জাতের নামে বজ্জাতি সব

যূথচারী এর ছবি
লিখেছেন যূথচারী (তারিখ: শুক্র, ০৬/১১/২০০৯ - ১:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি শুনেছি ইউরোপ-আমেরিকায় অনেকে নাকি এখনো বাংলাদেশ-কে পাকিস্তানের অংশ মনে করেন, কেউ কেউ ভারতের একটা প্রদেশ-ও ভাবেন। বাংলাদেশের মানুষকে অবলীলায় ইন্ডিয়ান বা অন্য কোনো জাতীয় হিসেবে চালিয়ে দেন। কিংবা অনেক বাংলাদেশিও নিজেকে বাংলাদেশি না বলে প্রথম পরিচয়টা ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু বলেন। আর মুসলিম? ‘দুইপাতা ইংরেজিপড়া' মুসলমানদের অনেকেই ইসলামী রীতি তো দূরের কথা পারলে বাংলার ইতিহাস থেকে মুসলিম শাসনের ৭০০ বছর-ও মুছে দিতে চান।

অবস্থা কতোটা ঘোরতর বুঝবেন, যখন সরকারপ্রধান '৭২-এর সংবিধানে প্রত্যাবর্তনকেই এইদেশের উন্নয়নের জন্য জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন দেখুন প্রথম আলোর সংবাদ। ব্যক্তিগতভাবে আমি '৭২-এর সংবিধান পছন্দ করি না, তবে আমার পছন্দ করার চেয়েও অনেক বেশি করে সেটি পছন্দ করেন না এই দেশের অবাঙালিরা। কারণ এখানে জাতীয়তাবাদ বলতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলা হয়েছে, মহান নেতা বলেছেন- তোমরা সব বাঙালি হ'য়া যাও। এখানে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ইসলামিয়া কলেজের নাম বদলে হবে নজরুল কলেজ কিন্তু নটরডেম, হলিক্রস, রামকৃষ্ণ কলেজের নাম থাকবে যেমনছিলতেমন। যেন বাঙালিত্বেই সব জাতীয়তাবাদ, যেন অনৈসলামেই সব ধর্মনিরপেক্ষতা।

জাতীয়তা আসলে কি? সমাজবিজ্ঞান এমন এক অদ্ভুত বিজ্ঞান যা কোনো কিছুর স্থির ব্যাখ্যা দিতে পারে না। জাতীয়তার ধারণা এমনভাবে বদলে গেছে বিভিন্ন সময়ে, এক সময়ের ধারণা অন্য সময় প্রায় উল্টো। তিনটি সবচেয়ে প্রভাবশালী ধারণার কথা আমরা বলি প্রায়ই- একটা হলো মৌলবাদী, আরেকটা যন্ত্রবাদী আর তৃতীয়টা নির্মাণবাদী। মৌলবাদী ধারণাটা এখন সমাজবিজ্ঞানে সবচেয়ে অচল, কিন্তু ওইটাই আমরা সবচেয়ে বেশি বলি। আমার বাপ-দাদা যেই জাত আছিলো, আমি কি সেই জাত না? আমি কি এই দেশের আদিবাসী না? মণিপুরীরা তো আইছে বিদেশ থেকে, আমার দাদা-পরদাদারা এই দ্যাশের আসল আদিবাসী ইত্যাদি ইত্যাদি এটিই মৌলবাদী ধারণা। অর্থাৎ প্রধানত রক্তের সম্পর্ককে ভিত্তি করে যে জাতীয়তাবাদী ধারণা গড়ে উঠেছে, সেটিই হলো মৌলবাদী জাতীয়তাবাদ। অনেকে একে মূলবাদী, অনেকে প্রাথমিকবাদী অনেকে আদ্যবাদী বা আদিবাদী ইত্যাদি ভাবে বঙ্গায়ন করেছেন। এই তত্ত্বে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো- বংশগরিমা। প্রথমে সৈয়দ পরিবার সেরা, পরে সৈয়দ বংশ সেরা, পরে সৈয়দপুরবাসী সেরা, পরে সৈয়দস্তান-এর মানুষ পৃথিবীর সেরা জাতি, তারপর সৈয়দদের গায়ের রঙ যেহেতু কমলা, সুতরাং পৃথিবীর সকল কমলা মানুষ-ই সেরা, এইভাবে এটা একটা পুরা রেসিস্ট জাতীয়তাবাদে পরিণত হয়। ব্রিটিশদের হাতে রোপিত হলেও জার্মানদের হাতে এই বৃক্ষ ফুলে ফলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। গুস্তাফ কোসিনা এই ক্ষেতের মূল চাষী; হাইনরিখ হিমলার এবং আলফ্রেড রোজেনবার্গ কিছুটা কামলা দিছে।

যন্ত্রবাদী ধারণাটি হলো জাতীয়তা নির্ণয়ের একটা যন্ত্র নির্ধারণ। অর্থাৎ স্বাতন্ত্রসূচক একটা উপাদান (যন্ত্র) খুঁজে বের করে ওইটার সাপেক্ষে জাতীয়তাবাদ নির্ণয়। ওরা যেহেতু বাংলায় কথা বলে সুতরাং ওরা সব বাঙালি, ওরা যেহেতু সব বাইবেল পড়ে সুতরাং ওরা খ্রিস্টান জাতি, ওরা যেহেতু সব লাল পুঁতির মালা পরে সুতরাং ওরা সব লালমালা* জাতি। এইভাবে একটা কিছু খুঁজে বের করে ঐক্য তৈরি করা। কাঠামোবাদী, উপযোগিতাবাদী ইত্যাদি নানা নামে একে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নামের সাথে মিলিয়ে সংজ্ঞার সামান্য হেরফের আছে, মূল ঘটনা এক-ই। যাই হোক এই সংজ্ঞাও কার্যত অকার্যকর। কারণ দেখা গেছে, একই ভাষায় কথা বললেও ইংরাজগুলা মোটেই এক জাতি হিসেবে পরিচিত হতে চায় না। অথবা এক ধর্ম হইলেও মুসলমানগুলা সব ফাঁক পাইলেই স্বাধীন হইয়া যায়। এইসব নানা কিসসা কাহিনী দেইখা সমাজবিজ্ঞানীরা কইলো, না থাউক, এইভাবে হইবো না, অন্য রাস্তা দেখি।

নির্মাণবাদীরা এইবার ধরলো ব্যক্তিকে। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি কিভাবে সর্বব্যাপী ও সাধারণ ব্যক্তি হয়, তার চেষ্টা। দৈহিক গড়ন, নাম, ভাষা, ইতিহাস, ধর্ম ইত্যাদি নানা ধরনের যাতাকলে পিষ্ট করে এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির সাথে কোথায় সবচেয়ে বেশি খাপ খায় সেই বিষয় জানার চেষ্টা করে। এইভাবে ব্যক্তির বিভিন্ন চর্চা, সংস্কৃতি, পরিপ্রেক্ষিত, ইতিহাস ইত্যাদির আলোকে একই সমাজে নানা স্তরায়ন করে জাতীয়তাকে ভাঁজে ভাঁজে সাজাইলো। এর ফলে বাঙালি হিন্দু, বাঙালি মুসলামান, বাংলাদেশি বাঙালি, ভারতীয় বাঙালি, বাংলাদেশি মুসলমান বাঙালি, বাংলাদেশি হিন্দু বাঙালি, বাংলাদেশি নিম্নবর্গের মুসলমান বাঙালি ইত্যাদি নানা ভাবে জাতীয়তাকে চিহ্নায়নের চেষ্টা করে। এর থেকে ‘তোমার দেশ কই?- নোয়াখালী, তোমার জাত কি?- জাইল্যা' এইটা অনেক বেশি যুৎসই মনে কইরা, সমাজবিজ্ঞানীরা কি করি কি করি একটা ধান্দায় পড়ে গেল।

(চলবে)

আর লিখতে পারবো না, ইজেলে একটা ক্যানভাস চড়াইছি, কিছু রঙচঙ মাখি। ইজেলে উঠানোর পর সারারাত ক্যানভাস খালি রাইখ্যা দিলে কবিরা গুনাহ হয়।

ধূগো ভাইয়ের কাছ থেকে বিরতি নেয়ার একটা অভ্যাস তো আপনেগো হইয়াই গেছে, নো প্রবলেম।

*লালমালা জাতি নামে আসলেই একটা জাতি চিহ্নিত করা হয়েছিল।

**এইটা এই লেখা পোস্টানোর পাপের ফল। কোন কুক্ষণেই যে এই বিষয়ে একটা লেখা লিখবো এই কথা দিছিলাম!


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

যূথচারী

আপনি যা বলেছেন আমি তা অনেকাংশে ঠিক ! ছফার 'বাঙ্গালী মুসলমানের মন' এখানে কথাবার্তার উছিলা হতে পারে। বইটা হাতে নাই কোট করতে পারছি না। লেখাটা আর একটু টানতে পারতেন। এসব সিরিয়াস বাহাসে খন্ডে খন্ডে পড়তে গেলে তাল কেটে যায়। আমার ব্যক্তিগত মত জানালাম। আপনি আপনার মতো লিখুন।

আপাততঃ বলার মতো উপাত্ত হাতে নাই। তাই এটকুনই বলে রাখলাম।ক্যানভাসের কাজটা সেরে আবার আসেন।

শুভাশীষ দাশ

যূথচারী এর ছবি

ঠিকই বলেছেন, একবারে লিখতে পারলেই ভালো হতো, তবে সেক্ষেত্রে আরো দেরি হতো, ধূগো এবং রাগিব ভাই আগের পোস্টে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে আর দেরি করতে পারলাম না, ব্যস্ততার মাঝেও যতোটুকু সম্ভব হলো ততোটুকুই দিলাম।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

অমিত এর ছবি

এখানে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ইসলামিয়া কলেজের নাম বদলে হবে নজরুল কলেজ কিন্তু নটরডেম, হলিক্রস, রামকৃষ্ণ কলেজের নাম থাকবে যেমনছিলতেমন। যেন বাঙালিত্বেই সব জাতীয়তাবাদ, যেন অনৈসলামেই সব ধর্মনিরপেক্ষতা।

ভুল অ্যানালাইসিস। নটরডেম, হলিক্রস বা রামকৃষ্ণ মিশন সরকারিভাবে পরিচালিত হয় না। অপরদিকে কবি নজরুল হয়। তাই সরকার নিজে সেক্যুলার অবস্থান নিলেও, অন্যকে বাধ্য করতে পারে না। এটাই ধর্মনিরপেক্ষতা হওয়া উচিত।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কিন্তু নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে ইসলাম বাদ দেয়াটাই সেকুলার ধারণা হলো কেনো? শব্দটা ইসলাম বলেই? তাহলে তো ইসলাম নামের লোকজনদের সরকারি চাকুরীতেও সরকার ইচ্ছে করলেই না নিয়োগ দিতে পারে। ভুল বুঝলাম কি?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কলেজের নাম কেটে যদি নিজের অবস্থানকে সেক্যুলার প্রমাণ করতে হয় তাহলে শেষে বিরাট গণ্ডগোল বেঁধে যাবে। নীতিগুলো সেক্যুলার হোক, নামে কী আসে যায়?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

যূথচারী এর ছবি

সেক্যুলারিজমটা কোনদিক থেকে সেক্যুলার সেটাই আগে দেখা দরকার। ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর যে অবস্থান, আমার মতে, তার কোনোটাই ওই দুটি বিষয়কে প্রতিনিধিত্ব করে না। বলা যেতে পারে, বিষয়গুলো সম্পর্কে দলগুলোর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গীই প্রতিফলিত হয়েছে। সেটাই অবশ্য স্বাভাবিক, কিন্তু আমি সমর্থন করি না।

যে উদাহরণ দিয়েছি, সেটি ইসলাম-সংশ্লিষ্ট বলে হয়তো আপনার কাছে আপত্তিকর মনে হয়েছে। কিন্তু এটাও সত্যি ধর্মকে প্রমোট করার জন্য-ও উদ্যোগটা ৭২-ওয়ালারাই নিয়েছে এবং সেটার-ও আমি বিরোধী। মোল্লাতন্ত্র দাঁড় করানোর পেছনে এদেরই দায়িত্ব বেশি। আপনি যেটা বলেছেন, "সরকার নিজে সেক্যুলার অবস্থান নিলেও, অন্যকে বাধ্য করতে পারে না।" স্বাধীনতাপরবর্তী আওয়ামী সরকার এই সেক্যুলার অবস্থান নেয়নি। প্রথম প্রথম যেখানে ইসলাম সেখানেই সেক্যুলারিজম করেছে, পরবর্তীতে কাগুজে ইসলামকে প্রমোট করেছে, যা মোল্লাতন্ত্রের ভিত্তি রচনা করেছে, পরবর্তী সরকারগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ইন্ধনে এটা জঙ্গীবাদের বিকাশকে সাহায্য করেছে। এই সেক্যুলারিজম আমার কাম্য নয়।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি যা বলেছেন আমি তা অনেকাংশে ঠিক !

'আমি' শব্দটা ভুল কী-চালন। ওটা বাদ দিয়ে পরেন।

শুভাশীষ

অতিথি লেখক এর ছবি

ওটা বাদ দিয়ে পরেন।

আবারো। পড়েন।ফ্রয়েডীয় ভুলচুক। লেখাটা পুরা শেষ করে পোস্টান তাড়াতাড়ি।

শুভাশীষ দাশ

অরু এর ছবি

ভাই বাঙ্গালী নামের জাতিয়তাবাদে সমস্যা কি? বাংলাভাষী , চাকমাভাষী, উরদুওয়ালা বাঙ্গালি হলে দোষের কিছু দেখিনা। ১৯৭৫ এর হত্যাকান্ড না ঘটলে আমরা এভাবেই নিজেদের পরিচয় দিতাম।

"বাংলাদেশি" জাতিয়তাবাদ বরং আমাদের বাঙ্গালি পরিচিতি কেড়ে নিয়েছে। সে সাথে হারিয়েছি হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য।

আপনার কথার সাথে পাকিস্থানপন্থিদের ভালই মিল পেলাম।

অমিত এর ছবি

আমাদের আদৌ কি কখনো হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ছিল ?

যূথচারী এর ছবি

পাকিস্তান শুধু না আরো অনেকের সাথে ভালো মিল পাবেন, তবে সব-ই খুব আপেক্ষিক। জাতিত্ব ধারণাটা এতো জটিল যে আমি চলতি কোনো অবস্থান নিতে পারি না। তবে নিশ্চিত থাকুন অন্তত ধর্ম বা ভাষা বা রাষ্ট্রীয় সীমারেখাকে কেন্দ্র করে জাতিত্বের ধারণার সাথে আমি মোটেও একমত না। বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ যদিও কথায় কথায় খুব বলাবলি করি, কিন্তু ইতিহাস মোটেই আমাকে এর সাথে ঐক্যবদ্ধ করে না।

একটা বিষয় জানার খুব ইচ্ছা,

বাংলাভাষী , চাকমাভাষী, উরদুওয়ালা বাঙ্গালি হলে দোষের কিছু দেখিনা।
এর মাধ্যমে বাঙ্গালি বলতে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন? বাঙ্গালিত্বের ভিত্তিটা কি এখানে?

সে সাথে হারিয়েছি হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য।
LOL
হাজার বছর বুঝলাম, কিন্তু কোন অঞ্চলের ঐতিহ্যের কথা বলছেন? ভারতীয় উপমহাদেশের কোনো দেশের কথা কি? মানে বাংলাদেশ বা এর আশেপাশের কোনো অঞ্চলের ইতিহাস? হিন্দু সেনদের হাতে বৌদ্ধ পালদের নিপীড়ন অথবা মুসলিমদের সাথে হিন্দুদের দাঙ্গা এই সহস্রাব্দের-ই ঘটনা। বাংলা অঞ্চলের রাজনৈতিক ইতিহাসে অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য নাই, সামাজিক ঐতিহ্যে মোটের ওপর একটা ভাব চিরদিন ছিল, এখনো আছে।

পাকিস্তানের সকল অঞ্চলের সকল মানুষের ভাষার স্বীকৃতি দিতে হবে বলে ৫২-তে রক্ত ঝরানোর পর ৭২-এর সংবিধানে বাংলাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদান এবং বাংলার সর্বগ্রাসী বিকাশ পাকিস্তান চেতনার সাথে ৭২-এর চেতনা মূলগত ভাবে একই।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

রাহিন হায়দার [অতিথি] এর ছবি

অপেক্ষায় রইলাম।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ধর্ম, ভাষা আর ভূগোল এরমধ্যে কোনটা একজনের জাতীয়তার প্রধান মাপকাঠি হবে সেটার ব্যপারে অনেকে অতি শিঘ্রই সিদ্ধান্তে চলে আসেন। কারন এটা ধরে নেয়া হয় যে ব্যপারটা সহজ। সবার আগে যেটা বোঝা দরকার সেটা হল এই পরিচিতির কোনটার গন্ডী কোথায়? আমাদের মানুষ পরিচয়টাই বা কোথায়। ব্যক্তিগত আচরন, সামষ্টিক আচরন কোথায় কোনটি কি অর্থ বহন করে এগুলো না লক্ষ্য করে আমরা জাতীয়তা বোধ তৈরি করি। সমস্যাটা তৈরি হয় তখন যখন সেগুলোর সাথে রাজনৈতিক একটা মাত্রা যোগ হয়। (যেমন আওয়ামীলিগ মানে বাঙালী জাতিয়তা, বিএনপি মানে বাংলাদেশি আর জামাত মানে ইসলাম, জাপা মানে (কী?) ইত্যাদি)

এ বিষয় নিয়ে সচলায়তনে নানা রকমের আলোচনা হয়েছে বলে আমার মনে হয়। কেউ যদি আলোচনাগুলোর একটা সংকলিত পোস্ট দিতেন ব্যপারটা চমৎকার হত। কখনো সময় হলে নিজেই হয়ত করার চেষ্টা করব। কারন এই সমস্যাটা নিয়ে নানা সময়ে ভেবেছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মতাদর্শ আর বাস্তবতার মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করাটা এই বিতর্কের সবচেয়ে কঠিন অংশ মনে হয়েছে। এর একটা বাস্তব দিক হচ্ছে সমাজে ভিন্ন মতের অবস্থানকে কিভাবে দেখা হবে সেটা অনেকাংশে নির্ভর করে জাতীয়তা সংক্রান্ত বোধের ভঙ্গুরতার ওপর। সেটা একটা জাতিকে দ্বিধাগ্রস্ত আর দিগভ্রান্ত করে দিতে পারে। আর বাংলাদেশিদের (ভৌগোলিক অর্থে বলছি) ক্ষেত্রে সেটা দুঃখজনক ভাবে সত্যি।

আমার মতে এই বিষয়ে ঐক্যমত্য সম্ভব নয়; কিন্তু কিভাবে এর পার্থক্য নিয়েও একটা দেশের আইন ব্যবস্থার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন জাতীয়তাকে গুরুত্ব দেয়া মানব গোষ্ঠীরা একই সময়ে বসবাস করবে সেই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছান সম্ভব এবং অত্যন্ত দরকার। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে জাতীয়তা বোধের উৎস্যের ভিত্তিতে নানা রকমের মৌলবাদ সম্ভব এবং রয়েছেও। কেবল ইসলাম ভিত্তিক মৌলবাদকে 'মৌলবাদ' হিসাবে ধরা হয় অন্য কিছু কে নয়। এর মধ্য দিয়ে এক ধরনের এলিয়েনেশন ঘটছে আমাদের সমাজে। সেটা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সমাজ এবং দেশের ভারসাম্যকে সাংঘাতিক ভাবে ব্যহত করবে।

বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। এই দরকারি বিষয়ে লেখা দেবার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

হিমু এর ছবি

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে জাতীয়তা বোধের উৎস্যের ভিত্তিতে নানা রকমের মৌলবাদ সম্ভব এবং রয়েছেও। কেবল ইসলাম ভিত্তিক মৌলবাদকে 'মৌলবাদ' হিসাবে ধরা হয় অন্য কিছু কে নয়। এর মধ্য দিয়ে এক ধরনের এলিয়েনেশন ঘটছে আমাদের সমাজে। সেটা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সমাজ এবং দেশের ভারসাম্যকে সাংঘাতিক ভাবে ব্যহত করবে।

যেমন?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এখানে আপনি ঠিক কিসের উদাহরন চাইলেন পরিষ্কার হল না।

যদি সাম্ভাব্য মৌলবাদের ধরনের উদাহরন চান সেটার উৎস্য এরকম

"জগতে দুই প্রকৃতির লোক আছে। যথা ভাল এবং খারাপ। যারা আমার মত করিয়া তাহাদের জাতিয়তা চিহ্নিত করেন না তাহার খারাপ আর যাহারা অমার কায়দায় তা করেন তারা ভালোর দলে।"

জাতিয়তার উৎস্য যেভাবেই তৈরি হোক দেখবেন এই মনোগঠনটা নানা ভাবে মানুষের চিন্তাকে আর পারস্পরিক আচরনকে প্রভাবিত করছে। সমস্যা হচ্ছে এই জাতীয়তাবোধের শিকরটা যত গভীর মৌলবাদের প্রকাশটা তত উগ্র। এই গ্রুপগুলোর মধ্যে একদল কম শিক্ষিত, বিজ্ঞান আর সমাজ বিজ্ঞানের ভাষার/চিন্তার সাথে অপরিচিত, কিন্তু ধর্মীয় বোধ গভীর। আরেকদলের সেখানেই শক্তি। এর ভিত্তিতে আমাদের সমাজে অলিখিত একটা বিভাজন আছে। প্রতিটি পক্ষই তাদের নিজস্ব গন্ডীতে অন্য গ্রুপকে গালামন্দ করার একটা সংস্কৃতি তৈরি করেছে। এতে করে গ্রুপগুলোর চেতনাবোধে একধরনের সেলফ ফুলফিলিং পসিটিভ ফিডব্যাক দেয় যেটা এলিয়েনেশন ব্যপারটাকে আরো গভীর এবং জটিল করে তোলে। ফাটলের গভীরতা আর ব্যপ্তি দু'টোই বেড়ে যায়।

যেমন বাঙালি জাতিয়তা বোধ বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম, ভাষার সংস্কৃতির বৈচিত্র (Heterogeneity অর্থে) কে একটা যাতাকলে ফেলে দিচ্ছে। সবাইকে মারিয়া পিটাইয়া বাঙালী না বানাইলে কি চলে? এটা কি মৌলবাদ নয়? এটা কে আক্ষরিক অর্থে একটা প্রশ্ন হিসাবেই নিন আপাতত।

এলিয়েনেশনের উৎস্যটাও এখানেই। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে জাতিয়তাবোধ সংক্রান্ত চেতনা ভিন্ন (কমবেশি অর্থে নয়, বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য অর্থে)। সেখানে আমাদের গোষ্ঠীবদ্ধ সংস্কৃতি কেমন? সেখানে পার্থক্যকে কিভাবে মোকাবেলা করা হয়? এখানে আমি 'আমাদের' বলতে বাংলাদেশে বসবাসকারি মানুষদের কথা বলছি।

আর দীর্ঘমেয়াদে অস্থিতিশীলতার কথা যদি বলেন আশা করি এভাবে চলতে থাকলে উদাহরন আমাকে দিতে হবে না সময়ের গর্ভ থেকে সেটা আপনা থেকেই বেরিয়ে আসবে। আসলে দীর্ঘমেয়াদ কেন স্বল্পমেয়াদে কি হচ্ছে? জঙ্গীবাদতো মনে হচ্ছে আজকাল র‌্যাব সাহেবদের দক্ষতা প্রদর্শনের একতা সহজ হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথাকথিত 'শিক্ষিত সমাজ' আর মাদ্রাসা গামী বা এসব দাড়ি-টুপি আর আলখাল্লা চাপান মানুষ(?)গুলোর পার্থক্য কোথায়? সম্ভবত এখানে যে মৌলবাদ শব্দটি তাদের তৈরি করা নয়। তাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা। তাদের হাতে কলম নেই। এরা একটা ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এরা এদের জ্ঞানের উপাদান পায়। কেন? কারন এরা মনে করে ধর্ম আর শিক্ষা পরিপুরক। তাদের বলা কথাও শোনা যাবে না (এই বিষয়ে বিদগ্ধ সমাজ একমত)। মজার ব্যপার হচ্ছে দাড়িটুপি পড়াদের বিদ্যা আর টাকা পয়সার জোর কম। আমাদের পুলিশের সদস্যরা এটা ভাল করেই জানেন। আর মজা হল এখন পত্রিকা পড়া 'শিক্ষিত' মানুষদের জন্য হাতকরা পড়া 'হুজুর' দের ছবি বড়ই উপভোগ্য। আর আমাদের রাজনীতি বিদদের জন্য উপভোগ্য। এই সব মলম সদৃশ্য ছবি দিয়ে 'শিক্ষিত' লোকেদের খুশি করা চলিতেছে আবার গড ফাদারেরা তাদের পোষা গুন্ডাদেরকেও সেই মলমের কল্যানে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ানর সুযোগ তৈরি করে দিতে পারছে।

'মৌলবাদ' জিনিসটা কি? এর সংজ্ঞা দিবে হইল 'শিক্ষিত' লোকেরা। কাজেই সংজ্ঞা যারা দিয়াছে তারা কি আর এর মধ্যে পড়তে পারে? কাজেই প্রশ্ন আসা তো স্বাভাবিক।

আপনার প্রশ্নের উত্তর হল কি?

হিমু এর ছবি

আপনার মধ্যে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের প্রতি গভীর দরদ দেখে আশঙ্কিত হলাম। ফরহাদ মগবাজার এই জাতীয় কথাবার্তা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে লেখে। আপনিও কি তার মতোই একজন উগ্রপন্থী-অ্যাপোলোজিস্ট?

পিটিয়ে বাঙালি বানানোর একটা উদাহরণ দেখান প্লিজ। ধর্মীয় মৌলবাদের প্রচুর উদাহরণ তো আছেই, আমি প্রতিমৌলবাদের উদাহরণ দেখতে চাই।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

মজাটাইত এই খানে। যেই আপনার কাছে মনে হল আমার কথা "ফরহাদ মগবাজার (??)"এর মত সেই আর কথার ভেতরে কি বললাম সেটা অর্থবহ থাকল না। এই মিলটাই গুরুত্ব পাইল। এইটা প্রতিমৌলবাদের একটা উদাহরণ। ফরহাদ মাজহারের লেখা পড়েছিলাম অনেক আগে (ছোটবেলায় বললে ভুল হবে না)। তখন এসব বিষয়ে আমার চিন্তা ভাবনা এখনকার চেয়েও অনেক অপরিপক্ক ছিল। কিন্তু যতদূর মনে পরে তার লেখাটা ছিল এডওয়ার্ড সাইদের দর্শন নিয়ে। আমিও সাইদের কিছু লেখা পড়েছি, সম্ভবত প্রভাবিতও হয়েছি। মিলটা হয়ত সেখান থেকে এসে থাকবে। কিন্তু কার সাথে কতটুকু মিলল সেটার চেয়ে মূল বক্তব্যটা কি আগে দেখা দরকার নয়? কিন্তু দেখুন আপনি কি করলেন? তারে প্রথমেই নাম বিকৃত করে একটা গালি দিলেন।

খেয়াল করেন আমি উপরের মন্তব্যে লিখেছিলামঃ
"প্রতিটি পক্ষই তাদের নিজস্ব গন্ডীতে অন্য গ্রুপকে গালামন্দ করার একটা সংস্কৃতি তৈরি করেছে"

আপনিও কিন্তু তাই করলেন। আর পরোক্ষ ভাবে বুঝিয়ে দিলেন এই ভাবে 'শিক্ষিত' লোকদেরকে মৌলবাদি বললে আপনার নামেরও এমন অপভ্রংশ তৈরি হতে পারে। ভাগ্যিস আমি বিখ্যাত কেউ না। তবে অপভ্রংশ কি হইতে পারে ভাবতে গিয়া মনে পড়ল ছোট বেলার কথা। হয়ত আমারে বলা হইত 'পিঁয়াজ উদ্দীন'। এই বলে আমাকে ছোট বেলায় খেপান হইত।

পিটিয়ে বাঙালি বানানোর একটা উদাহরণ দেখান প্লিজ

'পিটিয়ে' শব্দটা ব্যবহারের দরুন আপনি বোধকরি একটু দ্বিধাগ্রস্ত। আসলে এখানে আক্ষরিক অর্থে পিটান হচ্ছে না সবসময়। কিন্তু সময়ে সময়ে সেটা পেটানর চেয়ে অনেক দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে। উপজাতিদের বিষয়টাই দেখুন। এখানে ভাষা বৈচিত্রের ব্যপারটা খেয়াল করুন। এটাকি একটা চাপিয়ে দেয়া পরিচয় নয়? আর 'বাঙালী' শব্দটির একটা সংস্কৃতি মুখী ব্যখ্যাও আছে। সেটাও ভেবে দেখা দরকার। সমস্যা তৈরি হচ্ছে তখনই যখন ধরে নেয়া হচ্ছে সবাই কে একটা চুল্লিতে নিয়ে ধাতু গলানোর মত গলিয়ে এক বস্তুতে পরিনত করা যাবে (melting pot)। আমার বোঝাতে এটাই মৌলবাদ।

ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের প্রতি গভীর দরদ দেখে আশঙ্কিত হলাম

এইটা হইল স্টেরিওটাইপিং এর একটা আদর্শ উদাহরন। যাদেরকে আটকান হচ্ছে তারা মৌলবাদি হইতে পারে আদর্শিক অর্থে। কিন্তু কেন জানি আমার সন্দেহ যেই সব দাড়ি-টুপিআলাকে উনারা আটকাচ্ছেন তারা আসল কালপ্রিট নাও হতে পারে। আমার আপত্তি এখানে যে দাড়ি-টুপি আর হাতকরা একসাথে দেখলে আমাদের 'শিক্ষিত' সমাজ যেভাবে আহ্লাদে আটখানা হয়ে যাচ্ছেন সেটাও বড় বিপদের একটা পুর্বাভাষ। এখেনে আমার "গভীর দরদ" তাদের প্রতি যারা আমার সন্দেহ সত্যি হলে বিনা অপরাধে কেবল তাদের বাহ্যিক অবয়বের দরুন রাজনীতির প্যাচে পরে আক্রান্ত। আর এই বিষযুক্ত মলম আমাদের 'শিক্ষিত' সমাজকেও হয়ত আনন্দ দিচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের দেয়া চশমায় যখন আমার "দাড়ি-টুপিআলা = ধর্মীয় উগ্রপন্থী" এই সিদ্ধান্তে পৌছে যাচ্ছি তখনই বিপদ। আমি দরদ দাড়ি-টুপিআলাদের জন্য উগ্রপন্থীদের জন্য নয়। কিন্তু এই সমীকরনটার কল্যানে আপনার মনে হল আমার দরদ উগ্রপন্থীদের জন্য। সাইদের মতে পশ্চিমা রঙ্গিন চশমাই এর জন্য দায়ি, এই চশোমাটিকে তিনি বলেন অরিয়েন্টালিসম।

হিমু এর ছবি

ফরহাদ মগবাজারকে ফরহাদ মগবাজার বলায় আপনি গোস্যা করলেন দেখে বিস্মিত হলাম।

আপনার এই যুক্তি শুধু দাড়িটুপিতে সীমাবদ্ধ হবে কেন? নরহত্যা বা শিশুধর্ষণের দায়ে কাউকে ধরা হলে তার নামেও তো আপনার বলা হুবহু সেই একই কথাগুলি আওড়ানো যায়।

আপনার কথামতো, দাড়িটুপি মাত্রেই নিপীড়িত এবং সেই নিপীড়ন দেখে আমার মতো প্রতিমৌলবাদীরা আহ্লাদিত। যে লোকটা একটা বোমা নিয়ে একজন নিরীহ দায়রা জজকে উড়িয়ে দিতে যায়, সে কি দাড়িটুপির কল্যাণেই তাহলে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবে?

আপনার কথা শুনে আমার একটিবারও মনে হয়নি, আপনার দরদ দাড়িটুপির জন্যে। কারণ আপনি পরিষ্কার করেই বলেছেন, জঙ্গিবাদীদের কথা দেশের "শিক্ষিত" লোকজন শুনতেও চায় না। কাজেই দাড়িটুপির কোন সাবসেটটির প্রতি আপনার দরদ প্রকাশিত হয়েছে, বুঝতে অসুবিধা হয়নি আমার।

এডওয়ার্ড সাইদের আবিষ্কৃত চশমা আপনার এই যুক্তির মোচড়ে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়া আর কোনো কাজে আসে বলে আমার মনে হয় না। দাড়িটুপিঅলাদের দিয়ে চৌরাস্তার মোড়ে বোমা ফাটানো হবে, তারপর তাদের পাকড়াও করা হলে আঙুল তাক করা হবে "শিক্ষিত" সমাজের দিকে, যে দেখুন, এরা দাড়িটুপিবিদ্বেষী, এটা তো একটা শঠতা ছাড়া আর কিছু নয়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ফরহাদ মগবাজারকে ফরহাদ মগবাজার বলায় আপনি গোস্যা করলেন দেখে বিস্মিত হলাম।

তাঁর সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুবই কম। হয়ত সেই জন্যেই আপনার এই বিস্ময়ের কারনটা আমার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে না।

যে লোকটা একটা বোমা নিয়ে একজন নিরীহ দায়রা জজকে উড়িয়ে দিতে যায়, সে কি দাড়িটুপির কল্যাণেই তাহলে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবে?

অবশ্যই না। এরকম কথা বলেছি বলে মনে পড়ছে না তো। তবে এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করার আছে। যারা এটাকে ঠিক মনে করে সেটা একটা সিস্টেমিক ত্রুটির ফসল। আমাদের গ্রামের মসজিদের একজন মাওলানার ছেলেও এই দলে ভীরেছিল। এখন কি অবস্থা জানিনা। কিন্তু এদের যে আদর্শিক অবস্থান/ত্রুটি সেটা কেবল মাত্র তাদেরকে ফাসীর কাঠে ঝুলিয়ে সমাধান করা যাবে না। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিতে যারা বিশ্বাস করেন তাদের আদর্শিক অবস্থানও অনেক নানা গোত্রের। জামাত শিবির, তাবলিগ জামাত, ঐক্যজোট, হুজি বা বাংলাভাইয়ের গ্রুপ এদের মধ্যে অনেক আদর্শিক পার্থক্য আছে বলে জানি। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে এখানে তারা নিজেদেরকে ঠিক অবস্থানে আছে বলে মনে করে। কিন্তু এলিয়েনেশন ঘটার কারনে তাদের ভুল সংশোধন হবার কোন সুযোগ তৈরি হয়নি।

কাজেই দাড়িটুপির কোন সাবসেটটির প্রতি আপনার দরদ প্রকাশিত হয়েছে, বুঝতে অসুবিধা হয়নি আমার।

এটা আপনার ব্যক্তিগত প্রজেকশন। কাজেই এই বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। তবে আপনি কোন সাবসেটটির কথা ভাবছেন? জানতে পারলে ভাল লাগত।

দাড়িটুপিঅলাদের দিয়ে চৌরাস্তার মোড়ে বোমা ফাটানো হবে, তারপর তাদের পাকড়াও করা হলে আঙুল তাক করা হবে "শিক্ষিত" সমাজের দিকে, যে দেখুন, এরা দাড়িটুপিবিদ্বেষী, এটা তো একটা শঠতা ছাড়া আর কিছু নয়।

আমার কথায় কোন ব্যক্তিগত আঘাত পেয়ে থাকলে সেটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এমন কোন উদ্দেশ্য ছিলনা। তবে আমার মতে পারস্পরিক এলিয়েনেশনের দায় শিক্ষিত সমাজে উপর পড়বেই। তবে আমি এখানে ইনভার্টেট কমা ব্যবহার করেছি এলিয়েনেশন ব্যপারটাকে জোর দেবার জন্যেই।

হিমু এর ছবি

বাংলাদেশে কম করে হলেও পঞ্চাশ লক্ষ লোক পাওয়া যাবে যাদেরকে আপনি "দাড়িটুপি" বলে সম্বোধন করে তর্কে আমাকে উৎসাহিত করেছেন (লজ্জার সাথে অনুভব করলাম, আমি নিজে কখনো এদেরকে "দাড়িটুপি" বলে অভিহিত করি না। আপনার সাথে তর্কে নেমে এই কাজটা কয়েকবার করেছি, যা আমার উচিত হয়নি), যাদেরকে সমাজে কোনোভাবে "এলিয়েনেটেড" বলে আমার মনে হয়নি। জঙ্গিবাদে যারা সম্পৃক্ত, তারা প্রয়োজনমত দাড়ি রাখে, প্রয়োজনমতো কামিয়ে ফেলে। টুপিও একটানেই খুলে ফেলা যায়।

আপনার এলিয়েনেশনকে আরো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করুন। আপনার প্রস্তাবনা আর প্রজেকশন অনুযায়ী, শিক্ষিত লোকজন মিডিয়ায় মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপিপরা লোকজনকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখে বিমলানন্দ লাভ করে। আপনার এলিয়েনেশনের দৌড় এখানে গিয়ে শেষ হয়ে গেছে। আপনি এবার সাইদ সাহেবের চশমাখানা উল্টিয়ে পড়ে দেখুন, একই এলিয়েনেশনের বীজ এই জঙ্গিদের মাথায় কারা বপন করছে? কারা শেখাচ্ছে, প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা বিচার ব্যবস্থা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী? এলিয়েনেশন ওদিক থেকে হচ্ছে না? কয়টা শিক্ষিত লোক বোমা নিয়ে আপনার টার্মিনোলজি মোতাবেক "দাড়িটুপি" মারতে গেছে?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

বাংলাদেশে কম করে হলেও পঞ্চাশ লক্ষ লোক পাওয়া যাবে যাদেরকে আপনি "দাড়িটুপি" বলে সম্বোধন করে তর্কে আমাকে উৎসাহিত করেছেন

আমার মন্তব্য আবার পড়ে দেখুন আমি যারা 'দাড়িটুপি' বলে কাউকে সম্বোধন করিনি। বরং এটাকে বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য হিসাবেই উল্লেখ করেছি এবং এর ভিত্তিতে যেন স্টেরিওটাইপিং যাতে না করা হয় যেটাই আকাঙ্ক্ষা করছি। দাড়ি-টুপি পড়া নিরীহ লোকেদের দেখেও অনেকে ভয় পান। সম্ভবত এর জন্য জামায়াত শিবিরের রগকাটার ট্র্যাডিশন দায়ী।

জঙ্গিবাদে যারা সম্পৃক্ত, তারা প্রয়োজনমত দাড়ি রাখে, প্রয়োজনমতো কামিয়ে ফেলে। টুপিও একটানেই খুলে ফেলা যায়।

খুবই সম্ভব।

আপনার এলিয়েনেশনকে আরো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করুন। আপনার প্রস্তাবনা আর প্রজেকশন অনুযায়ী, শিক্ষিত লোকজন মিডিয়ায় মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপিপরা লোকজনকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখে বিমলানন্দ লাভ করে। আপনার এলিয়েনেশনের দৌড় এখানে গিয়ে শেষ হয়ে গেছে।

আমার মতে ভিন্ন মতাবলম্বিদেরকে একটা স্টেরিওটাইপের ভেতর ফেলে তাদের একটা অংশের আচরনকে সেই গ্রুপের ওপর আরোপ করে সেই গ্রুপকে আলাদা করে দেয়াটাই এলিয়েনেশন। 'আমরা' এবং 'তারা' এই বাইনারি শেনীকরন যখন হয় সেটাই এলিয়েনেশন, আমি অন্তত সেভাবেই বুঝি। এখানে মূল সমস্যাটা এখানে, যে যারা ধর্মীয় মৌলবাদে (বা অন্যযেকোন ধরনের মৌলবাদ) বিশ্বাসী সেটা যদি তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে সামষ্টিক বা অন্যের জীবনের দরজায় কড়া নারে তবে সেক্ষেত্রে নর্মটা কি হবে সে ব্যপারে সবার পরিষ্কার থাকতে হবে। নর্ম ব্যপারটা একধরনের ট্যাসিট বা অনুক্ত জ্ঞানের মত। আমার পর্যবেক্ষন এই যে, প্রাচ্য সম্পর্কে পশ্চাত্যের যে স্টেরিওটাইপ (সাইদের ভাষায় যেটা প্রাচ্যবাদ) সেটা আমাদের সমাজেও নানা ভাবে আছে। আর এই ট্যাসিট জ্ঞানের বিস্তারের জন্য ইন্টারএকশনের বা মিথস্ক্রিয়ার কোন বিকল্প নেই।

হিমু এর ছবি

আমার মতে ভিন্ন মতাবলম্বিদেরকে একটা স্টেরিওটাইপের ভেতর ফেলে তাদের একটা অংশের আচরনকে সেই গ্রুপের ওপর আরোপ করে সেই গ্রুপকে আলাদা করে দেয়াটাই এলিয়েনেশন।

যেমনটা আপনি করছেন দেশের "শিক্ষিত" লোকদের নিয়ে।

'আমরা' এবং 'তারা' এই বাইনারি শেনীকরন যখন হয় সেটাই এলিয়েনেশন,

যার শতভাগ দায় চাপানো যেতে পারে নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্রদের যারা শেখায়, মোশরেকদের কতল করে দেশে ইসলাম কায়েম করতে হবে।

নর্ম ব্যপারটা একধরনের ট্যাসিট বা অনুক্ত জ্ঞানের মত। আমার পর্যবেক্ষন এই যে, প্রাচ্য সম্পর্কে পশ্চাত্যের যে স্টেরিওটাইপ (সাইদের ভাষায় যেটা প্রাচ্যবাদ) সেটা আমাদের সমাজেও নানা ভাবে আছে। আর এই ট্যাসিট জ্ঞানের বিস্তারের জন্য ইন্টারএকশনের বা মিথস্ক্রিয়ার কোন বিকল্প নেই।

দেশে এই অনুক্ত জ্ঞান কয়েক হাজার বছর ধরেই প্রচলিত যে অন্যের মাথায় লাঠির বাড়ি দিতে গেলে সেই লোক এসে থুতনি নেড়ে চুমা দিবে না। ইন্টারএকশন বা মিথষ্ক্রিয়াও ঘটে বৈকি। খবরের কাগজে এ কারণেই হাতকড়া পরিয়ে ঐ অনুক্ত-জ্ঞান বঞ্চিতদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়, সমাজের নর্ম কী।

যে বড় গ্রুপটির কথা আপনি বলছেন, আপনি কিন্তু কোনো কংক্রিট উদাহরণ দেখাচ্ছেন না তাদের এলিয়েনেশনের। আপনি উদাহরণ টানছেন দাগী অপরাধীদের। অপরাধীকে শাস্তির মুখোমুখি করাকে আপনি এলিয়েনেশন নাম দিয়ে মাকরুহ বানানোর চেষ্টায় লিপ্ত।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হিমু এর ছবি

কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে এখানে তারা নিজেদেরকে ঠিক অবস্থানে আছে বলে মনে করে। কিন্তু এলিয়েনেশন ঘটার কারনে তাদের ভুল সংশোধন হবার কোন সুযোগ তৈরি হয়নি।

মানুষের ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকে, যখন তার ভুলটা ফৌজদারি অপরাধে না গড়ায়। একদল লোক বোমা নিয়ে নিরীহ মানুষ মারতে নেমে গেছে, আর তাদেরকে গ্রেফতার করা হলে আপনি এই ঘটনার ওপর লেবেল মারছেন এলিয়েনেশনের। আজকে আপনাকে রাস্তায় পিটিয়ে ভর্তা বানালাম আমি, তারপর আমাকে অন্যরা ধরে থানায় চালান করা হলো, আমি যদি তখন নাকে কেঁদে বলি, আমাকে এলিয়েনেট করা হচ্ছে, ভুল সংশোধনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না, আপনি মানবেন?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

মানুষের ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকে, যখন তার ভুলটা ফৌজদারি অপরাধে না গড়ায়।

এই বিষয়ে সহমত।

আমি যদি তখন নাকে কেঁদে বলি, আমাকে এলিয়েনেট করা হচ্ছে, ভুল সংশোধনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না, আপনি মানবেন?

আমি মানব না; কিন্তু যদি একবারও এমনটা না ভাবি আগের দিন আপনাকে কেবল আপনার ভিন্ন জতীয়তা বোধের কারনে অবজ্ঞা করাটা ঠিক হয়নি সেটা হয়ত বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

হিমু এর ছবি

অবজ্ঞা করার কারণে যদি আমি আপনাকে পেটাই, তাহলে আমাকে, এবং আমার মতো বাকি সব কয়টাকে প্রিয়েমটিভ মেজারের আওতায় ফেলাই কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়? কারণ অবজ্ঞাও তো জানতাম সাবজেকটিভ ব্যাপার। কিছু মানুষ যদি ভাবে, তাদের হাতে ফতোয়ার আইন তুলে না দিলে তাদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে, এবং তারা লোকজন ঠ্যাঙাতে নেমে যায়, তাহলে কি চলবে? বসতে দিলে কিছু লোক শুতে চায়, শুতে না দিলে ভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছে, তারপর ক্ষেপে যায়, তারপর গলা কাটে। এদেরকে কোলে বসিয়ে দুদু তো খাওয়ানো যায় না। দুদু না খাওয়ালেই এলিয়েনেশন?

আপনি অবশেষে ধর্ম প্রসঙ্গটা থেকে সরলেন, সরে জাতীয়তায় এলেন দেখে স্মিত হাসলাম। আপনার বোধহয় তর্কে অসুবিধা হচ্ছে ঐ প্রসঙ্গে থেকে। নাকি?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনি অবশেষে ধর্ম প্রসঙ্গটা থেকে সরলেন, সরে জাতীয়তায় এলেন দেখে স্মিত হাসলাম। আপনার বোধহয় তর্কে অসুবিধা হচ্ছে ঐ প্রসঙ্গে থেকে। নাকি?

ধর্ম থেকে সরে গিয়ে আপনার অসুবিধা করে দিলাম নাকি? আসলে আমি প্রথম থেকে জাতিয়তা প্রসঙ্গেই ছিলাম। ধর্ম অংশটা আপনার হয়ত চোখে একটু বেশি লেগেছে। এখানে আপনার ক্ষেত্রে জাতীয়তার উদাহরন এজন্য যে আপনাকে যতটুকু বুঝেছি "দাড়ি-টুপি" বা এরকম অন্য কোন বৈশিষ্ট্য আপনার উপর খাটবে না। তাই সাধারন অর্থে জাতিয়তার কথা বললাম। তর্কে সুবিধা নেবার কোন উদ্দেশ্য এখানে ছিলনা। আমি কিন্তু আমার প্রথম মন্তব্যে ধর্মের উল্লেখ একটা উদাহরন হিসাবেই দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা জাতিয়তা বোধের একটা বিশেষ ক্ষেত্র হিসাবে। আপনিকি সুবিধার জন্য ধর্মকে বেছে নিয়েছিলেন নাকি?

অবজ্ঞা করার কারণে যদি আমি আপনাকে পেটাই, তাহলে আমাকে, এবং আমার মতো বাকি সব কয়টাকে প্রিয়েমটিভ মেজারের আওতায় ফেলাই কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়?

আমার ধারনা আমি কি বলতে চাচ্ছি সেটা বোঝা গেছে। এই অবজ্ঞা অংশটা ঝেড়ে ফেলাটা জরুরী। আসলে প্রতিটা মানুষের মধ্যে পাপে লিপ্ত হার অশেষ সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। কিন্তু আমি মনে করি একটা ভাল সমাজ হচ্ছে সেরকম সমাজ যেখানে সেই সম্ভাবনার চেয়ে মানুষের মধ্যে যে ভাল দিকগুলো আছে সেগুলোই জাগিয়ে তোলা হয়। আর সেজন্য আমাদের আচরনের পারস্পরিকতার মাত্রাটা অনেক যত্নের সাথে ঠিক করতে হবে। আমি আপনি একদিনে এটা হয়ত করতে পারবনা। কিন্তু যত দ্রুত হয় তত মঙ্গল। গালাগালি আর মারা মারি করে কতদিন।

বিডিয়ারের ঘটনাটাই দেখুন। হাজার হাজার লোক খুনের অপরাধী। কোন দরকার ছিল। এদের বাচ্চার কিন্তু একটু বড় হইলেই বোমা মাইরা সব ঊড়াইয়া দেবে। এই রাষ্ট্রই কিন্তু এগো অনেকের বাবাকে নির্বিচারে পিটায়ে মারতেসে। এর কি উত্তর।

হিমু এর ছবি

না, আমি জাতীয়তা প্রসঙ্গেও সমান আয়েশ অনুভব করি। তবে সেখানে আপনার সাথে মতদ্বৈততা কম হবে হয়তো।

আপনি যে ভালো সমাজের কথা বলছেন, সেই সমাজে পেট্রোডলার বা পাউন্ড স্টার্লিং আসে না জঙ্গি বানানোর জন্যে। তারপরও আপনার প্রস্তাবিত ময়না দ্বীপের ব্যাপারে আমি একমত। অবজ্ঞার পরিবর্তে যে সমীহবোধ, তা অর্জন করতে হয়। অবজ্ঞার শিকার যে জনগোষ্ঠী, তারা তা অর্জনে সচেষ্ট হলে আর অবজ্ঞার কারণ থাকবে না।

বিডিয়ারের ঘটনা নিয়ে যে বক্তব্য আপনি দিলেন, সেটা আপনার এতক্ষণ ধরে বলা কথার বিপরীতে যায়। বিডিআরে খুনের অপরাধীদের সন্তানদের আপনি এখনই বোমাবাজ ধরে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন, যার মূলে কাজ করছে অবজ্ঞা, যে এই শিশুরা স্বাভাবিকভাবে সমাজের অংশ হতে অক্ষম। এই নৈরাশ্যবাদিতার উত্তর হয় না। রাষ্ট্র তাদের পিতাদের বিচার না করে পিটিয়ে মারছে, সেটাও মনে হয় না সুস্থ লোকে সমর্থন করে। আপনার অপরিস্ফূট প্রশ্নের উত্তরও তাই অপরিস্ফূটই রইলো।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

বিডিআরে খুনের অপরাধীদের সন্তানদের আপনি এখনই বোমাবাজ ধরে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন, যার মূলে কাজ করছে অবজ্ঞা, যে এই শিশুরা স্বাভাবিকভাবে সমাজের অংশ হতে অক্ষম

আমার বোঝানর ভুল। আমার বাবাকে যদি আজকে রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা বিনা বিচারে পিটিয়ে মারে কালকে এই রাষ্ট্রের নিয়ম কানুনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা থাকবে না এমনটা হওয়া খুবই সম্ভব। তাদের সন্তানের ক্ষেত্রেও এমনটা হবে এটাই বলতে চাচ্ছি। আমি তাদেরকে অবজ্ঞা করে এই কথা বলিনি।

হিমু এর ছবি

রাষ্ট্রের নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকলেই কেউ বোমা মেরে সবকিছু উড়িয়ে দেয়, এই উপসংহারে যখন আপনি চটজলদি পৌঁছে যান, তখন বোঝা যায়, আপনার বোঝানোতে আরো কিছু ভুল, এবং বলার আরো কিছু বাকি রয়ে গেছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এই বাকি হিসাবটা পরে চুকানর চেষ্টা করব আপাতর এই পোস্টটা একবার পড়ুন এখানে আমার বক্তব্যের কিছুটা ব্যখ্যা পেলেও পেতে পারেন

হিমু এর ছবি

কিন্তু কেন জানি আমার সন্দেহ

আপনার সন্দেহ, যাদের আটকানো হচ্ছে, তাদের একমাত্র অপরাধ, তাদের থোতায় দাড়ি আর মাথায় টুপি আছে। আপনি পাশাপাশি এ সন্দেহটিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না যে তাদের থোতায় দাড়ি, মাথায় টুপির পাশাপাশি কোনো ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সম্ভাবনা বা প্রমাণাদিও পাশাপাশি আছে। আপনার এই সন্দেহকাতরতা আপনাকে স্টেরিওটাইপ করতেই সহায়তা করে।

এডওয়ার্ড সাইদের চশমা উল্টিয়ে পরে হয়তো একজন শিশুধর্ষণকারীকে "নিরীহ, কেবল পুরুষাঙ্গের মালিক" বা একজন বোমাবাজি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার জঙ্গিকে "নিরীহ, কেবল দাড়িটুপির" মালিক বলে মনে হতে পারে, কিন্তু যখন হারেরেরে করে দোষটা শিক্ষিত সমাজের ঘাড়ে চাপাতে আসেন কেউ, সরি টু সে, তাকে আরেকজন ফরহাদ মগবাজারই মনে হয়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনার সন্দেহ, যাদের আটকানো হচ্ছে, তাদের একমাত্র অপরাধ, তাদের থোতায় দাড়ি আর মাথায় টুপি আছে।

এই রকম সন্দেহ করাটা সমিচীন হবে না, কারন সাম্প্রতিক বোমাবাজির অধিকাংশই যে ধর্মীয় উগ্রবাদিদের ঘটান সে বিষয়ে নতুন করে কিছুই বলার দরকার নেই বলেই বলিনি।

সরি টু সে, তাকে আরেকজন ফরহাদ মগবাজারই মনে হয়।

যাক গালি খাইবার জন্য মাজহার সাহেবের মত বুড়া হইবার দরকার পড়ল না। ভবিষ্যত বানী সত্যি হইলে সবারই ভাল লাগে আমারও লাগল। তবে এত তাড়াতাড়ি ফলে যাবে এইটা আসলে ভাবিনাই।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনিও কি তার মতোই একজন উগ্রপন্থী-অ্যাপোলোজিস্ট?

প্রশ্নটা একটু ব্যখ্যা করেন। "উগ্রপন্থী-অ্যাপোলোজিস্ট" বলতে আসলে কি বোঝায়।

হিমু এর ছবি

উগ্রপন্থীদের পক্ষে যারা যুক্তি সাজায়, তারাই উগ্রপন্থী-অ্যাপোলজিস্ট।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এইটাও শুনতে গালির মতই লাগল।
আপনার এই প্রশ্নের উত্তরে বলব যেই সব উগ্রপন্থিরা দুর্বল তাদের পক্ষে যুক্তি সাজানর অপরাধে যদি এই গালি খাইতে হয় তাইলে আপত্তি নাই। আমি বোমা ফাটানর কাজটাকে সমর্থন করছিনা বা তাদের আদর্শিক উগ্রবাদকেও না। আমার কথা হচ্ছে তারা যেমন অন্য মতালম্বীদের সাথে থাকার সামাজিক উপায়টি রপ্ত করতে পারেনি যারা তাদেরকে এব্যপারে সাহায্য করতে পারত কিন্তু করেনি এই দোষটা তাদের ওপর গিয়ে পরে বহুলাংশে।

আরেকটা কথা মনে পড়ল। যখন সেভেন এইটে পড়ি আমার এক কাজিন খুব কড়া বিএনপির সমর্থক, আর বাবা ছিলেন কড়া আওমিলিগের সমর্থক। এদের দুজনের সামনে আমি তাদের পছন্দের দলের সমালোচনা করতাম। তাতে করে আমার বাবার ধারনা হয়েছিল আমি বিএনপি ঘেষা হয়ে যাচ্ছি আর কাজিনের ধারনা ছিল আমি আওয়ামী ঘেষা হচ্ছি। আজকাল আমি যখনই বলছি দাড়ি-টুপি বা বাহ্যিক অবয়ব দিয়ে মানুষকে বিচার কোরো না। আমাকে বলা হচ্ছে উগ্রপন্থী-অ্যাপোলজিস্ট।

হিমু এর ছবি

আজকাল আমি যখনই বলছি দাড়ি-টুপি বা বাহ্যিক অবয়ব দিয়ে মানুষকে বিচার কোরো না। আমাকে বলা হচ্ছে উগ্রপন্থী-অ্যাপোলজিস্ট।

এই কথায় তো আপনি এই প্রথম এলেন। আপনি শুরু করেছেন জঙ্গিবাদিদের কথা না শোনার অপরাধে বিদ্বৎসমাজের কাঁধে মৌলবাদের দায় চাপিয়ে। আপনাকে এই বক্তব্যে আনতে আমাকে একঘন্টা ধরে আপনাকে ঠেলতে হয়েছে। এই বক্তব্য আপনার এসকেপ রুট। আপনি কথা শুরু করেছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, তীক্ষ্ণ বক্তব্য দিয়ে, আপনাকে ঠেস দেয়া হয়েছে বলে চলে এসেছেন এই মোলায়েম ঈশপীয়, শেখ-সাদীয় বক্তব্যে।

আমার কথা হচ্ছে তারা যেমন অন্য মতালম্বীদের সাথে থাকার সামাজিক উপায়টি রপ্ত করতে পারেনি যারা তাদেরকে এব্যপারে সাহায্য করতে পারত কিন্তু করেনি এই দোষটা তাদের ওপর গিয়ে পরে বহুলাংশে।

আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আমরা একটি বিপন্ন জনগোষ্ঠীর কথা বলছি, যারা জন্মের পর থেকে অন্য মতাবলম্বীদের সাথে থাকার সব রকম সামাজিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আপনি এটা বলছেন না, এই অন্য মতাবলম্বীদের প্রতি এদের মনকে বিষিয়ে দেয়া হচ্ছে, এদের শেখানো হচ্ছে অন্য মতাবলম্বীদের মোশরেক বলে নিধন করতে। ঐ প্রশিক্ষিত, দীক্ষিত উগ্রতাকে আপনি এলিয়েনেশন বলে মানতে নারাজ, (কে জানে এইবার কোন দার্শনিকের চশমা হাওলাত করবেন), দোষটি এই ভিন্নমতাবলম্বীদের-প্রতি-বিদ্বেষ যারা ছড়ায় তাদের নয়, বরং ভিকটিমদের। এই তো আপনার বক্তব্য? আপনি বলছেন, এদের পয়সার জোর নেই, কিন্তু চুপ করে আছেন জঙ্গিবাদীদের প্রশিক্ষণ, উপকরণের ব্যাপারে (ওগুলি জিবরাইল বয়ে আনে না, পয়সা দিয়ে কেনা হয়), আপনি বলছেন "দাড়িটুপি"দের হাতে হাতকড়া দেখে শিক্ষিত লোকজন আনন্দে উলু দিয়ে ওঠে, কিন্তু বলছেন না কোন অপরাধে তাদের হাতে হাতকড়া পড়েছে।

আমার এই কথাগুলিও আপনার কাছে গালির মতোই মনে হবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এই কথায় তো আপনি এই প্রথম এলেন।

আপনি বোধহয় আমার আগের মন্তব্যগুলোকে আপনার মত করে পড়েছেন। আমি প্রথম থেকে একই কথা বলে আসছি। যদি অস্পষ্টতা থাকে সেটা আমার অক্ষমতা। বারবার বলার দরুন সেটা স্পষ্ট তর হচ্ছে আর সাথে সাথে আপনি হয়ত আপনার মনের প্রাক্কলিত অর্থের সাথে মিল পাচ্ছেন না। তবে আমি আমার প্রথম মন্তব্যে এখনও disown করার মত কিছু পাচ্ছিনা। বরং পরবর্তিতে যেই মন্তব্যগুলো এসেছে সেগুলো আগের মন্তব্যের ব্যখ্যাই বলা যায়, যা আপনার প্রজেকশনের সাথে মেলেনি।

আর যেগুলো বলছিনা বললেন, সেগুলো বলার দরকার আছে বলে মনে করিনি কারন এগুলো সবাই জানে এবং সেগুলো নিয়ে আসলে তর্কের কোন অবকাশ নেই। সবাই যেটা বলছে সেটা আমাকে কেন বলতে হবে? যা বলিনি তার মূল্যায়ন না করে যা বলছি তার মূল্যায়নই করুন না হয়।

আপনাকে ঠেস দেয়া হয়েছে বলে চলে এসেছেন এই মোলায়েম ঈশপীয়, শেখ-সাদীয় বক্তব্যে।

একটু আস্তে ঠেস দিয়েন নাইলে পরে দেখা যাইব আমার গলা দিয়া আর আওয়াজ বারৈতাসেনা। হেইডা কিন্তু ফৌজদারি মামলা হইব। সচলেরা তখন আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতারে।

হিমু এর ছবি

আপনি যা বলেছেন, সেগুলি কেউ জানে না, আর যা বলেননি, সেগুলি সবাই জানে? আর আপনি যা বলেছেন, তার মূল্যায়নই তো করেছি।

আপনি প্রথম থেকে এই কথা মোটেও বলে আসেননি। মন দিয়ে নিজের কথা আবার পড়ুন, দেখুন আপনি সরতে সরতে কীভাবে বক্তব্যের গলি-উপগলি-তস্যগলি পাল্টে এই বক্তব্যের চত্বরে এসে হাজির হয়েছেন। তর্কের প্যাঁচে পড়লে শেষমেশ সেই পুরনো বুলিই শুনতে হয়, "হা হা হা ... আপনি আমার কথা ভালোমতো পড়েননি, আবার পড়ে দেখুন!"

হাসি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

সেগুলি কেউ জানে না, আর যা বলেননি, সেগুলি সবাই জানে?

জানেনা বলব না বরং জেনেও না জানার ভান করে। অথবা বলা দরকার ছিল কিন্তু গালাগালি আর খিস্তি এড়ানর জন্য অন্য কেউ বলবে সেটা ভেবে ফেলে রাখে এমন বলা যেতে পারে।

নিজের কথা আবার পড়ুন, দেখুন আপনি সরতে সরতে কীভাবে বক্তব্যের গলি-উপগলি-তস্যগলি পাল্টে এই বক্তব্যের চত্বরে এসে হাজির হয়েছেন।

আমি জানি আমি কি বলছি কেন বলছি। আপনার প্রজেকশনের সাথে না মিললে সেটা আমার অনিচ্ছাকৃত। আপনি কোন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পেলে দেখাতে পারেন।

তর্কের প্যাঁচে পড়লে শেষমেশ সেই পুরনো বুলিই শুনতে হয়

প্রথম থেকেই লক্ষ্য করছি আপনি বিষয়টাকে একটা তর্কের প্রতিযোগীতা হিসাবে দেখছেন। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে "কলার চেপে ধরলাম (ঠেস দেয়া?) তাই ডরে অন্য দিকে সটকে গেলি (এসকেপ রুট?)" এরকম একটা ব্যপার। এখন মনে হচ্ছে আসলে আমার নিরুত্তর থাকাটাই দরকার ছিল হয়ত।

আমার কাছে ব্যপারটা এমন যে আমার কাছে আমার বক্তব্যের ব্যখ্যা চাওয়া হল তাই দিলাম। তর্ক আর প্যাচের ব্যপার থাকলে আমাকে এর মধ্যে না টানাই ভাল। ধরুন আপনিই জিতেছেন।

হিমু এর ছবি

আপনার বক্তব্যের ব্যাখ্যার ভারে তো বক্তব্যই পাল্টে গেছে। ওপরে আমার কিছু কথার উত্তর আপনি দেননি, অবসর পেলে দিতে পারেন।

আপনার কলার চেপে ধরবার দুরভিসন্ধি আমার নেই, কিন্তু ধোঁয়াটে কথাবার্তার ধোঁয়া সরানোর জন্য একটু চাপ দিলাম। মনে কিছু করবেন না। ধোঁয়া সরার পর যা দেখলাম, তা মন্দ নয়। পরবর্তীতে আবার ধোঁয়া পেলে, আবার আলাপ হবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রিয়াজ ভাই,
আমি একটু নাক গলাই। দাড়িটুপি পড়ে যারা সন্ত্রাস করছে (অভিযোগ, প্রমাণ সবই আছে) তাদের নিয়ে এতটা মানবিকতা কি দেখানোর দরকার আছে? এদের ছেড়ে দিলে বা বেনিফিট অব ডাউট দেয়ার আমি অন্তত কোন কারণ খুঁজে পাইনা।

তাদের সন্ত্রাসের কারণে আপামর দাড়িটুপিওয়ালারা একসময় হয়তো সন্ত্রস্ত অনুভব করতো। সেই সময়টা ছিল নব্বই দশকের শুরুর দিকে। যখন পোষা কিছু বুদ্ধিজীবি এই কর্মটি বেশ সফল ভাবেই করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি সেই আগের মতো আছে বলে মনে হয়না। এখন মানুষের চোখকান সবই খোলা, ইন্টারনেট আছে, মানুষ এখন ১০টা পত্রিকা পড়তে পারে, দেশি-বিদেশী সব।

হিমুর মন্তব্যটা এখানে কোট করি:

বাংলাদেশে কম করে হলেও পঞ্চাশ লক্ষ লোক পাওয়া যাবে যাদেরকে ...... .. সমাজে কোনোভাবে "এলিয়েনেটেড" বলে আমার মনে হয়নি। জঙ্গিবাদে যারা সম্পৃক্ত, তারা প্রয়োজনমত দাড়ি রাখে, প্রয়োজনমতো কামিয়ে ফেলে। টুপিও একটানেই খুলে ফেলা যায়।
আমার ধারণা বর্তমান পরিস্থিতি এমনটাই, আর সাধারণ পাবলিকও এমনটাই ভাবছে।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

দাড়িটুপি পড়ে যারা সন্ত্রাস করছে (অভিযোগ, প্রমাণ সবই আছে) তাদের নিয়ে এতটা মানবিকতা কি দেখানোর দরকার আছে? এদের ছেড়ে দিলে বা বেনিফিট অব ডাউট দেয়ার আমি অন্তত কোন কারণ খুঁজে পাইনা।

প্রকৃতি ভাই আমি আসলে তাদের বেনিফিট অব ডাউট দিতে চাচ্ছি না। কিন্তু পুলিশ ভাইরা আসলেই সঠিক জঙ্গীদেরকে ধরছেন কিনা সেই বিষয়ে সন্দেহ করছি। হয়ত আমার বাংলার দুর্বলতার কারনেই হয়ে থাকবে।

আমি একটা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। দেখি আরেকটু পরিষ্কার করা যায় কিনা। ধরা যাক পুলিশ ভাই জংগী খুঁজতে বাইর হইলেন। না পাইয়া ভাবলেন একটা নিরীহ পোলারে ধইরা দেই ঢুকাইয়া। এই রকম যত ছবি পত্রিকার পাতায় আসব তত সাধারন মানুষের মনে হইব দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা হইতেসে। এই ফাকিবাজি দিয়ে অন্য আসল জঙ্গীরা যেমন পার পেয়ে যাচ্ছে তেমন সন্ত্রাসীদেরকে না আটকেও সরকার সবাই কে কেবল কিছু দাড়িটুপি পড়া লোক কে পত্রিকার পাতায় তুলে দিয়ে সন্তোষ অর্জন করছেন। আমার ধারনা আমুলক হতে পারে কিন্তু হলে খুশিই হতাম। ফোকাসটা জঙ্গী নির্মূলের পাশাপাশি জংগীবাদ নির্মূলের দিকেও যদি দেয়া হত ভাল হত।

-------------
আরো স্পেসিফিক ভাবে বলা যায় জঙ্গীবাদের সমাজ-মনস্তাত্বিক উৎস্য সম্পর্কে সচেতনতার দরকার আছে।

হিমু এর ছবি

আপনি তো সন্দেহের বাইরে কিছুই বলছেন না। কনস্পিরেসি থিওরির মতো শোনাচ্ছে না ব্যাপারটা?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনার এই হাইপোথিসিস এর ভিত্তি কি? কোন নির্দিষ্ট ঘটনা কিংবা অন্য কোন কারনে এরকম মনে হয়েছে আপনার যে যাদের জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা আসলে জঙ্গী না ও হতে পারে?

ক্রসফায়ারের যে হত্যাগুলো হয় সেগুলোকে অবিশ্বাস করার পক্ষে যথেষ্ট প্রমান নাগরিকদের আছে। নিরপরাধীদের ক্রসফায়ারের হত্যা করা হয়েছে এরকম অনেক ঘটনার কথা শুনেছি।
কিন্তু জঙ্গী নন এরকম কাউকে জঙ্গী সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে- এ রকম আশংকার কারন কি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ক্রসফায়ারের যে হত্যাগুলো হয় সেগুলোকে অবিশ্বাস করার পক্ষে যথেষ্ট প্রমান নাগরিকদের আছে।

এটাকেই একটা উৎস্য মনে করতে পারেন। ক্রসফায়ার, পিলখানার ঘটনা, বিডিয়ারের সহস্রাধিক ব্যক্তির খুনি দৈত্যে পরিনত হওয়া এগুলো সবই আমাদের রাষ্ট্রের "পুলিশ-রাজনীতি" মিথষ্ক্রিয়ার ব্যপারে সন্দেহের সূত্রপাত করে। এখানে আমার প্রজেকশনটা এতদিনকার পর্যবেক্ষন থেকে তৈরি। এর দু'টি দিক।

একটা হচ্ছে পুলিশের বা সামগ্রিক প্রশাসন ব্যবস্থার জবাবদিহিতার অভাব। আরেকটা হচ্ছে ধর্মভিত্তিক জাতিয়তার দরুন সামাজিক রাজনৈতিক ভাবে এলিয়েনেটেড জনগোষ্ঠী যাদেরকে বাহ্যিক অবয়ব দ্বারা আলাদা করা যায়। সমস্যা হচ্ছে এখানে যে জংগিবাদ আর এই বাহ্যিক অবয়বকে এক সমীকরনের ফেলা হচ্ছে হরহামেশা। উপরে হিমুর সাথে কথোপকথনেও ব্যপারটা ঘটেছে। একটা অনাকাংখিত মেরুকরন এবং ক্রমপঞ্জিভুত দুরত্ব এবং সন্দেহ বোধ এই মেরুকরনকে বাড়িয়ে দেবে/দিচ্ছে। এগুলো প্রমান করা আমার পক্ষে কঠিন। সচেতনভাবে খেয়াল করলে এই প্যাটার্নটা লক্ষ্য করা কঠিন হবে না বলেই মনে করি।

ধর্ম ছাড়া অন্যকোন রকমের মৌলবাদ সম্ভব এরকম একটা সম্ভাবনার কথাও অনেকে বুঝলেও বলতে পারবেন না। কারন 'তাদের' সম্পর্কে কোন রকম উদারতা দেখান চলিবে না। প্রশ্ন হল এই 'তারা' কারা আর 'আমরা' কারা এই লাইনটা কবে কি ভাবে তৈরি হল? সেইদিন বেশি দূরে নয় অথবা হয়ত চলেই এসেছে যে, রাস্তার একই পাশে একজন দাড়ি-টুপি-আলখাল্লা পরা কাউকে দেখলে অন্যপাশ দিয়ে হাটতে হবে। সেটা আমেরিকায় আফ্রিকান আমেরিকানদের সহ্য করতে হচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নানা রকম চেষ্টার পরও এই দুরত্ব এতটুকু কমেনি। সমস্যা এখানেই আমরাও আমাদের সমাজে এমন একটা জনগোষ্ঠী তৈরি করতে চলেছি। আমার ধারনা এই শ্রেণীবোধটা হয়ত এখন থেকে ২০ বছর আগেও এতটা প্রকট ছিল না। কিন্তু সময়ের সাথে এটা প্রকটতর হচ্ছে। আর রাজনৈতিক ভাবে দলগত আর আদর্শগত পার্থক্যের ক্ষেত্রে এলিয়েনেশন আমাদের স্বভাবজাত হয়ে দাড়াচ্ছে।

এখানে যে সন্দেহ সম্পর্কে আপনি প্রশ্ন রাখলেন সেটা অসত্য হতে পারে কিন্তু অমুলক নয়। সমস্যাটা এখানেই। এটা কয়েকজন নিরপরাধি দাড়ি-টুপি বা আলখাল্লা পরা লোক পুলিশের হাতে আটক হওয়ার চেয়েও গভীর এবং ব্যপকতর একটা সমস্যা।

হিমু এর ছবি

অর্থাৎ পুলিশকে এলিয়েনেট করা চলিবে, কিন্তু আসামীকে নয়। নাকি?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এলিয়েনেট করার অভ্যাসটাকে এলিয়েনেট করতে পারলেই সবচেয়ে ভাল হয়। কি বলেন?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এলিয়েনেশান ব্যাপারটা ঠ্যাকাবার উপায় কী?



অজ্ঞাতবাস

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

কঠিন প্রশ্ন করলেন; তবে এটা বলতে পারি এর প্রথম ধাপ হচ্ছে এলিয়েনেশন ব্যপারটার অস্তিত্ব সম্পর্কে সজাগ হওয়া।

হিমু এর ছবি
নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হিমু ভাই,

ঐ ভদ্রলোকের (ক্রিমিনাল বলা যথার্থ তবে, এদেশে বর্তমানে ভদ্রলোক আর ক্রিমিনালের ভেদ নেই বললেই চলে ) নাম আমি জানতাম বরবাদ মগবাজার । আমার জানা ঠিক আছে ?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

স্নিগ্ধা এর ছবি

যেহেতু 'চলবে' তাই এখনি মন্তব্য করছি না। পরের পর্বে হয়তো লেখকের অবস্থানটা আরেকটু পরিষ্কার হবে, সেই অপেক্ষায় থাকলাম ......

মামুন হক এর ছবি

আমি শুনেছি ইউরোপ-আমেরিকায় অনেকে নাকি এখনো বাংলাদেশ-কে পাকিস্তানের অংশ মনে করেন, কেউ কেউ ভারতের একটা প্রদেশ-ও ভাবেন। বাংলাদেশের মানুষকে অবলীলায় ইন্ডিয়ান বা অন্য কোনো জাতীয় হিসেবে চালিয়ে দেন। কিংবা অনেক বাংলাদেশিও নিজেকে বাংলাদেশি না বলে প্রথম পরিচয়টা ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু বলেন।

---শোনা কথায় কান দিয়েন না ভাইজান। এগুলা বড়োই আজগুবি কথা। দুই চার জন রামগরু সব দেশেই থাকে যারা পৃথিবীর ভূগোল বা ইতিহাস সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখেনা, কিন্তু তাদের দিয়ে অধিকাংশকে বিচার করা ঠিক হবেনা। এই জাতীয় মুর্খতার সাথে বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করা বা না জানার কোন সম্পর্ক নাই, এগুলা নিতান্তই গোমুখ্যু যারা মধ্যপ্রাচ্য কি ইওরোপে না এশিয়ায় তাও জানেনা।

আর আমার দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবনে একজন বাংলাদেশীকেও পাইনি যে নিজেকে ইন্ডিয়ান বলে পরিচয় দিয়ে থাকে। আমি যদ্দুর জানি আমাদের জাতিয়তাবোধ খুব টনটনে। আমি বরং অন্য জাতির মধ্যে প্রচুর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস দেখেছি, যারা বাস্তবিক অর্থেই আত্ম-পরিচয় নিয়ে শরমিন্দা থাকে। তাইওয়ান একটা ধনী এবং সুখী দেশ হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই নিজেদের জাতিয়তা নিয়ে মারাত্মক মাত্রার সংকোচে ভোগে। এরা সুযোগ পেলেই অন্যদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে, এবং একেবারে ঠেকে না গেলে নিজেদের পূর্বপুরুষের পরিচয় তুলে ধরেনা, নিজের ভাষা ভালোভাবে না জানাটা এখানে গর্বের বিষয়। এমনও দেখেছি যে কারও দাদা বা পরদাদা বৈবাহিক সূত্রে অন্য কোন দেশের সাথে সম্পর্কিত হলে সে নিঃসংকোচে নিজেকে ঐ দেশের লোক হিসেবে দাবী করে। আরও অনেক লজ্জাকর উদাহরণ আছে। সেই দিক দিয়ে আমরা বাংলাদেশীরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে অনেক বেশি সোচ্চার।

আপনার লেখার বাকি অংশ আমার কাছে পরিস্কার হলোনা। পুরোটা শেষ করেন, বুঝে নিয়ে মতামত জানাবো।

যূথচারী এর ছবি

আর বইলেন না, টিভিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এইসব বলছে। কি দিয়ে শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম, এইসব শোনা কথা দিয়ে সূচনা টানলাম, তার মধ্যে আবার কাগজে পড়লাম হাসিনা এবং তার সহকর্মীরা ৭২-এই সকল সমস্যার সমাধান নিহিত ধরনের কথা বলা শুরু করছেন।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সুরঞ্জনা [অতিথি] এর ছবি

যূথচারী ভাই,

আমার এই সব বিষয়ে জ্ঞান খুব সিমীত। আপনার লেখা পড়ে মনে হল আপনি বোঝাতে চাইলেন যে '৭২ এর সংবিধান এ যে সেক্যুলার নীতি নেয়ার কথা বলা হয়েছে , সেটার প্রয়োগ আপনার কাছে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে।

আপনি কি ভেবে বিরক্ত তা জানি না। কিন্তু যখন কোন সময়ে কিছু নীতিমালা তৈরি হয়, তা সাধারণত ওই সময়কার সামাজিক পরিস্থিতিটা কোনো না কোনো ভাবে প্রতিফলিত করে।

'৭২ এর আগে, আমাদের দেশে ইসলাম নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান বাড়াবাড়ি টা করেছিল অনেক অনেক বেশি মাত্রায়। লেবু বেশি চিপলে যেমন তিতা হয়, তখন কার গণ মানুষের মনে ইসলাম ও অনেক টা একই প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হয়েছে আমার, অন্তত সেই সময়কার বইপত্র পড়ে তেমনি মনে হয় ( 'বাঙালি রা তো সব হিন্দু, ওরা আবার মুসলমান নাকি, দেখনা, ওদের মেয়েরা ওই বজ্জাত ইন্ডিয়ান গুলোর মত শাড়ি পড়ে? আমরা ওদের দেশে যাচ্ছি ওদের মুসল্মান বানাতে।' এই বক্তব্য ছিল দুই পশ্চিম পাকিস্তানির, '৭১ সালে। এয়ারপোর্টে এদের কথোপকথন শুনতে পাচ্ছিলেন আমার এক আত্মীয়।) এমন কথার নজীর অনেক পাবেন।

তাই ভাই, সময় ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করবেন না আপনার আলোচনায়, আশা রাখি।
বাকিটাও লিখুন, আপনার কেন কি মনে হয়েছে সেটা জানতে পারলে ভাল লাগবে।

যূথচারী এর ছবি

৭২-এর সংবিধানের হাজারো অসঙ্গতি আছে, আর যা-ও কিছু ভাল দিক আছে, তা-ও অপপ্রয়োগে বিনষ্ট হয়েছে। সেই আদর্শের উত্তরাধিকার আওয়ামী সরকার-ই তো আবার ক্ষমতায়, দেখবেন ওই একই অপপ্রয়োগ-ই ঘটতে থাকবে। ঘটছে ইতোমধ্যে, তখন এটা একটা সাংবিধানিক ক্ষমতায় ঘটবে। অন্যসব জাতের মানুষকেও বলা হবে, তোমরা সব বাঙালি হয়ে যাও, ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যাও ইত্যাদি। এই পোস্টেও একজন (অরু) এই ধরনের কথা-ই বলেছেন।

২. এটা দাবিটা আমি জোর দিয়ে করছি না, তবে মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তীকালের বেশকিছু বইপত্র পড়েছি, মনে হয়নি যে, ইসলাম নিয়ে সেখানে বাড়াবাড়ি ধরনের তেমন বিশেষ কিছু হয়েছে। স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে নির্মিত বাংলা সিনেমাগুলোকে বরং রঙবিহীন হলেও আমার কাছে অনেক বেশি আবেদনময় মনে হয়, ইসলামী হেজাবের প্রকাশ সেখানে তেমন একটা চোখে পড়েনি। সরকারের ভাব ছিল মুসলিম মুসলিম, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ দুই দেশেই জনগণ চলেছে ইসলামের অনেক বাইরে দিয়ে। তর্ক বা জোর দাবি করছি না, এই বিষয়ে আরো কাজ ও তথ্য নেয়া দরকার।

৩. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও তার পূর্বাপর বিষয়গুলো নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের বিকল্প আর কোনো সমাধান আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। বস্তুগত নিদর্শনের ভিত্তিতে এই ইতিহাসটি রচনাই সবচেয়ে জরুরি বলে মনে হয়। প্রতিটি ইতিহাস বইয়েই রচয়িতা নিজে এখন যেখানে সুবিধা পাচ্ছেন, সেভাবে ইতিহাস লিখেছেন; এমনকি নিজের পূর্ব-ইতিহাস-ও বদলে দিচ্ছেন, জাতির ইতিহাস তো কোন্ ছাড়।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সাফি এর ছবি

মামুন ভাই,
একটু দ্বিমত প্রকাশ করি। ইউরোপ আমেরিকার অনেক মানুষেরই বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণার ঘাটতি আছে। আমেরিকা আর নরওয়েতে আমি প্রচুর মানুষ পে্য়েছি যারা তেমন একটা জানেইনা বাংলাদেশ জিনিসটা কি বা জায়গাটা আসলে কোথায়। এক্ষেত্রে তারা যেটা করে থাকে আমার চেহারার উপর ভিত্তি করে একটা ধারণা করে নেয়, যার ফলে বাংলাদেশী আমাকে নরও্য়েতে ভাবে পাকিস্তানি (কারণ তাদের জনসংখ্যার ১০% পাকিস্তানি) আর আমেরিকায় ভাবে ভারতী্য় (এখানে তাদের সংখ্যাধিক্য নিশ্চয়ই জানা আছে)। অনেকটা যেমন আমি চাংকুর চেহারার কাউকে দেখলেই ধরে নেই সে চাইনিজ, অথচ সে কোরিয়ান, জাপানিজ এমনকি ভিয়েতনামিজ ও হতে পারে

আর বাংলাদেশিদের আমি এখনও দেখিনি নিজেকে ভারতীয় বলে পরিচয় দিতে, রেস্টুরেনট ব্যবসা্য়ীরা ছাড়া। আমেরিকায় যেহেতু প্রচুর ভারতীয়, এখানকার বাংলা খাবারের দোকান ও নিজের পরিচয় দেয় ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট হিসেবে (ব্রিটেন বা অস্ট্রেলিয়াতেও তাই)

নজমুল আলবাব এর ছবি

কয়েকটা বাক্য মনে হয় ঠিকাছে। আর পরক্ষনেই কিছু কিছু শব্দ, বাক্য দেখে চুড়ান্ত বিশ্রি লাগলো। লেখার এই ঘোরপ্যাচ, বক্তব্যের মারপ্যাচ থেকে কি বক্তব্য বের হয়? হালকার উপর ঝাপসা কিছু? নাকি কথার মারপ্যাচে ফ্যালে পাঠককে থমকে দেয়া?

শেষ কথা হলো এই লেখার টোনটা ঠিক পছন্দ হলো না। চলবে যখন বলছেন তখন পরের পর্বে কি বলেন সেটা দেখা হয়তো উচিত। কিন্তু সন্দেহ হয়ে গেলে আমি আবার বিষয় এড়িয়ে চলি, এইটা আমার একটা সমস্যা। আপনার এই লেখাটায় সন্দেহ ঢুকে গেছে।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

যূথচারী এর ছবি

বাদ দেন। পুরা ফালতু টপিক। জাতপাত নিয়া এতো আলোচনা করে কি হবে? কাজের ব্যাপারে আমরা এতো উৎসাহী না, যতো উৎসাহী বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশি বিতর্কে।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার ব্যাক্তিগত মতামত হল-
'বাংগালি' বললে এখানে কলকাতা সহ ভারতের আর কিছু রাজ্যকে 'জাতীয়' বলে ধরে নিতে হয়।
সে ক্ষেত্রে 'বাংলাদেশী' জাতীয়তাবাদ ই পারফেক্ট।

স্পার্টাকাস

যূথচারী এর ছবি

হা হা হা। একদম না।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

নৈষাদ এর ছবি

পড়লাম। এই মুহূর্তে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলাম। অপেক্ষা করছি পরবর্তী পর্ব (বা পর্ব গুলোর জন্য)…।

নাম দিয়া কাম কী? এর ছবি

এইটা নিয়া বিতর্কের কী আছে বুঝলাম না। "বাঙালি" হইল জাতিসত্তাগত (ethnic) পরিচয়, আর "বাংলাদেশী" হইল রাজনৈতিক (political) পরিচয়। এই সূত্র অনুযায়ী, আমি হইলাম বাংলাদেশী বাঙালি, মূলত পাঠক হইলেন গিয়া ভারতীয় বাঙালি, লালুপ্রসাদ যাদব হইলেন ভারতীয় বিহারী, আমাগো চেরোকীর নাপিত হায়দার হইল বাংলাদেশী বিহারী, ইলিরা দেওয়ান বাংলাদেশী চাকমা।

এইভাবে বিভক্ত করতে চাইলে তো ট্যাগিং-এর অভাব নাই... এমবিএ ক্লাব, অমুক অ্যাসোসিয়েশন, তমুক সংঘ, ইত্যাদি। পেশাজীবী, এলাকাবাসী, ধর্মীয়... কত সংগঠন চারপাশে গিজগিজ করতেছে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের নামে। এগুলি আসলে ঐক্যের চেয়ে বিভেদই বাড়ায়।

কাজেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ আর বাঙালি জাতীয়তাবাদ রাজনৈতিক বিতর্কের বেড়াজালে মানুষদেরকে বিভক্ত করার উদ্যোগ ছাড়া আর কিছুই না। প্রকৃত পক্ষে, দুইটাই একদেশদর্শী তত্ত্ব। কাজেই, ভাইসব, এইটাতে ভুইলেন না আর বেহুদা তর্ক কইরেন না। তর্ক করার বহুত বিষয় আছে। চোখ-কান খোলা রাইখেন। সাধু সাবধান।

যূথচারী এর ছবি

মন্তব্যটি যদিও অসংলগ্ন তবে আপনার কথার মূলসুরের সাথে আমি একমত। প্রথমত, বেহুদা তর্ক কইরেন না, আপনার এই কথাটি খুব ভালো লেগেছে। বোঝা যাচ্ছে আপনি কথার চেয়ে কাজে বেশি বিশ্বাসী, সেটি আমি খুব পছন্দ করি। দ্বিতীয়ত, আপনার মূল লক্ষ্য ঐক্য, এটিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমর্থন করার মতোই একটি ব্যাপার। জাতীয়তা আসলে বিভাজন সৃজনেরই একটি বিষয়, প্রথমেই সে যা করে তা হলো, অন্য সকল জাতি থেকে নিজেকে আলাদা করে। এই বিভাজনকে স্বাতন্ত্র্য, বৈশিষ্ট্য বিভিন্নভাবে দেখতে পারেন।

একটি প্রশ্ন, বাঙালি জাতিসত্তাগত পরিচয় কিভাবে বলছেন? জাতিসত্তার ভিত্তিটা কি? মানে বঙ্গভূমি না বঙ্গভাষা না বঙ্গের ইতিহাস-সংস্কৃতি নাকি অন্য কিছু? শুধুই জানতে চাইছি, ব্যাখ্যাও চাইছি না।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সবুজ বাঘ এর ছবি

গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাছি।

× মুষ্ঠির চাইল ভিক্ষা আর কুরবানির গরুর চামড়া বেচা পয়সায় যারা বাঁইচা থাকার চেষ্টা করে তাগোরে আমার মানুষই মনে হয় না। এই হালারা যহন নিজেগো মতো সমাজ বদলাইবার নিগা মান্ধাতা আমলের ইসলাম (যেহেতু তাগোরে আমরা ইসলাম ছাড়া আর কিছুই শিকপার দেই নাই, যেমুন আমি ইংরাজি মিডিয়াম। এত বয়স হইয়া গেল এহনো ইংরিজিতে টকিং শিক্যা হইল না আমার!) আর অস্ত্র হাতে তুইলা নেয়, তহন গুস্বায় প্যাট ফুইলা উঠাই স্বাভাবিক। কারণ আমি তো রেসিং কার চুদি, বিজ্ঞান চুদি, ঘুষ দুর্নীতি চুদি। সবচেয়ে বড় কথা আমি তো রবিন্দ্রনাথ চুদি রে ভাই, ওরা অস্ত্র হাতে নিলে আমার তো গুয়ামারা সারা!

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আর এই ভিক্ষার চাইল আর চামড়া বেচার পয়সায় যাঁরা পড়ে, তাঁদের অন্য সবার সমান মানের শিক্ষা দেয়ার জন্য যে শিক্ষানীতি হয় তার বিরুদ্ধে পুরানা সিস্টেমের যারা সুবিধাভোগী তারা গবেষণা কইরা, বই লেইখ্যা সব দূতাবাসে দূতাবাসে পাঠায়া দিতে পারে- কিন্তু আমরা(আমিসমেত)সচলায়তনে দুনিয়ার তাবত্ বিষয় নিয়া কথা বললেও ওই শিক্ষানীতিটা কেমন হইল এইটা নিয়া দুইটা কথা কইতে পারি না। যেমন আমাদের প্রাত:স্মরণীয় আইনজীবীরা পারেন না যুদ্ধাপরাধবিষয়ক আইনের ফাঁক-ফোকরগুলো সারাতে সামান্য পরামর্শ দেয়ার সময় বা্ইর করতে!!

রাজিব মোস্তাফিজ

সবুজ বাঘ এর ছবি

শুধু তাই না, খানকির পুলারা আম-জাম সব একনগে করছে, খালি নিজেগো পুলাহানগো নিগ্যা ইমরিজি মিডিয়ামরে আলেদা রাকছে! খানকির পুলারা......শিক্কানীতি চুদায়

লাল-মডু এর ছবি

মন্তব্যে অশালীন শব্দ প্রয়োগ না করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।

বল্গার এর ছবি

ইংরেজী মাধ্যমরে গনতান্ত্রিক দেশে আটকাইবেন কেন? আনুষ্ঠানিক/উপ-আনুষ্ঠানিক/ হোম স্কুলিং করে যে কোন দেশের যে কোন যায়গা থেকে আমি সর্টিফিকেট নিতে পারি। আপনি আমাকে বাঁধা দিবেন কেন? যার ইচ্ছা পড়বে, ব্রিটিশ কাউন্সিলে গিয়ে গাঁটের পয়সা খরচ করে পরীক্ষা দিবে। সরকার কাছ থেকে তো ওরা সাবসিডি দিয়া বই/ নাস্তার টাকা নেয়না। সরকারী চাকরীতেও ঢুকাবার চায় না।বোমাও ফাটায় না। সমস্যা আপনার কোথায় বুঝায় দেন।

ও হা ইংরেজী মাধ্যম ২ ধরনের আছে। এস এস সি/ এইচ এস সি ও ইংরেজীতে দেয়া যায়। আপনার সমস্যা ও/এ লেভেলদের নিয়া না ওদের নিয়া?

সবুজ বাঘ এর ছবি

আমার সমস্যা তর গাইটে ট্যাকা গেল ক্যাম্নে, আমার গাইটে আইল না ক্যা?

হিমু এর ছবি

জঙ্গিদের গরীব সাজাইয়া সহানুভূতি ঐদিকে নেয়ার ফরহাদ মগবাজারীয় কথাবার্তায় কইষ্যা মাইনাস। কারণ সমাজ পরিবর্তন হইলেও গরীব জঙ্গি মুষ্ঠির চাইল ভিক্ষা আর কুরবানির গরুর চামড়া বেচা পয়সায় বাঁচতেই বাধ্য থাকবে। কারণ গরীবের পেটে পাড়া দিয়া ক্ষমতায় যাবে মওদুদী চুদানো কিছু লোক। যারা সবকিছুতেই গরীবের ভূত দেখে, গুয়ামারা তাদেরও খাদ্য হবে। দৈনিকই।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সবুজ বাঘ এর ছবি

খুব সঠিক কয়েছিস। গরীবের প্যাটে পাড়া দিয়া খালি মওদুদী ক্যা, পিথিবির সকল চোদনাই ক্ষমতায় যায় এবং নামে। গরিব গরিবই থাকে। তারা দ্বারে দ্বারে মুষ্ঠির চাইল টুকায় আর খালি কুরবানির চামড়া চায়। কেউ দেয় এবং বেশির ভাগই না দিয়া নদীর বোতল কিনে, নাইলে বউরে শাড়ি দেয়, ম্যায়ারে কামিজ বানিয়া দেয় নাইলে পরস্ত্রীরে পারফুম উফহার দেয়। ঝামেলা হইল ওর মতো আমারো এইসব করতে ইচ্ছা করে। কারণ আমি তো মানুষই ছিলাম নাকি?

পুনশ্চ: গুয়ামৃত খাইতে খাইতে এতই অভ্যস্ত হইয়া পড়ছি যে, আমায় আর গুয়ামৃত খাওয়ার ভয় দেখিয়ে কুনো লভ্যাংশ নেই.......

সুমন চৌধুরী এর ছবি

খালি ইংলিশ ম্যডামের কতা কউ ক্যা? বাংলা ইশকুলে পাঠশালায় কি বড়ুনুকে পড়ে? আর মাদ্রাসায় খালি গরীব নুকে পড়ে? আর গরীব নুকেরে মাদ্রাসায় ঠেললো ক্যারা? ফুটানির বোম দিলো ক্যারা? আগো মাতায় বোম ফুটানির আইডিয়াটা দিলো ক্যারা? ক্যা দিলো? এগিনি কবা না?



অজ্ঞাতবাস

সবুজ বাঘ এর ছবি

এইন্যাই তো কবার চাইতাছি..কিন্তু পারতাছি কই? তুমি দেহ যে কয়ডিরে ঘ্যাটাঘ্যাট ফাঁসি দিয়া ঘটনা ধামাচাপা দিয়া হালাইল, সবটি গরিব গুর্বো লুক। একটাউ বড়নুক নাই। অথচ সূতা কিন্তু বড়নুকের হাতেই ধরা। তাগো ধরার মুরাদ নাই কেরো। আফসুস এইযে যারা জঙ্গিবাদ, সর্বহারা নিয়া বড় বড় কতা কয়, তাগো কিন্তু একফুটা ইচ্ছা নাই, সুমাজটারে সুমান কইরা এইগলার মূলোৎপাটন করার। খালি নানান আমলক্কীয় প্রগতিশীলতার ফক্কিকার।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

হেইডাই। তয় আর কিছু হোক আর না হোক-- আমি কিন্তু আপনার ভক্ত হয়্যা যাইতাছিগা সবুজ বাঘ-- লাল-মডুর চোখ-রাঙানি সত্ত্বেও।

রাজিব মোস্তাফিজ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ধরেন আমি 'দুইপাতা ইংরেজিপড়া' মুসলমান এখন আমাকে কি কি ইসলামী রীতি মনে রাখতে হবে? বাংলায় 'মুসলিম' শাসনের ৭০০ বছরের ইতিহাস কি আমাকে গৌরব না লজ্জার সাথে মনে রাখতে হবে?
'মুসলিম' শাসনটা কি জিনিস? তুরস্ক, মধ্য এশিয়া, আরব থেকে আসা দখলদাররা ধর্মে মুসলমান ছিলো বলে ঐ ৭০০ বছর 'মুসলিম' শাসন? তাহলে ২০০ বছরের ইংরেজ শাসনকে ' খ্রীষ্টান' শাসন বলবেন? স্বাধীন বাংলাদেশে মুজিব থেকে শুরু করে হাসিনা পর্যন্ত সব শাসকরা এখন পর্যন্ত ধর্মে মুসলমান তো এটা ও 'মুসলিম' শাসন?

২০০ বছরের ইংরেজ শাসন যদি এই জনপদের মানুষের কাছে গৌরবের কিছু না হয় ৭০০ বছরের তুরস্ক,মধ্য এশিয়া, আরবদের শাসন কেনো আমাকে গৌরবের সাথে মনে রাখতে হবে?

'৭২ এর সংবিধান নিয়ে আপনার আপত্তি আছে। থাকতেই পারে। সমস্যা হলো-পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির আন্দোলন ছিলো বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ বনাম ভাষা ও সংস্কৃতি ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের লড়াই। আপনার আমার যে কারো ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা নাপছন্দ হতেই পারে তাতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম ইতিহাস বদলে যাবেনা। আজকে যদি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন ধর্মীয় জাতীয়তাবাদে স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চান তাও যেতে পারেন কিন্তু ইতিহাসের ঐ অংশ মুছে যাবেনা। '৫২ থেকে ৭০ পর্যন্ত- রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে '৭০ এর নির্বাচন এই সময়ে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ হয়ে উঠেছে প্রধান পরিচয়। ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের কথা স্পষ্ট বলেছে। জনগনের ম্যান্ডেটে পেয়েছে- প্রবাসী সরকার গঠিত হয়েছে এই ম্যান্ডেটের ভিত্তিতেই-মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য যা অপরিহার্য ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের পর পর ঐ সরকার যখন সংবিধান রচনা করেছে সেই সংবিধান বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে থাকবে এতে আশ্চর্য্য হবার কি আছে?
সাংসদ হিসেবে এম এন লারমা ঐ সংবিধানে স্বাক্ষর করেছিলেন কিনা সেই তথ্যটা দিতে পারবেন?
ক্ষুদ্র জাতিস্বত্বার সাংবিধানিক স্বীকৃতি অবশ্যই দিতে হবে কিন্তু সেটা সংখ্যাগরিষ্ঠের জাতি পরিচয় অস্বীকার করে নয়।

বাঙ্গালী জাতিস্বত্বার পরিচয় মুছে দেয়ার জন্য জেনারেল জিয়া যে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জন্ম দিয়েছিলেন এতে তো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লাভ হওয়ার কথা ছিল। হয়েছিলো? '৭২ এর সংবিধানের যুগে, 'তোমার ও বাঙ্গালী হয়া যাও' এর সময়ে পাহাড় থেকে আদিবাসীরা উচ্ছেদ হয়নি- উচ্ছেদ হয়েছে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ বিহীন সময়েই।

জাতিপরিচয় আর নাগরিক পরিচয় যে আলাদা দুটো বিষয় সেটা না বুঝার মতো বুদ্ধিবৃত্তিক কিংবা একাডেমিক জ্ঞান আপনার নেই তাতো না। বাংলাদেশ রাষ্ট্র যেদিন হয়নি সেদিন এই অঞ্চলের বাংলাভাষী মানুষের জাতি পরিচয় কি ছিলো? রাষ্ট্র পাকিস্তান ছিলো বলে কি আমরা পাকিস্তানী হয়ে গিয়েছিলাম? আজকে যদি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাম বদলে অন্য কিছু হয় তাতে কি আমার নাগরিকত্ব বদলাবে নাকি আমার জাতি পরিচয় বদলে যাবে?

আপনার এবং আরো দু একজনের মন্তব্যে মনে হলো বাষ্টার্ড জিন্নাহর মতো আপনারা ও ধর্মকে জাতীয়তার একটা এলিমেন্ট বলে মনে করেন। কোন যুক্তিতে ধর্মের মতো একটা পরিবর্তনশীল উপাদান পরিচয় হয়ে উঠতে পারে। আজকে আমি মুসলমান চাইলে কালকেই খ্রিষ্টান হয়ে যেরতে পারি- আজকে আমি বাংলাদেশের নাগরিক, নাগরিকত্ব বদলে বৃটিশ হয়ে যেতে পারি- কিন্তু ধর্মে খ্রীষ্টান, নাগরিকত্বে বৃটিশ হয়ে গেলে ও যা বদলাবেনা তা হলো আমার মাতৃভাষা ও পরম্পরার সংস্কৃতি। ঐটাই কি আমার জাতীয়তা নয়?

এখানে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ইসলামিয়া কলেজের নাম বদলে হবে নজরুল কলেজ কিন্তু নটরডেম, হলিক্রস, রামকৃষ্ণ কলেজের নাম থাকবে যেমনছিলতেমন।

আপনার এই খেদ বড় বিশ্রী রকম সাম্প্রদায়িক ঠেকলো। সাঈদীর ওয়াজে এওসব কথাবার্তা শুনা যেতো অহরহ, ইদানিং আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষদের লেখায়।

কিংবা অনেক বাংলাদেশিও নিজেকে বাংলাদেশি না বলে প্রথম পরিচয়টা ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু বলেন।

কোন নিজস্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই কথা বলেছেন? আপনি নিজে কোনদিন দেশের বাইরে এসে দেখেছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী প্রথম পরিচয়টা ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু বলেন? আবারো দুঃখিত যুথচারী- স্রেফ শুনে শুনে এরকম বাজে কথা প্রচার করা খুবই অশ্লীল।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

৩রা নভেম্বরের দৈনিক সমকালে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ তাঁর মত করে ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ আসলে পাকিস্তানি আদর্শের বাংলাদেশী রেপ্লিকা---
http://www.orangebdgroup.com/samakal/details.php?news=26906&action=rpt&option=single&menu_type=&news_id=26906&pub_no=149&type=

রাজিব মোস্তাফিজ

অচেনা [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ। এই মন্তব্যের দরকার ছিলো।দুর্ভাগ্য আমাদের, মধ্যপন্থী দলটির সমালোচনা করতে গিয়ে যখন বাম আর ডানের কথা এক হয়ে যায়।
যুথচারী সাহেব এদেশের মানুষকে ইসলামী রীতি, ৭০০ বছরের ইসলামী শাসন এসব মনে রাখতে উপদেশ দিলেন। তাহলে ভাইয়া পাকিস্তান ভেঙ্গে আলাদা দেশের দরকার কি ছিলো?
আপনারা বামপন্থী মুসলমানরা(ছফা সাহেব সহ) এদেশকে গরীব মুসলমানের দেশ বলে পরিচয় করান। দেশের সংস্কৃতিকে মুসলমানের সংস্কৃতি বলে প্রমান করতে চান। গরীব হিন্দু,গরীব খ্রীষ্টান, গরীব বৌদ্ধ কি উড়ে এসেছে?
এখন আবার মাদ্রাসাওয়ালাদের সহমর্মী হয়েছেন আপনারা।তাদের সন্ত্রাস বোমাবাজির পক্ষে কি যুক্তি আছে আপনাদের কাছে? মানুষ খুন করে তারা কি কায়েম করতে চায়? যা কায়েম করতে চায় তা আপনাদের বামপন্থার জন্য কতোটুকু নিরাপদ?
আফসোস এদেশের বামপন্থীরা সবযুগেই এরকম আদেখলামি করে গেলেন আর শেষে আম ছালা দুইই হারালেন।

যূথচারী এর ছবি

@ অচেনা,
কিছুই বুঝলাম না। কাকে কি বললেন? প্রথমত, আমার বক্তব্য বিকৃত করে যে আলোচনা করেছেন হাসান মোরশেদ তাকে আপনি সমর্থন দিয়েছেন। কথা বিকৃত করে আলোচনা করলে, সেই আলোচনার কোনো অর্থ নেই। দ্বিতীয়ত, আমি নিজে বামপন্থার ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাস করি না, তবে আওয়ামী ধর্মনিরপেক্ষতা বললে আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কতোগুলো চিত্র, দুয়েকটা আগেই বলেছি, দুয়েকটা যুক্ত করি, যেমন- আওয়ামী ওলামা লীগ, শেখ হাসিনার কালো হেজাব, মাদ্রাসাশিক্ষায় ৭২-৭৫, ৯৬-০১ এবং এখনো আওয়ামী লীগের গভীর আস্থা ও ব্যয় ইত্যাদি। তৃতীয়ত, বিএনপি বা অন্যসব ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদী দলগুলোকে আলোচনায় বেশি টানছিনা, কারণ এরা অনেক আগেই বাদ পড়ে যায় তাদের পশ্চাৎপদ রাজনীতির কারণেই, আদর্শ তো নেইই। আওয়ামী লীগ বা বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের বেশি আক্রমণের শিকার মনে হচ্ছে, কারণ আওয়ামী লীগের "শিনাজুরি" বুদ্ধিজীবীরা "চুরি"-টাকে হালাল করে দিচ্ছেন গোয়েবলসের মতো করে। চতুর্থত, ৭০০ বছরের ইতিহাস মনে রাখার উপদেশ আমি দেইনি, বলেছি, মুছে দিতে চায় কেউ কেউ, এবং জাতিত্ব আলোচনায় তারা খুব-ই প্রাসঙ্গিক।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

যূথচারী এর ছবি

১. মাফ করবেন, দুইপাতা ইংরেজিপড়া শব্দগুলো কোটেশনের মধ্যে রাখা হয়েছে, শব্দবন্ধটিকে আমি সমর্থন করি না বলেই। ইংরেজিপড়া এবং মুসলিমশাসন শব্দদুটিই ইতিহাসের ছাত্রদের খুবই সুস্বাদু দুটি আলোচনার বিষয়। আপনি সেটা খানিকটা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা হলো- বাংলার ইতিহাসের কেবল ওই পর্বটিকেই ধর্মভিত্তিক মুসলিম শাসন বলে অভিহিত করা হয়। অনেক পরে, বাংলার ইতিহাসে বৌদ্ধ ও হিন্দু শাসন বলে দুটি আলাদা অধ্যায়-ও যুক্ত হয়েছে, তবে মুসলিম শাসনের আগের ইতিহাসটিকে বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন ইত্যাদি বলে পরিচিত করেছেন। এবং আপনি যেমন বললেন, ইংরেজ শাসনের দুশো বছরকেও কিন্তু খ্রীস্টান যুগ বলে অভিহিত করা হয় না। ইতিহাসের সাম্প্রদায়িকতা এখানেই মুসলিম ভিন্ন সকলেই ধর্ম-নিরপেক্ষ; কেবল মুসলিমরা মুসলিম। মুসলিমদের এভাবে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে পৃথকীকরণের কাজটি যদিও ইংরেজদের ডিভাইড এন্ড রুল নীতির অংশ হিসেবে তখনই শুরু হয়েছে, তবে তা চলছে এখন অবধি। আপনার দখলদার শব্দটিতে নোট আছে, তা হলো- বাংলার শাসকদের অধিকাংশই ছিলো দখলদার, এই দেশের মানুষ এই দেশ শাসন করেছে খুব কম সময়েই। তবে ইতিহাসের মজাটা হলো, এইদেশে তারা থেকে গেছে বা থেকে যেতে চেয়েছ। এমনকি মুসলিম আমলেও। রাজা গণেশের ছেলে যদু (জালালুদ্দীন হোসেন শাহ)-র হাত ধরে তো পুরো সুলতানী আমল-ই বিস্তৃত। সুতরাং বাংলার ৭০০ বছরের মুসলিম শাসনের ইতিহাস কিভাবে মনে রাখবেন সেটি ভিন্ন ব্যাপার, তবে জাতীয়তা আলোচনায় সেটি খুবই প্রাসঙ্গিক, কারণ... (নিচে দেখুন)

২. "গৌরবের সাথে" শব্দগুলো বানিয়ে আলোচনাকে ম্যানিপুলেটেড করেছেন, এটা কুরুচিকর চর্চা।

৩. পাকিস্তান ভাঙ্গা বা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করিনি, তবে ভাষা বা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ আমি সমর্থন করি না। সমাজবিজ্ঞানে জাতীয়তাবাদের ধারণা অনেক এগিয়ে গেছে, এইগুলো আমার কাছে পশ্চাৎপদ মনে হয়। তবে ঐতিহাসিক বাস্তবতা হিসেবে, এইগুলোকে অস্বীকার করার-ও কোনো মানে হয় না, করছিও না। আলোচনার পরবর্তী অংশেই তা খোলাসা করা হয়েছে, খেয়াল করেছেন হয়তো।

৪. বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ যদিও সামরিকশাসক জিয়ার হাতেই বিকশিত হয়েছিল, তবে এর জন্ম আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের মস্তিষ্ক থেকেই, ১৯৭২ বা ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় পরিচয় কি হবে এই নিয়ে সংবাদপত্র ও সাপ্তাহিকসমূহে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরাই প্রথম বাংলাদেশী জাতয়তাবাদের ধারণাসমূহ উত্থাপন করেন। বলা বাহুল্য, তা হালে পানি পায়নি।

৫. এটা খুবই দুঃখজনক, আপনি একজন সক্রিয় ব্লগার হয়েও এম এন লারমা-র কর্মকাণ্ড নিয়ে হাস্যকর ধরনের প্রশ্ন করেছেন। বিভিন্ন ব্লগ ও সামাজিক ফোরামে আদিবাসী মানুষদের লেখা "৭২-এর ভুলের পুনরাবৃত্তি চাই না" ধরনের লেখাগুলোও কি আপনার চোখে পড়েনি? এম এন লারমা সংবিধানের জাতীয়তা ও জাতীয় পরিচিতির এই বিষয়গুলো ওইভাবে গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করেন, তার প্রস্তাব উপেক্ষিত হলে সংসদ বর্জন করেন এবং আওয়ামী শাসনামলেই সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন।

৬. আপনার আলোচনা থেকে একটা বিষয় বুঝতে পারলাম, আপনি "মাতৃভাষা ও পরম্পরার সংস্কৃতি"-কে জাতীয়তার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এই আলোচনার সূচনা-ই তো এখান থেকে, আগের আলোচনাটি দেখেছেন হয়তো, ওখানে এই বিষয়ে আমি কিছু কমেন্ট দেওয়ার পর আমকে একটি পূর্ণাঙ্গ লেখা দেয়ার অনুরোধ করা হয়, সেটিই দিচ্ছি। আলোচনাটি শেষ হয়নি, আপনার মতো আমরা সবাই যদি এই বিষয়ে একমত হতাম, ভাষা-ই জাতীয়তার মূলভিত্তি তবে কোনো সমস্যা থাকতো না, কিন্তু সবাই একমত নয়, তাই এতো জটিলতা। আপনার দ্বিতীয় নিয়ামক, পরম্পরা বিষয়ে এই আলোচনার পরবর্তী পর্বগুলোতে লিখবো, আমার মনে হয়, পরম্পরাটি আসলে ঐক্যের পথ দেখায় না। আপনি যেমনভাবে (গৌরবের সাথে) মুসলিম শাসনামল বা ইংরেজ শাসনামলটিকে গ্রহণ করতে চান না, অনেকেই আবার অন্য অনেক কিছু বাদ দিতে চায়, এ নিয়ে পরে বিস্তারিত বলবো। ভালো কথা, ভাষা বা ধর্ম এর কোনোটাকেই আমি জাতীয়তার একমাত্র উপাদান বলে মনে করি না। অথবা কোথাও কোনোদিন-ও বলিনি, ধর্মের ভিত্তিতে জাতীয়তা হতে পারে।

৭. শেষের যে মন্তব্য করেছেন, তার জবাব দিয়েছি এনকেদুর মন্তব্যের নিচে। প্রবাস-ফেরৎ বাঙ্গালি অথবা বাংলাদেশি ভাইবোনেরা টেলিভিশনে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এইগুলো বলেছেন। শোনা কথা, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, ওটা তো প্রথম শব্দদুটিতেই বলে দিয়েছি, "আমি শুনেছি"। আর ব্যাপারটা প্রচার-ও করছি না, স্রেফ আলোচনার সূত্রপাতের জন্য বললাম, আপনি এবং ব্লগের কেউ হয়তো করেন না, কিন্তু অনেক বাঙালি/বাংলাদেশিই নিজেদের ইন্ডিয়ান বলে পরিচিত করেন প্রথমে, অন্তত অনেক বাঙালি/বাংলাদেশি টিভিতে সেরকমই বলেছেন। আপনাদের উভয়ের কথাই সম্ভবত সত্যি। এবং জাতিত্ব আলোচনায় খুবই প্রাসঙ্গিক।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

যূথচারী এর ছবি

মাঝখানে অনেকগুলো কমেন্ট এসেছে দেখছি, ওপরের জবাবটি হাসান মোরশেদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

একুশ তাপাদার [অতিথি] এর ছবি

যা বলার সব হাসান ভাই বলে দিয়েছেন । আমার আর নতুন করে কিছু বলার নেই।

চরম সাম্প্রদায়িক মনভাবাপন্ন একটা লেখা । মানুষকে বিভ্রান্ত করা থেকে বিরত থাকলে ভালো হয়

যূথচারী এর ছবি

তার মানে আপনিও মন্তব্য বিকৃতির পক্ষে? LOL

সাম্প্রদায়িক মনে হচ্ছে? জাতিত্ব বিষয়টিই বিটকেলে ভাই। জাতিত্বের কাজ-ই সম্প্রদায় বানানো, মানে পৃথক করা। আগে একবার বলেছি, আবার বলি, জাতীয়তার প্রথম কাজ-ই হলো, অন্য জাতি থেকে নিজেকে আলাদা (স্বতন্ত্র) করা। আর তাই, এই আলোচনায় কখনো আমাকে মুসলিম সাম্প্রদায়িক কখনো হিন্দু সাম্প্রদায়িক কখনো বাঙালি সাম্প্রদায়িক কখনো অন্য কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক ইত্যাদি মনে হবে, আমি জানি। ব্যক্তিগতভাবে আমি এর কোনোটাই সমর্থন করি না। এবং আওয়ামী লীগের মতো করে বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকেও মানতে পারি না, আপনি যতই বিভ্রান্ত হোন না কেন!


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জাতীয়তা বিষয়টা আসলে রাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত। রাষ্ট্র গঠণে বা বিস্তারে প্রকৃতির তেমন কোন ভূমিকা নেই। পুরোটাই প্রফিট মেকানিজমের ব্যাপার। এথনিসিটি অর্থে জাতিত্বের ধারণাটিও ধোঁয়াটে। তবু সেখানে প্রকৃতির কিছু ভূমিকা থাকে বা থাকতে পারে। এথনিসিটি অর্থে জাতিত্ব ব্যাপারটা একসাথে কয়েকটা রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে থাকতে পারে, যদি ভাষাকে এথনিসিটির সূচক বলে ধরে নেওয়া হয়। সংস্কৃতি ব্যাপারটা সম্ভবত সমাজবিজ্ঞানে ভ্যাজালের। সেই ভ্যাজালের দিকে না গিয়ে ভাষা আর ভূগোলকেই জাতিত্বের সূচক বলে ধরি।

জাতীয়তাবাদ জিনিসটা জাতিত্ব থেকে আলাদা। শাস্ত্রীয়ভাবে এটা অনেকটাই সাম্প্রদায়িকতার কাছাকাছি। কিংবা অনেকে যেমন বলেন সাম্প্রদায়িকতা আসলে একধরণের জাতীয়তাবাদ। দুটোই ক্ষমতার রাজনীতি বা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কাঠামোর সাথে জড়িত। এই পথ ধরেই উপনিবেশবিরোধী সংগ্রামে জাতীয়তাবাদের ব্যবহার সেইসব উপনিবেশগুলিতে উপনিবেশ স্থাপনকারীদের জাতীয়তাবাদের থেকে নিজের চরিত্র কিছুটা আলাদা করে কিছুটা ভিন্ন রাজনৈতিক চেতনার জন্ম দিয়েছে। সেই চেতনাকে অস্বীকার না করেও জাতীয়তাবাদের স্বরূপ মনে না রাখার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না।

১৯৭২ এর সংবিধানের সাথে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জড়িত। ৪ মূলনীতির কথা বারে বারে উঠে আসে, যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা আর সমাজতন্ত্রের পাশে জাতীয়তাবাদের সহাবস্থান আমার কাছে হাস্যকর বলেই মনে হয়। তবুও মুক্তিযুদ্ধের খাতিরে সেখানে রাশ টানি। সামরিক সরকারের হাতে মূলনীতিগুলো কাটা যাওয়ায় সেদিক থেকে ১৯৭২ সালের সংবিধানের প্রতি একরকম ঐতিহাসিক পক্ষপাতও সেখান থেকে আসে। সেই সংবিধানে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছিল। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। আর সেটা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রভাবে। পরবর্তী সামরিক সরকারগুলো তাতে কাটাছেঁড়া বেশী করেছে। যদিও কাটাছেঁড়ার শুরু আওয়ামী লীগের হাতে।

বর্তমান সরকার ১৯৭২ এর সংবিধানে ফেরত যাবেন এমন কোন কথা স্পষ্ট করে বলছেন না। প্রধাণমন্ত্রী পরশুদিন যা বললেন তার অর্থ আমার বোধগম্য নয়। তিনি গণভোটে যাবেন না সংসদে বিল পাশ করবেন এই জায়গাটা অস্পষ্ট রেখে দিয়েছেন। গণভোটে গেলে বেইজ্জত হবার সমূহ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ গত ৩৮ বছরের রাজনীতি। সংসদে বিল পাশ করতে পারেন। কিন্তু তাতে যে কারণে গণভোটে বেইজ্জত হবার সম্ভাবনা সেই একই কারণে সরকার চাপের মুখে পড়তে পারেন। সেই চাপ হজম করার শক্তি সরকারের আছে কী না জানিনা। থাকলে ভালো। অন্তত সংবিধানের পাতায় কিছু ভালো ভালো কথা দেখতে পাওয়া যাবে। ১৯৭২ এর সংবিধানে ফেরত যাওয়া নিয়ে আমার তেমন কোন ফ্যান্টাসী নেই। আমি জিনিসটা রাজনৈতিক ইতিহাসে বেঁধে ফেলেছি।



অজ্ঞাতবাস

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

বদ্দার মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

চাবার্ক এর ছবি

যুথচারী ভাই, বর্তমান সংবিধান নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? ৭২ নিয়ে না হয় পরে ভাবা যাবে। সংবিধান বলছে "আল্লার উপর আস্থার কথা"।ভালো যার বিশ্বাস আছে রাখুন।আমি নাস্তিক বা সংখালঘু।আমি কি তাহোলে সংবিধান বিরোধী? এখনকার টা নিয়ে কী কিছু ভেবেছেন?

মজনুভাই [অতিথি] এর ছবি

এই পেঁসটা যদি সচলায়তনেই খুলতো-ভাল্লাগতো।
আজকের মতো সুমন চৌধুরী'র কথা স্বরণে নিলাম।

যুথচারী ভাই, এই সব লেখায় একটু পেস লাগে।
ভেজাল এরাইয়া শান্তিপূর্ণ বাহাসের জন্য আরেকটু মধু দিয়া আর আরেকটু খুলাসা কইরা লেখেন।

রানা মেহের এর ছবি

যুথচারী
লেখা খুব বিসদৃশ লাগলো। আপনি নিজেও কনফিউজড হয়ে আছেন।
অন্যকেও কনফিউজড করছেন।
পরের পর্বে একটু বিস্তারিত লিখুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

যূথচারী এর ছবি

আমি নিজে কনফিউজড হয়ে নেই, অন্য কাউকেও কনফিউজড করছি না। জাতিত্ব/জাতীয়তা বিষয়ে আমার ধারণা খুবই স্পষ্ট; অন্য কেউ তার সাথে একমত হোক কিংবা না হোক। বহু বছর ধরেই আমি ভাষা, ধর্ম ইত্যাদিভিত্তিক যন্ত্রবাদী জাতীয়তাবাদ/জাতিত্বের বিরোধী। সমস্যা হলো, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত একটি দেশের জাতীয় পরিচয় কি হবে, সেই প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধের মাহাত্ম্যের অজুহাতে অনেকেই ভাষা প্রশ্নে নষ্টালজিক (বা পক্ষপাতীপূর্ণ) হয়ে যান। সুচৌ যেমন বললেন, ৭২-এর সংবিধানের অসঙ্গতি আছে সত্যি, কিন্তু তুলনামূলক বিচারে তার প্রতি পক্ষপাত এসেই যায়। খোলা আলোচনায় সেই ধরনের পক্ষপাত আসতেই পারে, কিন্তু তা-ই বলে অসঙ্গতিগুলো সঙ্গতি হয়ে যায় না। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ তুলনামূলক বিচারে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার চেয়ে ভালো হতে পারে, কিন্তু তাকে চূড়ান্ত হিসেবে স্বীকার করা যায় না।
পরে বিস্তারিত লিখবো আশা করছি।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

আলমগীর এর ছবি

এ ধরণের আলোচনা শুরুর আগে,
জঙ্গীবাদ, জঙ্গী, সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী, মৌলবাদ- এ কয়টা শব্দ আগে সংজ্ঞা দিয়ে নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
তা না করলে যা হয়:
১. রিয়াজের মন্তব্যে ফরহাদ মজহারের সুর পাওয়া যায়, যা কিনা আবার অপ্রিয় কারো প্রতি সহানুভুতির উদ্রেক করে।
২. হিমুর মন্তব্যে জঙ্গীবাদের প্রতি তীব্র বিরোধ দেখা যায়। কিন্তু কোথা থেকে কবে কীভাবে তার উৎপত্তি পাল্টাপাল্টি বহু মন্তব্যর পরও জানা যায় না।

এবং শেষমেষ সব কিছুই অস্পষ্ট থেকে যায়।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

রিয়াজের মন্তব্যে ফরহাদ মজহারের সুর পাওয়া যায়, যা কিনা আবার অপ্রিয় কারো প্রতি সহানুভুতির উদ্রেক করে

মনে হচ্ছে মজহার সাহেব সাংঘাতিক অপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। তার সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব সীমিত। অন্তর্জাল ঘেটে কিছু গালিগালাজ পেলাম। কিন্তু সত্যিকারের যুক্তিপূর্ণ সমালোচনা পেলাম না। কেউ কি কোন রেফারেন্স দিয়ে সাহায্য করতে পারেন? আমার মনে হচ্ছে তিনি পোস্ট কলনিয়াল ফিলসফির একজন ধারক। বিশেষ করে গায়ত্রী স্পিভাকের বইতে তার রেফারেন্স দেখলাম। বইটার জন্য লাইব্রেরীতে অনুরোধ জানিয়েছি। ৪-৫ দিন লাগবে হাতে আসতে। তার দুর্নাম কি তার দর্শনের জন্য? তার কোন বৈশিষ্ট্যপূর্ন লেখার লিঙ্ক দিলেও হয়ত কাজে আসতে পারে। আমার কথার সাথে তার কথার মিল দেখেছেন আপনি আর হিমু, সেজন্যেই এই কৌতুহল। প্রাথমিক ভাবে আমি এডোয়ার্ড সাইদকে সন্দেহ করছি এই মিলের জন্য। কিন্তু আসল ব্যপারটা কোথায় সেটা বুঝতে চাচ্ছি।
ধন্যবাদ আলমগীর ভাই।

আলমগীর এর ছবি

মজহার সাহেব সাংঘাতিক অপ্রিয় মানুষ নন। তিনি একসময় বহু মানুষের প্রিয় ছিলেন। এই প্রিয় টানে ভাটা পড়েছে গত কয়েক বছরে। বুশের যুদ্ধের বিরোধিতা, সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা, এবং আরো যত কিছু আছে, সবকিছুর বিরোধিতা করতে গিয়া তিনি একজন মোটামুটি শফিক রেহমান হয়ে গেছেন। সমকালে উনার দুএকটা কলাম পড়েছি বলে মনে পড়ে। (কিন্তু ইউনিকোড না হওয়ায় সার্চ করে কিছু পাব না)। এগুলোর লিংক বের করা দূরুহ কাজ হবে। সারমর্ম যা হলো, জঙ্গীবাদ বলে কিছু নাই, সব মিডিয়ার সৃষ্টি।

এই হলো সংক্ষেপে ঘটনা। কিছুদিন আগে লুঙ্গি পরে ঢাকা ক্লাবে ঢুকতে না পেরে হাউকাউ করছেন।

হাসিব এর ছবি

উনার মগবাজার কানেকশন বাদ পড়ছে আলমগীর ভাই ।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

কবি ফরহাদ মজহারের কিছু কবিতা আমার প্রিয় । তার কিছু কবিতা হুমায়ুন আজাদ স্যার তাঁর আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলনে রেখেছেন (আলী আহসান, আল মাহমুদ, আবু জাফর ওবায়দু্ল্লাকে রাখেননি ) । লালনের গান নিয়ে তার গবেষণা 'সাইজির দৈণ্যগান ' ভাল কাজ ।

এখানে কবি ফরহাদ নিয়ে কারো আপত্তি নেই মনে হয় (কবি হিসেবে আল মাহমুদকেও আমরা অস্বীকার করিনা ) ।

আপত্তি রাজনীতির ফরহাদ যিনি বরবাদ মগবাজার হিসেবে ব্লগাস্ফিয়ারে পরিচিত , যিনি লাদেনকে শ্রেনিসংগ্রামী মনে করেন , বাংলা ভাই-শায়খ রহমান তথা জঙ্গিদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনা করে বলেন "এদের সন্ত্রাসী ক্রিমিনাল বললে আমরা যারা অস্ত্রহাতে যুদ্ধ(!) করেছি তারাও সন্ত্রাসী ছিলাম ' (আমাদের সময় ) ।

অভি ভাই একবার ভোরের কাগজে লিখেছিলেন , ফরহাদ মজহার দার্শনিক বিভ্রান্তির চূরান্ত সীমায় পৌছে গেছেন যা থেকে তার উদ্ধার পাবার আর কোনো উপায় নেই ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

সিদ্ধান্তে পৌছাতে না পারলেও বোধহয় কিছুটা বুঝতে পারলাম মূল ঘাপলাটা কোথা থেকে শুরু। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ফরহাদ মজহার দার্শনিক বিভ্রান্তির চূরান্ত সীমায় পৌছে গেছেন যা থেকে তার উদ্ধার পাবার আর কোনো উপায় নেই

আমার কাছে এটা এখনও যাচাই সাপেক্ষ। এধরনের বক্তব্য হচ্ছে অনেকটা ধর্মীয় মৌলবাদিদের অমুক কাফের, তমুক মুরতাদ এই ধরনের বক্তব্যের সমতুল্য। সাধারনত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যখন কেউ আশা করে অন্যেরা একজনের আর্গুমেন্ট না শূনে তাদের দর্শন গড়ে তুলুক তখনই এধরনের বক্তব্য আসে। এটাও একধরনের মৌলবাদ। অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট ধরনের আর্গুমেন্টকে আলোচনার টেবিলের বাইরে রাখার উদ্দেশ্যেই এমনটা করা হয়। তার সাথে যোগ হয় গালিগালাজ, নামের অপভ্রংশ তৈরি ইত্যাদি। তবে আপনি ভোরের কাগজের যেই অর্টিকেলের কথা বলেছেন সেটি পুরোটা না পরে কেবল আপনার উদ্ধৃতি সম্পর্কেই আমার এই বক্তব্য। আউট অব কনটেক্সট হতে পারে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

রিয়াজ, আমি আপনার যুক্তির সাথে অনেকক্ষণ পর্যন্তই অনেকাংশে একমত হচ্ছিলাম, কিন্তু এখন কেমন যেন একটু টটোলজিক্যাল শোনাচ্ছে হাসি

ফরহাদ মাজহারই হোক আর জঙ্গীই হোক, মৌলবাদ বা মেইনস্ট্রিম স্টেরিওটাইপিং কে কনসেপচ্যুয়ালি চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে কি আপনি ব্যাপারগুলো একটু বেশি তাত্ত্বিক ভাবে দেখে ফেলছেন না?

'আদারিং' এর প্রক্রিয়া কি আমাদের দেশের জঙ্গীবাদের ক্ষেত্রে একটুও খাটে? যদি না এখন শ্রেণী বৈষম্য/দারিদ্র্য আর আদারিং কে এক করে দেখা হয়। বাংলাদেশের ইসলামাইজেশন কে আমি কোন সোশ্যাল মুভমেন্ট মনে করি না, এটা পুরোটাই রাজনৈতিক। এবং রাজনীতি = টাকা+ক্ষমতা। তাহলে সমাজের মূলস্রোতের বাইরের হলেও, যে অংশ ঐ 'বাদ' সমর্থন করছে, তাদের কী করে 'এলিয়েনেটেড' বলি?

সময়াভাব আছে বুঝতে পারছি, তারপরও পোস্টটা দিতে পারলে ভালো হতো খুব!

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ব্যাপারগুলো একটু বেশি তাত্ত্বিক ভাবে দেখে ফেলছেন না?

এখানে তাত্ত্বিক দিকটায় আগ্রহের উদ্দেশ্য হচ্ছে আসলে একটা থেমে বুঝে দেখার চেষ্টা। আর কিছুই নয়। কারন দুঃখের সাথে লক্ষ্য করলাম এই বিষয়ে নিয়ে বেশ কিছু প্রেজুডিস আছে। সেগুলোর অস্তিত্ব মাথায় রেখে যখন বলছি তখন অনেকটা সময় আর যত্ন নিতে হবে। একটা টেসিট ধারনাকে শব্দ দিয়ে সাজান অনেক সময় বেশ কঠিন আর সময় সাপেক্ষ কাজ হয়ে দাঁড়ায়। কারো চেহারাকে কি ভাবে বর্ণনা করলে তা পুরোপুরি রেপ্লিকেট করা সম্ভব? খুবই দুরুহ কাজ এটা। এজায়গায় পৌছে আমি আমার লেখার অক্ষমতার জন্য আফসোস করছি। আর সময়াভাব তার চেয়েও প্রকট এখন। কিভাবে এত মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছি সেটাই বুঝতে পারছিনা। অনুরোধ সত্ত্বেও আলাদা পোস্ট দিতে পারছিনা সে জন্য নিজেকে অপরাধি বলে মনে হচ্ছে।

'আদারিং' এর প্রক্রিয়া কি আমাদের দেশের জঙ্গীবাদের ক্ষেত্রে একটুও খাটে?

একটা শ্রেণীকরনটা এমন হচ্ছে যাতে করে ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তাবোধ লালন করা ব্যক্তিদের মনে একটা ভিতি কাজ করছে যে একটা গোষ্ঠী ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়। যাদেরকে ইসলামের শত্রু মনে করা হচ্ছে তাদের মধ্যেও রকম ফের আছে। তাদের উদ্দেশ্য যাই হোক সেটা সম্পর্কে যারা ভাবছেন ইসলামকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা অংশত একটা অসহায়ত্বের বোধ থেকে তৈরি। এর যে রেসপন্সটা আসছে (অবশ্যই রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা নিয়েই) সেটা একজন নিরীহ ধর্মবিশ্বাসিকে জঙ্গিতে পরিনত করছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একটা আদর্শিক বিবর তৈরি হচ্ছে যেখানে অনেক 'মানুষ' ঝাপিয়ে পড়ছেন। এক পর্যায়ে এটা কেবল ধর্ম রক্ষার লড়াই থাকছে না। এটা পরিনত হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতায় হতাশ জনগোষ্ঠীর জন্য একটা অপশন। এজন্য বিডিয়ারের ঘটনাতে যারা দুর্বল সেই বিডিয়ার জোয়ানদের সন্তানদের একটা অংশের ভবিষ্যত আস্তাকুরও সেখানে হবে। অথবা ক্রসফায়ার। এর সুবিধাভোগী কারা হবে? মুষ্টিমেয় কিছু ধর্মীয় নামধারি নেতা।

হাজারে হাজারে মানুষ যখন একটা র‌্যডিকাল রাস্তায় চলে এবং এই রেডিকাল রেস্পন্সের দরুন আরো বিস্তর দুরত্বের ফাকে পড়ে যায় (ধাপে ধাপে ধাপে.............), ঘৃনার শিকার হয় সেটাকে রিভার্স করার প্রকৃয়াটি অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমি এই ট্রেন্ডটা নিয়ে শংকিত।

হাসিব এর ছবি

রাজনীতি = টাকা + ক্ষমতা ! তাহলে যারা এই টাকা-ক্ষমতার সংস্কৃতির ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা কি রাজনীতির বাইরে ! যুগপৎ অবাক ও দুঃখিত করলেন স্নিগ্ধা । আপনার রাজনীতির সংজ্ঞা হাটুরে জেনারেলদের দর্শন অতিক্রম করলো না ।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আপনার যে আদৌ আমার 'রাজনীতির দর্শন' সম্বন্ধে হাঁটুরে জেনারেলদের চাইতে উচ্চদরের ধারণা ছিলো, আমি তাতেই যুগপৎ অবাক ও আপ্লুত! যদিও, সেটা থাকলে আপনি সামান্য কষ্ট করে কাকে, কোন পরিপ্রেক্ষিতে কথাটা বলেছি, সেটাও একটু দেখতেন!

কথাটা আমাদের দেশের ইসলামি মৌলবাদ বিস্তারের কথা প্রসঙ্গে এসেছে। ইসলামাইজেশনকে আমি রাজনৈতিক মনে করি এবং সেটা কোন প্রতিবাদী বা প্রতিরোধের রাজনীতি নয়, বরং টাকা+ক্ষমতা।

যে একই মন্তব্যে বলছে যে বাংলাদেশের ইসলামাইজেশন কোন সোশ্যাল মুভমেন্ট নয়, অর্থাৎ সোশ্যাল মুভমেন্ট বলে একটা কিছুর অস্তিত্বের কথা সে জানে (এবং কোন মুভমেন্ট কি আন্দোলনই রাজনীতির বাইরে নয়), অর্থাৎ রাজনীতি=টাকা+ক্ষমতা - এই সমীকরণ ছাড়াও সে (অর্থাৎ মন্তব্যকারী, আমি) রাজনীতির সংজ্ঞা স্বীকার করে - এটা বুঝতে খুব সাংঘাতিক বিশ্লেষণী ক্ষমতার বোধহয় দরকার পড়ে না।

যেটা দরকার হয় সেটা বোধহয় সামান্য ধৈর্য্য।

হাসিব এর ছবি

একদম ঠিক বলেছেন ! দুষ্টুমতি লোকজনেরা আলোচনার পথে না গিয়ে ভিন্নমতের লোকজনকে ছাগু, উটু, মগবাজারি ইত্যাদি নামে গালাগালি করে । বিপথগামিদের অচিরাৎ আলোচনার টেবিলে বসার আহবান জানাই ।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

FYI:

উদ্ধৃত বক্তব্য অভি মানে সচল অভিজিতের ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আমিও সেটাই ভেবেছিলাম। আপনি কি তার আর্টিকেলের লিঙ্কটা দিতে পারেন?

যূথচারী এর ছবি

@ রিয়াজ উদ্দীন
জঙ্গীবাদ বিষয়ে আপনার বক্তব্য এই বিষয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এটাই আপনার অবস্থানের সবচেয়ে দুর্বল দিক। সাঈদকে আমি ১৫ বছর ধরে চিনি, মজহারকে ১০ বছর ধরে। তার লেখা পাওয়া যাবে এমন কিছু ওয়েবলিংক আপনাকে দিচ্ছি আমি। ওরিয়েন্টালিজম-এ সাঈদ প্রাচ্যকে দেখার পশ্চিমা যে দৃষ্টিভঙ্গীর কথা বলেছেন, বাংলাদেশের মিডিয়া মৌলবাদকে সেভাবেই দেখছে (পশ্চিমা চোখে) এবং আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরাও ওই ভাবেই। প্রব্লেমটা ঘটিয়েছে নিজামী-খালেদার সরকার যেভাবে এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগে "বাংলাভাই বলে কেউ নেই, বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি" ইত্যাদি বলা শুরু করে তখন এর প্রতিপক্ষ মিডিয়া এবং আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবীরা এই আলোচনায় সহানুভূতিশীল জায়গা পেয়ে যান। ফরহাদ মজহার সেই সময় মূলধারার গণমাধ্যম ও আওয়ামী বিরোধিতার জায়গায় থেকে এক অর্থে জঙ্গীবাদ বিষয়ে খালেদা-নিজামীর সহযোগী অবস্থানে চলে যান। বস্তুত এই উভয় পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গীর বিরোধিতাকারী সংকীর্ণ কিন্তু তৃতীয় একটি স্রোত আছে, আমার ধারণা আপনি সেই তৃতীয় স্রোতেরই লোক; এই আলোচনায় জাতীয়তা বিষয়টিও যুক্ত থাকায় আপনার এই তৃতীয় ধারাটি দৃষ্টির বাইরে চলে গেছে। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ কারো কারো কাছে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার একমাত্র বিকল্প সমাধান। কাজেই তপ্ত বালুকার চেয়ে জ্বলন্ত কড়াই-ই অনেক ভালো এমন অবস্থান নিয়েছেন অনেকেই।
আপনার অবস্থান সুচিন্তিত, তবে সমকালীন তথ্যগুলো মাথায় রাখলে ভালো করতেন।
হিমু এবং আপনার তর্ক-টা খুবই উপভোগ্য হয়েছে। দুজনকেই অনেক ধন্যবাদ।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

যূথচারী ভাই
আপনার লিঙ্কের অপেক্ষায় আছি। সাইদের সম্পর্কে আমি শুনেছি ৫-৬ বছর আগে কিন্তু তার লেখা পড়েছি এক দেড় বছর হল। কিন্তু মিল অমিল আর সমস্যার যে কথাটা বললেন সেটাতে একটা গভীর উদ্বেগের কারন দেখছি। যেকোন সামাজিক অসংগতির কোন বিষয় নিয়ে আলোচনায় যদি প্রতি মুহূর্তে এই ভাবনা মাথায় কাজ করাতে হয় যে কারো সাথে মিলে যাচ্ছে কিনা, বা বিশেষ কোন মহল সুবিধা পাচ্ছে কিনা সেটা দেখতে গেলে আমরা তো বর্তমান রাজনৈতিক মেরুকরনের হাত থেকে কখনই বেড় হতে পারবনা।
আমার মধ্যেও এই প্রবনতা আছে
"আমাদের হাতে বাম আর ডানের দুটি বক্স আছে। কোন নতুন কিছু দেখলেই ভাবতে থাকি কোথায় কোনটা ফিট করছে; কোন একটা বিষয়ে মিল পেলে একটা বক্সে রেখে দিলাম"।

মনস্তত্ব নিয়ে একটা হালকা আর্টিকেলে পড়েছিলাম, আমাদের যদি কারো সম্পর্কে কোন খারাপ (বা ভাল) অভিজ্ঞতা থাকে পরবর্তিতে যদি একই চেহারার বা বাচন ভংগীর কারো সাথে দেখা হয় তার সম্পর্কে আগে থেকে সেরকম একটা অনুমান (pre-conceived notion) তৈরি হয়। স্কুলে আমার খুব পছন্দের শিক্ষক ছিলেন। তার কথায় চিটাগাং-ভাষার একটা টান ছিল। তাকে আমার খুবই ভাল লাগত। কিন্তু ব্যপারটা সেখানেই শেষ নয়। এরপর থেকে যার কথাতেই চাটগার টোন পাই তাকেই মনে হয় ভীষন ভাল মানুষ। এখনও হয়। অবচেতন ভাবেই।
ধন্যবাদ আপনার পরামর্শের জন্য।

হাসিব এর ছবি

যেকোন সামাজিক অসংগতির কোন বিষয় নিয়ে আলোচনায় যদি প্রতি মুহূর্তে এই ভাবনা মাথায় কাজ করাতে হয় যে কারো সাথে মিলে যাচ্ছে কিনা, বা বিশেষ কোন মহল সুবিধা পাচ্ছে কিনা সেটা দেখতে গেলে আমরা তো বর্তমান রাজনৈতিক মেরুকরনের হাত থেকে কখনই বেড় হতে পারবনা।

দেশ সম্পর্কে আপনার জ্ঞান দেখে মাঝে মাঝেই অবাক হই । হিমু মজহার শব্দটারে যখন মগবাজার বানালো তখনই আপনার বোঝা উচিত ছিলো কেমনে কি । সেই রাস্তায় চিন্তা না করে গায়ত্রী স্পিভাক ইত্যাদির বইয়ের রেফারেন্স টেনে যে রাস্তায় বরবাদ মগবাজাররে বোঝার উদ্যোগ নিলেন সেইটা হতাশাজনক ।

আর উপরের কোট করা মন্তব্যটা দিয়ে কি বোঝালেন যে বরবাদ মগবাজারের চিন্তা একটা প্রসঙ্গে খালেদানিজামীর মতের সাথে মিলে গেছে বলে তাকে গালমন্দ করা হচ্ছে ? আর রাজনৈতিক মেরুকরণের হাত থেকে বের হওয়াটা জরুরী মনে করছেন কেন ? আমিতো জানি মানুষ মাত্রই রাজনৈতিক জীব । রাজনৈতিক সংস্কৃতির আওতার বাইরে এইপর্যন্ত রবিনসন ক্রুসো ছাড়া আর কেউ বাস করতে পারে নাই ।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আর রাজনৈতিক মেরুকরণের হাত থেকে বের হওয়াটা জরুরী মনে করছেন কেন ? আমিতো জানি মানুষ মাত্রই রাজনৈতিক জীব ।

রাজনৈতিক জীব হতে গেলে গালাগালিভিত্তিক রাজনৈতিক মেরুকরন দরকার, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বাহবা জানান দরকার এমনটা মানতে পারছিনা।

হিমু মজহার শব্দটারে যখন মগবাজার বানালো তখনই আপনার বোঝা উচিত ছিলো কেমনে কি ।

এই কথাটার অর্থ কি? হিমু বলল বলে ধরে নিতে হবে ঠিকই বলা হয়েছে? এটাকি কোন ব্যক্তির নাম? তার দর্শন বা বক্তব্যকে পছন্দ হল না, কিন্তু যুক্তি দিয়েও পারা যাচ্ছে না তাই একটা গালি তৈরি করে বাতাসে ছেড়ে দিলাম। যদি কামে লাগে। তার মানে তারে আগে থেকেই বলা হচ্ছে তার ব্যপারে আগ্রহ পোষন করো না। তাঁর আসল সমস্যা কি সে সম্পুর্কে কোন যাচাইযোগ্য মতামত বা কোন রেফারেন্স এখনও আমি এই আলোচনায় পাইনি। মোকাবেলাটা গালাগালের চেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক রাস্তায় করা হলে সেটা সমালোচনার গ্রহনযোগ্যতা বাড়াত বলেই মনে করি।

দেশ সম্পর্কে আপনার জ্ঞান দেখে মাঝে মাঝেই অবাক হই ।

আপনি কোন ধরনের জ্ঞানের কথা বলছেন ঠিক বুঝিনি। আর এর স্বরূপ সম্পর্কে আপনি জানলেনই বা কি করে? মাজহারকে গালি দেয়ার কারন জানি না বলে?

সেই রাস্তায় চিন্তা না করে গায়ত্রী স্পিভাক ইত্যাদির বইয়ের রেফারেন্স টেনে যে রাস্তায় বরবাদ মগবাজাররে বোঝার উদ্যোগ নিলেন সেইটা হতাশাজনক ।

ভিন্নমত প্রকাশের 'অপরাধে' যখন আমাকে গালি দেওয়া হল, আমার বক্তব্যের সাথে অপ্রাসঙ্গিক একজনের নামে বকৃত রূপ ব্যবহার করে, তার সম্পর্কে কোন রকম যুক্তি উপাত্ত ছাড়াই, তখন আপনার প্রস্তাবিত রাস্তাটা খুব আলোকিত মনে হয় নি। আর আমি জানি আমার চিন্তার উৎস্য কোথায়? দর্শনের দিক থেকে বলতে গেলে যারা এধরনের বিষয় নিয়ে বেশি লেখেন তাদের মধ্য স্পিভাক, সাইদ, গ্রামসি এরা অন্যতম। তাই তার চিন্তার দর্শনগত চিন্তার উৎস্য খোঁজাটা আমার কাছে হিমুর বক্তব্যের ফেসভেলুর চেয়ে বেশি কার্যকর রাস্তা মনে হয়েছে। তার ওপর স্পিভাকের লেখা Other Asias বইতে মাজহারের নাম অনেক বার এসেছে এমনটাই মনে হয়েছে গুগুল বুকের প্রিভিউ দেখে। আমাদের সমাজের রাজনৈতিক বাক্সভিত্তিক বিশ্লেষনের চেয়ে এই রাস্তাটাকে আমার বেশি আগে নেয়া দরকার বলে মনে হল। স্টার্টিং পয়েন্ট হিসাবে সেটাই আমার কাছে বেশি কার্যকর মনে হয়েছে।

মাজহার সম্পর্কে যথেষ্ট না জেনে তাকে ডিফেন্ড করার কোন প্রয়োজন অনুভব করছি না। আবার তাঁর সম্পর্কে গালাগাল শুনে তাঁর ব্যপারে কোন সিদ্ধান্তও নিতে চাচ্ছিনা। কিন্তু তাঁকে নিয়ে জানার কৌতুহল অবশ্যই বোধ করছি। তিনি কি বললেন যার দরুন একের পর এক সচলরা তাঁকে গালি দিয়ে যাচ্ছেন আবার আমার মত একজন নগন্য মানুষকে তার নামে গালিও দিচ্ছেন।
আমি আমার জ্ঞানের ঘাটতি স্বিকার করে নিতে রাজি আছি কিন্তু কারো কথা ফেস ভেলুতে মেনে নিতে রাজি নই। ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

কিন্তু যুক্তি দিয়েও পারা যাচ্ছে না

মানে কী? যুক্তি দিয়ে পারলাম না কোথায়? কোট করুন।

কারো কথা ফেসভ্যালুতে না নিলে গায়ত্রী স্পিভাকের কথাই বা ফেসভ্যালুতে নিচ্ছেন কেন?

আর ওপরে আপনিই এক জায়গায় বলে এসেছেন, যে কথা সবাই জানে, সে কথা আপনি বলার প্রয়োজন বোধ করেন না। এই যুক্তি তো সকলের ক্ষেত্রেই খাটে। ফরহাদ মগবাজারকে নিয়ে দশ পাতার লেকচার মেরে তাকে ফরহাদ মগবাজার ডাকতে হবে? সে যে ফরহাদ মগবাজার, এ তো আপনি আর গায়ত্রী স্পিভাক বাদে সবাই জানে বলে মনে হচ্ছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

যুক্তি দিয়ে পারলাম না কোথায়? কোট করুন।

আমি তো মাজহার সম্পর্কে আপনাকে কোন যুক্তি দিতে দেখিনি (কি কোট করব?), সেটাই বলেছি। আপনি বোধহয় ভেবেছেন আপনি আমার সাথে বিতর্কে জেতেননি এটা বলতে চাচ্ছি। না এটা বলিনি। এটা আগেই মীমাংসিত। যেহেতু এব্যপারে আমার আগ্রহ নেই মেডেলটি আপনিই নিন।

কারো কথা ফেসভ্যালুতে না নিলে গায়ত্রী স্পিভাকের কথাই বা ফেসভ্যালুতে নিচ্ছেন কেন?

আমি তার কথা ফেসভেলুতে নিচ্ছি না। কিন্তু আশা করছি বইটাতে (হাতে আসলে) দেখতে পাব গালিগালাজের রাস্তায় না গিয়ে তিনি মাজহার সম্পর্কে হয়ত যুক্তি বা বাস্তবিক তর্ক করবেন। সেটা তার পক্ষে যাবে না বিপক্ষে সেটা এখনও জানি না।

সে যে ফরহাদ মগবাজার, এ তো আপনি আর গায়ত্রী স্পিভাক বাদে সবাই জানে বলে মনে হচ্ছে।

এলিয়েনেশনের আরেকটা উদাহরন দিলেন। সবাই যেভাবে জানে আমাকে সেভাবেই জানতে হবে, যুক্তি তর্ক ছাড়াই, এটা যে আমার রাস্তা নয় সেটা বোধহয় এতক্ষনে বোঝাতে পেরেছি।
ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

আচ্ছা, এই যে দেশী বাটপার চিনতে বিদেশী স্পিভাক ঘাঁটতে হচ্ছে, এটাকেই কি সাইদ সাহেব ওরিয়েন্টালিজম বলেছিলেন?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

কি করব বলেন শত অনুরোধেও দেশি জ্ঞানী লোকেরাত সাহায্য করল না। খালি কইল "তোমার জ্ঞানের ঘাটতি দেইখা অবাক হইলাম"। আর দেশের বাইরে থাকি বলে এই মুহুর্তে তার লেখালেখি খোঁজার উপায়ও পেলাম না। যা কিছু দেখা যায় সেটা কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে। স্পিভাকের লেখাতে কত কি পাব সেটাও জানি না। তাই হাতের কাছে যা আছে তাই নিয়ে আগে মাজহারের চিন্তার উৎস্য বোঝাটাই এই মুহুর্তে একমাত্র উপায় মনে হয়েছে। কারন ব্লগ জগতে আলোচনার ধরন দেখে যেটা মনে হচ্ছে তা আমার 'বাক্স রাজনীতি' জাতীয় হাইপোথিসিস কেই জোরাল করেছে।

স্পিভাকের সম্পর্কে কৌতুহল কেবল মাজহারকে বোঝার জন্য নয়। তার লেখার ব্যপারে আমার আগে থেকেই কৌতুহল ছিল। সেটাও মেটান হবে। সাইদ সাহেবের অরিয়েন্টালিজমে ভৌগলিক বিভাজনটা অরিয়েন্ট আর অক্সিডেন্ট। আর স্পিভাক কলম্বিয়ায় অধ্যাপনার করলেও তিনি বোধকরি নন-ওয়েস্ট ভাগেই পড়েন যেমন সাইদ পড়েন। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে দর্শন গত অবস্থান। সাইদ, স্পিভাক, গ্রামসি এদের মধ্যে প্রধান মিলটা হচ্ছে মেথডলজিকাল। সেটা পোস্ট কলনিয়াল ঘরনার সাহিত্য আর দর্শন এদের হাত ধরেই এসেছে। মজহারকেও আমি ঔপনিবেশিক ধ্যান ধারনার সমালোচনা করতে, সাইদ সম্পর্কে আর্টিকেল লিখতে দেখেছি।

মোটাদাগে বলতে গেলে পোস্ট কলনিয়াল ঘরনার দর্শনের কারনে সাইদকে অনেক ভুগতে হয়েছে। কারন এতে করে চিন্তা ভাবনায় বড় বড় অসঙ্গতি ধরা পরে আর প্রচলিত রাজনৈতিক স্বার্থে বড় মাপের আদর্শিক আঘাত আসে।
ইউটিউবে "Edward Said UCLA Lecture" সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। বিশেষ করে ৯, ১০ খন্ডে তার সাথে ব্যবহারের ধরনটি বিচার করে দেখুন। ব্লগস্ফিয়ারে মাজহারের যেই অবস্থান সেটা থেকে বেশ কিছু আলাদা মনে হয় নি।

হিমু এর ছবি

আপনি যে পরের মুখে ঝাল খাবার মানুষ নন, সেটা আপনি প্রায় স্পষ্ট করে এনেছিলেন, গায়ত্রী স্পিভাক এসে সেই ইমেজের গায়ে পানের পিক ফেলে দিলেন। আপনি তো মগবাজার সাহেবের নিজের লেখাই পড়ে দেখতে পারেন। একটু ঘাঁটতে হবে নেটে। আই অ্যাম ফিলিং লাকি মেরে গুগলে খুঁজলে হয়তো আমার মতো খ্রাপ লুকজনের দেয়া "গালি"ই বেশি চোখে পড়বে।

আপনার বক্তব্যে যা বুঝলাম, ভৌগলিক ঠিকুজি দিয়েই চশমার লেন্সের প্লাস মাইনাস নির্ধারিত হবে। আমি যেহেতু নিজের দেশের বাস্তবতায় ফরহাদ মগবাজারকে তার কথাবার্তা শুনে একজন বাটপার হিসেবে চিহ্নিত করছি, অতএব আমি ভৌগলিক পশ্চিমের জোর-করে-চাপানো ওরিয়েন্টালিস্ট চশমা পরার দোষে দোষী। গায়ত্রী স্পিভাকের মতো কেউ মগবাজার সাহেবকে মগবাজার না বলা পর্যন্ত আমার অভিজ্ঞতার কোনো মূল্য থাকতে পারে না। পক্ষান্তরে, আপনি মগবাজার সাহেবকে চেনার জন্যে তার নিজের লেখা বাদ দিয়ে তৃতীয় ব্যক্তির মূল্যায়নের ওপর জোর দিচ্ছেন, যিনি ভৌগলিকভাবে অক্সিডেন্টের খেয়েপরে বাঁচলেও তাদের চশমা-লুঙ্গি-মুড়ি কিছুই ব্যবহার করেননি, কাজেই আপনার এই রেফারেন্স খোঁজার পদ্ধতিটি ওরিয়েন্টালিজমের দোষে দুষ্ট নয়। নাকি ভুল বুঝলাম?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ভৌগলিক ঠিকুজি দিয়েই চশমার লেন্সের প্লাস মাইনাস নির্ধারিত হবে

এটা অতি সরলিকৃত একটা ভার্সন। এরকম কিছু নেই। ভৌগলিক ব্যপারটা আপনিই টেনে এনেছেন আমি স্পিভাক পড়তে চেয়েছি বলে। সাইদের লেখায় ব্যপারটা ভৌগলিক বিভাগ; ফ্রেঞ্জ ফেননের ক্ষেত্রে সাদা-কালো চামড়ার বিভাগ; স্পিভাকেরটা এখনো জানিনা (একটা আর্টিকেল পেয়েছি পড়ে দেখিনি এখনো)।

কিন্তু একটা গ্রুপের ইতিহাস যখন আরেকটা গ্রুপ লেখেন এবং সেভাবে অন্যরা সেই গ্রুপকে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করে তখনই যে ধরনের ক্রাইসিস গুলো ঘটে সেগুলোর সাথেই বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের প্যথলজির মিল রয়েছে। তাদের গল্পগুলো তাদের মুখ থেকে আমরা শুনছি না অন্য কারো কাছ থেকে? এর ফল স্বরূপ পরের ধাপগুলো কোথায় গিয়ে দাড়াচ্ছে? এসব প্রশ্ন হিসাবেই আছে।

আপনি মগবাজার সাহেবকে চেনার জন্যে তার নিজের লেখা বাদ দিয়ে তৃতীয় ব্যক্তির মূল্যায়নের ওপর জোর দিচ্ছেন

তার লেখা সেরকম বৈশিষ্ট্যমূলক লেখা পাইনি এটা একটা কারন; আরেকটা হচ্ছে তার দর্শনচিন্তার উৎস্য বোঝার চেষ্টা করা। তার লেখা পরে পড়ার সুযোগ তৈরি হবে সেটা আশা করছি। যখন হবে তখন তার সমাজ বা রাজনীতি দর্শনের আলোকে তার লেখাগুলোকে বিচার করব। সেখানে কোন রাজনৈতিক দলের সুবিধা পাওয়ার ব্যপারটা সেকেন্ডারি থাকবে একাডেমিক ভাষায় তার আর্গুমেন্টের কন্সট্রাক্ট ভেলিডিটি, কনসিস্টেন্সি এবং ধারাবাহিকতা বেশি গুরুত্ব পাবে। আর চশমা নিয়ে চিন্তা করছি না। কারন এখানে চেষ্টা হচ্ছে চশমা খোলার বা বাক্সগুলোকে অস্বিকার করার। দেখা যাক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

হিমু এর ছবি

আপনি একটা লোকের দর্শনচিন্তার উৎস বুঝতে চান তার লেখা না পড়ে?

জঙ্গিদের গল্পগুলি তো অব্যক্ত নেই। তারা তাদের জিহাদের লিফলেটে আর বইয়ে পরিষ্কার করেই যা বলার বলছে। এই যে "জঙ্গিদের কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না" আর্গুমেন্টটা আপনি দিচ্ছেন, এর ভিত্তি কী? জঙ্গিরা তো কেবল কথা বলে ক্ষান্ত থাকলে এত সমস্যা হতো না, তারা সশস্ত্র আক্রমণ করছে নিরস্ত্র মানুষের ওপর। এর পর তাদের "কথা বলার" খুব বেশি জায়গা থাকে না। জঙ্গিদের গল্প জঙ্গিদের মুখ থেকে শোনা হয়েছে বলেই তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হয়েছে।

আপনাকে ওপরে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, এলিয়েনেশন দূর করার উপায় কী। আপনার কাছ থেকে উত্তর আসেনি। উত্তরের অপেক্ষায় আছি। শুনি, জঙ্গিদের ঠিক কী করলে এলিয়েনেশন দূর হবে বলে আপনি মনে করেন।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

১) আপনি আপাতত তার লেখার পাওয়ার কোন ব্যবস্থা করে দিন। তাহলে এই বিতর্কের অবসান হয়।
২) আপনি আমার কথাকে আপনার মত করে ঘুরিয়ে লিখছেন। আমি জঙ্গীদের কথা বলছি না। জঙ্গিতে পরিনত হবার আগের অবস্থার কথা বলছি। আপনি আবারো সেই আগের সমীকরনে ফেরত যাচ্ছেন।
৩) এলিয়েনেশন দূর করার উপায় সম্পর্কে যে উত্তর দিয়েছি অর্থাৎ প্রথম ধাপ; সেটা পার হলেই অনেক দূর যাওয়া হয়।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

রিয়াজউদ্দীন ভাই,
এই পোষ্টে আলোচনা না বাড়িয়ে আপনি বরং আলাদা পোষ্ট দেন বাংলাদেশের জঙ্গীবাদ নিয়ে আপনার চিন্তাভাবনা বিষয়ে। আপনি আসলে কি বলতে চাইছেন?
বাংলাদেশে আসলে জঙ্গীবাদ বলে কিছু নেই, এগুলো মিডিয়ার সৃষ্টি
নাকি
জঙ্গী আছে, তবে পুলিশ যাদেরকে জঙ্গী বলে গ্রেপ্তার করছে তারা আসল জঙ্গী না, অন্য কেউ।

আপনার মন্তব্যগুলো আগ্রহউদ্দীপক। সিরিয়াসলি অনুরোধ করছি আলাদা পোষ্ট দেন, আপনার সাথে ওইখানে কথাবার্তা হবে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

হাসান ভাই
আপনার অনুরোধটি মনে থাকবে। হয়ত এই মুহূর্তেই আলাদা পোস্ট দিতে পারবনা সময় স্বল্পতার কারনে। তবে আমার উপরের মন্তব্যগুলোতে কি বলতে চাই সেটা মোটামুটি স্পষ্ট বোঝা যাওয়া উচিত। অন্তত আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর হয়ত আছে। আলাদা পোস্ট দিলে অবশ্যই আরো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব। ব্যপারটাকে আমিও অত্যন্ত দরকারি মনে করি।

অনেকদিন থেকেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আলোচনা শুরু হলে যথেষ্ট সময় আর মনযোগ দিতে পারব কিনা সেবিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছি না বলে হয়ে উঠছে না। এই পোস্টে সংক্ষেপে বলার সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি। জঙ্গীবাদ আমার মূল বক্তব্যের একটা দিক মাত্র। আমি জঙ্গীবাদের থাকা না থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি না। বরং জঙ্গীবাদের উৎস্য, গতিপ্রকৃতি আর ভবিষ্যত পরিনতি, মিডিয়ার ভূমিকা, রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতা এসব মিলিয়ে কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক অনাকাংখিত মেরুকরনের বিষয়ে আশংকা জানাচ্ছি।

আর জাতীয়তাবোধে প্রশ্নে মতপার্থক্যের ব্যপারে অসহনশীলতা, বা ব্যক্তিকে বা গোষ্ঠীকে বাইনারি স্কেলের মধ্য দিয়ে যাচাইয়ের প্রবনতা এগুলোও বড় আকারের সমস্যা। ধন্যবাদ ।

রণদীপম বসু এর ছবি

মন্তব্য করতে যতটুকু বুঝ পাওয়া দরকার, এই অসম্পূর্ণ (আপাত দৃষ্টিতে লেখকের বক্তব্য যেখানে এখনো অপ্রকাশিত বা ধোঁয়াটে) পোস্ট পড়ে তা পাই নি বলে আপাতত মন্তব্য-বিরত।
লেখা এগুতে থাক, দেখা যাক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অবাঞ্ছিত এর ছবি

হাসান মোরশেদ, সুমন চোধুরী ও মামুন হক চলুক

"আমি শুনেছি ইউরোপ-আমেরিকায় অনেকে নাকি এখনো বাংলাদেশ-কে পাকিস্তানের অংশ মনে করেন, কেউ কেউ ভারতের একটা প্রদেশ-ও ভাবেন। বাংলাদেশের মানুষকে অবলীলায় ইন্ডিয়ান বা অন্য কোনো জাতীয় হিসেবে চালিয়ে দেন। কিংবা অনেক বাংলাদেশিও নিজেকে বাংলাদেশি না বলে প্রথম পরিচয়টা ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু বলেন। "

অনেকেই বলেছেন, আবারো বলছি, শোনা কথায় কান দিতে নাই হাসি

বাংলাদেশী অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি যারা চীন, ভিয়েতনাম বা জাপানের মানুষদেরকে একই "নামে" ডাকে...

সংবিধান থেকে ধর্মকে অবশ্যই আলাদা করতে হবে। চার্চ আর স্টেট কে কেমনে পৃথক রাখতে হয় এইটা শিখলে আমরা আজ অনেক এগিয়ে থাকতাম।

জাতীয়তাবাদ জিনিসটা আমার একেবারেই পছন্দ না।

আলবার্ট আইনস্টাইনের একটা উক্তি দেই - ""Nationalism is an infantile disease. It is the measles of mankind." (Albert Einstein, 1921)"

লেখা ভালো লাগে নাই।

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

যূথচারী এর ছবি

১. শোনা কথায় কান না দিলে কিভাবে জানবো যে, ইউরোপ-আমেরিকানরা বাংলাদেশকে ইন্ডিয়ার কোনো স্টেট ভাবে না অথবা আপনারা ইন্ডিয়ান বলে পরিচয় দেন না? আপনাদের কথা শুনলাম বলেই তো বিশ্বাস হচ্ছে যে, বাংলাদেশকে আলাদা দেশ হিসেবে চেনেন এমন আমেরিকান এবং নিজেকে ইন্ডিয়ান বলে পরিচয় দেন না, এমন বাংলাদেশি লোক-ও আছেন। দুটোই শোনা কথা এবং জাতিত্ব/জাতীয়তা আলোচনায় খুবই প্রাসঙ্গিক। ভালো কথা, "বাংলাদেশী অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি যারা চীন, ভিয়েতনাম বা জাপানের মানুষদেরকে একই "নামে" ডাকে... " আপনার এই কথাটি আমার বক্তব্যকে সমর্থন করে। বাংলাদেশি হিসেবে আলোচনায় নিজেদের এই বদনাম আমাদের খারাপ লাগলেও জাতিত্ব আলোচনা করতে গেলে এই পয়েন্ট-টাই আমার জন্য যথেষ্ট। জানেন নিশ্চয়ই, একে বলা হয় সমরূপিতা বা সমরূপকরণ। যেভাবে জৈন্তা ও খাসি (অনেকে খাসিয়া-ও বলেন), চাঙমা ও ম্রাইনমা (অনেকে বলেন চাকমা ও মারমা) ইত্যাদি জাতিগুলোকে আমরা সমরূপী করেছি।
২. সংবিধান থেকে ধর্মকে আলাদা করতে বলছেন, খুবই ভালো কথা। সংবিধান থেকে জাতীয়তাকেও আলাদা করতে বলুন। ন্যূনপক্ষে সকল জাতির স্বীকৃতির একটা ব্যবস্থা করুন।
৩. জাতীয়তা জিনিস-টা আমারো একেবারেই পছন্দ না। চরম জঘন্য একটা বিষয়; আগের পোস্টেও এটা বলেছি, এখনো বলছি। স্রেফ কিছু কাজ করেছি বলে (অনুরুদ্ধ হয়ে) এই বিষয়ে দুএকটা কথা বলছি।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

অবাঞ্ছিত এর ছবি

১) শুনে জানার চেয়ে দেখে জানা অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হাসি আর শোনা কথার উপরে ভিত্তি করে মন্তব্য করলে মন্তব্যটাও দুর্বল হয়ে যায় এবং ক্ষেত্রভেদে বিপদ হবার সম্ভাবনা থাকে।

২) সমরূপকরণ বা স্টেরিওটাইপিং এর দোষে আমরা সবাই দোষী। আমি আপনার সাথে একমত যে এটা যতটা সম্ভব কমানো উচিত। তবে ইয়োরপ আমেরিকানদের সম্পর্কে ঢালাও ভাবে একটা মন্তব্য -

ইউরোপ-আমেরিকানরা বাংলাদেশকে ইন্ডিয়ার কোনো স্টেট ভাবে না অথবা আপনারা ইন্ডিয়ান বলে পরিচয় দেন না? আপনাদের কথা শুনলাম বলেই তো বিশ্বাস হচ্ছে যে, বাংলাদেশকে আলাদা দেশ হিসেবে চেনেন এমন আমেরিকান এবং নিজেকে ইন্ডিয়ান বলে পরিচয় দেন না, এমন বাংলাদেশি লোক-ও আছেন।

ও কিন্তু বিষয়টাকে জেনারালাইজ ও স্টেরিওটাইপ করছে। এমন একটা মন্তব্য সমরূপকরণের বিরুদ্ধে আপনার অবস্থানকে দুর্বল করে তুলছে।

৩)

সকল জাতির স্বীকৃতির একটা ব্যবস্থা করুন।

আমার হাতে থাকলে নিশ্চই করতাম মন খারাপ

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

হাসিব এর ছবি

যূথচারি,

আপনি খুব তাড়াহুড়ো করে পোস্ট লেখেন এইটা আমি অনুমান করি । এই কারনে আমার ধারনা যেইটা বলতে চান সেইটা আপনার লেখার মাধ্যমে বের না হয়ে অন্যকিছু একটা মিন করে । সেই অন্য কিছুটা কি সেইটা হাসান মোরশেদ বলছেন উপরে ।

- আমাদের উপমহাদেশে ইতিহাস রচনায় সাম্প্রদায়িকতার আছর আছে এইটা সত্য কথা । এইটা হিন্দু মুসলমান দুই পক্ষেরই আছে । প্রত্যেকেই তাদের পছন্দের যুগটা নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন ।

এই প্রসঙ্গে যদি আমি লিখতে বসি তাহলে আমি হুট করে ৭০০বছর কেউ মুছতে চায় এই জাতীয় কথা বলার আগে সেটার একটা বিস্তারিত সিকোয়েন্স, কিছু রেফারেন্সের মাধ্যমে আমার বক্তব্যে আসবো । এটা না করে হুট করে উপসংহারটা বলে ফেললে পুরো বক্তব্য ভিন্ন মেজাজে পাঠকের কাছে ধরা দিতে পারে ।

- দ্বিতীয়ত, আপনার পোস্ট শুরু হয়েছে খুব জেনারালাইজড একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে যে অনেক বাংলাদেশী নিজেদের ইন্ডিয়ান বা এই ধরনের কিছু একটা বলে । "অনেক" শব্দ দিয়ে কয়জনকে বোঝায় জানি না তবে সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য এরকম কিছু একটা বোঝায় । তো এই জাতীয় জেনারালাইজড স্টেটমেন্ট দিয়েও লেখা শুরু করাটা ঠিক ভালো পদ্ধতি না । খারাপ মেজাজ নিয়ে পড়তে শুরু করলে লেখার বাকি অংশের খারাপ ইন্টারপ্রিটেশনটাই সবাই নেবে । এটা স্বাভাবিক ।

ভালো থাকবেন ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দাঁড়িটুপিকে যারা ইসলামের চিহ্ন হিসেবে বেদবাক্য মনে করে বা ইসলাম ধর্মপরিচয়ের লোক রাজা হলে তার শাসনকালকে মুসলিম শাসন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে, তাদের দৃষ্টিশক্তির তীক্ষ্ণতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কোনো কিছুকে ইসলামের সাথে অ্যাসোসিয়েট করতে হলে ইসলামে তার নির্দেশ আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া দরকার। নাইলে একজন পীরবাবা এসে বললো, "আমার পায়ে চুম্বন করাই ইসলাম", আর আমি ইসলামের সেই সংজ্ঞা নিয়া একটা চরিত্র দাঁড় করায়া ফেললাম, এটা ভুল।

দাঁড়িটুপি যদি মুসলমান নির্দেশক হয়, তাইলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমানেরই মুসলমানিত্ব খারিজ হয়ে যাবে, ফাঁকতালে রবীঠাকুরদেরকে মুসলমান বলে ফেলা যাবে।

ইসলামের নামে সন্ত্রাস এবং ইসলামী সন্ত্রাস জিনিসটা এজন্যই এক না। যে লোকগুলা সন্ত্রাসের হাতিয়ার হিসেবে ইসলামের নাম ভাঙ্গায়, তাদের বিপক্ষে বা পক্ষে বলতে আসা কেউ যদি এই জিনিসের ওপর ফোকাস না করেন, তাইলে কেমনে কি? বাংলা ভাই, জামায়াতের আদর্শকে যারা ইসলামী নাম দিতে চান, তারা কি ইসলামের সাথে এদের কাজের মিল-অমিল নিয়ে একবারও ভেবেছেন? জাতিতে জাতিতে গন্ডগোল লাগানো জাতিসত্ত্বা ভালো, নাকি মানুষের একাকী বনবাসটাইপ জীবন ভালো, সেটা আলোচনাসাপেক্ষ হতে পারে। একইভাবে সন্ত্রাসী আদর্শ ভালো, নাকি সো-কলড পশ্চিমা আদর্শ ভালো, তাও আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে। কিন্তু যখন ধর্মকে ইচ্ছেমতো মুঁচড়িয়ে বিকৃত করে একটা 'আদর্শ'কে ধর্মের নামে চালানো হয়, তাহলে তার গোড়ায় যে গলদটা থাকে, তা ভাবা খুবই দরকার।

যেখানে মানুষের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত, বেনিফিট অফ ডাউট বলে কিছু নেই। ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে ঔষধও যেমন অনেক ক্ষেত্রে দরকারী, অস্ত্রোপচারও তেমনি অনেক ক্ষেত্রে দরকারী। সন্ত্রাসী, সে গোঁফু সন্ত্রাসী হোক আর টুপি পরা সন্ত্রাসী হোক, আমার খেয়ে দেয়ে দায় পড়ে নাই, আমাকে বোমা মারার পরেও তাকে বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার। বিঁচিপাঁকা কেউ জেনেবুঝে আকাম করে ধরা খাওয়ার পরের প্রশ্ন থাক, এমনকি কেউ নির্বোধ হলেও সেটা তার দায়, আমি যদি আয়ত্বের মধ্যে থাকে, তাহলে হয়তো তার নির্বুদ্ধিতা কাটাতে তাকে সাহায্য করবো; কিন্তু সেই সাহায্যটা আমার ফরজ দায়িত্ব না, সেটা করলাম না বলে কেউ যদি আমাকে দায়ী করতে আসে, তাইলে তাকে সোজা সিটিএন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

অছ্যুৎ বলাইর মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।