তারপরে এরাও নাকি শিক্ষক!

অবাঞ্ছিত এর ছবি
লিখেছেন অবাঞ্ছিত (তারিখ: সোম, ০৫/০১/২০০৯ - ৮:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কোন এক বিদ্যালয়ে

আমি সেখানে পড়ি নাই। তাই বলে নেই এটা কোন ব্যক্তিগত বিষোদগার নয়। উক্ত বিদ্যালয়ের এক ছাত্র আমাকে একবার অভিযুক্ত করেছিলো তাদের বিদ্যালয়ের নামে কুত্সা রটানোর... সে কারনেই আমি নিজে কোন নাম দিচ্ছি না, যদিও আমি বিশ্বাস করি এদের নামে পোস্টার ছাপায়া তাদের ভোটে দাঁড় করানো দরকার..

"যাক সে কথা"...তবু যাতায়াত ছিল সেখানকার কিছু শিক্ষকদের বাসায়। বোঝেনইতো ঢাকা শহরে নানান নাম করা "শিক্ষক" আছেন যাদের কাছে না পড়াইতে পারলে সন্তানের ভবিষ্যত কালোজামের মতন হবে বলে অভিভাবকদের (বিশেষ করে মাতাজননীদের) ধারনা দেওয়া হয়। ধারনা গুলা দেয় "অমুক ভাবী" যিনার অমুক অমুক আত্মীয় অমুক অমুক স্যারের কাছে পড়ে দুইন্যা ফাটায়া দিসলো... তারউপরে উনারা নাকি "প্রশ্ন" করে। পোলাপানকে টিচারের বাসায় দিয়ে মাতাজননীদের অপেক্ষা করার ও সুন্দর বন্দোবস্ত করা হয় এইসব যায়গায়।

তো এমন হুজুগে মাইত্যা আমারেও পাঠানো হইসিলো এমন এক শিক্ষকের কাছে...

অনেক কিছু শিখসিলাম আমি উনার কাছে... পয়সা উপায়ের নানান উপায়.... তাড়াতাড়ি আইলে আধাঘন্টা দেরী... তারপর লুঙ্গী পরে রুমে এসে উনি মিনিট দুয়েক ব্যাঙের প্রজনন তন্ত্র নিয়ে কথা বলে বাকি সময় ক্রিকেট, মোটরসাইকেল, নিজ গুনকীর্তন, কবিতা এবং আজাইরা অনেক কিস্যুই উদগীরন করতেন যার কোনোটা সম্পর্কে যে কারো আগ্রহ থাকতে পারে আমি তাই জানতাম না.. চিন্তা করেন কি মূর্খ! বাকী সময় উনি ছাত্রদের অভিভাবিকাদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করতেন পাশের রুমে উনাদের বসার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল যেখানে সেইখানে গিয়ে। ঐখান থেকেই তো আমি মা-খালাদের সাথে ধর্মীয় আলোচনা করা শিখসিলাম। নানান গুনী মানুষ। যা হোক, তবে উনার একটা রোগ ছিলো মনে হয়। যেখানে থাকি সেখানে টিভিতে একরোগের নাম বলে "রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম"। যার অষুধের সাইডএফেক্ট ... যা হোক, অফট্র্যাক না হই...

তো ইনার মনে হয় ছিল রেস্টলেস হ্যান্ড সিন্ড্রোম.. নিজের হাত তিনি কিছুতেই সামলে রাখতে পারতেন না। আমাদের ছেলেদের ব্যাচে দুইটা মেয়ে ছিলো। তাদের যেন আমরা বিরক্ত না করি সেকারনে উনি বলতেন "আমার মেয়েরা এসে আমার পাশে বস"... তারপরে পড়ানোর সময় তাদের মাথায়/ পিঠে হাত বুলিয়ে দিতেন.... আর মাঝে মধ্যে তাদের হাত ধরে পড়াতেন। বলেন ভাই, এমন পিতৃসূলভ টিচার দেখসেন কোথাও? সবার প্রতি তাঁর সেকি মনোযোগ.. একদিন একমেয়ের হাত ধরে উনি উল্টে পাল্টে বললেন "বাহ্ সুন্দর ঘড়ি তো, কইত্থেকে কেনা? কত নিলো? দেখি দেখি? না খুলোনা, হাতেই ভালো লাগছে"

যা হোক, কার পেটে জানি কি সয় না... আমার পেটেও এত ভালো জিনিস সইল না.. ঈমানে কই.. এক মাস পরে আমি উনাকে লাল সালাম জানাইসিলাম। আমার সাথে যে গেসিলো সেই পোলার গুরুদক্ষিনার টাকা দিয়ে আমরা জম্পেশ কয়েকটা ভোজ দিয়েছিলাম... সেইগুলান সুন্দর হজম হয়ে গেল.. কি মুশকিল!

আগে ভাবতাম উনি আমার জীবনে দেখা সেরা শিক্ষক.. সে ভুল আমার ভেঙেছে..

একটা লেখা (http://www.somewhereinblog.net/blog/prajna_twisha/28892659) [হাইপারলিংক করে সুন্দরভাবে কেমনে দেয় জানিনা.. সাহায্য?]পড়লাম কালকে... পড়ে আক্ষেপ হলো আমার... আমার সেই মহান শিক্ষকের এক কলিগ নাকি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া এবং মনোরঞ্জনের সাইমুলটেনাস ব্যবস্থা করেন নীল ছবি প্রদর্শনের মাধ্যমে। শুধু ভিডিওই নয়, অনেকেরআছে লিখিত লিটারেচারের মহা লাইব্রেরী !

আর আমারে নাকি পাঠাইসিলো কুনজায়গায়!.. জীবনে বিরাট আফসোস!


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।