সবুজ বাতির জন্য আমি অপেক্ষা করে থাকি

আরিফ জেবতিক এর ছবি
লিখেছেন আরিফ জেবতিক (তারিখ: বুধ, ১৭/০৯/২০০৮ - ১২:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জুবায়ের ভাইয়ের সাথে পরিচয়টা খুব অদ্ভুতভাবে । সাধারনত ব্লগে আমি সিরিয়াস বিষয় পড়ি না , সিরিয়াস কিছু লিখি না । বিশেষ করে ধারাবাহিক লেখাগুলো একটু এড়িয়েই যাই ।

সেই আমি কেন যেন একবার সামহোয়্যারের একটি পোস্ট ক্লিক করতে গিয়ে ভুলে আরেক পোস্ট খুলে ফেললাম । উপন্যাস চুপকথা-র একটি অংশ সেখানে । পড়ে ফেললাম একটানে । জুবায়ের ভাইয়ের লেখা আমাকে মুগ্ধ করল । তারপর টানা উপন্যাসের যতোগুলো কিস্তি প্রকাশিত হয়েছিল ব্লগে , সবগুলো পড়ে ফেললাম গোড়া থেকে ।

তারপর দেখলাম সেই উপন্যাসগুলোতে খুব বেশি হিট নেই । বিষয়টি আমাকে কেন যেন তাড়িত করল । আমি একটা উদ্ভট কাজ করলাম । ‌‌" নিজের খাইয়া বিজ্ঞাপন দিলাম " শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়ে বসলাম । সেখানে অমিত আহমেদের গন্দম আর মুহম্মদ জুবায়ের এর চুপকথা , এই দুইটি ধারাবাহিক না পড়ে যে পাঠকরা অনেক কিছুই মিস করছেন সেটা বললাম বেশ জোর গলায় । ভাবাবেগ মাঝে মাঝেই আমাকে দিয়ে এসব ছেলেমানুষী কাজ করিয়ে নেয় ।

তখন পর্যন্ত জুবায়ের ভাইয়ের সাথে আমার কোন কমেন্ট বিনিময় পর্যন্ত হয় নি । ব্লগীয় আন্তরিকতা তো দূরের কথা ।

তারপর কিভাবে কিভাবে যে জল গড়ায় মনে করতে পারি না । সচলায়তন যখন শুরু হয় তখন খুব বাছাই করে কিছু লেখককে সেখানে আমন্ত্রন জানানো হয় সাইটটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে এবং নিয়মিত লেখালেখিতে অংশ নিতে ।
এ সময় আমাদের সবার জন্য একটি কোটা সিস্টেম করে দেয়া হয় ( সম্ভবত দশটি ) যাতে করে সবাই নিজেদের চেনাজানা লেখকদেরকে আমন্ত্রন জানাতে পারেন । আমি সামহোয়্যার ব্লগ থেকে জুবায়ের ভাইয়ের ইমেইল এড্রেস নিয়ে তাকে নিমন্ত্রন পাঠাই । ( খুব সম্ভবত আমি আমার কোটা থেকে এই একটি আমন্ত্রনই পাঠিয়েছিলাম ।) একই দিনে আড্ডাবাজও জুবায়ের ভাইকে নিমন্ত্রন করেন সচলায়তনে ।
ব্যস , জুবায়ের ভাই সচলায়তনে লেখা শুরু করলেন ।

যতোক্ষন অনলাইন থাকি , আমার জিমেইল সবসময়ই খোলা থাকে । সেখানে বাম পাশের চ্যাটবক্সে বিন্দু বিন্দু সবুজ বাতিতে আমার প্রিয় জনেরা জ্বলতে থাকেন । সেই সবুজ বাতিতে জুবায়ের ভাই প্রায় নিয়মিত । টুকটাক কথা হয় , আড্ডার মতোই খানিকটা ।

একটা কাজ দিয়েছিলেন করতে । একটু ঝামেলার কাজ । শেষ যখন কথা হয় তখন আমি বিদেশ যাওয়া নিয়ে তাড়াহুড়োর মাঝে আছি । শেষ সময়ে দুমাসের জন্য বিরতি নিতে গিয়ে অফিসের কাজ গুছানোর তাড়া । বুঝতে পেরে উনি বলেন , এখন থাক; ফিরে এসে করবেন ।আমিও কথা দেই , ঠিক হ্যায় , ফিরে এসে ধরা যাবে ।

ফিরে এসে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি মায়ের অসুখ নিয়ে । খুব নিয়মিত যে ব্লগবাজী করি , তেমন নয় । ছাড়া ছাড়া ভাবে করি । এই ঢুকলাম , এই বের হলাম ।
তারমাঝেই একদিন দেখি তানভীরের পোস্ট । জুবায়ের ভাইয়ের অসুস্থতার আপডেট

তারপর থেকে আমার রোজ দায়িত্ব হয়ে যায় , প্রতিদিন সচলায়তন খুলেই সেই পোস্টটি দেখা । কখনো ভালো আছেন জানলে খুশী হয়ে উঠি , কখনো অসুখ বেড়েছে শুনলে অস্থির অস্থির লাগে নিজের মাঝে ।

মাঝে মাঝে আপডেট পেতে দেরী হয় । তখন মনে হয় , ভালো হয়ে বুঝি বাসায় চলে গেছেন । সুস্থ মানুষের অসুস্থতার তো আপডেট হয় না , তাই কেউ কিছু জানাচ্ছে না ।

আমি তখন দ্রুত জিমেইলে চোখ রাখি ।
জুবায়ের ভাইয়ের নামের পাশের বিন্দুটি কি সবুজ হলো ?

প্রিয় জুবায়ের ভাই ,
খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন প্লিজ ।
আপনার নামের পাশের সবুজ বিন্দুটি জ্বলে ওঠার জন্য আমি প্রতিদিন অপেক্ষা করে আছি।


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আশা করি খুব ... খুব অল্পদিনের মধ্যেই আপনার জিমেইল একাউন্টের পাশে সেই আকাঙ্খিত সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে।

জুবায়ের ভাই অবশ্যই সুস্থ হয়ে উঠবেন... নিশ্চয়ই ।

আপনিও অনেক ভালো থাকুন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্লগ জিনিস টার সাথে আমার পরিচয় অল্প দিনের , মাএ ২ সাপ্তাহ । এখানে যে জিনিস টা আমাকে সবচেয়ে মুগদ্ধ( সঠিক বানান চেষ্টা করেও লিখতে পারলাম না) করেছে তা হল ব্লগারদের মধ্যে আন্তরিকতা । ভাল হয়ে উঠুন জুবায়ের ভাই , আবার আপনার সবুজ বাতি জ্বলে উঠুক আরিফ জেবতিক ভাইয়ের জিমেইলে ।

নিবিড়

অনিকেত এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন

আপনার মত আমরাও সবাই অপেক্ষায় আছি একটি সবুঝ বাতির--------

তানভীর এর ছবি

দুঃখিত। ব্যক্তিগত অসুবিধার কারনে কিছুদিন আপডেট দিতে পারি নি। এখন ডালাসে আছি। দু'একদিনের মধ্যেই জুবায়ের ভাইয়ের সাথে দেখা করব। তবে জালাল ভাই জানিয়েছেন জুবায়ের ভাই এখন আইসিইউতে থাকলেও ভালো আছেন। অবস্থা খারাপ হয় নি।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অনিন্দিতা এর ছবি

জুবায়ের ভাইএর জন্য আপনার মতো আমি ও অপেক্ষা করছি।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

প্রত্যাশা খুব শীঘ্রই যেন পূর্ণ হয়।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আশা করি জুবায়ের ভাই শিঘ্রী ভালো হয়ে যাবেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

জুবায়ের ভাইয়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।

tuli এর ছবি

এই মানুষটিকে কখনো দেখিনি।শুনি নি।কোনো পরিচয় নেই।অথচ মনে হয় কত কাছের!
একদিন হঠাত করে সচল খুলে দেখেছিলাম একজন বাবা মেয়ের দূরে পড়তে যাওয়া নিয়ে কি মায়াময় লিখেছেন! মনে পড়ে গেল বহুদিন আগে ছেড়ে চলে আসা নিজের বাবাকে!
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন আপনি।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অনেকদিন হয়ে গেলো, জুবায়ের ভাই।
প্লিজ, এখন ফিরে আসেন আমাদের কাছে।
কতো প্রিয়মানুষ অপেক্ষায়...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সবুজ বাতিটি আর জ্বললো না...

নূপুরের ছন্দ এর ছবি

সবুজ বাতিটি আর জ্বললো না..মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।