বাংলাদেশী আমলাতন্ত্রের অ আ ক খ - মূর্তালা রামাত

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৮/০৫/২০০৮ - ১০:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা অবস্থায় ভোটার আইডি কার্ডের জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। পরীক্ষা শেষে হল ছেড়ে দিয়েছি। কিছুদিন আগে খবর পেলাম হল থেকেই আইডি কার্ড দেয়া হচ্ছে। গেলাম হলে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানালেন এখান কার্ড বিতরণ শেষ। আপনি রেজিস্টার বিল্ডিংয়ের ৩১৯ নম্বর কক্ষে যেয়ে এর সাথে দেখা করুন। সেখানে গেলাম। তিনি জানালেন সব কার্ড জাতীয় সংসদ ভবনের সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, ওখানে গিয়ে এর কাছে খোঁজ করুন। গ জানালেন কার্ডের জন্য রমনা অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তা এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। ঘ জানালেন থানা নির্বাচন কমিশনার এর সাথে যোগাযোগ করেন। ঙ জানালেন সব কার্ড ওয়ার্ড কমিশনার এর কাছে পাঠানো হয়েছে। ৫৭ নং ওয়ার্ড কমিশনার চ জানালেন তার কাছে কোন কার্ডই আসেনি। তিনি সহকারী নির্বাচন কমিশনার এর কাছে খোঁজ নিতে বললেন। ছ এর অনুপস্থিতিতে তার পিএস মহা বিরক্তি সহকারে সব শুনে একটা ফোন নম্বর দিয়ে এর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দিলেন। ঝ আরেকটি ফোন নম্বর দিয়ে নির্বাচন বিষয়ক অনুসন্ধানের বিশেষ সেলের একজন এর সাথে কথা বলার অনুলোধ জানালেন। বিস্তারিত জেনে ঞ জাতীয় নাট্যশালার পাশের সেনা ক্যাম্পের ভোটার আইডি কার্ড সেলের ফোন নম্বর দিয়ে এর সাথে অনতিবিলম্বে যোগাযোগের অনুরোধ জানালেন। সেনা ক্যাম্পের ট সেনা ক্যাম্পের কে দিলেন । ঠ জানালেন পাবলিক লাইব্রেরিতে এখুনি চলে যান কার্ড দেয়া হচ্ছে। মহাখালির অফিস থেকে ছুটি নিয়ে সিএনজি ভাড়া করে পাবলিক লাইব্রেরিতে যেয়ে জনৈক কে জিজ্ঞেস করতেই তিনি জাতীয় যাদুঘরের রিসিপশনে গিয়ে এর সাথে দেখা করতে বললেন। ঢ জানালেন তিনদিন আগেই কার্ড বিতরণ শেষ। তিনি আবার সেনা ক্যাম্পে খবর নিতে বললেন। সেনা ক্যাম্পের জানালেন তারা আগামী সপ্তাহে কার্ড দিবেন, তবে কবে দেবেন এটি এখনও ঠিক হয়নি। তিনি দুদিন পর আবার খোঁজ এর কাছে নিতে বললেন.......!!!!!
আমি ক্লান্ত। আমরা এ কোন দেশের নাগরিক !


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হা হা।
পুরা দৌড়ের উপর...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

যে বাল ফালানোর কথা কইয়া এ্যারা আসছে, এইটা হচ্ছে সেই বাল ফালানোর নমুনা, থেতে পর্যন্ত। আমরা যারা দেশে আছি, তাদের আপাতত কিছুদিন এই বাল ফালাইতে হবে। এবং বাইরে যারা আছে তাদেরও আপাতত এটাই 'কর্তব্য'।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

তীরন্দাজ এর ছবি

চক্কর আর চক্কর! চক্করের শেষ নেই!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ক থেকে মাত্র ঢ়?
এইটুকুতেই টায়ার্ড?
বর্ণমালা পুরা এখনও শেষ হয়নি তো
চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত বর্ণমালা শেষ হবার পর স্বরচিহ্ন ব্যাঞ্জন চিহ্ন শেষ হয়ে সাড়ে আট হাজার যুক্তাক্ষর শেষ হবার পরে না ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা অর্জিত হবে

অতো তাড়াহুড়ো করলে কি হয়
বুঝতে হবে তো এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে আমরাই প্রথম এই বস্তুটা পাওয়ার গৌরবের অধিকারী হতে যাচ্ছি...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

লীলেন ভাই... এইবারই প্রথম না... আগেও একবার ছবিযুক্ত ভোটার কার্ড দিছিলো... পাঁচবছর সেই কার্ড পকেটেও রাখছিলাম। সম্ভবত শেখ হাসিনার আমলে (বিএনপির প্রথম আমলও হইতে পারে... ঠাহর করতে পারতেছিনা)। তখন অবশ্য ল্যাপটপ ওয়েব ক্যাম দিয়া তুলে নাই... মনে আছে স্থানীয় স্কুলে ডাকলো... একসঙ্গে ছয়জনরে খাড়া করলো... একজন ফটোগ্রাফার ফটো তুললো... তার কিছুদিন পরে বড়ভাই বাড়ির সকলের কার্ড নিয়া আসলো...

মূর্তালা রামাতের লেখাটা পইড়া মনে আসলো মুন্না ভাইয়ের (শাহাদুজ্জামান) ঃতে দুঃখ বইটার কথা... বর্ণমালা ধরে ধরে এক তরুণের গল্প... বইটা যে কে চুরি করলো? আবার কিনতে হবে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সেই ডান্ডিকার্ড আমারও একখান ছিল
আমি আর আমার বাবা একসাথে গিয়েছিলাম ছবি তুলতে
পরে দেখি আমারটা ঠিকই আছে
কিন্তু আমার বাবার বাবার নামের জায়গায় আমার নাম বসানো

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কথা শোনেন। পুরো বর্ণমালা বা হাজার হাজার যুক্তাক্ষর পর্যন্ত যাওয়া দরকার নাই। আপনি বরং আইডি কার্ডের আশা ত্যাগ করুন। কষ্ট লাগল? ওহ! আপনার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না বলে? আরে, কত অধিকারইতো প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। যাহোক আপনার আইডি হয়তো কোন কর্ম(!)কর্তার বালিশের নিচে পরে আছে না হয় উনার বাচ্চা সেটা দিয়ে পুতুলের খাট বানিয়েছে। বাদ দেন। আপনি বুঝতে পারছেন না কেন। সবে মাত্র ছাত্রজীবন শেষ। এত তাড়াতাড়ি এনার্জি শেষ করবেন না। সরকারি কাজের এটাই স্বরূপ। আবশ্য আমি 'হুইন্যা মুসলমান'। । অনেক চেষ্টার পরও সরকারি চাকুরি পাই নাই। যারা সরকারি চাকুরি করে তারা বলেছে। শোনা কথা ভুলও হতে পারে।
সরকারকে দোষ দিয়ে কী লাভ। জনগণের চিন্তাধারাই সরকারে প্রতিফলিত। কারণ জনগণই ক্ষমতার উৎস!!!!!!!!!!!!!!

জিজ্ঞাসু

নিঘাত তিথি এর ছবি

উপসসসসসস!
থাক। তারচেয়ে আরেকটা কবিতা লেখাই বরং মুর্তালা রামাতের জন্য সহজ হবে বলে জানি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

দুর্দান্ত এর ছবি

সরকারি চাকুরেদের আর কি দোষ, ওরা তো আমার আপনার মতই, এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে তার চাইতেও খারাপ অবস্থার মানুষ। গোড়াতেই শোনা কথায় কান না দিয়া সরাসরি প্রথম দিনই ঞ এর সাথে যোগাযোগ করতেন, তাইলে পাবলিক লাইব্রেরিতে টাইম মত পৌছাইয়া যাইতে পারতেন।

থার্ড আই এর ছবি

আপনার মন্তব্যে মনে হলো বিষয়টা এমনযে দোকানী বললো জুতা জোড়া প্রথম সপ্তাহ একটু পায়ে ব্যথা দেবে, তাই আপনিও জুতা কিনে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুতা পায়ে দেয়া শুরু করলেন। কিন্তু জনাব ব্যথাটাও যে তখন থেকেই শুরু হবে।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

দুর্দান্ত এর ছবি

ভাইরে আপনে নিজেই একবার নির্বাচন কমিশনের ফোন নম্বর নিয়া কথা বইলা দেখেন; বুঝবেন আমি কেন এই কিসিমের ঢালাও গিবদের বিপক্ষে।

থার্ড আই এর ছবি

এই বিষয় নিয়া আসলে লিখতে গেলে বিস্তারিত পোস্ট দেয়া লাগবে..

গোড়াতেই শোনা কথায় কান না দিয়া সরাসরি প্রথম দিনই ঞ

সত্যি কথা বলতেকি জনৈক ঞ'র নিকট গেলে যে কাজটি সমাধা হবে সেটাই জানতেই সাধারণ পাবলিকের বারটা বেজে যায়...এই টেবিল ওই টেবিল করে ...

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

@মূর্তালা রামাত
২০০০-০১ সালে যুগান্তর পত্রিকার অফিসে পরিচয় হয়েছিল ঢা বি'র এক ইংরেজীর ছাত্রের সাথে । আপনি কি সেই জন?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শেখ জলিল এর ছবি

হাহাহা! ভোটার আইডি রঙ্গ। মর্মান্তিক!!

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।