বিচার: ইরানী স্টাইল

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: রবি, ০৫/০৮/২০০৭ - ১১:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটি সুন্দর রৌদ্রজ্বল সকাল ছিল সেদিন। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ জড়ো হয়েছেন সিকিউরিটি ব্যারিকেডের পেছনে। অনেকের হাতেই ক্যামেরা, প্রতীক্ষা কখন এই অনুষ্ঠানের তারকারা আসবেন। ছোট্ট উচ্ছল শিশুটিও দাড়িয়ে। সভ্যতার এক উজ্বল নিদর্শন দেখবে সবাই।

একে একে আসলেন তারকারা। ওরা হাসছিলেন ও জনতার দিকে হাত নাড়াচ্ছিলেন। কি উৎসবমুখর পরিবেশ।

ফাঁসিফাঁসিশুরু হল মূল অনুষ্ঠান। একটি ট্রাকের পেছনে বড় একটি ক্রেন তৈরি ক্লাইমেক্সের জন্যে। কিছুক্ষনের মধ্যেই কালো মুখোশ পরা লোকরা মজিদ এবং হোসেন কাভুসিফারকে (চাচা-ভাতিজা) প্রকাশ্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল। উপস্থিত জনতা খুশি হয়ে হাততালি দিল। চতুর্দিকে হাস্যরোল, ছবি তোলা। গ্লাডিয়েটর ছবির কথা মনে করিয়ে দিল -যখন সিংহ ও মানুষের যুদ্ধ দেখার জন্য কলোশিয়াম ভর্তি লোক এমন করত। কিন্তু সেতো কয়েক হাজার বছর আগে।

মজিদ আর হোসেন কাভুসিফার ২০০৫ সালে একজন জাজকে মারার জন্যে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এই জাজকে তারা দুর্নীতিপরায়ন বলেছে যিনি অনেক ইরানী বিপ্লবীকে সাজা দিয়েছিলেন (এমনকি মৃত্যুদন্ড) সরকারের ধামা ধরে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়ার উদ্দেশ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাতে কোনরুপ সমালোচনা না হয় তার জন্যেই। এটি সম্পুর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধিত।

এখানে আমি বিচারের বিরুদ্ধে বলছি না। বলছি বিচার কার্যকরের পদ্ধতি সম্পর্কে। এই ছোট শিশুটি যে এটি দেখল তার মনে কি অনুভুতি হবে? আর বলিহারি সেইসব লোকদের যারা এটি দেখে আনন্দ করেছেন।

প্রকাশ্যে ফাঁসির মতো বর্বরতা যেন সভ্য সমাজে আর না হয়।

খবর ও ছবি সৌজন্যে : বিবিসি, স্কটসম্যন.কম, ইসনা

ফাঁসি২ফাঁসি২ফাঁসি৩


মন্তব্য

কেমিকেল আলী এর ছবি

ছবিগুলো অনেক ছোট লাগছে

অমিত আহমেদ এর ছবি
দিগন্ত এর ছবি

মানুষ মনে হয় দিনে দিনে বর্বরতর হচ্ছে ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রেজওয়ান এর ছবি

যে কোন ছবি ক্লিক করুন - দেখুন আরেকটি উইন্ডো খুলে যাবে সঠিক আকারের ছবি নিয়ে।

---------------------------------------
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

সৌরভ এর ছবি

প্রতিবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
ধিক্কার এই রাষ্ট্রটিকে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ছোট্ট শিশুটির মগজ এই ধারনায় ওয়াশ হয়ে যাবে যে এই শাস্তি পদ্ধতি ইসলাম নির্ধারিত । ১৪০০ বছর আগে এরকম ভাবেই শাস্তি দেয়া হতো । সুতরাং এ পদ্ধতি বদলানো দাবী করা ও অনৈসলামিক ।
ধর্ম তার জায়গায় অনড় দাঁড়িয়ে থাকে । মানুষ এগিয়ে যায় । যারা এগিয়ে যায়,তারাই বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয় আর ধর্মের সাথে গাঁটছাড়া বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে যারা-শেষ পর্যন্ত তারা মানবসভ্যতার জন্য বোঝা ছাড়া আর কিছুই নয় ।

-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা এ বর্বরদের প্রতি।
_________________________
'আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোন দিন নয়'

হাসিব এর ছবি

এরকম একটা ভিডিও দেখলাম কয়েকদিন আগে । প্রথমে ভেবেছিলাম মব লিঞ্চিং । পরে একটু পড়ালেখা করে জানলাম এটাই নাকি ওখানকার আইন !


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।