আমাদের দেশে একটি আইন রয়েছে, যেই আইন কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। আর তার শাস্তি কম করে হলেও ৭ বছরের কারাদণ্ড।
…
(১)
‘সোনার পাথরবাটি’ কিংবা ‘কাঁঠালের আমসত্ত্ব’ জাতীয় প্রবাদগুলো ছোটকাল থেকেই আমরা সবাই শুনে আসছি এবং এসব অবাস্তব বস্তু বা বিষয়ের মর্মার্থও আমাদের বোধের অগম্য নয় নিশ্চয়ই। কিন্তু একালে এসে যখন তথাকথিত কোন বিদ্বানপ্রবরের মুখে নতুন আঙ্গিকে এমন কথা বলতে শুনি- ‘বিজ্ঞান চাই কিন্তু বিজ্ঞানবাদিতা চাই না’, তখন আঁৎকে উঠে পুরনো কাসুন্দিকেই আবার নতুন করে ঘুটানো ছাড়া গত্যন্তর থাকে কি! কথাটা কি কোন বিদ্বানের অসতর্ক মুহূর্তে ক্ষণিকের প্রলাপ ভাববো, না কি এর ভেতরে কোন রহস্য ও গূঢ় উদ্দেশ্য রয়েছে, তা খোঁজার আগে আমরা মনে হয় কিছু তরল কথাবার্তা সেরে নিতে পারি!
যদি নিজের আপন নিভৃত কোণ হতে বাইরে পদার্পণ করেন, তা সেটা মানুষের সাথে আড্ডায় হোক আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কের পাবলিক ডিসকাশনই হোক, উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডার ক্রসফায়ারে জর্জরিত হওয়া অনিবার্য। এসব আলাপ-আলোচনা অধিকাংশ সময়েই হেত্বাভাসের ঘন অরণ্যে হারিয়ে যায়; পরিণামে, কোন যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে না। পাবলিক ফোরামের আলোচনায় অংশগ্রহণ করা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সময়ের বিকট অপচয় মনে হয়, মানুষকে তার প্রত্যেকটা
কজালিটি, কজেশন, (causality, causation) কর্মফল বা কার্মা (कर्म) বেশ পুরোনো এবং প্রায়শ ব্যবহৃত একটি লজিকাল রিজনিং। কর্মফল হচ্ছে কর্ম এবং তার ফলের মধ্যে সর্ম্পকটি। কয়েকটি উদাহরণ হচ্ছে:
১) "বৃষ্টি হলেই ব্যাঙ ডাকে। সুতরাং বৃষ্টি হচ্ছে ব্যাঙ ডাকার কারণ।"
এটা খুবই প্রচলিত একটি লজিক্যাল ফ্যালাসি। বিশেষ করে ধার্মিক বা বিশ্বাসীরা এই যুক্তি খুব ব্যবহার করেন। বুশের একটা বিখ্যাত সার্কুলার রিজনিং হচ্ছে:
"The reason I keep insisting that there was a relationship between Iraq and Saddam and Al Qaeda is because 'there was a relationship between Iraq and Al Qaeda.' "
যুক্তির গঠন অনুযায়ী ভাগ করলে:
উপপত্তির গঠন
একটি কাজ বা ধারণা সঠিক প্রমান করতে এক বা একাধিক বক্তব্যের (বা যুক্তির) সমন্বয়ে গঠিত ভাষ্য বা লেখাকে আর্গুমেন্ট বা উপপত্তি বলে। সাধারণভাবে একটি উপপত্তির তিনটি অংশ থাকে: অনুমিতি, বক্তব্য (বা যুক্তি), এবং উপসংহার।
একটি উপপত্তির যে ধারণাটি লেখক বা বক্তা, পাঠক বা শ্রোতার কাছে প্রমান করতে চান সেটাকে উপসংহার বা কনক্লুশন বলে। এই উপসংহারে যাবার জন্য বক্তব্য (যুক্তি) বা প্রিমাইস ব্যবহৃত হয়। অন্যদিক, অনুমিতি বা এজাম্পশন কে প্রমাণ ছাড়াই সঠিক ধরে নেয়া হয়। সাধারণতঃ উপপত্তিতে অনুমিতি উপস্থিত থাকে না।
১।
কাঁপাকাঁপি জিনিসটা সবসময় ভালো না। আমার কথা বিশ্বাস না হলে হাইতির লোকজনকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। অনেকে আবার ভ্রুকুঞ্চিত করে আদিম কাঁপাকাঁপির দিকে অদৃশ্য আঙুল বাঁকিয়ে ধরবেন, তারা নিতান্তই কাঁপনমূর্খ। আদিম রসাস্বাদনের সাথে কাঁপাকাঁপির কোনো সরলরৈখিক সম্পর্ক নাই, সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ছন্দটাই আসল এবং সেই ছন্দে কাঁপাকাঁপি প্রায়শঃই ঋণাত্মক অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু রসায়ন, ভূতত্ত্বে কাঁপাকাঁপিকে সৎছেলের দৃষ্টিতে দেখা হলেও আমাদের বাংলাদেশে তাকে আদর করে পত্রিকার পাতা ভরা হয়, জনমানুষের চেতনাসুদ্ধা সেই কাঁপন পৌঁছে দেয়া হয়। ৩০ মিনিটের কাঁপাকাঁপিতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার যুগান্তকারী বিষয় আমরা সবাই জানি। এবার তার সাথে যোগ হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের মতো দুনিয়া কাঁপানো ঘটনা। অবশ্য বিশ্বকাপের ৪৯ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৮ ম্যাচের আয়োজক বাংলাদেশের টিকেট না পাওয়া হতাশ দর্শক ঘরে ঘরে টিভিতে, রাস্তার মোড়ে বিগস্ক্রীনে এবং অতি অবশ্যই ছাপড়া চায়ের দোকানের কম্পমান চেয়ার-টেবিলে কি মাত্রার কাঁপাকাঁপি সৃষ্টি করতে পারবেন, যাতে দুনিয়াসুদ্ধা লোক কেঁপে কেঁপে দোয়া ইউনুস পড়বে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
সচলায়তনে মাহবুব লীলেনের প্রথম বই প্রকাশের বেক্কল মুহূর্ত পড়বার পর থেকেই ভাবছিলাম আমারো এ কিছু লেখা দরকার। সত্যি বলতে কি এক ধরনের ঈর্ষাই হচ্ছিল লীলেনের ব্যাক্কল হওয়ার বর্ণনা পড়ে। ভাবছিলাম -তাও তো ভাইজা...