হাদিয়া মওকুফ.........পাদ্রী বেওকুফ

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০৬/২০০৮ - ১২:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল দুপুরে হিমু মিয়া ফোন করে তেহারি খাওয়ার সম্ভাবনা যাচাই করছিল। এমনিতে ভুড়ি আর গোমাংসের মূল্য, দুটোর বেখাপ্পা উর্ধ্বগতিতে কিছুকাল (অনুর্ধ্ব দু হপ্তা) গোমাংস ভক্ষণে বিরত ছিলাম। তবে বলে কিনা বামুনের প্রতিজ্ঞা চন্ডালের পোষায় না। তেহারির নাম শুনে মন হু হু করে উঠলো।

তো হলো শেষ পন্ত। বিকেল থেকে শুরু করে রাত আট্টা নাগাদ আর দেখি নড়তে চড়তে পারি না। তারপর হামটিডামটির মতো দেয়ালে না বসে গুটিগুটি হেঁটে গেলাম শহরের দিকে। হিমু মিয়া বাড়ি গেল বাঁশে চড়ে। আমি আবারো ভাড়ি বাঁচিয়ে গুটিশুটি বাড়ির দিকে রওনা দেই।

না এবার আর স্টেয়ার্নের মোড়ে না, স্টেয়ার্ন থেকে আরো বেশ কিছুদুর এগিয়ে ডয়েটশে পোস্টের সামনে আসতে দেখি ক্লেমেন্স আর ফ্লোরিয়ান। মুখে মৌলিক হাসি। চোখ লাল। এতো খুশী ক্যান? ফ্লোরিয়ান একটা সান্ধ্যকালীন পত্রিকা ধরিয়ে দিলো। গতরাতে হেসেনের প্রাদেশিক পার্লামেন্টে ছাত্রসমাজের শিকে ছিঁড়েছে। আগামী সেমিস্টারে জ্ঞানার্জন বাবদ আর হাদিয়া দিতে হবে না। টিউশন ফী বাতিল! শিকে ম্যাড় ম্যাড় করছিল ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচনের পর থেকেই। আজন্ম মালদার ক্যাথলিকদের মুখপাত্র, নব্যউদারতাবাদের একনিষ্ঠ ওয়াফাদার খৃষ্টীয় গণতন্ত্রী দল হেসেন প্রদেশে চৌদ্দখানা আসন হারাবার পরেই ক্যাম্পাস একটু নড়ে বসেছিল। তারপর কোয়ালিশন পেজগীতে বিষয়টা মাঝে টেঁসে যেতে বসেছিল। কোয়ালিশনের বিষয়ে এখনো রফা হয়নি। তবে মাস খানেক আগে এসপিডি, গ্রীন আর বামজোট রফা করেছিল, প্রাদেশিক পার্লামেন্টের প্রথম সিটিঙেই টিউশান ফী বাতিল করবে। দীর্ঘদিন রাজনীতি শাস্ত্রের ছাত্রত্ব আর স্বচক্ষে রাজনীতি দর্শনের দীর্ঘতর অভিজ্ঞতা থেকে এইসব চুক্তিটুক্তির উপর ভরসা না করাই মনস্থ করেছিলাম। ওদিকে আবার সুপ্রীম কোর্টে মামলা ঝুলছিল ২০০৬ থেকে। প্রাদেশিক সংবিধানে নাকি সেই ১৯৪৯ সাল থেকে পাঠদানদক্ষিনা হারাম। সেই নিয়ে দুবছর যাবৎ সর্বত্র নানারকম কিচির মিচির শুনেছি। আম্রিকাইংলন্ডনে এ্যাত্তো এ্যাত্তো টেকা লাগে এইখানে লাগে না ক্যান? এইরকম চলতে থাকলে পিতৃভূমিতে নমশুদ্রদেশের ফকিন্নির পুতরা এসে মুফতে আর্যজ্ঞান নিয়ে যাবে। গেলেও কথা ছিল। ছাট্টিফিকেট নিয়ে এখানেই এঁটে বসছে আর্যদের কলিগ হয়ে। এরম চলা কি উচিত? তার সাথে আবার আরেক ফেউ ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট আর ইইসিকে কাঁচকলা দেখিয়ে আর্যমহাজনদের উর্ধ্বতন মজমা ইআরটি একেরপর এক ফতোয়া জারি করে শুধু শিক্ষানীতি না একেবারে সিলেবাস পন্ত পাল্টে দেবার তাল করে চলেছে। এম্রিকা হলে এই সব ফতোয়া বাস্তবায়ন করা সুমায়ের বেফার হতো। কিন্তু ইউরোপে সেটা নানাকারণে শক্ত। পুঁজিবাদী দেশেও কত রঙ্গের মাগনা খিচুড়ি পাওয়া যায়, ইত্যাদি দেখাতে ১৯৪৫-১৯৯০ কালে দেওয়া কল্যাণ রাষ্ট্রের সুবিধাগুলি একে একে বাতিল করা এখন ম্লেচ্ছ মহাজনের জন্য অতীব জরুরি। কিন্তু এতোদিন ধরে সুবিধাপ্রাপ্তরা তা মানবে কেন? ইংলন্ডনে অভিজাত বলতে একধরণের প্রাণী বাস করে। শিক্ষাদীক্ষা তাঁদের জন্য। ইউরোপের মূল ভুখন্ডে গত দেড় শতাব্দী জুড়ে ভাঙচুড়ে অভিজাতদের মেরে তাড়ানো হয়েছে। উচ্চশিক্ষায় এখনো নিম্নমধ্যবিত্তই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বাপদাদার সম্পতিখেকোরা এখানে মোটামুটি বেশীর ভাগই একাধারে ধার্মিক এবং ভোদাই। আমার অভিজ্ঞতার স্যাম্পলিং থেকে বলতে পারি পয়সাওয়ালা বিশ্বাসী ক্যাথলিকদের মতো ভোদাই শুধু প্রকৃত আরব (সৌদী-আমিরাত-মরক্কো)দের মধ্যে দেখেছি। ইয়ে গোটাদুই মালয়ও দেখেছি। পয়সাওয়ালাদের যারা থিঙ্কট্যাঙ্ক তাঁরা সবাই আদি মধ্যবিত্ত। তবে একদিক থেকে এরা ঈমানদার। যথেষ্ট মোটা বেতন পকেটে না যাওয়া পর্যন্ত এরা দালালি তত্ত্ব জন্ম দেন না। ইউরোপ মানে পশ্চিম ইউরোপ এক্ষেত্রে রীতিমতো ইকোনমিক ডিটারমিনিজম মতে চলে। বিশেষ করে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র সংসদগুলি একতরফা বামপন্থীরা দখল করে থাকে। থাকার পেছনে উচ্চশিক্ষার আকাশ ছোঁয়া ব্যায় না থাকাটা খুব বড় কারণ। এরা কর্মজীবনে গিয়ে বেতনটেতন পেয়ে কী করে সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। কিন্তু যতদিন পকেট ফাঁকা ততদিন প্রগতিশীল। এদের অনেকেই পরবর্তীতে সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি করেন।

এইসব দৃশ্যত: আবোলতাবোল আলাপ করতে করতে তিন বন্ধুতে ক্যাম্পাসে ঢুকে দেখি পুরো ক্যাম্পাস গুষ্টিশুদ্ধ নাচছে। যেখানেই উঁকি দেই একটা করে বোতল ধরিয়ে দেয়। মেনজার সামনের গর্তে গিয়ে বসলাম। আমি বললাম, খুশীটা তাৎক্ষণিক। কারণ পার্লামেন্টে ভোটের পরে সিডিইউ'র পার্লামেন্টারী দলের নেতা বলেছে, হেসেনের জন্য দিনটা শোকের। এর আগে নির্বাচনে হারার পরে সিডিইউ'র মুখ্যমন্ত্রী রোলান্ড কখ বলেছিল, বামপন্থীদের উত্থানের দায় এসপিডিকে বইতে হবে। তাঁর মতে বামপন্থীদের উত্থান প্রাদেশিক নিরাপত্তার জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়াবে। আসলে বামপন্থীদের আড়ালে তাঁর ঈঙ্গীত ছিল বিদেশীদের দিকে। টিউশান ফী সম্পর্কে কখ সাহেবের পস্তাব ছিল বিদেশী ছাত্ররা জার্মানদের তিনগুণ দেবে। এমনিতেই গত দুই সেমিস্টারে টাকা দিতে গিয়ে চোখে ধোঁয়া দেখেছি, তিনগুণ দিতে হলে এতদিনে সচলায়তনের ব্যানার হয়ে যেতাম। ফ্লোরিয়ান বলে, কিন্তু অন্তত আগামী সেমিস্টারে টিউশন ফী দিতে হবে না এটাও তো একটা বড় বিজয়। বললাম তা ঠিক। তবে প্রকৃত বিজয় হইতো গত দুই সেমিস্টারে দেওয়া টাকা ফেরত পাইলে। সেই সম্ভাবনা অবশ্য এখনো আছে। জুনের শেষ নাগাদ সুপ্রীম কোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি চুপচাপ মাল টানি। এসপিডির পিছনে যে ইউরোপের ধোনকুবেররা নাই তা তো না। না থাকলে তারা এতবার এতগুলি নির্বাচনে জিততে পারতো না। মাফিয়াদের ব্যাকিং ছাড়া নির্বাচনে জিতলে অন্তত মানুষের পৃথিবীর পুঁজিবাদী সমাজে গৃহযুদ্ধ বা নাশকতার মুখে না পড়া অসম্ভব। কি নয়ছয় হয়েছে তলে তলে কে জানে? ওদিকে সিডিইউ সন্ত্রাস সম্পর্কে যা বলছে তাতে মনে ভয়ই সৃষ্টি হয়। হিটলারের দেশ তো! ১৯৩৬ সালে রাইখস্টাগের সেই ঘটনা ভুলি কিভাবে? তাছাড়া ইআরটির এইমুহুর্তের ভাবভঙ্গী দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে ইউরোপকেও ক্রমশ ছাগুকরণ প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে গেলে শিক্ষার ব্যায় বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। অভিজাতরা উচ্চশিক্ষায় আসবে ঝাঁকে ঝাঁকে। নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে দুচারজন উঠে আসবে বৃত্তি পেয়ে। ঐ দুচারজনকে বেশী বেতন দিয়ে বশ করা হবে, আর বাকিরা তো ডিফল্ট ছাগু। এর মধ্যেও ডায়ালেকটিকস ঠিকই কাজ করবে হয়তো......অন্যদিকে উচ্চশিক্ষিতরা বরাবরই মহাজনদের হাতের মুঠায়, কিন্তু এতকাল তাঁদের হাত করতে নানান কায়দা করতে হয়েছে...নতুন যে রামছাগলের ঝাঁক তৈরী হচ্ছে তারা শুরু থেকেই গলবস্ত্র হয়ে থাকবে। তারপর গরীব দেশে গিয়ে জ্ঞান দিবে। আহারে মাইনসের কত কষ্ট........

যাই হোক। আমি অভাবী মানুষ। মাস চালাইতেই প্রাণ হাঁসফাঁস করে। টিউশন ফী দিতে গিয়ে জিভ বেরিয়ে হাঁটুতে নেমে আসছিল। বাতিলে আমি খুশী তো বটেই। ব্যক্তি হিসেবেই খুশী। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া আন্দোলনে রাস্তায়ও নেমেছিলাম। তখন সিডিইউ গায়ের জোরে আইন চাঁপিয়ে দিয়েছিল। ফ্রাঙ্কফুর্টে মারামারিও করেছে ছাত্ররা পুলিশের সাথে। তখন জার্মান ছাত্রদের উপর খুব রাগ হতো। ফ্রান্সের ছাত্ররা ২০০৩ সালে টিউশন ফী ঠেকিয়েছে পুলিশ পিটিয়ে, গাড়ি ভেঙে, দোকান ভেঙে। জার্মানরা ১৯৬৮র পরে আর জ্বালাও পোড়াওয়ে নামেনি। আজ রাজনীতির প্যাচেই হোক আর যেভাবেই হোক শেষ সেমিস্টারটাতে অন্তত একগাদা টাকা গুণতে হবে না। এটা তো এক ধরনের বিজয়ই। বিজয় হোক বা না হোক, অন্তত পাদ্রীর মলিনমুখটা দেখার আনন্দে দু পেগ তো টানতেই পারি, নাকি?

ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা: www.fr-online.de


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

অতীব চমৎকার সংবাদ, বদ্দা। এবার তাইলে কিছু টাকা এইদিকে ঠেলে দ্যান।


কি মাঝি? ডরাইলা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হুম। তা দিমু। তবে আগে পাছার দিকে শর্ট পড়া কাফুর জোড়া দিয়া লই দেঁতো হাসি



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

দ্রোহী এর ছবি

আপনের কাছে কইলাম পরোটা—মাংস খাওয়া বাবদ ২০ টাকা পাই (গত বছরের হিসাবে)। ওইটা সহই দিয়েন। হো হো হো


কি মাঝি? ডরাইলা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি
হিমু এর ছবি

আমি আশাবাদী লোক, এতদিন হোগামারা খেয়ে গেছি, এবার হোগামারা দেবার পালা। দুই সেমেস্টারের টিউশন ফি ফেরত চাই। একদফা একদাবি ট্যাহা ফিরত কবে দিবি!

আগামীকাল তাহলে মাল্লু খেয়ে টাল্লু হচ্ছি। এক বোতল হুইস্কিই সই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুমন চৌধুরী এর ছবি
সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

০১
হা হা হা, কড়া লেখার কড়া মন্তব্যের কড়া জবাব।
আর সুমন ভাইর যা স্বভাব (শুধু ইয়ে কথা বলে..),
দ্রোহী ভাই এমনিই ট্যাকা চাইছে...
তার কি আর ট্যাকার পড়েছে অভাব?
তবে, সত্যিই যদি ট্যাকা চায়
আর হাত পাতে আপনার দরজায়
এক্কেরে মারছে!
কাম সারছে!
ইয়া মোটা ডাকাইতের লাহান গোঁফ, হাতে বন্দুক
দেখলেই, বুক করে ধুকপুক
জানের মায়া ভুলে
যে কটা ট্যাক চায়, দ্যান তার হাতে তুলে।

০২
হ্যাঁ, আপনার লেখা হয়েছে বেশ
আর এই আমার মন্তব্যের পরিশেষ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গুল্লি কবিতা....

শুক্রিয়া...



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

দ্রোহী এর ছবি

ইয়া মোটা ডাকাইতের লাহান গোঁফ, হাতে বন্দুক
দেখলেই, বুক করে ধুকপুক

ভুড়ি বাদ পড়ছে। খাড়ান আপনেরে গুল্লি করুম।


কি মাঝি? ডরাইলা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তুমার এই ফটুক ঘরের লুকে দেখছে?



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

দ্রোহী এর ছবি

হ। খারাপ কিছু কয় নাই। কইছে , "তোমার সাথে অনেক মিল।"


কি মাঝি? ডরাইলা?

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

হাছা কথা কইছে বইলা ঠাওর হয় না। আপনারে খোঁচা দিতে চাইছে মনেহয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
হযবরল এর ছবি

ওরে। এইবার খালি ভুনা গোশ দিয়া তেহারী চলবো।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
অমিত এর ছবি

বদ্দা টিখিট ফাডাই দিয়েন। জর্মন দ্যাশটা দেখনের একখান শখ আছিল।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দিমু....

আমার জানালার বাইরে ক্যাম্পাস গম গম করতাছে এখনো...পোলাপান মনে হয় খুশী হওয়ার মওকা কম পায়



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হ টানেন... আমরা পড়ি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এই আনন্দ সংবাদ স্থায়ী হোক তাইলে বুড়া বয়সে পড়ার শখ হইলে জার্মান দেশে চলে যাবো ।
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সময় থাকতে দৌড় দ্যান....দেঁতো হাসি



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমিও সেইটা ভাবতেছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে মাঝে মাঝে জার্মান নামধাম দেখে কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। ওরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি মওকুফ করেছে? এবং পুরনো ফি ফেরতও দিতে পারে। তাইলে কি কিয়ামত আইসা গেল নাকি। আজব দেশ!!! সব মনে হয় হিটলারি!!!

তবে আপনার লেখা জবর হয়েছে।

জিজ্ঞাসু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমি শুরু করছিলাম টিউশান ফী ছাড়া। গত সেমিস্টার থিকা হঠাৎ কইরা চাপাইয়া দেওয়া হইছিল। টিউশান ফী না লাগলেও একটা টাকা সেমিস্টার টিকেট আর নিরাপত্তা ফী বাবদ দিতে হয়। টিউশান ফী যোগ হওয়াতে অঙ্কটা একলাফে তালগাছে উইঠা গেছিল।

জার্মানীর সব প্রদেশে টিউশন ফী বসে নাই। আবার সব প্রদেশে উঠেও নাই। শুধু হেসেনে বাতিল হইছে গত পরশু। যেই সব প্রদেশে সিডিইউ মানে খ্রীষ্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন ক্ষমতায় আছে/ছিল ২০০৩ থিকা ২০০৭ এর মধ্যে, সেই সব প্রদেশে তারা টিউশান ফী চালু করছে। সিডিইউ আর এলডিপি বাদে বাকী দলগুলি, অন্তত মুখে মুখে এর বিরুদ্ধে। টাকা ফেরত পাওয়ার তেমন সম্ভাবনা দেখি না। তবে টাকা দেওয়ার ক্ষমতা স্টেটের আছে। মাত্রতো দুই সেমিস্টারের ব্যাপার। এর মধ্যে অনেকেই আবার শিক্ষামন্ত্রণালয় থিকা টাকা ধার কইরা ফী দিছে। এই অনেকের সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ। সুতরাং স্টেটরে কার্যত যতটাকা নিছে ততটা ফেরত দিতে হবে না। এই আর কি....



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

স্পর্শ এর ছবি

আমার মত অনার্যের জন্য এটা একটা ভাল খবর!

[][][][][][][][][][][][][][][][][][]
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ, কোরো না পাখা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

রায়হান আবীর এর ছবি

গতকালই এক দোস্ত বলছিল জর্মন দেশের কথা। ওইখানে নাকি আগে মাগনা পড়াতো, এখন টিউশন ফিস নেয়।

ভোর হতেই দেখি টিউশন ফিস বাতিল। বাহ্‌ দারুন তো...

---------------------------------

তীরন্দাজ এর ছবি

আমাদের সময় কোন ফি দিতে হতো না। তবে সামান্য একটি অংক ষ্টুডেন্ট ইউনিয়নের ফি হিসেবে দিতে হতো।

এখন যে ফি বাতিল করা হলো, তা শুধুমাত্র "হেসেন"এর জন্যেই প্রজোয্য। রো, ক, একটা হারামজাদা। কয়েক বছর আগে পার্টির টাকাপয়সার স্ক্যান্ডালে তার নাম ছিল উপরের দিকের ক্রিমিনাল হিসেবে। এখন আবার জাতে উঠেছে।

আপনের পর্যালোচনা সঠিক হইছে!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কখ সাহেব তো গতবার চ্যান্সেলর হওয়ার জন্যে খেপছিল। তার কথা বলার ভঙ্গীটাই আমার কাছে অশ্লিল মনে হয়। হেসেনের নির্বাচনের আগে সে কিরম হাতপা ছুইড়া বলতেছিল কিভাবে (বিদেশীদের কারণে) সন্ত্রাস একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হইতেছে ইত্যাদি। নির্বাচনের পরেও তার আঙ্গুল নাইড়া কথা বলা থামে নাই।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

জর্মন দেশের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ করবো ভাবছিলাম। এর মধ্যে সুমনের এই খবর (বাবা কিছু টাকা জমাও, বিয়াশাদি করন লাগব না। দাড়িমাড়ি তো পাকিয়া গেল...যাউকগা)। ওদিকে আমাদের বিল্ডিংয়ের নীচতলায় এক জর্মন সুন্দরী আসেন। তাঁর কাছ থেকে আমার পরিবার কী এক সুরকি কালারের সুরুয়া বানানো শিখছে। ২১ দিন গাঁজাইয়া, এক ঘন্টা পাতন কইরা পর খাইলে, তিরিশ পারা মুখস্ত কইতে পারি মনে লয় এক বৈঠকে।
তা বাবা সুমন, প্রবাসে গিয়া তুমি কি তোমার অনাথ ভাই-বেরাদরদিগকে ভুলিলা। যাই হোক, তোমার স্মরণে আমরা জাবিবাসী নিয়মিত শ্রদ্ধা জ্বালি। আর কিছু না হোক, তুমি কয়েক গিরা সইলতা পাঠাইও।
কী আর বলিব, : জিঁউ জিটি জিঙ্কা। মানে জীবন যেখানে যেমন, মানে লাইফ ইজ এলসহোয়ার, মানে... কছ কী, লাস্টের সীন তাইলে এ-ই? খাইছে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
ধুসর গোধূলি এখন চিপায় এর ছবি

এনআরভে আর বাডেন বুরটেমবেয়ার্গের কি খবর বদ্দা?

হিমু এর ছবি

আন্দোলন কর নাইলে মুক্তি নাই


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পেজগী লাগছে। যা ভাবছিলাম প্রায় তাই। হেসেনের মূখ্যমন্ত্রী চুতমারানি কখ টিউশান ফী বাতিল বিলে সই দেয় নাই এখনো। গ্রীনের কিছু এমপিরে ভজাইয়া সে পাল্টা ভোটের আয়োজন করতাছে। পর পর দুইদিন ক্যাম্পাসে বিশাল উৎসবের পর গতকালকে দুপুরে দেখি আবার মিছিল। জিগাইয়া শুনলাম এই বৃত্তান্ত। তারপর একটু আগে খবরের কাগজ পইড়া দেখি ঘটনা ভয় পাওয়ার মতোই। এসপিডির ড্রামস্টাড্ট এলাকার এক এমপির লগে কখ শালার পো দরজা লাগাইয়া আলাপ করছে। ঐ শালীরে আর তার লগে গ্রীনের আরো কয়টারে ভজাইতে পারলেই হইলো। তবে একবার সিদ্ধান্ত হইয়া যাওয়ার পর কোন বিলরে আবার ভোটে দেওয়া যায় কিনা এই নিয়া সাথে সাথে কেস করা হইছে। প্রাদেশিক আর জাতীয় দুই সংবিধানেই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একাধিকবার আলোচিত হইতে পারার ব্যাপারে নাকি কিসব লেখা আছে। (সেইটা জার্মান সংবিধানের যে সংক্ষিপ্ত ভার্সন আমার কাছে আছে সেইখানে নাই) তারমানে ঘটনা হইল পুতুলের সুতায় টান পড়ছে সম্ভবত ব্রাসেলস থিকা.....



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।