অনুবাদ: হারুকি মুরাকামির ছোটোগল্প। দুই।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: রবি, ১৯/০৯/২০১০ - ৫:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিবমিষা ১৯৭৯

ভদ্রলোকের নিখুঁত ডায়েরি রাখার অভ্যাসকে প্রশংসা করতে হয়। সেখানে কোনো দিনের উল্লেখ বাদ নাই। ফলে তার বমির শুরু আর শেষ হবার সঠিক দিনক্ষণ বলতে তার অসুবিধা হয় না। বমি শুরু জুন চার ১৯৭৯(পরিষ্কার আকাশ), শেষ জুলাই চৌদ্দ ১৯৭৯ (মেঘলা দিন)। এই আঁকিয়ে তরুণ ভদ্রলোক পত্রিকায় আমার একটা গল্পের অলঙ্করণ করেছিলেন। তখন থেকে তার সাথে আমার পরিচয়।

বয়সে আমার কয়েক বছরের ছোটো। আমরা পুরানো জ্যাজ এলপি নিজেদের মধ্যে শেয়ার করি। অন্য একটা ব্যাপার নিয়ে সে বেশ মজে থাকে- সুযোগ পেলেই বন্ধুদের মেয়েবন্ধু আর বউদের সাথে শোয়া। এই কাজ বছরে অনেক বারই সে করে। এমনকি বন্ধুদের বাসায় বেড়াতে গেলে তারা যদি কখনো বিয়ার কিনতে যায় কিংবা কোনো বন্ধুর স্নান করার স্বল্প সময়ের মধ্যেও সে কয়েকবার এই কাজ সেরেছে।

‘শোনেন কাপড় কম খুলে কীভাবে সেক্স করা যায় সেটা শেখা একটা আর্ট। সাধারণ সেক্স মেলা ক্ষণ চলে। আমি করি ভিন্ন দৃষ্টিকোণে। খুবই মজার।’ - তার ব্যাখ্যা।

তবে স্বল্পমেয়াদী ব্যাপারটা উপভোগ করে বলে দীর্ঘক্ষণের গতানুগতিক ব্যাপারটাতে সে যায় না তা নয়। তবে বন্ধুবান্ধবের বউ, মেয়েবন্ধুদের সাথে অল্প সময়ের জিনিস তাকে ভালো উত্তেজনা দেয়।

‘দেখুন এটা ভাববেন না আমি আমার বন্ধুদের ঠকাচ্ছি- ওদের বোকা বানানোর কোনো ইচ্ছা আমার নাই। ওদের বিবিদের সাথে শুলে বন্ধুত্বটা আরো পোক্ত হয়। এটা পরিবারিক একটা অন্তরঙ্গতার মতো ব্যাপার। আর এটা খালি সেক্স, আর কিছু না। আর জানাজানি না হলে কারো মনে কষ্ট দেয়ার ব্যাপার ও থাকে না।’

‘কখনো জানাজানি হয় নি?’

‘না।’ আমার প্রশ্নে সে কিছুটা অবাক হয়। ‘আমার মনে হয় আমাদের কিছু অচেতন কামনা থাকে - ঘটনা জানাজানি হয়ে যাক। সেই বোধ না থাকলে ঘটনাও প্রকাশ পায় না। এটা ঠিক তোমাকে খুব সতর্ক হয়ে থাকতে হবে যাতে তাদের পুরুষেরা টের না পায়। আর একটা শর্ত আছে যেই মহিলার সাথে এসব করবে সেখানে একটা স্পষ্ট ব্যাপার থাকবে- যা যা হচ্ছে সব বন্ধুত্বপূর্ণ খেলা। কাউকে আঘাত দেয়া কিংবা একেবারে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার মতো কোনো ঘটনা এখানে ঘটবে না। এসব কথা অবশ্য সরাসরি বলা যাবে না।’

আমার প্রথমে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল এসব ব্যাপার কেউ এতো সহজ করে ভাবতে পারে। তবে ফালতু বকে নিজেকে ভালো মানুষ প্রমাণ করার মতো লোক সে নয়। আমার মনে হলো সে যা করছে হয়তো ভুল নয়।

‘আর আসল কথা হলো এসব মেয়েরা এইরকম কিছু একটার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। তাদের স্বামী বা প্রেমিক- মানে আমার বন্ধুরা- চেহারায় আমার থেকে ঢের ভালো। আর ঐ জিনিসের সাইজও বেশ বড়। কিন্তু মেয়েরা এগুলো দেখে না। সব মোটামুটি স্বাভাবিক হলে আর তাদের পুরুষদের সাথে একটা বোঝাপড়া থাকলেই মেয়েরা খুশি। তারা এমন একজনকে তাদের জীবনে চায় যে তাদের অন্যভাবে ভাববে- গতানুগতিক মেয়েবন্ধু বা বউ হিসেবে না। এই জিনিসটাই কাজে দেয়। আর এসব হিসেবে আরো নানা লেভেল আছে।’

‘যেমন…

‘স্বামীর সাথে এমনি এমনি থেকে যাওয়া, হতাশা, আবার এও হতে পারে অন্য কারো সঙ্গলাভের তীব্র ইচ্ছা। আমি তাদের চেহারার দিকে খুব ভালো করে তাকিয়ে এসব বুঝে ফেলি। এটা একটা টেকনিক। শেখানোর মতো কিছু না। জন্মগত গুণ বলা যায়। হয় এটা তোমার থাকবে অথবা থাকবে না।’

আমার এই বন্ধুটির এখনো কোনো স্টেডি মেয়েবন্ধু নাই।

আমরা যেহেতু রেকর্ড সংগ্রাহক, তাই আমাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ মাঝে মাঝেই হয়। আমাদের আগ্রহ আর্লি ফিফটিজ বা আর্লি সিক্সটিজের জ্যাজ সংগ্রহ। তবে রুচি কিছুটা ভিন্ন বলে আমাদের আদান-প্রদানের ব্যাপারটা খুব চলে। ওয়েস্ট কোস্টের কিছু কম পরিচিত মিউজিশিয়ানের ব্যাপারে আমি ইদানীং মনোযোগ দিচ্ছি। অন্যদিকে কোলম্যান হকিনস্‌ বা লাইনোল হ্যাম্পটনের পরবর্তী কিছু কাজ নিয়ে তার আগ্রহ। যদি তার কাছে পিট জলি ট্রিও অন ভিক্টর থাকে তবে আমার কাছে থাকে ভিক ডিকেনসনের মেইনস্ট্রিম। ফলে চালাচালি চলে সমানে সমান। দিনটা আমরা বিয়ার খেয়ে পার করি। ডিস্কগুলোও চেক করে নেই সাথে।

একদিন এই এলপি চালাচালি শেষে সে আমাকে জানালো তার বমি শুরু হওয়ার কথা। তার বাসায় বসে বসে হুইস্কি পান করছি। আমাদের কথাবার্তা সংগীত থেকে হুইস্কিতে চলে আসে।

‘আমি একবার টানা চল্লিশ দিন বমি করেছিলাম। প্রতিটা দিন। কোনোদিন বাদ যায়নি। এটা মদ খাওয়ার জন্য নয়। আর আমি অসুস্থ ছিলাম তাও নয়। কোনো কারণ ছাড়াই এই ঘটনা দিনের পর দিন চলেছিল। চল্লিশ দিন ধরে। বিশেষ কোনো ব্যাপার হয়ত ছিল।’

এই বিবমিষা শুরু হয়েছিল জুনের চার তারিখ। ঐদিন বমির ব্যাপারটা খুব একটা আশ্চর্যের ছিল না কারণ আগের রাতে সে প্রচুর হুইস্কি আর বিয়ার টেনেছে। আর জুন তিন তারিখ রাতে এক বন্ধুর বউয়ের সাথে রাত কাটায়।

জুনের চার তারিখ সকাল আটটায় যখন সে বমি করে তার পেটের ভেতরের সবকিছু টয়লেটের বাওলে বের হয়ে আসে। তার সহজ বুদ্ধিতে এটা অস্বাভাবিক মনে হয়নি। তবে এটা ঠিক কলেজ ছাড়ার পর এই এত বছর পর মদ খাওয়ার জন্য তার বমি হলো। টয়লেটে ফ্লাশ করে সে তার টেবিলে বসে কাজ শুরু করে। যদিও শরীর খারাপ লাগছিল। তবে আঁকার ব্যাপারে অন্যরকম জোশ আসে। কাজ ভালোই চলতে থাকে। দুপুরে বেশ ভালো খিদে পেয়ে যায়।

একটা হ্যাম আর শশার স্যান্ডুইচ বিয়ার মেরে পেটে চালান দেয়। আধ ঘন্টা পর দ্বিতীয় ধাক্কায় বিবমিষা আসে। এবার পুরো স্যান্ডুইচ টয়লেট বাওলে। রুটি আর হ্যামের চাকা চাকা কমোডের পানিতে ভাসতে থাকে। তারপরেও তার খুব একটা খারাপ লাগে না। কারণ এটা স্রেফ বমি। তার মনে হতে থাকে পেটের ভেতরের সবটুকু বের করে দেয়ার জন্য তার গলার মধ্যে মনে হয় কিছু একটা ফিট করা আছে, জাদুকরের যেমন কাপড়ের ভেতর থেকে পায়রা সহ নানা কিছু বের করতে থাকে অনেকটা সেইরকম।

‘কলেজে পড়ার সময় বেশি মদ গিললে আমার বমি পেত। বিশেষত বাসে। কিন্তু এইবার ব্যাপার পুরো ভিন্ন। পেটে মোচড় ফোচড়ের কোনো ব্যাপার নাই। জাস্ট যা খাচ্ছি কিছুক্ষণ পর মুখ দিয়ে সব বেরিয়ে আসছে। কোন অনুভূতি ছাড়া। কোনো খারাপ লাগালাগির ব্যাপার নেই। মুখে কোন বাজে দুর্গন্ধ পর্যন্ত নেই। আমার একটা অন্যরকম কিছু মনে হলো। বমি একবার হয়নি, দুইবার। কিছুটা চিন্তিত হলাম। ভেবে নিলাম কিছুদিন মদ ছোঁব না।’

তৃতীয় বার হলো পরেরদিন সকালে। রাতে খাওয়া হয়েছে ঈল মাছ। আর সকালে মার্মালেড সাথে ইংলিশ মাফিন। সব বেরিয়ে এল।

তারপর দাঁত মাজা শেষে টেলিফোন কলটা আসে। সে ফোন তোলে। একটা পুরুষকণ্ঠ তার নাম ধরে ডাকে। তারপর ফোন রেখে দেয়।

‘এটা নিশ্চয় যেই মেয়ের সাথে তুমি আগের রাতে শুয়েছ তার স্বামী বা ছেলেবন্ধু। তোমার কী মনে হয়?’ আমি বলি।

‘আরে না। আমি ওদের সবার গলা চিনি। এই গলা আমি কখনো শুনিনি। গলাটা কেমন জানি। এই ফোন আসা আমার কাছে চলতে থাকে। জুন পাঁচ থেকে জুলাই চৌদ্দ। বুঝতে পারছো আমার বমি হওয়া আরম্ভ আর ফোন কল আসা দুইটা প্রায় একই সময় থেকে শুরু হয়।’

‘আমি তো এই দুইটা ঘটনার মধ্যে কোন সংযোগ দেখতে পাচ্ছি না।’

‘আমি ও। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে আমি এখনো আপসেট। প্রতিটা কল প্রায় একই। ফোন বাজে, সে আমার নাম ধরে ডাকে, তারপর রেখে দেয়। প্রতিদিন একবার। সকাল, দুপুর বা গভীর রাতে-কখন আসবে ঠিক নেই। আমি ফোন না ধরতে পারতাম। তুমি তো জান আমার কাজের জন্য ফোন ধরতে হয়। তাছাড়া বন্ধুবান্ধবের বউ, মেয়েবন্ধুদের কল আসে।’

‘হ্যাঁ, তাও ঠিক।’

‘ফোনকলের সাথে সাথে বিবমিষা একটা দিন ও বাদ না দিয়ে চলতে থাকে। আমি যা খাই সব বেরিয়ে আসে। আমি ক্ষুধার্ত হই খেতে যাই পরে আবার বমি করে ফেলি। একটা অদ্ভূত চক্র। তবে এটা ঠিক আমি দিনে তিন বার খেলে হয়তো পুরো তিনবারের সব খাবার বমি হয়ে বেরিয়ে আসতো না। সেটা হলে বাঁচা মুশকিল ছিল।’

‘তুমি কী ডাক্তার দেখাওনি?’

‘অবশ্যই। আমার কাছাকাছি একটা ভালো হাসপাতালে আমি যাই। ওরা এক্সরে করে, মূত্র পরীক্ষা করে। ধারণা করে এটা হয়তো ক্যান্সারের লক্ষণ। একটা পুরো চেকাপ করে। কিন্তু কিছু অস্বাভাবিকতা পায় না। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। শেষে না পেরে ক্রনিক পেট ব্যথার ওষুধ দেয়। আর স্ট্রেসের ওষুধ। তারা আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইজের পরামর্শ ও দেয়। মদ গেলা বন্ধ করতে বলে। আমাকে টেনশন করতে মানা করে। তারা আমার সাথে এইসব মস্করা করে। আমি খুব ভালো করে জানি ক্রনিক পেট ব্যথা কী। যেকোনো গাধা এই অসুখ হলে বুঝতে পারবে। পেটে তখন খুব ভার বোধ হবে। বুক জ্বলবে। কোন ক্ষুধা থাকবে না। এই রোগ হলে অন্যান্য উপসর্গ থাকবেই। আমার তো এসব কিছুই নেই। কেবল খাওয়া উগড়ে দেয়া ঐ রোগের লক্ষণ নয়। আমার ভালো ক্ষুধা ছিল। মাথা ছিল একেবারে পরিষ্কার। এটা ঠিক আমার কিছু কাজের চাপ ছিল। কিন্তু আহামরি কিছু নয় যাতে টেনশন করতে হয়। মেয়েদের নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। আমি সপ্তাহে তিন চারদিন সাঁতার করতে যেতাম। আমি সবকিছু ঠিকঠাক করছিলাম। তোমার কী মনে হয়?’

‘সব তো ঠিকই মনে হচ্ছে…

‘আমি শুধু উগড়ে দিচ্ছিলাম।’

বমি আর ফোনকল চলতে থাকল দুই সপ্তাহ ধরে। পনেরতম দিনে সে ভাবল যথেষ্ঠ হয়েছে। অফিস থেকে ছুটি নিল। বমি তো বন্ধ করা যাবে না। ফোনকল থেকে বাঁচার জন্য সে বাসা ছেড়ে একটা হোটেলে উঠে। পুরা দিন বই পড়ে টিভি দেখে কাটায়।

প্রথমে মনে হল সব ঠিক হয়ে চলছে। দুপুরে রোস্ট বীফ স্যান্ডুইচ আর এস্প্যারাগাস সালাদ ভালো হজম হলো। তিনটা তিরিশে এক বন্ধুর বউয়ের সাথে হোটেলের টী-রুমে দেখা করলো। তখন চ্যারি পাই ব্ল্যাক কফি পেটে চালান গেল। পরে সে আর মেয়েটা হোটেল কক্ষের বিছানায় গেল। রাতের খাবার খেলো একাকী। কাছাকাছি একটা খাবারের দোকানে। কিয়েটো স্টাইল ব্রয়েলড ম্যাক্রো উইথ টোফু, স্যুপ, এক বাটি সাদা ভাত। মদ নেয়া হয় না। ছয়টা তিরিশে কক্ষে ফিরে আসে। খবর দেখে। একটা উপন্যাস পড়া আরম্ভ করে। প্রায় নয়টা বাজে। বিবমিষা তখনো আসে নি। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পর সে প্রথম ভরাপেট থাকার আনন্দ বুঝতে পারে। তার মানে এইসব বন্ধ হয়েছে। সব এখন স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। বই বন্ধ করে সে টিভি খুলে। চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে একটা পুরানো ওয়েস্টার্ন সিনেমা দেখা শুরু করে। সেটা শেষ এগারোটায়। এরপর লেটনাইট নিউজ শুরু হয়। খবর দেখা শেষে সে টিভি বন্ধ করে। তার তখন মনে হয় এই সময়ে দরকার ভালো হুইস্কি। সে প্রায় বেরিয়ে যাচ্ছিল কাছাকাছি কোনো বারে যাবার জন্য। কিন্তু শেষমেষ সে নিজেকে আটকায়। অনেকদিন পর একটা ভালো দিন ঠিক মতো কাটানোর পর নষ্ট করার দরকার নেই। পরে বাতি নিভিয়ে শুতে যায়। মধ্যরাতে ফোন বেজে ওঠে। ঘড়িতে তখন দুইটা পনের। কিছু না ভেবে ফোনের রিসিভার ধরে বলে হ্যালো। সেই পরিচিত গলা। তার নাম ধরে ডাকে। এক সেকেন্ড বাদে রেখে দেয়।

‘তুমি কী কাউকে বলেছ তুমি কোন হোটেলে আছ?’

‘না। কেবল যেই বন্ধুর বউয়ের সাথে শুয়েছি সে ছাড়া কাউকে নয়।’

‘সে মনে হয় কাউকে জানিয়েছে।’

‘ঠিক কোন কারণে সে অন্যদের জানাতে যাবে?’

‘সেটাও ঠিক।’

‘কল আসার পর আমার পেটের সমস্ত খাবার বমি হিসেবে বেরিয়ে গেল। মাছ, ভাত- সব। যেন ফোন কল একটা দরজা খুলে দেয় আর আমার মধ্যের বমনেচ্ছা তৈরি হয়ে যায় ।’

‘সবকিছু বেরোনো শেষ আমি টাবের পাশে বসে এইসব ঘটনার ব্যাখ্যা করি। আমার মাথায় আসে ফোন করাটা নিশ্চিত কারো ফাজলামি। তবে আমি বুঝে উঠতে পারি না কিভাবে ওরা আমার হোটেলের খবর পেল। আবার মাথায় আসে হয়তো ফোনকলটা আমার কল্পনা। এই ভাবনা আমার নিজের কাছে রিডিকুলাস লাগে। তবে ঘটনা ভালোমতো ভেবে এটাকে একেবারে নাকচ করা যায় না। হয়ত আমি ভেবে নিচ্ছি একটা কল বাজছে, আর রিসিভার তুললে একটা গলা আমার নাম ধরে ডাকছে। সবটাই কল্পনা। আসলে কিছু নেই। থিয়োরেটিক্যালি এটা অনেকটা বিশ্বাসযোগ্য। কি বল?’

‘হতে পারে…’

‘হোটেলের অভ্যর্থনাতে ফোন করে আমার রুমে আসা কলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। তারা কিছু করতে পারল না। কেবল বাইরে করা কলগুলোর রেকর্ড তাদের কাছে থাকে, বাইরে থেকে আসা কলের না। ঐ রাতের ঘটনা আমার পক্ষে ভালো হল। আমি বিবমিষা আর ফোন কল নিয়ে যথেষ্ঠ ভালো করে ভাবলাম। কোনো না কোনোভাবে এই দুইটার সাথে একটা বড় কিংবা নেহাত ছোট কোনো সম্পর্ক আছে। আমি ঠিক জানি না। তবে ব্যাপারটাকে আর হালকাভাবে নেয়ার উপায় রইল না।

‘হোটেলে দুই রাত ছিলাম, কিন্তু বমি করা চলতে থাকে আর ফোনকল আগের মতোই আসতে থাকে। মাঝে মধ্যে বন্ধুবান্ধবকে আশেপাশে রাখতাম, কিন্তু দেখি ফোন কল ঠিক আমি একটু একা হলে তখনই আসে। মনে হচ্ছিল অদৃশ্য কিছু আমাকে সারাক্ষণ অনুসরণ করছে। কখন আমাকে ফোন করতে হবে কিংবা কখন আমার গলায় চাপ দিতে হবে সব সে জেনে বুঝে করছে। এই ধরণের চিন্তা মাথায় আসা মানে তোমার সিজোফ্রেনিয়া হচ্ছে এটার লক্ষণ।’

‘হতে পারে। তবে অনেক সিজোফ্রনিক আছে যারা এটা ভেবে নেয় তাদের সিজোফ্রেনিয়া আছে।’

‘না। তোমার কথা ঠিক। তবে সিজোফ্রেনিয়া আর বমির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মনস্তত্ত্ববিদেরা অন্তত তাই জানাল। তারা আমাকে ঠিকমতো চেক পর্যন্ত করল না। যেসব রোগিদের সন্দেহাতীত সিম্পটম আছে কেবল তাদের চিকিৎসা করা হয়। ইয়ামানোট লাইনের কমিউটারের প্রতিটি কারলোডে আমার মতো সিম্পটম আছে এইরকম আড়াই থেকে তিনজন লোক পাওয়া যাবে। সুতরাং এত মানুষের চিকিৎসা দেয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। আমার সমস্যা কোন ইন্টার্নিকে বলা যেতে পারে, কিংবা ফোনের ঝামেলা পুলিশকে ।’

‘তুমি হয়ত জানো দুই ধরণের ব্যাপার পুলিশ মাথা ঘামায় না- বাজে কল আর চুরি যাওয়া বাইসাইকেল। এইসব ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামালে ঐ ডিপার্টমেন্টের আর কোনো কাজ করা লাগবে না। তারা আমার কথা শুনবে না। বাজে কল? ঐ লোক তোমাকে কী বলে? কেবল নাম ধরে ডাকে? আর কিছু? ঠিক আছে। এই ফর্মটা পূরণ কর, আর বেশি কিছু খারাপ কিছু বললে আমাদের সাথে যোগাযোগ করো। এইটুকুই তারা করে। আমি যখন বলি লোকটা কীভাবে জানে আমি কোথায় কোথায় যাচ্ছি। পুলিশ এসব কথা পাত্তা দেয় না। আমাকে বাতিকগ্রস্ত ভাবে।

‘নিশ্চিত হলাম ডাক্তার বা পুলিশ আমাকে সাহায্য করবে না। এর হেস্তনেস্ত আমাকেই করতে হবে। বিবমিষা ফোন কল আসার বিশ দিনের মাথায় আমি এটা বুঝতে পারি। আমি নিজেকে শারীরিক ও মানসিক দিকে অনেক পোক্ত ভাবি। তবে এইবার ব্যাপারটা আমাকে পেয়ে বসে।’

‘তোমার সেই বন্ধুর মেয়েবন্ধুর সাথে তোমার সব ঠিক চলছিল?’

‘হ্যাঁ, পুরো ঠিকঠাক। বন্ধু সুই সপ্তাহের জন্য ফিলিপাইন গিয়েছিল। এই সুযোগে আমরা দুইজনই নিজেদেরকে খুব উপভোগ করছিলাম।’

‘মেয়েটার সাথে যখন থাকতে তখন কী কোনো কল আসতো?’

‘না। আমি আমার ডায়েরি চেক করতে পারি। তবে এইরকম হয়নি। কল আসতো যখন আমি একা থাকতাম। বমিও। আমি একাকী থাকি বেশিরভাগ সময়। ঠিক করে বললে দিনে তেইশ ঘন্টা আমি একাকী থাকি। আমার কাজের সূত্রে কারো সাথে আমার খুব একটা সাক্ষাৎ হয় না। ফোনের মাধ্যমে আমি কাজ সারি, আমার শয্যাসঙ্গিনীরা অন্যদের সাথে থাকে। বাইরে খেতে যাই নব্বই শতাংশ সময়। আমার একমাত্র খেলা দীর্ঘক্ষণের সাঁতার। আমার শখ পুরানো দিনের রেকর্ড শোনা। কেবল একা মনোযোগ দিয়ে করতে পারি এইরকম কাজ আমি করি। আমার বন্ধুবান্ধবেরা সংখ্যায় বেশি না, তারা কাজে ব্যস্ত থাকে, দেখা সাক্ষাৎ হয় মাঝে সাঝে। এইরকমই আমার জীবন।’

‘হ্যাঁ। মোর অর লেস।’

গ্লাসের বরফের ওপর সে হুইস্কি ঢালে, আঙ্গুল দিয়ে একটু নাড়ে, তারপর এক সিপ মুখে দেয়। ‘আমি ভালো করে ভাবতে আরম্ভ করলাম। এখন কী হবে? বমি আর ফোন কলের যন্ত্রণা কী চলতেই থাকবে?’

‘তুমি এক কাজ করতে পার। নিজের একটা মেয়েবন্ধু যোগাড় কর।’

‘জান আমি ভেবেছিলাম। আমার তখন সাতাশ বছর বয়স। ইচ্ছে করলেই একটা মেয়ে যোগাড় করে ফেলা যায়। তবে সহজে আমি হাল ছেড়ে দেই না। এই ফালতু একটা ব্যাপারে আমি পরাজিত হতে চাইছিলাম না। আমি এর বিরুদ্ধে লড়াই করবো ভাবলাম। আমার শরীরের মনের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে আমি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেই।’

‘বাহ্’

‘মুরাকামি, তুমি হলে কী করতে?’

‘আমি ঠিক জানি না।’

‘বমি ফোনকল চলতেই থাকল। আমি অনেক ওজন হারালাম। দাঁড়ান-এইতো ডায়েরিতে আছে। জুনের চার। ওজন ১৪১ পাউন্ড। জুন একুশ। ১৩৪ পাউন্ড। জুলাই দশ। ১২৮ পাউন্ড। আমার উচ্চতার তুলনায় অনেক কম ওজন। আমার কোনো জামা আমার ঠিক হচ্ছিল না। প্যান্ট পড়ে চলার সময় আমার মাঝে মাঝে ধরে রাখতে হত।’

‘তুমি একটা এন্সারিং মেশিন কিনে ফোনে লাগাতে পারতে বা এইরকম কিছু?’

‘দেখ, আমি পালাতে চাইনি। শত্রুর কাছে পরাজিত হতে চাইনি। হয় সে পালাবে নয়ত আমি। বমির ব্যাপারেও আমি একটা সিদ্ধান্তে আসলাম। ভেবে নিলাম এটা এক ধরণের ডায়েট। বমির ফলে আমার পেশীতে টান পড়েনি, আমি কাজ চালাতে পারতাম ভালোভাবেই। আমি মদ্যপান ধরলাম আবার। সকালের নাস্তায় বিয়ার, আর সূর্য ডুবলে প্রচুর হুইস্কি। মদ খাওয়া না খাওয়ার ওপর কিছুই নির্ভর করে না। মদ খাওয়া ধরার পর সব কিছু আমার কাছে আরো ঠিকঠাক লাগল।’

‘আমার একাউন্ট থেকে কিছু টাকা তুলে আমি একটা স্যুট আর দুইটা প্যান্ট বানাতে দিলাম আমার নতুন শরীরের সাথে ফিট করতে। দর্জির দোকানের আয়নায় আমাকে খুব লিকলিকে দেখাচ্ছিল। আমি ভাবলাম এই বমি দাঁতের ব্যথা থেকে কম যন্ত্রণাকর। ডায়রিয়া থেকে অনেক রিফাইনড্। নিউট্রিশনের সমস্যা কাটলে ক্যান্সারের ঝামেলা থাকে, সুতরাং বমি এক হিসেবে ক্ষতিকর না। ভাবো আমেরিকায় ওজন কমানোর কতো ব্যবসা বাণিজ্য।’

‘তার মানে জুলাইয়ের চৌদ্দ তারিখ পর্যন্ত এইসব চলল।’

‘একদম ঠিক করে বলি- জুলাই চৌদ্দের সকাল নয়টা তিরিশে শেষ বমি। আমি দোকান থেকে টোস্ট, টমেটো সালাদ, দুধ নিয়ে তখন বাসায় ঢুকি। শেষ ফোনকল সেই রাতে। রাত দশটা পঁচিশ। আমি তখন এরল গার্নারের কনসার্ট বাই দা সী শুনছিলাম। আর সিগ্রামস্ ভিয়েল গিলছিলাম। ভাগ্যিস, এইরকম ডায়েরি রাখার অভ্যাস ছিল।’

‘সেটা ঠিক। তার মানে জুলাই চৌদ্দের পর আর কিছু হয়নি।’

‘হ্যাঁ। অনেকটা হিচককের দা বার্ডস সিনেমার মতো। পরদিন সকালে দরজা খুলে দেখলে সব স্বাভাবিক। বিবমিষা আর বাজে কল। কিছুই আর নেই। আমি তাড়াতাড়ি আমার ওজন ফিরে পেলাম। ১৪০ পাউন্ডে ফিরে এলাম। সেই স্যুট আর প্যান্ট আমার আলমারিতে ঝুলে আছে। সুভানিয়ার।’

‘আর ফোনের লোকটা শেষ পর্যন্ত একই রকম কল করে গেল?’

সে একটু মাথা নাড়ল। ‘না শেষ কলটা কিছুটা ভিন্ন। সে আমার নাম ধরে ডাকে। এটা নতুন কিছু নয়। তারপর- তুমি কি জানো আমি কে? এরপর আর কিছু বলে না। এভাবে চুপচাপ দশ থেকে পনের সেকেন্ড। তারপর ফোন রেখে দেয়।’

‘ওহ তাহলে এই কথা বলেছে, তুমি কি জানো আমি কে?’

‘সেটাই। বাক্যের শব্দগুলো সে খুব গ্যাপ দিয়ে দিয়ে বলে। তুমি কি জানো আমি কে? বিগত পাঁচ ছয় বছরে আমি যাঁদের সাথে কথা বলেছি তাদের কারো গলা এইরকম নয়। হতে পারে এটা এমন কেউ যে আমাকে শৈশবে চিনত। তবে আমার মনে পড়ে না এমন কোনো ক্ষতি আমি সেই সময়ে কারো করেছি। অন্য কোনো আর্টিস্ট জিঘাংসা বশে করবে বলেও আমি মনে করি না। আর অন্যদের সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে ও আমি পরিষ্কার। সাতাশ বছর বয়সে আমি তো আর নিষ্পাপ শিশুটি নই। তবে আমি আমার বন্ধুদের গলা চিনি। এক সেকেণ্ডে আমি সেটা ধরে ফেলব।’

‘তবে তুমি কী এটা মানো যে বন্ধুর বউদের সাথে শোয়া কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার না?’

‘দেখ তার মানে তুমি বলতে চাইছ বন্ধুদের বউদের সাথে শোয়ার অপরাধবোধ থেকে আমার বমি শুরু সেই সাথে এমন কিছু আমি শুনছি যা বাস্তবে ছিল না।’

‘ না, আমি ঠিক সেটা বলতে চাইছি না।’

‘ও,হ্যাঁ। অন্য সম্ভাবনা। আমার সেই বন্ধুদের কেউ একজন গোয়েন্দা ভাড়া করেছে- যে আমাকে একাকী থাকার সময় কল দিবে। আর বমির ঘটনাটা বিচ্ছিন্ন কিছু। দুইটা কোনো কারণে একই সময়ে ঘটে গেছিল।’

সে বলতে থাকে, ‘এটা কিছুটা স্বাভাবিক শোনায়। এই কারণে তুমি লেখক, আমি নই। তবে গোয়ান্দা গল্পের মধ্যে একটা টুইস্ট থেকে যায়। আমি বন্ধুদের মেয়েমানুষদের সাথে শোয়া কিন্তু বন্ধ করিনি, অথচ ফোন কল আসা থেমে গেছে। তাহলে হিসাবে মিলে না।’

‘মনে হয় লোকটা হাল ছেড়ে দিয়েছিল। টাকা শেষ হয়ে যাবার সম্ভাবনা ও আছে। সে আর ডিটেকটিভ পুষতে পারছিল না। যাই হোক এটা একটা থিয়োরি। এইরকম কয়েকশ থিয়োরি আমি তোমাকে দিতে পারি। কথা হচ্ছে কোনটা তোমার মনে ধরে। আর এখান থেকে তুমি কী শিক্ষালাভ করলে?

‘শিক্ষালাভ?’ সে তার হুইস্কি গ্লাস তার কপালে ঠোকে। একটু চেঁচিয়েই জিজ্ঞেস করে ‘শিক্ষালাভ বলতে তুমি কী বোঝাতে চাইছ?’

‘এটা যদি আবার শুরু হয়। তখন চল্লিশ দিনে শেষ নাও হতে পারে। কারণ ছাড়া শুরু কারণ ছাড়া শেষ এইসব জিনিসে বিশ্বাস কী।’

‘কী বাজে একটা ব্যাপার। এটা আমার আর হয় নি। তুমি ঠিক কী কারণে ভাবছ এটা আবার শুরু হবে।’

‘আমি কীভাবে বলি।’

সে হুইস্কিটা শেষ করে। টিস্যু দিয়ে নাক মোছে।

‘আমার মনে হয় না এর পরেরবার এটা আমার ক্ষেত্রে হবে। অন্য কারো এটা হতে পারে। যেমন ধরো মুরাকামি-তোমার হতে পারে। যতোটা ভালো মানুষ আমি তোমাকে ভাবি আসলে তুমি হয়তো তা নও।’

আমাদের রেকর্ড চালাচালি এর পরে আরো কয়েকবার হয়েছে। সেখানে আমরা মদ খেয়েছি। আমি ডায়েরি রাখি না। তবে এটা ঠিক বিবমিষা আর ফোনকলের ঘটনা আমাদের ক্ষেত্রে আর ঘটেনি।

(হালকা সংক্ষেপিত)

সূত্র

Blind Willow, Sleeping Woman
Twenty-Four Stories
Haruki Murakami
Alfred A. Knolf
New York
2006

--

অনুবাদ: হারুকি মুরাকামির ছোটোগল্প। এক।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার অনুবাদ শুভাশীষদা (গুড়)



তারাপ কোয়াস

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

অনুবাদ ভালৈছে। আচ্ছা এই গল্পগুলা পড়ার কোনো লিঙ্ক কি আছে?

অনন্ত

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

গুগলবুকে পাবেন। তবে পুরোটা না।

আমি গল্পটা অনুবাদ করেছি গুগলবুক থেকে। যে কয়টা পাতা পাওয়া যায়নি অডিওবুক থেকে শুনে শুনে অনুবাদ করেছি।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অনন্ত [অতিথি] এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, শুভাশীষ দা। গুগল বুকে পুরোটা পাওয়া যায় না। এটা বিরক্তিকর। তাই এখন অডিও বুকে গেছি। বাসায় গিয়ে ডাউনাবো।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জাপানী গল্প পড়লে, জাপানী গান শুনলে, জাপানী মুভি দেখলে একটা জিনিষ অনুভব করি যে জাপান ঠিক এশিয়া নয়। চিন্তায়-চেতনায়-ইতিহাসে-সংস্কৃতিতে-রুচিতে-স্বপ্নে-বদমাইশীতে-আচরণে। অনুভবটা একান্তই আমার, তবে সেটাকে ভিত্তিহীন বলে মনে হয়না। মুরাকামির এই দুই হাত ফেরতা অনুবাদ গল্পটা পড়ে অমন বোধই হল। এতে জাপানী থেকে ইংরেজী ও ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদকের শক্তির পাশাপাশি মুরাকামির ভাষার শক্তিটাও টের পাওয়া যাচ্ছে।

লিঙ্কে দেয়া গানগুলো শোনার উপায় নেই। তবে শোনাটা দরকার ছিল, তাতে গল্পটা ঠিকভাবে বোঝা যেতো।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মুরাকামি একটু আম্রিকাঘেঁষা। গান শোনা, পঠন-এইসব দিকে। কেন্‌জাবুরো কিন্তু নিজের দিকে স্বতন্ত্র। আম্রিকাঘেঁষা বলা যায় না।

-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার মনে হয় জাপানের সত্যিকারের আত্মা ধারণ করতেন এই ভদ্রলোক



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কী শিখলাম?
তোর ফোন তুই কর আমার কাম আমি করি
(পারলে ঠেকা)

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হ।

----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।