এখন রুখে দাঁড়ানোর সময়

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: রবি, ০১/১১/২০১৫ - ৭:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল রাতে যখন প্রথম খবরটা পেলাম তখন ছিলাম একটি অনুষ্ঠানে। আজকালকার যুগে ব্রেকিং নিউজের উৎস হচ্ছে ফেসবুক বা টুইটার। খারাপ খবরগুলো দ্রুত আসে সেখানে। তারমধ্যে আক্রান্ত চারজনই আমার ফেসবুক বন্ধু, এবং তিন সচল ব্যক্তি জীবনেও পরিচিত। লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের অফিসে আক্রমণ এবং টুটুল ভাই, রণদা ও তারেককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে মনটা খুব অস্থির ছিল। দ্রুত বাসায় চলে যাবার পরই দীপনের খবর আসে। এরপর সারা রাত শুধু নেটে খবর খুঁজেছি - আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার খবর নিয়েছি - ঘুমাতে পারিনি। জানিনা আর কত নির্ঘুম রাত রয়েছে সামনে। কারণ যুদ্ধ এবার শুরু।

পত্রিকা বা সামাজিক মিডিয়ায় অনেক আবেগময় লেখা পড়লাম অনেক কবিতা/হতাশা/ক্রোধ/নির্লিপ্ততা দেখলাম কিন্তু সেই থোড় বড়ি খাঁড়া আর খাঁড়া বড়ি থোর। বিচার চান না দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক - তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে বলেছেন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক। এবছরের খুনগুলো সাংস্কৃতিক - কারণ ভিন্নমতকে চাপাতি দিয়ে স্তব্ধ করে দেয়ার সংস্কৃতি যে ধর্ম, মানবতা, আইন বা সমাজে নেই সেই বিষয়ে আপামর জনতাকে জানাতে পারিনি। এই খুনগুলো রাজনৈতিক কারণ আমাদের রাজনৈতিক মঞ্চগুলো আস্তিকতা নাস্তিকতা নিয়ে ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক খেলা খেলে যাচ্ছে ব্লগারদের ঢালাওভাবে নাস্তিকতার লেবেল লাগিয়ে। এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলো এইসব খুনগুলো থেকে ফায়দা লুটছে।

অভিজিতদার সহধর্মিণী বন্যাদি ও বিচার চাইবেন না - তিনি দুষেছেন সরকারের নিরলিপ্ততাকে আর বলেছেন:

আমাদের শোক আর ক্রোধে পরিণত হয়না, আমরা আর ৫২ তৈরি করতে পারিনা, আমরা আর ৬৯, ৭১ তৈরি করতে পারিনা। নির্যাতনের এই রাষ্ট্রযন্ত্র আজ এতটাই সার্থকভাবে আমাদের স্তব্ধ করে দিতে পেরেছে যে আমরা ভয়ে নিথর হয়ে যাই। আলোর সামনে অসহায় হরিণের দল যেমন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ঠিক তেমনি আমরাও দাঁড়িয়ে থাকি রক্তাক্ত এই দেশ দেখে।

এক ফেসবুক বন্ধুর কাছ থেকে চায়ের দোকানে বা রাস্তার কিছু মানুষের প্রতিক্রিয়া জানা হলঃ

-শালার নাস্তিকের দল, দ্যাশটা তোমাগো বাপের নাকি?
-সোনার চামড়া কাইটা মোসলমান সাইজা লাভ নাই, তোমাগো হ্যারা ঠিকই খুইজ্জা বাইর করব।
-হালারা কুপাইলেও মরে না।
- ব্লগার মাতারিগুলা আম্রিকা থেইক্কা ট্যাকা খায়, ঠিকই আসে।
-আরে ভাই, অরা বালসাল লিখে বইলাই তো এমন হয়, পাব্লিকের তো মাথা গরম, বুঝেন না?

আমার মনে হয় এতকাল ব্লগিং করে আমরা ব্যর্থ - আমরা জনগণের কাছে পৌছুতে পারিনি - বা আমাদের নামে কুৎসা রটিয়ে জনবিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বর্তমান যুদ্ধপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পূর্বে জনমত গঠনে অনলাইন বা অফলাইনে ব্লগাররা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল - কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজনের শাহবাগ আন্দোলন শুরুর পর দ্রুতই জনমত ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছিল। এমন সময়ই ব্লগার রাজিব হত্যা এবং পত্রিকায় ব্লগারদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে চরিত্র হরণ। সেখানে রাজনৈতিক কোন ফ্লোর না পেয়ে খালেদা জিয়া সেটিকে নাম দিলেন নাস্তিক সমাবেশ। এরপর শাহবাগ ও ব্লগারদের ঠেকাতে মাঠে নামান হোল পূর্বে অজানা হেফাজতগংকে।

রাজিব হত্যার বিচার হয়নি এখনো - গ্রেফতারকৃত কতিপয় অল্পবয়সী ছেলেদের ব্রেনওয়াশ করেছে যারা তাদের ধরা যায়নি। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দীন রাহমানী পুলিসের হাতে আটক দীর্ঘদিন ধরে - জেল থেকেই হয়ত পরবর্তী হত্যার প্রস্তুতি চলে। এর কারণ হচ্ছে নানারকম টক শো ও পত্রিকার পাতায় আবেগী বিশ্লেষণ হলেও কখনোই এই বিষয়গুলো নিয়ে বুদ্ধিজীবী/পেশাজীবী/ধর্মীয় নেতা/সাধারণ জনগণ এর মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়নিঃ

  • তালিকাভুক্ত সব ব্লগারের কী ধর্ম বিষয়ক বিদ্বেষমূলক ব্লগ অথবা পোষ্ট আছে? কিন্তু অনেকের নাম কেন নাস্তিক ব্লগারের লিস্টে? তাদেরকে কেন পুলিশ পাহারায় থাকতে হয় সারাক্ষন?
  • অভিজিত রায়ের বইগুলো বা মুক্তমনার লেখাগুলো তারা কি পরেছেন? কোনখানে আপত্তি আছে এবং তা জানাতে চাপাতি হাতে লোক পাঠানো ছাড়া তারা কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
  • কারও ভিন্নমত থাকলে তাকে ধার্মিক ভাবে মারার বিধান আছে?
  • দেশে মুক্তচিন্তা ও যার যার ধর্মীয় অধিকার রক্ষার অধিকার আছে কি নাই বা কেন জরুরি।
  • ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষ ও ধর্মীয় নেতাদের অবস্থান কি।
  • যুদ্ধপরাধীদের বিচার কেন সাধারণ চুরি-ডাকাতি বা খুনের কেইস না এবং দেশের আইন মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি কেন জরুরি।

এসব কথার পাশাপাশি বর্তমানে সবচেয়ে বেশী দরকার আমাদের নির্লিপ্ততা কাটিয়ে স্রোতের বিপরীতে কিছু একটা করা। চোর পিটানোর সময় ছাড়া আমরা কেউ একত্রিত হই না। আবার কেউ চোর ধরলে, সে আসলেই চোর কিনা, কি কারনে চুরি করছে, চোরের আসলে অভাব/তাড়না কিসের এইসব না বুঝেই ঝাঁপিয়ে পড়ি দুই এক ঘা দিতে। আমাদের এখন একটু গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে হবে এবং ভবিষ্যৎ বাংলাস্থান ঠেকাতে একত্রে কাজ করতে হবে বুঝে শুনে। আমার মাথায় এখন কয়েকটি বিষয় আসছে - আপনারাও সাহায্য করবেন ব্রেইনস্টরমিং এ।

  • একটি সামাজিক ক্যাম্পেইন চালাতে হবে ব্লগিং সম্পর্কে - যা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। রাজিব হত্যার পর ব্লগার বিদ্বেষী পত্রিকার লেখাগুলো মসজিদে ফটোকপি করে বিলানোর বিপক্ষে কোন রাজনৈতিক বা শুধী সমাজ কিছু বলেনি বা করেনি - এটাকে ভাঙতে হবে।
  • যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থামাতে ও এদের জেল থেকে বের করতে যেসব দেশই বিদেশি চক্রান্ত তৎপর তাদের বিরুদ্ধে কলম চালিয়ে যেতে হবে।
  • ধর্মভিত্তিক রাজনীতির, তা যেরকম শক্ত মদদপুস্টই হোক, সরূপ উন্মোচন অব্যাহত থাকবে।
  • ব্লগার হত্যা ও যুদ্ধপরাধির বিচার নিয়ে সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদের আলুপোড়ার উৎসব উন্মোচন করে দিন
  • যারা ব্লগারদের নাস্তিক বলে তাদের বলবেন দুইটা নাস্তিক্যবাদী লেখা দেখাতে। যারা ব্লগারদের বলে যে তারা অ্যাসাইলাম নেবার জন্যে এমন করছে - তাদের দায়িত্ব দেবেন হুমকির উপর থাকা একজন ব্লগারকে আশ্রয় দিয়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
  • মুক্তবুদ্ধি মুক্তচর্চা অব্যাহত থাকবে।
  • শুধু মার খেলে চলবে না মার দিতেও হবে। চাপাতির বিপক্ষে চাপাতি নিয়েই দাঁড়াতে হবে না। তবে অনেক উপায় আছে। বসে না থেকে আপনার আসে পাশের জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের খুঁজে বের করুন, গতিবিধি অনুসরণ করুন - সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে (দরকার হলে বেনামিতে) উন্মোচন করে দিন - সাবধান করে দিন। আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করুন।
  • তথাকথিত সুধী সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের শরম দিন - বলুন যে সুবিধানুযায়ী কথা বলে কেষ্ট মিলার দিন শেষ। যারা পালটাবে না তাদের বর্জন করুন।
  • লেখক বুদ্ধিজীবীদের বলুন ব্লগার/প্রকাশক হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তাদের অনুরোধ করুন একবছর কোন বই প্রকাশ না করতে এই ঘটনার প্রতিবাদে।
  • ভারতের মত লেখক বুদ্ধিজীবীরা কি তাদের পুরস্কার বা সম্মান ফেরত দেবেন প্রতিবাদ করে? দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম।
  • সকল লেখক ও প্রকাশক মিলে আগামী ফেব্রুয়ারির বইমেলা বর্জন করুন। বর্তমান অবস্থায় এটির কোন প্রয়োজন নেই।

অনেকে বলেন আর লিখে কি হবে, প্রতিবাদ করে আর কি হবে? কিন্তু যদি আসতেন সবাই শাহবাগের মত একসাথে, যদি হাতে হাত রেখে আবার বলতেন আর নয়। কলম চলবে!


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

এখন সবচে' বেশি প্রয়োজন মনে হয় নিজেদের মধ্যে একতা।
আমি আমার স্বল্পবুদ্ধিতে যেটুকু বুঝি যারা মুক্তবুদ্ধির লোকদের টার্গেট করছে তাদের মধ্যে কিন্তু ঠিকই একতাটা আছে।তারা জানে তাদের করণীয় কী। কিন্তু আমাদের মধ্যে কেমন যেন একটা বিভ্রান্তি, বিভেদ। ওদের বিপক্ষে দাঁড়াতে হলে জোটবদ্ধতার বিকল্প নাই আসলে। ওরা আরো যেটা চেয়েছে, আমাদের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দিতে, হতাশ হয়ে পেছনে হটতে।আমার ধারণা এখানেও কিছুটা সফল তারা। আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। ভাবছি প্রতিবাদ করেই বা কী হবে বিচার তো পাচ্ছি না। সবাই একজোট হয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করা গেলে একটা ফল পাওয়া সম্ভব।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

তথাকথিত সুধী সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের শরম দিন - বলুন যে সুবিধানুযায়ী কথা বলে কেষ্ট মিলার দিন শেষ। যারা পালটাবে না তাদের বর্জন করুন।
লেখক বুদ্ধিজীবীদের বলুন ব্লগার/প্রকাশক হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তাদের অনুরোধ করুন একবছর কোন বই প্রকাশ না করতে এই ঘটনার প্রতিবাদে।
ভারতের মত লেখক বুদ্ধিজীবীরা কি তাদের পুরস্কার বা সম্মান ফেরত দেবেন প্রতিবাদ করে? দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম।
সকল লেখক ও প্রকাশক মিলে আগামী ফেব্রুয়ারির বইমেলা বর্জন করুন। বর্তমান অবস্থায় এটির কোন প্রয়োজন নেই।

এই অংশটা অরণ্যে রোদন হবে বলে মনে করি। কেননা আমাদের মূলধারার লেখক প্রকাশক সুধী সুশীল সমাজ কেউ ব্লগ কমিউনটির চেতনা ধারণ করে না। তাদের কাছে ব্যবসাটা মূখ্য, অর্থনৈতিক স্বার্থটাই প্রাধান্য পায়। এতগুলো ব্লগার হত্যার পরও মূলধারার লেখক সাহিত্যিক সুধী সমাজে কোন সাড়া ফেলতে পারে বলে মনে হয়নি। তাদের কাছে এটা বড়জোর হট নিউজ বা টক শোর বিষয়বস্তু হতে পারে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রেজওয়ান এর ছবি

ব্লগ কমিউনিটির চেতনা বলে আলাদা কিছু নেই। এখানে সাধারণ লোকেরাই তাদের বক্তব্য দেয়। সমস্যা হয়তে পারে ব্লগ নিয়ে রাজনীতি করা বা ভুঁইফোড় টকশোজীবী ব্লগারদের বক্তব্য নিয়ে।

মূলধারার কতিপয় লেখক সাহিত্যিক সুধী সমাজ বা সাংবাদিক ব্লগারদের ভয় পায় - কারণ ভাবে কোথাকার কোন নাগরিক সাংবাদিক এসে আমাদের চেয়ে কথা বলে যায়-- উন্মোচন করিয়ে দেয় অনেকের মিথ্যা জারিজুরি বা অক্ষমতা। তারা যদি ভারতীয় লেখকের পুরস্কার প্রত্যাহার নিয়ে গর্বে ফেসবুকে শেয়ার করে দুটি কথা - আমরা কেন বলতে পারব না - তাহলে তুমি করে দেখাও?

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার মনে হয় এতকাল ব্লগিং করে আমরা ব্যর্থ - আমরা জনগণের কাছে পৌছুতে পারিনি - বা আমাদের নামে কুৎসা রটিয়ে জনবিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়, সন্দেহ নেই কিন্তু এই জনবিচ্ছিন্নতা সাথে নিয়ে কী করে?

দেবদ্যুতি

রেজওয়ান এর ছবি

গতকালের ঘটনায় ব্লগার পরিচয় বাদ দিয়ে আক্রান্ত সকলে লেখক ও প্রকাশক। ব্লগাররা প্রতিবাদ করেছে - রাস্তায় নেমেছে। আপনি কোন প্রকাশক বা লেখককে রাস্তায় নামতে দেখেছেন? এখানে আক্রমণ হচ্ছে মুক্তচিন্তার উপরে- শুধু ব্লগার বলেই না। শুধু ব্লগারদের কেন দায়বদ্ধতা থাকবে? তাদের মরতে দিয়ে সবাই কি আঙ্গুল চুষবে? আমরা হয়ত এই কথাটি বলতে পারি লেখক-প্রকাশকদের - সবাই মিলে রুখে দাঁড়ানোর জন্যে।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম মিছিলটাই করেছে আজিজের দোকান মালিকরা। পরে পুস্তক প্রকাশক সমিতি সারা দেশে একদিন বই বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করেছে। আজিজ বন্ধ রাখছে তিনদিন। ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। এসবই কোনো কিছু না হয়তো। তবে এখানে তাদের সম্পৃক্ত হওয়াকে ছোট করে দেখার বদলে স্বাগত জানাতে হবে। নাইলে আমরা সহযোগীদের হারাতে হারাতে পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। লেখকদের যে অংশটা বরাবর রাস্তায় নামে তারাই নেমেছে। মূল কথা হলো আমাদের জনবিচ্ছিন্নতা কাটাতে হবে। সংখ্যায় বাড়তে হবে।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

[quoteমূল কথা হলো আমাদের জনবিচ্ছিন্নতা কাটাতে হবে। সংখ্যায় বাড়তে হবে।]

চলুক

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

সবকিছুই শেষ হয়ে যাচ্ছে। চরম আশাবাদী এই আমিও হতাশ হয়ে পড়ছি। তারপরেও প্রতিবাদ চলবেই চলবে।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখক বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে কিছু চাওয়ার নাই। আর সম্ভবত আমাদের অধিকাংশই ঐক্য ঐক্য করে বা মাঠে কাজ করতে হবে বললেও তা ঠিক বিম্বাস করি না।

স্বয়ম

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

  • তালিকাভুক্ত সব ব্লগারের কী ধর্ম বিষয়ক বিদ্বেষমূলক ব্লগ অথবা পোষ্ট আছে? কিন্তু অনেকের নাম কেন নাস্তিক ব্লগারের লিস্টে? তাদেরকে কেন পুলিশ পাহারায় থাকতে হয় সারাক্ষন?
  • অভিজিত রায়ের বইগুলো বা মুক্তমনার লেখাগুলো তারা কি পরেছেন? কোনখানে আপত্তি আছে এবং তা জানাতে চাপাতি হাতে লোক পাঠানো ছাড়া তারা কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
  • কারও ভিন্নমত থাকলে তাকে ধার্মিক ভাবে মারার বিধান আছে?
  • দেশে মুক্তচিন্তা ও যার যার ধর্মীয় অধিকার রক্ষার অধিকার আছে কি নাই বা কেন জরুরি।
  • ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষ ও ধর্মীয় নেতাদের অবস্থান কি।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সবকটি প্রশ্নের সারমর্ম হলঃ

কারও ভিন্নমত থাকলে তাকে ধার্মিক ভাবে মারার বিধান আছে?

এই প্রশ্নটি এবং জনমত বলে এর উত্তর হ্যাঁ

যারা ব্লগারদের নাস্তিক বলে তাদের বলবেন দুইটা নাস্তিক্যবাদী লেখা দেখাতে।

নাস্তিক্যবাদী লেখা থাকা কি সমস্যা?

যারা ব্লগারদের বলে যে তারা অ্যাসাইলাম নেবার জন্যে এমন করছে - তাদের দায়িত্ব দেবেন হুমকির উপর থাকা একজন ব্লগারকে আশ্রয় দিয়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

মুর্গিটা একেবারে শেয়ালের পাতে তুলে দেয়া হবে

বসে না থেকে আপনার আসে পাশের জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের খুঁজে বের করুন, গতিবিধি অনুসরণ করুন - সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে (দরকার হলে বেনামিতে) উন্মোচন করে দিন

লোম বাছতে কম্বল উজাড় হবে শুধু শুধু...

  • তথাকথিত সুধী সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের শরম দিন - বলুন যে সুবিধানুযায়ী কথা বলে কেষ্ট মিলার দিন শেষ। যারা পালটাবে না তাদের বর্জন করুন।
  • লেখক বুদ্ধিজীবীদের বলুন ব্লগার/প্রকাশক হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তাদের অনুরোধ করুন একবছর কোন বই প্রকাশ না করতে এই ঘটনার প্রতিবাদে।
  • ভারতের মত লেখক বুদ্ধিজীবীরা কি তাদের পুরস্কার বা সম্মান ফেরত দেবেন প্রতিবাদ করে? দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম।

নাহ, বরঞ্চ মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হবে স্মৃতিচারণ কাম কুৎসা ব্যাবসা

সকল লেখক ও প্রকাশক মিলে আগামী ফেব্রুয়ারির বইমেলা বর্জন করুন। বর্তমান অবস্থায় এটির কোন প্রয়োজন নেই।

এটির সাথে একমত হতে পারছি না, এতে মকসুদুল মুমেনীন প্রকাশনী আরও জেঁকে বসবে

প্রিয় রেজওয়ান ভাই,
বড্ড বেশি আশাবাদী হয়ে পড়ছেন। ব্রুনো কিংবা গ্যালিলিও তাঁদের মতের প্রেক্ষিতে এখনকার সহনশীল সময়টা দেখে যাননি। এখন যারা বেঁচে আছে তারাও সম্ভবত ফলাফল দেখে যেতে পারবে না।

পারবে না জেনেও এগিয়ে যাওয়াটাই কাজ...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রেজওয়ান এর ছবি

১) "এই প্রশ্নটি এবং জনমত বলে এর উত্তর হ্যাঁ"

- আপনি যেই জনমতের কথা বলছেন তারা পক্ষপাতযুক্ত, নতুন আসা এবং যুক্তিবিহীন। জানি - বিশ্বাস নিয়ে তর্ক অবান্তর কিন্তু যারা এই জনমত তৈরি করছে তার বিরোধী কোন কিছু হচ্ছে না রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে - গুটিকয়েক লেখক ছাড়া - যাদের নাস্তিক্যবাদী বলে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমার বক্তব্য হচ্ছে এ নিয়ে ব্যপক রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার দরকার আছে - দেশ ও সমাজ তাদের সংস্কৃতি বিরুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা এই নতুন মতামত গ্রহণ করবে কিনা (যা আমরা বঙ্গদেশে বিগত শত শত বছরে দেখিনি)।

২) নাস্তিক্যবাদী লেখা থাকা সমস্যা না। কিন্তু যে কোন যুক্তি বা বক্তাকে নাস্তিক বলে অগ্রাহ্য করতে দেয়াটা সমস্যা - কার্যকরী ব্লগারদের নাস্তিক বলে স্কেপগোট করাকে থামান।

৩) আমরা সবাই নিজেদের মত করে এগিয়ে যাব। জগতের সব বিপ্লব, ধারনা, শিল্প, রাজনীতি এগিয়েছে গনমানুষকে সম্পৃক্ত করে - তাদের সমর্থনে - তাই জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাধারণ জনগণকে সামিল না করতে পারলে সেটা হবে ব্যর্থতা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১। মন খারাপ

২। ইয়ে, মানে...

৩। চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত। বইমেলা বর্জনের প্রশ্নই আসে না। বরং একটা দাবি তোলা যেতে পারে যে, মেলার বিভিন্ন প্রাঙ্গনের নাম- হুমায়ুন আজাদ, অভিজিৎ, নিলয়, দিপন, ওয়াশিকুর, রাজিবদের নামে রাখা হোক। সরকার না করলে, আমরা করতে পারি। স্টল বরাদ্দ হলে পরে, একটা আলাদা সাইনবোর্ডে এই প্রাঙ্গনগুলো চিহ্নিত করে একটা ম্যাপ দিয়ে দিতে পারি। এটা মানুষের সামনে এই ত্যাগকে বারবার হাজির করতে থাকবে। বর্জনের কোনো প্রশ্নই আসে না।

স্বয়ম

শিশিরকণা এর ছবি

মনে হচ্ছে জম্বি এপক্যালিপ্সের মাঝে বেঁচে আছি। যারাই মাথার ঘিলুটুকু ব্যবহার করছে, তারাই লক্ষ্যবস্তু। জম্বি এপোক্যালিপ্সে বাঁচার মতন বুদ্ধি অবলম্বন করা ছাড়া উপায় নেই।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।