সব সম্ভবের দেশে আপনাকে স্বাগতম

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: মঙ্গল, ১০/০৬/২০১৪ - ১০:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জামিনে বের হয়ে গেছেন রাজীব হত্যা মামলার আসামি সাদমান

ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডের আসামি জামিনে মুক্ত

Blogger Rajeeb murder accused freed on bail

ব্লগার রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত একজন আসামি উচ্চআদালত থেকে জামিনের রায় নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে গেছে, এই খবরটা শুনে ঠিক কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত ছিল জানিনা, তবে আমি খুব একটা অবাক হইনি। এই দেশে সব সম্ভব। হয়ত এভাবে একে একে বাকি আসামিরাও বের হয়ে যাবে, হয়ত একসময় হাজারো ঘটনার ডামাডোলে এই মামলা এমনিতেই চাপা পড়ে যাবে। হয়ত একদিন নাগরিকেরা ভুলে যাবে সবকিছু। আমি সেদিনও অবাক হবনা। অবাক হওয়ার অনুভূতি হারিয়ে গেছে বহু আগেই। এখন হাসি পায়। রঙ্গমঞ্চের অসংখ্য নাটক আর কৌতুকের পসরা দেখে না হেসে উপায় থাকেনা।

শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের উত্থানের পরে প্রথম আঘাত আসে রাজীবের উপরেই। তাঁর মৃত্যু প্রমান করে দিয়ে গেছে আমরা জাতি হিসেবে ঠিক কতটা দ্বিধাবিভক্ত। একজন মানুষের হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে জঘন্য রাজনীতি চলেছে তা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে, হারিয়ে গেছে আমাদের মনুষ্যত্ববোধ বহু আগেই। অসংখ্য কন্সপিরেসি থিউরির কুশীলবেরা দেখিয়েছে সময় এলে কিভাবে রঙ বদলে নিতে হয়। জনপ্রতিনিধিরা দেখিয়েছে কিভাবে "জন"কে ভুলে ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরতে হয়। ধর্মভীরু নাগরিকেরা দেখিয়েছে কিভাবে হত্যার পক্ষে সাফাই গাইতে হয়। আরও আরও অনেক কিছু।

গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে এখন ফি-হপ্তায় নতুন নাটক মঞ্চস্থ হয়। দলাদলির চোটে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এখন আর কিছু অবশিষ্ট আছে কিনা তাই সন্দেহ। সবাই ভুলে যায়, গণমানুষ কোন মঞ্চ দেখে প্রতিবাদী হয়নি। হয়েছিল নিজের তাগিদে। একইভাবে রাজীবও নিজের তাগিদেই জনসমুদ্রে সামিল হয়েছিল। নিজের জীবন দিয়ে তা প্রমান করে গেছে সে।

খবর পড়তে গিয়ে নজরে পরে,

তার আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে এবং তিনি ঘটনা জানতেন কিন্তু সরাসরি জড়িত ছিলেন না-এ সব যুক্তিতে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।”

আসলেই, কি চমৎকার মানবতাবোধ আমাদের সমাজের। যেখানে ৫৭ ধারার মত কালো আইনে গ্রেফতার হয়ে যায় কিছু সাধারন মানুষ, যেখানে দাগী অপরাধীদের মত তাদের উপর চলে রাষ্ট্রযন্ত্রের অত্যাচার, যেখানে তাদের জামিন পেতে হয়রান হতে হয়, সেখানে একজন খুনের মামলার আসামির জন্য আমাদের বিচারব্যবস্থার কতটা দরদ।


অবাক হই, মৃত্যুর পরেও রাজীব আমাদের বারবার দেখিয়ে দেয় আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র কতটা অচল। কতটা নির্বোধ আমাদের বিচারব্যবস্থা। কতটা হাস্যকর আমাদের সমাজ।

চলুক, যেভাবে চলছে, যা চলছে, যেখানে চলছে, চলতে থাকুক।

[আপডেট- রাজীব খুনের আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ]


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

রাজীব নামে আসলে কেউ ছিলো না। সব মিডিয়া ও চক্রান্তের সৃষ্টি।

সুবোধ অবোধ এর ছবি

কিছুই বলার নাই!!!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও এখন অবাক হই না, কোথাও ডান-বাম, প্রগতিশীল-প্রতিক্রিয়াশীল সবাই এখানে এক হয়ে মিশে গেছে। মন খারাপ

মাসুদ সজীব

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমারও মনে হয় রাজীব নামে কেউ কখনও ছিলনা। এই যেমন আপনিও নেই আমিও নেই বা কখনও ছিলাম না। আমজনতা আবার হিসাবে ধর্তব্য নাকি?

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রৌঢ় ভাবনা, আপনি ঠিক বলেছেন,"আমজনতা আবার হিসাবে ধর্তব্য নাকি?" আমাদের অতি চালাক নেতারা তাই মনে করেন। তবে ক্ষ্যাপা আমজনতা বড় ভয়ঙ্কর জিনিশ। একবার যখন আমজনতা ক্ষেপে উঠবে তখন পিটিয়ে এদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে। এখন আমজনতা কখন ক্ষেপে সেটাই দেখার বিষয়।

সোহেল লেহস

ঈয়াসীন এর ছবি

অবাক হইতে হইতে ক্লান্ত। প্রতিজ্ঞা করছি অবাক হওয়া ছাইড়া দিমু। নেক্সট ইলেকশনে জামাত ১০০ সিট পাইলেও অবাক হমু না।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

এক লহমা এর ছবি

যা লিখেছিলাম, সব মুছে দিলাম। তাঁকে নিয়ে লেখার কোন যোগ্যতা নেই আমার।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেসবুকে দেখছি বিশেষ বিশেষ কয়েকজন রাজসাক্ষী তত্ব গেলানোর চেষ্টা করছেন আর বলছেন চুপ থাকতে, যেমন "ডাক্তার আইজু"। তো রাজসাক্ষীকে কেন জামিনে মুক্ত রাখতে হবে, একথার জবাব কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

----ইমরান ওয়াহিদ

অতিথি লেখক এর ছবি

যা করা হচ্ছে তাতে দোষ নেই, শুধু বললেই খাসি। ভালো বিনোদন দেয় মুমিন বান্দারা

---ইমরান ওয়াহিদ

স্যাম এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।