গুডবাই শফিক রেহমান...

বিপ্লব রহমান এর ছবি
লিখেছেন বিপ্লব রহমান (তারিখ: মঙ্গল, ০৬/০৫/২০০৮ - ৪:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.কাল রাতে দৈনিক যায় যায় দিন থেকে পদত্যাগ করলেন সম্পাদক শফিক রেহমান। বলতে দ্বিধা নেই, একই সঙ্গে পেশাদার সাংবাদিকরা আপাতঃ হাফ ছেড়ে বাঁচলেন এক মিডিয়া-ড্রাগনের খপ্পর থেকে।

এ নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শফিক রেহমান ইনিয়ে বিনিয়ে আজকের যাযাদিতে অনেক নাকি কান্না কেঁদেছেন। তার আপোষহীন চরিত্রের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্টোর রুম ঘেঁটে তুলে এনেছেন ৯০ দশকের সাপ্তাহিক যাযাদির কয়েকটি আলোচিত প্রচ্ছদচিত্র(দেখুন)

তবে ফিউজ লাল গোলাপ-শফিক রেহমান তার ব্যাখ্যায় যে কথা বলেননি, তা সংক্ষেপে এ রকম:

১৯৯০ এর জে. এরশাদ বিরোধী স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় সাপ্তাহিক যাযাদি আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পায়। ধারালো বিশ্লেষনী, কলাম ও আপোষহীন নীতির কারণেই তখন তিন টাকা দামের নিউজপ্রিন্ট মলাটের ১০ পয়েন্টে ছাপা হরফের সাপ্তাহিকটি এ দেশের পুরো মিডিয়া জগতের চেহারাই পাল্টে দেয়। এর আগে কোনো সাপ্তাহিকই এতো পাঠকপ্রিয়তা পায়নি। পত্রিকাটি দুদুবার সরকারের রোষানলে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। শফিক রেহমানকে সে সময় দেশ ছাড়াও করা হয়।

এরশাদ পতনের পর ১৯৯২ সালে যাযাদি আবার যাত্রা করে। পরে ১৯৯৮ সালে পুরনো পল্টনের একটি অফিস যাযাদি ট্যাবলয়েড দৈনিক হিসেবে একমাস প্রকাশ হয়েই আবার বন্ধ হয়ে যায়।

পেশাদার সাংবাদিকের অভাব, তীব্র আওয়ামী বিরোধীতা, পরিকল্পনার অভাবই ছিলো এর কারণ। আর এর নাটের গুরু ছিলেন সাবেক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অঘোষিত প্রেস সচিব এবং শফিক রেহমানের মিডিয়া পরামর্শক নূরুল ইসলাম ছোটন, ওরফে নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া।

পরে আবারো যাযাদি সাপ্তাহিক হিসেবে প্রকাশ হতে থাকে। তবে ততদিনে অন্যান্য প্রিন্ট মিডিয়ার উত্থান ও যাযাদির অন্ধ বিএনপি-নীতি অনুসরণ করার ফলে সাপ্তাহিকটিও দ্রুত বাজার হারায়।

*

২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আবারও মিডিয়া ড্রাগন হিসেবে আবির্ভূত হন শফিক রেহমান। একই সঙ্গে আবির্ভূত হন খালেদা জিয়ার অঘোষিত প্রেস সচিব এবং শফিক রেহমানের মিডিয়া পরামর্শক নূরুল ইসলাম ছোটন। সরকারি বা রাজনৈতিক পদে না থাকলেও অতিক্ষমতাধর ছোটন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়মিত অফিস করতেন।

হাওয়া ভবনের যোগসাজসে তেজগাঁর খাস জমি বন্দোবস্ত নিয়ে, সরকারি রাস্তার নাম পাল্টে 'লাভ রোড' রেখে বসুন্ধরা গ্রুপের টাকা ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে আলিশান অফিস তৈরির কাজ চলে। আবার কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে যাযাদি দৈনিক হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে -- এমন সাজ সাজ রব পড়ে মিডিয়া জগতে। বছর দেড়েক ধরে শুধু অফিস নির্মাণ, অত্যাধুনিক প্রেস এবং নিজস্ব পাওয়ার স্টেশন বসানো, বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া থেকে বাছাই করে সংবাদ কর্মী নিয়োগের কাজও চলে। অতঃপর ২০০৬ সালে প্রকাশ হয় একটি সোনার পাথর বাটি।

বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় এবং বাঘা বাঘা সাংবাদিক নিয়োগ করেও দৈনিক যাযাদি অপেশাদার সুলভ নীতি, তীব্র আওয়ামী বিরোধীতা, অদ্ভুদ সব বানান রীতি, ইংরেজী শব্দের যথেচ্ছ ব্যবহার -- ইত্যাদির কারণে গোলাপ-শফিক রেহমানের পত্রিকাটি মোটেই পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে না। উপরন্তু প্রতিদ্বন্দ্বি দৈনিকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

বিএনপি সরকারের শেষ দিকে প্রকাশনার মাত্র চার মাসের মাথায় ২০০৬ সালের অক্টোবরে বসুন্ধরা গ্রুপের চাপে শফিক রেহমান গার্মেন্টস শ্রমিক ছাঁটাই করার কায়দায় একসঙ্গে ছাঁটাই করেন শতাধিক সংবাদকর্মী। কোনো রকম আগাম নোটিশ এবং দেনা-পাওনা পরিশোধ ছাড়াই ঈদের ছুটির পর এই ছাঁটাই কার্যকর করা হয়। এক সকালে সাংবাদিকরা যাযাদির অফিসে ঢুকতে গিয়ে দেখেন অফিস গেট বন্ধ; প্রধান ফটকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ছাঁটাই নোটিশ!

*

ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা খবর পান, শফিক রেহমান পত্রিকাটি বন্ধ করে তাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করা ছাড়াই লন্ডন পাড়ি জমাচ্ছেন! তারা ধাওয়া করেন বিমানবন্দরে।

বিমানবন্দর থানা পুলিশ, পরিচালক (জিয়া), প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং এয়ারলাইন্সগুলোর সহায়তায় সে রাতে চারটি দেশের ভিসা-টিকিট থাকা সত্বেও শফিক রেহমান দেশ ত্যাগ করতে পারেননি। ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিকরা এরই মধ্যে তার দেশত্যাগের ওপর আদালতের একটি নিষেধাজ্ঞাও পান।

শফিক রেহমান তার সাংবাদিক ইমেজটিকে ধরে রাখতে যাযাদির প্রকাশনা অব্যহত রাখতে বাধ্য হন।

এরমধ্যে ১/১১ এর পর পাল্টে যায় দাবার ঘুঁটি। গা ঢাকা দেন তার নাটের গুরু নূরুল ইসলাম ছোটন, ওরফে নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া। খালেদা, তারেক, কোকো, মামুনসহ কারাবন্দী হয় শফিক রেহমানের ক্ষমতার উৎস।

পরে এইচআরসি গ্রুপ যাযাদির মালিকানা প্রায় পুরোটাই কিনে নেয়। তারা অল্প সংখ্যক সংবাদকর্মী দিয়ে কম সার্কূলেশনে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যহত রাখে। তাদের অন্যতম শর্ত ছিলো যাযাদি থেকে শফিক রেহমানের অপসারণ। তাই মিডিয়া জগতে তার পদত্যাগ মোটেই কোনো চমক নয়; বরং এটি ছিলো অনিবার্য। তার পদত্যাগের গুঞ্জনটিও গত কয়েকদিন ধরে আলোচিত হচ্ছিলো।

এইসব মিডিয়া ড্রাগন বিভিন্ন সময় একেকজন শেঠজী জোগাড় করে আবারো হয়তো মাঠে নামবেন। আর তথ্য-সাংবাদিকতার কঠিন পেশাটিকে ভালবেসে মাঝ খান থেকে বেতন-ভাতার দীর্ঘ অনিশ্চয়তায় পড়বেন পেশাগত সাংবাদিকরা। এই চিত্র যেনো আর পাল্টায় না! এই গল্পের যেনো কোনো শেষ নেই!...

*

পুনশ্চ: ১/১১ এর পরে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের জের ধরে মিডিয়ায় এখন বড়ই দুর্দিন। দু-তিনটি টিভি চ্যানেল ও ছয়-সাতটি দৈনিক ছাড়া সবখানেই বেতন-ভাতা নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে না। আবার অধিকাংশ মিডিয়াতেই সরকার ঘোষিত বেতন স্কেলও দেওয়া হয় না।

এসব নিয়ে টুঁ শব্দটি করারও যেনো কেউ নেই! যারা মানবাধিকারের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার, সেই মিডিয়া জগতের মানবাধিকারের কথা কে বলবেন?

অন্যদিকে, আগে মিডিয়া ছিলো পরিবেশ-বান্ধব; এখন সবাই সেনা-বান্ধব!

---
কার্টূন সূত্র: আলেক্সান্দ্রভ, সহ ব্লগার সুজন চৌধুরী।


মন্তব্য

খেকশিয়াল এর ছবি

শফিক রেহমান রে দেখলে আমার একটা শব্দই মনে আসে , সুকুমার গুরুর বিখ্যাত সৃষ্টি 'মজারু !'

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক এর ছবি

গুডবাই !
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

কিন্তু শাস্তি ছাড়া অপরাধীরা এভাবে আর কতকাল পদত্যাগ করেই ছাড়া পেয়ে যাবে......................................

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হুমম।...সেই প্রশ্ন আমারো। সাংবাদিকদের পেশাগত অনিশ্চয়তা যেমন বাস্তব, তেমনই বাস্তব একটি মেরুদন্ডহীন প্রেস কাউন্সিল।

অতএব উপায় নেই গোলাম হুসেন!...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

"গুডবাই শফিক রেহমান" পড়ার পর আমি মনে করেছিলাম উনি মারা গেছেন। কিন্তু পুরোটা পড়ার পর দেখলাম এত বেশি খুশি হবার কারন নেই। কারন এক মিডিয়া থেকে বিদায় নিয়ে হয়ত অন্য কোথাও তার দেখা পাওয়া যাবেই।যতদিন থাকবে সে এই ধরনীতে।

~~~~টক্স~~~~

সিডনী, অস্ট্রেলিয়া।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

যাওয়ার প্রাক্কালে তাহার হাতে একটি লাল গোলাপ ধরিয়ে দেওয়া হউক... কেউ যদি কাঁটাসহ গোলাপটি অন্য কোন স্থান দিয়ে সান্ধায়ে দিতে চায় তাইলেও তারে সেই সুযোগ দেওয়া হউক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ঞঁ ! খাইছে


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ক্ষমতার পট বদলে বহু কিছুই খোয়াতে হয় । এই তুলনায় সম্পাদকের পদ খুব বড়ো কিছু নয় ।

গুড বাই শফিক ভাই ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

সুজন চৌধুরী এর ছবি
আরিফ জেবতিক এর ছবি

হ , পত্রিকায় এটাই নিয়ম । যতো বড়ো বুড়াই হোক না কেন বাকী সাংবাদিকরা উনাকে ভাইই ডাকবে । সেই সূত্র ধরে মতি ভাই , শফিক ভাই , সারওয়ার ভাই ...সবাইরেই তো ভাই বলে ডেকে গেছি ।

আজ আর বিদায় বেলা সম্বোধন বদলাই কেন ?

----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

মতি ভাই , শফিক ভাই , সারওয়ার ভাই ...সবাইরেই তো ভাই বলে ডেকে গেছি ।

আমার মনে হয়, বসের টাইপিং এ একটু ভুল হয়েছে। ওই সব সম্পাদক প্রত্যেকের নামের পর তিন ফোঁটা (...) এবং এর পর একটি করে 'ভাই' কথাটি যোগ করলে হয় না? চোখ টিপি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অমিত এর ছবি

কমেন্টে (বিপ্লব)

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঐ তিন ফোটা ( ...) তো সবসময়ই দেই , কিন্তু তিনতলার প্রুফ রিডাররা কাইটা ফালায় ।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ভাইজান বেশ কয়েকবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করবো কিনা; কিন্তু নাহ্‌ এইটা না জেনে ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিনা। এই, "তিন ফোঁটা (...) " মানে কি? চুদির ভাই নাকি?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমরা উল্টেপাল্টে বলতাম 'বুদির চাই'। খাইছে

আকতার আহমেদ এর ছবি

আসেন তাইলে সবাই মিলা একসাথে কই-
গুড বাই.. চুদির ভাই

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ঞঁ !


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

গুডবাই হুইন্না বুক ফাইট্ট কান্দন আইছিল। মনে করছিলাম তিনি ভবলীলা সাঙ্গ করেছেন। কারণ তিনি না থাকলে জাতির অইব কী? জাতি এটিকেট (বেলেল্লাপনা) শিখব কার কাছে? লাল গোলাপ পামু কই?
এখন দেহি না। উনি রেস্ট নিতে বেরিয়েছেন। আরও খবর আছে। এহানেই শেষ না...

mbelal326@yahoo.com

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

আমার কষ্ট লাগে -একটা মানুষ কিভাবে নিজের তৈরী স্বপ্নের সৌধ থেকে এভাবে ছিটকে পড়ে।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

ধ্রুব হাসান এর ছবি

এই গোলাপ শফিক যে এখনো কি করে নিজের গায়ের চামড়াটা ঠিকিয়ে রেখেছেন তাই আশ্চর্য লাগে; অথচ তার ক্ষমতার উতস কতো রতি মহারতি এখন গারদে! মনে হয় সেনাদের ব্যারাকে তার অনেক দিনের ইনভেষ্টম্যান্ট আছে, তা না হলে এতো সহজে তো তার পার পাওয়ার কথা না!

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

এক ধাউড়ের বিদায়ে বলার নেই কিছুই ।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমরা যাযাদির নিয়মিত গ্রাহক ছিলাম। আমরা মানে আমার আব্বা। আমিও পড়তাম। প্রেস নোট্স বলে একটা সেকশন ছিল যেটা পড়তে বেশ মজাক লাগতো। তবে যাযাদি অতিরিক্ত আওয়ামী বিদ্বেষী।
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

গতকাল তিনি আধুনিক সাংবাদিকতার গুরু বলে মান্য হতেন, আজ তিনি ভাম হয়েছেন। গতকাল তিনি বিরোধিতা করেছেন আজ খয়ের খাঁ বনেছেন। গতকাল তিনি সম্মান পেয়েছেন, আজ ত্যাজ্য হয়েছেন। তাঁর এই ত্যাজ্য হওয়া কিন্তু পুঁজির (এইচআরসি) কাছে সাংবাদিকেরই পরাজয়, সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের লজ্জাকর দূর্বলতা।
তবে ওপরে যে কয়টা দোষের কথা বললাম, তার বিচারে তাঁর অপরাধ অন্যদের তুলনায় খুবই কম।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

...আর আমাদের মতো কী-বোর্ড-কামলাদের কথা একবার ভাবুন!...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

তথৈবচ! তবে তার পথে? নৈব নৈবচ!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৌরভ এর ছবি

গুডবাই, লাল গোলাপের বুড়ো ভাঁড়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

হিমু এর ছবি

লাল গোলাপ কি বিটিভিতে এখনও দেখায়? যেখানে গোলাপী শার্টের ওপর হলুদ কোট আর বেগুনী পোলকা ডটেড টাই পরে রহমান সাহেব অতিথিদের একটি করে লাল গোলাপ উপহার দিতেন? মনে হতো, সাদা কালো টিভির দর্শকের কতো সুখী।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ফারুক হাসান এর ছবি

তো এই বিদায় বেলায় কেউ কি তাকে একবারও বলেনি-
আপনার জন্য একটি লাল গোলাপ!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বেগুনী পলকা ডটেড টাই...
বাহ্...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বিপ্লব রহমান এর ছবি

নাহ্ ! ১/১১ এর পর ওই কমেডি শো অনেকদিন বন্ধ! মন খারাপ


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

বিপ্রতীপ এর ছবি

তার সম্পাদনায় চটি সাহিত্যে যায়যায়দিন এক নতুন জোয়ার নিয়ে এসেছিল...সেই কথাটা লিখলেন না যে? চোখ টিপি

দৈনিক যায়যায়দিনের সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার বাংরেজি'র যথেচ্ছ ব্যবহার।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

ফারুক হাসান এর ছবি

আমার চাচা নব্বইয়ের গোড়ায় যাযাদির নিয়মিত পাঠক ছিলেন- কিন্তু তিনি তা লুকিয়ে রাখতেন বরাবর- যদি ইচড়েপাঁকা আমরা আবার প্রেমলীলা শিখে ফেলি!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

বিপ্রতীপ এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি
পরিবর্তনশীল এর ছবি

দেঁতো হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জিফরান খালেদ এর ছবি

আমি যায়যায়দিন সাপ্তাহিকের পাঠক ছিলাম... আসলে, মানে, আমি ছিলাম না... আমাদের বাসায় দীর্ঘদিন ধরে নেয়া হতো... প্রেমলীলা ছাড়াও ভালবাসা দিবসের সংখ্যাগুলোর জন্যে আমার শফিক স্যারকে খুবই কাছের কোনো লোক মনে হতো... বড় বুঝদার ছিলো লোকটা...

তার নিজের কলাম দিনের পর দিন-টাও অতো খারাপ লাগত না... প্রায় ভাবতাম, কবে মঈন আর মিলার বিয়া হইবো!!!

হিমু এর ছবি

কিন্তু এই নাটুকে প্রস্থান নিয়ে কি এক পশলা মঈন-মিলা লিখবেন না কেউ?


হাঁটুপানির জলদস্যু

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হিমু ভাই, আপনি একটা নামান।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

এটি খুবই জাঝা প্রস্তাব! হাসি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ফারুক ওয়াসিফ লিখেছেন:

গতকাল তিনি আধুনিক সাংবাদিকতার গুরু বলে মান্য হতেন, আজ তিনি ভাম হয়েছেন। গতকাল তিনি বিরোধিতা করেছেন আজ খয়ের খাঁ বনেছেন। গতকাল তিনি সম্মান পেয়েছেন, আজ ত্যাজ্য হয়েছেন।

সহমত।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমিও ভেবেছিলাম শালা মরলো নাকি। দুঃখই পেলাম বলতে হয়।

সত্যি সত্যিই ভেগেছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। আচ্ছা, এইচআরসি গ্রুপ কি সাবেরদের না?

"(...) ভাই" ইহজনমে পড়া শ্রেষ্ঠ মন্তব্যগুলোর একটা। বিপ্লবের জোয়ার বইয়ে দিলাম আপনার জন্য।

প্রেমলীলা, প্রেসনোট, আইকিউ... বয়স কম হলেও যাযাদি পড়া হত। লেজুড়বৃত্তির লোভ ছাড়তে পারলে এভাবে আকাশ থেকে মাটিতে নামতে হত না।

হ্যারি পটার ৩ দেখার সময় মনে হয়েছিল, ইঁদুরমুখো Wormtail-এর চরিত্রটা শফিক রেহমানকে দিয়ে করাতে পারলে বেশ হত!

বাংলা বানানের ধর্ষন বন্ধ হবার কোন সম্ভাবনা কি তৈরি হয়েছে এখন? নাকি এই উন্মত্ত আধুনিকায়ন চলতেই থাকবে?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

যাবার আগে দেখলাম সবাইকে পৃতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হু...লাল গোলাপের লাস্ট এপিসোড! চোখ টিপি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি খালি তক্কে তক্কে থাকতাম কখন 'বিশেষ' ধরণের লেখা পড়োন যায়। মাঝে মাঝে চিকিৎসা সাময়িকী যোগাড় না হলে যাযাদি দিয়েই মেরে দিতাম কোনো অবসর সময়। হাসি

আহা কী সেই একেকটা সংখ্যা ছিলো, কী সেই একেকটা গল্প ছিলো। বিশেষ করে ভালোবাসা সংখ্যার কথা। অনেকেই ইতোমধ্যে বলে ফেললেও এটা এমনই একটা লিজেন্ড যে বারবার শতবার বললেও পুরাতন হয় না। জিনিষই আছিলো বটে মামু একখান!

আই উইল মিস ইউ গোলাব মামু মন খারাপ
___________
<সযতনে বেখেয়াল>

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ধু.গো.র মন্তব্যে (বিপ্লব) ।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

যাযাদি পড়তাম অনেক কাল ধরেই। শেষদিকে যাযাদি প্রচন্ড আওয়ামী বিদ্বেষী হয়ে যায় এবং বিএনপি প্রীতি বাড়তেই থাকে। শফিক রেহমানের একটা ব্যপার খুব খারাপ লাগতো তা হল তিনি নিজেকে খুব চালাক এবং জ্ঞানী ভাবা, যেন দুনিয়ার অন্য সবাই কিছুই জানে না। আর অদ্ভুত বানান রীতি এবং বাংরেজী ছিল পত্রিকাটির সবচেয়ে খারাপ দিক। নিজেকে মনে হয় নতুন বানান প্রর্বতক হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন বেচারা।

রবিন

তীরন্দাজ এর ছবি

উঁচু মধ্যবিত্তের তথাকথিত এই প্রতিভূর বিদায়ই আমাদের জন্যে মঙ্গলজনক!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

**উলুম্বুশ**
যাযাদির সাথে অনেক ছোটবেলায় পরিচয়। বাসার বড় খালাত ভাই পড়ত। আমাকে যদিও দিতে চাইত না তাও লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে ফেলতাম। সবচেয়ে ভাল লাগত তখন এরশাদ সবে পদত্যাগ করেছে, তাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তার সচিত্র কার্টুন দিত। কারো কাছে কি আছে? থাকলে একটা একটা করে এখানে দেওয়া যায় না নাকি? এরশাদ নাকি আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

উহু...যাযাদির ওই পুরনো সংখ্যাগুলো অনলাইনে নেই।

তবে নিশ্চয় গণগ্রন্থাগারসহ অন্যান্য গ্রন্থাগারে থাকবে। কিন্তু ওইসব কপি স্ক্যান করে আবার অনলাইনে যুক্ত করা সত্যিই বেশ সময়-সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য কাজ।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

হিমু এর ছবি

ইদানীং পাঁচুদার লেখায় "দিনের পর দিন" এর নির্ভুল ফ্লেভার চলে আসায় তাঁকে "বিপ্লব রেহমান" নামে ভূষিত করার আহ্বান জানাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ঞঁ! ;P

---

হের হিমু, আপনার মইন-মিলার সেই রকম পর্ব কোথায়? চোখ টিপি

জলদি লিখুন প্লিজ। ...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ঞঁ! ;P- এসবের মানে কি দাদা? আর আইকনগুলো কি করে যুক্ত করেন একটু কইবেন। আমারো মন চাই যে more....

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হুমম...আগে (বিপ্লব) লেখা শিখতে হবে। তারপর না হয়...ওই ইয়ে আর কী! দেঁতো হাসি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

একটু শেখায়া দেন দয়াপরবশ হইয়া, সেটা মন্তব্য বা msg দু'টি মাধ্যমেই করতে পারেন দাদা।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হুমম...তাহলে প্রথম পাঠ নিন:

-বিপ্লব-মানে আমি আপনাকে পাঁচ দিলাম! হা হা হা হো হো হো

---
(আপনি বলার আগেই মেসেজ দিয়েছি তো। না বুঝলে জানাবেন প্লিজ।)


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।