বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নারী : পার্বত্য চট্টগ্রাম

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৫/২০০৯ - ৮:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তন্দ্রা চাকমা

..........................................................

বাংলাদেশে সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় ৪৫টি আদিবাসীর বসবাস। তার মধ্যে ১১টি ভাষাভাষী আদিবাসী বসবাস করে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলায়। ১৯৯১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনসংখ্যা প্রায় ৫,০১,১১৪ জন। এর প্রায় অর্ধেক হচ্ছে নারী। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি ভাষাভাষীর প্রত্যেকটি আদিবাসী সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। এখানে নারীরা আপাত দৃষ্টিতে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবাধ হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নেতৃত্ব, মতামত দান ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যান্য নারীদের সমতুল্য। আমি আমার এ লেখায় নারীদের অবস্থান বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাখ্যা করব। এ আলোচনার পর্যায়গুলোতে আমি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবো কিভাবে তারা পিছিয়ে আছেন।

আমার বিশেষণের প্রথম পর্যায় হচ্ছে পারিবারিক ক্ষেত্র। এখানে প্রধান মতামত দানকারীর ভূমিকায় পুরুষকে দেখা যায়। পুরুষের নির্দেশেই পরিবার পরিচালিত হয়। ২০০১ সালে কেয়ার বাংলাদেশ কর্তৃক পরিচালিত এক জরীপে দেখা যায় আয়মূলক কাজে ও চলাফেরায় নারীরা যথেষ্ট স্বাধীন। যদিও আয়মূলক কর্মকান্ডে নারীরা মূখ্য ভূমিকা পালনকারী, কিন্তু নিজের পিনন তৈরির সুতা কেনা, সন্তানকে স্কুলে পাঠানো- এ সমস্ত ক্ষেত্রে টাকার জন্য তার স্বামীর কাছে হাত পাততে হয়। কারণ আদিবাসী নারীরা তাদের সমস্ত টাকা স্বামীর হাতে দেন। এই সার্ভে ৩ পার্বত্য জেলায় পরিচালিত হয়। এখানে আমি উদাহরণ হিসেবে রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার তক্তানানা গ্রামের এক তংচঙ্গ্যা নারীর কথা বলব। তিনি বলেন, “আমার আয়ের টাকা যদি আমি ইচ্ছামত খরচ করতে পারতাম তাহলে পিনন বুনে বিক্রি করতাম ও ঐ টাকায় ছেলেমেয়েদের পড়াতাম এবং আপদ বিপদের জন্য কিছু জমা করে রাখতাম।” এই জরীপে ১১ ভাষাভাষীর প্রত্যেক নারীই একই ধরণের ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন। উপরের উক্তি থেকে এটা প্রমাণ হয়-পরিবারে নারীর স্থান পুরুষের পরে।

সামাজিক পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারীদের নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যায় না। এখানে পুরুষের নেতৃত্বই দৃশ্যমান। যেমন- কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য যে কমিটি করা হয়, সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্ব দানে নারীরা নেই। এক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা হচ্ছে সেবামূলক।

পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম নির্ভর অর্থনীতিতে সম্পত্তির অধিকার মূলত পুরুষের। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি আদিবাসীদের যে প্রথাগত আইনসমূহ আছে তাতে নারীর আধিকারের কথা একেবারেই নেই। যদিও বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রথাগত আইনসমূহ নিয়ে নতুনভাবে ভাবার সুযোগ আছে। চাকমা সমাজের মেয়েরা বাবার সম্পত্তি পায় না। মারমা সমাজের কেবল বান্দরবানের মারমা মেয়েরা কিছুটা পিতার সম্পত্তি পায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীরা সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিকতার সীমায় উপনীত। বর্তমানে কিছু কিছু নের্তৃস্থানীয় শিক্ষিত আদিবাসী নারী এসব প্রথাগত আইনসমূহ সংশোধন করে সম্পত্তিতে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হচ্ছেন। কিন্তু তাও সীমিত আকারে। এক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরে, সব শ্রেণীতে এডভোকেসী ও সচেতনতামূলক কর্মকান্ড জরুরী। ৩ পার্বত্য জেলায় এই কর্মযজ্ঞ করতে হবে। তা না হলে আসলে বাংলাদেশে সিডো সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে না।

এ তো গেল সমাজের কথা। এখন আমি অর্থনীতির কথা বলব। পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম নির্ভর অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে নারীরা। অর্থকরী ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে মদ তৈরি এবং বিক্রি করে অর্থ উপার্জন- এর প্রত্যেকটিতেই নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী। রাঙামাটির বনরূপা বাজারে গেলেই দেখা যায় সেখানে যারা সবজি, কাঁকড়া ও মাছ বিক্রী করতে আসেন তারা বেশিরভাগই নারী। এই ধরনের একজনকে একবার কৌতুহলবশত প্রশ্ন করেছিলাম, “আপনি আখ, বাঁশ কোড়ল বিক্রী করলেন, এ টাকা কি আপনি আপনার ইচ্ছেমত খরচ করতে পারবেন?” উনি বলেছিলেন, “আমি এ টাকা থেকে চাল ও ছিদল কিনব, এসব না নিয়ে গেলে আমার স্বামী রাগ করবেন।” তার মানে হচ্ছে তার ব্যক্তিগত জিনিস সে কিনতে পারবে না। অথচ সে অর্থনৈতিক উৎপাদনমূলক কাজ করেই যাচ্ছে। টাকা আয় করে তা কোন না কোন ভাবে স্বামীর হাতে তুলে দিচ্ছে। বর্তমানে এ বিষয়গুলো নিয়ে এনজিও’রা ভাবতে পারে।

এবার যদি শিক্ষার দিকে তাকাই তাহলেও একই চিত্র। শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের অবস্থা আরও করুণ। পরিবারে কোন স্কুলগামী বা বিশ্ববিদ্যালয়গামী সন্তান থাকলে এক্ষেত্রে ছেলে সন্তান অগ্রাধিকার পায় উচ্চ শিক্ষায়। আর কন্যার ক্ষেত্রে দেখা যায়, হয়তো ঘরের কাজ করে বাড়ির কাছের কলেজে বিএ পাশের পর বিয়ে। আর তা না হলে পড়াশুনা বন্ধ।

রাজনৈতিক ভূমিকা বা নেতৃত্ব দানে নারী নেতৃত্ব একেবারেই নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ পার্বত্য জেলার ৩০০ মৌজায় মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন নারী হেডম্যান আছেন। কিন্তু তারা হেডম্যান হয়েছেন মৃত স্বামীর উত্তরাধিকার ধরে রাখার জন্য। ২ডিসেম্বর, ১৯৯৭- এ পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর সৃষ্ট ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ’- এ নারী আসন শূন্যের কোঠায়। জেলা পরিষদে যদিও ৯টি আসন, প্রতি জেলায় ৩টি করে বরাদ্দ আছে। কিন্তু বাস্তবে এসব আসনে নারী দেখা যায় না। পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকান্ডের মূল সমন্বয়কারীর বড় ভূমিকা হচ্ছে জেলা পরিষদের। এখানে যদি নারী প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে উন্নয়ন কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ আসবে কোত্থেকে?

যদিও এটা সত্য যে, সামাজিক প্রথাগত বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারীরা বাংলাদেশের অন্য প্রান্তের নারীদের তুলনায় অনেক সুবিধা ভোগ করে। তার মানে এই নয় যে, এখানে বৈষম্য নেই। উপরে বর্ণিত চিত্রই এর প্রমাণ। এই নারীদের ক্ষমতায়ন করার জন্য ইউনিয়ন জেলা ও আঞ্চলিক পরিষদে নারী উপস্থিতি বিশেষ অবস্থয়ি বাড়ানো হলে এই পথ কিছুটা সুগম হতো। নারীরাও ক্ষমতায়নের সুযোগ পেতো। নারীরা সবসময় প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার মূল কারিগর হয়েও নেতৃত্ব দানে পিছিয়ে আছে। সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য তাদের অবদান অনস্বীকার্য।

পরিশেষে এই এলাকার আদিবাসী নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নেতৃত বিকাশ, নেতৃত্ব দান- এ সমস্ত ভূমিকায় দেখতে চাইলে, সমাজের বিভিন্নস্তরে ও পর্যায়ে যেখানে সুযোগ আসে সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় নারীদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার, সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে সমন্বয় করে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে ও বিভিন্ন কর্মসূচী নিতে হবে। সিডো এবং নারী উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়ন করতে হলে এ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

তথ্যসূত্র:

১.Customary Land Rights in the Chittagong Hill Tracts: Raja Devasish Roy, 2008.|

২. Defending Diversity


মন্তব্য

পলাশ দত্ত এর ছবি

ফার্স্টহ্যান্ড কোনো তথ্য নেই আপনার কাছে?
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

আনিস মাহমুদ এর ছবি

আমি তো বেশকিছু ফার্স্টহ্যান্ড তথ্যের রেফারেন্স পেলাম লেখায়।

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

তন্দ্রা,
আপনাকে স্বাগতঃ এবং অভিনন্দন এরকম জরুরী বিষয় লেখার জন্য।
আপনার এই লেখা পড়ে একটা ভুল ভাঙ্গলো, সম্ভবতঃ এই ভুল আমার মতো অনেকেরই আছে। আমি সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে খাসিয়া ও মনিপুরীদের দেখেছি, এছাড়া পাঠ্যপুস্তক এমন একটা ধারয়ান দেয় যে- সকল আদিবাসী পরিবারগুলোই মাতৃতান্ত্রিক।

আপনার দেয়া তথ্যগুলো এই ধারনা পাল্টায়। সম্ভবতঃ মনিপুরীরা ও মাতৃতান্ত্রিক নয়। তবে বাংলাদেশের এবং খাসিয়া-জৈন্তাহিলের উভয় জায়গার খাসিয়ারা প্রবলভাবেই মাতৃতান্ত্রিক।

বাইরে থেকে যতোটুকু দেখা যায়, আদিবাসী নারীরা ,চাষাবাদ সহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অনেক বেশী ভূমিকা রাখেন অথচ বাবার সম্পত্তিতে তাদের কোন অধিকারই নেই!
এক অর্থে তো তারা সমতলের নারীদের চেয়ে ও অধিক বঞ্চিত।

এইখানে আরেকটা কৌতুহল সৃষ্টি হলো- সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি বন্টনের জন্য যে মুসলিম পারিবারিক আইন ও হিন্দু সম্পত্তি আইন( এগুলো ধর্মীয় আইন নয়, ধর্মের সাথে সংগতিপূর্ন রাষ্ট্রীয় আইন) রয়েছে আদিবাসীদের সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে সে রকম কোন রাষ্ট্রীয় আইন আছে কিনা?

দেখা যাচ্ছে আদিবাসীদের সামাজিক আইনে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন (যদি ও দূর থেকে ধারনা জন্মায় বিপরীত) সে ক্ষেত্রে এই বৈষম্য দূর করতে রাষ্ট্র কোন ভূমিকা কি নিতে পারে?

আপনাকে আবারো অভিনন্দন। ভরসা রাখি এরকম গুরুত্বপূর্ন আরো লেখা পাওয়া যাবে। প্রিয় পোষ্টে নিলাম।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শামীম রুনা এর ছবি

লেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।এতে বের হয়ে এসেছে পাহাড়ের ভেতরের কথা।

_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)

তানবীরা এর ছবি

তন্দ্রা আপনাকে সুস্বাগতম। থাকুন আমাদের সাথে, আপনাদের সাংস্কৃতি নিয়ে গল্প শুনতে চাই অনেক আপনার কাছ থেকে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

তন্দ্রা
আপনার লেখাটি পড়লাম। এ চিত্র যেন সকল নারীর ক্ষেত্রে সত্য। এ চিত্র যেমন বিশ্বের অগণিত নারীর জন্য সত্য, এ চিত্র বাংলাদেশের নারীর ক্ষেত্রে তেমন সত্য। আর সবচয়ে বড় সত্য এই যে, চিত্রটি যদি হয় আদিবাসীদের কিংবা ক্ষুদ্রজাতীসত্তার গরীব কোন নারীর তাহলে তা আরো বেশি বঞ্চিত আরো বেশি অবহেলিত হবে সেটি অতি স্বাভাবিক। নারীর অধিকার নিয়ে আমরা সভা সেমিনার কম দেখিনা কিন্ত আমরা আদিবাসী নারীর সমাজ, শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে আমরা খুব কমই জানতে পারি। আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

তন্দ্রা,

সচলায়তনে স্বাগতম। একটা ভাবনা-উর্দ্রেককারী পোস্ট দিয়ে শুরু হওয়া আপনার সচলযাত্রা শুভ হোক।

চোখের আড়ালে থাকা এই বিষয়গুলো নিয়ে আরো লেখা, আরো আলোচনা, আরো নড়াচড়া দরকার বলে আমি মনে করি।

আসলে সমাজের যে স্তর যত অধিকারবঞ্চিত, সেই স্তরে নারীরা তত বেশি বঞ্চনার শিকার। নারীর অধিকারবঞ্চনার বিষয়টি বিশ্বজনীন হলেও আর্থ-সামাজিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীর নারীদের এই বঞ্চনা আরো বেশি। পাহাড়ের ও সমতলের আদিবাসী মানুষরাই যেখানে সামগ্রিকভাবে অধিকারবঞ্চিত এবং প্রতিনিয়ত এই বঞ্চনার চাপ তাদের ওপরে বাড়ছে, সেখানে শারীরিকভাবে শক্তিশালীরাই যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব গ্রহণ করবে, সেটা আর বিচিত্র কী?

ক্ষমতায়নের প্রধানতম পূর্বশর্ত হল বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমতা অর্জন করা। আদিবাসী নারীরা এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূলধারার নারীদের চেয়ে একটু সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আদিবাসী নারীদের অংশগ্রহণ মূলধারার নারীদের চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আদিবাসী নারীদের অংশগ্রহণও তাদের মধ্যে এক ধরনের সমতার বোধ সৃষ্টি করে। আমার ধারণা, এই বিষয়গুলো থেকেই বেরিয়ে আসবে আদিবাসী নারীদের অধিকার অর্জনের পথ আর সাহস।

বিশ্বের সকল অধিকারবঞ্চিত মানুষ ফিরে পাক তাদের ছিনতাই-হয়ে-যাওয়া জন্মগত অধিকার।

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

কীর্তিনাশা এর ছবি

তন্দ্রা সচলায়তনে সুস্বাগতম জানাচ্ছি। হাসি

আসলে বিভিন্ন শ্রেনীর পাঠ্য পুস্তকের সুবাদে আমরা এই ধারণা পাই যে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী সমাজ বেশির ভাগই নারী তান্ত্রিক। যাক আপনার লেখাটা পড়ে বহুদিনের সেই ভুল ধারণাটা ভাঙলো আমারো। সে জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

একই সাথে আরো নতুন নতুন লেখা দেবার দাবী জানাচ্ছি হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

কীর্তিনাশা এর ছবি

(একই মন্তব্য দু'বার হয়ে যাওয়ায় ২য়টা মুছে দিলাম)

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

তন্দ্রাদি, সচলে সুস্বাগতম। তোমার লেখাটি অসাথারণ, তথ্যবহুল এবং অতি দরকারি। এই রকম আরো লেখা চাই।
কিন্তু নারী মুক্তি কোন পথে হবে, এ নিয়ে আমার বেশখানিকটা দ্বিমত আছে। এনজিও প্রদর্শিত পথে আর যাই হোক নারী মুক্তি সম্ভব নয়। এই জন্য চাই বিপ্লবী সংগঠন ও পার্টি।..


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

জুম্ম [অতিথি] এর ছবি

উদ্ধৃতি, "এনজিও প্রদর্শিত পথে আর যাই হোক নারী মুক্তি সম্ভব নয়। এই জন্য চাই বিপ্লবী সংগঠন ও পার্টি।.." চরম সহমত।
লেখাটি চমত্কার, কিন্তু আমার দুটি বিষয় বলার আছে; ১. পার্বত্য চট্রগ্রামের উচ্চশিক্ষিত নারীরা সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে কতটুকু ভুমিকা রেখেছে তা কিন্ত প্রশ্ন থেকেই গেছে। যারা পার্বত্য চট্রগ্রামের আন্দোলনে ভুমিকা রেখেছে , মিছিল- মিটিংয়ে ছিলেন এবং আছেন, শাসকগোষ্ঠীর টার্গের্টে ছিলেন, তারা কিন্ত আমাদের গ্রামের বোনেরা। শহরের আভিজাতে্র ছায়ায় থাকা কেউ নয়, এখনো নেই এবং তার কারণ সামন্ত
মানসিকতা...............এটি আমার ১৯৯৩-২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রত্যক্ষভাবে দেখা। ২. "২ডিসেম্বর, ১৯৯৭- এ পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর সৃষ্ট ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ’- এ নারী আসন শূন্যের কোঠায়"- এই মন্তব্য সঠিক নয় এবং এটা আপনে ভাল করে জানেন। সঠিক তথ্য দিন এবং সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করুন।

রানা মেহের এর ছবি

তন্দ্রা
সচলে স্বাগত
আরো লিখুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

Ashok Kumar Chakma এর ছবি

Thanks to Tandra Di for her writing. I agree with her views expressed in the write-up. However, I do have a little comment on the title, I mean, on the catching term 'sankhyaloghu' (minority). I prefer to use the term 'Adivasi' instead of 'sangkhyaloghu', although she used 'Adivasi nari' in the body of her write-up. There is a political game with the term of 'sankhyaloghu'. By using this term, the rulers and their chaps tactfully deny the inherent rights of the 'Adivasis'. I am pretty sure that Tandra di is well aware of the subtle differences between the 'minority' and 'indigenous peoples'.

আসমানী-মডু এর ছবি

অশোক,
অনুগ্রহ করে Ctl+Alt+P চেপে ফোনেটিক বাংলায় লিখুন। ইংরেজীতে লেখা মন্তব্য সচলায়তনে নিরুৎসাহিত করা হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তন্দ্রা, আপনাকে সচলায়তনে স্বাগতম।
আর ধন্যবাদ তথ্যবহুল একটি লেখার জন্য। সত্যি বলতে অনেক কিছুই আমরা জানি না। জানতাম না আপনার এই লেখাটি পাঠের আগে।

আরো লেখার অনুরোধ রইলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তন্দ্রা চাকমা এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ । আমি এই লেখাটি একটা সেমিনারে উপস্থাপন করেছিলাম । তাই এ টাইটেল । দীপায়ন চাকমার অনুরোধে এ লেখা এক ম্যাগাজিনে ছাপাই । পরে বিপ্লবের অনুরোধে এখানে লেখাটা দিলাম । লেখা টা পড়া ও কমেন্টস দেওয়ার সবাইকে ধন্যবাদ । আমি আবার লেখা দিব ।

------------------------
তন্দ্রা চাকমা

হিমু এর ছবি

আপনার কাছ থেকে আনকোরা নতুন লেখার প্রত্যাশায় রইলাম।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জুলফিকার কবিরাজ এর ছবি

তন্দ্রা
আপনার লেখায় পাহাড়ী নারী সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানলাম ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক অজানা বিষয়, একেবারে ১ম বারের মতো জানলাম।
আরও পড়তে চাই, জানতে চাই...

সচলায়তনে স্বাগতম। নিয়মিত লিখুন, পড়ুন, মন্তব্য করুন...

অতিথি লেখক এর ছবি

তন্দ্রা নামটি খুব সুন্দর।
যা পড়লাম তা আমার মোটেই জানা ছিল না। কিছু জানলাম, কিছু বুঝলাম। আরো লিখুন। আমার বাংলাদেশে বাড়ি কাছাকাছি।

শ্রীতন্ময়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।