বইমেলায় বই বিক্রি বন্ধ হোক!

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: রবি, ০৭/০৩/২০১০ - ৫:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একুশের বইমেলায় বাংলা একাডেমী একাই (বাংলা একাডেমীকে প্রকাশনা সংস্থা ধরলে) বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার বই। লেখক-প্রকাশক-প্রচ্ছদশিল্পী-ছাপাখানা-বাধাইকর সবাই এই মেলার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে। এর পর সবাই এক সাথে বেকার।

এর ফল যা হয়: পাঠক আর নতুন বই কেনেন না। নতুন কোন বই বেরও হয় না। সব চেয়ে ক্ষতির শিকার হয় পুরো শিল্প। মেলার সময়টা কারো চোখে ঘুম নেই। আর তারপর সারাটা বছর মাছি তাড়াতে হয়। এর সাথে নিজের জীবিকা নির্ভর করে এমন লোক কেবল বাংলা একাডেমীতেই আছে।

পত্রিকার পাতা, দূরদর্শনের পর্দা মেলায় প্রকাশিত বইয়ের উপস্থাপন বা বিজ্ঞাপন দিয়ে শেষ করতে পারে না। প্রতিটা বইয়ের ঘোমটা খোলার অনুষ্ঠানে যেতে পারে না অনেক আগ্রহী পাঠক। পাঁচ মিনিটে শেষ করতে হয় মোড়ক উম্মোচন। পাঠক লেখকের আলাপচারিতা এই পরিস্থিতিতে অসম্ভব।

উল্টোদিকটা ভাবতে গেলে ভয় হতে পারে। বই মেলায় বই বিক্রি হবে না! কিন্তু মেলাটা যদি কেবল বই উপস্থাপনের বা বই পরিচিতির হয়, লেখক তার বই থেকে পড়ে শোনাতে পারেন। পাঠক লেখককে প্রশ্ন করতে পারেন। বই এবং লেখকের পরিচিতি বইয়ের বিষয়, সব নিয়ে একটু কথা বলা যায়।

বইয়ের প্রাপ্তিস্থান বা বিপণন মানে বইটি কোথায় পাওয়া যাবে সেটা পাঠক জেনে নিতে পারেন। বই কেনাটা আর আজকেই শেষ করতে হবে না। এতে একটা শক্তিশালী বিপণন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। পাঠক বিবেচনা করার সুযোগ পান কোন লেখকের কোন বইটা তিনি কিনবেন। সব গুলো প্রকাশনা সংস্থা তাদের প্রকাশিত বইয়ের তালিকা, সংক্ষিপ্ত বই এবং লেখক পরিচিতি সহ বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে তুলে দিতে পারেন পাঠকের হাতে।

এতে করে বই আর ঐ মেলার সময়টাতেই লিখিত, পঠীত, বিক্রীত বা প্রকাশিত হতে হবে না। বইয়ের দোকানেও প্রতিদিন ক্রেতার ভীড় না হলেও অন্তত যাতায়াত হবে। একদিনে অনেক আয়ের চেয়ে প্রতিদিন কিছু কিছু বই বিক্রি হলে এর উপর নির্ভর করে বাঁচার অন্তত চেষ্টা করা যাবে। তৈরী হবে সার্বক্ষনিক বই নির্ভর পেশা।

বইয়ের বিশাল বহর বহন করতে না হলে বই মেলাটা দেশের বিভিন্ন শহরে করা যাবে। সেটা খুব জরুরী। ঢাকা কেন্দ্রীক বাংলাদেশে থেকে আমাদের বের হতে হবে।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ঢাকা কেন্দ্রীক বাংলাদেশে থেকে আমাদের বের হতে হবে।

আজকে হিমু ভাই একটা পোস্ট করেছেন ঠিক একই আকুতি জানিয়ে। তবে, সেটা অন্য প্রসঙ্গে।

আর, বইমেলার ব্যাপারে আপনার কথার সাথে একমত। একমাসের হুড়োহুড়িতে পাঠকদের উপরও চাপ পরে। সারাবছর টাকা জমিয়ে রাখতে হয়, কোন কারণে বইমেলার আগে আগেই টাকা খরচ হয়ে গেলেই সর্বনাশ!! পরে কোন একটা নির্দিষ্ট বই সংগ্রহ করতে অনেক ঝামেলা করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে হয়ত সেটা আর পাওয়াই যায় না। মন খারাপ
সারা বছর জুড়ে একটা আয়োজন থাকা উচিত।

- মুক্ত বয়ান

পুতুল এর ছবি

ঢাকার বাইরে যারা থাকেন, তাঁদের কথা ভেবে দেখুন। বইটা তাঁরা কোথায় কিনবেন!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ভাঙ্গা পেন্সিল [অতিথি] এর ছবি

আমি এটা আরেকভাবে ভাবতে চাই।

বিসিএস কম্পিউটার সিটিকে উদাহরণ হিসেবে দেখুন। এখানে নানা ব্রান্ডের কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বিক্রি হচ্ছে সারা বছর। সব রকম ডীলারও এখানে ব্যবসা করছে। আবার বছরে দুয়েকবার এখানে মেলাও হয়।

এই সিস্টেমে বই বিক্রি করা যায়। কিছু বইয়ের দোকান আজিজে তো কিছু বাংলাবাজার...এরকম না করে একটা বড়সড় কিছুর কথা ভাবা যায়। সেখানে নিয়মিতই বই বিক্রি-মোড়ক উন্মোচন হলো, সেমিনার টেমিনার হলো, পাঠক-লেখক আড্ডা হলো, চাইলে মেলাও হতে পারে, কিংবা বাংলা একাডেমি চত্বরেও মেলা হতে পারে। কতো কিছুরই তো মার্কেট হচ্ছে...বইয়ের হতে দোষ কি?

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

উত্তম প্রস্তাব। সাধুবাদ।

নাশতারান এর ছবি

বইয়ের মার্কেট কি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সম্ভব? এটা শপিং মলের যুগ। যেখানে আমদানিকৃত জামা-জুতো-সুগন্ধী-ঘড়ি বিক্রি হয়। যারা এই মার্কেটগুলো বাঁচিয়ে রেখেছেন তারা বাংলা বই পড়েন না। যারা বাংলা বই পড়েন তারা একটা গোটা বইয়ের মার্কেট টিকিয়ে রাখতে সমর্থ কীনা জানিনা। তাই যদি হবে তবে আজিজ সুপার মার্কেটে বইয়ের বাজার দিনে দিনে সঙ্কুচিত হচ্ছে কেন?

বইমেলাকে দুষিয়ে লাভ নেই। মানুষের বই পড়ার প্রবণতা কমে গেছে। যারা বই পড়েন তাঁরা সারা বছরই কেনেন। বইমেলায় বেশি কেনেন আরকি। বইমেলায় বই বিক্রি বন্ধ হলেই মুদ্রণব্যবসা সামলে উঠবে বলে মনে হয়না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ভাঙ্গা পেন্সিল [অতিথি] এর ছবি

যারা বই পড়েন তাঁরা সারা বছরই কেনেন। বইমেলায় বেশি কেনেন আরকি।

কথায় একটু হলেও ভুল আছে। কমপক্ষে আমি এবং আমার আশেপাশের অনেককেই দেখুন না! আমি সারা বছর পড়তে পারার মতো বই মেলায় কিনে ফেলি। আর সারা বছর হাতের কাছে সেবার বই পাই, সেগুলো পড়ি। হু.আ কিংবা মু.জা.ই. এর বই দামের জন্য ধরতে পারি না দেখে ধার করে পড়ি। সুতরাং সারা বছর ঢাকার মধ্যেই কোথাও আইডিবির মতো কিছু একটা থাকলে মন্দ হয় না। কমসে কম ঘুরতে আসার ছলে হলেও অনেক বই বিক্রি হবে, বই পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়বে।

বইয়ের মার্কেট কি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সম্ভব? এটা শপিং মলের যুগ।

সরকার কতো জায়গায় টাকাপয়সা পানিতে ফেলে, এইবার নাহয় আন্দাজেই ফেলুক না...পানিতে নাও তো পড়তে পারে। আপাতত কম ভাড়ায় সে মার্কেটে দোকান ভাড়া দিক। একদিন হয়তো আর্থিকভাবে লাভ আসা শুরু হবে...মননের যে উন্নতি এখন থেকেই শুরু হবে সে লাভের কথা না-ই বা বললাম!

শাফক্বাত এর ছবি

নীলক্ষেতকে একটু মোডিফাই করলেই কিন্তু বইয়ের মার্কেট হয়। গতকাল আমার এক প্রবাসি বান্ধবী বলছিল "ইস বইমেলা মিস্‌ করলাম দকখি দেশে গিয়ে নীলক্ষেতে যাবো।" পরেই আবার বল্লো "কিন্তু নতুন লেখকের নতুন বইয়ের সমাহার কি সেখানে বইমেলার মত পাবো?"
বইমেলায় কিন্তু স্টলগুলো আপনাকে যেভাবে টানে সেভাবে অন্য দোকানে হয়না। বিশেষ করে নবাগত লেখকের বইগুলো বইমেলার বাইরে কেনাও হয়না কারণ আমরা তাদের সেভাবে চিনিনা।
অন্যদেশে কি বইয়ের মার্কেট আছে? আমার ধারণা ঠিকমত মার্কেটিং করা হয়না বলেই বই-শিল্পের আজ এই অবস্থা। মানুষ কেবল মাত্র মার্কেটিং এর যাদুতে আজকাল কত্তকিছু কিনে, সেখানে বই কিনবেনা??
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

নাশতারান এর ছবি

সরকার কতো জায়গায় টাকাপয়সা পানিতে ফেলে, এইবার নাহয় আন্দাজেই ফেলুক না...পানিতে নাও তো পড়তে পারে। আপাতত কম ভাড়ায় সে মার্কেটে দোকান ভাড়া দিক।

হো হো হো
মামার বাড়ির আবদার !!

ভাই, সরকারের সুকুমারবৃত্তি এতোটা প্রবল ভাবতে পারলেন আপনি?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হিমু এর ছবি

সরকার কিন্তু এ ধরনের প্রকল্প আগ্রহ নিয়ে শুরু করবে। বড়সড় নির্মাণ কাজ হবে, ছাত্রলীগের ক্যাডাররা টেন্ডার পাবে, উদ্বোধন করার সময় ফিতা কেটে প্রধানমন্ত্রী বলবেন আমরা এ দেশে জ্ঞানের চর্চা বাড়িয়েছি, দেখুন আমরা বঙ্গবন্ধু পুস্তকপল্লী নির্মাণ করেছি ... । কয়েক মাস পর ক্যাডাররা একটু একটু করে চাপ দিতে দিতে আর অর্থনীতির সরল সূত্রে কমভাড়ার বইয়ের দোকান উঠে গিয়ে বেশি ভাড়ার ফতুয়ার দোকান বসা শুরু করবে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পুতুল এর ছবি

বাংলাদেশে অন্তত বইয়ের ব্যপারটা এমন যে, পছন্দের বইটা খুঁজে পেলে পাঠক ধন্য হবেন। সে ক্ষত্রে দেশের কোথাও একটা মাত্র বড় বইয়ের মার্কেট থাকতেই পারে। যেখানে সব বই সব সময় পাওয়া যাবে। তাতেও কিন্তু যেখানে দোকানটা হলো সেই এলাকার বাইরের মানুষ বইটি সংগ্রহের জন্য ঐ নির্দৃষ্ট মার্কেটে যেতে হবে। কিন্তু লেখার কাগজ বা বলপেন যেখানে সেখানে পাওয়া যায়। বই তেমন সহজ প্রাপ্য হলে ক্ষতি কী? বিপনন ব্যবস্থাটা আরো একটু গতিশীল হতে হবে এই যা। সব দৈনিক পত্রিকাতো টেকনাফ এবং তেতুলিয়ায় একই দিনে পাওয়া যায়।বইটা কেন যাবে না?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ওডিন এর ছবি

আমি আবার সারাবছরই কিছু না কিছু বই কেনার চেষ্টা করি- বরং বইমেলায় সময়ই দেখি বই কম কেনা হচ্ছে- ভীড় আর ধুলোর মধ্যে ধস্তাধস্তি করে বই তো দেখাই যায় না। আর কিনলেও একটু ভারিগোছের বইপত্র, যেগুলো ডিস্কাউন্টে দেয়া হয় সেগুলো কিনে ফেলার একটা চেষ্টা থাকে। সাধারনভাবে আমি বইমেলায় বের হওয়া বইগুলো কিনি মেলা শেষ হওয়ার পরে- কয়েকমাস ধরে। আজকেও যেমন আজিজে গিয়ে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের ওড়াউড়ির দিন কিনে ফেললাম।

তবে আইডিবি'র মত একটা ডেডিকেটেড বইয়ের বাজার থাকলে কিন্তু মনে হয় বেশ হয়। আপনাদের মনে আছে কিনা জানিনা- প্রথম প্রথম যখন আইডিবিতে কম্পিউটারের মার্কেট চালু হয় তখন অনেকেই তেমন আশাবাদি ছিলো না। কিন্তু আজকে দেখেন আইডিবি ছাড়া লোকজন কিছুই বুঝে না, আমি নিজেই সামান্য একটা কেবল কিনতে হলেও বাসার উলটোদিকের এলিফেন্ট রোড ফেলে আগারগাঁও দোউড়াই।

বইএর ক্ষেত্রেও আমি সেইরকম করতে রাজি আছি। হাসি
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

মুস্তাফিজ এর ছবি

সারা বছর যে বই বিক্রি হয়না সে কথাটা আসলে ঢালাও ভাবে বলা যায়না, তবে একুশে বইমেলা কে ঘিরেই আমাদের প্রকাশনা শিল্প আবর্তিত সেটা ঠিক। তাই বলে বইমেলায় বিক্রি বন্ধ রেখে বই কেনার অভ্যাস বছর জুড়ে ছড়িয়ে দেবার পরিকল্পনা তুঘলকী সিদ্ধান্ত হতে পারে।
বই কেনার অভ্যাস তৈরির জন্য বই পড়ার অভ্যাস যাতে গড়ে উঠে সেদিকটাতে নজর দেওয়াটাই প্রথম দরকার।

...........................
Every Picture Tells a Story

পুতুল এর ছবি

পৃথিবীর সব চেয়ে বড় বইমেলাটা শেষ হয় একটা বইও না বিক্রি করে। তাদের ব্যবসা বা পাঠাভ্যাস কমেছে বলে শুনিনি। বইমেলায় তাঁরা কেবল বিনে পয়সা বইয়ের কেটালগ বিলি করে।
বইটা হাতে না পেলে পাঠের আগ্রহ তৈরী হয়না। পাঠকেরমৃত্যু নামে একটা গল্প পড়েছিলাম। কোন এক জংশনে বইটা দেখে পছন্দ করেও কোন কারণে ভদ্রলোক বইটি কিনতে পারেন নি। কিন্তু কোথাও পেলে একবার নিশ্চই পড়বেন বইটা, এমন একটা পন করেছিলেন। অনেক বছর পরে বইটা কিনে আর পড়ার আগ্রহ হলো না সেই ভদ্র লোকের।

বই সহজ পাচ্য না হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু সহজ লভ্য হতে হবে। না হলে পড়ার অভ্যাস তৈরী হবে না। প্রতিটি থানায় কমপক্ষে একটি লাইব্রেরী দরকার। প্রত্যেক স্কুলে একটি কার্যকরী পাঠাগার দরকার। ঢাকায় বইমেলা হলে সিলেটের পাঠকের পড়ার অভ্যাস বাড়ার কোন কারণ দেখি না।

সে জন্য বই মেলাটাও একেক বছর একেক শহরে হওয়া দরকার।
যেহেতু ব্যাপারটা জাতীয়, তাই ঢাকার মানুষ বই মেলার ভীড়ে খাবি খাবে আর বরিশালের মানুষ টিভিতে উদ্ভদনী অনুষ্ঠান দেখেই বই কিনতে ঢাকায় এসে আরো ভীড় বাড়াবে সেটা সমর্থন করা মুস্কিল। কিন্তু আমার মতে কী আসে যায়।
ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই কথাটা বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মুস্তাফিজ এর ছবি

বইমেলা আর বই পড়ার অভ্যাস দুই জিনিষ। পড়ার অভ্যাস থেকেই কেনার অভ্যাস তৈরি হয়। ঢাকায় মেলা হলে যে পরিমাণ বিক্রি হবে মফস্বলে বা ঢাকার বাইরে সেটা হবেনা, এমনকি ক্যাটালগের মেলা বসিয়েও যে বিক্রি অনেক বাড়ানো যাবে সেটা ঠিক না। একমাত্র পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার মধ্যেই বইয়ের বাজার বাড়ানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে একটা কথা জানিয়ে রাখি, আমাদের স্কুলে নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি প্রতিদিনের দিনপঞ্জি লিখতে হতো, কমপক্ষে এর প্যারা। এই দিনপঞ্জি লেখাটাই আস্তে আস্তে আমার স্কুলের বইয়ের বাইরের বই পড়ায় উৎসাহ যুগিয়েছে। স্কুল ছাড়ার পরও অনিয়মিত দিনপঞ্জি লিখতাম যা আস্তে আস্তে একসময় বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু পড়ার অভ্যাস যেটা তৈরি হয়েছিলো সেটা হারায়নি।

...........................
Every Picture Tells a Story

পুতুল এর ছবি

একমাত্র পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার মধ্যেই বইয়ের বাজার বাড়ানো সম্ভব।

সহমত। সেটা করতে হলে তো পাঠকের হাতের নাগালে বই দিতে হবে। পড়তে বই না পেলে পাঠিভ্যাস কেম্নে হবে!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ফারুক হাসান এর ছবি

সারাবছর বই পাওয়ার একটা জায়গা ছিল আজিজ। এখন সেখানে সারা বছর পাওয়া যায় টিশার্ট।
আইডিয়া হিসেবে কাগজে বই না বের করে টিশার্টে ছাপলে বোধহয় সারাবছর কিছু বই পাওয়া যাবে আজিজ থেকে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

১.
বাণিজ্য বিচারে প্রকাশনা শিল্পর একটা ক্ষুদ্র অংশই একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকে। প্রকাশনার মূল বাণিজ্যটা পাঠ্যপুস্তকে। পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে বেশ ভালোই রমরমায়। ফলে তাদের চিন্তা খুব বেশি নেই। বইমেলায় দেখবেন তিন ইউনিটের দোকান নিয়ে বসে আছে কিছু দোকান, অথচ তাদের দোকান থেকে বই বিক্রি হয় না। তাইলে তারা চলে কেম্নে? কারণ তাদের মূল বাণিজ্য পাঠ্যপুস্তকে।

এমনকী যারা সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাতে উচ্চকিত, তাদেরও পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনার ব্যবসা আছে।

২.
নতুন একটা প্রকাশনী প্রজন্ম গড়ে উঠছে, যারা পাঠ্যপুস্তক ব্যবসার বাণিজ্যে যায় না। তারা শুধু সৃজনশীল বই-ই প্রকাশ করে। মূল সমস্যাটা এদের। এদের বই শুধু বইমেলায় আর আজীজেই বিক্রি হয়। তাদের পাঠকও নির্দিষ্ট। পাঠক বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ তারা নেন নাই। উল্টো এক ধরণের উন্নাসিকতা কাজ করে অধিকাংশ প্রকাশকেরই। 'পাঠক অরুচিকর, তারা খালি আজেবাজে হুআ মিলনের বই কিনে...' এসব বলতেই তাদের উৎসাহ বেশি। পাঠকের নাগালে যাওয়ার চেষ্টাটাকে তারা সবসময়ই স্থুলরুচির ভেবে এসেছেন। বসে থেকেছেন পাঠক তৈরি হয়ে তাদের কাছে এসে তাদেরকে ধন্য করে দেবে। তারা পাঠকের কাছে যাবেন না।

৩.
সারাদেশে একটা পুস্তক বাণিজ্য আছে। সারাদেশেই বই সাপ্লাই হয় একটা চেইনের মাধ্যমে। নেটওয়ার্ক আছে, তা বাংলাবাজার কেন্দ্রিক। শুধু পাঠ্য আর নোট পুস্তক না। গল্প উপন্যাস সাহিত্য অনুবাদ, সব বই-ই যায়। কিন্তু সেই নেটওয়ার্কে ঢুকতে আগ্রহই প্রকাশ করেনি বা করেনা অনেক প্রকাশক। ফলে তাদের দৌড় আজীজ মার্কেট কেন্দ্রিক। বইগুলো সারাদেশের দোকানগুলোতে পৌঁছানোর উদ্যোগ কেউ নিছে বইলা আমার জানা নাই। অথচ সারাদেশে বইয়ের দোকানের কোনো কমতি নাই। এবং সারাদেশেই পাঠকেরও কোনো কমতি নাই।

৪.
আমাদের প্রকাশকদের আগে ভাবতে হবে মার্কেটিং বিষয়টা। কীভাবে সারাদেশে বই পৌঁছানো যাবে। পাঠকের নাগালে বই রাখা যাবে সেই চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই মেলা কেন্দ্রিক বই বিক্রি কমবে।

৫.
সারাদেশে বই ছড়ানোর ব্যবস্থা না করে একুশে বইমেলায় বই বিক্রি বন্ধ করা ঠিক হবে না। আগে প্রকাশকগরে মার্কেটিং শিখান।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মন্তব্যে বিপ্লব।

প্রকাশকেরই উচিত পাঠকের কাছে বইকে নিয়ে যাওয়া। পাঠকের প্রাথমিক দরকার সময় কাটানো, রূচি ইত্যাদি গড়ে উঠতে সময় লাগে। আমি একটা সময় হাতের কাছে যে বই পেতাম, তা-ই পড়তাম। সেটা সেবা প্রকাশনীর বই হোক আর ম্যাক্সিম গোর্কির অনুবাদ। পাঠকের পাঠাভ্যাস আর রূচির ওপর যেহেতু প্রকাশকের রুটিরুজি নির্ভর করে, সেহেতু দায়টা তাদেরই। যেমন, আগে মেজাজ খারাপ থাকলে নেটে কার্ড খেলতাম, এখন ফার্মভিলে খেলি। ইয়াহু ০, ফেসবুক ১। চোখ টিপি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক এর ছবি

মার্কেটের প্রস্তাব মনে ধরল, যদিও আমিও সন্দিহান তা কতটুকু সফল হবে বই-বিক্রিতে জোয়ার ফিরিয়ে আনতে। ফারুক ভাইয়ের কথা শুনে না হেসে পারলাম না, তবে উনি যা যোগ করতে ভুলে গেছেন তা হল মেয়েদের পোশাক, সেদিন গিয়ে দেখলাম সেগুলোও বাড়ন্ত, আক্ষরিক অর্থেই।

@ নজরুল ভাই- প্রকাশকের তাহলে কি করা উচিত? স্থূল-সূক্ষ্মের বিচারে না গিয়েই বলা যায় বাংলাদেশি পাঠকদের বইয়ের রুচি এক পেশে হয়ে গেছে, কিছু হাল্কা গোছের সামাজিক, কি হাসির বই ছাড়া তাদের অন্য বই কিনে পড়তে সাধ জাগে না। তবে কি প্রকাশকরা শুধু তেমন বইয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে? আরেকটা হতে পারে, দুই পদেরই বই রাখা হল, কিন্তু তা ত করা হচ্ছেই। সব স্টল এই ত মোটামুটি 'সাধারণ' রুচির বই দেখতে পাই। আর একটা কথা হল, সারা দেশে পাঠকের কমতি নেই? না থাকলে ব্যবসায়ীদের বইয়ের ব্যাপারে এত অনাগ্রহ কেন? কমতি আছে বলেই ত মনে হয় প্রকাশকরা আজও মার্কেটিং এর উত্তম পথ খোঁজেন না, তার চেষ্টাও করেন না।

ফারাবী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আগে পাঠকের নাগালে বই দিতে হবে। চোখের সামনে বই রাখতে হবে। তা না করে 'পাঠক এসব পড়বে না, তারা খ্রাপ রুচির...' এভাবে করলে তো হবে না। প্রকাশক ব্যবসায়ী, বই বেচার জন্য তাকে যেতে হবে পাঠকের কাছে। পাঠকের কী দায় পড়েছে? সাঁতার শিখতে হলে আগে পানিতে নামতে হবে। ডাঙ্গায় বইসা বইসা কান্দাকাটি করলে হবে না।

সারাদেশে বইয়ের ক্রেতা নাই? এক বইমেলার ২৮ দিনে ত্রিশ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়... এটা খুব কম মনে হইলো? এই বইমেলায় শুধু বই কিনতে সারাদেশ থেকে লোকজন আসে ঢাকায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শাফক্বাত এর ছবি

পূর্ণ সহমত
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমাদের প্রধান সমস্যা হইলো আমরা প্রথমেই ধারণা করে নেই যে এদেশে আমরাই বিরাট বুদ্ধিজীবী, আর কেউ আমাদের ধারে কাছে জ্ঞান রাখে না, তারা এসব বইয়ের বুঝবো কী? পড়বো তো নাই।

চেষ্টাটাই আমরা করতে নারাজ। এজন্যই কিছু হয় না। ধুর...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নাশতারান এর ছবি

মন খারাপ

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পুতুল এর ছবি

আগে পাঠকের নাগালে বই দিতে হবে। চোখের সামনে বই রাখতে হবে। তা না করে 'পাঠক এসব পড়বে না, তারা খ্রাপ রুচির...' এভাবে করলে তো হবে না। প্রকাশক ব্যবসায়ী, বই বেচার জন্য তাকে যেতে হবে পাঠকের কাছে। পাঠকের কী দায় পড়েছে? সাঁতার শিখতে হলে আগে পানিতে নামতে হবে। ডাঙ্গায় বইসা বইসা কান্দাকাটি করলে হবে না।

হক কথা নজরুল ভাই।

শাহজালাল নামে আমাদের এক বড় ভাই, ফেরী করে বই বিক্রি করতো। দুই হাতে যে কয়টা বই ধরে সে কয়টাই তার সম্বল। বড়দিদি, গীতাঞ্জলী, অগ্নিবীণার পাশাপাশি মোহাম্মদী খোয়াবনামাও থাকতো তাঁর হাতে। তার সংসার দিব্যি চলে যেতো। হাতের নাগালে পেলে অনেক পাঠক এম্নিই একটা বই কিনে। আজিজে মহাকাব্য রেখে রংপুরে গিয়ে পাঠককে গাইল পাইরা লাভ কী! শেষ বিচারে বইটা শুধুই একটা পন্য। এই বিবেচনা মাথায় না রাখলে চলবে কেনো। বই না পড়ে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ মহা সুখে আছে। এখন আপনারটা পয়সা দিয়ে কিনবে কেন, সেটা না হয় নাই বললেন। কিন্তু বইটা অন্তত পাঠকের হাতে তো দিন। না সেটা না করেই পাঠককে মূর্খ বলে ব্যর্থতাটা আতলামির আড়ালে ঢাকবো। এই হলো আমাদের বানিজ্যিক কৌশল।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অতিথি লেখক এর ছবি

যা বলছেন ভাইয়া, বই পড়লেই কেউ 'বুদ্ধিজীবি' হয় না( নাইলে ত আমিই হয়া যাইতাম, কি সর্বনাশ!), কিন্তু আমরা সবাই কমবেশি ভাব নিতে পছন্দ করি।

আর বই এর সার্কুলেশন এর যে কি খারাপ অবস্থা তা জানা ছিল না। নীড়-সন্ধানীর কমেন্ট পইড়া আরো ভাল মত বুঝলাম। দুঃখজনক।

বোহেমিয়ান এর ছবি

পোস্টের কারণে বেশ ভালো কিছু আইডিয়া পাওয়া গেল ।
কথা একটাই বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?

নজরুল ভাই এর কমেণ্ট সেই রকম হইছে । চলুক
__________________________
হৃদয় আমার সুকান্তময়
আচরণে নাজরুলিক !
নাম বলি বোহেমিয়ান
অদ্ভুতুড়ে ভাবগতিক !

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

একসময় বিভাগওয়ারী বইমেলার চল ছিল। এমনকি স্বৈরাচারী এরশাদের আমলেও। গনতান্ত্রিক আমলে বন্ধ হয়ে গেল কেন। সবকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক করে যেমন ঢাকার বারোটা বাজানো হয়েছে, তেমনি সারাদেশের মানুষকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।

সবার পক্ষে ঢাকায় গিয়ে বইকেনা সম্ভব না। কারো অর্থ থাকলেও সময় থাকে না। কারো সময় থাকলেও অর্থ থাকে না। বইয়ের চেয়ে গাড়ীভাড়া বেশী খরচ হয়। বইমেলাকে বিভাগওয়ারী বা জেলাওয়ারী ছড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের। কিন্তু এই মন্ত্রনালয়ের কর্তাদের দৃশ্যমান কাজের মধ্যে দেখি নানান দিবসে লালনীল বেলুন ওড়ানো।

আমি নিজে ভুক্তভোগী। বহুকষ্টে একুশে মেলায় সুযোগ বের করেছিলাম যে বইগুলো চাটগায় পাবো না সেগুলো কিনবো বলে। কিন্তু মেলায় গিয়ে দেখলাম অনেক বই তখনো আসেনি। ফলে দুহাজার টাকা গাড়ী ভাড়া দিয়ে পাঁচশো টাকার তিনটা বই কিনে ফিরে এসেছি অতৃপ্তি নিয়ে। পরে আর ঢাকা যাওয়ার সময় পাইনি। বাকি ত্রিশ পয়ত্রিশটা বই চাটগার নানান জায়গা থেকে কিনেছি। অনেক বই পাইনি, এদিকে আসনি বলে। ফলে অনেক বই বাদ গেছে। নইলে নজরুল ভাইয়ের রানিং মেট হবার চেষ্টা করা যেত।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

পুতুল এর ছবি

আমাদের দেশের মানুষ সব করবে, কিন্তু নিজের সুবিধাটা ছাড়বে না। বই মেলার জন্য নতুন জায়গার প্রস্তাব আসবে, কিন্তু তাও ঢাকার আশে পাশে কোথাও। অন্তত প্রতিটা বাভাগীয় শহরে পালাক্রমে বইমেলার কথাটা ভেবে দেখবে না। সব পাঠককে মক্কায় যেতেই হবে।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

কেউ কেউ বইমেলার হুজুগে কিছু বই কেনে... মেয়েবন্ধু বা ছেলেবন্ধু নিয়ে বইমেলায় ঘুরতে আসা মানুষ অন্তত উপহার দিতে একটা হলেও বই কিনে...কিন্তু যারা পড়ুয়া তাদের কিন্তু বইমেলার দরকার পড়েনা... [এই অর্থে যে তাদের বইকেনার ইচ্ছাটা সারাবছরই থাকে!] কিন্তু বইমেলা উপলক্ষ্যে তাদের সুযোগ হয় কিছু দুষ্প্রাপ্য বই যোগাড় করা... এটা ভুললেতো ভাই হবেনা...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

পুতুল এর ছবি

বই দুষ্প্রাপ্য হবে কেন?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

বাউলিয়ানা এর ছবি

বইগুলো সারাদেশের দোকানগুলোতে পৌঁছানোর উদ্যোগ কেউ নিছে বইলা আমার জানা নাই। অথচ সারাদেশে বইয়ের দোকানের কোনো কমতি নাই। এবং সারাদেশেই পাঠকেরও কোনো কমতি নাই।

পূর্ণ সহমত নজরুল ভাইয়ের সাথে। আমি আমার একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি।

একবার নোয়াখালির প্রত্যন্ত একটা গ্রামে বিয়ে, জন্মদিনে বই উপহার দেয়া দেখে আমি একটু অবাক হলাম। দেখি সব বই হচ্ছে স্থানীয় প্রেস থেকে ছাপানো, স্থানীয় কোন লেখকের বই- আশা পরাহত, জীবন নিয়ে খেলা এরকম সব বই। আরও আছে কাশেম বিন আবু বকরের বই। তো আসলেই যদি আমাদের প্রকশক মহদোয়রা বই বিপননের দিকে আরেকটু বেশি মনযোগ দিতেন তাহলে হয়তো ঐ গ্রামগুলোর পাঠকদের হাতে হাতে আমরা সৃজনশীল বইগুলোই দেখতে পেতাম।

সাফি এর ছবি

বইমেলায় বই বিক্রির প্রস্তাবে লেখকের সাথে একমত নই। তবে বই মেলাকে ছড়িয়ে দেবার যে প্রস্তাব মন্তব্যে এসেছে তার সাথে সহমত। সবার আগে সহজলভ্যতা তারপরে অন্য কিছু। আমার মনে আছে ছোটবেলায় আমরা বই নিয়ে রোল প্লেয়িং করতাম। ধানমন্ডি বয়েজ এর পিছনে কিছু ভাঙ্গাচোরা পুরোনো বাড়ি ছিল, খুব সম্ভবত সরকারি কোয়ার্টার। কিভাবে যেন ছড়িয়ে পড়ল সেই বাড়িগুলোর একটা ভুতুড়ে। আমাদের ক্লাশ ফাইভেই সেই সমস্যার সমাধান করতে গোটা তিনেক তিন গোয়েন্দা দল দাঁড়িয়ে গেছিল। বইমেলায় বই বিক্রি বন্ধ না করে শহরে শহরে বইমেলার আয়োজন করতে হবে। দরকার হলে হেভিওয়েট লেখকরা সেখানে যাবেন পাঠকদের সাথে দেখা করতে। আর এটা নিশ্চিত করতে হবে প্রকাশক/পরিবেশকদের-ই

পুতুল এর ছবি

সবার আগে সহজলভ্যতা তারপরে অন্য কিছু।

কথা সেটাই।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।