দীপ দাসগুপ্তের ক্রিকেটিয় কৌলীন্য এবং লাল টুকটুকে ফর্সা কিছু বাংলাদেশী

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৩/১২/২০১২ - ৮:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খুলনার মানুষ হিসেবে একটু অতিরিক্ত ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হলাম যখন বাংলাদেশ দল সফরকারী ওয়েষ্ট ইন্ডিজ দলকে ওডিআই সিরিজের প্রথম দুটো ম্যাচ বেশ বড়ো ব্যবধানে হারিয়ে দিলো এবং দ্বিতীয় ম্যাচটির ফলাফলের ব্যবধান এযাবতকালের মধ্যে বাংলাদেশের জেতা ম্যাচগুলোর মধ্যে সবথেকে বড়ো। সাবাস টাইগার্স, কিপ ইট আপ।

ব্যাস্ততার কারনে শুক্রবারের প্রথম ওডিআইটি দেখতে যেতে পারিনি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচটি আর মিস করতে চাইনি। টিকেট নিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছে, অধিকাংশ টিকেট পলিটিক্যাল কোটায় নয়তো ব্ল্যাকে চলে গিয়েছিলো। টিকেট প্রত্যাশিদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ছবিও প্রচারমাধ্যমে এসেছে। তার পরও অনেক কষ্টে আমার আর রাফিনের জন্যে দুটো টিকেট জোগাড় করতে পেরেছিলাম।

প্রথম ম্যাচটির দ্বিতীয়ার্ধ টিভিতে দেখেছি, মানে বাংলাদেশের ব্যাটিং। আপনারাও অনেকেই দেখেছেন। সেখানেই প্রথম দেখলাম একদা ইন্ডিয়ান জাতীয় দলের উইকেটকীপার ও ব্যাটসম্যান দীপ দাসগুপ্তকে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায়। তিনি ধারাভাষ্যের এক পর্যায়ে বলে ফেললো যে “হোয়াটেভার হ্যাপেনিং টু দ্য ওয়েষ্ট ইন্ডিজ, ইটস জাস্ট হ্যাপেনিং। দেয়ার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ডাজ নট শো দে আর ট্রাইং টু মেক দ্য থিংস হ্যাপেন্ড।” আমি ইংরেজী ভাষায় কাঁচা তবে এই কথার একটা অর্থ বের করার চেষ্টা করেছি। আমার অনুবাদে কথাটা এরকম হয় যে, “ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের জন্যে যা ঘটছে তা এমনিতেই ঘটছে। ওদের বডি ল্যাংগুয়েজ দেখে মনে হচ্ছে না যে ওরা কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছে।”

কথাটার দুই ধরনের ব্যাখ্যা হতে পারে- এক) ওয়েষ্ট ইন্ডিজ ম্যাচটিকে খুবই হাল্কা ভাবে নিয়েছে, এবং ২) ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরেডি হাল ছেড়ে দিয়েছে এবং খেলা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করছে মাত্র।

এধরনের মন্তব্য মূলত দলদুটিকে ছোট করার একটা প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। এমনো ব্যাখ্যা হতে পারে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘লুজ’ দেওয়াতে বাংলাদেশ দল জিতে যাচ্ছে। তার মানে এতে বাংলাদেশ দলের ভালো খেলা এবং ওয়েষ্ট ইন্ডিজ দলের প্রচেষ্টা- এই দুটোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা। মি্ঃ দাসগুপ্ত যদি মনে করে থাকেন যে বাংলাদেশের কাজ কেবলই বড়ো দলগুলোর বিপক্ষে হারা, নতুবা তাদের নেতিবাচক বডি লাঙ্গুয়েজের কারনে কালেভদ্রে জেতা, তাহলে তাকে সবিনয়ে স্মরন করিয়ে দিতে চাই যে বাংলাদেশ দলের কাছে কিন্তু তার দেশ সহ প্রায় সকল ক্রিকেটের মহাশক্তিধরেরা ধোলাই খেয়েছে। কারো কারো ক্ষেত্রে ধোলাইটা প্যাঁদানির পর্যায়েও গিয়ে ঠেকেছিলো। আর তার দলের সাথে আমাদের পার্থক্য হচ্ছে আমাদের দেশে বা দলে সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব বা শচীন টেন্ডুলকার নেই যারা নতুনদের জায়গা ছেড়ে না দিয়ে ক্রমাগত ব্যার্থতার পরও প্রভাব কাজে লাগিয়ে দলে নোঙ্গর গেঁড়ে পড়ে থাকে।

ইতিহাসে দেখা যায় ভাগ্যহত, সব হারানো কুলীনদের কেবল বড়ো বড়ো কথাই অবশিষ্ঠ থাকে। আমি এখনও পর্যন্ত মনে করিনা যে ইন্ডিয়া টিম সেই অবস্থায় গিয়ে পড়েছে। তবে একদা প্রায় অপরাজেয় ওয়েষ্ট ইন্ডিজ দলের কথা স্মরন থাকা উচিত। চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়। সো, প্লিজ শো সাম রেস্পেক্ট টু আদার্স মিঃ দাসগুপ্ত।
___________________________________________________

দ্বিতীয় ম্যাচটির প্রথমার্ধে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের ফিল্ডিং এর সময় বাউন্ডারী লাইনে ফিল্ডিংরত লেন্ডল সিমন্সের উদ্দেশ্যে কিছু লাল টুকটুকে ফর্সা বাংলাদেশী লেন্ডলের গাত্রবর্ণ নিয়ে ইংরেজী ভাষায় বেশ কিছু গালিবর্ষণ করার ফলে ক্ষুব্ধ, অপমানিত লেন্ডল মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায় এবং বাকী সময়ের ফিল্ডিঙে আর ফিরে আসে না।

সাথে সাথে মাঠের পিএ সিস্টেমে দর্শকদের অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য ও আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানায় কর্তৃপক্ষ। ঘোষনায় আরও বলা হয় যে এজাতীয় কাজ পুনরায় কেঊ করলে তাকে ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সোপর্দ করা হবে। কিন্তু ঘোষনা শেষ হতে না হতেই পশ্চিম পাশের গ্যালারী থেকে “কালা ভাই, কালা ভাই” রবে জিকির শুরু হয়ে গেলো! এই হচ্ছে আমাদের মাঝে ঘুরেফিরে খাওয়া কিছু প্রকৃত বর্ণবাদী। এদের জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাইনা কারন তাতে মায়ের জাতীর নামে কলঙ্কপাত হবে। কিন্তু আমার মনে হয় এইসব বর্ণবাদীগুলোর আত্মাকে কুত্তায় ুদে দিয়ে গেছে। নিজের দেশকে ছোট করতে করতে এরা কোথায় নিয়ে যেতে পারে ভাবলেও গা শিউরে ওঠে! এরাই কিছুদিন আগে মীরপুরে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের গাড়িতে ইট মেরেছিলো, আপনাদের হয়তো মনে পড়বে।

সন্ত্রাসী দেশ পাকিস্তানে কেউ খেলতে যায় না, যথার্থ সিদ্ধান্ত। কিন্তু, যদি সামান্য কিছু শয়তানের বর্ণবাদী আচরণের কারনে বাংলাদেশে বিদেশী দলগুলো খেলতে আসতে অনীহা জানানো শুরু করে, তবে তা আমাদের জন্য হবে নিদারুন দুঃখজনক।


মন্তব্য

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

সহমত।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ধুসর জলছবি এর ছবি

সহমত। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত। চলুক

ফারাসাত

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

স্যাম এর ছবি

ধিক্কার ঐ দর্শকদের !
দুঃখিত লেন্ডল সিমন্স মন খারাপ

তানিম এহসান এর ছবি

দুঃখিত লেন্ডল সিমন্স।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মন খারাপ

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অমি_বন্যা এর ছবি

টিভিতে খেলা দেখেছি কিন্তু বিষয়টা( দিপ দাশের মন্তব্য) এড়িয়ে গেছিল। আপনার ভাবনা আর প্রতিক্রিয়ার সাথে একমত। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

অমুক টিমকে দেখে মনে হচ্ছে হাল ছেড়ে দিয়েছে, এটা বিপর্যয়ের সময় কমেন্টেটররা প্রায়ই বলে থাকে না কি? ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতি ওই মন্তব্যে বাংলাদেশকেই কটাক্ষ করা হচ্ছে এমনভাবে ঘুরিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই মনে হয়।

শান্ত এর ছবি

আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না কৌস্ত্তভ দা। আমরা যতই ভালো খেলি ভারত বা অস্ট্রেলীয়ার খেলোয়াড়রা তা মানতে নারাজ। সুতরাং এই মন্তব্য করা হয়েছে বাংলাদেশকে লক্ষ করেই।

__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত

কৌস্তুভ এর ছবি

'খেলোয়াড়রা' যখন বলছেন তখন অধিকাংশ না হোক অন্তত অনেক খেলোয়াড় এহেন ডিনায়াল মোডে আছে বলে আপনার বক্তব্য, তাই তো? তাহলে সাম্প্রতিক কালে শেহবাগ বাদে আর কয়েকজন ভারত বা অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় বাংলাদেশকে খাটো করে মন্তব্য করেছে একটু দেখান। তাও শেহবাগের মন্তব্যটা ছিল টেস্ট সম্পর্কে, যেখানে ইংল্যান্ডের রেটিং ১১৭ যার তুলনায় বাংলাদেশের ০।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দাদু, আমি নিয়মিত ক্রিকেট কমেন্ট্রি ফলো করিনা কিন্তু এমন কথা আমি কোনও কমেন্ট্রেটরকে বলতে শুনিনি। এই ধরণের মন্তব্য অপেশাদারী এবং কমেন্ট্রি বক্সে বসে বলা ঠিক না। আমি ঘুরিয়ে নয়, সোজাসাপ্টা দৃষ্টিতেই ব্যাপারটাকে দেখেছি, কেবলমাত্র দীপ দাসগুপ্তই নয়, যে কোনও ধারাভাষ্যকারই এমন মন্তব্য করলে সেটা আমার কাছে সঠিক বলে মনে হবে না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

যারা নিয়মিত ফলো করে, যেমন সুহান (বা সজ বা ব্রুনো) তাদের বক্তব্য আমার পর্যবেক্ষণটাকেই সমর্থন করছে। অতএব আর বেশি কিছু বলার প্রয়োজন দেখিনা, সঠিক মনে করা না করা আপনার ইচ্ছা।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

"দাদু" শব্দটির ব্যবহার দৃষ্টিকটু লেগেছে।

"দাদা" শব্দ ব্যবহার করে হিন্দু-মুসলমান আলাদা চিহ্নিত করবার ব্যপারটা আমার কাছে রেসিস্ট ঠ্যাকে। যদি আপনি সবাইকে ভাই বলে সম্বোধন করে থাকেন, তাহলে কৌস্তুভ কিংবা অরবিন্দের ক্ষেত্রে সেটা বদলে "দাদা" ডাকা হয় কেনো?

উপরন্তু এখানে "আরো" আলাদা করে "দাদু" ঢেকে শব্দটার অর্থই বদলে ফেলেছেন আপনি। "দাদু" শব্দের অর্থ প্রপিতামহ, "সহোদর" নয়। সুক্ষ্ম হলেও এটাকে ব্যঙ্গোক্তি ছাড়া অন্য কিছু বলে মানতে পারছি না আমি।

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার মনে হয় ওনাকে অন্যদের ক্ষেত্রেও 'দাদু' ডাকটা ব্যবহার করতে দেখেছি, বোধহয় উনি এত কিছু ভেবে ওটা এখানে ব্যবহার করেননি।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এটা আপনি আপনার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে দেখেছেন, এটা খন্ডানোর জন্যে আমার কোন বক্তব্য নেই। তবে এটুকু এ্যাফার্ম করছি যে কোনও লেখক/মন্তব্যকারীর উদ্দেশ্যেই ব্যাঙ্গোক্তি করা আমার স্বভাববিরুদ্ধ আর বেখেয়ালে হয়ে গেলে আমি তার জন্যে লজ্জিত। আমি বন্ধুদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে তেমন নির্দিষ্ট কোনও রীতি অনুসরন করি না। ভাই-দাদা-ভাইডি-দাদু, ইত্যাদি অনেকভাবেই বন্ধুদের ডেকে থাকি, এখানে বন্ধুর ধর্মীয় আইডেন্টিটি বিবেচ্য নয়। বয়ঃকনিষ্ঠ অনেক বন্ধুকেই আমি দাদু ডেকে থাকি।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বেড়ে বলেছেন। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ব্রুনো  এর ছবি

দীপ দাসগুপ্ত যা বলেছে তা খুবই কমন ডায়লগ কমেন্টেটরদের জন্য। অবশ্য এটা বেশী শোনা যায় টেস্ট ক্রিকেটে যখন একটা বড় পার্টনারশীপ গড়ে ওঠে কিন্তু প্রতিপক্ষ দল উইকেট নেয়ার জন্য আক্রমনাত্মক বোলিং না করে নেগেটিভ বোলিং করতে থাকে আর ব্যাটসম্যানের ভুলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

এখানে হেয় যদি করা হয়েই থাকে করা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে, ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই হাল ছেড়ে দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশ দলকে আসলে প্রশংসাই করা হয়েছে প্রতিপক্ষ দলকে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য যাতে তারা হারার আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি এবং আমি ভিন্ন ভিন্ন পারস্পেক্টিভ থেকে বিষয়টা দেখেছি। আমি যেটুকু ম্যাচটি দেখেছি তাতে আমার অন্তত মনে হয়নি যে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ হাল ছেড়ে দিয়ে বসে ছিলো। তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে ম্যাচ বাঁচাতে। আমি যেটুকু দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বোলারদের উপর আমাদের ব্যাটসম্যানেরা কর্তৃত্ব চালিয়েছে তাদের দক্ষতা দিয়ে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সজ এর ছবি

দীপ দাসগুপ্ত যা বলেছে তা খুব স্বাভাবিক ক্রিকেটের ধারাভাষ্যে । এ ধরনের বলাকে অনাভাবে মিন করলে তো অনেক কিছুকেই নেতিবাচক ভাবে দেখা যায়! একমত হতে পারলাম না!
আর দ্বিতীয় ব্যাপারটা ভয়াবহ! আমাদের মত রেসিষ্ট আর কাউকে দেখি নাই!(আমার অভিজ্ঞতায়, কালো বর্ণের ব্যাপারে আমাদের মতো রেসিষ্ট খুব কমই আছে!)আর সেটাই বেড়িয়ে এসেছে। এ ব্যপারে বোর্ডের কাজ করা উচিত যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। মিডিয়া এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারে কিংবা আমাদের থেকে সচেতনতা আসতে পারে ব্লগের মাধ্যমে কিংবা সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমের সহায়তায়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চলুক
সেটাই। ধারাভাষ্যে এই কথাটা বহুল চর্চিত, আমি নিজেই শতাধিকবার শুনেছি।

দর্শকদের আচরণে লজ্জিত হলাম। ভালো একটা ক্রিকেট জাতি হয়ে উঠতে হলে ভালো ক্রিকেট সংস্কৃতিও কিন্তু জরুরী, এটার দায়টা অনেকাংশেই খেলার দর্শকদের উপরেই বর্তায়। দল বদলাচ্ছে, দর্শকেরা না বদলালে কী করে হবে...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

রাতারাতি সম্ভব নয় কিন্তু প্রত্যেকে যার যার জায়গায় থেকে একটু চেষ্টা করলে মনে হয় অনেক কালচারই বদলাতে পারে। এই যে ধরুন, আমাদের কারো সামনে কেউ যদি নিগ্রো, কাউলা, ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে, আমরা তাকে একটু বুঝিয়ে বলতে পারি এগুলো না বলার জন্যে, ইত্যাদি। ধন্যবাদ আপনাকে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

আমার সামনে যদি কেউ কখনও কাউলা বা নিগ্রো বলে, আমি সবসময়ি বলি যে এভাবে বলা ঠিক নয়। কিন্তু কজনকে বলবেন? বেশীর ভাগ বাঙ্গালীই কালদের কাউলা বা কালু ছাড়া বলে না। উনারা কি জানেন, বাংলাদেশের লাল টুকটুকেরাও এদেশে (আমেরিকায়) কালো বলে পরিচিত?

আমি যখন নুই ইয়র্ক এর সাবআরব এ বাড়ী কিনলাম, আমার এক নেবার বাড়ী বিক্রী করে চলে গেল। আমিই প্রথম বিদেশী ওই এলাকায়।
বেশীর ভাগ বাঙ্গালীরা তাদের ছেলেমেয়েদের কাল বন্ধুদের বাসায় নেমন্তন্ন করে না। সাদাদের সাথে তাদের ব্যাবহার একেবারে বিপরীত।
খেলার মাঠের ঘটনাটা খুব হতাশা জনক। সচেনতার অভাব। মন টা খারাপ হয়ে গেল।

তিথীডোর এর ছবি

দল বদলাচ্ছে, দর্শকেরা না বদলালে কী করে হবে...

সেটাই।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ সজ, আপনাকে আমার সাথে একমত হতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। আপনার দ্বিতীয় প্যারার শেষ বাক্যের সাথে একমত। বোর্ড কতদুর কি করতে পারবে তা জানি না তবে সচেতনতা খুবই জরুরী।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

দুঃখিত লেন্ডল সিমন্স মন খারাপ
এ কি ধরনের মানসিকতা আমাদের??? ধিক্কার জানাই ঐ সমস্ত দর্শকদের।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধিক্কার।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ধিক্কার এসমস্ত দর্শকদের।
টিভি ধারাভাষ্যকার নির্বাচনে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করা হয় জানতে ইচ্ছে করে, বিশেষ করে দেশের মাঠে বাংলাদেশ দল যখন দুই-দেশীয় সিরিজগুলি খেলে।

সৌরভ কবীর

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আপনার প্রশ্নের উত্তর জানা নেই তবে বোধকরি আইসিসি কমেন্ট্রেটরদের প্যানেল থেকে নির্দিষ্ট সিরিজের জন্যে কমেন্ট্রেটর পাঠায়।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

দিগন্ত এর ছবি

কমেন্ট্রি -তে আই সি সি র কোনও হাত নেই। কমেন্ট্রি টিম এখানে ই-এস-পি-এন এর হয়ে কাজ করছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত লেন্ডল সিমন্স। এরাই বাসে ঢিল ছোঁড়ে, গেলে নিজ পতাকায় আগুন দেয়।

স্বয়ম

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

বর্নবাদের বিরুদ্ধে খেলাধুলা একটা অন্যতম হাতিয়ার। সেই খেলার মাঠেই বর্ণবাদ মানা যায় না।

ক্রিকেট নিয়ে বা ক্রিকেটারদের নিয়ে এ ব্যাপারে বিজ্ঞাপন করা যেতে পারে। ক্রিকেটের কথাই বললাম কারণ এটাই সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হতে পারে যা খুব দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। দেশের ভেতরেই অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এখন ক্রিকেটের সাথে যুক্ত। তাদের এ নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। সচেতনতার বিকল্প নেই।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তাসনীম এর ছবি

লজ্জিত হওয়ার মতো ঘটনা।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

আরেকটা জিনিষ খেয়াল করেছিলাম ২য় ম্যাচের বাংলাদেশের ফিল্ডিং এর সময়ঃ স্পিনাররা ভাল করছে সেটা ধারাভাষ্যকাররা বারবার বলছিল, সাথে এটাও বলছিল যে এর সমস্ত কৃতিত্ব বাংলাদেশের নতুন স্পিক কোচ সাকলায়েন মুশতাকের। সাকলায়েন সফল এবং বড় মাপের স্পিনার ছিলেন এটা স্বীকার করতে আমার দ্বিধা নেই, তার দায়িত্ব নেবার পর স্পিনাররা খোলতাই হয়েছে এটাও হয়তো ঠিক কিন্তু সাকলায়েন আসার আগেও বাংলাদেশের স্পিনারদের কাছে বড় মাপের ব্যাটসম্যানরা ধোলাই খেয়েছে এটা তারা একবারও বলার চেষ্টা করে নাই। ব্যাপারগুলো অড লাগে!!!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

দিগন্ত এর ছবি

দীপ দাসগুপ্তের বক্তব্য অত গুরুত্ব পাওয়ার যোগ্য না। তবে ওইটা ঠিকই - ভারত-পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া-ইংলন্ডের কমেন্ট্রি টিমের লোকজন অনেকেই মনে মনে নতুন দলগুলোকে যোগ্য সম্মান দেয় না। এই অবস্থা পরিবর্তন হতে আরও সময় লাগবে।

পরের অংশটা জানা একটা দোষ আমাদের। জানি না কবে এইটা শোধরাবে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সুলতান এর ছবি

আমরা বিদেশীদের প্রতি শুধু বর্ণবাদী আচরণ করি না দেশের মানুষের সাথে হরহামেশায় করে থাকি। আর আমার কাছে মনেহয় আমাদের দেশে বেশীরভাগ মানুষের কমন প্র্যাকটিস এইটা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সাফি এর ছবি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের এরকম হাল ছেড়ে দেওয়া দৈহিক ভাষা আসলে নতুন কিছু না। আর এই নিয়ে কমেন্টটরদের ও দল মত নির্বিশেষে মন্তব্য করতে দেখেছি। আমার দেখা সবচেয়ে রিল্যাক্স্ড খেলোয়াড়রা প্রায় সবাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

রেসিজমের ব্যাপারটা জেনে খারাপ লাগল। আরো খারাপ লাগল, এই নিয়ে মিডিয়ায় কোন মাতামাতি নাই। আমি ছোট বেলায় কালোদের "নিগ্রো" হিসেবে শুনেই বড় হয়েছি, বিদেশি বই পত্র সিনেমা দেখে, সর্বোপরি বিদেশে এসে জানলাম শব্দটার ব্যাবহার এখানে কতখানি নেগেটিভ। আমার ধারণা এই ব্যাপারটা নিয়ে বাংলাদেশের অনেকের ই ধারণা নাই। তাই একারণে হলেও এইটা গুরুত্বপূর্ণ যে এই বিষয়টাকে হাইলাইট করে মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া। তবে আমরা জন্ম, সমাজগত ভাবে চূড়ান্ত রেসিস্ট - তাই সতর্কতা কতখানি থাকে সেইটাই চিন্তার বিষয় মন খারাপ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

রেসিজম ব্যাপারটা বেশিরভাগ পাবলিক পরিষ্কারভাবে বোঝে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্ণবাদী মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়। রেসিজমের জ্বালা রেসিজমের স্বীকার না হলে বা প্রতক্ষদর্শী না হলে অন্তর থেকে বোঝা যায় না সহজে। তাই মানুষকে ব্যাপারটা বোঝানো খুবই প্রয়োজনীয়। যারা বিদেশ-বিভুইতে ঘোরাফেরা করে না, তারা আসলেই রেসিজম কি জিনিস তা সহজে বুঝবে না। তাই উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপারটা বোঝাতে হবে। মিডিয়া এখানে ভালো ভুমিকা রাখতে পারে বলে আমার মনে হয়।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।