ঘর -সংসার --কাজ কন্যা--কাজ বালক-

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৪/১২/২০০৯ - ৬:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বলিতে ছিলাম ঘর সংসার নিয়া। সংসার শব্দটিকে যতই "সং" এর সার বলিয়া বৈরাগ্য দেখাই না কেন গরম গরম ভাত আর নরম নরোম বাতাস পাইতে হইলে "সং" টা বাদ রাখিয়া সার টা নিয়াই ভাবতে হয় । তো সংসারে কি কি আছে একটু দেখি? ভাই বোন, মা বাবা, বউ , ছেলে মেয়ে, জিনিস পত্র। এইতো? না একটা জিনিস বাদ পড়িয়াছে। তেলাপোকার কথা যে বাদ পড়িয়াছে।! আমি হলফ করিয়া বলিতে পারি বারাক হোসেন ওবামার হুয়াইট হাউজ থেকে শুরু করিয়া নাসার হেড কোয়াটার পর্যন্ত এমন কোন জায়গা নেই যেখানে তেলাপোকা নেই। না আর একখানা আইটেম বাদ পড়িয়ছে মনে হয় !!!! তৃতীয় বিশ্বের লাট বাহাদুরী করা মধ্যবিত্তের বা উচ্চবিত্তের ঘরে এক খানা কাজের লোক থাকিবেনা তাহা বিশ্বাস করা কি কষ্টকর নয়? সোনার বাংলার চেহারা যদি সত্যই সোনার বাংলার মতই হইত তাহা হইলে এই বিশাল সংখ্যক কাজ বালক বালিকাদের কোথায় পাওয়া যাইত ?ভাবিবার বিষয় বটে।

বলছিলাম শীত হানা দিয়াছে-- আপনার কমলার খোয়া টাইপ ঠোঁট খানাকে যত্ন আত্মি করিবার জন্য, সেটি ফাটিয়া যেন রস বাহির নাহয় সেটার জন্য নিশ্চয় একখানা ভেসলিন সাথে সাথেই রাখেন। কিন্তু গৃহকর্তা ---আপনি আপনার বাসার যে মানুষটি বেশী কাজ করে, সবার আগে ঘুম থেকে ওঠে তার জন্য কি একটা ভেসলিনের কৌঠা কিনিয়াছেন? হ্যাঁ এতক্ষনে যাহারা কিনেন নাই তাহারা ল্জ্জায় মাথা চুলকাইতেছেন। কারন অহরহ গভর্নমেন্টের মন্ত্রী এমপিদের ভুল ধরিতে ধরিতে আপনার নিজের ভুল গুলো ভাবিবার সময় কই? প্রতিটা সংসারের আপনি ও একজন গভর্নমেন্ট, পরিচালক। উহার সব কিছু সুষ্টু এবং জনকল্যান মুলক ভাবে চলিতেছে কিনা তাহার দায়ভার আপনার কাঁধেই বর্তায়। আপনার বাসায় সবাই ধনী কেবল ঐ কাজ কন্যা বা কাজ বালকাটা ছাড়া। তাই তার দিকে আপনার সুনজর থাকা খুবই জরুরী।
আসুন না তাদের জন্য কি করতে পারি দেখে নিই - আসুন না প্রত্যেকটা পেশাকে সমান চোখে দেখি; আসুন না যে মেয়েটি আপনার ছোট বাচ্চাটিকে হররোজ লালন করিতেছে- একটা গুরু দায়িত্ব পালন করিতেছে- নুন্যতমের ও অধম বেতনে তাকে একটু পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে চালাই। শুধু একটু সুনজর। সেটা নিশ্চয় মন্ত্রী এমপির কাজ নয় তাই আপনি বলিতে পারিবেন না পেপার খুলিয়া যেরকম বলেন" আরে দেশটা দেখার কেউ নাই, গেল গেল রসাতলে গেল।

--ডিজিট করেই দিই যেন আপনার নজরটা ও ত্বরিৎ ভিজিট করে সমস্যা সমাধানে---
১। কাজের লোকের প্রয়োজনীয়তা:--
বাসায় কাজ কন্যা , বালিকা রাখা কতটুকু উচিত তাহা ভাবার যথেষ্ট কারন রহিয়াছে, ইহা শিশু শ্রমের ভেজাল সমীকরনে না ফেলিয়া ও বলতে পারি --বিশ্বের অধিকাংশ দেশে এহেন কালচার নাই। আমি জানিনা আমাদের রক্তে এত লাট বাহাদুরি কেন? সেটা কি লাট সাহেবদের শাসনের ফল? কই লাঠদের নিজ ভুমিতে তো তিনি ৫ মণ ওজনের ব্যাগটা ও নিজের মাথায় করিয়া বাড়ি ফিরেন।
তবে আমরা কত টাকার মালিক যে নিজের কাজ নিজে করিতে পারি না? বাসায় মুনিব সাজতে হয়। একটা দেশের জনগনের মধ্যে যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ফাঁরাক এতটুকু হয় সেখানে জননেত্রী বলেন আর দেশ নেত্রী বলেন কোন কিছুতেই কাজ হবে না। সে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আপনার বাসায় কাজ করছে যেমন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আপনি অফিসে কাজ করছেন। তাই জনাব একটু সদয় হোন। একটু মানুষ ভাবুন । আমার এই প্রবাস দেশে যখন দেখি ফেক্টরী ম্যানেজার আর ড্রাইবার একই সাথে তাস খেলে, বিয়ার খায়, আবার কাজের সময় ও ঠিক ঠিক ভাবে অর্ডার মেনে চলে তখন মনটা আপ্লুত হয়ে যায়। আর যখন ছোট কালে গ্রামের একটা দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে ওঠে " রিকশায় উপরে মুনিব আর পাটাতনে কাজের মেয়েটি লোহার শিক ধরিয়া আছে। মুনিবের পাশে একটা সিট খালি পড়িয়াই রয়েছে তখন পুর্ব পুরুষদের প্রতি কেমন যেন ঘিন ঘিন করিয়া উঠে। যদিও ঈদে ঈদে কবর জিয়ারত করি তাহাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে। আল্লাহ উনাদের ক্ষমা করবেন।

২। শিশুরা নাকি শিখে -দেখে দেখে -অনুকরন করে। তো আপনার শিশুর প্রথম পাঠেই শিখে নিল --- এই দুনিয়ায় সে কিঞ্চিৎ বেশী ভাগ্য নিয়াই জন্মাইয়াছে- যখন দেখে সে চেয়ারে বসে খেলতে পারে, আর সারাদিন তাকে যে খেলনার যোগান দেয় সে কোন ভাবেই ফ্লোরের উপরে উঠিতে পারিবেনা, একই কাঠ দিয়ে বানানো চেয়ার আর টুলের এ কি তফাৎ!!! বীর বাঙ্গালীর বিজয় কি এই জন্য ? আপনার ছেলেকে বৈষম্যের আদর্শলিপি শিখানোর উত্তম পাঠের এহেন ব্যবস্তা আর কি হতে পারে?মেয়েটা বা ছেলেটা বয়সে তার যত বড়ই হোক না কেন তাকে মামুলি নামে ডাকার এবং তুই করে বলার অধিকার সে সংরক্ষন করে জন্মগত ভাবেই। তাই আমি কাজ বালক বালিকা না রাখার পক্ষে, কারন আমি আমার সন্তানকে জন্মের পর পরই এটা শিখতে দিতে পারি না "বাবা এখানে টাকার মাপে সম্মান মাপা হয়। মানুষ মাপা হয়।" আমি দেখাতে চাইনা যে তারই সমবয়সী আরেকজন একই দেশের মানুষ হয়েও ঘরের সবচেয়ে খারপ অংশে ঘুমাবে, । সবার শেষে এবং সবার আগে ঘুম থেকে উঠার টাইম টেবল তার ফিট করাই আছে কপাল ঘড়িতে জন্ম নিবন্ধনের ও আগে। কবির কথা মত সে আরলি টু রাইজ পালন করে, আরলি টু বেড় সেটা তো মুনিবের মুনিব জনাবার উপরে নির্ভর করে।

৩। জনাব/ জনাবা-- কাজ বালিকা বা বালক গনদের সারাদিন হাত পানিতে ডুবাতে হয়, ভিজা থাকে। ইহা ছাড়া ও ডিস ক্লিনার ইউজ করতে হয় সব সময়। তাই তাদের হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে এক ধরনের চর্ম রোগ দেখা দেয়।
এবং এটা অনেক ক্ষেত্রে ছোঁয়াছে ও। আজকে কি একটু ডাকিয়া দেখিবেন--" দেখি তোমার হতটা?" আজকে কি একটা গ্লাভস কিনে দেবেন তাকে? আজকে কি তার জন্য একটু ঔষধ নিয়ে আসবেন? যেমন করিয়া মন্ত্রিরা মাঝে মাঝে হাসপাতালে ছুটে যায় কর্তব্যরত পুলিশ আহত হলে, যেমন করে মন্ত্রীরা নিহতের মায়ের সান্ত্বনা দেয়। বুকে নিয়ে নেয়, মাতায় হাত বুলিয়ে দেয় যতই ময়লা কাপড় থাকুক না কেন। আপনাদের ভাষায় এহেন জঘন্য মন্ত্রীরা যদি পারে আপনার সংসারের নির্বাহী হইয়া আপনি ও একটু দেখান না সদয়। মহানুববতা। আপনি তো সেই খোলাফায়ে রাশেদিনের অনুসারী, আপনি তো খোলাফায়ে রাশেদিনের ইতিহাস জিবনী পড়িয়া বড় হইয়াছেন, তাহাদের জোস ধারন করিয়া যে কোন জেহাদে ঝাঁপিয়া পড়েন। কই তাহাদের মহানুভবতার নজির গুলো? হযরত ওমর উটের রশি হাতে উটের উপর তারই ভৃত্য- মনে পড়ে?
আমার মাথা নত হয়ে আসে, আমার চোখ ছলছল করে, আমি ক্ষোভে ফেটে পড়ি, আমি কি তাদের উত্তর সুরি, নাকি বৃটিশ বেনিয়াদের?

৪। সেই যেদিন মেয়েটি প্রথম আপনাদের বাসায় এসেছিল সেদিন ই তাকে দিয়েছিলেন সবচেয়ে খারাপ মশারিটি, সবচেয়ে খারাপ বেডসিট , বালিশটি।
একটা মশারির কত দাম? দেখেছেন কি জনাব সংসারের প্রধানমন্ত্রী-- কোনদিন একটু নজর দিয়ে? তার মাশারিতে কয়টা ছেড়া? নাকি ব্যস্ত থেকেছেন হজ্জ্ব ফ্লাইট কেন ডিলে হল , এ নির্ঘাত মন্ত্রীর ব্যর্থতা নিয়ে বিশাল গবেষনা করতে। আসুন না আপনার ঘরের তেলাপোকার সাথে যার বসবাস তার ঘরটা একটু বাসযোগ্য করে দিই। খুব কি বেশী ক্ষতি হবে? মানুষ কি ছিঃ ছি করবে? না কি টিটকারি দেবে " নতুন হাজী মহসিন" বলে।

৫।আপনার বাসার কিশোরি মেয়েটির ও সাজতে ইচ্ছে করে একটা আয়না তার ও আরাধনা, একটা পরিস্কার চিরুনী তার ও কাম্য। এই শীতে তার ও একটা ক্রিম দরকার, একটা ভেসলিন দরকার। হয়ত অনেকে কিনে দেন, তবে -----ঐ যে দায় সারা ---কারন আপনি জেনে গেছেন ফুটপাতের ৫ টাকা দামের ক্রিম দিলেও সে খুশি হবে। সবচেয়ে অলৌকিক বিষয় যে সে ঐটা ইউজ করলে তার মুখে কোন নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে না। আর ঐ ক্রিম যদি আপনি একটু মুখে লাগান দেখবেন সাথে সাথেই আপনার মুখ তিত করলার পৃষ্ট ধারন করেছে। দুই এক টাকা কমের জন্য, ফুটপাতের দোকান থেকে কিনতে হবে এমন কি? স্মরন করুন না আপনার ছোট বাচ্চাটাকে সে কত আদর করে, একটু কান্না করলে কেমন করে ছুটে আসে।

৬। মেয়েটি বা ছেলেটি আপনার বাসায় আজকে অনেক বছর ধরে---একটু জানতে চাইবেন কি সে মক্তবে আরবি পড়ে এসেছে কিনা। নামাজ পড়তে জানে কিনা? না জানলে একজন মুসলমান হিসাবে(স্ব স্ব ধর্মের অনুসারি হিসাবে) আপনার কি একটু দায়িত্বে পড়ে না সেটা ব্যবস্থা করার, আমি বলছি না আপনার ছেলেকে ক্যাডেটে পড়ান বলে ওকে ও ক্যাডেটে পড়াতে হবে। দারিদ্রতার জন্য, তার ভাগ্যের জন্য মেয়েটির কোন দোষ নাই। সে এত কম বয়সে আপনার বাসয় ঢুকে গেছে যে তার আর অন্য কোন কিছু ভাবার ফুরসত নাই। আপনি যে ভাবে দুনিয়াটা দেখাচ্ছেন, সে ভাবেই সে দুনিয়াটা বুঝতেছে। খাঁচার পাখির মত।
শখ করে পোষা খাঁচার পাখির যদি এত যত্ন করতে পারেন, সারাদিন আপনার বাসায় কাজ করা মানুষটির দিকে কি একটু নজর দিতে পারেন না?, মাদার তেরেসার নজর চাইতেছিনা ---একটু মামুলি নজর দিন।

৭।আপনার ছোট বাচ্চাটা দিনের বেশীর ভাগ সময় তার মুখটা কাজ কন্যার কাঁধের উপরই রাখে। আপনার বাচ্চার খাতিরে হলেও তার জামাটা পরিস্কার থাকা জরুরী। ও বলতেছেন--" মেয়েটা কোন কিছু পরিস্কার রাখতে জানে না।" কিনেতো কম দিই না।"
না না একদম ঠিক নয় বাচ্চা যার কোলে তার কাপড়তো অপরিস্কার হবেই, যে সারাদিন ঘরের কাজ করে, পরিস্কারের কাজ করে তার কাপড়তো অপরিস্কার হবেই। আপনার হাত থেকে কিছু পড়লেই তো ডাক দেন " এই সেলিনা, তাড়াতাড়ি আয় না।"
তাই স্বাভাবিকের চেয়ে তার বেশী কাপড় থাকা দরকার।
বাচ্চার মুখ থেকে যত লালা পড়ে তা তো ঐ মেয়ের কাঁধেই পড়ে- তাই না? ইষ্টার্ন প্লাজায় যেতে বলছি না এই রাজলক্ষী মার্কেট থেকে হলেও কিছু নতুন কাপড় কিনে দেন। নাকি ভেবে বসে আছেন এই ঈদেই তো দিলাম, তাছাড়া আপনার বড় মেয়ের সব কাপড়ই তো ও পড়ে।" জনাবা --নতুন জিনিসের স্বাধ কি পুরনোতে হয়? আপনি অন্য জায়গায় দশ হাজার টাকা দান করে যে খুশিটা দেখবেন না তার চেয়ে অনেক বেশী খুশি দেখবেন যদি আপনার কিশোরি কাজের মেয়েকে একটা লালের উপর কমলা কালারের ড্রেস কিনে দেন। সাথে দুইটা মাথার ক্লিপ। তবে ভুলেও মাথার তেল কিনে দেবেন না। তেল কোন উপকারে আসে না বরং বালিশ নষ্ট করে চুলের গন্ধ তৈরী করে। তার চেয়ে একটা সেম্পু কিনে দিন।

৮। খুব ভোরে যারা ঘুম থেকে উঠেন তারা ক্ষুধাটা টের পান। আমাদের সাবারই এই ক্ষুধা টা লাগে সকাল ৫ টা ৬ টার মধ্যে, কিন্তু আমরা ঘুমে থাকি বলে তা অনুভব করি না। কিন্তু আস সালাতু খায়রুম মিনান নাওম শুনেই যার উঠে যাওয়ার নিয়ম সে তো জানে- ঘর ঝাড়ু দিতে দিতে প্রতিদিনই তার এই ক্ষিধাটা লাগে।
যেহেতু সে কাজের মানুষ তাই তার খাবারের প্রতি লোভ থাকবেই। তাই যে খাবারটা তাকে দিবেন তা একটু আগেই দিয়ে দিন না। তখন সে চুরি করে আর খেতে চাইবে না। অথবা সকালে সে কি খাবে তা রাত্রেই বলে দিন না। আর আর যেটা আমার খুব খারাপ লাগে সেটা হল খাবারে পৃথক করা, আমারতো ঘরে বাইরে কত কিছু খাই, কত রকমের, তারা তো এসব পায় না। তার জন্য যেটা অমৃত আপনার কাছে আমার কাছে সেটা মামুলি খাবার। আমি জনাবাদের বলি,প্লিজ বেহেশতে যেতে চান--- যদি চান কোন ভাবেই কাজ কন্যাকে খাবারের ব্যাপারে একটা কথা ও বলবেন না, অনাবশ্যক দেরী করবেন না, বাসি খাবার দিবেন না, ভাল খাবারটা সব সময় ফ্রিজে না রেখে , না পঁচিয়ে তাকে ও দিন, আবার চামচের আগায় একটু করে দিয়ে মহাভারত দিয়েছেন মনে করবেন না, বা দয়ার রানী ক্যামেলিয়া ভাববেন না। বেশীই দিন। সন্তুষ্ট করুন।

৯। টিভিতে সব সময় পেপসোডেন্ট এর বিজ্ঞাপনে বাচ্চাদের দাতের কথা বলা হয়, আপনি যদি স্বীকার করে থাকেন আপনার বাসার কাজের বাচ্চাটা ও একটা বাচ্চা তাহলে তার জন্য একটা টুথ পেষ্ট দিন না যদি না থাকে। আর সারা দিন কাজ করে একটু টিভি দেখতে চায়। দিন না এই মামুলি সুযোগটা!!নাকি খোটা দেবেন?

১০। বলতে গেলে মনে হয় শেষ হবে না। আর এসব কিছুর মেরিট ডেমারিট নিয়ে ও অনেকে কথা বলবেন, বলবেন বেশী প্রশ্রয় দেয়া ঠিক না। কিন্তু ভ্রাতা ও ভগ্নি গণ মানবতা কি আগে নয়? তাই বাদ বাকিটা আপনারা দেখুন সেতো আপনার সংসারেরই একটা অংশ। বছর বছর আপনার বেতন না বাড়লে আপনি আপনার অফিসের বসের উপর , কাজের উপর অসন্তুস্ট থাকেন এবং এটা প্রকাশ ও করতে পারেন। আপনার বাসার লিটন নামের যে ছেলেটা বা সেলিনা নামের যে মেয়েটি নদী ভাঙ্গা পদ্মা পাড় থেকে ভাগ্য দোষে ঘুড়ির নাটাই ফেলে, পুতুল খেলার সময়টা বন্ধক রেখে চলে এসেছে আপনার রান্না ঘরে তার বেতনের দিকে একটু নজর দিন, তারতো কোন এভসেন্ট নাই সে প্রেজেন্ট বোনাস পেতেই পারে, ঈদের সময় যেতে দেন নাই মাংসের চর্বি গুলা প্লেট থেকে ধুয়ার জন্য রেখে দিছিলেন। ব্যাস্ততার ফাঁকে সে ও ভুলে গেছে ঈদে সবাই বাড়ি যায়। তাকে কি এখন ছুটি দেবেন? তার তো অনেক সি.এল -এ.এল বাকি, সেতো চাকরী বিধি মতে আপনার কাছ থেকে অনেক ছুটি পাওনা, মে দিবসের ৮ কর্ম ঘন্টার কথা মনে পড়লে তো তার ওভার টাইমের পাহাড় জমে গেছে। এত ওভার টাইমের টাকা শোধ করবেন কি করে? বেহেশতে যাবেন কি করে একটা ছোট বাচ্চার হক না দিয়ে?

আমি চাইলে কাজ রত কাজের মেয়ে বা ছেলের একটা ছবি দিতে পারতাম। আমি সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গেছি। কারন আমি চাইনা তাদের কষ্টের মুখ আমার পোষ্টের আবেদন হোক। এতক্ষন ধরে আমি যে ছবিটা আঁকলাম সেটা আমি পেলাম কোথায়? নিশ্চয় আমার ঘরে , বাড়িতে , বা বাসার দেখা থেকে। হ্যাঁ আমার নিজের এখনো সংসার করা হয়নি, আশা করছি আমার সংসারে আমি এগুলো মেনে চলব, চেষ্টা করব। সমাজের অনেক নিয়মের বেড়াজালে অনেক সময় নিজের ইচ্ছে মত চলা যায় না। তাই আমি সংসারী না হয়ে বৈরাগী হতে চাইতাম। পথিক নবী হতে চাইতাম, একতারা বাজিয়ে ট্রেন স্টেশনে বসে বসে ট্রেনের আসা যাওয়া দেখতে চাইতাম। একটা অনিশ্চিত খাবার মেনু চাইতাম----লিখা পড়িয়া এটা ভাবার কারন নেই যে আমি অন্য কোন গ্রহের মানুষ আমি ও এই সব দোষে দুষ্ট, আমি ও আর দশজন বাঙ্গালীর মত কথার কাবিল। আবেগে বলে ফেলতে পারি কিন্তু বাস্তবে করতে পারি না। তবে ভাল হতে চাই। মানবতার জয় চাই।
ভাষার মিশ্রন করায় যার পর নাই দুঃখিত----

সচল হতে চাই ----
আপাতত আপনাদের মেহমান ---
আশমএরশাদ----


মন্তব্য

প্রবাসিনী এর ছবি

খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

তবে একটা প্রশ্ন/অনুরোধ, সাধু ভাষা আর চলিত ভাষা না মেশালে হয় না?
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

আশমএরশাদ [অতিথি] এর ছবি

ভাষার মিশ্রণটার জন্য আবারো ক্ষমা চাই,
প্রেরনা পেলাম আপনার সুন্দর মন্তব্যে,
শুভ কামনা আপনার জন্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে ও এক খামার ধনেপাতার শুভেচ্ছা
আশমএরশাদ

তিথীডোর এর ছবি

এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন বলে ধনেপাতা নিন !

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

@স্নিগ্ধা
দেশের বাইরে না আসলে হয়ত আমার ও এত গভীর ভাবনা আসত না
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য,
আশমএরশাদ

স্নিগ্ধা এর ছবি

নেহায়েতই দেশে থাকি না বলে, থাকলে আমি নিশ্চিত এই ব্যাপারগুলো এরকম চোখে লাগতো না - এখন যেমন বেড়াতে যাই যখন বহু কিছুতেই অস্বস্তিও হয়, মনও খারাপ হয়! ঠিক যেমন অনেক কিছুই দৃষ্টিকটু মনে হয় নি দেশে বড় হয়ে ওঠার সময়, আমাদের এই অদ্ভুত মানসিক দীনতার নানারকম প্রকাশে। আমি নিজেও তো অপরাধীদের দলেই ......

সচল হতে চান সে তো খুবই ভালো কথা, স্বাগতমও জানালাম, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য,
আপনার মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম
আশমএরশাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, আমাদের মনের কোনে ঘুঘুঁর অবস্থানকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তলার জন্য।

-বুদ্ধু

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য,

আশমএরশাদ

তানবীরা এর ছবি

ছয় নম্বর পয়েন্টটার সাথে একমত না। ক্যডেট না হোক পাড়আর স্কলেতো যেতেই পারে।

ভালো লেখা। স্বআগতম এ আসরে।
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

বৈদেশেই আছি , ফিরতে হবে যে-----
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য,

আশমএরশাদ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

এজন্যেই বিদেশে চলে আসেন, অথবা এসে থাকলে দেশে ফিরে যেয়েন না চোখ টিপি নিজের কাজ নিজেই করবেন, দিল থাকবে সাফ।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

মাশ্রুম্পার্টির ---ঠিক বুঝলাম না শব্দটির অর্থ --মাফ করবেন,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য,
আশমএরশাদ

গৌতম এর ছবি

এই লেখা মাশ্রুম্পার্টির কাজে লাগবে। চোখ টিপি

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য,
সহজ হোক আমাদের জিবন,
আশমএরশাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

জটিল।

স্পার্টাকাস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।