতা আর সচিবদের বানানো রিপোর্টে দেশের অবস্থা বিচার করা উচিত না- জিল্লুর রহমানের স্বজনেরা আছে- কেউ কেউ হয়তো একটু মধ্যবিত্ত টাইপ। তাদের কাছে বাজার দরের বিবরণ জানতে চাইতে পারেন তিনি।

চাইলে পেপার খুলে বাজার দর জানতে পারেন- তবে সচিবের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে নয়- সেটা আদতে এত পুরোনো যে সেখানের বক্তব্যগুলোতেও মরচে পড়ে গেছে।

আমার কাছে আরও আশ্চর্য লেগেছে পেট্রোবাংলাকে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে অবশেষে সরকার- তবে-

এই তবেটাই মর্মান্তিক- এখানে অন্য কোনো বিদেশি কোম্পানির সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়েছে- এবং ২০০৬ থেকে কাগুজে একটা কোম্পানি এ জন্য দেন দরবার করছে সরকারের কাছে- ৫ দফা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরেও তাদের এই চাহিদা কমে নি- বরং জ্বালানি মন্ত্রনালয় থেকে চাইছে পেট্রোবাংলা অনুরোধে ঢেঁকি গিলবে- এ চাহিদা পুরণ হওয়া এবং না হওয়ার উপরে পেট্রোবাংলার মাইনিং প্রসপেক্ট নির্ভর করছে-

পেট্রোবাংলা অবশ্য প্রকাশ্য টেন্ডার চেয়েছে- সেখান থেকে যোগ্য প্রার্থিকে বাছাই করবে তারা- তবে কাগুজে কোম্পানির মাইনিংএর অভিজ্ঞতা যাচাই করবে কিভাবে তারা?

এশিয়া এনার্জি দিনাগপুরে সুশীল সম্মাননা দিয়েছে- আমাদের মাটির নীচে থাকা সম্পদ আমাদের দায় হয়ে যাচ্ছে প্রতি নিয়ত- আমাদের গণতন্ত্রায়নের আদেশ- অনুরোধ- সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ সবই মাটির নীচ থেকে সম্পদ উত্তোনের চাহিদা- বিশাল অংকের সম্পদ- আর বাংলাদেশকে ৩০ ভাগ করে বিদেশি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার তাগিদে সরকারের কোন কোন পক্ষ কিভাবে জড়িত এবং লাভবান হচ্ছে এটাও বিবেচনা করা প্রয়োজন।
বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টা তামিমকে আমার এখনই সন্দেহজনক চরিত্ড় মনে হচ্ছে- একটা জুজর ভয় ছড়িয়ে দিয়ে হয়তো কেউ কোনো একটা পক্ষকে খুশী করতে চাইছে- এবং কর্পোরেট বাংলাদেশের খনিজ সম্পদের মূল্য ট্রলিয়ন ডলার-

বাংলাদেশের গত মাসেও ২০ টাকার জন্য মানুষ খুন হয়েছে- এ টাকার জন্য পুরো বাংলাদেশকে খুন করে ফেলতে পিছ পা হবে না কোনো কোনো পাষন্ড। প্রশ্ন হলো আমাদের ভেতরে এই পশুটাকে পুষছে কতজন?


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে যে, কোন কোন গনমাধ্যম এই রকম মনে করছে । বাহ বাহ,বহুৎ খুব ।
তাহলে জনাবেরা নিজেরা কি মনে করেন সেটা বিষয় না । অন্যদের মনে করা বিষয় নিয়ে তারা প্রজ্ঞাপন জারী করেন!
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অপ বাক এর ছবি

গীতা পাসি অভিমান করেছেন-

সৌরভ এর ছবি

ফেরেশতারা শাসনক্ষমতায় আসলেও মন্ত্রকের কথায় সত্য আসবে না।

ড. তামিম, আমি যতদূর জানি, কোন একটা বহুজাতিক এনার্জি ফার্ম এর কনসালট্যান্সির কাজ করতেন একটা সময়। কেউ বিশদ জানলে বা অন্যরকম হলে জানাবেন।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দুর্দান্ত এর ছবি

কর্পোরেট বাংলাদেশের খনিজ সম্পদের মূল্য ট্রলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের কমবেশী ২ বিলিয়ন কয়লার (লো-সালফার বিটুমিনাস) সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যবহার হল সিমেন্টে অথবা লৌহশিল্পে। অন্যদিকে আমাদের কয়লা/তেলের দরকার যাতায়ত আর বিদ্যুতের জন্য। তামিমের তাই উচিত ভারত আর চীনের সাথে বসে এই কয়লার বিপরীতে তাদের পেট্রল, ডিজেল আর কেরোসিনের দীর্ঘমেয়াদি বলদাবলদি কারবার (long term swap) করে নেয়া। এতে এই দুই দেশের সাথে আমাদের বানিজ্য যেমন বাড়ে তেমনি কুয়েতি শুকরছানাদের থেকে আমাদের কিছুটা মুক্তি হয়।

এই কারবারটা কয়লার দাম উঁচু থাকতে থাকতেই করতে হবে।

এখনই সময় তামিম। ভয়ের কিছু নেই। মাঈন ভাইকে বলে ঝুইলা পড়ো!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।