দি Uilimate ফাইটার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২২/০৯/২০০৮ - ৭:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রতিদিন ই আমরা ব্যবহারিক জীবনে, কিংবা নাটক সিনেমায় অনেক মারামারি দেখতে পাই। নায়ক এক ঘুসিতে শত্রু ধরাশায়ী করছে এমন ছবি দেখে আমরা যারপরনাই আনন্দিত হই, করতালি দেই। ছোটোবেলায় প্রায়ই বন্ধুদের সাথে তর্ক করতাম,”আরে আমার স্পাইডারম্যানের কাছে তোর ব্যাটম্যান নস্যি” কিংবা “আমি ঘুসি দিলে তো তুই পেচ্ছাব করে দিবি” এইরকম কিছু একটা।

কিছুদিন আগে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে এইরকম একটা অনুষ্ঠান দেখলাম, যেখানে বিশ্বের তাবত ওস্তাদ ফাইটারকে নিয়ে বিশ্লেষন করে বের করা হয়েছে কে সেরা ফাইটার, সবাই মারামারি করতে শুরু করলে কে জিতবে। আসুন তাহলে দেখি কার কি অবস্থা। অস্ত্র গোলা বারুদ বাদ দিলে বাকি থাকে হাতাহাতি লড়াই, এই হাতাহাতি লড়াই এর কাবেল ফাইটারদের ভিতর আছে কুংফু, তায়কোয়ান্দো, বক্সার ইত্যাদি ইত্যাদি। যাই হোক প্রথমে দেখা যাক ঘুসি দিয়ে কে কাকে ঘায়েল করতে পারবে। ব্রুস লী কে দেখে আমরা মোটামুটি ধারনা পাই যে, কুংফু টাইপ ফাইটার যারা আছে তারা মোটামুটি হাতের চেয়ে পায়ের কাজ ভালো জানে। তাই ঘুসাঘুসিতে এনারা দুর্বল হবেন এ আর আশ্চর্য কী? কিন্তু বক্সাররা তো ঘুসি দিয়েই প্রতিপক্ষকে নকআউট করেন, তাই তাদের ঘুসি সবচেয়ে শক্ত।
কিন্তু ঘুসি দিয়েই কি যুদ্ব জেতা যায়? চিন্তা করে দেখুন, আপনি আপনার সমস্ত শক্তি দিয়ে ঘুসি হাকালেন, কিন্তু সেটা যথাস্থানে লাগলো না, তাহলে কিন্তু অপর দিক থেকে আসা ঘুসিটা আপনাকে হজম করতে হবে। তাই ঘুসিটা মোটামুটি আস্তে হলেও লাগাতে পারলে আর অপর দিক থেকে আসা ঘুসিটা সামলাতে পারলেই কাজ অর্ধেক হয়ে যাবে। আরেকটা মারামারির ধরন আছে, যেখানে আপনি প্রতিপক্ষকে ধরে এমন প্যাচ কষলেন যে, সে তার আপন জন্মদাতাকে স্মরন করে ফেললো। প্রতিপক্ষকে এমন আষ্টেপিষ্টে জাপটে ধরে জয় আদায়ের কায়দাকে বলে “জুজুতসু”।

এই “জুজুতসু” এর ‘সু’টা এসেছে একটি জাপানি শব্দ থেকে, এর অর্থ কৌশল। এরকম আরো বেশ কিছু “সু” আছে, যেমন “গেনজুতসু”,”তেইজুতসু”,”নিনজুতসু” ইত্যাদি। এগুলোর কোনটার মানে আসলে কী? “গেনজুতসু” হল প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে, সম্মোহিত করে দিয়ে পরাজিত করা। এটা কাল্পনিক। “নিনজুতসু” হল বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা, মানব দেহের বিভিন্ন সীমাবদ্বতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। “তেইজুতসু” হল নিজের দেহটাকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা। “তেইজুতসু” আসলে “নিঞ্জুতসু” র ই একটি অংশ। “নিঞ্জুতসু” র এরকম আর ১৮টি বিভিন্ন ডিসিপ্লিন আছে।

যাই হোক, “জুতসু” থেকে এবার একটু বের হয়ে আসি। সত্যিকার লড়াইয়ে আপনি যখন যাবেন তখন লড়াইটা আসলে ঘুসি কিংবা লাথির মাঝে সীমাবদ্ব থাকে না। ফাইটারের ক্ষিপ্রতা, response, reflex অনেক কিছু এখানে প্রভাবক হিসাবে আসে। আপনার ঘুসি কিংবা লাথি মারাত্মক, কিন্তু আমার ক্ষিপ্রতা যদি আপনাকে এসব আমার গায়েই লাগতে না দেয়, তবে তো সবই অর্থহীন, তাই না? এক্ষেত্রে একজন বক্সার এর চেয়ে একজন কুংফু কিংবা তায়কোয়ান্দো মাস্টারের দক্ষতা বেশি। এখন একজন ভিন্ন ধরনের যোদ্বার কথা বলি। জ্যাকি চান এর সাম্প্রতিক একটি মুভিতে তাকে দেখা গেল পাড় মাতাল হয়ে মারামারি করতে। অনেকেই হয়তো জানেন, একে বলে “ড্রাঙ্কেন বক্সিং”। মুলতঃ জ্যাকি চান ই মারামারির এ ধরনটা সবার কাছে তুলে ধরেছেন। এখানে এলকোহল খেয়ে শরীরকে flexible করা হয়, যা শত্রুর আঘাত এড়াতে কিংবা আঘাতের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এখানে যোদ্বাকে টালমাটাল মনে হলেও,এটা তার লড়াই এর একটি অংশ। যোদ্বা কৌশলে শত্রুকে কাছে নিয়ে এসে আঙ্গুলের মধ্যমার সাহায্য মোক্ষম আঘাত করে এবং ধরাশায়ী করে।

এখন তবে ultimate ফাইটারকে খুজে বের করার সময় এসেছে। কে সে যোদ্বা, যার রয়েছে একই সাথে শক্তি, ক্ষিপ্রতা, reflex, response, balance? অনেকের ভাষ্য মতে জাপানি “নিনজা”ই হল সেই যোদ্বা। আদি চীনে এই “নিনজা”রা ছিল আসলে গুপ্তঘাতক। তারা সবার অগোচরে বিভিন্ন সুরক্ষিত স্থানে ঢুকে হত্যাকান্ড সংঘটন করে আসতো। এ জন্য তাদের লড়াই এর সব জ্ঞানই থাকতে হত। তারা প্রধানত মানব শরীরের দুর্বল এবং vital স্থানে আঘাত করে নূনতম আঘাতে সর্বোচ্চ ক্ষতি করতো। তাদেরকেই আসলে ultimate (চরম) ফাইটার বলা যায়। তবে যে যাই বলুক, আমার মতে ultimate মাইর হল গনপিটানী। উপরে যা বললাম, তাতে দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা থাকলে জীবনটা বাচার একটা সম্ভাবনা আছে, কিন্তু গনপিটানীতে পড়লে বাচার কোন সম্ভাবনাই নাই।

সূত্র- National Geography, Wikipedia


মন্তব্য

স্বপ্নাহত এর ছবি

বাপরে! এত মারামারির মধ্যেও এখনো যে বহাল তবিয়তে কমেন্ট করতে পারতেসি সেইটাই ভাগ্যি!

ভাইজান মনে হইতেসে গণপিটুনী বিশারদ। চিন্তিত

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতিথি লেখক এর ছবি

না রে ভাই!
জাপানি কিছু এনিমেশন দেখার পর এ রকম একটা লেখার ইচ্ছা ছিল, তাই......
আমার জানাগুলা সচল ভাইদের সাথে একটু শেয়ার করলাম।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এধরনের কৌশল আসলে কিন্তু মারপিট করার জন্য নয়-- নিজেকে আত্নরক্ষার জন্য। আর ক্ষিপ্রতা, দক্ষতা এসবের মূলে থাকে মেডিটেশন যা আপনাকে আলাদা একটা সেন্স এনে দেয়। কারাতে বা খালি হাতে আত্নরক্ষার জন্য এই এক্সট্রা সেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গনপিটুনির কাছে অবশ্য কোন সেন্সই কাজ করবেনা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ব্লগের আগে পিছে নিচে উপরে ডাইনে বামে যেখানেই হোক... ব্লগারের একটা নাম থাকা উচিত বলে মনে করি।
বিশেষ করে এরকম মারামারি বিশারদ ব্লগারের নাম জানাটা তো বিশেষ জরুরী।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

যেভাবে সবাই নাম জানতে চাচ্ছে, তাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।
ভাই, এটা তো জাস্ট একটা লেখাই, তাই না...মারামারির তো দরকার নাই............ দেঁতো হাসি
(লেখার নিম্নমানের জন্য ব্লগারদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পোস্টের শিরোনাম দেখে মনে পড়ল ফ্রেন্ডস-এর সিজন-৩ এর ২৪তম পর্বে মনিকা'র বয়ফ্রেন্ড পিট বেকার-এর কথা।

আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভাল হত। আর নিচে নিজের নামটা দিয়েন, তাহলে বুঝতে সুবিধা।
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

অতিথি লেখক এর ছবি

না ভাই, আমি ফ্রেন্ডস থেকে এ লেখার অনুপ্রেরনা পাইনি। কিছু দিন আগে Nat. Geo. তে Fight Science নামে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়, মূল ধারনাটা সেখান থেকেই এসেছে। আমার নাম "পাগলা অমি"...

তানবীরা এর ছবি

আমি গান্ধীবাদী।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রাফি এর ছবি

এইবার তোর লেখা উপর দিয়া গেল চোখ টিপি

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।