শ্মশান পাখিরা,সন্ধ্যায় ( প্রথম অধ্যায় )

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: সোম, ০৯/০৬/২০০৮ - ৪:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অদ্ভুত নীল এক আকাশ । সাদা সাদা মেঘের ছিট আকাশভর । পাহাড়ি নদীর শেষ পৌঢ়ত্বের বিস্তীর্ণ চর জুড়ে মাথা দোলানো কাশফুল । বন্যার জল নেমে গিয়ে মনু এইবার অপার রুপবতী,খরতোয়া । ফেনিল গৈরিক জলবেগ,মেঘ,আকাশ আর কাশফুলের স্নিগ্ধ বৈপরিত্য নিয়ে বয়ে যাচ্ছিলো । যাচ্ছিলো কি, যাবার সময় কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো আমাদের ! গত সন্ধ্যার ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি, এই সন্ধ্যার বাতাসের সাথে মিশে আমদের পুরো অস্তিত্বে সঞ্চারিত হচ্ছিলো ! পুরোনো কলার খোসার মতো বিকেলটা কে ছাড়িয়ে এই প্রাক-সন্ধ্যা,তাতে কিসের যেনো ছায়া পড়ে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতরো হতে থাকে । কেউ একজন, আমাদের,আকাশের দিকে তাকায় । তারপর একে একে সবাই । কিন্তু আবছা আলোয় দৃষ্টি বিভ্রম হয় আমাদের ।

চিল না কি এরোপ্লেন ? উচুতে অই উচুতে....

যাবার বেলা কে ডেকেছিলো - 'আয় পাখি, আয় মুখরতা ' আমাদের মনেই পড়ে না। আরো আশ্চর্য সেই ক্ষয়ে যাওয়া, আজন্ম স্বপ্নের দিকে হেঁটে, হাঁটতে গিয়ে ফের ফিরে আসা। সেই প্রবাহমান স্বপ্ন ক্ষুধাতুর ছায়া-প্রচ্ছায়ার দিনগুলি কৈশোরে বান্নি থেকে কিনে আনা পুতুলের মত পেলব যত্নে তুলে রেখেছিলাম আমরা। বিস্মৃতিরা খায়নি সব। কিন্তু আসলে আমাদের কারোরই মনে ছিলনা কবে থেকে আমরা ফেরিওয়ালা হয়েছিলাম। সারা পৃথিবীর সব খামার মিলে একদিন একটা যৌথ খামার হবে- স্বপ্নাবিষ্ট র্জামান দার্শনিকের স্বপ্ন দর্শনে যাদের প্রবল অনাস্থা , সব কিছু ভাগাড়ে গেছে বলে যারা নাক সিটকায়, সেই তারাই কেন আবার মাঝ রাতে রিমোট কন্ট্রোলের নব ঘোরাতে ঘোরাতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে রষ্ট্রিয় সীমানাহীন যৌন দৃশ্য দেখতে দেখতে? মোবাইল থেকে মোবাইলে চালান করে নতুন যৌন আসন। যৌনতার ভাষা যদি সীমান্ত নিরপেক্ষ হয়, ক্ষুধার কেন হবে না? আমাদের এইসব প্রশ্ন করা হয়নি কোনদিন।

তবু আমরা ফেরিওয়ালা হয়েছিলাম। এক মাঝরাতে 'আয় জোছনা, আয় প্রেম 'বলে নির্জন শ্মশান ঘাট মাতিয়ে তুলেছিলাম । এই শহরের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে-স্নিগ্ধা , তাকে কে আগে প্রপোজ করবো, কিভাবে,ভাবতে ভাবতে , ঝগড়া ঝগড়া করতে করতে সিদ্বান্তে পৌছবার আগেই যখন তাকে ছুঁ মেরে নিয়ে গিয়েছিলো এক লন্ডনী ছোকরা ; সে রাতে এক শলা নিকোটিন ভাগ করে হাওয়ায় পুড়িয়ে দিয়েছিলাম । সেই সঙে আমাদের মধ্যবিত্তিয় ব্যর্থতা আর বিরহবোধ ও । আর মাও সে তুং'এর বিশাল হৃদয়ের প্রশংসা করছিলাম বারবার । করে,হাততালি দিচ্ছিলাম মহুর্মুর । লংমার্চের সৈন্যরা প্রেমরত যুগলকে হত্যা করতে গেলে তিনি যে বাঁধা দিয়েছিলেন ! বলেছিলেন, 'আহা,মানুষ যাতে নির্বিবাদে খায় আর প্রেম করে,সেই জন্যেই তো আমরা যুদ্ধ করে চলেছি । ওরা তো ঠিকই করছে । ' আমাদের মধ্যে কেউ অবশ্য তীব্র প্রতিবাদ করে উঠেছিলো,'আমরা কি নির্বিবাদে খাই আর প্রেম করি , মাননীয় আদালত ?' আর অন্যরা স্নিগ্ধার কথা ভেবে বিষন্ন হয়ে উঠছিলাম । আমাদের চোখ ফেটে,ঠিকরে বেরিয়ে এসেছিলো সঞ্চিত হাহাকার আর ব্যর্থতা । কেন জানি না সে রাতে বন্দিত্ব কে ভালোবেসে আমরা জেল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম ! সারা শহর তন্ন তন্ন করে খোঁজে বেরয়েছি আমদের হারানো ডায়েরিটা । খয়েরী রঙের সেই ডায়েরিটা তে আমরা আমাদের যাপিত দিনগুলির কথা, আমাদের ব্যর্থতা,অপমানের কথা লিখে রাখতাম |স্নিগ্ধার জন্ম তারিখ ও লেখা ছিলো হয়তো বা । আর একটা লাইন - 'আর ফেরানো যায় না ! 'কি করে জানি সেই ডায়েরিটা হারিয়ে যায় !

প্রবোধ দিতেই কি না কে জানে , আমাদের কেউ একজন বলে , ' দ্যাখিস, স্নিগ্ধা একদিন আমাদের কাছেই ফিরে আসবে ' । শুনে, আমরা চরাচর কাঁপিয়ে হেসে উঠি । আমরা ঘুরতে থাকি । ঘুরতে ঘুরতে ঘাসফড়িংনদী সব হতে চেষ্টা করি । পারি না । যদিও আমরা কখনোই বলতে ভুল করি নি - ' বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক ' শহর কে আমরা ভালোবেসে ফেলি । শহর ও আমাদের । অলিগলি চৌরাস্তা । গনগনে রোদ । তাতানো দুপুর । চা । সিঙাড়া । একজন ব্যবসা করতে শুরু করে । টুকটাক । মোমবাতি ব্যবসা । অন্যজন টিয়্যুশনি । তারা খসে পড়ে !

আমরা ও যেতে চাই । রাত ঘন হলে গ্রামে ফিরে দ্যাখি আমার বাবা হরিহর গাঁ ছেড়ে পালিয়ে গেছে । ব্র্যাক কি,গ্রামীন ব্যাংকে তার ঋণের বোঝা ! উঠোনে আমাদের একমাত্র হাতাওয়ালা কিন্তু ভাঙাপা চেয়ারটা তে বসে সেই হিসেব দিচ্ছে করিত্ কর্মা কোনও ফিল্ড অফিসার ! আমার বোন দূর্গা ট্রেন দেখতে গিয়ে আর ফিরে আসে নি ! শহুরে মর্দরা ম্যাস্ রেপের খেলা খেলে তাকে লাশ বানিয়ে ট্রেনের পরিত্যক্ত বগিতেই ফেলে রেখেছে ! আমার মা সর্বজয়া পুলিশ ডাকতে পারে নি , টাকা যে ছিলো না ! আমার পঙ্গু ভাই অমল দইওয়ালার মতো প্রার্থিত ভ্র্যাম্যমান হাসপাতালের অপেক্ষায় কাটিয়ে দেয় বিষন্ন দুপুরগুলো ! কবে যে আর ফ্রি ডাক্তার আসে এই গ্রামে ! আর দ্যাখো সুধার ও বিয়ে হয়ে গেছে এক বুড়ো মহাজনের সঙ্গে !

আমরা আমাদের যাবতীয় ব্যর্থতা, ক্ষোভ, অভিমান, বিষাদকে সঙ্গী করে শেষবারের মতো শহরে ফিরে এসেছিলাম। শেষবার, পুড়ে যাবার আগে, আকাশ ফাটিয়ে আড্ডা দিয়ে শ্মশানের দিকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। আমরা অনুভব করতে চেষ্টা করেছিলাম ইডিপাসের যাত্রাও এমনতরো অসহায় উপায়হীন ছিল কী না। গীর্জায় তখস ঘন্টা ধ্বনি, প্রার্থনার স্বর-'ঈশ্বর ; এ পাপ মহাপাপ, ক্ষমা কইরুক। সকলের মাঝে শান্তি আইসুক 'তবু নির্বাসিত কবির সেই কথাটি মনে পড়ে গিয়েছিলো ' রক্তপাতহীন যুদ্ধকালে অন্তর্গত রক্তক্ষরণে কেউই শান্তি পেতে পারে না। '
গভীর কষ্টে নিমজ্জিত হয়ে আমরা পরষ্পর মুখাগ্নি করে রাতের কপাট বন্ধ করে দিয়েছিলাম।

কতদিন, কতদিন পর যে আবার আমরা মিলিত হই! কী করে, কে যে আমাদের সমবেত করে, আমরা কিছুই জানিনা অথবা জানতে চাইওনা। শুধু শহরে ফিরে এসে দ্যাখি সেইসব দেয়ালগুলো, যেখানে আমরা রাত জেগে লিখে রাখতাম স্বপ্নকথা... বিপ্লব স্পন্দিত হলে আমরাই লেলিন ! সেই দেয়ালগুলো ভরে উঠেছে পরগাছা বট-পাকুরে চারাগাছে, শ্যাওলার সবুজে ! গীর্জার ধ্বনিগুলো আগের মত তেজী স্বরে বাজছে না আর। বেতের বেড়া দেয়া হোটেল কাম চা ষ্টলে আমরা ভাগ করে চা-সিঙ্গাড়া খেতাম, সেখানেও নতুন ইমারত নির্মাণাধীন।

আমাদের মধ্যে যাকে সবচেয়ে চালাক আর সাহসী বলে মানি আমরা, সে-ই শুরু করে প্রথম -' কতদিন পর আমাদের আমাদের দ্যাখা।'- প্রথম বাক্যটা বলে সে এক দীর্ঘ বিরতি নিলে আমরা ভাবি, দীর্ঘদিনপর দ্যাখা - এতে আর নতুনত্ব কি আছে! সে তো আমরা সবাই জানি। সে আবার বলতে শুরু করে -'মাঝখানে আমরা কে কোথায়, কী করেছি, কেউই জানিনা । এতগুলো যোগাযোগহীন দিন আমাদের কী করে কেটে গেল, ভাবলে অবাক হই। আমি অবশ্য সবার সাথেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি...। ' তার কথা বলার ভঙ্গি, ঢং যেন বদলেছে কিছুটা। আমরা ধরতে পারি। আগে সে এরকম কথা বলতে পারতো না। আধা গেঁয়ো আধা শহুরে উচ্চারণ নিয়ে একদিন সে ফোন করেছিলো, আমাদের মনে পড়ে ।
'হেলো স্নিগ্ধা আছইন কি?' বললে কার্ডফোন বুথে আমরা; বাকিরা, আর ও প্রান্তে স্নিগ্ধার স্কুল পড়ুয়া ছোট বোন একই সাথে হেসে উঠেছিলাম হা-হা করে। কিন্তু আজ সে দর্শনের সেই পাগলাটে অধ্যাপক মুজিবুর করিম সরদার, মানে আমাদের সেই সমেয়ের প্রিয় মুজিব স্যারের মতো করে কথা বলতে চেষ্টা করছে! 'বলতে গেলে সেই চেষ্টারই ফল আমাদের আজকের পুনঃমিলনী।' আমরা তার কথা শোনার ফাঁকে ফাঁকে এটুকুও খেয়াল করি যে, এখন পর্যন্ত সে আমাদের তুই , তুমি , আপনি কোনকিছু বলেই সম্বোধন করেনি ! বরং তার ডান হাতের তর্জনী অদ্ভুত এক ভঙ্গি নিয়ে আমাদর চোখের সামনে নেচে উঠেছিল বারবার ! সেটা কি দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতার ফলে, নাকি নেতাসুলভ আচরণের ফল আমরা বুঝে উঠতে পারিনা। কিংবা এইমুহূর্তে কেনই বা তাকে আমাদের নেতা বলে মনে হলো- সেটাও আমাদের কাছে একটা বিস্ময় হয়ে ধরা দেয়। তবে কি মাঝের এই দিনগুলোতে সে সত্যিই নেতা হবার মতো যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে! বিশেষত : রপ্ত করে নিয়েছে কথা বলার বিশেষ ভঙ্গিমাটি!

'আমি ভবে দেখেছি যে,কলেজ লাইফে আমাদের যে স্বপ্ন ছিলো,যে স্বপ্ন ধরে চড়কির মতো ঘুরে ঘুরে আমরা নষ্ট করেছি আমাদের জীবনের দামী সময় । একটা মিথ্যে কে বিন্দু ভেবে শুভংকরের বৃত্ত গড়েছিলাম আমরা ....' 'আসলে ফাঁকি আছে, ছিলো কোথাও ... ' 'আমরা ভুল স্বপ্নে ' .... ' আমাদের যা ছিলো, সেই সময়ে আমাদের সব কিছু মিথ্যে ছিলো না । আমাদের বন্ধুত্বের প্রগাঢ়তা,আমাদের হৃদতাই আবার আমাদের এক করেছে । এবার একটা মিলিত চেষ্টা চাই,আমাদের নিজেদের জন্য । আমাদের বলতে,শুধু আমাদের । বৃহত্তর অংশের ভাগ্য বদলানোর সস্তা সেন্টিমেন্ট নিয়ে আমাদের দিন আর ব্যয় করতে রাজি নই.... ' তার কথা শেষ হয় না । তার আগেই আমাদের কর্টেজ সার্কিটে ব্যাক গিয়ার লাগে ! মুহুর্মুর দৃশ্যপট সামনে এসে দাঁড়ায় । লাল লাল সব বই, ছাদ ফাটিয়ে আড্ডা দেবার দৃশ্য ! ডায়েরীতে আমরা লিখে রেখেছিলাম ' আর ফেরানো যায় না ' - নি:সঙ্গ একটা বাক্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো সপাং সপাং লাফাতে লাফাতে সামনে এসে যায় । এতোদিন পরও কেনো জানি মুজিব স্যারের কথা কানে বাজতে শুরু করে ' নিয়ন্ত্রণহীন আঙ্খাকা বৈষম্য জিইয়ে রাখে' । কিন্তু এইসব কিছু ছাপিয়ে আমারা তার দিকে মনোনিবেশ করি । আমাদের যাবতীয় আগ্রহের কেন্দ্র-বিন্দু হয়ে উঠে সে । আমরা তার কথায় সম্মোহিত হয়ে পড়ি । হয়তো বুঝে ফেলি আসলেই সব ভুল ছিলো । কিংবা ভুলই বুঝি ।

( আগামী পর্বে সমাপ্য )


মন্তব্য

পুতুল এর ছবি

আসলেই সব ভুল ছিল?
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সুমন সুপান্থ এর ছবি

গল্প লেখক তো তা মনে করেন না । গল্পের পাত্র -পাত্রীরা যদি মনে করেন, কি করা যায় ! অসহায় গল্পকার !! কপাল ! কপাল !

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

পুতুল এর ছবি

কপালের নাম গোপাল!
গল্পের পাঠক তা মনে করে না। খুব হৃদয় দিয়ে লিখেছেন। সে সময়ের অনেক কিছুই এখন অনেকে ভুল বলে। হয়তো ব্যর্থতা বলতে লজ্জা পায়! কিংবা, নিজেদের (মানে বিপ্লবের হোতারা) লাগামহীন চাহিদার কাছে নিজেরাই পরাজিত এসব বলে আনন্দ পায়।
আপনার শানিত পেন্সিলের ডগায় এ স্ববিরোধিতা গুলো সুন্দর ভাবে ভেসে উঠেছে!
পড়ে মুগ্ধ হলাম।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সুমন সুপান্থ এর ছবি

পুতুল
আপনা কথাগুলোই হয়তো ঠিক । ব্যর্থতা না বলে ভুল বলি । আমি বা আমার মতো আরো যারা ।


এ স্ববিরোধিতা গুলো সুন্দর
এই বিষয়টাই গল্পে ধরতে চেয়েছিলাম । মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

অতিথি লেখক এর ছবি

আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
কীর্তিনাশা

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আপনার অপেক্ষা দীর্ঘায়িত না করে শীঘ্রই ২য় পর্ব শেষ করবো ।
ভালো থাকুন, কীর্তিমান কীর্তিনাশা !

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

তারেক এর ছবি

অসাধারণ! মুগ্ধ হয়ে পড়ে যেতে হল... আমি মাঝে মাঝে বুঝি না ঠিক কী ধরণের লেখা আমার ভালো লাগে পড়তে... এই লেখাগুলো সেই বিবেচনা অনেক সহজ করে দেয় হাসি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

সুমন সুপান্থ এর ছবি

তাই ?
আমার ও একটা সংশয় মুছে যায় ! তারেক' এর মতো মনযোগী লেখক/পাঠক যে ব্লগে লিখেন/পড়েন, সেখানে কষ্টকর হলে ও এইসব লেখার নামে ছাইপাশ ( বিনয় নয়, নিজের লেখা সম্পর্কে এটুকুই ধারনা সঞ্চয় হয়েছে এতো দিনে ) লিখে যাওয়া যায় ।
অশেষ ধন্যবাদ, তারেক ।

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

প্রথম পর্ব পড়লাম। সমাপ্তির পর কথা বলা যাবে।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আপানার ' কথা ' র অপেক্ষায় রইলাম , কবিবরেষূ ।

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা কী গল্প না দীর্ঘ কোনো কবিতা? আমি গল্প কিংবা দীর্ঘ কবিতা কোনোটারও সংজ্ঞা জানি না। একজন নিরীহ গোবেচারা পাঠক হিসেবে শুধু এটুকুই বলতে পারি, লেখাটা আমি খুবই উপভোগ করেছি।
পান্থ রহমান রেজা

সুমন সুপান্থ এর ছবি

পান্থ
পাওয়া গেলো শেষে ? সেই ভালো ।
কবিতাক্রান্ত গদ্যের বিশেষন দিচ্ছো না তো ভাই ! সেটা তো দুর্বলতা বলেই জানি । আমি ও গোবেচারা লেখক,তার লেখা তো আরেক গোবেচারা পাঠকের কাছেই উপভোগ্য হবার কথা । কিন্তু আমি যে পান্থের গদ্যের ভীষণ ভক্ত ছিলাম এককালে ! কে তবে লেখক ? কে ই বা পাঠক ?

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

আমিও কান পেতে আছি।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

সুমন সুপান্থ এর ছবি

এই মুগ্ধতা পাবো বলে আমি ও পেতে আছি আরও এক শতরঞ্জি !
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

গল্পটা বেশ দাঁড়িয়ে গেছে। একটু কাব্যিক। দেখি আগামি পর্বে চরিত্র ও প্রবাহের কী পরিণতি দাঁড়ায়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

সেই ভালো ফারুক ভাই
আপনি অপেক্ষা করছেন পরের পর্বের জন্য, সেই ঢের আমার জন্য। দ্যাখি, গল্পপ্রবাহের সঙ্গে চরিত্রদের কোথায় নিয়ে যাওয়া যায় !
না কি গল্পকারই ভেসে যান কে জানে !!

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

স্নিগ্ধা এর ছবি

প্রথম অংশটুকু পড়তে পড়তে ভাবছিলাম এ তো আরেকটা কবিতাই - সুন্দর, 'সুমন সুপান্থীয়', টানটান - কিন্তু কবিতাই। তাহলে কি 'গদ্য' বলে উদ্দেশিত হলেও আসলে 'কবিতা'র ঘেরাটোপ থেকে আর বেরুনো হলো না? কিন্তু একটু পরেই ভাঙ্গলো ভুল। 'গদ্য'ই বটে - তবে আপনারই ভাষায় "সীমানা নিরপেক্ষ"। পুরোটা যদিও বোঝা যাবে শেষ করার পর - এখন পর্য্যন্ত - চমৎকার!

(অন্য বিষয়ঃ আপনার এতো চিন্তিত হবার কিছুই নেই - গল্পের স্নিগ্ধা যে এই আমি স্নিগ্ধা নই তা খুব ভালো করেই জানি - সেটা ভাবার মত এত বড় নার্সিসিস্ট আমি নই হাসি তবে আমার নামটা আমি পছন্দ করি, কাজেই আপনার গল্পের নায়িকাকে একটা সুন্দর নাম দেয়ার জন্য কিছু কৃতিত্ব আপনি পেতে পারেন দেঁতো হাসি )

সুমন সুপান্থ এর ছবি

মর্মাহত নয়,ভয় ধরে গিয়েছিলো যখন পান্থ রেজা ও এমন করেই বললেন । আমার দুই মহান মনযোগী পাঠক ই যদি বলেন গদ্য-পদ্যের সীমানা মিলছে না, ভয় পাবো না বলুন ?( কাব্যক্রান্ত গদ্য মানে তো, গদ্যেরই মৃত্যু ঘটিয়ে দেয়া )
নিজেও কবিতানারীর দাস কি না ! তার শ্বাস-প্রশ্বাস এসে লাগে গায় ! পালাতে তো পারি না ! ধীরে ধীরে পালাতে চাচ্ছি । তবে অই আপনার মতোই, দেরীতে আমার ও ভেঙ্গেছে ভুল !
এখন পর্য্যন্ত চমত্কার সেই তো অনেক পাওয়া গল্পকারের জন্য ।
ধন্যবাদ পড়বার ও মন্তব্যের জন্য

( অল্প সল্প নার্সিসম থাকা দোষের কিছু নয় মনে হয় । আত্মপ্রেম আছে বলেই এতো এতো মগ্নতা চরাচরে )
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

স্নিগ্ধা এর ছবি

কাব্যক্রান্ত গদ্য মানে তো, গদ্যেরই মৃত্যু ঘটিয়ে দেয়া

আমি লিখিয়ে নই, লেখার অলিখিতি কানুন জানি না, সীমানা নির্দেশ করার তো প্রশ্নই আসে না - কিন্তু আপনার ওপরের কথার সাথে একদম একমত নই।

কিছু কিছু প্রিয়তা 'কাল নিরপেক্ষ', আমার জন্য সেরকম প্রিয় একজন বুদ্ধদেব বসু। তার লেখা অনেক গদ্য শুধু নয়, কিছু উপন্যাসও ভয়ানক ভাবে কাব্যাক্রান্ত -
এবং ......?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ওসব তো অনেক হলো, অনেক স্বপ্ন,সকল স্বপ্নের লাশ ।
এইবার নতুন কথা,নতুন গল্প,নতুন ভাবনা
'বলতে হলে নতুন কথা,চেনা পথের বাইরে চলো'
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

এখন পথ তৈরী হলেই হয় । চলতে তো আপত্তি নেই , মহাত্মন !
পথ বানানোর দায়িত্বটা যদি আপনি নেন আর কি ! আমরা আমলেখকেরা অই পথেই গেলাম....

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমার কৈশোরে পা-ফো, বন্ধুসভার কারণে যাঁদের লেখা ঝিম ধরাতো তাঁদের ৩/৪ জনকে ব্লগে পেয়েছি।
সুপান্থ'দা দেরী করে ব্লগে আসলেও কিংবা অনিয়মিত হলেও, এ গল্পের ১ম পর্ব একটানে নিয়ে গেলো আগে। সে-ই ঘ্রাণ। টানটান গদ্য। কিছু কিছু মুগ্ধতা বিগত হয় না কখনো। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি, আর বলছি - এরকম লেখা নিয়মিত চাই।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

শিমুলের মতো খ্যাতিমান ব্লগারদের মুগ্ধতা জাগাতে পারলো যে লেখা, সেটার ২য় পর্ব তো আসতেই হয় । আজই শেষ করবো হয়তো ।
হুম, কিছু ভাল্লাগা বিগত হয় না কখনো, সত্যি ! এই যে ...

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মনে হচ্ছে কেন আগে পড়িনি লেখাটা! বেটার লেইট দ্যান নেভার! এখন দ্বিতীয় পর্বটা পড়ব। চূড়ান্ত মন্তব্য তারপরেই না হয় করা যাবে! হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।