ডিএসটি - প্রভু,দয়া করো হে

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২৩/১০/২০০৯ - ১২:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৯ জুন ২০০৯ মধ্যরাতে বাংলাদেশে ঘড়ির কাঁটা এক ঘন্টা এগিয়ে যায়,দিবা-রাত্রির দৈর্ঘ্য,বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণে দিনের আলোর সাশ্রয় করে তার পর্যাপ্ত ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে। ঘোষণা করা হয় ১ অক্টোবর আবারও ঘড়ির কাঁটা এক ঘন্টা পিছিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে এ সময় আর আগের অবস্থায় ফেরানো হবে না। শীতের দেশের শিশুরা কিভাবে বরফের মধ্যে স্কুলে যায়, যদি এ প্রশ্ন উঠেই থাকে তবে আমাদের শিশুরা ঘোরবর্ষায় রাজপথের হাঁটুজল ভেঙ্গে বাড়ি ফেরে djকি না বা প্রচন্ড গরমে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকে কি থাকে না এসব নিয়েও তর্ক উঠতেই পারে । সত্যি কি আপনারা কেউ ভাবছেন এইসব শিশুদের কথা? এদের রোজ সকালে ডেকে তুলে ঘুমের মধ্যেই খাইয়ে, তৈরী করে স্কুলে পাঠাতে বাবা-মাকে আরও আগে ঘুম থেকে উঠতে হয় কিনা, রিক্সা/ভ্যান/ বাসে বসে বা ক্লাসরুমের বেঞ্চিতে ঘুমে ঢুলতে থাকা শিশুটির ওপর এ অত্যাচার হয়ে যায় কি না।

ডিএসটি সময়সূচী গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন এই দুরকম ঋতুর জন্যই আলাদা করে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সময় পরিবর্তন না করা হলে শীতের সময় এইসব শিশুদের অন্ধকার থাকতে স্কুলে পৌঁছাতে হবে। অন্তত এইসব শিশুদের কথা একবার ভাবুন। সব স্কুলে যানবাহন সুবিধা দেয় না। অন্ধকারে আপনার আমার কন্যাটি স্কুলে যাবে, তার নিরাপত্তার দায়িত্ব কার? যে বিদ্যুত সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার কতটা সাশ্রয় হয়েছে, তার কোন সঠিক তথ্য কি আমরা পেয়েছি? দিন ছোট হয়ে এলেও সময় না পিছিয়ে উল্টো অফিস ও স্কুলের নতুন করে সময়সূচী ঘোষণা করা হয়েছে। শুরুতে স্কুল যদিও বা আটটায় ছিল এবারে তা সাড়ে সাতটায় এগিয়ে আনা হয়েছে। এতে যে যানজট কমে আসবে বলে মনে করা হয়েছিল তারই বা কতটা নিরসন হয়েছে।

বিশ্বে অনেক দেশ গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন সময়সূচী মেনে চললে "এ তো বড় রঙ্গ যাদু"র এ দেশেও তা মানা উচিত তো না কি !আমরা যদি জিএমটি +৫ মেনে নিতে পারি, জিএমটি +৬ এ ফিরতে আমাদের কষ্ট হবে এমনটা কি ভেবেছেন সরকার,নাকি জনতার সরকার জনতার চোখের ভাষা পড়বার ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেলেছেন? যে যায় লঙ্কায়.. সেরকম ভাবনা আমরা তো আর ভাবতে চাই না। হয়ত সেজন্য যখন সময়সূচী জুনে দেওয়া হল জনগণ সেসময় সে সিদ্ধান্তকে স্বাগত না জানালেও মেনে নিয়েছিল। বহু বছর ধরে চলে আসা একটা ব্যবস্থার পরিবর্তনে জনজীবনে ছন্দপতন এলেও তার প্রতিবাদে, রাজপথে নামেনি কোন বিরোধী দল।
সচলে এই পোস্ট যদি আসে, যদি কেউ কেউ পড়েন,যারা পড়বেন তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ কে কিভাবে ভাবছেন, সমস্যার মুখোমুখি আদৌ হচ্ছেন কিনা সে সম্পর্কে মতামত রাখুন।

মধুবন্তী (মেঘ)
অতিথি লেখক


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সময় এগিয়ে পিছিয়ে দেয়াটা সম্পূর্ণ নির্ভর করা উচিত দিনের আলোর সদ্ব্যবহারের উপর। সেক্ষেত্রে শুধু বাচ্চাকাচ্চা নয়, যুবা-বুড়ো সবার সুবিধা বিবেচনায় এনে ঘড়ির সময় প্রয়োজনে আবারো নির্ধারণ করা দরকার বলে মনে করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

জনগণ মেনে নিয়েছে, কোথাও কোন অসুবিধে নেই, এসব ভ্যানতারা আর ভালো লাগছে না।
আপনাকে ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক।
মধুবন্তী

অতিথি লেখক এর ছবি

এনালগ টাইমে ফেরত যেতে চাই। শীতের দিনে ডিজিটাল চল্লে খবরই আসে।
/
ভণ্ড_মানব

অতিথি লেখক এর ছবি

শীত প্রায় আইসাও পড়ল বইলা, ...খবর করতে চাইলে এহনই সময়।
আবার দেহেন এই লেখা পড়া হইসে কতবার, কিন্তু গুঁতাগুতির শীর্ষে থাইকাও মন্তব্যের ঘর খালি, মানে খুব গরজ নাই বুজতে হইব। তাইলে আর খবর করবেন ক্যামনে!!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি তো খবর করতে চাই নাই...নিজেরই খবর হয়া যাবে এটা বলছি। হাসি
আমি কোথাকার কে যে খবর করে ফেলবে?
/
ভণ্ড_মানব

সাফি এর ছবি

আমি বিদেশ আসার পরেই প্রথম সূর্যালোক সঞ্চিত সময়ের উপকারিতা দেখলাম। কিন্তু এরা শুধু আগায় না, পিছায়ও। বোকা পাইসেননি সরকাররে যে তারা দেশরে পিছায় দিবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

এইডা ব্যাবাক থে ভালো কইলেন, ডিজি ডিজি বাংলাদেশ বানাইব সরকার, তাইলে সময় পিছাইলে তো সমেস্যা!! দ্যাশ পিছাইয়া যাইব এতে, এইডা তো ভাবি নাই!

আম জনতা নিপাত যাক, ডিজি বাংলা এগিয়ে থাক

পথিক [অতিথি] এর ছবি

ভালো আলোচনার বিষয়। ভাল লাগল পড়তে। আমাদের দেশ যে অঞ্চলে অবস্থান করছে, সেখানে এই সময় পরিবতর্নের বিষয়টা কতটা যৌক্তিক -সেটাই ভাববার বিষয়।

আর সামনের শীতে যদি এই সময় থাকে তাহলে - আমরাও সকাল ১১টায় কুয়াশা দেখব। আর সন্ধ্যা ৮ টায় কাথা মুড়ি দেব।

ভালো তো - .......................

প্রবাসিনী এর ছবি

বাংলাদেশের সব মানুষের জীবন থেকে এক ঘন্টা হারিয়ে গেল।
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

দ্রোহী এর ছবি

প্রায়ই আমাদের নীতিনির্ধারকদের বোকামীর খবর পড়ি আর ভাবি এর চাইতে গাধামী আর কিছু হতে পারে না। কিন্তু প্রায় প্রতিদিনই আমার ভুল ভাঙে নতুন নতুন গাধামীর খবরে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এক্কেরে ঠিক কইছেন।
মধুবন্তী

ধুসর গোধূলি এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ধুসর গোধূলী ভাই কঠিন হইলেও ভাবতে হইবে।

মধুবন্তী

মহাহারাজা এর ছবি

হ্যাঁ, বিদ্যুত সাশ্রয়ের সঠিক হিসেব পেশ না হওয়া পর্যন্ত এ লেখার প্রাসঙ্গিকতা বজায় থাকছে। কিন্তু ব্লগের জার্নালিস্টিক রোজনামচাটি কি করে সরকার বাহাদুরের সুনজরে আসবে - এ অন্যান্য দেশেরও খুব পরিচিত সমস্যা।

অতিথি লেখক এর ছবি

মহাহারাজাকে ধন্যবাদ জানাই। জার্নালিস্টিক রোজনামচাটি হয়ত কেন নিঃসন্দেহে সরকার বাহাদুরের নজরে আসার কোন সম্ভাবনা নেই, কিন্তু তারপরও কলম ,থুক্কু কী-বোর্ডে গুঁতোগুতি চলবেই।
মধুবন্তী (মেঘ)

অমিত সরকার এর ছবি

তুমি একদম ঠিক লিখছ। এদের তো সকালে কাম নাই তাই বাচ্চা গুলো কি কষ্ট পাচ্ছে বোঝে না। এদের পুলাপান তো অনেক বড় তাই মাথায় আসবো না। বাংলার মানুষ প্রতিবাদ করতে ভুলে গেলো নাকি? বাংলার মানুষ জাগো, সব দেশে শীতকালে এটা ঠিক করে দেয়, না হলে টাইম জোনে প্রবলেম হবে।
ডিএসটি আইডিয়াটা ঠিক কিন্তু ভুলভাবে প্রয়োগটা গন্ডগোল।
দারুন লিখেছো পড়ে ভালো লাগলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

অমিত আপনেরে ধইন্যবাদ, বাঙালী কিছু ভুলে না।
মধুবন্তী (মেঘ)

Tarak [অতিথি] এর ছবি

ভালো লিখেছেন। যুক্তি আছে। আমি ছোটবেলায় “নবদ্বীপ হালদার” এর বেঙ্গল টাইম কমিক শুনেছিলাম। এটা (ডিএসটি) তো দেখছি সেই রকম হচ্ছে।
তারক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ তারক।
মধুবন্তী (মেঘ)

অতিথি লেখক এর ছবি

সময় হয়েছে সময় বদলাবার।

মহসীন রেজা

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মহসীন রেজা ভাই।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আমাদের মেরুদন্ড প্লাস্টিকের হয়ে গ্যাছে। এইটা হুজুর-বাহাদুরেরা ভালোমতোই বুঝে...

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অতিথি লেখক এর ছবি

ফুল শার্টের বদলে তাই হাফ শার্ট, গলার টাই খুলে ফেলুন, তাইলে কতটা বিদ্যুত সাশ্রয় হল?
মধুবন্তী (মেঘ)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।