মার্কিন প্রবাসী বাঙালী "মডারেট" মুসলমানদের কাছে খোলা চিঠি

ইয়ামেন এর ছবি
লিখেছেন ইয়ামেন [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/১১/২০১৬ - ৪:৫১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চিঠিটা সবার জন্য নয়, কিন্তু সিংহভাগ মার্কিন প্রবাসী বাঙালী মুসলমানের জন্য প্রযোজ্য

আমার প্রবাসী "মডারেট" ভাই বোনেরা,

কেমন আছেন? গতকাল নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারি ক্লিন্টনকে হারিয়ে দেয়ার পর মন খারাপ হয়ে আছে কি? সামনে আপনার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কি আপনি উদ্বিগ্ন? ট্রাম্প বলেছিল জিতলে মুসলমান অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে (যদিও পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে), সেই কথা মনে করে আপনি চিন্তিত? এই বিজয়ের পর বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থীরা আপনাদের উপর চড়াও হবে, সেটা মনে করে ভয়ে কুঁকড়ে উঠছেন? আরে, এতোটা ভয়ের কিছু নেই। এই চিঠিটা আপনাদের উদ্দেশ্যে লিখেছি আপনাদের কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করতে। আসুন কিছু হিসাব মিলাই।

১) আমেরিকাতে আপনাদের কারো পূর্ণিমা রানী শীলের বাবা-মার অবস্থা হবে না। কোন রেডনেক আমেরিকান সদলবলে আপনার বাসায় আক্রমন করে আপনার বাচ্চা মেয়েটাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করবে না, আপনার বলতে হবে না "বাবারা, আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন একজন করে এসো, মরে যাবে।"

২) রিপাব্লিক্যান পার্টির কোন সিনেটর বা কংগ্রেসম্যান আপনার বাড়ি জোরপূর্বক দখল করতে আসবে না সপরিবারে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে।

৩) কোন চার্চের ধর্মযাজক আর তার সাঙ্গোপাঙ্গরা আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে খ্রিস্টান বানাতে আসবে না।

৪) আপনার কল্পনা চাকমা হবার ভয় নাই এই দেশে। মার্কিন সেনাসদস্যরা রাতের অন্ধকারে আপনাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে ফেলবে না।

৫) শ্যামনগরের মোহন কুমার মন্ডলের কথা মনে আছে? না মনে থাকারই কথা। সৌদিদের হজ ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারনে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ হাজী দুর্ঘটনায় মারা যান, সেটার সমালোচনা করেছিলেন মাত্র, তাতেই 'ধর্মানুভুতিতে আঘাত' হানার 'গুরুতর' অপরাধে তাকে ৫৭ ধারায় জেল পোড়া হয়েছিল। চিন্তা করবেন না, আপনি নিশ্চিন্তে আমেরিকার ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের শিশু যৌন নিপীড়ন ইস্যু নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন, আপনাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে আসবে না।

৬) কোন আমেরিকান আপনার নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে, ফটোশপ করা ছবি ব্যবহার করে মুসলমানদের উপর খ্রিস্টানদের খেপিয়ে দিবে না, সেই চক্রান্তে শয়ে শয়ে আমেরিকান মুসলমানদের বাড়ি, দোকানপাট, মসজিদ আগুনে জ্বলিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করবে না।

৭) আপনাদের কারো বন্যা আহমেদ হতে হবে না, খোলা রাস্তায় চোখের সামনে নিজের স্বামীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে একটা রক্তাক্ত মাংস্পিন্ডে পরিনত হতে দেখতে হবে না, শুধুমাত্র জ্ঞানের আলো ছড়ানোর 'ধৃষ্টতা' দেখানোর জন্য।

৮) নাহ, আপনারা জুলহাজ মান্নানের ডিমেনশিয়া আক্রান্ত বৃদ্ধা মায়ের চেয়েও ভাগ্যবান। আমেরিকাতে আপনার বাসায় এসে আপনার ছেলেকে কেউ শুধুমাত্র 'ভিন্ন' হবার অপরাধে কুপিয়ে মেরে যাবে না, তার রক্তের মাঝে আপনাকে দাঁড়িয়ে থেকে 'আমার খোকা কই?' বলে প্রলাপ করতে হবে না।

৯) আমেরিকাতে খ্রিস্টান ধর্ম কখনও সাংবিধানিকভাবে 'রাষ্ট্রীয়' ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না, যতই কিছু কট্টর পাগলছাগল চিল্লাক। আপনি আমি আমাদের ধর্ম পালন করতে পারবো অত চিন্তা ছাড়া। কেউ বাঁধা দিতে আসবে না।

হ্যাঁ, একটু কষ্ট নিতেই হবে। ধরুন, আপনি যদি আমেরিকার দক্ষিনাঞ্চলে বাস করেন, তাহলে হয়তো কয়েকটা মসজিদ বা ইসলামিক সেন্টারের বাইরে কিছু আজেবাজে কথা লেখা সাইন দেখতে হতে পারে, হয়তো দুই একটায় কিছু উগ্রপন্থী আগুন লাগাতে পারে। আপনার শিশুকে স্কুলে কিছু বর্ণবাদী সহপাঠীদের তির্যক মন্তব্য সহ্য করতে হতে পারে, হয়তো তার কোন সায়েন্স প্রজেক্টকে বোমা মনে করে কিছু ভোগান্তি পার করতে হতে পারে। আপনিও হয়তো রাস্তায় একদিন অপরচিত কোন পথচারীর কাছে গালি খাবেন। কিন্তু সেসব তো এখনও হচ্ছে, তাই না? এসবের সাথে ট্রাম্পের আসার কোন সম্পর্ক নেই। আর চিন্তা করে দেখুন তো, যেই দেশ ছেড়ে এসে আমেরিকাতে থিতু হয়েছেন, সেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের তো এসব সবসময় সহ্য করতে হয়েছে। আপনিই হয়তো কখনও কোন সহপাঠীকে 'মালু' বলে ডেকেছেন, হিন্দুদের দেশ ছেড়ে 'রেন্ডিয়ায়' চলে যেতে বলেছেন, কোন ব্লগার চাপাতির কোপে খুন হলে বিজ্ঞের মত মাথা ঝাকাতে ঝাকাতে বলেছেন 'ইট মারলে পাটকেল তো খেতেই হবে'। তখন সেসবকে 'বিগ ডিল' মনে করেন নাই। আর উপরে যেই লিস্টি দিলাম, আপনিও যানেন, আমিও জানি, আমেরিকাতে এইসব হবার সম্ভাবনা নেই। তাহলে আপনাদের কেন এতো ভয় পাওয়া? কিন্তু বাংলাদেশে যখন এসব প্রত্যেকটা ঘটনা ঘটে, তখন আপনাদের গায়ে লাগে না। কারন সেখানে আপনি সংখ্যাগুরু সম্প্রাদায়ের গর্বিত সদস্য। হাসি

এখন একটু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ট্রাম্প এবং রিপাব্লিক্যান পার্টির কিছু জিনিস দেখার চেষ্টা করুনঃ

১) সমকামীদের বিয়ে করার অধিকার দিয়ে যেই আইন গতবছর পাশ হয়েছিল, তা ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলেই বাতিল হয়ে যাবে সম্ভবত।

২) ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হবার সম্ভাবনা আছে। সেই সাথে 'unwanted pregnancy'-তে গর্ভপাত করার সিদ্ধান্ত নেয়ার যে অধিকার নারীদের রয়েছে, সেটাও খর্ব করার চেষ্টা চালানো হবে।

৩) এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আরেকবার পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আধিপত্য নিশ্চিত হলো। এখন নারী ক্ষমতায়ন পিছিয়ে যাবে এই দেশে। এখনও আমেরিকায় বেশীরভাগ চাকরির ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বেতনের মধ্যে যে বিশাল বৈষম্য আছে, সেটা নিকট ভবিষ্যতে ঠিক হবে না।

এখন বলুন তো, একটু কি স্বস্তি লাগছে? আপনি নিজেও হোমোফবিক। নিজের থেকে ভিন্ন এমন ধরনের মানুষদের ঘৃণার চোখে দেখেন এবং তাদের মৌলিক অধিকার থাকতে পারে তাতে বিশ্বাস করেন না। আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণে বিশ্বাস করেন না। আপনি লিঙ্গবাদী, নারী-পুরুষের সমান অধিকার থাকতে পারে সেটা মানতে অপারগ। ট্রাম্প এবং রিপাব্লিক্যান পার্টির সাথে নিজের কিছু মিল খুঁজে পাচ্ছেন কি?

তাই বলি, অতটা চিন্তা করবেন না। আপনারা আমেরিকাতে ভালোই থাকবেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের যা সইতে হয়েছে, বা এখনও সইতে হয়, তার সিকিভাগ আপনাকে আমেরিকাতে সইতে হবে না, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকাতেও না। তাই বাংলাদেশে ঘটা সাম্প্রদায়িক/মৌলবাদী ঘটনাগুলোর সময় যেমন শীতনিদ্রা যাপন করেন, এখনও আরামসে তাই করতে থাকুন। ট্রাম্পের কারনে এই দেশে সাম্প্রদায়িক ঝড় আসলে সবচেয়ে বড় ঝাপ্টা মেক্সিক্যান অভিবাসী আর কিছু অভাগা সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থী শরণার্থীদের উপর দিয়ে যাবে, আপনাদের না।

টেক ইট ইজি, এন্ড #savegaza!

ইতি,

আপনাদেরই একজন সতীর্থ (স্রেফ বিবেক বলে কিছু আছে)।


মন্তব্য

শেহাব এর ছবি

হো হো হো

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দাদা থাকেন কুতায়?

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ইয়ামেন এর ছবি

আমেরিকাতেই থাকি ভাই।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

নরাধম এর ছবি

হা হা হা দেঁতো হাসি

মাহবুব এর ছবি

জনাব ইয়ামেন, আপনার জন্য উপরোক্ত পোস্ট এর প্রেক্ষিতে একটি কৌতুক (ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত)
------------------------------------------------------------------------------------

বারে বইসা বাঙ্গালের সাথে এক স্কটিশের দেখা হইল। হাইহেল্লোর পর বাঙ্গাল স্কটিশকে কে বললো - তোমরা এত গাধা কেন?
স্কটিশ বললো- কেন?
বাঙ্গাল বললো - গাধা না হইলে কেউ গনভোটে স্বাধীনতা প্রত্যাখান করে?
স্কটিশ বাঙ্গালের কথা শুইন্যা আক্কেলগুড়ুম হইয়া বইসা থাকলো!

সেই বারে কিছুক্ষন পর যোগ দিল এক ব্রিটিশ। কিছুক্ষন হাই হেল্লোর পর বাঙ্গাল সেই ব্রিটিশকে বললো- ঐমিয়া ব্রিটিশ! তোমরা এত ছাগল ক্যান?
ব্রিটিশ মুখচোখ লাল কইরা বললো- ক্যান?
বাঙ্গাল বললো- ছাগল না হইলে কেউ ভোটে ব্রেক্সিট অনুমোদন করে?
কথা শুইন্যা ব্রিটিশেরও আক্কেল গুড়ুম!

আরও কিছুক্ষন পর আসলো এক আমেরিকান l কিছুক্ষন হাইহেল্লোর পর বাঙ্গাল আমেরিকানকে বললো - ইয়ো! তোমরা এত পাগল ক্যান?
আমেরিকান চোখমুখ খিঁচায়া বললো- ক্যান?
বাঙ্গাল বললো - পাগল না হইলে কেউ ট্রাম্পরে ভোট দিয়া প্রেসিডেন্ট বানায়?
আমেরিকানেরও আক্কেলগুড়ুম অবস্থা!

স্কটিশ-ব্রিটিশ-আমেরিকান ভাবলো, আরি শালা বাংলাদেশে না জানি কি অবস্থা! ঐখানের লোকজন নিশ্চয়ই অনেক স্মার্ট! ভয়ে ডরে তিনজনে মিল্যা বাঙ্গালরে জিগাইলো - আমরা গাধা/পাগল/ছাগল বুঝলাম! তোমাদের ঐখানে কি অবস্থা ? তোমরা ভোট দিয়া কি পরিবর্তন করছো?
বাঙ্গাল দাঁত ক্যালাইয়া বললো - আমরা বিজি জাতি, তাই আমাদের ভোট দিয়া টাইম নষ্ট করার মত টাইম নাই! লোকজন আটোমেটিক বিনাভোটে জিত্যা যায়! যারা বিনা ভোটে জেতে না, তারা আমার খাটুনি কমানোর জন্য এবং সময় বাঁচানোর জন্য আমার ভোটটা নিজ দায়িত্বে মাইরা দেয়.... এরপর আমি ভোট দেয়ার মত সময় ও সুযোগ পাই, তখন আমি লাক্স চ্যানেল আই প্রতিযোগিতায় সুন্দরীদের ভোট দেই....

ছোট মিঞা এর ছবি

উপদাশাবলী চমৎকার। তবে যে কারোরই উচিত সে দেশের সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে না চলতে পারলে সে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া।

হাসিব এর ছবি

এই ঔচিত্যের সূত্র কী? মানুষ কেন তার নিজের সংস্কৃতি বিসর্জন দেবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

যদি আপনার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য বা ধর্মীয় আচার যদি যে দেশে থাকেন সেই দেশের সংস্কৃতি আর মূল্যবোধের সাথে সাংঘার্ষিক হয়, তাহলে আপনি কি করবেন?

সাইফ তাহসিন এর ছবি

তাও ভালো যে বলেন নাই, পৃথিবীতেই থাকি? আমাকে কেউ জিজ্ঞাস করলে বলে, মেম্ফিস। তাই আবার জিগাই, কুতায় থাকেন দাদা?

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ইয়ামেন এর ছবি

পেন্সিলভেনিয়ার স্টেট কলেজে থাকি। এবার কি স্ট্রিট এড্রেস চাইবেন, ভাই? দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আপনার স্ট্রিট এড্রেস দিয়া কি করব, বরং আমারটা দিয়া দেই, কয়দিন থাইকা জান, তারপরে এই একি সুর থাকে কিনা দেখতে চাই!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মুস্তাফিজ এর ছবি

গুল্লি

...........................
Every Picture Tells a Story

হাসিব এর ছবি

এইবার মার্কিনিদের নিয়ে একটা পোস্ট দেন। পাঞ্চিং ব্যাগ বাঙ্গালি নিয়ে বহু লিখলাম আমরা।

দেশীছেলে  এর ছবি

পাঁচ তারা। #savegaza তো দূরের কথা, ইলেকশন নিয়ে হাইব্রিড বাঙালী রে যেই পরিমান মাতম করতে দেখতেসি, মূর্তি ভাঙা-ভাঙ্গির সময় তাগোর কোনো হদিস ও ছিল না

Taher এর ছবি

ঠিক বলেছেন, আরেকটি বিষয় যোগ করলেও ভালো হতো। আমেরিকাতে আপনি নির্ভয়ে গরু কোরবানি দিতে পারবেন। আপনি গরু জবাই করেছেন এই গুজব শুনে আপনাকে কেউ মারতে আসবে না ☺

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই আপনি গরূনুভূতিতে আঘাত দিলেন? আপনার খবর আছে।

পাঠক  এর ছবি

হুম। আরেকটি বিষয় যোগ করা যায়। আমেরিকায় পাথর ছুড়ে নির্ভয়ে কেউ কোন মানুষ খুন করতে পারে না।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

খুব ভাল লেখা।
আমেরিকায় সাংবিধানিকভাবে সকল ব্যক্তির নিজ নিজ ধর্ম পালনের যে অধিকার তাতে মুসলমান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ, মরমন, সাইন্টোলজি, সমকামী, ক্লু ক্লাক্স ক্ল্যান বা রাসটাফারিয়ানদের মত আরো অনেক সংখ্যালঘুরা আইনগতভাবে সুরক্ষিত। বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো হয়ত ঘটবেই। তা সব আমলেই ছিল। কিন্তু এ লেখায় বাংলাদেশের মানুষের বর্বরতার যে উদাহরণগুলো তা অত্যন্ত ঘৃণার্হ। অন্যরা যদি ঘৃণিত কোন উদাহরণ সৃষ্টি করেও; তাতে আমাদের নিজেদের ভাল হতে অসুবিধা কোথায় ! কিন্তু আমরা নিজেরাই যুগে যুগে ঘৃণ্য, জঘন্য উদাহরণ তৈরি করেছি। আমরিকা অতীতে এসবের মধ্য দিয়ে এসেছে। কিন্তু তারা তাদের অতীতকে অতিক্রম করতে পেরেছে যা আমরা পারছি না। এখানেই দুঃখ। বাঙলাদেশের মানুষের যে মানবিক গুণ খুবই প্রয়োজন তা হল সহনশীলতা ও ভিন্ন মতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, যা গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র।

ট্রাম্প জেতার পর কোন ধরনের গোলযোগের খবর পাওয়া যায় নাই। বাঙলাদেশে এতক্ষণে যুদ্ধ বেধে যেত। তাছাড়া ট্রাম্পের কিছু কট্টর সাপোর্টার ছাড়া সাধারণভাবে যারা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে তারা মূলতঃ ট্রাম্পকে জেতানো নয় হিলারিকে হারানোর জন্য ভোট দিয়েছে। অনেক ডেমোক্র্যাট ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে। ট্রাম্প জেতার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। তাই ট্রাম্প জেতার ফলে এটা মনে করা ঠিক হবে না যে আমেরিকার অর্ধেকের বেশি মানুষই উগ্রপন্থী। তাদের সংখ্যা অনেক কম। রিপাবলিকান দলের নমিনেশন নিয়ে যে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেই- হিলারির বিপরীতে একই রকম ফলাফল হত বলে আমার মনে হয়।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

অতিথি লেখক এর ছবি

শুনলাম অনেক মুসলিম নারী নাকি হিজাব পরে বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আমি বুঝিনা এত পেইন নেওয়ার কি দরকার? নিজের দেশে ফিরে গেলেইতো হয়, ওইখানে তো শরিয়া আইন টাইন আছে।সারাক্ষণ ইসলাম ইসলাম করবে আবার ঘুরে ফিরে গিয়ে ঐ "কাফির মুল্লুক" গিয়ে মাটি কামড়ায়ে পরে থাকবে, এর মানে কি? শরিয়া আগে নাকি আমেরিকার পাকা পায়খানা আগে?

সাফি এর ছবি

সহমত।

সোহেল ইমাম এর ছবি

মার্কিন প্রবাসী নই, মডারেট মুসলমানও নই। তার উপর প্রায়ই কেন জানিনা নতুন পরিচিতরা আমাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভেবে বসেন। আর সত্যিকারের যে বিশ্বাস বা বিশ্বাসহীনতায় বিশ্বাসী তাতে সংখ্যালঘুর চাইতেও সংখ্যালঘু গোত্রে পড়ে যাই। বাংলাদেশেই থাকি, বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে চাইনা। আমার মত বাংলাদশী কুপমণ্ডুকের জন্য মার্কিন প্রবাসী মডারেট মুসলমানদের জন্য ইয়ামেন ভাই আপনার আশ্বাসবাণীর একটাও খাটেনা। কি বলবো তাই ভাবছি। লেখাটা দুর্দান্ত হয়েছে ভাই। চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

Arpita এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।