সিধান্তহীনতা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১১/০৫/২০০৮ - ১১:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিধান্তহীনতা
-------রাতুল

জীবনে সিধান্ত নেবার কিছু সময় আসে। শুনেছি সময়ের সিধান্ত সময়ে নিতে না পারলে নাকি পরে অনেক পচতাতে হয়।
কি জানি বাপু?

কর্পোরেট কালচারে যাকে বলে ডিসিশন নেয়া। যারা ডিসিশন নেন তাহাদেরকে বলে “ডিসিশন মেকার”!! ইদানিং HR কি জানি একটা মেইল পাঠায় সবাইরে, “ডিসিশন মেকার” দের জন্য। টিপস দিয়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন।

এই জিনিস সবাইরে এবং বিশেষ কইরা আমারে কেন পাঠায় বুঝি না। শালার আমি কি “ডিসিশন মেকার” নাকি?

আমি হইলাম কামলা। তাও আবার কন্ট্রাকচুয়াল কামলা। হেহেহে!!! “দিন আনে দিন খায়” এর “কর্পোরেট সংস্করন”। মাঝে মাঝে নিজেরে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চাকর চাকর লাগে।

ইঊনুস সাবের কি যেন একটা থিওরি আছে না , দুনিয়ায় আর কেউ গরীব থাকব না, “সোশাল বিজনেস” হবে। লাভের টাকা আবার কোম্পানিতেই বিনিয়োগ হবে। অনেক প্লান করি.........প্লান এ, প্লান বি, প্লান সি..............................।সব প্লানের টার্গেট একটাই বালের কামলাগিরি ইস্তফা দিয়া “সোশাল বিজনেস করা”। হেহেহে একটু বেশীই প্লান করি!!

সব মিলিয়ে মাস শেষে বেতন যা পাই তা আমার মত ৫ থেকে ৬ জন ব্যাচেলরের মাস চলার কথা। কিন্তু জানিনা কেন যেন তাও মাসের শেষে আর জমা থাকে না। আই ইউ টি তে থাকতে পকেট আ্যলাউন্স পেতাম ৪০ ডলার, থাকা খাওয়া ফ্রি, তাও কেম্নে কেম্নে যেন শ্যাষ হইয়া যাইত!!

শুক্র শনি ছুটি। মাঝে মাঝে ফাহিমের মত “বস কাল রাইত থেইকা শরীরটা গরম” কইলে ছুটি পাওয়া যায়। মজিলা ইন্সটল কইরা কিং কং এর দেয়া প্রক্সি দিয়া ধুমায়া নেট ব্রাঊজ করি। সাড়ে পাচটার ড্রপে বাসায় ফিরি।

এত সুখের কামলা গিরি ছাইরা আবার মাস্টার্স করতে বিদেশ গমন!!! স্কলারশীপ পাইছি তো কি হইছে? প্রতিদিন ভাবি আর ভাবি.........। ডিসিশন না নিয়া আর ঊপায় নাই!!

ratuliut@gmail.com


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা কোন না কোনভাবে কারো না কারো কামলা। বুঝলা?

ফেরারী ফেরদৌস

অতিথি লেখক এর ছবি

সব সময় কামলা না।
যে লোক টা সিএঞ্জি চালায় বা রিকশা টানে সে আমার চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীন। সে কামলা না। তার আইজ মনে হইল কিছু করুম না, করল না। আমি ছুটি পাইলেও তা করতে পারি না। তাইলে কামলা ডা কেডা হইল??
------রাতুল

অতিথি লেখক এর ছবি

রাতুল, তোমার কথার জবাবে একটু আঁতলামি করি।

আমরা সবাই আছি পেটপূজোয় ব্যস্ত। রিকশাওয়ালা বা সিএনজি ড্রাইভার হয়ত একটা দিন কাজ না করে থাকতে পারল, কিন্তু সেটা তার কাজের প্রকৃতির জন্য। সেজন্য তাকে আক্ষরিক অর্থে স্বাধীন বলা যায় না। তার মাথায় হাজারটা দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খায় যাদের অনেকগুলো থেকে তুমি মুক্ত। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

ফেরারী ফেরদৌস

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার অবস্থা হইল "দিল্লি কা লাড্ডু টাইপ"

অতিথি লেখক এর ছবি

কেন্‌ ধূ গো ভাই? দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা ঘটনা কই।
সংবাদপত্রের এক কর্মী হাতে ঐদিনের কপি নিয়া চিল্লাইতেছিলো, "আজকের তাজা খবর এক সংবাদকর্মীর কাছে কেতাদুরস্ত করপোরেট ভুদাই..."
এইটা শুনে রাতুল নামে এক করপোরেট পেপারটা কিনলো এবং চোখ বড় বড় করে দেখলো, তাতে সেরকম কোনো খবরই নাই। রাতুল ক্ষেপে গিয়ে সেই সংবাদ কর্মীকে জিজ্ঞেস করতেই সে ঐদিকে কর্ণপাত না করে আবার চিল্লাতে শুরু করলো, "আজকের তাজা খবর এক সংবাদকর্মীর কাছে গ্রামীনের কেতাদুরস্ত করপোরেট ভুদাই..."

কৌতুকটা কেনো বললাম? কারণ বিদেশে গেলে আপনেও গ্রামীনের সেই কর্পোরেট রাতুলের মতো ভুদাই হইয়া যাইবেন।
বিদেশে এমনিতেই ভুদাইয়ের সংখ্যা বাড়তাছে দিন দিন। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যার সংখ্যা নিয়ন্ত্রনে আপনার সক্রিয় অংশগ্রহন প্রত্যাশা করি রে ভাই। আপনার ক্রায়িং কিংবা স্যাডি স্যাডি ফেইস না। মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

মজিলা ইন্সটল কইরা কিং কং এর দেয়া প্রক্সি দিয়া ধুমায়া নেট ব্রাঊজ করি।

হা হা ঐ প্রক্সি এখনো কাজ করে? শালার আমিতো দেখি বস দেঁতো হাসি [যারা প্রক্সির কথাটা জানেন না তাদের বলি, জিপিতে দুইটা প্রক্সি সার্ভার ছিল, একটা কামলাদের, আরেকটা বসদের জন্য ... কামলাদের সংখ্যা বেশি, তাই সেই প্রক্সিতে স্পীড পাওয়া যাইতো না ... আমি চামে একদিন বের করে ফেল্লাম বসদের প্রক্সি সার্ভারের এড্রেস আর সেটা চেঞ্জ করার তরিকা (ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে এই সেটিংস চেঞ্জ করা যাইতো না, আইটী ডিজেবল করে রাখছিল ... মোজিলায় পারা যাইতো) ... তারপরে আর কি, পাশের কিউবে পোলাপান যখন একটা পেজ খুলতে দেড় মিনিট লাগায় আমি তখন অফিস টাইমে কোন বাফারিং ছাড়াই ইউটিউব দেখি দেঁতো হাসি, বসদের প্রক্সি সার্ভারের কল্যাণে]

যাই হোক, রাতুল, ডিসিশান নিজে নিবা, ভুলেও মাইনষের কথা কানে নিবা না ... ভুল করলেও সেটা যাতে নিজ দায়িত্বে কর সেটা খেয়াল রাখবা (জীবন থেকে নেয়া শিক্ষা, অবহেলা কইরো না) ...

এইবার চিন্তা কর কি করবা? দেশে ভালো ক্যারিয়ার থাকলে বাইরে না আসলেও চলে ... কিন্তু দেশে যা করতেছ সেটার ফিউচার কি? [ভাল লাগে কিনা জিগাইলাম না, কোন জবই ভাল্লাগে না কয়েকদিন পর] ... বাইরে আসলে পড়ালেখাটা আরামে করতে পারবা, ভাল ফান্ড আছে তোমার (আমার চেয়ে অনেক ভাল এটলিস্ট) ... কিন্তু তাহলে পিএইচডির আগে আর দেশে ফিরতে পারবা না, সেটার জন্য রেডি আছ কিনা? ... ভালো কইরা ভাবো ... ভাইবা ডিসিশান নাও ...

আর ভাল কথা,

সব প্লানের টার্গেট একটাই বালের কামলাগিরি ইস্তফা দিয়া “সোশাল বিজনেস করা”
তুমি না মৌলানা মানুষ, মুখ খারাপ কর ক্যান? দেঁতো হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে একদিক দিয়া চিন্তা করলে দেশে ভালই আছি।

আবার সারাদিন একই কাজ বার বার করতে করতে বোরিং লাগে, যখন ভাবি আজ থেকে ৩-৪বছর পরও এই একই কাজ করতে হবে তখন মনে হয় "কবে পালামু ?"

আবার মাস্টার্স করার পরে দেশে ফিরে আইসা করার মত কিছু নাই। বাইরেই থাকতে হবে। আব্বা আম্মা ছোটবোন এদের সব ছেড়ে কিভাবে থাকব?
বিয়াশাদী কবে করুম?
অনেক অনেক প্যারামিটার

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এই লেখাটার কি ফ্রন্টপেজ এক্সেস নাই? কনফিউজড চিন্তিত
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

রায়হান আবীর এর ছবি

কি বলতাম...

---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।