ছফাগিরি। কিস্তি সাত।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বুধ, ০৬/০১/২০১০ - ১২:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকের কিস্তির মূল প্রবন্ধ আহমদ ছফার ‘রাজনৈতিক জটিলতা’। এই প্রবন্ধে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার প্রকৃত কারণগুলো ছফা তত্ত্বের আকারে বিশ্লেষণ করেছেন। পাকিস্তান ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল একাত্তরের যুদ্ধে। প্রতিবেশি ভারত বাংলাদেশের পক্ষাবলম্বন করেছিল। এর পেছনে অনেক কয়টি কারণ ছিল। কয়েকটা কারণ আগের কিস্তিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ছফার মতে কারণগুলো ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে উৎসারিত। পাকিস্তানের প্রতি ভারতের শাসকশ্রেণীর এক ধরণের বিজাতীয় ঘৃণা ছিল। ভৌগোলিক মানচিত্রের ম্যাজিক অখণ্ড পাকিস্তানের এক্সপেরিমেন্ট বেশিদিন টিকবে না ভারতের এই ধারণা বেশ দৃঢ় ছিল। ভারত-চীন সম্পর্ক অবনতি হবার পর পাকিস্তান তাদের জন্য একটা হুমকি হয়ে দাঁড়াল। ভারতের সেই কালে অর্থনীতির বুনিয়াদ পোক্ত ছিল না। তা সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে হল অনেক। রাজ্যগুলোতে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছিল দ্রুত। এই সময় যুদ্ধের মাধ্যমে ঘটনার মোড় অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া যায়। প্রতিপক্ষ হতে পারে চীন বা পাকিস্তান। কিন্তু আগে এই ধরণের যুদ্ধ করতে গিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীন অবস্থা ভাল না হয়ে আরো খারাপের দিকে চলে গেছিল। এদিকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ তীব্রতর হতে লাগল। …

সরাসরি যুদ্ধে না গিয়ে এই দুই অংশের দ্বন্দ্বটা আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষণা না করেও যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া সম্ভব এবং তাতে জয়লাভের সম্ভাবনা অত্যধিক। ভারতীয় শাসকবর্গ প্রচারমাধ্যমগুলো এই লক্ষ্যে ব্যবহার করতেন।

উনিশশ বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলন এবং উনিশশ চুয়ান্ন সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের খবর ভারতীয় প্রচারমাধ্যম এবং পত্রপত্রিকা ফলাও প্রচার করেছিল। এই প্রচারণার মধ্যে কোন এক দেশের অবহেলিত অঞ্চলের জনগণ যে সংগ্রাম করে আপন ভাষার কথা বলার অধিকার অর্জন এবং আরো নানা দাবি দাওয়া আদায় করে নিচ্ছে, তার চাইতে অধিক কিছু ছিল। পাকিস্তানের ভাঙ্গনের বীজটি অঙ্কুরিত হতে দেখে তারা উল্লসিত হয়েছিল। সেই মনোভঙ্গিটুকুও প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।

ভারতের পররাষ্ট্রনীতির সাথে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির মিল পাওয়া যায়। অবশ্য ক্ষমতাশালী দেশগুলো এই একই নীতিতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে। তথ্যকে নিজেদের মত করে প্রচার করার প্রবণতা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। আরো নানা হিসাব আছে। এ প্রসঙ্গে রেফারেন্স হিসেবে পড়া যায় জন পারকিনসের ‘কনফেশনস্ অফ এন ইকোনোমিক হিটম্যান’। ছফার যুদ্ধকালীন ভারত-বিশ্লেষণ পরবর্তীকালে ব্যবহৃত হয়েছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে। যুদ্ধাপরাধীরা নিজেদের অপকর্ম থেকে রেহাই পাবার জন্য বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে চালিয়ে নিজেদের অবস্থা জায়েজ করে। অজস্র শ্যামা সঙ্গীত রচয়িতা অসাম্প্রদায়িক কবি কাজী নজরুল ইসলামের ইসলাম বিষয়ে লেখা কবিতা এরা রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। তথ্য প্রমাণ বা ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা এদের নেই। এদের আস্ফালন কেবল চুরিতে। অন্যের খেঁটে খুঁটে বের করা তথ্য নিজের কাজে ব্যবহার করা ছাড়া আর কোন যোগ্যতা এদের নাই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতকে গালাগাল করে ভোট পাবার এক অদ্ভুত তরিকা সৃষ্টি হবার কারণ নিয়ে এদেশের গবেষকরা একদিন অভিসন্দর্ভ করবেন। সাদামাটা যুক্তি হল- ভারত মানেই হিন্দুরাষ্ট্র। যে সরকার ভারতকে পীর মানে তাদের মনে হিন্দুরাষ্ট্রের বাসনা এখনো মেটে নাই। বাংলাদেশ হিন্দুস্থান হয়ে যাবে- এই জুজু দেখিয়ে রাজনৈতিক সফলতা এসে গেছে। স্বৈরাচারী এরশাদের সাথে বা মৌলবাদী রাজনৈতিক দলের সাথে আঁতাত করতে বাধে নি এদেশের দুটা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কোনটিরই। অর্থাৎ যে করেই হোক ক্ষমতা চাই। ক্ষমতার মিউজিক্যাল চেয়ার বানানোর পেছনে সাধারণ জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক শুদ্ধ জ্ঞানের অভাব প্রধান কারণ। আরো সহজ করে বললে এদেশের সাধারণ মানুষের মাথা থেকে সাম্প্রদায়িকতার ভূত পুরোপুরি নামে নি। তাই এত হযবরল। মুক্তিযুদ্ধকে দল কিংবা কেন্দ্রভিত্তিক করে ফেলার ইতিহাস নিয়ে ইতিহাস রচনার সময় এসে গেছে। ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করলে কি হত? স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশ নয় মাসে হত না। যুদ্ধ আরো দীর্ঘ মেয়াদে চলত। কিন্তু স্বাধীন আমরা হতাম। ফলে পরিশুদ্ধ একটা দেশ হয়ত আমরা পেতাম। বিকার কম থাকত। তবে এই হাইপোথিসিস নিয়ে সন্দেহ আছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধ হয়েছিল ষোল বছর। লাওস বা ভিয়েতনামের দুনীর্তিপরায়ন দেশ হিসেবে সাম্প্রতিক স্বীকৃতি দেখে উইল ডুরান্টের এপিগ্রাফ নিয়ে সন্দেহ হয়। ‘এ গ্রেট সিভিলাইজেশন ইজ নট কন্‌কোয়ার্ড আন্‌টিল ইট হেজ ডেস্‌ট্রইড্ ইটসেলফ ফ্রম উইদইন’। মেল গিবসন তাঁর ‘এপোক্যালিপটো’ সিনেমা শুরু করছিলেন ডুরান্টের এই কথা দিয়ে। যাই হোক। ছফাতে ফিরে যাই।

… উনিশশ পয়ষট্টি সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের আক্রমণ মূলত পশ্চিম রণাঙ্গনেই সীমিত রেখেছিল। আক্রমণকারী হিসেবে উপস্থিত হলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মনোভাব বিগড়ে যাবে – এ আশঙ্কা করেই ভারতীয় সেনাবাহিনী বলতে গেলে একেবারে অরক্ষিত পূর্ব পাকিস্তানের স্থলপথ, জলপথ কিংবা বিমানপথে আক্রমণ করেনি। কোন রকমের সামরিক হামলা না করে পূর্ব পাকিস্তানের জনমতকে জয় করার ইচ্ছাই ছিল তার মূলে- এ কথা স্বয়ং ভারতীয় জেনারেল কাউলও তাঁর আত্মকথায় স্বীকার করেছেন।

পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে বিপন্ন হয়ে পড়লে ভারতের জন্য আর সামরিক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না- ভারতের শাসকবর্গের এটাই ধারণা ছিল। এছাড়া ভারতের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য কিছুটা ছিল। …

ছয়দফার অন্তর্ভুক্ত দফাসমূহের একটি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের লোক দিয়ে একটা প্যারামিলিটারি গঠন করতে হবে। অন্য একটি দফায় ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সুযোগ সুবিধামত যে কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদন করার অধিকার দিতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের হুগলির পাটকলগুলো কাঁচামালের অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান বিদেশে অঢেল পাট রপ্তানি করে এবং তাকে বিদেশ থেকে প্রচুর কয়লা আমদানি করতে হয়। ভারতের কয়লার বিনিময়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাট আমদানি করতে পারলে চট শিল্পের মত ভারতের একটি বুনিয়াদি শিল্পের সঙ্কটের সহজ সমাধান হয়ে যায়। ইত্যকার বিষয় বিবেচনা করে শুরু থেকেই ভারতের শাসক কংগ্রেস আওয়ামী লীগ এবং শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি একটি অনুকূল মনোভাব তৈরি করে রেখেছিল। ছয়ছফা আন্দোলন যখন ধাপে ধাপে বেগ ও আবেগ সঞ্চয় করে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছিল- তার প্রতিটা ধাপে, প্রতিটা ধাপে, প্রতিটা উৎক্রান্তিতে আওয়ামী লীগ যে কৌশল এবং প্রচার পদ্ধতি গ্রহণ করেছিল ভারতের শাসক কংগ্রেস পত্রপত্রিকা এবং প্রচারমাধ্যম তার ঢালাও প্রচার করেছিল। ফলে ভারতীয় জনগনের মধ্যেও শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর আন্দোলনের প্রতি একটি স্বতঃস্ফূর্ত অনুরাগ জন্মলাভ করে।

ভারতের কংগ্রেস দল তাদের প্রচারণায় এটা প্রতিষ্ঠা করেছিল- রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আবির্ভূত হলে জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্ব ভুল বলে প্রমাণ হবে। আসল কথা তারা প্রচার মাধ্যমে আনতে দেয় নাই। …

বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পুরোপুরি দ্বিজাতিতত্ত্বের ভ্রম সংশোধন ছিল না, এর মধ্যে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা এবং প্রাগ্রসর সমাজদর্শন সমাজতন্ত্রের প্রচুর উপাদান ছিল।

সেকালের ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসের বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের পেছনে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার কারণ আহমদ ছফা বিস্তারিত লিখেছেন। …

কেরালাতে কমিউনিস্টদের প্রভাব বৃদ্ধি, আসামে ভাষাদাঙ্গা, বিহারে খরা, উড়িষ্যায় দুর্ভিক্ষ, তামিল ভাষাভাষী অঞ্চলে হিন্দিবিরোধী আন্দোলন এবং পশ্চিম বাংলায় চারু মজুমদার, অসীম ব্যানার্জী ও কানু স্যানালের দলের উৎপাত জনজীবনকে প্রায় অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল এবং রাজ্যগুলোর মধ্যে শাসক কংগ্রেসের প্রভাব দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছিল। দুর্নীতি, স্বজনতোষণ, গণপীড়নের এমন দৃষ্টান্ত শাসক কংগ্রেস স্থাপন করেছিল যে জনসাধারণের হৃত আস্থা ফিরিয়ে আনার কোন পথ দৃশ্যত খোলা ছিল না।

সর্বশ্রেণীর মানুষ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সমর্থনের রাজপথে নেমে এল। পশ্চিম বাংলা এবং ত্রিপুরার জনসাধারণ তাতে অগ্রণী ভূমিকা নিল। ক্ষমাতাসীন কংগ্রেস সরকার জনমতের এই শক্তিকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে আরম্ভ করল যে বিরোধী দলসমূহেরও সরকারের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বাংলাদেশের কথা বলতে হল। এক বাংলাদেশ সমস্যা সমস্ত ভারতীয় সমস্যা চাপা দিল। জনগণ যেমন, তেমনি বিরোধী দলগুলোও বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে আরম্ভ করল।

এই প্রবন্ধের পঞ্চম অধ্যায়ে পাকিস্তান কি হিসাব কষে যুদ্ধে লিপ্ত হল তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে ভারতের যুদ্ধে সরাসরি না জড়িয়ে কালক্ষেপণ করার রহস্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৃষ্ট রাজনৈতিক জটিলতা। অষ্টম ও নবম অধ্যায়ে মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দলগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দশম অধ্যায় আহমদ ছফা সজ্ঞানে তাঁর বইয়ের পরের সংকলনে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রিসাইজড্ এই অধ্যায়ের অনেক কথা বেশ গুরুত্বের। উল্লেখ না করে পারা যাবে না। শেষের দুটা প্যারা দেখি। …

যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন, বাংলাদেশে একটি মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। রাশিয়া চায়নি, আমেরিকা চায়নি, ভারত চায়নি, চীন চায়নি, পাকিস্তান চায়নি বাংলাদেশে বাঙালিদের একটি জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক। তথাপি বাঙালি জনগণের দাবি অনুসারে এখানে একটি যুদ্ধ হয়েছে, হতে পারে সে যুদ্ধের ফলাফল অপরে আত্মসাৎ করেছে।

যাঁরা একটি নতুন জাতির জন্মের স্বপ্ন দেখে রণধ্বনি তুলেছিলেন, সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন- সমাজের কোলে বিকশিত সেই কেন্দ্রবিন্দুটি থেকে আগামী দিনের নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবেই আসবে।

এই অপর কে? অথবা কে কে? ইদানীং তো দেখা যাচ্ছে একাত্তরের রাজাকার, আল বদরেরা মুক্তিযুদ্ধের ফলাফল আত্মসাৎ করতে চাইছে।

ভারত চেষ্টা করে ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে পাক-ভারত যুদ্ধ নামে চালাতে। ভারতের হিন্দি সিনেমা ‘সিক্সটিন ডিসেম্বর’ বা ‘১৯৭১’ নামের সিনেমায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসেই না।(আরো অজস্র সিনেমায় ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গ এলে বাংলাদেশের অবস্থানকে খাটো করে দেখান হয়। এই দুটা চলচ্চিত্রের নাম করলাম কারণ এখানে সরাসরি ‘ষোলই ডিসেম্বর’ এবং ‘১৯৭১’ সালের নাম নেয়ার পর ও বাংলাদেশকে প্রায় গায়েব করে দেয়া হয়েছে ঘটনাপঞ্জি থেকে।) ভারতের রাষ্ট্রীয় হেজিমনি এখানে কারণ হতে পারে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের ইমেজ অনেকাংশে বাড়ায়। এতে বাংলাদেশ বাদ যায় তাতে ভারতের কী।

পঞ্চম অধ্যায়ে যাই। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকেরা ভাবত পূর্ব পাকিস্তানে যেসব আন্দোলন মাথাচাড়া দিচ্ছে নেপথ্যে সেগুলোর উস্কানিদাতা হিন্দুরা। তাই পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য দাবি নিয়ে কথা উঠলে তারা ভারতীয় চরদের জঘন্য ষড়যন্ত্র নাম দিয়ে চালাত। এটা ঢালাওভাবে তারা প্রচারমাধ্যমে চালাত। পাকিস্তানী সাধারণ জনতা মিডিয়ার এসব তথ্য হজম করে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতাকে তাদের ঘরোয়া সমস্যা হিসেবে মেনে নিল। অন্য মিডিয়ার খবরকে আমলে নেয়ার প্রয়োজন মনে করল না। যুদ্ধবাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে দ্বিতীয় দফা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল আমেরিকার জনতা। অবাধ তথ্যের যুগে সাধারণ জনতা কেন সহজপাচ্য তথ্য হজম করে তার উত্তর আমার জানা নেই।…

অতীতের বাংলা ভাষা আন্দোলন, হরফ বর্জন, রবীন্দ্রসাহিত্য পঠন-পাঠন ইত্যাদি প্রশ্নের প্রত্যেকটিতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী যে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, তাতে একটি বিষয়ই সম্যক প্রমাণিত হয়েছে যে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এবং জনগণের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানি প্রভাবমুক্ত করে একটি খাঁটি পাকিস্তানি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নির্মাণ করার জন্যই ঐ সব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।১০

ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রকাশ্যে আলোচনার ছল করে গোপনে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অস্ত্র এবং সৈন্য আমদানি করে সেনানিবাসগুলো ভর্তি করে ফেললেন। অবশেষে পঁচিশে মার্চের রাতে আঘাত হানার চূড়ান্ত সংকল্প নিয়ে সৈন্যদের নির্দেশ দান করলেন ইয়াহিয়া। প্রথমে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা শহর হেস্তনেস্ত-লণ্ডভণ্ড করে দূরবর্তী শিরা উপশিরাসমূহ কেটে দেয়ার জন্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল সেনাবাহিনী। ১১

১৯৭১ সালের আটাশে জুলাই মুক্তধারা থেকে প্রকাশিত ছফার ‘জাগ্রত বাংলাদেশ’ বইয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চরিত্র উন্মোচন করছেন। ...

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হল একটা অত্যাচারী বাহিনী। বাংলাদেশে তারাই রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিয়েছে, স্বাধীনতা হরণ করেছে এবং তেইশটি বছর ধরে শোষক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে শোষণ করার কাজে মদত দিয়ে আসছে, তাছাড়া পঁচিশে মার্চের রাত থেকে সেই যে একটানা নরহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, জ্বালানো পোড়ানো এবং যা কিছুতে বাঙালিত্বের চিহ্ন আছে, তাই ধ্বংস করার কাপালিক-সুলভ উন্মত্ত আগ্রহ বাঙালির অন্তর মনকে সেনাবাহিনীর প্রতি ঘৃণায় বিষিয়ে তুলেছে। এই তীব্র ঘৃণা সমাজের কোনো একটি বিশেষ শ্রেণীর বা সম্প্রদায়ের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে সমাজের সকল স্তর, সকল শ্রেণীকে ভয়ানকভাবে স্পর্শ করেছে। অত্যাচারীর প্রতি, খুনির প্রতি, স্বাধীনতা হরণকারী এবং গণতন্ত্র হত্যাকারী এবং বিশ্বের মুক্তিকামী শান্তিবাদী মানুষের দুশমনের প্রতি গোটা দেশের ক্ষমাহীন ঘৃণাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সঞ্চার করেছে তীব্র গতি। ১২

পাকিস্তানের শাসকেরা তাদের জনগণকে বিশ্বাস করিয়েছে হিন্দুদের উস্কানিতে পাকিস্তান ভাঙ্গার পাঁয়তারা চলছে। সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। তাদের মূল চিন্তা ছিল হিন্দুদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হলে তাদের বৃহত্তর অংশ ভারতে পালাতে বাধ্য হবে। এদের ছেড়ে যাওয়া সম্পত্তি আর জমি পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করে দিলে উত্তেজনা আস্তে আস্তে কমে আসবে। আর পাকিস্তান ভাঙ্গার ভারত যে স্বপ্ন দেখেছিল তারা নিজেরাই এত উদ্বাস্তু নিয়ে বেসামাল হবে। চরমপন্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। ভারতের অভ্যন্তরীণ শাসন ব্যবস্থার উপর অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভারতকে এই রকম একটা উচিত শিক্ষা দেওয়ার মওকা পাকিস্তানের শাসকেরা ছেড়ে দিতে চাইছিল না।…

কোটিখানেক সংখ্যালঘুকে ঠেলে যদি যদি ওপাড়ে প্রেরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে ভারতের দুর্দশার অন্ত থাকবে না- যে ভারত গোড়া থেকে পাকিস্তানকে ভাঙ্গার সম্ভাবনাটি আসন্ন করে তুলবে।১৩

এবার অধ্যায় ছয়। ভারত চায় নি পাকিস্তান ভেঙ্গে দুই টুকরা হোক। বরং উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানকে দুর্বল করা। আহমদ ছফা তাঁর এই বিশ্লেষণকে এগিয়ে নিয়েছেন তাঁর প্রবন্ধের এই অধ্যায়ে। ছয় দফা দাবি আদায় হলে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সুবিধা বেড়ে যাবে। পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের প্রভাব কমে এলে পাকিস্তান কিছুটা শ্লথ হবে। ভাষাভিত্তিক একটা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা পেলে তার প্রভাব ভারতের ওপর পড়ার কথা তারা একদম ভাবে নি সেটা বলা যাবে না। ফলে ভারত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চায় নি। …

কেঁচো খুড়তে গেলে ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম অনুসারে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে, এই আশঙ্কা করেই ভারত প্রথমে সরাসরি একটি যুদ্ধে অবতীর্ণ না নিজে চাপ প্রয়োগ করে এবং বৃহৎ শক্তবর্গকে দিয়ে চাপ প্রয়োগ করিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিল। ভারতের দাবি ছিল, পাকিস্তান বাস্তুত্যাগী অধিবাসীদের ফেরত গ্রহণ করুক, তাদের নিশ্চিন্ত এবং নির্বিঘ্ন জীবনযাপনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হোক, পূর্ব পাকিস্তানিদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়া হোক এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেয়া হোক।১৪

অন্যদিকে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলে এই ঘটনাকে নিজেদের ঘরোয়া সমস্যা হিসেবে দেখাতে তৎপর ছিল। এই অধ্যায়ে লেখা আহমদ ছফার বক্তব্যকে আমি একটু সংক্ষেপে বলে দেই। তবে মূল প্রবন্ধটি পড়লে উপকারের আশা বেশি। ভারত বিশ্ব নেতাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ সমস্যার একটা রাজনৈতিক সুরাহা প্রয়োজন। এদিকে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি ভারতের জনসাধারণের সহানুভূতি সময়ের সাথে সাথে কমে আসছিল। এর মধ্যে কংগ্রেসের বিরোধী দলগুলো খুনি জল্লাদ ইয়াহিয়ার সাথে ভারত সরকারের আপোষ রফার প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করে শুরু করে দেয়। ভারতের সময়ক্ষেপণ দেখে আওয়ামী লীগের নেতাদের মনোবলে ফাটল দেখা দিল। কংগ্রেসের প্রতি তাদের আস্থার অভাব দেখা গেল। অন্যদিকে শরণার্থীদের মধ্যে শতকরা আশিভাগ ছিল হিন্দু। কোন মতে রাষ্ট্র পাকিস্তান টিকে গেলে কখনো স্বেচ্ছায় নিজের দেশে ফিরে যাবার সম্ভাবনা এদের নেই। ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া এদেশের গেরিলাদের ভারত সরকার ভারী অস্ত্র না দেয়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধে তারা বেঘোরে মারা যাওয়ার ঘটনা বেড়ে গেল, ফলে তাদের মধ্যেও অবিশ্বাস দানা বাঁধছিল। …

বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে এবং স্বাধীনতার প্রতি দুর্দমনীয় স্পৃহায় ছোট ছোট প্রতিরোধবাহিনী জন্মলাভ করছিল। তাঁরা সংখ্যায় ছিলেন যথেষ্ট রকমের মুষ্টিমেয়, চরিত্রে অনেক বেশি দৃঢ় ও প্রত্যয়সমৃদ্ধ এবং সমাজদর্শনের দিক দিয়ে অনেক বেশি প্রাগ্রসর।১৫

যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছিল, ততই তাঁদের সংখ্যা বাড়ছিল। এভাবে যুদ্ধটি যদি গণযুদ্ধের আকারে ভিয়েতনামের মত ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে ভারতের সমূহ সর্বনাশ। ১৬

অতএব ভেতর বাইরের অসংখ্য দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য ভারতের সামনে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন খোলাপথ রইল না। ভারত সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হল। একে একে সোভিয়েত প্রভাবাধীন সরকারসমূহ দিয়ে ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগ সরকারকে বাংলাদেশের আইনানুগ সরকার বলে স্বীকার করিয়ে নিল। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন প্রভৃতি পাশ্চাত্য দেশসমূহের রাজধানী সফর করে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করে এলেন, যদি সত্যি সত্যি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ লাগে, অন্তত তাঁরা যেন পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ না হন এবং জনগণকে বোঝাতে চাইলেন যে ভারত যদি যুদ্ধ করে, তাহলে করবে একান্ত বাধ্য হয়ে।১৭

… এই প্রবন্ধের বাকি অধ্যায়গুলো নিয়ে পরের কিস্তিতে আলোচনা করার আশা রাখি।

ভারত একাত্তরের যুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে লড়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছিল আপ্রাণ। শেষ পর্যন্ত আমরা জয়ী হয়েছিলাম। রাষ্ট্র বাংলাদেশ আমরা চালিয়েছি আমাদের ভোটাধিকার বলে (মাঝের কিছুকাল সামরিক শাসনকে বাদ দিলে- তবে সেটাও কম সময়কালের নয়)। ভারতীয় প্রচারমাধ্যমের অকুণ্ঠ সমর্থনের পেছনে রাজনৈতিক চাল থাকলেও সাধারণ জনতা বাংলাদেশের মানুষকে অন্তত লাথি মেরে তাড়ায় নাই, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারে নাই, মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে হাজির ও হয় নাই। আশ্রয় দিয়েছে। খাদ্য দিয়েছে। এটা অনেকাংশে বিশাল সাহায্য। আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি এটার মর্ম বুঝি। ছফাগিরি কিস্তি দুইয়ের শুরুতে আমি আমার অভিজ্ঞতা কিছুটা লিখেছিলাম। আমাদের পাড়ায় হিন্দু বস্তিতে আগুন দেয়ার পর বস্তির লোকজনকে আশ্রয় দিয়েছিলাম দালানের বসবাসরত লোকেরা। একটা পাতলা চাদরে মেঝেতে শুয়ে কিংবা সামান্য ডাল ভাত পেয়ে ও তাদের চোখে কৃতজ্ঞতার যে ঝিলিক আমি দেখেছিলাম এখনো মাথা থেকে সেটা সরে নি। আমি ১৯৭১ দেখি নি। সেই সময়ে প্রতিবেশি ভারত আর যাই হোক আমাদের বিপদে আশ্রয় দিয়েছিল। অমন বিপদে পড়ার পর সামান্য সেই আশ্রয় কতটা অমূল্য ছিল সেটা আমি কিছুটা আন্দাজ করেছিলাম ১৯৯২ সালের সেই ঘটনায়। 'অলাতচক্র' উপন্যাসে ছফা প্রসঙ্গগুলো এনেছেন। কিছুটা নির্লিপ্ত ভাবে। সেই সময়ের রাষ্ট্র ভারতের রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে কথার বিস্তার করেছেন। উপন্যাসে। প্রবন্ধে। সাক্ষাৎকারে। তাঁর এই তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শিবির তাদের মত করে সাজিয়ে গুছিয়ে প্রচার করেছে। কেটে কুটে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আমাদের ওপর যে অমানুষিক অত্যাচার করেছিল তার তথ্য ঢেকে দিয়ে এক তরফা ভারতের রাজনৈতিক স্বার্থের স্বরূপ দেখিয়ে একটা শ্রেণী রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে। আহমদ ছফা পাকিস্তানের বর্বর আচরণের কথা অকপটে বলেছেন আবার ভারতের স্বার্থের কথা বলতে ভুলেননি। ‘অলাতচক্র’ উপন্যাসের এক জায়গায় ছফা লিখেছেন-

তারপরেও ভারতের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার জন্য, বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত একটি যুদ্ধ ঘাড়ে তুলে নিচ্ছে। ভারতের স্বার্থ থাকে থাকুক।১৮

সূত্র

১। আহমদ ছফা মহাফেজখানা , প্রথম খণ্ড , বেহাত বিপ্লব ১৯৭১ – সলিমুল্লাহ খান সম্পাদিত (অন্বেষা প্রকাশন, ফেব্রুয়ারি ২০০৭) [পৃষ্ঠা ১০৩]
২। [পৃষ্ঠা ১০৩] ৩। [পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪] ৪। [পৃষ্ঠা ১০৪]
৫। [পৃষ্ঠা ১০৪] ৬। [পৃষ্ঠা ১০৫] ৭। [পৃষ্ঠা ১০৬]
৮। [পৃষ্ঠা ১০৭] ৯। [পৃষ্ঠা ১৩৯] ১০। [পৃষ্ঠা ১০৮]
১১। [পৃষ্ঠা ১০৮]
১২। জাগ্রত বাংলাদেশ- আহমদ ছফা (মুক্তধারা, জুলাই-১৯৭১) [পৃষ্ঠা ৭৮]
১৩। আহমদ ছফা মহাফেজখানা , প্রথম খণ্ড , বেহাত বিপ্লব ১৯৭১ – সলিমুল্লাহ খান সম্পাদিত (অন্বেষা প্রকাশন, ফেব্রুয়ারি ২০০৭) [পৃষ্ঠা ১০৯]
১৪। [পৃষ্ঠা ১১২-১১৩] ১৫। [পৃষ্ঠা ১১৫] ১৬। [পৃষ্ঠা ১১৫]
১৭। [পৃষ্ঠা ১১৬]
১৮। অলাতচক্র- আহমদ ছফা ( শ্রীপ্রকাশ, জুন ২০০০) [পৃষ্ঠা ১৩৩]

---------

ছফাগিরি। কিস্তি ছয়।


মন্তব্য

সিরাত এর ছবি

আমি একবার স্কিম-পড়েছি, পরে ধরা খামু ফাইন প্রিন্ট না পড়ায়, তাই কোন রেটিং দিলাম না। কিন্তু ইন্টারেস্টিং লাগলো। এই টপিকটা নিয়ে এরকম আরো কিছু লেখা পেলে খারাপ হয় না।

সিরাত এর ছবি

তবে আমার পারকিনস-এর বইটা একটু একচোখা লাগসে। মানে, ঠিক আছে, যেটার প্রতিবাদ সে জানাইসে সেটা বুঝলাম - মানলাম। কিন্তু বাকি যে থিওরাইজিং - আমার কেমন যেন preachy... নাহ, অতিরিক্ত প্রুডিশ লাগতেসিল। মন খারাপ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তা একটু। তাও এরকম কাজ তো কম।

আপনের ইন্টারেস্টিং কথাটা দেখে ছফার 'যদ্যপি আমার গুরু' বইয়ের ইন্টারেস্টিং অনুষঙ্গের কথা মনে পড়ে গেল। বইটার ৯৮-৯৯ পাতা দেখে পড়ে নিতে পারেন।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এই টপিকে সাতটা লেখা নামাইলাম। পঞ্চম কিস্তি পর্যন্ত একটা বe দেখতে পার।

সিরাত এর ছবি

না না, ছফা না। এই বিশেষ টপিকটা। বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রকৃত কারণ, ভারতের সাহায্য বা তা ছাড়া কি হতো - এইসব।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পড়ছি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

সবুজ বাঘ এর ছবি

গভীর মনোযোগে পড়ছি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হ, জনাব। আপনে মন্তব্যে হালুম করেন না ক্যান?

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

উপস্থিত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

মামুন হক এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ। মন দিয়ে পড়ছি।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

বালক এর ছবি

পড়লাম। ভালো লাগলো।

ছোট মুখে বড় একটা কথা বলে দেই : এইসব ভালো লেখাতে ভোট না দেয়াটাই মনে হয় ভালো। ( নিজের মনের কথা বল্লাম, কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়। )

*************************************************************************
"জীবন কিছুটা যাতনা শেখায়__ক্ষুধা ও খরার এই অবেলায়__অতোটা ফুলের প্রয়োজন নেই।"

____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এই পর্বে ওমশান্তি হাসি

তবে

বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পুরোপুরি দ্বিজাতিতত্ত্বের ভ্রম সংশোধন ছিল না, এর মধ্যে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা এবং প্রাগ্রসর সমাজদর্শন সমাজতন্ত্রের প্রচুর উপাদান ছিল।

এই অংশটুকু আমাকে উস্কাচ্ছে।
মুক্তিসংগ্রামে যদি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা এবং প্রাগ্রসর সমাজদর্শন সমাজতন্ত্রের প্রচুর উপাদান থেকেই থাকে তাহলে মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে ধর্মভিত্তিক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভ্রম পুরোপুরি সংশোধন হয়না কি করে?
নাকি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা এবং প্রাগ্রসর সমাজদর্শন সমাজতন্ত্রের প্রচুর উপাদান সমৃদ্ধ মুক্তিসংগ্রামের পরও তাত্বিকভাবে বাঙ্গালী মুসলমান আর বাঙ্গালী হিন্দু আলাদা জাতি রয়ে গেছে?

ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করলে কি হত? স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশ নয় মাসে হত না। যুদ্ধ আরো দীর্ঘ মেয়াদে চলত। কিন্তু স্বাধীন আমরা হতাম। ফলে পরিশুদ্ধ একটা দেশ হয়ত আমরা পেতাম। বিকার কম থাকত। তবে এই হাইপোথিসিস নিয়ে সন্দেহ আছে।

হাইপোথিসিস নিয়ে আপনার সন্দেহ বাস্তবসম্মত তবে ছফা সম্ভবতঃ( রেফারেন্স দিতে পারছিনা, তার প্রবন্ধসমুহ এরকম ধারনা দেয়) এই হাইপোথিসিস এ প্রতীতি রাখতেন।
ভিয়েতনাম মুক্তিসংগ্রামে কি ভিয়েতকং গেরিলারা বাইরের সাহায্য পায়নি? ফিলিস্তিনিদের অবস্থা কি? এরকম হাইপোথিসিস সহজ-এই না করলে সেই হত ইত্যাদি তাতে বাস্তবতা বদলায়না।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সিরাত এর ছবি

'ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করলে কি হত?' - এইটা নিয়া একটা লেখা দেন না হাসান ভাই। আমার খুব আগ্রহের টপিক।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যা হয়ে গেছে সেটা নিয়েই এখনো আলোচনা শেষ হলোনা , এর মধ্যে 'কি না হইলে না কি হইতো' শুরু করবো?
আপনার তো গেম, ফ্যান্টাসী এগুলো নিয়ে আগ্রহ আছে, এই হাইপোথিসিস ধরে আপনি একটা পোষ্ট দেন সিরাত- কথা দিচ্ছি মন্তব্য চলবে।

স্বজন,সম্পদ,সম্ভ্রম হারিয়ে ঘাতকের তাড়াখেয়ে এক কোটি মানুষ শেষ ভরসা হিসেবে ছুটে যাচ্ছে ভারতীয় সীমান্তে কিন্তু ভারত তার সীমান্ত বন্ধ রেখেছে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেনা- পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য কয়েক হাজার বাঙ্গালী পুলিশ, ইপিআর আর ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকেরা যাদের হাতের অস্ত্র ও গুলিই শেষ সম্বল, ফুরিয়ে গেলে আর পাওয়া যাবেনা- এরকম দৃশ্যাবলী মাথায় রেখে শুরু করতে পারেন। সাথে অবশ্যই বিবেচনায় করবেন জাতি হিসেবে বাঙ্গালীর ধৈর্য্য, একাগ্রতা, শৃংখলা,ঐক্য- দীর্ঘমেয়াদী গনযুদ্ধের জন্য যা অপরিহার্য্য। ফিলিস্তিন ও শ্রীলংকার তামিলদের পরিনতি ও মাথায় রাখবেন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উদ্ধৃতি

হাইপোথিসিস নিয়ে আপনার সন্দেহ বাস্তবসম্মত তবে ছফা সম্ভবতঃ( রেফারেন্স দিতে পারছিনা, তার প্রবন্ধসমুহ এরকম ধারনা দেয়) এই হাইপোথিসিস এ প্রতীতি রাখতেন।

পুরা প্রতীতি রাখতেন না।

ডুরান্টের ধারণাটা নিয়ে কেউ পোস্ট দিতে পারলে ভাল হয়।

সিরাত এর ছবি

এই পোস্টটা আহমদ ছফা(+ শুভাশীষদার কানেক্টর) না লিখে কোন সচল/অতিথি লিখলে কি হতো?

আমার কেন জানি মনে হয় - বিশাল একখান আলোচনা হইতো। (এই লাইনটা নিয়া কেউ মাইন্ড খাইয়েন না, আধা সিরিয়াসলি কওয়া।)

শুভাশীষদার সেইরম চুজ করসেন। চোখ টিপি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মন্তব্যটা একটু কম বুঝলাম।

তবে হাচল হয়ে এই লেখা নামানোর ঝক্কি আছে। কারণ আপ হয়ে গেলে এডিট করতে পারা যায় না।

একটা ছফাগিরি লিখতে আমার প্রচুর সময় দিতে হয়। আপ করার আগে অনেক কয়বার পড়তে হয়।

সিরাত এর ছবি

ছফা অনেক রিস্কি কথা বলছেন যেটা ধরেন আমি বললে ঝাড়ি খেতাম। এখানে পোস্টে। চোখ টিপি

ছফা সাহেবের রেপুটেশন প্রিসিডস হিম।

এই আরকি। বুঝলেন তো?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমার মনে হয় ছফা রিস্কি কথা বলেন নাই। ছফার কিছু কথা রিস্কি বানানো হয়েছে।

যদি/কিন্তু দিয়ে ইতিহাস পর্যালোচনায় আদৌ নতুন কিছু আসবে কিনা সন্দেহ। ইতিহাসকে আমরা ঠিক করে বলতে চেষ্টা করি। এটা করলে অনেক কথা বেরিয়ে আসবে।

স্পর্শ এর ছবি

একটা ছফাগিরি লিখতে আমার প্রচুর সময় দিতে হয়। আপ করার আগে অনেক কয়বার পড়তে হয়।

আপনার এই গুনটি শিক্ষণীয়। আমি প্রতিটা ছফাগিরি পড়ি আর ভাবি কেমনে পারেন!!

শুভেচ্ছা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনাকেও শুভেচ্ছা।

স্বাধীন এর ছবি

পড়ছি আর জানছি। ধন্যবাদ তোমাকে। তবে ছফার প্রবন্ধগুলোর কপি পেলে আরো ভাল ভাবে জানতে পারতাম। কিছু থাকলে লিঙ্ক দাও অথবা মেইলে পাঠিয়ে দিও।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

থ্যাংকস।

আপনারে ফেসবুকে মেইল দিচ্ছি।

আসাদ [অতিথি] এর ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যা হয়ে গেছে সেটা নিয়েই এখনো আলোচনা শেষ হলোনা ------

হাসান ভাইয়ের এই মন্তব্যটা গুরুত্বের। ছফাও বোধ হয় বলেছিলেন, একটা জাতির ইতিহাসে ৩০-৩৫ বছর আসলে খুব বেশি সময় নয়। মুক্তিযুদ্ধের মতন মহাকাব্যিক যুগসন্ধিক্ষণ, যার ভেতর দিয়ে এই জাতির জন্ম, তার বিশ্লেষণ শেষ করে সামাজিক ভাবে তার নির্যাস আহরণ করার জন্য এই সময় টুকু লাগবেই। বাংলাদেশের জাতীয় দর্শন বলে যদি কিছু থাকে, তাহলে এই বিশ্লেষণে-বিতর্কেই তা প্রতিষ্ঠিত হবে। ছফার "বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা" সেই বিশ্লষনেরই একটা ধাপ বলা যায়।


যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন, বাংলাদেশে একটি মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। রাশিয়া চায়নি, আমেরিকা চায়নি, ভারত চায়নি, চীন চায়নি, পাকিস্তান চায়নি বাংলাদেশে বাঙালিদের একটি জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক। তথাপি বাঙালি জনগণের দাবি অনুসারে এখানে একটি যুদ্ধ হয়েছে

৭১ এর মহাকাব্য থেকে এই জনযুদ্ধের স্বরূপ যত বেশি উন্মোচন করতে পারব, বাংলাদেশের জাতিসত্ত্বাকে চিনতে পারা বোধ করি ততই সহজ হবে।

সাথে সাথে ৭১ যে সত্যই একটা মহাকাব্যের পটভুমি, কেবল গুডগাইজ-ব্যাডগাইজ এর সরলরৈখিক ছেলেভোলানো অনুগল্প নয়, সেটার উপলব্ধিও বাড়বে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উদ্ধৃতি

এই অপর কে? অথবা কে কে?

এই জায়গাটা কেউ ব্যাখ্যা করলে ভাল।

আসাদ [অতিথি] এর ছবি

"--- তথাপি বাঙালি জনগণের দাবি অনুসারে এখানে একটি যুদ্ধ হয়েছে, হতে পারে সে যুদ্ধের ফলাফল অপরে আত্মসাৎ করেছে।"

এই অপর কে? অথবা কে কে? ইদানীং তো দেখা যাচ্ছে একাত্তরের রাজাকার, আল বদরেরা মুক্তিযুদ্ধের ফলাফল আত্মসাৎ করতে চাইছে।

এটা নিয়ে তুমিই কথা শুরু কর বরং। ঐ অধ্যায়ের পূর্বাপর প্রসঙ্গ এই "অপর" কে সংজ্ঞায়িত করবে। প্রবন্ধটা কোন সময়ে রচিত সেটাও এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক।

আন্দাজ হল -- "অপর" বলতে তিনি যুদ্ধ-পরবর্তী উঠতি লুটেরা-মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে বুঝিয়েছেন। এই গোষ্ঠীর উৎস-সূত্র ব্যাখা করতে পার।

সরাসরি যারা ৭১ এ যুদ্ধবিরোধী এবং কোলাবরেটর ছিল তারা পূণঃসংগঠিত হয়েছে অনেক পরে। তারাও আজকাল মুক্তিযুদ্ধকে আত্মসাৎ করতে চায় বটে, তবে এখনো তা তাদের জন্য অনেক কঠিন।

ভারত রাষ্ট্র বা সেখানকার শাসক-শ্রেণীও অরেকটা অর্থে আত্মসাৎকারী, কারণ তারা যুদ্ধের গতি প্রকৃতিকে নিজেদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং ফলাফল নিজেদের কূটনৈতিক স্বার্থে নিতে পেরেছে। কিন্তু "অপর" বলতে ছফা সেটা বুঝিয়েছেন বলে মনে হয় না।

পুতুল এর ছবি

পড়ছি।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

এই পর্বটা অন্য পর্ব গুলো থেকে গুরুত্বপূর্ন মনে হলো।
সংগ্রহে রাখার মতো লেখা ।

ভারতের কাশ্মীর সংক্রান্ত জটিলতা সম্পর্কে ছফা কি লিখেছেন ?
এই পর্বে কাশ্মীরের জটিলতা সম্পর্কে কিছু কথা থাকলে ভালো হতো ।

--
ইমতিয়াজ মির্জা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পরে জানাই।

স্বপ্নদ্রোহ [অতিথি] এর ছবি

পড়ছি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভারত চেষ্টা করে ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে পাক-ভারত যুদ্ধ নামে চালাতে। ভারতের হিন্দি সিনেমা ‘সিক্সটিন ডিসেম্বর’ বা ‘১৯৭১’ নামের সিনেমায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসেই না।(আরো অজস্র সিনেমায় ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গ এলে বাংলাদেশের অবস্থানকে খাটো করে দেখান হয়। এই দুটা চলচ্চিত্রের নাম করলাম কারণ এখানে সরাসরি ‘ষোলই ডিসেম্বর’ এবং ‘১৯৭১’ সালের নাম নেয়ার পর ও বাংলাদেশকে প্রায় গায়েব করে দেয়া হয়েছে ঘটনাপঞ্জি থেকে।) ভারতের রাষ্ট্রীয় হেজিমনি এখানে কারণ হতে পারে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের ইমেজ অনেকাংশে বাড়ায়। এতে বাংলাদেশ বাদ যায় তাতে ভারতের কী।

এই অংশটা ছফার নয়, আপনার। এটি নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছে করছে।
আসুন আমরা এর অপরপাঠ করি।
ভারতের উদ্দেশ্য যাই থাকুক, বাস্তবতা হলো ভারত বাংলাদেশের মুক্তিকামী তরুনদের প্রশিক্ষন দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে, ভারতের দেয়া অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ হয়েছে, ডিসেম্বর ৩ থেকে ভারত সরাসরি যুদ্ধে নেমেছে এবং আমাদের ভূ-খন্ডে ভারতের কয়েক হাজার সৈনিক নিহত হয়েছে।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে, সিনেমায়, উপন্যাসে এদের কথা কতোটুকু উদ্বৃত হয়েছে? মুক্তিসংগ্রামে ভারতের সহায়তার পেছনের উদ্দেশ্য খোঁজা নিয়ে বুদ্ধিজীবিদের যতো গবেষনা তার সামান্যটুকু ও তো নেই ইতিহাসের এই অনুল্লেখিত দিককে উচ্চারনের। হলে ভালো হতো, কৃতজ্ঞতার বোঝা থেকে আমরা মুক্ত হতাম।
আমার মনে হয়না গত ৩৮ বছরে কোনদিন কোন বিজয় দিবসে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের প্রতি কোন সম্মান জানানো হয়েছে। জাতি হিসেবে এটা আমাদের হীনমন্যতার পরিচয়।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভারত যে সাম্রাজ্যবাদী আচরন করেছে এবং এখনো করছে বাংলাদেশের সাথে, মাথা উঁচু করে তার জবাব দেবার জন্য এই হীনমন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া আমদের জরুরী ছিলো।

আরেকটা বিষয় বোধ করি খেয়াল করা যেতে পারে- ৩ ডিসেম্বর থেকে ইষ্টার্ণ কমান্ড( বাংলাদেশ) এর পাশাপাশি পশ্চিম সীমান্তে ও ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ চলছিলো। আমরা আমাদের অংশটুকুই মনে রাখি তবে ভারতীয়দের পক্ষ থেকে দুইপ্রান্তের যুদ্ধকেই তারা '৭১ এর পাক-ভারত যুদ্ধ বলে বিবেচনা করে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মোরশেদ ভাই,

ছফাগিরির পরের কিস্তিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে অপারগতা নিয়ে কথা শুরু করছিলাম। বাইরে থেকে এসে এখন বসে বসে লিখছিলাম। আপনি এই বিষয়টা মন্তব্য করেছেন দেখে কাকতাল ব্যাপরটাতে খুব মজা পেলাম।

উদ্ধৃতি

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভারত যে সাম্রাজ্যবাদী আচরন করেছে এবং এখনো করছে বাংলাদেশের সাথে, মাথা উঁচু করে তার জবাব দেবার জন্য এই হীনমন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া আমদের জরুরী ছিলো।

মানলাম। তবে সম্মান দিলেও ভারত এই আচরণ করত না- এটা নিশ্চিত করে বলা শক্ত। তবে আমাদের দিক থেকে পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত।

উদ্ধৃতি

আরেকটা বিষয় বোধ করি খেয়াল করা যেতে পারে- ৩ ডিসেম্বর থেকে ইষ্টার্ণ কমান্ড( বাংলাদেশ) এর পাশাপাশি পশ্চিম সীমান্তে ও ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ চলছিলো। আমরা আমাদের অংশটুকুই মনে রাখি তবে ভারতীয়দের পক্ষ থেকে দুইপ্রান্তের যুদ্ধকেই তারা '৭১ এর পাক-ভারত যুদ্ধ বলে বিবেচনা করে।

এই ব্যাপারে আমি আপাতত কম জানি। যতটা জানি, পূর্ব সীমান্ত ভারতীয় সৈন্যদের অনুপ্রবেশ দেখে পাকিস্তান আর না পেরে পশ্চিম সীমান্তে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, জিন্মু-কাশ্মীরের বিমান হামলা চালায়। তখন ভারত সেটার জবাব দেয়। তবে শুরু যেই করুক না কেন, পশ্চিম সীমান্তেও যুদ্ধ হয়েছে। এভাবে বিশ্লেষণ করলে তের দিনের একটা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিল যেখানে পূর্ব সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ জান লড়িয়ে লড়েছিল স্বাধীনতার দাবিতে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

তের দিনের একটা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিল যেখানে পূর্ব সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ জান লড়িয়ে লড়েছিল স্বাধীনতার দাবিতে।

সেই তো। ভারতের জন্য যা ছিলো লাভের হিসাব আমাদেরর জন্য তা ছিলো অস্তিত্বের যুদ্ধ। ভারতের কে আমাদের সেই যুদ্ধকে কিভাবে দেখলো তা নিয়ে এতো অভিযোগ আমার কাছে গাল ফুলানো বালকীয় আচরন বলেই মনে হয়।
আমাদের অস্তিত্বের যুদ্ধে যারা মিত্র হিসেবে প্রান দিয়েছে স্বীকৃতি বাদ দেই, তাদের অংশগ্রহনের কথা বেমালুম চেপে যাওয়ার দোষে দুষ্ট আমরা, আমরা কি করে একই দোষে অপরের দিকে আঙ্গুল তুলি?
আর ভারত কারা? বাংলাদেশের কোন জামাতী মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্ক মুল্যায়ন করলেই সেটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুল্যায়ন হয়না। ভারতীয় সমরনায়ক যারা মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন তারা তাদের অভিজ্ঞতাবর্ননায় আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব দিতে কার্পন্য করেছেন বলে জানা যায়নি। ফিল্ডমার্শাল মানেক'শ ও
জেনারেল জ্যাকব এর বই তো বাজারেই পাওয়া যায়।

তবে সম্মান দিলেও ভারত এই আচরণ করত না- এটা নিশ্চিত করে বলা শক্ত।

শক্ত নয় আসলে। জলবৎ তরলং, ভারত রাষ্ট্র তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে যে আগ্রাসী আচরন করছে তাতে কোন হেরফের হতোনা কারন এটাই ক্ষমতার অশ্লীল চরিত্র। কিন্তু এই অজুহাতে ইতিহাসের দেনা অস্বীকার করা যায়না। প্রাপ্য কৃতজ্ঞতাটুকু স্বীকার করলে জাতি হিসেবে আমাদের সম্মান বাড়তো, কমতোনা। ভারতের আগ্রাসী আচরনের জবাব দেয়ার মতো আত্নসম্মানবোধসম্পন্ন রাষ্ট্র হিসেবে আমরা গড়ে উঠিনি সেই শুরু থেকেই।

কিন্তু এই কথা বললে বাংলাদেশে আপনি ভারতের দালাল বলে চিহ্নিত হবেন। আপনাকে শুধু ডানপন্থীরাই চিহ্নিত করবে তা না, চরম বাম বন্ধুরা ও করবেনা।
পরিহাস এদেশের ইতিহাস ও রাজনীতির- ডান ও বামেদের এক হয়ে যাওয়ার ইস্যু'র কখনো ঘাটতি হয়না।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উদ্ধৃতি

ভারতের কে আমাদের সেই যুদ্ধকে কিভাবে দেখলো তা নিয়ে এতো
অভিযোগ আমার কাছে গাল ফুলানো বালকীয় আচরন বলেই মনে হয়।

এটা নিয়ে বড় মাপের কোন অভিযোগ নাই। কিছুটা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি মাত্র। তবে হিন্দি সিনেমার একটা আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হয়ে গেছে। ১৯৭১ বা ষোলই ডিসেম্বর আমাদের সাথে যতটা জড়িত রাষ্ট্র ভারতের সাথে ততটা যুক্ত নয়।এই নাম নিয়ে সিনেমা বানিয়ে বাংলাদেশকে হাপিস করে দিলে খারাপ লাগাটা না বলে থাকি কি করে। ভারতীয় হেজিমনির একটা বিশ্লেষণ দরকার। বাংলাদেশের যারা দেশের বাইরে থাকেন, তারা কিছু আন্দাজ পান।

ভারত আমাদের যে বিশাল সাহায্য করেছিল, তার একটা ভাল স্বীকৃতি দেয়ার দরকার আছে। অবশ্যই।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা অস্বীকার করি কিভাবে? তারা যাই করুক না কেন নিজেদের স্বার্থে, অস্ত্র-গোলাবারুদ যত খারাপই দিক না কেন। আমাদের এককোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়ে খাবার চিকিৎসা ঠিক মত নাই দিতে পারলো, কিন্তু তাদের এ সামান্যতম (?) সহযোগীতাও আমাদের জন্য সে সময়গুলোতে ব্যাপক শক্তি আর সাহসের কাজ করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা শুরু করতে পেরেছিলেন তাঁদের কাজ। একটি পরাধীন দেশের মানুষ দেখতে পেরেছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন।

কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে -

"--- তথাপি বাঙালি জনগণের দাবি অনুসারে এখানে একটি যুদ্ধ হয়েছে, হতে পারে সে যুদ্ধের ফলাফল অপরে আত্মসাৎ করেছে।"

আহমদ ছফার এ বক্তব্য ভারতের দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ বোঝাতে পারে। বোঝাতে পারে আমাদের সামরিক বাহিনীকেও। (এখনকার মত রাজাকাররা তখন অতটা সক্রিয় ছিলো না।) সে সময় কতজন সামরিক বাহিনীর লোক বা পুলিশের লোক সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে পেরেছিলেন তার যেমন সঠিক তালিকা আমরা পাই না, তেমনি সঠিক তালিকা আমরা পাই না কতজন বেসামরিক লোক মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। এমনকি সে তালিকাও হয়তো আমাদের কাছে নেই আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে কতজন ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। অথচ আমাদের বীর বলে স্বীকৃতি জুটেছে সকল সামরিক সদস্যদের। সাধারণ কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা ভারতীয় কোনো সেনা সদস্যর ক্ষেত্রে এমন স্বীকৃতি জোটেনি। কিন্তু যুদ্ধের নিয়মে একই রণক্ষেত্রে কেউ কম বা কেউ বেশি যুদ্ধ করে এমনটি ঘটে না।

.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা (বিভিন্ন গ্রুপের) যেমন এখনও একটা অস্পষ্ট বিষয় তেমনি মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকদের সংখ্যা আর তালিকাও এখনও একটা অস্পষ্ট বিষয় (শহীদ তালিকা সহ)

আমার জানামতে এই তালিকাটা আমি কোথাও পাইনি (হয়তো অন্য কেউ পেতে পারেন)

০২

সাধারণ কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা ভারতীয় কোনো সেনা সদস্যর ক্ষেত্রে এমন স্বীকৃতি জোটেনি।

বীরশ্রেষ্ঠ (সবাই শহীদ) ছাড়া বাকি পদবীগুলো বোধহয় বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধারাও পেয়েছেন

মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকদের পদবী না দেয়ার একটা কারণ কোথাও পড়েছিলাম (ঠিক মনে পড়ছে না কোথায়)

৭১ বাংলাদেশের সাথে তাদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়াটা ছিল ভারতীয় সৈনিকদের জন্য রাষ্ট্রীয় আদেশে একটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ
এটা আগে-পরে ভারতের সৈনিকরা অন্যান্য অঞ্চলেও করেছিল
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ তাদের কাছে কোনো বিশেষ যুদ্ধ ছিল না

ছিল ভারত-পাকিস্তান সিরিজ যুদ্ধের একটা পর্ব
ফলে ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তারা আলাদা কোনো বিশেষ খেতাব কিংবা পুরস্কারের প্রত্যাশা করার দাবিদার ছিল না

কোথাও এক জায়গায় শুনেছিলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় সৈনিকদের আলাদা খেতাব এবং পুরস্কার দেবার প্রস্তাব করা হয়েছিল
কিন্তু তাতে ভারতের আপত্তি ছিল
কারণ এক যুদ্ধে সৈনিকরা বিশেষ সম্মান পেলে আগে পরের যুদ্ধের সৈনিকরাও সেটা চেয়ে বসতে পারে

ভারত যুদ্ধের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ৭১ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সৈনিকদের প্রমোশন/ কমপেনসেশন/ ডিপার্টমেন্টাল এওয়ার্ড দিয়ে স্বীকৃতি দেয় এই সৈনিকদের (সেনাপ্রধান কি ফিল্ড মার্শাল পেয়েছিলেন?)

০৩

৭১ যুদ্ধটা ভারতের কাছে হয়তো যে কোনো সাধারণ একটা যুদ্ধ
পাকিস্তান-চীনের সাথে তারা প্রায়ই যুদ্ধ করে
প্রায়ই মারা যায় অনেক সৈনিক
প্রায়ই অনেকে অনেক বীরত্বপূর্ণ পারফরমেন্স করে সেসব যুদ্ধে
তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সৈনিকদের হয়তো আলাদা কোনো সম্মান নেই

কিন্তু বাংলাদেশের কাছে তাদের অবস্থান আলাদা
আমরা বোধহয় তাদের কে মূল্যায়ন করতে পারি আমাদের মতো করে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভারত যুদ্ধের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ৭১ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সৈনিকদের প্রমোশন/ কমপেনসেশন/ ডিপার্টমেন্টাল এওয়ার্ড দিয়ে স্বীকৃতি দেয় এই সৈনিকদের (সেনাপ্রধান কি ফিল্ড মার্শাল পেয়েছিলেন?)

মানেক'শ ফিল্ডমার্শাল হয়েছিলেন '৭৩ এ। ফিল্ডমার্শাল হতে হলে বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা লাগে। তার ছিলো।

পদক টদক তো বহুৎ পরের কথা। বাংলাদেশের ইতিহাসবইগুলোতে যেমন ভাসুরদের নাম অনুচ্চারিত ছিলো- পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বদলে আমরা হানাদার বাহিনী পড়ে এসেছি তেমনি অনুচ্চারিত রয়ে গেছে মিত্র বাহিনী কারা ছিলো। হানাদারদের ক্ষেত্রে এখন সম্ভবতঃ ইতিহাস বইয়ে নাম উচ্চারিত হয়, মিত্রদের ক্ষেত্রে কি হয় জানিনা।
তবে এখন পর্যন্ত কোন বিজয় দিবসে কোন রাষ্ট্রপ্রধানকে এই বিষয়টি উচ্চারন করতে শুনিনি। থ্যাংকস গিভিং বলে একটা রেওয়াজ আছে, এতে অভ্যস্ত আমাদের ইজ্জতে বাঁধে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
ঐশী এর ছবি

PDF টা পড়লাম। এই লেখার অনেক মেহনত বুঝতে পারছি।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে পাইলাম। আহ!
আপনেরে ধন্যবাদ দিমু না।
অনেক ভালোবাসা। দেঁতো হাসি

কিন্তু হায় ব্লক ইউআরএল
http://84.235.120.56/blocked.html?basictype=block&epochseconds=1263067112&requestedurl=http%3A%2F%2Fwww.sendspace.com%2Ffile%2Fnolaz9&categorylist=149&categorydescriptionlist=Pornography&useripaddress=94.96.46.190&username=&actiontaken=block&actionreason=by-category&actionreasondata=149&reputationdesc=&replayhash=O4yJ%2FvsBqs2q7%2FAtCWroiA%3D%3D
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মধ্যপ্রাচ্যে এই এক সমস্যা।

আপনার হটমেইলে পাঠালাম। বe টা।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

এইবার অনেক আদর। দেঁতো হাসি
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।