শফিউল আলম প্রধানের ব্যাপারে ইত্তেফাকের সেই সময়ের উপসম্পাদকীয়

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: রবি, ০৫/০১/২০১৪ - ৪:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বন্ধু হাসনাত শাহরিয়ার প্রান্ত আমাকে একটি বই দিয়েছে। এখানে ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ইত্তেফাক, সোনার বাংলা, জনপদ, গণকণ্ঠ এসব পত্রিকার ক্লিপিংস দেয়া আছে। ওর ব্যক্তিগত অনুমান ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ইত্তেফাকের আচরণ অনেকটা এখনকার প্রথম আলোর মত। বইটির নাম হল বাংলাদেশ বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর। এর সম্পাদক হলেন মুনির উদ্দীন আহমদ। ঠিকানা হিসেবে দেয়া হয়েছে লন্ডনের একটি ঠিকানা। মাঝে মাঝে আমি বইটি উল্টে দেখি। অল্প কথায় বইটির সারমর্ম যদি বলতে হয় তা হল ৭২ থেকে ৭৫ এ দেশের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তার পুরো দোষ আওয়ামী লীগের। বিরোধী দলের কোন দায় বা দায়িত্ব ছিল কিনা এই ব্যাপারে কোন প্রশ্ন তোলা যাবে না। সব দোষ, আবারও, আওয়ামী লীগের। পড়তে পড়তে হঠাৎ শফিউল আলম প্রধান ব্রাশফায়ারে যে সাত জন ছাত্রকে মেরে ফেললেন সেটির প্রতিক্রিয়া হিসেবে একটি উপসম্পাদকীয় পেলাম। এখানে তুলে দেয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।

তবে আমার কিছুটা খটকা লেগেছে। উপসম্পাদকীয়তে তারিখ দেয়া হয়েছে বাংলা ক্যালেন্ডার ধরে ১৩৮০ সালের ২৫শে চৈত্র। গুগল করলে অনলাইনে একটি ব্লগে ঘটনাটির যে ইংরেজী তারিখ পাওয়া যায় সেটি হল ১৯৭৪ সালের ৪ঠা এপ্রিল যেটিকে আমি একটি কনভার্টার ব্যবহার করে পেয়েছি ২১শে চৈত্র। একই ব্লগ পোস্টে বলা হয় দুদিন পরেই এর প্রধান হোতা শফিউল আলম প্রধান গ্রেপ্তার হয় (যাকে খুনের অপরাধে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় এবং পরে জিয়াউর রহমান ছেড়ে দেয়)। তাহলে ২৩শে চৈত্রের মধ্যে সবাই জানত সন্দেহভাজন কে এবং সরকার কাকে গ্রেপ্তার করেছে। আমার প্রশ্ন হল ইত্তেফাকের এই উপসম্পাদকীয়তে খুনের ব্যাপারে অনেক ত্যানা পেঁচানো হলেও কে খুন করেছে সেই ব্যাপারে কিছু বলল না কেন কিংবা সরকার যে গ্রেপ্তার করল সেই খবরও প্রকাশ করল না কেন? পরেও আর কোন উপসম্পাদকীয় পেলাম না যাতে এই গ্রেপ্তার বা মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।

আমি নিশ্চিতভাবেই কিছু একটা মিস করেছি, সেই জিনিসটি কি?


মন্তব্য

আনু-আল হক এর ছবি

সম্পাদকীয়তে প্রধান সাহেবের নাম নিয়ে সরাসরি কিছু লেখা হয়নি। গুগলাইয়া একটা লিংক পেলাম। আরো বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে ভালো হতো।
দেখি অন্য কেউ আগায়া আসেন কিনা।

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

সুরঞ্জনা এর ছবি

উইকি বলছে ১৯৮৭ সালে পরিবর্তিত বাংলা ক্যালেন্ডার বাংলাদেশে গৃহিত হয়, তাই এখনের হিসাব তখনকার জন্য প্রযোজ্য নয় হয়তো।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আনু-আল হক এর ছবি

উত্তম পর্যবেক্ষণ চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

শেহাব এর ছবি

হুমম, ভাল কথা মনে করেছেন।

হিমু এর ছবি

জিয়াউর রহমান শফিউল আলম প্রধানের দণ্ড বাতিল করে তাকে মুক্তি দেওয়ার পর ইত্তেফাক কী লিখেছিলো, সেটা খুঁজে বের করা গেলে ভালো হতো।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাম্য এর ছবি

এই কি সেই শফিউল আলম প্রধান?

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

মুস্তাফিজ এর ছবি

প্রধানের পেছনে আওয়ামী লীগের একটা বিশাল অংশের সমর্থন ছিলো। এমনকি ঘটনার পরের দিন ভোর বেলা প্রধানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলও করা হয়েছিলো। তাকে যাতে গ্রেফতার না করা হয় সেজন্যে আওয়ামী লীগের অফিসে ছাত্রলীগের একাংশ অবস্থান নিয়েছিলো। আওয়ামী লীগের ঐ অংশটির কারো কারো সাথে মানিক পরিবারের ঘনিষ্ঠতা ছিলো।
ঐ ঘটনার মামলা চলাকালীন জেরার অংশটুকু তৎকালীন দৈনিক বাংলায় ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়েছিলো মনে পড়ে।

...........................
Every Picture Tells a Story

শেহাব এর ছবি

দরকারী তথ্য।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

৭৫ পরবর্তী সময়ে ইত্তেফাক আর প্রধানের জাগপার ভূমিকা প্রায় একই রকম ছিল, আওয়ামী লীগ আর ভারতের ক্রমাগত বিষোদগার। এরশাদের আমলে প্রধান একবার ডাকাতি মামলায়ও গ্রেফতার হয়েছিল।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

সম্পাদকীয় খানা অতী ত্যানা প্যাঁচানোতে জর্জরিত বলিয়া প্রতীয়মান হইলো। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়!!

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।