বাঙ্গালী জাতি কি ‘পোঁতাইয়া’ গেছে?

বিপ্রতীপ এর ছবি
লিখেছেন বিপ্রতীপ (তারিখ: রবি, ০৪/০৫/২০০৮ - ৩:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচল নজরুল ইসলামের আজকের এই দিনে, জননী তোমায় পড়ে মনে লেখাটিতে একটি মন্তব্য করেছিঃ লেখাটা পড়ে শিহরিত হলাম...শেষটায় হতাশ...আসলে আমাদের মতো এসব অধমদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না... । সেই মন্তব্যের সন্ন্যাসী একটি উত্তর দিয়েছেন, ‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বাঙালি জাতি কি এতোটাই "পোঁতাইয়া" গেছে? হতাশ লাগলো আপনার লেখার শেষাংশ পড়ে। তবু আশায় বুক বাঁধতে ইচ্ছে করে যে...
সন্ন্যাসীর এই কথাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই এই ব্লগটা লেখা। প্রথমেই একটি কথা বলে নেয়া প্রয়োজন, আমি হয়তো একটু বেশি হতাশাবাদী। অল্পতেই হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হয় যেকোন কাজে, অন্যভাবে বললে খুব সহজেই পোঁতাইয়া যাই। যাই হোক, আমার ব্যাক্তিগত অবস্থান বা ধ্যান ধারনা সমগ্র বাঙ্গালী জাতির প্রতিচ্ছবি নয় কোনমতেই। তবু সন্নাসীর ধ্যান ধারনাকে পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু কথা বলতে চাই...

আজ থেকে কদিন আগেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যতোটা লাফালাফি হয়েছে তার কি অবস্থা? মিডিয়া, পত্রিকা কিংবা ব্লগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে যে ঝড় উঠেছিল তা এখন নিভে এসেছে কেন? কেন অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষরের পরিমান (যদিও এসবের কোন মূল্য আছে কিনা কে জানে) গত কয়েক মাসে ১০-১৫ টাও বাড়ে না?

বুয়েটে আসার আগে কোন আন্দোলন দেখা বা তাতে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ আমার হয়নি। খুব কাছ থেকে দেখা একটা আন্দোলনের কথাই বলি। একবার বুয়েটের প্রাক্তন ভিসি একদিনের পূজার ছূটি দিয়ে বলেছিলেন, ২০% ছাত্রের জন্য বুয়েট এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে না। আন্দোলনরত দুই ছাত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে উপাচার্যের বুয়েটের সুবোধ বালকেরা তার প্রতি জুতা ছুড়ে মারা ছাড়াও লাগাতার ধর্মঘট ডাকে। আন্দোলনে বাঁধা দেয়ায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্রদলের কর্মীরাও সাধারন ছাত্রদের হাতে চরম মার খায়। পাশের রুমের ভারী গ্লাসের চশমা পড়া যে ছেলেটি বই থেকে মুখ তুলে না সেও চেয়ারের পা ভেঙ্গে ঘৃনায় ছাত্রদল কর্মী পিটায়। অবিশ্বাস্যভাবে পরদিনই আন্দোলন থেমে যায়। উপাচার্য তার এই সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলেও পরদিন থেকে সেই সুবোধ বালকগুলো আবার সুবোধ হয়ে সকাল আটটা থেকে ক্লাসে যায়, ক্লাসটেস্ট দেয়...

সন্ন্যাসী মতো আমারও আশায় বুক বাঁধতে ইচ্ছে করে। তবে এসব ঘটনা আমাকে হতাশ করে। আমাদের সব সাময়িক উন্মাদনাগুলো চোখের সামনে হতাশার সাগরে গিয়ে মেশে...

আমি আগের ব্লগেও এই সাময়িক উন্মাদনা নিয়ে এমন কথা বলেছি... এখনও নজরুল ইসলামের আজকের এই দিনে, জননী তোমায় পড়ে মনে লেখাটি থেকে কিছু কথা তুলে ধরি... আমরা অযোগ্য সন্তানেরা চোখের সামনে রাজাকারদের আস্ফালন দেখি... দেখি আর ল্যাপটপে বইসা হাতি ঘোড়া মারি... তার আগে নিজের নিরাপদ আবাস আর স্ত্রী সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি...

আমি জানি অন্তত আমি এই ল্যাপটপে বসে হাতি ঘোড়া মারা ছাড়া আর কিছু হয়তো করতে পারবো না...এর বাইরে এই আমি কিইবা করতে পারি...কারন, আমি যে পোঁতাইয়া গেছি...একজন পোঁতাইয়া যাওয়া মানুষের হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিইবা করার আছে?


মন্তব্য

রাগিব এর ছবি

আমি জানি অন্তত আমি এই ল্যাপটপে বসে হাতি ঘোড়া মারা ছাড়া আর কিছু হয়তো করতে পারবো না...এর বাইরে এই আমি কিইবা করতে পারি...কারন, আমি যে পোঁতাইয়া গেছি...একজন পোঁতাইয়া যাওয়া মানুষের হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিইবা করার আছে?

আমি অবশ্য এতো হতাশাবাদী নই ... ৫ বছর ধরে দেশের বাইরে থেকে আমার সরাসরি কিছু করার ক্ষমতা বিপ্রর চাইতেও কম। কিন্তু অনলাইনে অনেক কিছুই করা যায় ... কয়েক বছর উইকিপিডিয়াতে লেখালেখি করার পরে এখন যখন দেখি দুনিয়ার সর্বত্র আমাদের লেখা ভুক্তিগুলো ইংরেজিতে সবাই পড়ছে, এমনকি গুগল বুকসেও আমাদের লেখা রবীন্দ্রনাথের জীবনী স্ক্যান করা বইয়ের ভূমিকা হিসাবে যোগ করছে, তখন মনে হয় কিছু একটা করা গেছে। একই ভাবে দেশে ইংরেজি উইকির সিডির প্রচন্ড চাহিদা, অথবা বাংলা উইকির নিবন্ধগুলো অনেকে ব্লগে রেফারেন্স টানে সেটা দেখা -- এসব দেখে মনে হয় আমাদের চেষ্টা কিছু হলেও কাজ হচ্ছে।

হুজুগ খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। উইকি নিয়েও হুজুগ হয়, পত্রিকার লেখা দেখে হুজুগে পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ রেজিস্টার করে, কিন্তু কয়েকদিন পরেই আর কেউ থাকে না ... তাতে সমস্যা হয়নি। কারণ ১০০ জনের মধ্যে ১ জনকেও যদি ধরে রাখা যায়, তাহলে আখেরে অনেক কিছু হয় ... "শিক্ষানবীশ"কে উদাহরণ হিসাবে টানতে পারি ... ওঁর মতো ১ জন যদি ১০০ জনেও আসতে থাকে, প্রজেক্ট এগিয়ে যাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারও তাই।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

বিপ্রতীপ এর ছবি

রাগিব ভাই,
বুয়েটের বড় ভাইদের মাঝে আপনাকে আর শামীম ভাইকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা এবং পছন্দ করি। সম্ভবত এই এই জন্যই। আগেও কোথায় যেন বলেছিলাম আপনার মতো মানসিকতা সম্পন্ন শিক্ষক বুয়েটে আরোও ১০/১৫ জন থাকলে অনেক কিছু পালটে যেত... কিন্তু শুধু আপনাকে দিয়ে যে সমগ্র বুয়েটটাকে মাপা যায় না... তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আমার তেমনটা মনে হয় না...
বিজ্ঞানী.org এর ব্যাপারটি কি লক্ষ্য করেছেন? অনেকদিন ধরে নড়াচড়া নেই...বিভাগগুলোও ঠিকমতো সাজানোর কথা ছিল...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

রাগিব এর ছবি

ধন্যবাদ। বিজ্ঞানী ডট অর্গের কথা জানিনা, হয়তো মশিউর ভাই দেশে গেছেন বলে এই দশা। অনেক কিছুই করার জন্য কিন্তু ১০০ জন লাগবেনা, দুই-একজনই যথেষ্ট। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কথা ধর, সবাই তো ঐ আন্দোলনে যুক্ত হয়নি, কিন্তু আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের ঐ আন্দোলনটা ছিলো বলেই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বইয়ের আনন্দটা বুঝতে পেরেছে।

আর আরেকটা ব্যাপার হলো, ভালো ছাত্রদের উপরে আমার বেশি আস্থা নাই, ভালো ছাত্ররা বরং দেশের জন্য ক্ষতিকর। দেশের খেয়ে দেশের পরে পড়ে দিব্যি নিজের গাড়ি বাড়ির চিন্তা করে থাকবে। দেশের জন্য এসব ভালো ছাত্ররা বেশি কিছু কোনোদিনই করেনি এবং করবেও না। তাই বাংলাদেশের জন্য ভালো ছাত্রের দরকার নাই ... তার বদলে দরকার ভালো মানুষ।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কথা খুবই সত্য। একজন করে মানুষই দরকার সবক্ষেত্রে, সবার আগে।

তাই বাংলাদেশের জন্য ভালো ছাত্রের দরকার নাই ... তার বদলে দরকার ভালো মানুষ।

এই কথাটার দাম লাখ টাকা। এই উপলব্ধিটা আমাদের অনেকেরই, কিন্তু এই স্টেটমেন্টটা দেবার মত অবস্থান আপনার মত ৫-৬ জন মানুষেরই আছে শুধু।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিজ্ঞানী.org এর ব্যাপারটি কি লক্ষ্য করেছেন? অনেকদিন ধরে নড়াচড়া নেই...বিভাগগুলোও ঠিকমতো সাজানোর কথা ছিল...

মশিউর ভাই যেমনে করে উদয় হয়ছিল আবার তেমনি করে বিদায়। এনএসউতে চাকরি পাইলে আর কি লাগে?

কবি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍তোমাকে কেউ গিলে ফেললেও মনে রেখো: বেরোনোর পথ আছে দুটো। হাসি

আমি, ভাই, এই বিশ্বাসের মানুষ। আমি হতাশ সচরাচর হই না।

পুনশ্চ. আমার নিরীহ একটি মন্তব্য আপনাকে ব্লগ লিখিয়েছে দেখে আমার বিস্ময়ের সীমা নেই!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

বিপ্রতীপ এর ছবি

আপনার মতামতকে আমি শ্রদ্ধা করি। এই ব্লগ আপনার প্রতি কোন রাগের বহিঃপ্রকাশ নয়।

অফটপিকঃ আপনার ছড়াগুলো আমার বেশ লাগে। নিয়মিত পড়ি তবে মন্তব্য করা হয় না।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আপনার লেখার কোথাও রাগের লেশমাত্র পাইনি।

আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম, আমার এক নিরীহ মন্তব্য আপনাকে ব্লগ লেখায় উদ্বুদ্ধ করেছে দেখে আমি বিস্মিত।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

নানা ঘটনাই আমাদের প্রতিদিন হতাশ করে দিচ্ছে। তবে আমাদের সবার মধ্যে যে ঘৃণার বারুদ জমে স্তুপ হচ্ছে, তার বহির্প্রকাশ একদিন হবেই এই বিশ্বাস নিয়ে আমি আজো গৃহস্ত জীবন কাটাই। আর অপেক্ষা করছি কবে আসবে সেই প্রহর। কিংবা আমরা সবাই মিলে আনবো।

---------------------------------------------------

আগুপিছু না জেনেই মন্তব্য করে ফেললাম!

পান্থ রহমান রেজা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জাতি পোতায়া যায় নাই... ঠিক সময়ে এই জাতি ঠিকই জ্বইলা উঠবো... উঠছেও... এই দেশে ব্যর্থ আন্দোলনের চেয়ে সফল আন্দোলনের সংখ্যা বেশি। রাজাকারের বিচার হয় নাই... সেই আন্দোলন ব্যর্থ তাও কিন্তু বলা যাবে না... ইহা চলমান আছে। মাঝে থামছিলো, কিছুদিন আগে আবার শুরু হইছে... এখন আবার ঢিল পড়ছে... কিন্তু আবার তা বাড়বো... বাড়বোই... বিচার একদিন হবেই... এই জনগনই করবে... নিশ্চিত। আমরা না পারি আমাদের সন্তানেরা হইলেও করবে।
আমাদের সন্তানদের মনোমাঝে এই চেতনা ছড়ায়া দেওয়াটাও কিন্তু আন্দোলনেরই একটা বড় অংশ... সেইজন্য রাজপথে নামতে হয় না।

হতাশ হইয়ো না যদি মানুষ হও...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বিপ্রতীপ এর ছবি

আপনার আগের লেখার সাথে কথাগুলো দ্বিমুখী হয়ে গেলো না? অবশ্য আমাদের চমৎকার বিষয়টা কি জানেন। আমরা নিজেরা নিজেদের নিয়ে হতাশায় ভুগি, কিন্তু অন্যকে হিমালয় সমান আশাবাদী কথা শুনাতে পারি। আমাদের এই বেশ ভালো একটা গুন আছে।

চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমাকে রাজপথে নামতে হয় না। কারন আমি সুশীল সমাজের অন্তর্ভুক্ত। আমার কাজ হচ্ছে মাঝে মধ্যে পরিস্থিতি গরম হলে চেতনা ছড়ানো...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কালকে খুব হতাশ লাগছিলো... কিন্তু আজকেই আবার টগবগানো। মাঝে মাঝে হতাশ হই... কিন্তু জানি একদিন না একদিন হবেই... কেউ না কেউ পারবেই... আমাকে নিয়ে হতাশাটা আমি পুরো জাতির ওপর চাপিয়ে দিতে পারি না। এই জাতি অনেক শক্তিমান।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঙ্গালী যে হুজুগে সবকিছু করে সেটা আমিও বুয়েটে এসে বুঝেছি...তবে আমিও রাগিব ভাইয়ের মত আশায় বুক বাঁধতে চাই...

রিজভী

--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কিছু একটা করতে চাই।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

বিপ্রতীপ এর ছবি

মাঝে মধ্যে এসব দেখে কষ্ট পাই তবু কিছু একটা করতে চাই... জানি তা কখনই সম্ভব নয়। কারন, আমাদের হাত-পা বাধা...চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না। ট্যাক্সিচালক অন্যায়ভাবে ২০ টাকা বেশি চাইলে ইচ্ছে করে গালে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ বসিয়ে দেই। কিন্তু পারি না...কারন আমার যে গন্তব্যে পৌছাতে হবে...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আমরা আসলেই কারণ বিহীন হতাশ নই।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

বিপ্রতীপ এর ছবি

জানি দেশের জন্য ভালোবাসা ছাড়া আমার তেমন কিছু করার ক্ষমতা নেই। তবু কিছু কথা বলি। বাঙ্গালী জাতি মাত্র নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। আমার জন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ১৫ বছর পর। সেখানে স্বাধীনতার এতোটা বছর পরেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে আমরা বলি, আমি না দেখে যেতে পারলেও আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখবে। হায়রে আশা...সেই আশায় দুই দিন পর পর চেতনার আলো ছড়াতে ছড়াতে নিভে যাই তারাবাতির মতো। স্বাধীনতার ব্যাপারে যদি একটি জাতি আপোষহীন হতে পারে, বিরামহীন যুদ্ধ করতে পারে তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে কেন তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না? কে জানে হয়তো এক প্রজন্ম আরেক প্রজন্মের আশায় এভাবেই বসে থাকবে, এভাবেই একদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নটিও লীন হয়ে যাবে। সম্ভবত এই কারনেই আজোও যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফালন শুনতে হয়, এদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই...। কারন ওরা বুঝে গেছে বেঁচে থাকতে ওরা হয়তো কেউ বিচারের সম্মুখীন হবে না...

আমার এই ব্লগের কোন কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

তারেক এর ছবি

একেবারেই হতাশ লাগে না তা না। তবে বিশ্বাস করি সময়ে ঠিকই জ্বলে উঠবে মানুষ... এইরকম চিন্তাই তো আমরা করি... অন্ততঃ এই ভাবনাটারে আমি স্যালুট জানাই। টুকটাক হতাশা থেকেই আশাবাদী স্বত্ত্বা জাগবে... জাগবেই।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

ইরতেজা এর ছবি

রাগিব ভাই একটা দারুন কথা বলেছেন ত। ভালো ছাত্ররা আসলেই দেশের জন্য ক্ষতিকর। কত কত ভালো ছাত্র বিদেশে পড়াশুনা বা চাকরী করে গিয়ে দেশে ফিরে আসেনি। কর কর বুয়েট বা বিআইটির ছাত্র/ টিচার পিএইচডি করার জন্য দেশের টাকায় বিদেশে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। যে মেধা দেশের কাজে লাগে না সেই মেধার কি দাম?

_____________________________
টুইটার

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো ছাত্ররা আসলেই দেশের জন্য ক্ষতিকর।
এটা কেমন কথা হলো?

যে মেধা দেশের কাজে লাগে না সেই মেধার কি দাম?

কাজে লাগানোর ক্ষেত্রটা বানান আগে।

আলগমীর

রাগিব এর ছবি

এটা কেমন কথা হলো?

দুঃখ থেকে বলি এই কথাটা। Return-on-investment হিসাব করলে এটাই মনে হয়, "ভালো ছাত্র"দের পেছনে invest করে দেশের প্রাপ্তিটা অনেক কম, "ভালো ছাত্র"দের দলে পড়েনা যারা, তারাই দেশের জন্য অনেক বেশি কাজ করে।

কাজে লাগানোর ক্ষেত্রটা বানান আগে।

আমি একটি পরিস্কার করতে চাই, মেধাবীদের বিদেশে যাওয়া নিয়ে কিছু বলছিনা। বলছি অনেক তথাকথিত মেধাবীদের মানসিকতা নিয়ে। নিজের ও পরিবারের জীবনের উন্নতি সবাই করবে, তাতে আমার বলার কিছু নেই। বরং বাংলাদেশের কেউ বিদেশে যোগ্যতাবলে জায়গা করে নিতে পারলে সেটা আমাদের গর্বেরই বিষয়। প্রকৌশলী দিদার, অথবা আবুল হুসামের নাম শুনলে ও তাদের অবদান দেখলে আনন্দ হয় অবশ্যই। তাঁরা কেনো দেশে যাননি, তা বলবোনা মোটেও।

কিন্তু বিদেশে এসে যখন অনেকেই দেশের কথা বেমালুম ভুলে যায়, নিজের গাড়ি বাড়ি ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না, লাখ টাকার যে শিক্ষা দেশ বিনা মূল্যে দিয়েছে সেকথা পুরোই ভুলে যায়, -- তখন তাদের পেছনে দেশের এই বিনিয়োগ পুরোটাই পানিতে পড়েছে, সেটাই মনে হয়। আর সেসব "ভালো ছাত্র"দের বদলে দেশের ৫ জন সাধারণ ছাত্রের পেছনে দেশের বিনিয়োগ থাকলে হয়তো বাংলাদেশের প্রাপ্তিটা আরো বেশি হতো।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ড. মশিউর রহমান [অতিথি] এর ছবি

আমি কিন্তু উধাও হয়নি। বিজ্ঞানী.org আগের মতই চলছে, তবে যেভাবে উঠে পড়ে লাগার কথা ছিল, সেভাবে হচ্ছেনা। ছাত্র/ছাত্রী দের পড়িয়ে সময় করে উঠতে পারছিলাম না। তারপরে আমার যাত্রা থেমে থাকেনি। এখন বিজ্ঞানী.org এ একাডেমি অংশটি সংযোগ করেছি। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলির উপর ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরী করছি। যারা অংশ নিতে চান তারা স্বাগতম, নতুবা একলা চলো রে- এর নীতি ধরেছি।

ড. মশিউর রহমান
২১ অক্টোবর ২০১০
(লিখাটি লিখছি জাপানে বসে)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।