‘রওশন জামিল একসন্তানের জনক। গোঁফ আছে।‘

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: রবি, ১৮/০৮/২০১৩ - ১০:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

rowsan-p

ওসমান সিরিজ গুলি আপনার রচিত নাকি বিদেশী কাহিনী অবলম্বনে ?

বিদেশি কাহিনি অবলম্বনে। লুই ল‘আমরের স্যাকেট সিরিজ এর ভিত্তি। আসলে সব বাংলা ওয়েস্টার্নই কোন না কোন বিদেশি কাহিনির ছায়ায় বেড়ে উঠেছে।

আপনি কি কখনো বুনো পশ্চিম গিয়েছিলেন ?

না। তবে যাওয়ার ইচ্ছে আছে, যদিও সেই বুনো পশ্চিম আর কোথাও নেই। আর রিজার্ভেশনে থাকা ইনডিয়ানরাও ম্যুজিয়ামের প্রাণী।

আপনার নিজের সৃষ্টি সবচাইতে প্রিয় চরিত্র কোনটি?

নিজের সৃষ্টি বলতে কী বোঝাচ্ছে স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষ আনন্দ পেয়েছি ওরিন ওসমান এবং সাবাডিয়াকে নিয়ে লিখে।

ওসমান পরিবারদের নিয়ে আপনার নিজস্ব বক্তব্য কী? (অনুবাদ করা হয়েছে সবগুলো কিন্তু প্রেক্ষাপটে মেলানোর ব্যাপার আছে)।

প্রেক্ষাপট মেলাবার ব্যাপারটা ছিল প্রথম দুটোয়, তারপর তো...

IMG_0127

486867_10152811865820497_1415642031_n

কোন বইটি নিয়ে আপনার ভেতর সবচাইতে বেশি তৃপ্তি কাজ করে আর কোনটি নিয়ে নয়?

-- বলা কঠিন, বিশেষ করে এতকাল পর।

রওশন জামিল ভাই তো দেশ ভালই ছিলেন, ভাল ক্রীড়া সাংবাদিক ছিলেন, ওয়েস্ট-এ চলে গেলেন কেন?

পশ্চিমের প্রতি, পশ্চিমা জীবনদৃষ্টির প্রতি, ওদের কোনকিছুকেই মুখবুজে গ্রহণ না করা বা ধর্ম না বানিয়ে ফেলা বা প্রশ্ন করা, এর প্রতি একটা আকর্ষণ আমার বরাবর। এটা হয়ত একটা কারণ। আর তাছাড়া মানুষের জীবনে অনেক সময় একটা পরিস্থিতি আসে বা আসতে পারে যখন ইউ জাস্ট ডু হোয়াট ইউ হ্যাভ টু ডু।

আপনার প্রিয় ওয়েস্টার্ন লেখক কে ?

লুই লা‘আমর এবং করম্যাক ম্যাকআর্থি। দ্বিতীয় জন ভিন্ন স্বাদের নিও-ওয়েস্টার্ন লেখক। তাঁর নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান বইটা ছবি হয়েছে।

আপনি আর কোন কোন ছদ্মনামে সেবায় লিখেছেন?

না।

অনুবাদ বা বিদেশি কাহিনী অবলম্বনে লেখা লিখতে গিয়ে কি রাইটার্স ব্লক কাজ করে?

আমার ক্ষেত্রে করে। মনে হয় একটু বেশিই করে। হা হা হা।


কোন বই পড়ে জীবনে প্রথম খুব কষ্টে কেঁদে ফেলেছিলেন?

বহু বই পড়েই কেঁদেছি বা চোখ আর্দ্র হয়েছে। এমুহূর্তে নাম মনে করতে পারছি না।

'রওশন জামিল' কি ছদ্মনাম ?

না।

সেবা'র বঙ্গানুবাদ এতটাই ঝরঝরে যে কখনো কখনো সেটা যেন মূল বইকেও ছাড়িয়ে যায়' এই মতামত আপনি সমর্থন করেন? করলে কেন, একটু ব্যাখ্যা করুন প্লিজ!

অনুবাদ অনুবাদই। মূলকে ছাপিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ তার নেই। যেখানে সে তা যায় সেখানে সেটা আর মূল লেখকের থাকে না। অনুবাদকের হয়ে যায়। অনুবাদে গ্রহণ-বর্জন, অর্থের সংকোচন বা সম্প্রসারণের সামান্যতম সুযোগ নেই। অনুবাদককে মূল ভাষার রচনাটি অনুধাবন করে নিজের ভাষায়, সেই ভাষায় আন্তরবৈশিষ্ট্যর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে স্থানান্তর করতে হয়। আশা করি আমার মনোভাবটি বোঝাতে পেরেছি।

এতদিন থেকে ওয়েস্টার্ন লেখার অভিজ্ঞতা থেকে কি কখনও মৌলিক ওয়েস্টার্ন লিখতে ইচ্ছা করেনি? লিখেছেন কি? কোনটা? ( যদিও পড়ার সময় সবগুলিই মৌলিক ধরে নেই, বিদেশি বই অবলম্বনে লেখা হতে পারে এটা মাথায় থাকে না।)

আ... যেকোন ইতিহাসধর্মী মৌলিক রচনার পূর্বশর্ত গবেষণা। এবং সেজন্য চাই রিসোর্সেস বা সহায়সঙ্গতি। ওটা এতই ব্যয়বহুল, প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয়।

নায়কদের নামে বাঙালি বা আরবি নাম প্রীতির কারণ কি? নায়িকা কেন বাঙালি নামে দেন না কখনো সখনো? একটা বাঙালি মারদাঙ্গা ওয়েস্টার্ন হিরুইন চরিত্র বানানো যায় না? নিদেন পক্ষে নেটিভ আমেরিকান?

ওসমান নামটা কিন্তু আরবি থেকে নেইনি। ওটা আসলে নর্ডিক অসমন্ড-এর অপভ্রংশ বা ওই জাতীয় কিছু। বানান হয়ত অনেক কিছুই যায়, কিন্তু রেস্তটা জোগাচ্ছে কে? হা হা হা।

IMG_0126

সম্প্রতি এক তথ্য সূত্রে জানলাম, সেই আঠার শতকেই একদল বাঙালি জাহাজে করে এসে লুইজিয়ানা/ টেক্সাস এসব অঞ্চলে আবাস গেড়েছিল, এদের নিয়ে কোনো ওয়েস্টার্ন কাহিনী ফাঁদা যায় কি না দেখবেন?

এর উত্তর ওপরে দিয়েছি।

এত সুন্দর লেখার হাত , যেকোন থ্রিলার/ সাই-ফাই প্রাণ দিতে পারেন বাংলা ভাষাতে, ওয়েস্টার্ন এর প্রতি আকর্ষণ বা দুর্বলতা কেন? বিশেষ করে যখন ওয়েস্টার্নের জীবনযাত্রা আমাদের সাধারণ বাঙালি জীবন যাত্রা থেকে একদমই অন্যরকম আর অপরিচিত। নাকি এটাই সুবিধা, লেখক হিসেবে ভুজুং ভাজুং কিছু লিখলেও পাঠকের কাছে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম বলে।

আসলে ভুজুং ভাজুং কিছু লিখেছি বা দিয়েছি কিনা জানি না। সাইফাই আমাকে সেভাবে টানেনি। মে-বি, মৌলিক গল্প বা উপন্যাস লেখার ক্ষমতা নেই। তবে কিন্তু কি জানেন, মৌলিক লেখার চেষ্টা যে করি না বা করিনি কখনও তা নয়, কিন্তু যখনই সেই চেষ্টা নিই, মনের ভেতর একটা ভয় কাজ করে এই বুঝি কারও ছায়া পড়ল। তখন দড়িটাকেও সাপ মনে হয়। তারচেয়ে বাবা এই ভাল, বলে কয়ে পুকুরচুরি। হা হা হা।

লেখালেখি শুরু করলেন কিভাবে?

জীবনে প্রথম লেখা ক্লাস ফাইভে। স্কুল ম্যাগাজিনে। প্রকাশিত হওয়ার পর সহপাঠীরা বলল, নিজে লেখেনি, বাপ লিখে দিয়েছেন। ভীষণ ধাক্কা খেলাম একটা। আগ্রহ হারিয়ে ফেললাম। তারপর আবার শুরু পত্রিকায় রিপোর্ট/ফিচার লেখার মধ্যদিয়ে, যখন মাস্টার্সে পড়ি।

লেখালেখিই কি আপনার একমাত্র পেশা? (ব্যাক্তিগত প্রশ্ন, তবুও জানতে চাইছি কারণ পেশাদার লেখক বাংলাদেশে খুব বেশি নেই)

সাংবাদিকতা এবং লেখা।

মাঝে মাঝে কি কখনও লেখালেখি ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে?

ছেড়ে দিয়েছিলামে তো! প্রায় কুড়ি বছর লিখিনি। একটা অক্ষরও না। মানে গল্প বা ওই জাতীয় কিছু।

অনুবাদ করতে গিয়ে কি কখনও এমন হয়েছে যে, খুব চমৎকার একটা জিনিস কিন্তু বাংলায় সেটার ঠিক অনুবাদ আসছে না?

অবশ্যই। ইংরেজিতে একটা কথা আছে না লস্ট ইন ট্রান্সেলশন, এটা সব সময় সত্যি। আসলে এটা সবক্ষেত্রেই সত্যি। কোনকিছু পড়ার পর আপনার মনের ভেতর যে অনুভূতি হয়, যে একটা ছবি ফুটে ওঠে, আমার ধারণা, তা কখনই লিখে বা বলে অপরকে জানান সম্ভব নয়। আপনি জানাতে গিয়ে মহৎ আরেকটি সৃষ্টি হয়ত করতে পারবেন, কিন্তু পাঠের মুহূর্তে ওইয়ে অনুভূতি, যা আপনার মনের কোন গহন ও অন্ধকার কোণে অকস্মাৎ জ্বলে উঠল দীপশিখার মত, আপনি মনে মনে বললেন, বাহ্!, এইটা কিন্তু লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

সেবার বই (ওয়েস্টার্ন সহ) অনেকদিন পড়া হয় না; এবং আমি সবগুলো ওয়েস্টার্নও পড়িনি। কিন্তু যখন ওয়েস্টার্ন পড়তাম, তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলামঃ প্রধান চরিত্র হিসেবে ওয়েস্টার্নগুলিতে অ্যান্টি-হিরো চরিত্রের অনুপস্থিতি; মনে হতো নৈতিকভাবে কোন ধূসর চরিত্র নেই, সবাই সাদা অথবা কালো। ১৯৬০-র দশকে সারজিও লিওনে তাঁর "The Dollar Trilogy" নির্মাণ করার পর থেকে ওয়েস্টার্ন ছবিতেও ধীরে ধীরে অ্যান্টি-হিরো চরিত্রগুলি প্রাধান্য পেতে শুরু করে; অথচ সেবার ওয়েস্টার্নে এধরনের চরিত্র দেখতে পেয়েছি বলে মনে পড়ে না (অন্ততঃ ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত; ভুল হলে মার্জনা এবং সংশোধন করবেন) এর কি কোন বিশেষ কারণ ছিল?

কারণ এককথায় একটি। ওই বইগুলি হাতের কাছে না থাকা।


মিসিসিপি নদীর পশ্চিমে শ্বেতাঙ্গ মাইগ্রেসন এবং আমেরিকান আদিবাসীদের উচ্ছেদ/গণহত্যা প্রায় সমান্তরাল ধারায় চলেছে। অথচ আদিবাসীদের উচ্ছেদ/গণহত্যাকে কেন্দ্র করে আমার পড়া ওয়েস্টার্নের সংখ্যা সীমিত। "বিদেশী কাহিনী অবলম্বনে" উপন্যাস লেখা কি এর পিছনে কোন ভূমিকা রেখেছে?

আদিবাসী উচ্ছেদ/গণহত্যা উপজীব্য করে ওয়েস্টার্ন ইংরেজিতে তেমন নেই মনে হয়। কে আর নিজেদের অপকর্মের কথা ঢাক পিটিয়ে প্রচার করতে চায়। ফলে সেবা, বা অন্যান্য প্রকাশনের, বইগুলো বাজারে কাহিনির বাইরে যায় না।

আপনার লেখালেখির অনুপ্রেরণা কে?

আমার বাবা।

আপনার পরিবারের কথা শুনতে চাই।

কী বলব। দুই সন্তান। বড়টি, ছেলে, আন্ডারগ্র্যাড করে ব্যাংকে চাকরি করে। ছোটটি, মেয়ে, হাই স্কুল সিনিয়র। আর স্ত্রী হোমমেকার।

আপনাকে যদি বলা হয় একটা ডুয়েল লড়তেই হবে, কিন্তু কার সাথে ডুয়েল লড়তে হবে সেইটা বাছাই করতে পারবেন। তাহলে কাকে বাছাই করবেন এবং কেন?

সময় আসুক, তখন দেখব।

৯০ দশকের মাঝামাঝির কথা । বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত প্রয়াত অভিনেত্রী রওশন জামিল আর আপনার নাম এক বলে আমাদের সবারই কম বেশী ভুল হতো এই ভেবে যে, ওয়েষ্টার্ণ লেখক আর অভিনেত্রী একই মানুষ । খুব অবাক হতাম এই ভেবে যে, সিনেমার পর্দায় যাকে সবসময় নাকের পানি-চোখের পানি এক করতে দেখছি সেই মানুষটাই এমন ধুন্ধুমার কাহিনী লেখেন কেমনে? আপনারও নিশ্চয়ই এ প্রসঙ্গে কম-বেশী মজার অভিজ্ঞতা থাকা স্বাভাবিক। আমরা জানতে পারি কি?

এ ব্যাপারে বহু চিঠি এসেছে প্রাঠকের। কাজীদা একটা উত্তর দিয়েছিলেন, সেটাই শেয়ার করি। তিনি আলোচনা বিভাগ জবাব দিয়েছিলেন: ‘রওশন জামিল একসন্তানের জনক। গোঁফ আছে।‘

সেবার অনুবাদ, অ্যাডাপটেশন, মৌলিক লেখা, সবই খুব ঝরঝরে গদ্যে হয়। কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কি অফিসিয়ালি লেখক-কনট্রিবিউটরদের দেওয়া হয়? নাকি ব্যাপারটা কালচারাল?

নীতিমালা দেয়া হয় না। তবে কাজীদার একটা দুর্মর বিশ্বাস আছে, হয়ত এর ভিত্তিও আছে, ব্যবসায়িক তো অবশ্যই আছে, সেটা হল ঝরঝরে ভাষা হলে পাঠক নেবে। এর বাইরে তিনি কখনও কিছু বলেন না। অন্তত আমাকে বলেননি।

ওসমান পরিবার এবং সাবাডিয়া - কোনটি বেশী প্রিয় আপনার কাছে?

দুটোই।

এখন কি লিখছেন ওয়েস্টার্ণ?

এই মুহূর্তে কিছু না। আসলে ওয়েস্টার্ন লিখতে মন চায় না আর। মনে হয় ওই সময়টা পেরিয়ে এসেছি।

সুদীর্ঘকাল সেবার মধ্যে একটা সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় ছিল, চমৎকার সব বই পেতাম আমরা । তারপর রকিব হাসান, শেখ আবদুল হাকিম এর মত লেখকদের সাথে কাজীদা'র সম্পর্কের অবনতি এবং পরবর্তী ইতিহাস । আপনার কি মনে হয় ? এর কারন কি ?

আমি দেশে নেই। কোন মন্তব্য করা অনুচিত। তবে ব্যাপারটা দুঃজনক, সন্দেহ নেই।

সুপরিচিত ওয়ের্ষ্টান চরিত্রদের (যেমন - ওয়াইল্ড বিল হিকক) সেবার ওয়ের্ষ্টান এ প্রায় দেখাই যায়নি । কারন কি ?

বই না পাওয়া।

একটানা অনেকদিন ওয়ের্ষ্টান লিখে, তারপর আপনি লম্বা সময় ওয়ের্ষ্টান লেখা বন্ধ রাখলেন (সেবার সাথে না থাকার কারনে বা দেশ ত্যাগের কারনে ) , লিখতে ইচ্ছে হত না এ সময় ?

হয়নি যে তা না। কিন্তু সময় ছিল না। আর ওয়েস্টার্নের কথা যদি বলেন, হয়েছে কী, আমেরিকায় এসব বইয়ের পাঠক নেই। ফলে লাইব্রেরিগুলোয় থাকে না সেভাবে।

ফেরা, আপনার লেখা প্রথম ওয়েস্টার্ন বই নিয়ে কিছু বলুন?

ওই গল্পটা কিন্তু লুই লা`মর ধার করেছেন জেন গ্রে-র একটা উপন্যাস থেকে। নামটা এমুহূর্তে মনে করতে পারছি না। হুবহু এক কাহিনি।

ফেরা , ওয়ানটেড আপনার প্রথম দুই বইতে পরে ছায়া উপত্যকাতেও দেখা গেছে আপাত আউট ল কেউ আসলে ভাল হবার চেষ্টা করছে! এমন চরিত্রের প্রতি কী আপনার বিশেষ সহানুভূতি আছে?

আমার মনে হয় সব মানুষের মধ্যেই ভাল হওয়ার জন্য একটা সুপ্ত বাসনা থাকে।

আপনার লেখা ওয়েস্টার্নগুলোতে দুড়ুম দড়াম অ্যাকশনের সাথে বেশ বুদ্ধিমত্তার খেলাও চলে, মানে গোয়েন্দা কাহিনীর মত বেশ রহস্যও দেখা যায় খারাপ লোকদের ঘিরে, এই নিয়ে কিছু বলবেন কি?

কারণটা এমন হতে পারে যে আমি যে-গল্পগুলো বেছে নিয়েছিলাম সেগুলোয় রহস্যের ঘনঘটা ছিল। হা হা হা।

ঘুরে ফিরে প্রকৃতির বিশালত্ব, রুক্ষতার সৌন্দর্যও বারবার ফুটে ওঠে আপনার কাহিনীর ফাঁকে, যা অন্য অনেক ওয়েস্টার্ন বইয়ের চেয়ে স্বকীয়। প্রকৃতির প্রতি এই পক্ষপাত এবং মনোযোগের বিশেষ কোন কারণ আছে কি?

481626_10151512676678087_180468175_n

ওয়েস্টার্নে কিছুমাত্র আমার নিজস্বতা যদি থেকে থাকে, সেটা প্রকৃতিতে। প্রকৃতি আমার কাছে সবসময়েই এক দুর্জ্ঞেয় চরিত্র। আমি কখনও সেটাকে ধরতে চেষ্টা করেছি, আবার কখনও-বা প্রকৃতির মধ্য দিয়ে আগাম আভাস দেয়ার চেষ্টা করেছি কোন ব্যাপারে, ইংরেজিতে যাকে ফোর-শ্যাডৌয়িং বলে।

সাংবাদিক জীবনের কথা কিছু বলুন।

জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত, সবচেয়ে ভাল লাগা কাজ। সুযোগ পেলে আবার করব।

নতুন ওয়েস্টার্ন লেখকদের কাজ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

না পড়ে মন্তব্য করা অনুচিত। তবে অনুমান করি নিশ্চয় ভাল, নয়ত পাঠক নিচ্ছেন কেন!

ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সী তো সেবা থেকে আপনার অনুবাদেই বাহির হয়েছিল, সেটা নিয়ে কিছু বলুন? মানে সেই বইটি কিন্তু আগেও অনুবাদ হয়েছিল বাংলাতে, তারপরও করার চেষ্টা করলেন, এবং দারুণ ভাবে সফল হলেন ?

944392_10152819450055497_274633640_n

হ্যাঁ, পঞ্চাশের দশকের শেষাশেষি বা ষাটের শুরুতে মনে ফ্রাংকলিন পাবলিকেশন থেকে বেরিয়েছিল দি ওল্ড ম্যান দ্য সি, অনুবাদ করেছিলেন ফতেহ লোহানি। অন্তত, অনুবাদক হিশেবে তাঁর নামই প্রকাশিত হয়। ওটা বাজারে লভ্য থাকলে হয়ত আমি অনুবাদ করতাম না, আবার কী জানি করতেও পারতাম, একটা ভিন্ন স্বাদ দেয়ার জন্য। অনুবাদ তো শুধুই নিজের ভাষায় কাহিনির পুনর্কথন নয়, মূলের পোয়েট্রটাকে ধরবারও একটা ব্যাপার থাকে। আমি চেষ্টা করেছি, কতটুকু পেরেছি সময় বলবে, মূলের যে গদ্য তার ছন্দটাকে ধরতে। তাছাড়া, হয়েছে কী, এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় বই বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না, ওইটুকুন পরিসর অথচ কী গভীর জীবনবোধ -- এ ম্যান ক্যান বি ডেস্ট্রয়েড বা নট ডিফিটেড। ভীষণভাবে সত্য মানি কথাটাকে, বুড়ো সান্তিয়াগো সব হারিয়েছে কিন্তু পরাভব মানেনি, তার লড়াই ঈশ্বরের সঙ্গে, তার লড়াই প্রকৃতির সঙ্গে, তার লড়াই নিয়তির সঙ্গে। জানেন, ঠিক এই কারণেই আলবেয়ার কামুর ‚মিথ অভ সিসিফাস"ও আমার ভীষণ পছন্দের একটি বই। সিসিফাসই নিজেই তাঁর নিয়তির প্রভু, তিনি আমাদের সেই সমুন্নত পৌরুষের শিক্ষা দেন যা দেবতাকে অগ্রাহ্য করতে শেখায়। বাই দ্য ওয়ে, আমি মিথ অভ সিসফাসসহ কামুর আরও কিছু প্রবন্ধ অনুবাদ করছি, মিথ অভ সিসিফাস অবশ্যি উত্তরাধিকারে বেরিয়েছে গেল বছর।

আর কোন ক্ল্যাসিক বা অনুবাদ বাংলা করেছিলেন কি?

মার্ক টোয়েনের দি অ্যাডভেঞ্চার অভ হাকলবেরি ফিন করেছি, তবে ওটা আমার কাছে একটা দুঃস্বপ্নের মত- সেবায়ন করতে গিয়ে, মানে ছাঁটতে গিয়ে, বইটা আসলে রওশন জামিলের হাকফিন হয়ে গেছে, স্যামুয়েল ক্লিমেন্সের না। আমি আপত্তি তুলেছিলাম সংক্ষেপণের ব্যাপারে, কিন্তু উপরঅলা শোনেননি, ফলে বইটার আসল প্রাণ বলে আমি যেটাকে মনে করি, এর রাজনৈতিক বিষয়গুলো বাদ দিতে হয়। সম্প্রতি আরও কেউ একজন করেছেন বইটা শুনেছি, এবং নানা প্রশ্ন করে বুঝেছি, তিনিও সংক্ষেপ করেছেন।

আলোকচিত্র নিয়ে উৎসাহের শুরু কথা থেকে? আলোকচিত্রে মাঝ দিয়ে আপনি সমাজের কোন জিনিসটা ফোকাসে আনতে চান?

ফোটোগ্রাফির শখ ছোটতেই কিন্তু ক্যামেরা হাতে পাইনি, সেবায় থাকতে কাজীদার ক্যামেরায় হাতেখড়ি। তারপর এখন এখানে একটু আধটু চেষ্টা করছি। যখন সময় পাই আরকি।

রওশন জামিলের তোলা কয়েকটি ছবি-

Times-square-18

img042_FB

img002_FB

মোটা দাগে বলতে পারব না সমাজের ঠিক কোন বিষয়টার প্রতি আগ্রহ, তবে কনট্রাস্টের প্রতি একটা ঝোঁক আছে মনে হয়। প্রচন্ড আগ্রহ পোট্রেইটে। চোখ নিয়ে একটা সিরিজ করবার ইচ্ছে অনেকদিনের, কিন্তু ইচ্ছুক মডেল পাওয়া কঠিন, পেলেও সময়ে মেলে না।

একটা প্রজন্মের কাছে আপনি খুবই জনপ্রিয় একজন লেখক, কিন্তু অনেক পাঠক জানতে চেয়েছে যে আপনি পুরুষ না নারী, এতটাই নিভৃতচারী আপনি , কেন?

আমি ঠিক নিভৃতচারী কিনা জানি না, তবে কোলাহল এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি এটা ঠিক। তবে আপনি যদি আমাকে একবার মাঠে নামিয়ে দেন, তাহলে কিন্তু আস্তিন গোটাতেও পারি! হা হা হা!


অধিকাংশ প্রশ্ন এসেছে কিন্তু রওশন জামিল নামের কারণে কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল কিনা সেই নিয়ে! দুয়েকটা ঘটনা বলবেন না?

নামটা আসলেই নানা সময়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে! মিতা হক কয়েকদিন আগে একটা কথা বলেছে না, আমাদের একটা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস আছে, আসলেও তাই। বাঙালির ছেলে, নাম রাখি বিদেশি- উর্দু-আরবি-ফারসি এগুলো আর যাই হোক, আমাদের দিশি ভাষা তো না! তো স্কুলে আমার নাম ছিল অলক আহসান চৌধুরী। নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন বন্ধু বা শিক্ষক রওশন জামিল নামে চিনবে না, কিন্তু নামটা নিয়ে খুব ঝামেলা হতো। মৌলবি স্যার বলতেন, ‚অলক, তোর নামটা এমন আধা হিন্দু আধা মুসলমান কেন রে? তোর বাপকে গিয়ে বলবি বদলে দিতে" আর জানেন তো, আমাদের সমাজে শিশুরা সবসময়েই অবজেক্ট, দে আর নেভার আ সাবজেক্ট। তারও যে বড়দের মতই মান-অপমান-আত্মসম্মানবোধ থাকতে পারে, সেটা ক্ষুণ্ন হলে তার ভেতরে যে ট্রমা হয়, যা বাকি জীবন সে বয়ে বেড়ায়, এই বোধটাই ভারতীয় উপমহাদেমের লোকেদের মনে হয় গড়ে ওঠেনি আজও! সো, ক্লাস টু থেকে এরকম চলতে চলতে ক্লাস এইটে কী নাইনে বাবা নামটা দিলেন বদলে। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি আমার বাবা যে-ধাক্কা সামলাতে পারেননি, আমি কিন্তু প্রতিহত করেছি সেটা, আমার ছেলে-মেয়ে দুজনের নামই বিশুদ্ধ বাংলা- নো আরবি নো ফারসি- নো হাংকি পাংকি। স্রষ্টা যদি সর্বজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে তিনি অবশ্যই বাংলা জানেন, নাকি?

এনিওয়ে, নামের এই ভেজালটা লাগিয়েছেন আমার নেইমসেক, অভিনেত্রী রওশন জামিল! তাঁর নাম ছিল রওশন আরা বেগম, বিয়ের পর বেগমের জায়গায় স্বামীর জামিল গ্রহণ করেন এবং না বুঝে ‚আরা"কে দেন এককোপে উড়িয়ে। জানলেনও না, ওই কোপে তিনি নারী থেকে পুরুষ হয়ে গেছেন! আসলে রওশন এবং জামিল দুটোই পুরুষবাচক! স্ত্রী-বাচক করতে হলে প্রথমটায় ‚আরা" যোগ করতে এবং দ্বিতীয়টাকে জামিলা করতে হবে!

প্রিয় মুভি?

আসলে বলা কঠিন, তবে গডফাদার ছবিটা বারবার দেখি! আর ম্যাকিয়াভেলিয়ান পোলিটিক্স অ্যাট ইটস বেস্ট।

শিক্ষা জীবন?

স্কুল তো বললামই, নবাবপুর, কলেজ নটরডেম, তারপর ঢাবি পাঠশালা- বাংলা। আমেরিকায় থিতু হতে হতে কেটে গেল চোদ্দ বছর, কিন্তু সেই ছোটবেলায় যাকে পাখির চোখ করেছিলাম, বাবা অমত করায় পারিনি, সেখান থেকে নজর সরাইনি একদিনের জন্যেও, সুযোগ আসতেই ছুটেছি স্কুলে, সিটি ইউনিভার্সিটি অভ নিউ ইয়র্কের অধীনে বারক কলেজ, জার্নালিজম অ্যান্ড ফোটোগ্রাফিতে মেজর, পোলিটিক্যাল সায়েন্স মাইনর, আর এখন এই ইউনির্ভাসিটিরই গ্র্যাজুয়েট সেন্টারে। আপাতত সেক্সুয়ালিটি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডি, পরে সাহিত্যে এর প্রভাব। আপাতত এটাই ইচ্ছে। আমার স্বজনেরা অবশ্যি বলেন বুড়ো বয়সে মতিভ্রম, স্কুলে যায়, ব্যাটা আসলে কাজ করতে চায় না! আমি জানি না লেখাপড়াটা সহজ কাজ কিনা; বাট অ্যাজ ফার অ্যাজ এইজ ইজ কনসার্নড, আই বিলিভ ইট ইজ নেভা ঠু লেইট, য়ু নো।

IMG_0125

( সমস্ত ছবি রওশন জামিলের অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রশ্নগুলো এসেছে নানা পাঠকের কাছ থেকে। আরও প্রশ্ন করতে থাকুন !!! প্রিয় রওশন জামিলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ তার মূল্যবান সময়ের জন্য এবং আশা করছি তার লেখনী, ছবি দিয়ে তিনি আরও অনেক অনেক বছর নিজের আনন্দ লাভের সাথে সাথে আমাদেরও আনন্দ দিয়ে যাবেন )


মন্তব্য

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।
রওশন জামিল আমার মহল্লাকা বড়া ভাই! দেঁতো হাসি

একটা সম্পুরক প্রশ্ন ও তার উত্তর---
--আচ্ছা ফেসবুকে অলোক চৌধুরী নামের লোকটাকে চেনেন?
--ওটা রওশন জামিলের ছদ্মনাম। চোখ টিপি হেহ হেহ হেহ (দিলাম ফাঁস করে)

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তারেক অণু এর ছবি

দাঁড়ান, আপনার গুপন কীর্তি জেনে নিচ্ছি উনার সহ আর সব বড় ভাইয়ের কাছে দেঁতো হাসি

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

দারুণ কাজ। এটার অপেক্ষায় ছিলাম। উনি মাঝে মাঝে আমার ফেবুতে এসে ঢুঁ মেরে যান। ভালো লাগে অনেক। অনেক কথা জানার থাকতে চাইলেও জানতে চাওয়া হয় নি কখনো।

চলুক

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
সাক্ষাৎকার ভাল লাগল - সৎ ও স্বচ্ছ, ঝরঝরে। রওশন জামিলের তোলা ছবিগুলি ভাল লাগল। সবচেয়ে ভাল লাগল জেনে যে এখন-ও উনি প্রাতিষ্ঠানিক ছাত্র হবার তাকৎ এবং ধৈর্য্য রাখেন। ওনার সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।
- একলহমা

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই, দারুণ ধৈর্যের আর ভালবাসার ব্যাপার

আলতাইর এর ছবি

গুরু........ কুর্নিশ।!!!!

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল সাক্ষাৎকারটা পড়ে, একটু ধৈর্য যদি ধার পাওয়া যেত!

র.নাহিয়েন

তারেক অণু এর ছবি
রুবাই এর ছবি

হাততালি হাততালি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তারেক অণু এর ছবি
ahmed sabbir   এর ছবি

বেশ ভালো লাগলো, রওশন জামিলের চেহারা দেখার সুযোগ হলো! সেবার অন্যান্য লেখকদেরও সাক্ষাতকার পড়ার আশায় রইলাম।
-আহমেদ সাব্বির

তারেক অণু এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দেখা হওয়ার পর কাজীদাকে প্রথম যে কথাটি বলেছিলাম
"আপনার জন্য আমি কৈশোরে রিক্সায় চড়িনি, টিফিন খাইনি, বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করেছি, বাজার থেকে টাকা মেরেছি... আরো কতো কতো অপরাধ করেছি শুধু আপনার জন্য।"
শুনে কাজীদা ভড়কে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন "কেন কেন?"
বলেছিলাম "সব টাকা বাঁচিয়ে শুধু সেবার বই কিনতাম।"
কাজীদা হো হো করে হেসে দিয়েছিলেন।
এই অভিযোগ শুধু কাজীদার একার প্রাপ্য না... রওশন জামিলের ভাগেও জুটবে কিছুটা। হাসি

ভালো লাগলো সাক্ষাৎকার। তিনি যে অভিনেত্রী রওশন জামিল না, সেই তথ্য অনেক আগেই জেনে গিয়েছিলাম। তবে আজ আরো অনেক তথ্য জানলাম। ভালো লাগলো।

আমি তাঁর কোনো সাক্ষাৎকার আগে কোথাও পড়িনি। জানি না আগে কোনো সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কি না উনি। ছবিও দেখলাম এই প্রথম। এই মৃদুভাষ সাক্ষাৎকারটি দিতে রাজী হওয়ায় তাঁকে, আর সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে... দুজনকেই অসংখ্য ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

"সব টাকা বাঁচিয়ে শুধু সেবার বই কিনতাম।" গুল্লি

আসিফ এর ছবি

১) সেবার সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েস্টার্ন বই কোনটি? ফিডব্যাক বা বিক্রিত বইয়ের সংখ্যা হিসাবে?

২) ওয়েস্টার্ন লেখক হিসেবে কে বেশি প্রিয়? শওকত হোসেন না কাজি মাহবুব হোসেন?

৩) কখনো কি ভেবেছিলেন ওয়েস্টার্ন লেখক হিসাবে উত্তর প্রজন্মে আলোচিত হবেন? আই মিন বিশ-পঁচিশ বছর পরেও আপনার অনুদিত/রূপান্তরিত বই নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহ থাকবে এটা ভেবেছিলেন কখনো?

কিছুদিন আগে পুরনো কিছু ওয়েস্টার্ন আবার পড়লাম। বিধাতা আগের মত টানেনি কিন্তু বসতি মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করেছি। ধন্যবাদ আমাদের কৈশোরকে রঙিন রাখার জন্য....

তারেক অণু এর ছবি
আরাফাত এর ছবি

প্রিয় তারেক অণু,
ভালো খাবার যেমন মানুষ পরে তারিয়ে তারিয়ে খাবার জন্যে জমিয়ে রাখে, তেমনি এই সাক্ষ্যাৎকারও আমি জমিয়ে রেখে বাইরে বেরুচ্ছি, এসে পড়ব। আগাম ধন্যবাদ রইল। নির্জন (সিলেটে আমার গলি এখন নির্জনই থাকবে) রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে কাল্পনিক হোলস্টারে হাত বুলাব আচমকা শত্রুর প্রতীক্ষায়। রাই হুইসকির (রাই হুইস্কি তো আর পাইনি, যাই পেয়েছি তাই পান করেছি) নেশায় যেন ভুল না করি তাই স্নায়ু টানটান থাকবে ধনুকের ছিলার মত। মনে কাউবয় হ্যাট পরা বুনো ফুলের মত সুবাসিনী সুন্দরীর জন্যে হাহাকার। মৃদু নেশায় খোলা আকাশের নিচে ওকে নিয়ে কল্পনায় হারাব।

তারেক অণু এর ছবি

রাই হুইসকি আইসা পড়ো বেইবে...

আরাফাত এর ছবি

কই থেকে আর আইসা পড়ব বেইবি!! এক একটা বোতল জোগাড় করতে যেয়ে মনে হয় বিরাট চোরাচালানীতে রুপান্তরিত হয়েছি। ওয়াইল্ড ওয়েস্টেই চলে যাব। আর ভাল্লাগে না।

তারেক অণু এর ছবি

হা হা, জ্যাক ড্যানিয়েল রক্স!

কঠিন বিড়াল এর ছবি

ওনার "বিধাতা" আমার পড়া অন্যতম প্রিয় বই, সম্ভবত একটু ভিন্ন ধাচের সুখপাঠ্য লেখনীর জন্যই। সাক্ষাতকারটি আরও একটু প্রান্জল-স্বত:স্ফুর্ত আশা করেছিলাম হ্য়ত। যাহোক, অনেক কিছু জানতে পারলাম রওশন জামিলের ব‌্যাপারে, ভাল থাকবেন প্রিয় লেখক।

তারেক অণু এর ছবি

"বিধাতা" আমারও খুবই প্রিয়

নাফে মোহাম্মদ এনাম এর ছবি

তারেক অণূকে একটা বিগ থ্যাংকস্!!!!!!!!!!

তারেক অণু এর ছবি

বিগ ওয়েলকাম দেঁতো হাসি

দিদি এর ছবি

খুব ভালো লাগলো - প্রেরণা পেলাম । প্রশ্ন খুব ভালো না হলে কি সাক্ষাত্কার ভালো হয়??!

উনি কবে থেকে অনুবাদ (অনুসৃষ্টি) করছেন - মনে হলো ছাত্রাবস্থা থেকে, মানে বেশ অল্প বয়েস থেকেই --
এখন কি আর করেন?

ভাষা ঝরঝরে হলেই হলো -- আর কিছু বলেননি কাজীদা, জেনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম । পাঠকদের রক্তমজ্জায় চেনেন এমন মানুষের কথার তো একটা ব্যাপার আছে!

'নো হাংকি পাংকি' , দারুণ লাগল!

বিদেশে আছেন চৌদ্দ বছর, এবং এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জেনে খুব পুলকিত এবং অনুপ্রেরিত হলাম!

তারেক অণু এর ছবি

নো হাংকি পাংকি'

শামীম আশরাফী এর ছবি

দারুন!

তারেক অণু এর ছবি
রিক্তা এর ছবি

আপনি করছেন কি অ্যাঁ গুরু গুরু

ওরিন ওসমান আমার টিনেজ বয়ষের দীর্ঘতম সময়ের ক্রাশের একজন লইজ্জা লাগে

ওয়েস্টার্নে কিছুমাত্র আমার নিজস্বতা যদি থেকে থাকে, সেটা প্রকৃতিতে। প্রকৃতি আমার কাছে সবসময়েই এক দুর্জ্ঞেয় চরিত্র। আমি কখনও সেটাকে ধরতে চেষ্টা করেছি,

যতদূর মনে পরে নীলগিরিতে প্রকৃতির অদ্ভুত সুন্দর বর্ননা আছে। এতোদিন পর কথাগুলো আর ঠিকঠাক মনে নেই কিন্তু সেই ভালোলাগার অনুভূতিটা এখনো সতেজ আছে!

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

তারেক অণু এর ছবি

চমৎকার লাগল -

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চলুক

____________________________

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো হাততালি
ইসরাত

তারেক অণু এর ছবি
রাত-প্রহরী এর ছবি

আহ রওশন জামিল।
এতোদিনে উনাকে দেখে প্রীত হলাম।
আর - তারেক অনু? ভালো জাজটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।

---------------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা

কড়িকাঠুরে  এর ছবি

চলুক প্রথম দেখলাম এবং তাঁর নিজের কথা পড়লাম। থিঙ্কু...

ইয়ে- উনার কান্ট্রিম্যান স্টাইলের ফটুক নাই?

তারেক অণু এর ছবি

হে হে, জানি না !

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শিরোনামটা দেখে প্রথমে যে নামটা মনে পড়লো সে হলো সাবাডিয়া। আমার অল টাইম ফেবারিট। দারুণ সাক্ষাতকার চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

সাবাডিয়া, খুবই ক্ষিপ্র, অনেকটা ঈশ্বরের মত !

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

রওশন জামিল, কাজী মাহবুব হোসেন প্রমুখেরা আমার জীবনের বহু সন্ধ্যা গোধুলীর আলোয় রাঙিয়েছেন, রুক্ষ বুনো পশ্চিমের গল্পগুলো এতোটাই ভালো লাগত যে, নতুন বই হাতে না পেলে বহুবার পড়া ওয়েস্টার্ন বই নিয়েই বসে যেতাম, এতটুকু একঘেয়েমি আসত না।

কৈশোরের সেই স্মৃতির হ্রদে ঢেউ জাগাবার জন্য আপনাকে একরাশ ধন্যবাদ অণু।

তারেক অণু এর ছবি

এখনো পড়ি , সুযোগ পেলেই। ভালো লাগে, হারিয়ে যাই

কিরন শেখর এর ছবি

খুব ভাল লাগলো অনুদা ওনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য। আমি নিজেও জানতাম না যে উনি পুরুষ। আর এখন অনেক কিছুই জানতে পারলাম।

তারেক অণু এর ছবি
শিশিরকণা এর ছবি

রওশন জামিল কে ওয়াইল্ড ওয়েস্ট ভ্রমণের আমন্ত্রণ রইলো।
আমার বাবা ওয়েস্টার্ণের বিশাল ভক্ত। আমেরিকা এসে সবার আগে দেখতে গেছেন মাইনিং ঘোস্ট টাউন। গোল্ডফিল্ড নামের সে শহরে এসে পটল তুলেছিল ডক হলিডে নামের বিখ্যাত গানফাইটার। ডুয়েলে না অবশ্য, যক্ষায় খাইছে

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

সেইরাম!!!
The Old Man And The Sea বই টার জন্য উনার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। সেই কিশোর বয়সের প্রেমে পড়া বই উনার অনুবাদের কল্যাণে। কত বার যে পড়েছি! কয়েকদিন আগে আবার রিভিশন দিলাম। এবার অবশ্য অনুবাদ না মূল বই-ই পড়েছি। কাকতালীয় ভাবে উনার কোট করা লাইনটা আমারও সব চেয়ে প্রিয় লাইন!!! হাসি

--------------------------
সুবোধ অবোধ

তারেক অণু এর ছবি

আমারও সব চেয়ে প্রিয় লাইন!!

রাত-প্রহরী এর ছবি

'দি ওল্ড ম্যান এন্ড দি সী' এর যে অনুবাদ ৫০ এর দশকে ঢাকা থেকে বেরিয়েছিলো সেটির অনুবাদক হিসেবে ফতেহ লোহানী'র নাম প্রকাশ হলেও বইটির মূল অনুবাদক ছিলেন তাঁরই ছোট ভাই ফজলে লোহানী। সৈয়দ শামসুল হক ব্যক্তিগতভাবে এই ধাপ্পাবাঁজির প্রতিবাদও করেছিলেন (সূত্রঃ ঈদ সংখ্যা প্রথম আলো, ২০১৩ - তিন পয়সার জোছনা)।

-----------------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তারেক অণু এর ছবি

হুম্ম

অতিথি লেখক এর ছবি

অণু ভাইয়া, অসম্ভব প্রিয় একটা কাজ করেছেন। কী যে ভালো লাগছে সাক্ষাৎকারটা পড়ে।

-নিয়াজ

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

ওসমান পরিবারের ওনিল রে আমি ব্যাপক ভালু পাই।পর্দার আড়ালের মানুষটাকে দেখতে পেয়ে বেশ ভাল লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

ওদের বইগুলা আবার পড়তে হবে!

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সেবার এই একটা সিরিজই কখনও পড়া হয়নি... মন খারাপ এবার পড়তেই হবে, বুঝতে পারছি হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি
নিরুপম রায়  এর ছবি

টেক্সাস/লুইসিয়ানা -তে বাঙালিদের বসবাস শুরু করার কথা বলেছেন, সেটার তথ্যসূত্র দেবেন ভাইয়া একটু? খুবই ইন্টারেস্টিং ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।