সিডর ও বাংলাদেশ ও তথাকথিত দাতা দেশের দাঁতাল চেহারা

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: সোম, ১৯/১১/২০০৭ - ৬:০৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমেরিকার উপকুলে আঘাত হেনেছিল এনড্রু। একসপ্তাহ আগে থেকেই একানকার প্রত্রিকাতে এন্ড্রুর গতিবিধি নিয়ে খবরাখবর, সম্ভাব্য ধ্বংসস্থল নিয়ে জল্পনা কল্পনা, ঘুর্ণি্ঝড় নিয়ে নানাবিধ প্রামান্য চিত্র এখানকার টেলিভিশনে। দুর্গত মানুষদের পাশাপাশি কি ধরণের সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানো যেতে পারে, তার ছক আকা শুরু হয়েছিল এনড্রু আঘাত হানার আগেই।

হায়রে অবহেলিত গরীব দেশ আমাদের। ঝড়ের আগে এখানকার টিভিতে, এ ধরণের জল্পনা কল্পনা ও প্রস্তুতি তো দুরের কথা, সামান্য কোন খবরও ছিলনা। এমনভাবেই এরা অবহেলা করে এসেছে আমাদের। আর 'ফরেন এইডস্' এর নামে টিকিয়ে রেখেছে এক ধরনের নির্ভরশীলতা, যাকে 'এইডস্' বললেই হয়তো নামকরণ সার্থক হবে।

অবশেষ ঝড়ের পর মুখ খুলেছে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন। ছবি সহ নানা খবরও ছাপা হয়েছে। সাহায্যের হাতও খোলা হয়েছে। একটু সাহায্য তো করতেই হবে, মানুষগুলো একেবারে মরে গেলে বিশ্ববাজারতো টিকে থাকবে না! এদেরকে কোনভাবে টিকিয়ে রাখলেই এরা আবার কোনভাবে উঠে দাঁড়িয়ে আবার দ্রব্যাদি কেনা শুরু করবে। এদেরই কেউ কেউ বা এদের শ্রমকে ব্যাবহার করে কেউ কেউ টিভি কিনবে, ফ্রিজ কিনবে, গাড়ী কিনবে। তবে সে সাহয্যের পরিমান দেখলে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে হয়। এক পত্রিকা লিখেছে, জার্মান সরকার দ্রুত সাহায্য হিসেবে দুই লক্ষ ইউরো পাঠিয়েছে। তুলনামূলক বিচারের জন্যে বলছি, দুই লাখ ইউরো দিয়ে তিন কামরার একটা এপার্টমেন্টও কিনতে পাওয়া যায়না। আরেক পত্রিকা লিখেছে সাত লাখের কথা। এটাও খুবই ছোট পরিমাণ ভিক্ষে। বৃটেনে গতবছর সামান্য বন্যা হয়েছিল, এখানে এরা যে সাহায্য পাঠিয়েছিল, তার পরিমান ছিল এর আরো কয়েক গুন বেশী। আমেরিকা পাঠাচ্ছে পনেরো লাখ ডলার। বিশ্ব ব্যঙ্ক এখনো হিসেব নিকেশ করছে, আমাদের অবদান অনুযায়ী কতোটা পাঠাতে পারে। এসব দেখে তথাকথিক 'গ্লোবালাইজেশান' এর নগ্নতা আরো বেশী পরিস্কার হয়ে পড়ে। এ 'গ্লোবালাইজেশান' শুধুমাত্র ব্যবসার খাতিরেই, এর সাথে এক পৃথিবীতে ভালভাবে, সচ্ছলভাবে, পরস্পরের বিপদে পরস্পরের পাশাপাশি দাঁড়ানোর কোন সম্পর্কই নেই। আমার কাছে সাহায্যের এই অংকগুলো গালে চড় মারার মতোই মনে হয়েছে। কিন্তু আমাদের আর কি উপায়, একগালে চড় খেলে আরেক গাল পেতে দেয়াই আমাদের ভাগ্য!

আরেক গাল যদি পেতে দিতে না চাই, তাহলে আমাদের সাবলম্বী হতে হবে। ওদের ব্যবসায়িক হাত থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে হবে। তবে তা হম্বিতম্বির পথে নয়, বরং সুচিন্তিত পথে নিজেদের মেধা ও বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা। আমাদের বর্তমান অবস্থা থেকে তা বহুদুরের পথ, সে তো বলাই বাহুল্য। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত তা করতে পেরেছে। গত সুনামীকে মোকাবেলা করেছে ভারত অনেকটাই একা। সাহায্যের নামে ভিক্ষে হিসেবে যা পাঠাতে চেয়েছিল পশ্চিমা বিশ্ব, তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। এবার হয়তো আমাদের পক্ষে এধরণের প্রত্যাখ্যান সম্ভব নয়। কিন্তু ভারত যা গতবার পেরেছে, আমরা কেন তা সামনের বার পারবো না?


মন্তব্য

হিমু এর ছবি
সৌরভ এর ছবি

এইসব ভেবে কষ্ট হয়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সহমত



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

একেই বলে গরু মেরে জুতা দান। তারা আমাদের এখান থেকে যে বাণিজ্য ও লুন্ঠন করে তার সঙ্গে তাদের সাহায্য তুলনা করুন।

::::::::::::::::::::::::::::::::::::

বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

শেষ প্যারায়ই আসল কথা বলেছেন। স্বাবলম্বী হতে হবে আমাদের।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

কালোবিড়াল এর ছবি

স্পেন এর কথাটা বললেন না? এই দেশটি সাহায্য দিতে চায় ৫০০০ ইউরো (গতকালের ডেইলি স্টার এর নিউজ "Spain has committed to provide 5000 Euro"). দুনিয়ায় এর চাইতে বড় মস্করা আর কি হতে পারে?

হিমু এর ছবি

কিছুদিন আগে এক সম্মেলনে স্পেনের রাজা কার্লোস দুই নাম্বার ভেনেজুয়েলার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট উগো শাভেজকে ধমক দিয়েছেন, "পর কে নো তে কায়াস?" মানে হচ্ছে, "তুমি চুপ করছো না কেন?" কার্লোসকে সসম্মানে বলতে ইচ্ছা করছে, পর কে নো সে কায়া, আপনি চুপ করেন না ক্যান?

শালারা মশকরা করার সুযোগ পেলে আর ছাড়তে চায় না।


হাঁটুপানির জলদস্যু

দিগন্ত এর ছবি

আমার একটা পুরোনো হিসাব মনে পড়ে গেল। ২০০৩ সালে প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানী করা পণ্যের ওপর শুল্ক বসিয়ে আমেরিকার আয় হয়েছিল ৮৫ মিলিয়ন ডলার (সংখ্যাটা এখন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে)। এক সপ্তাহের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য (যা সম্পূর্ণ ন্যায্য দাবি) বাংলাদেশের জন্য যা টাকা আনতে পারে, আমেরিকার সাহায্যের পরিমাণ তার ১০০ ভাগের ১ ভাগ !! শোষণটাই গ্লোবাল হয়েছে, বাণিজ্য নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তীরন্দাজ এর ছবি

আমরা আজ অবধি ওদের ইচ্ছের দাসই হয়েই রয়েছি। সারা পৃথিবীব্যাপী শোষন করে বেড়াচ্ছে ওরা। নিজেদের সমুদ্রউপকুলে মাছ শেষ করেছে, আফ্রিকার উপকুলে ইওরোপীয়ান ইউনিয়নের অনুদানে মাছ ধরে শেষ করছে মাছ, কেড়ে নিচ্ছে গরীব আফ্রিকানদের মুখের খাবার। তারপর আবার সাহায্য! প্রতিযোগীতার দুনিয়ায় এটাই হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু এর প্রতিরোধের শক্তি ধীরে ধীরে করে তোলা দরকার। কিছু কিছু দেশ পারছেও।

আমরা আসলে ফড়িয়া বন্দী হয়ে পড়েছি। প্রথমে দেশী ফড়িয়া, তারপর বিদেশী।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তীরন্দাজ এর ছবি

"শোষণটাই গ্লোবাল হয়েছে, বাণিজ্য নয়।" আপনার কথার সাথে পুরো সহমত দিগন্ত।

আপনাদেরকে ধন্যবাদ!
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ল্যাটিন দেশগুলোর সাম্প্রতিক অক্ষগঠন একটা উদাহরন হতে পারে । যদি ও শেষ্পর্যন্ত কি ঘটে বলা যাচ্ছেনা ।
-----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

তীরুদা, শেষ প্যারায়ই আসল কথা বলেছেন। আত্মনির্ভরশীল হতে হবে আমাদের।

কিন্তু আপনার শুরুর দিকের বিশ্লেষণের মূল সুরের সাথে কিছু মতানৈক্য আছে। বর্তমান পৃথিবী বলে নয়। আমি যতোটা বুঝি, মানব সভ্যতার পুরোটা সময় জুড়েই ছিলো প্রতিযোগিতা এবং ফিটেস্টরাই শেষ পর্যন্ত সারভাইভ করে। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক হিসেবের চেহারাই অন্যরকম হয়ে দাঁড়ায়। যেমন ধরেন, ব্রিটিশরা সাড়ে তিনশ' বছর ধরে ছলে-বলে-কৌশলে আমাদের সম্পদ লুটে নিয়েছে, বর্তমান বাংলাদেশে দেশে ইন্ডিয়ান পণ্য ঢোকে দেদারসে - এসবের জন্য ব্রিটিশ বা ইন্ডিয়ানদেরকে দোষ দেয়ার আগে নিজেদের সমস্যাটা চিহ্নিত করা দরকার।

অন্যেরা সবসময়ই চাইবে আমাদেরকে নির্ভরশীল করে রাখতে - বিশাল জনসংখ্যার জন্য বাংলাদেশ অনেক বড় একটি ভোক্তাগোষ্ঠী - কিন্তু আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে সেই নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে। সেটা না পারলে আমাদেরই ব্যর্থতা, অন্যের মানবতাবাদিতার প্রশ্ন তোলাটাও অমর্যাদাকর। ব্যক্তির সাথে জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সম্ভবত কিছু বেসিক পার্থক্য আছে; ব্যক্তি কোনো ভুল করলে ক্ষমা অনেক সময়ই মহৎ বিষয়; কিন্তু রাষ্ট্রীয় ভুল প্রায় সবসময়ই ওয়ানওয়ে, ক্ষমা মানে সেখানে আরেকটা ভুল। কেউ এসে আমাদেরকে পালটে দিয়ে যাবে, সব সমস্যার সমাধান করবে, অর্থ দিয়ে বিনাস্বার্থে উন্নত করে দিয়ে যাবে, এটা একেবারেই অবিবেচনাপ্রসূত আশাবাদ।

দেশে মোবাইল কোম্পানীগুলোর বিস্তার নিয়ে আমার প্রচন্ড ক্ষোভ আছে। অনেকেরই ধারণা, এগুলো এসে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্ট হলো, কর্মসংস্থান কার টাকায় হচ্ছে? আমরাই মোবাইল ফোনের ভোক্তা, আমাদের পকেট থেকেই টাকাটা যাচ্ছে এবং সে টাকার সিংহভাগই দেশের বাইরের কোম্পানিগুলোর পকেটে যাচ্ছে। এখন এজন্য আমরা ঐ কোম্পানীগুলোকে দোষ দিতে পারি না। তাদের ব্যবসায়, তারা করবেই, এথিকস ইত্যাদির ফাঁকফোকর গলে তারা অর্থোপার্জন করবেই। এক একজনে ৩/৪টা করে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভোক্তা শ্রেণীতে পরিণত হওয়া আমাদেরই মূর্খতা। এজন্য অন্যকে দোষ দেয়া যায় না।

প্রায় একই রকম এনালজি খাটে বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রেও। মানবতাবাদীরা যত যা-ই বলুক, ফ্যাক্ট হলো, বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষ মরে গেলে উন্নত বিশ্বের ওপর তার প্রভাব কি হবে, সেটার হিসেব হবে আর্থিক লাভ-ক্ষতি দিয়ে। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আমরা মরে গেলে তারা কেয়ার করার কথা না এবং এভাবে কেয়ার না করার জন্য তাদেরকে দোষারোপও করা যাবে না। সাহায্যের পরিমাণ নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার আমাদের নেই। তারা যা পেরেছে, সাহায্য করেছে, আমরা যদি মনে করি, সেটা পরিমাণে অল্প; কিংবা আমাদের জন্য অপমানকর, তাহলে আমরা সে অর্থ না নিলেই তো হয়, সমালোচনা করা যায় তখনই যখন পারস্পরিক স্বার্থের হিসেবটা থাকে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে অবশ্য এরূপ সাহায্য ফিরিয়ে দেওয়াটা আমার মতে মূর্খামি হবে। ব্যক্তিস্বার্থের আবেগের সাথে জাতীয় স্বার্থের চুলচেরা হিসেব মিলবে না। আমি যদি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হই, তাহলে দেশের উপকার হবে, এরকম পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবে চরম অপমানিত হতে হলেও সেটা কেয়ার করা আসলে আমার কর্তব্যের প্রতিই অবহেলা হবে।

বর্তমান বাংলাদেশে আমাদের গর্ব করার মত জিনিস খুব অল্প। বিদেশীরা এসে ব্যবসায় করে যাচ্ছে, একের পর এক সরকার দেশকে বাঁশ দিয়ে যাচ্ছে, নিজেদের দুই টাকার লোভে দেশের ২ লাখ টাকার ক্ষতি করছে, তত্ত্বাবধায়ক নাম দিয়ে একটা উড়ে এসে জুড়ে বসা সরকার নিজেদের খেয়ালখুশীমত ক্ষমতায় থাকা-না থাকা নির্ধারণ করছে, দেশের চিহ্নিত শত্রুরা দেশের অতীত গৌরবময় অর্জনগুলোকে কাচকলা দেখিয়ে উল্লাস করছে; কিন্তু আমরা এসব প্রতিরোধ করতে পারছি না। যত যা-ই বলি না কেন, এ মুহূর্তের আমরা জাতি হিসেবে একেবারেই নপুংসক। এ অবস্থায় অন্যদের উপরে কম টাকা সাহায্য দিয়েছে বলে অভিযোগ করা অনেকটা আদুরে ছেলের মায়ের ওপরে রাগ করে ভাত না খাওয়ার মত। আনফর্চুনেটলি, আদুরে ছেলের ফর্মূলা দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে খাটে না।

এ অবস্থা থেকে বেরোতে হবে। স্বাবলম্বী হতে হবে এবং অন্য দেশের সাথে কাটাকাটি, অভিমান, অনুযোগ করে নয়; বরং যতোটা সম্ভব সহযোগিতার মাধ্যমেই আমাদের ইকোনমিকে শক্ত করতে হবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বলাই,
সাহায্য ফিরিয়ে দেওয়া অবান্তর এখানে। উপনিবেশ বিস্তারে যেসব অভ্যন্তরীন এলিমেন্ট ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলোর সামলোচনামূলক বিশ্লেষন এবং প্রাক্সিস জরুরি। কিন্তু এই কাজে উপনিবেশ বিস্তারকারীর লাভের প্রক্রিয়া, ফিরিস্তি আর উদ্দেশ্যের মুখোশ উন্মোচন অপরিহার্য। সেই দিক থেকে তীরন্দাজের শ্লেষের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ


ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

শ্লেষটা ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে আক্ষরিকভাবে সাহায্য করলে ঠিক আছে; কিন্তু সেটা বোধহয় বর্তমান পরিস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয়। উপনিবেশ বিস্তারকারীর মুখোশ খুলে যদি আমাদের লাভ হয়, তাইলে হাজারবার মুখোশ খোলা হোক। কিন্তু ৫০০০ ইউরো দিলা ক্যান, তুমি খারাপ - এভাবে বলে অন্তত এই মুহূর্তে কোনো লাভ নেই। পারস্পরিক সহযোগিতাই মনে হয় অর্থনৈতিক উন্নতি ও স্থিতির মূলভিত্তি।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তাতে কিন্তু অন্তত ক্ষোভটা প্রকাশ পায়। ইতিহাসে রেকর্ড থাকে অন্তত কেউ না কেউ আয়রনি ধরতে পেরেছে। আর সবচাইতে বড় কথা এই সমালোচনা কার্যকর আমলকে উৎসাহিত করে।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমরা আসলে আয়রনি ধরতে পারলেও ততক্ষণে চোরে সবকিছুই চুরি করে পালায়!

আর সবচাইতে বড় কথা এই সমালোচনা কার্যকর আমলকে উৎসাহিত করে।

এটা ঠিকাছে। তবে ব্যক্তিবিশেষে কার্যধারা পালটাবে। যেমন, একজন সংবাদিক যেভাবে অন্যদেশের খারাপ কাজের সমালোচনা করতে পারে, একজন রাষ্ট্রপ্রধান সেভাবে করতে গেলেই বিপদ। রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে সত্যমিথ্যা অবান্তর, নিজের রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য তাকে সবসময় 'বেস্ট অপশন' বেছে নিতে হয়। বেস্ট অপশনে যদি ২ ডলার পেয়ে থ্যাংকইউ বলার দরকার হয়, তা-ই সই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কাহিনি ঠিক ঐখানে না । কাহিনি হৈল সমালোচনার সিগনিফিকেন্স আছে কি নেই। আছে এইটার প্রমাণ হৈল বিভিন্ন সময়ে সমালোচকের শারিরিকভাবে আক্রান্ত হওয়া থেকে। যে প্রফিট সাহেবরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে ছিটানো মুড়িতে তার পরিমাণ মোট মুনাফার এক শতাংশও নয়। আমরা সেই মুড়ি খাবো কি খাবো না , তাতে আমাদের পেট ভরবে কি ভরবে না সেটা কিন্তু আসলে এখানে অবান্তর।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কাহিনি ঠিক ঐখানে না । কাহিনি হৈল সমালোচনার সিগনিফিকেন্স আছে কি নেই। আছে এইটার প্রমাণ হৈল বিভিন্ন সময়ে সমালোচকের শারিরিকভাবে আক্রান্ত হওয়া থেকে। যে প্রফিট সাহেবরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে ছিটানো মুড়িতে তার পরিমাণ মোট মুনাফার এক শতাংশও নয়। আমরা সেই মুড়ি খাবো কি খাবো না , তাতে আমাদের পেট ভরবে কি ভরবে না সেটা কিন্তু আসলে এখানে অবান্তর।

সমস্যা হলো, সমালোচনার লাইন উলটা হলে সেটা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। কাজের কাজ কিছুই হয় না, উলটা পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। প্রত্যেক সমালোচনারই স্থান-কাল-পাত্র ভ্যালু আছে। যেমন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ৫০০০ ইউরো সাহায্য দিলে সেইডা নিমুনা বললে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। সমালোচকের শারিরীকভাবে আক্রান্ত হওয়া সবসময়ই বিপ্লব ডেকে এনে সমালোচকের কথাকে প্রতিষ্ঠিত করেনা, অনেক সময়ই তার উলটোটাও করে এবং শারিরীক লাঞ্ছনার পুরোটাই লসের খাতায় যোগ হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এরকম লস দেয়ার মত পরিস্থিতিতে আমরা নেই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সেইক্ষেত্রে প্রাক্সিস কি? যা বুঝলাম সেইটা না বুঝা?



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যা বুঝলাম সেইটা 'পরিস্থিতি'মত ব্যবহার করা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তীরুদার শ্লেষটার সাথে পুরোপুরি একমত ,,,
দাতারা "তাদের নির্দেশিত খাতে বিনিয়োগ" বা "তাদের নির্দেশিত কোম্পানীকে কাজ প্রদান" জাতীয় শর্তসাপেক্ষে ঋন দিতেই বেশী আগ্রহী ,,,
দিগন্তের হিসেবটাও ভেবে দেখার মতো ,,,

সময় এসেছে স্বাবলম্বী হয়ে ঘুরে দাঁড়াবার ,,, ধন্যবাদ তীরুদা
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

তীরন্দাজ এর ছবি

লেখাটি আলোচনার আবহ খুলতে পেরেছে বলে আনন্দিত। তবে পোষ্ট লেখার পরও সে আলোচনায় পুরো অংশ নিতে পারলাম না বলে দু:খিত। প্রোভাইডার বদলের ঝামেলায় বাড়ীতে ডিসেম্বরের মাঝ অবধি ইন্টারনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। কাজের জায়গাতে সময়ের অভাব ও সেখানে অভ্র ইনস্টল করা যায়না (এডমিন রাইট!) বলে সচলায়তনে লেখা যায়না। (কানে কানে বলছি, সামহোয়ারের প‌্যনেলে লিখে এখানে পেষ্ট করতে হয়। -> এর কি কোন সমাধান নেই মডু ভাইয়েরা? )

তবে এই দাতা দেশগুলো কতোটা দাঁতাল, তা টের পাই প্রতিদিন। এখানকার এক বাম রাজনীতিকই একবার সোভিয়েট আমলে বলেছিলেন,
জার্মানী যদি কেন এক প্রজেক্ট নিয়ে আমেরিকামুখী হয়, তখন তা ব্যবসা। একই প্রজেক্ট নিয়ে সোভিয়েট মুখী হলে একে উত্তেজনা প্রশমিত করার পদক্ষেপ বলা হয়, আর ভারত মুখী হলে বলা যেতে পারে 'ফরেন এইডস'।

আপাতত: ভারত নিজেকে কিছুটা মুক্ত করতে পেরেছে। আমাদেরও তা করা দরকার।

আপনাদের ধন্যবাদ।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আলোচনা, বিতর্ক-সুতর্ক-কুতর্ক শুরু করে আপনাকে হারিকেন জ্বালায়া খুঁজতেছিলাম। হাসি সবকিছুই আলটিমেটলি ব্যবসায়ই।

সচলে লিখতে তো অভ্র ইনস্টল করা লাগে না।
Strg+Alt+P দিলে ফোনেটিক
Strg+Alt+B তে বিজয়
Strg+Alt+U তে ইউনিজয়ে লিখা যায়।

ডিটেলস এখানে

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তীরন্দাজ এর ছবি

বলাই ভাই। অনেক ধন্যবাদ। ইউনিজ কি বোর্ডে আরামে লিখলাম।

হারিকেনটি জ্বালায়েই রাখুন!

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।