লাইফ ইজ বিউটিফুল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন সুহান রিজওয়ান (তারিখ: বুধ, ২৩/০৩/২০১১ - ১০:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার পছন্দের সিনেমার তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে যে সিনেমাটি, সেটির নাম 'লাইফ ইজ বিউটিফুল'। জীবন বড় সুন্দর। সিনেমা নিয়ে যারা একটু সময় ব্যয় করেন, তাদের প্রায় সকলেই রবার্তো বেনিনির এই ইতালিয়ান ক্লাসিক দেখে থাকবেন। যারা সিনেমাটি দেখেননি, তাদের জন্যে গল্পের টুকরো অংশ বলে দেয়া যায়। সিনেমার কাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। ইহুদীদের উপর জার্মান নাৎজীদের নিপীড়ণের গল্প। ইহুদী পিতা গুইডোর গল্প। পুত্র জোশুয়াকে যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে আড়াল করতে চাওয়ার চেষ্টা নিয়ে গল্প। সিনেমার শেষে অপেরার সুরে মাথায় ঘুরতে থাকে একটাই আপ্তবাক্য, লাইফ ইজ বিউটিফুল- লাইফ ইজ বিউটিফুল। জীবন বড় সুন্দর।

এই জাতীয় আবেগ নির্ভর সিনেমা আমায় বড় নাড়া দেয়। কঠিন বাস্তবের জগতে সেটি হয়তো মানুষ হিসেবেই আমার দূর্বলতা। এই ধরণের সীমাবদ্ধতা আমার আরো আছে। অতি দ্রুত আবেগতাড়িত হয়ে পড়া আমার সেইসব অগণিত সীমাবদ্ধতার একটি। বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে এই অবান্তর লেখা লিখতে বসেছি সেই দূর্বলতার বশেই।

এই লেখার উৎপত্তি একটি ভিডিওক্লিপ দেখবার পর। যুদ্ধ বিষয়ক একটি ভিডিওক্লিপ। ১৯৭১ সালের ঢাকার অদূরের একটি গ্রাম থেকে নিউ ইয়র্কের এবিসি নিউজের প্রতিবেদক হাওয়ার্ড টাকনারের সচিত্র প্রতিবেদন। ভিডিওক্লিপটি সকলের দেখা উচিৎ ভেবে জুড়ে দিচ্ছি আধুনিক সিধুজ্যাঠা ইউটিউবের ঠিকানা।

সূর্যাস্তের ঠিক পূর্বে এই গ্রামটিতে হানা দেয় সেনাবাহিনী। নির্বিচারে হত্যা করে নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধদের। মোট ৭৫ জন। মহিলাদের মারবার পূর্বে ধর্ষণ। ছোট শিশুদের মারবার পূর্বে বিশেষ স্থানে বেয়নেট ঢুকিয়ে দেয়া। জীবন্ত মানুষদের আটকে রেখে পোড়ানো।

আড়াই মিনিটের এই ভিডিওক্লিপটি দেখবার পরে আমি অযথা অসহ্য বোধ করি। শ্বেতাঙ্গ প্রতিবেদক হাওয়ার্ডের গলাটাও কি একটু ভারী শোনায় ?? জানি না। সেটি আমার অপ্রকৃতস্থ মস্তিষ্কের কল্পনা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ষাট বছর পরে, ২০০৫ সালের ঘটনা । কোন একটা আমন্ত্রিত জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নেহাত মজা করে নাৎজী স্বস্তিকা চিহ্ন শরীরে এঁটে ছবি তুললেন কনিষ্ঠ ইংরেজ রাজপুত্র হ্যারি। এবং অতিদ্রুত তুমুল আলোড়ন উঠলো গণমাধ্যমে, নিন্দার ঝড়। জনতার কাছে মাথা নুইয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন হ্যারি। ইংরেজরা নিছক খেয়ালের বশে প্রিন্স হ্যারির এই স্বস্তিকা চিহ্ন ধারণ মেনে নেয়নি। কারণ, ষাট বছরের পুরোনো সেই গণহত্যা তাদের হৃদয়ে এখনো নিশ্চয় রক্তপাত ঘটায়। সেই স্মৃতি তারা একটা দুই ঘন্টার সিনেমা ভেবে মস্তিষ্কের নিউরন থেকে সরিয়ে ফেলেনি।

প্রচুর পতাকা ওড়ানো সমর্থকের সামনে মীরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ক্রিকেট দল উড়িয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে দশ উইকেটে জয় একটা খুব বড় সাফল্য। আমার যাবতীয় ক্ষুদ্রতা আড়াল করে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানাই। সমর্থকেদের জন্যে জানাই শুভকামনা।

এরপর, আমি আবার ওই ভিডিওক্লিপটি দেখতে বসি। আমি আবার অসহ্য বোধ করি।

'খেলা আর রাজনীতি এক নয় ' কিংবা 'পুরোনো ইতিহাস মনে রেখে কী হবে', এইসব ঝলমলে কারুকাজ করা ন্যাপকিন সরিয়ে রেখে- আমি বদ্ধচিন্তার মানুষ- পকেট থেকে বাংলাদেশের নাম লেখা একটা পুরোনো শতছিন্ন রুমাল বের করে চোখ মুছি।

লাইফ ইজ বিউটিফুল- জীবন বড় সুন্দর। কথাটা যারা বলেন, তারা মিথ্যে বলেন।


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমার পছন্দের তালিকার একেবারের শুরুর দিকের ছবি। মাত্র সেদিন দেখলাম আবার। যুদ্ধবিরোধী ছবি কিভাবে নির্মিত হতে পারে ইতিহাসকে বিকৃত না করে- তার প্রমান হিসেবে এর চেয়ে ভালো ছবি হতে পারেনা।

আফসোস, আমাদের কথিত যুদ্ধবিরোধী ছবি নির্মাতারা এইসব ছবি দেখেনা(সম্ভবতঃ), এই মানের চিন্তা করতে পারেনা।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জাহামজেদ এর ছবি

বাংলাদেশে একটি সিনেমা বানানোর অনুমতি পাওয়াটা অনেক সহজ বিষয় নয়। পৃথিবীর যে কোনো দেশে যার ইচ্ছে সে সিনেমা বানাতে পারে। এটা একটা মুক্ত মাধ্যম। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক হাংকি পাংকি আছে, অনেক বাধার প্রাচীর আছে। সব হাংকি পাংকি সবাই পার হতে পারে না, বস প্রাচীরও না। আর যারা সব প্রাচীর পার হয়ে একটা সিনেমা বানানোর অনুমতি পেয়ে যায় ততদিনে এর কাছে ওর কাছে হাটতে হাটতে একটা ভালো যুদ্ধ অথবা প্রেমের সিনেমা বানানোর যে উদ্যোম থাকে সেটা হারিয়ে যায়। তখন তাকে সবকিছু রেখে নিজের লাভের চিন্তা করতে হয়। ভালো একটা সিনেমার প্রযোজকও সে এই দেশে শেষপর্যন্ত খুজে পায় না। অবশেষে তাই শাকিব খানের ফ্ল্যাটে গিয়ে ত্রিশ লাখ টাকা নগদে দিয়ে এসে খান নাম্বার ওয়ান নামের সিনেমা বানানোর স্বপ্নে বিভোর থাকে।

যদিও আমাদের দেশে রুবাইয়াত হোসেনের মত কিছু মানুষ বাবার পরিচয়ে সিনেমার কিছু না জেনেই সিনেমা বানানোর অনুমতি পান এবং বলিউড-ডালিউড তারকা নির্ভর ( যদিও তার নিজের ভাষ্য ইতিহাস নির্ভর ! ) একটা সিনেমা বানিয়ে নিজেই নিজেকে অনেক বড় সিনেমা নির্মাতা হিসেবে পরিচয় দেন !

কিন্তু সত্যিকারের সিনেমা প্রেমী, যাদের অনেকেই একেকটি আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা বানাতে পারেন তারা এফডিসি কর্তৃক আয়োজিত সিনেমা বানাতে পারবে কি পারবে না এমন একটা পরীক্ষায় বরাবরই ফেল করে যান। কারণ, সবার মেধা আছে ঠিকই, কিন্তু রুবাইয়াতের বাবার মত একটা সাইনবোর্ড লাগানো বাবা নেই !

এজন্যই আমাদের দেশে ভালো যুদ্ধের সিনেমা হয় না, ভালো প্রেমের সিনেমাও হয় না...

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

একদম ঠিক কথা মোরশেদ ভাইয়া।

মূল দৃষ্টিকোণ থেকেই ছবি বানাতে পারলেন না যারা, তারা হাতেখড়ি করেন ভিন্ন ন্যারেটিভের চলচ্চিত্র দিয়ে। আফসোস।

সজল এর ছবি

লাইফ ইজ বিউটিফুল আমার দেখে সেরা সিনেমা। ক্রিকেট, রাজনীতি, ইতিহাস এইসব নিয়ে তর্ক করতে করতে ক্লান্ত, মানবিক বোধ কেন নিজে থেকে মানুষের মাঝে আসেনা এটা ভেবে প্রচন্ড হতাশ ও।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

টিউলিপ এর ছবি

মনটা খারাপ, এইসব তথাকথিত উদারহৃদয় গোল্ডফিশ মেমরি মেরুদন্ডহীন লোকদের দেখে। এই উদারতা বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধের খেতা পুড়ি।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দেশে পচুর পাকিপ্রেমী ***চো*

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইসব ভিডিও দেখার সাহস পাইনারে ভাই। নৃশংসতার চিন্তা থেকে লুকিয়ে বাঁচতে চাই। তারপরও আজকে সহ্য করতে না পেরে লিখলাম! মাঝে মাঝে বড্ড অসহায় লাগে...

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অপছন্দনীয় এর ছবি

খুবই অসহায় এবং অক্ষম লাগে...মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঙালি জাতি নাকি আবেগপ্রবন । ক্রিকেটের প্রতি তাদের বাঁধভাঙ্গা আবেগ হয়তো ইতিহাস কে পিছনে সরিয়ে রাখে । দুরন্ত আফ্রিদির ক্রীড়া নৈপুণ্য , ভয়ংকর সুন্দর শোয়েবের আগুনঝড়া বোলিং হয়তো তাদের কে মুগ্ধ করে । তাই তারা ভুলে যায় কিছু অতি আবেগপ্রবন মানুষ কেন এই আফ্রিদি , শোয়েবের জাত ভাইদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র তুলে ধরেছিল । মন খারাপ

-দিগন্ত

অতিথি লেখক এর ছবি

ভিডিও ক্লীপটি দেখবার সৎসাহস হলো না। রানা মেহের আপুর মত বলি, দেশের আনন্দে যদি ভাসতে পারি,
তবে দেশের এই বিরাট পাকি সমর্থকদের কর্মকান্ডে লজ্জিতও হতে হয় বৈকি! আমি/আমরা তাই লাল সবুজ পতাকার বুকেই জমা রাখলাম আমাদের অসহায় দীর্ঘশ্বাস আর ব্যর্থতাগুলো............

- আয়নামতি

ওসিরিস এর ছবি

আমার স্টুডেণ্টের (ও লেভেল) সাথে গতকাল এই নিয়ে কথা হচ্ছিলো। সে এক পর্যায়ে বললো, 'আমার এক বুকে বাংলাদেশ এক বুকে পাকিস্তান'। আমি শুনে কিছুক্ষণ থ হয়ে থাকলাম। আরো কথা বলে বুঝলাম তাকে এটাই সবসময় বুঝানো হয়েছে খেলা আর রাজনীতি এক নয়। একবুকে পাকিস্তান তাই থাকতেই পারে। আমি কোন ভাবেই তাকে অন্যকিছু বুঝাতে পারি নাই। তাই আজ বিকালে এই ভিডিওটা কনভার্ট করে আইপডে সাথে নিয়ে গেলাম। তাকে দেখালাম। সে কি বুঝলো জানি না, তবে দেখে কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে রইলো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

কাজটা ভালো করেছেন। চলুক
অনেক পোলাপাইন আছে ব্রেইন ওয়াশড। এদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে জানাতে হবে। ফেইসবুক, ইউটিউব একটা ভালো উপায়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে গেল। এই ভিডিও দেখার পর যে বাংলাদেশী পাকিস্তান সাপোর্ট করে সে মানসিক ভাবে অসুস্থ।

তিথীডোর এর ছবি

যারা চাঁদ -তারা আঁকা পতাকা উড়িয়ে স্টেডিয়াম কাঁপালো আজ...
যে ক্লাসমেটটির খোমাখাতার স্ট্যাটাসে আজ--

♥♥♥♥♥oYYeeeee oYYeeeee PakistaN wOn D MatcH...♥♥♥♥♥

তর্কে তাকে কিছু বোঝানো যাবে না বুঝতে পেরে রাগে গা জ্বলে যায়।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অপছন্দনীয় এর ছবি

বিভিন্ন কারণে কয়েকটাকে ফেসবুক লিস্ট থেকে মুছে দিয়েছিলাম সোজাসুজি, সাথে একটা মেসেজও ছিলো - আমি আমার ফেসবুক লিস্টকে "পরিষ্কার" দেখতে চাই।

তিথীডোর এর ছবি

পাকিস্তানকে সমর্থন করা যায় কী করে, সেটা আমার মাথায় ঢোকে না... অ্যাঁ
পাকিস্তানকে সমর্থন করা যাবে না কেন, সেটা আবার অনেকের মাথায় ঢোকে না! কস্কি মমিন!
জালিম দুনিয়া।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

'খেলা আর রাজনীতি এক নয় ' কিংবা 'পুরোনো ইতিহাস মনে রেখে কী হবে', এইসব ঝলমলে কারুকাজ করা ন্যাপকিন সরিয়ে রেখে- আমি বদ্ধচিন্তার মানুষ- পকেট থেকে বাংলাদেশের নাম লেখা একটা পুরোনো শতছিন্ন রুমাল বের করে চোখ মুছি।

অসাধারণ লিখছেন সুহান ভাই, মাঠে আজকে পাকিস্তানের পতাকা উড়ানো আর খেলার পর পাকিস্তানের পতাকা সম্বলিত মিছিল দেখে আসলেই স্তম্ভিত হয়ে গেসিলাম যে আসলে আমরা বাংলাদেশে আছি নাকি পাকিস্তানে!!!!!

মীর তাজবিনূর শরীফ

উজমা এর ছবি

manush bole "eta just khela...pakistan ke kelai support kori dekei desh k vhalobasina ta to na...".......ami boli its not about GAME , its not about PATRIOTISM....its ETHICAL issue..
নীতিবোধ বিবেকবোধ যে সবার জাগ্রত নয়...তা বোঝাই যায়...আফসোস বড়ই আফসোস!

Salman এর ছবি

Bijoy er ei mashe oi Rajakar Albodor der Ullash ar amader Kichhu Deshio chhagol der baa baa dekhe, aj nijer bibeker kachhe chhoto hoye gelam,

sotti e, onek durbol jati amra...

রানা মেহের এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধ আসলেই আজ শতছিন্ন রুমাল হয়ে গেছে।
ঝকঝকে পাকিস্তানী পতাকার পাশে এই রুমাল দেখে রুবাইয়াতরা নাম সিঁটকান

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শিশিরকণা এর ছবি

এইবার সব নব্য রাজাকার চেনা হয়ে গেছে।
মাঝে মাঝে মনে হয় আবার একটা গেরিলা বাহিনীর প্রয়োজন। আবাল যুক্তি দিয়ে যারা বাংলার মাটিতে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ায় সেগুলোকে খুঁজে খুঁজে মেরে ফেলার জন্য, যেভাবে মেয়েরা মাথা থেকে উকুন বেছে টিপে টিপে মারে। এইসব আবাল লোকজন ছাড়াও বাংলাদেশের চলবে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

পড়ুয়া এর ছবি

কত কিছু নিয়েই তো সারাদেশে ক্যাম্পেইন হয়। মুক্তিযুদ্ধের এসব ভিডিও ক্লিপ, ষ্টিল ছবি আর যুদ্ধ দেখা কিছু মানুষ কে নিয়ে ক্যাম্পেইন করা যায় না? যাতে ব্রেইনওয়াশ্ ছেলেপিলেদের চেতনা হয় তারা কত বড় অন্যায় করছে।

শিশিরকণা এর ছবি

আসলেই একটা ক্যাম্পেইন শুরু করা জরুরী হয়ে গেছে। স্কুল, বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল (যেখানে বাংলাদেশের ইতিহাস সেভাবে পড়ানোই হয় না) সেগুলোর একদম বাচ্চা ক্লাস থেকে শুরু করা উচিত। হতে পারে এমন একটা উদ্যোগ, একদিন স্কুলে ৭১ এর গল্প উৎসব হবে, সব্বাই বাবা/মা/দাদা/নানা/দাদী-নানী বা আর কারো মুখ থেকে ৭১ এর কোন অভিজ্ঞতা শুনে এসে বাকি বাচ্চাদের শোনাবে গর্ব ভরে কিংবা বুক-ভরা দুঃখ নিয়ে। ৭১ কে তারা অনুভব করবে। গল্প গুলা তারা লিখেও ফেলবে, সবার গল্প নিয়ে বড় একটা বাধানো খাতা হতে পারে, গল্প লেখার জন্য বাড়তি নম্বর দেয়া যেতে পারে, যেভাবে হোক বাচ্চাদের আর তাদের অভিভাবকদেরকেও পুরো উদ্যোগে জোর করে হলেও জড়িয়ে ফেলতে হবে।
৭১, মুক্তিযুদ্ধ অনেকের কাছেই এখন তেতো ওষুধের মত মনে হয়, জোর করে রসগোল্লার মধ্যে ঢুকিয়ে হলেও এটা প্রত্যেক প্রজন্মের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়া দরকার।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

একদিন স্কুলে ৭১ এর গল্প উৎসব হবে, সব্বাই বাবা/মা/দাদা/নানা/দাদী-নানী বা আর কারো মুখ থেকে ৭১ এর কোন অভিজ্ঞতা শুনে এসে বাকি বাচ্চাদের শোনাবে গর্ব ভরে কিংবা বুক-ভরা দুঃখ নিয়ে।

এই আইডিয়াটা চমৎকার লাগলো। তবে বাচ্চারাই শুনে এসে গল্প বলুক, তাতে আরো কাজ হবে, বাড়ির বড়রাও একটু সচেতন হবেন, আগ্রহ পাবেন হয়তো!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অসাধারণ লিখছেন.,..

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিলয় এর ছবি

সজল ভাই, দুঃখের বিষয় টা কি জানেন , আরা আসলে এখনও স্বাধীন হই নাই, নাইলে রাজাকার শব্দ টা আমাদের আবিধানে থাকার কথা না। ঘিন্না লাগে নিজের উপর , ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের ঋণে বেচে আছি
আমি , বেচে থাকবে আমার পরের বংশধর... এখন মনে হয় শুধু ওই পাকিস্তানিরাই না আখন বেচে থাকা ১৪ কোটি মানুষও দোষী। আজ যদি আমার চোখের সামনে একটা মানুষ হত্যা হয় ,(যার মরনে আমি লাভবান হব ) আর আমি নিরব দর্শক হয়ে তা দেখি বা তার মরনের বিচার না ছাই তাহলে প্রচলিত আইনে আমিও খুনের দায়ে খুনি হব.........।। যে ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা তাদের খুনিরা ঘুরে বেড়াবে , বিচার হবে না্‌আর আমরা খূব ভালো মানুষ .। আমরাও খুনি যতক্ষণ ঐ কুত্তার বাচ্চাগূলার বিচার ণা হয় ।

আর তা না হলে ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের ঋণে বেচে আছি আমি ,
বেচে থাকবে আমার পরের বংশধর.........।।

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখাটা পড়তে পড়তে ভেবেছিলাম, ভিডিওটা দেখবো না। সাহস নেই দেখার।
পাঠকদের মন্তব্য পড়তে পড়তে দেখলাম, আরে! আমার মত কারোরই দেখি ভিডিও দেখার সাহস নাই।

জাফর ইকবালের কোন এক লিখায় পড়েছিলাম, তার আমেরিকান বন্ধু তাকে বলছে, তোমরা যদি তোমাদের একাত্তরের এই নৃশংসতার ইতিহাসটুকু ঠিকঠাকভাবে লিখে না রাখো, আমি বাজি ধরে বলতে পারি, আজ থেকে ত্রিশ বছর পরে তোমার দেশের প্রজন্মের কেউ এই নৃশংসতার কথা বিশ্বাস করবে না।

আজকে বুয়েটের এক প্রাক্তন তুখোড় ছাত্রের (এখন বার্কলে ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি, বুঝ!!) স্ট্যাটাস পড়ে মনটা বিষিয়ে উঠেছিল। তার বক্তব্যের এক্সপ্লিসিট অংশটা হচ্ছে, একাত্তরের পাকিস্তানি "জেনারেল" এবং "সশস্ত্র সৈন্যরা" যে অপরাধ করেছিল, সেই একই অপরাধ তো আমরা পাহাড়ি, আদিবাসিদের সাথেও করছি, তাদের ভাষাকে দমন করে রাখছি।
বক্তব্যের বটমলাইনটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। আমরা আর পাকিরা তো একই দোষে দুষ্ট। আমরা কি নিজেদের ঘৃণা করি? তো পাকিস্তানকে কেন করবো?

সো, একাত্তরের পাকিদের অপরাধ=আদিবাসিদের প্রতি বাঙালিদের অপরাধ। প্লাস মাইনাসে কাটাকাটি।
জাফর ইকবালের আমেরিকান বন্ধুটি আসলে খুব একটা ভুল কথা বলেননি।

-------------------
সাত্যকি

-------------------

সিফাত-ই-তানজিম এর ছবি

লাল সালাম ভাইয়া!!!

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

এটা নিয়ে লিখবো ভেবেই সুখ পাই। লিখে ফেললে সেই সুখ পাবো না, তাই লিখি না।

সুহানের লেখাটি উত্তম হয়েছে। ভিডিও দেখলাম না। আমি পাকিস্তান সমর্থন করি না। তাছাড়া, আমার মন দুর্বল!

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আমি ক্ষোভে ফেটে পড়ছি, কিন্তু হতাশ নই। আমরা যদি এটা নিয়ে ছোট পরিসরে হলেও যার যার অবস্থান থেকে সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাই তবে এ অবস্থার অবশ্যই উন্নতি হবে। আর যারা 'পাকমনপেয়ারু' তাদের গোনায় ধরে লাভ নাই, কিন্তু তারা যেনো কারো ব্রেইন ওয়াশ করার চান্স না পায় ঠিক সেভাবেই এই আন্দোলনটা চালাতে হবে।

আমি আশাবাদী ... ... আমরা পারবো।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

বইখাতা এর ছবি

আমি কিছুটা হতাশ। চারপাশে প্রচুর এই জাতীয় ছেলেমেয়ে দেখি - প্লাস্টিক, ঝলমলে, অতীতভোলা, নিজ দেশের জন্মের ইতিহাস সম্পর্কে অনুভূতিহীন, সুবিধাবাদী। তর্ক বিতর্ক করেও তেমন লাভ হয়না। নিজের মেজাজটাই চরম খারাপ হয় শুধু। অথবা এই হতাশা হয়তো এই দু'দিন আগে অফিসে এক মিটিঙে কোনো এক কথাপ্রসঙ্গে হঠাৎ উঠে যাওয়া এই বিষয়টা নিয়ে উত্তপ্ত তর্ক বিতর্কের ফলাফল। যাইহোক, পুরোপুরি আশাবাদী হতে চাই।

guest writer rajkonya এর ছবি

অনেক দিন আগে একবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, যদি রাজাকারেরা বেহেস্তেও যায়, সেই বেহেস্তে আমি যাব না। (যদিও পরে ভেবে দেখলাম রাজাকারেরা তো বেহেস্তে যেতে পারবে না। ওদের বেহেস্তে যাবার পরিকল্পণা ভেস্তে যাবে। )কিন্তু সেই আমি রাজাকারদের সাথে একই বাংলাদেশে বসবাস করি। এর মানেটা কী? আমরাই আসলে রাজাকার। তা নয়ত রাজাকারদের সাথে বাংলার মাটিতে বসবাস করি কি করে?
মন খারাপ(

অদ্রোহ এর ছবি

লেখা চলুক

বাংপাকিদের জন্য ঘৃণা অবিরত!!

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সিরাত এর ছবি

দেখলাম ভিডিওটা। ফেসবুকে কম্পিউটার দিয়ে ঢোকা হয় কম, ঢুকলেও বাসা থেকে ইউটিউবে যাওয়া হয় না। ধন্যবাদ সুহান।

এখন এই ধরণের ভিডিও কি আর ম্যাস মিডিয়ায় দেখাবে? গ্রাফিক ইত্যাদি নানা ওয়ার্নিং দিবে, তবে দেখাতেও পারে কিছু কিছু চ্যানেলে। সাধুবাদ এবিসিকে; পাকিস্তান তখনো আমেরিকার বড় মিত্র।

আমাদের সিদ্ধান্তে ইনফরমেশন প্রসেসিং বড় একটা ভূমিকা রাখে। সমস্যা হল, যাদেরকে উদ্দেশ্য করে এটা লেখা বা ভিডিওটা এমবেড করা, তাদের কতজন এটা দেখবে? তাদের কতজন সচলায়তনেই বা ঢুকবে?

তাসনীম এর ছবি

আমার ফেসবুকে তোমার লেখাটা শেয়ার করেছি...এই মন্তব্যগুলোসহ...

লেখাটার জন্য সুহানকে ধন্যবাদ। সুহানের বয়েসে পাকিস্তানি পতাকা নিয়ে মাঠে লম্ফঝম্ফ দেখে ক্রোধ হতো, তখন আমার বয়েস ছিল ১৮ আর বাংলাদেশেরও তাই। আমরা দু'জনেই পোলাপান ছিলাম। আজকাল ঢাকায় পাকিস্তান দলের খেলা থাকলে টিভি খুলি না, আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা নির্বিশেষে সবাই আফ্রিদিদের ভালোবাসে, পাকিস্তান ভালোবাসে, পতাকা নিয়ে মিছিল করে...আমি এতোদিনে বুঝেছি, জাতির আত্মসম্মান ব্লগ বা পত্রিকা লিখে তৈরি করা যায় না। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটাও চল্লিশে পা-দেবে, সেও নিশ্চয় বুঝে গেছে ব্যাপারটা। যেদিন সুহান চল্লিশে পা-দেবে, হয়তও সেও মেনে নেবে যে সম্মানের ব্যাপারটা আমাদের জাতীয় অভিধানে নেই। তবুও সুহানের লেখা পড়ে আত্মসম্মানহীনতার কষ্টটা ফিরে এলো, আমি চেষ্টা করি এগুলো না পড়ার বা না দেখার...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তাসনীম এর ছবি

আমার নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখাটা শেয়ার করছি...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আপনার লেখাটা আবার পড়লাম তাসনীম ভাইয়া। ...লাভ নেই পড়ে, কাল হয়তো আমিই ভুলে যাবো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আত্মসম্মান বোধটা নিজের ভেতর থেকে তৈরী হয়,নিজের আত্মসম্মান বিকিয়ে দাওয়া আর আত্মসম্মান বোধ অটুট রেখে নতুন কিছু করার মাঝে যে পার্থক্য নতুন প্রজন্ম বোঝে কিনা কে জানে??কষ্ট হয় কিন্তু অস্তিত্বের পচন যে গোড়া থেকে শুরু হয়েছে ভাই ....
-অর্ফিয়াস

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কয়েকদিন আগে একটা ব্যানার করেছিলাম সচলায়তনে। বিশ্বকাপ নিয়ে। অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকা ব্যানারে যুক্ত করা প্রাথমিক পরিকল্পনায় থাকলেও শুধুমাত্র পাকিস্তানের পতাকা নিজের হাতে প্রসেস করতে হবে বলে সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়েছে আমার। বাংলাদেশের সাইট হিসেবে, বাংলাদেশীদের সাইট হিসেবে সচলায়তনের ব্যানারে পাকিস্তানের পতাকা, সে যে কারণেই হোক- দেখতে পাওয়াটা চরম লজ্জার হতো!

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী। একাত্তরের সেই উত্তাল সময়কে ধারণ করা। ২৫ মার্চের রক্তাক্ত ঢাকা। সেই ঢাকাতেই এখন পাকিস্তানের পতাকা ওড়ে ডিপ্লোম্যাটিক মিশনের বাইরেও। উড়ায় বাংলাদেশীরাই। মিছিল করে। পাকিস্তানের নাম নিয়ে তাদের সমর্থনে শ্লোগান দেয়- যে কোনো কারণেই হোক। এবং এজন্য তারা মোটেও লজ্জিত না!

কিছু বাংলাদেশী, রাস্তায় শ্লোগানে যোগ দিতে পারে না। পাকিস্তানের সমর্থনে করা মিছিলে যেতে পারে না। তারা চলে আসে ফেসবুকে, ব্লগে। মিছিলকারীদের অনলাইন ভার্সন হয়ে। তাদের কাছে বাংলাদেশ > মুক্তিযুদ্ধ > তিরিশ লাখ স্বজন হত্যা > প্রায় ৪ লাখ মা-বোন'কে ধর্ষণ > পাকিস্তান — এই সমীকরণের পাকিস্তান আর সুদূর মুলুকের পাপুয়া নিউগিনি একই কথা! যেহেতু আমরা পাপুয়া নিউগিনিকে ঘৃণা করি না, সুতরাং পাকিস্তানকেও ঘৃণা করা নিপাতনে সিদ্ধ হতে পারে না!

এদের কোনোদিন সুমতি হবে, এই আশা আমি করি না। আল্লায় যাদের ভিতরে বাই ডিফল্ট অন্ধকার দিয়ে দিছে, ইতিহাসের কোনো ঘটনা, নিজের মা-বোনের অসম্মান এদের ভেতরে কী করে আলো ফিরিয়ে আনবে?

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

১৯৭১ সালে আমার ও আমার মায়ের চোখের সামনে হানাদার পাকিস্তানী সেনারা আমার নানাজানকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি ছিলেন নিরীহ স্কুল শিক্ষক। নানাজানকে হারিয়ে নিদারুণ অর্থ কষ্টে পড়ে আমাদের পুরো পরিবার। কষ্টের বোঝা ঠেলে ঠেলে বুড়ো মোষের রোয়া উঠা কুঁজের মতো আমার জনম দুখিনী মায়ের কড়া পড়া ম্লান মুখখানি আজও সে পরিচয় বহন করে চলেছে। আপনার বিপন্ন বোধের এবং আর্ত শিরা উপশিরার পীড়ন সেই কবে আমার মজ্জায় স্থায়ী দাগ রেখে গেছে। তবু মহান মানবতার জয় কামনা করে বলিঃ
অভিযোগ নয় অনুযোগ নয় ক্ষমা করো প্রতিদানে
ক্ষমাই জগতে কল্যাণকর সুবাতাস বয়ে আনে।

তবুও বলি, 'লাইফ ইজ বিউটিফুল'। তবু আশা বাঁধি,

সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে - এ পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে;
সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ;
এ-বাতাস কি পরম সূর্যকরোজ্জ্বল;
প্রায় ততদূর ভালো মানব সমাজ

অফুরান ভালোবাসা ফুটুক শাশ্বত রাত্রির বুকে, হাসুক অনন্ত সূর্যোদয়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

১৯৭১ সালে আমার ও আমার মায়ের চোখের সামনে হানাদার পাকিস্তানী সেনারা আমার নানাজানকে নশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি ছিলেন নিরীহ স্কুল শিক্ষক। নানাজানকে হারিয়ে নিদারুণ অর্থপকষ্টে পড়ে আমাদের পুরো পরিবার। কষ্টের বোঝা ঠেলে ঠেলে বুড়ো মোষের রোয়া উঠা কুঁজের মতো আমার জনম দুখিনী মায়ের কড়া পড়া ম্লান মুখখানি সে পরিচয় বহন করে চলেছে। আপনার বিপন্ন বোধের এবং আর্ত শিরা উপশিরার পীড়ন সেই কবে আমার মজ্জায় স্থায়ী দাগ রেখে গেছে। তবু মহান মানবতার জয় কামনা করে বলিঃ
অভিযোগ নয় অনুযোগ নয় ক্ষমা করো প্রতিদানে
ক্ষমাই জগতে কল্যাণকর সুবাতাস বয়ে আনে।

তবুও বলি, 'লাইফ ইজ বিউটিফুল'। তবু আশা বাঁধি,

সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে - এ পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে;
সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ;
এ-বাতাস কি পরম সূর্যকরোজ্জ্বল;
প্রায় ততদূর ভালো মানব সমাজ

অফুরান ভালোবাসা ফুটুক শাশ্বত রাত্রির বুকে, হাসুক অনন্ত সূর্যোদয়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

জীবন শুধুই সুন্দর নয়, রক্তাভ-সুন্দর

আমাদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সচেতন করে তোলাটা জরুরি, বিশেষ করে শহরের দামী ইংরেজী-মাধ্যমগুলোতে অধ্যয়ণরত শিশুকিশোরগুলোকে। আমি এরকম একজনকে পড়াই। তার, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কিত জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দেখে আমি দুঃখিত নই, রীতিমত শঙ্কিত। সবচে বড় কথা হল তাকে যখন এগুলো সম্পর্কে কথা বলতে যাই, সে বিরক্ত হয়- বলে বোরিং লাগে। হিন্দী সোপঅপেরাগুলোর সমান্তরালে বাংলা নাটকের কথা বললেই বলে- ডিসগাস্টিং। তাদের মানসিকতাকেই গড়াপেটা করে একটা বাংলাবিমুখী ছাঁচের মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে, আখেরে বাংপাকিদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস খুঁজতে প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে যেতে হবে।

ধৈবত

আরিফ চৌধুরী  এর ছবি

পাকিস্তানীরা কিন্তু আমাদেরকে এখনও নিচু চোখেই দেখে,আর আমরাই ওদেরকে ভালবাসি।
৭১ এর পাকিস্তান দিবসে বাংলাদেশে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ে নাই, কিন্তু ২০১১ এর মার্চে বাংলাদেশি ভাইয়েরা সেটা পুষিয়ে দিয়েছে।এসব বাংপাকিদের দেখে শুধু একটা শব্দই মনে আসে 'লজ্জা'!!!

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

চলুক

কল্যাণF এর ছবি

লেখাটা পড়তে পড়তে শেষে এসে থেমে যেতে হল। আমার আর উন্নতি হল না, জাতে উঠতে পারলাম না, বুঝতে পারলাম আমার মনটাও খুব ছোট। নিজের দিকে তাকাই, পাকিস্তানের আনন্দে আনন্দিত হওয়ার মত উদারতা আমার নাই। স্বর্গে বা বেহেশতে যাওয়ার ফ্রী রাস্তাটা যদি পাকিস্তানে সবার জন্যে উন্মুক্ত হয় তাহলে ওই স্বর্গে যেতে চাই না। অনেকেই এখন আমারে বেকুব গাধা ঠাওরাইতাছে। অসুবিধা নাই মরার আগে পর্যন্ত এইরকম বেকুব গাধা থাকতে চাই। বাংলাদেশে জন্ম নিয়েও যারা পাকিস্তানের বিজয়ে উল্লসিত ও গর্বিত তাদের পুঙ্গা পুঙ্গা আনটিল ডেথ দেওয়ার কোন বিকল্প নাই।

তারেক অণু এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। মন ভার হয়ে আসে, অব্যক্ত ব্যথায় ঘিরে ধরে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।