হারিয়ে যাওয়া মুখ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৭/০৩/২০১০ - ১২:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লোহার গেটটা কিঁচকিঁচ শব্দ তুললো। ঠেলে বের হয়ে রাস্তায় পা দিলাম। দুপুরবেলার নির্জন রাস্তা। মাথার উপরে রেগে ওঠা একটা সূর্য ভীষণভাবে রোদ ছড়াচ্ছে।
ঠিক তখন পিছন থেকে একটা চেনা অচেনা ছেলে গলা আমার নাম ধরে ডাকলো। ঘুরে দেখি শান্ত। কালো চেহারাটা রোদে পুড়ে আরো কালো দেখাচ্ছে, একইরকম নির্ভাজ শার্ট আর কাঁধে ব্যাগ । চেহারাটা ক্লান্ত। জিজ্ঞেস করলো, কেমন আছো?

কেমন একটা আনন্দের পাখি উড়ে এসে আমাকে ভর করলো। আমি সব দাঁত বের করে হাসি দিলাম, "ভালো, তুমি কেমন আছো?" উত্তরে অল্প হাসলো।

আমাদের কথা শেষ হয়ে গেলো। আমি আতিপাতি করে কথা খুঁজি। ইশারায় লাল বিল্ডিংটা দেখাই, "ওখানে প্লেসমেন্ট তোমার?"
-হুমম, আবারও ছোট্ট উত্তর।

আমরা হাটতে শুরু করি পাশাপাশি। ছোকড়া পিছন থেকে আমাকে চিনলো কিভাবে? কামিজের রং দেখে? উহু, নিশ্চয় চুল দেখে।
হাটতে হাটতে আড়চোখে তাকাই ওর মুখের দিকে। মাটির দিকে তাকিয়ে কি যেন চিন্তা করে।

-তুমি আর ফিরবে না? হঠাৎ প্রশ্ন করলো
"জানি না, এখনো কিছু ঠিক নাই।"
-কোথায় যাচ্ছো?
"এই তো কাছেই, বড় রাস্তায়" হাত দিয়ে ডান দিক দেখাই।

টুক করে রাস্তাটা শেষ হয়ে গেলো। শান্ত বাম আর আমি ডানের পথ ধরলাম। রোদটা আমাকে একা পেয়ে কেমন ঝাঁপিয়ে পড়লো। হাতের ফাইলটা দিয়ে মুখ ঢাকতে পায়ের উপর এসে পড়লো, স্যন্ডেলে বসানো পাথর থেকে পাথরে খেলা করতে থাকলো।

আচ্ছা ! ওকে দেখে অত হাসলাম কেনো আমি?!! পাখিটা কোথা থেকে উড়ে আসলো? অনেক দূরে চলে গেলে পরস্পরের ভালোবাসায় ধূলো পড়ে যায় জানি, তাই বলে আমার যত্ন করে জমানো ক্রোধেও এত ধূলো পড়বে।


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

আপনি কে জানি না (নাম/নিক দিতে ভুলে গেছেন), কিন্তু প্রতিশ্রুতিশীল একজন গল্প লিখিয়ে অন্তত এটকু বুঝতে পারলাম!

সচলে স্বাগতম জানাবো নাকি জানাবো না বুঝছি না, মানে এটাই আপনার প্রথম লেখা কিনা জানিনা যেহেতু ...... কিন্তু, আপনার আরো লেখার জন্য সোৎসাহে অপেক্ষা করবো, এটা জানিয়ে গেলাম হাসি

মেয়ে এর ছবি

না এটাই প্রথম লেখা নয়।সচলের কল্যাণে নামে বেনামে কুনামে ভয়ে ভয়ে লেখা দিয়ে ফেলি। খাইছে
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নাশতারান এর ছবি

ছোট একটা লেখা, বেশ মাজা মাজা। অনেক কিছু বলে গেলো।

নামটা জানিয়ে যাবেন, প্লীজ। আপনার লেখা আরো পড়তে চাই।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মেয়ে এর ছবি

নামটা দিতে মনে ছিলো না।এই দিয়ে গেলাম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুণ লাগলো লেখাটা। নামটা জানাবেন এরপর থেকে।

মেয়ে এর ছবি

দারুণ লাগলো জেনে আমারও ভালো লাগলো। হাসি ধন্যবাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখায় স্বাদ আছে, গতি আছে, আকাঙ্খা আছে। তার পরেও কিসের জন্য মন কেমন করে!

আরেকটু কি বড় করা যেতোনা?
তাহলে আমার মতো পাঠকও হয়তো পথ খুঁজে পেতো সহজেই।

লেখাটায় আপনার লেখনীর ঝলক আছে, সে থেকে বঞ্চিত না হওয়ার আশাতেই রইলাম।

লেখায় তো দেননি, মন্তব্যে হলেও নিকটা দিয়ে দিতে পারেন কিন্তু।

মর্ম

মেয়ে এর ছবি

কবি কবি ভাব,কবিতার অভাব হয়ে গেলো নাকি?!! =D&it
তবে পড়লেন এবং মন্তব্য করলেন বলে অনেক ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

P.S.D.

please scroll down!!

বাংলা করলে

দনিটা

দয়া করে নীচে টানুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

তাই বলেছি বলে মনে হয়েছে নাকি?! কী বিপদ!

নিদেনপক্ষে তিনবার পড়লাম লেখাটা, বারবারই মনে হলো 'আমি' বা 'ছেলেটা' সম্পর্কে যদি আরও ক'টা কথা থাকতো তাহলে বোধ হয় ঘটনা পরম্পরা নিয়ে নিজেকেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দিতে হতোনা। গল্পকার কাজটা করে দিলে তার পাঠক নিশ্চিন্তে লেখার আমেজটা নিয়ে মজে থাকতে পারে।

মোটামোটি নতুন লেখক হিসাবে পাঠক ধরে রাখা আপনার সহজাত বলেই মনে হলো, এজন্যই অমন মন্তব্য করেছিলাম। দুঃখিত, কষ্টের কারণ হয়ে থাকলে।

মর্ম

মেয়ে এর ছবি

মোটেও মর্মবেদনার কারণ হননি হাসি যদি আর লেখা হয় তবে সকল প্রশ্নের উত্তরসহ সরবরাহ করা হবে খাইছে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক সুন্দর...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মেয়ে এর ছবি

আর অনেক ধন্যবাদ হাসি

তাসনীম এর ছবি

ভালো লেগেছে লেখা, আরো লেখা আসুক।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেয়ে এর ছবি

আপনার শিশুপালনের খুব ভক্ত কিন্তু আমি। পড়ার জন্য ধন্যবাদ খাইছে

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার আগের লেখার লিঙ্ক দিতে পারবেন? মনে হয় এই নিকে লিখেননি।

++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

ঘ্যাচাং

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

চলুক
শেষ লাইনক'টা খাতায় টুকে রাখছি.. হাসি

লিখুন হাত খুলে, ইচ্ছেমতোন!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মেয়ে এর ছবি

আমার আগের পোস্টে আপনার মন্তব্যের জবাব ছিলো কিন্তু। দেখেছেন কিনা জানি না।

তিথীডোর এর ছবি

নিশ্চিন্ত থাকুন|
দিনের অনেকটা অংশই আমি সচলে কাটাই, পোস্ট/ মন্তব্য চোখ এড়ায় না সহজে..

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

আবারো ঘ্যাচাং! ওঁয়া ওঁয়া

নাহ্, দু'এক লাইন বাজে বকি বরং...
বলবেন কি (যদি মাইন্ড না করেন) "লেটার র্ফ্রম এ ডটার" পোস্টে আপনি কি কোন মন্তব্য করেছিলেন?
আমার খুব মনে আছে ব্যাপারটা, দ্বিতীয়বারের মতো প্রশ্নটা টানছি সেকারণেই...

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মেয়ে এর ছবি

উত্তরটা দেয়া ছিলো প্রথম মন্তব্যে। কিন্তু সেটা ঘ্যাচাং হয়ে যাওয়াতে আপনি আর দেখতে পাননি।
এত করে মনে আছে কেনো বলুন তো? খুব তীব্র ছিলো বলে কি? অনুভূতি কিন্তু বেশ চলমান একটা জিনিস। কিছুদিন আগের ধারালো ছুরি আজকে হয়ত ভোঁতা।

আজকে আপনার পোস্ট আর মন্তব্য দেখতে যেয়ে দেখি সব গায়েব। ভালো । সব অনুভূতি সবাইকে বলা ঠিক না। আমি নিজেও মন্তব্যটা নিয়ে আরামে ছিলাম না।
বিভিন্ন নামে লেখা, মন্তব্য করা আমার পুরানা বদ অভ্যাস।এইবার ভুল হয়ে গেছে।আর আপনিও সাথে সাথে এমন ক্যাঁক করে চেপে ধরবেন কে জানত।

অম্লান অভি এর ছবি

রাস্তাটার মতই ছোট গল্পের অবয়ব কিন্তু রেশ রয়ে যায় সুদূরের পথে। ভালো লাগল বৈকি কিন্তু ঐ চিনে পড়তে ভালো লাগে সবার আমারও তাই। দিন না একটা নাম পৃথিবী, মৃত্তিকা, নদী ,অরণ্য বা যা ইচ্ছে তাই নিজে নামের ভিড়ে। লিখুন, পাঠক তৈরী হলো আজ বেশ, হবে আগামীতেও।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

মেয়ে এর ছবি

নাম তো দিয়ে দিলাম মন্তব্যে। হাসি ধন্যবাদ

বাউলিয়ানা এর ছবি

লেখায় আবেগের পরিমিতি ঠিক রাখতে পেরেছেন।

খুব ভাল লেগেছে, আরও লিখুন।

মেয়ে এর ছবি

চেষ্টা থাকবে।ধন্যবাদ।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

ঝরঝরে লেখা আমার ভালো লাগে। হাসি.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

মেয়ে এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

স্পর্শ এর ছবি

সুন্দরম।
লিখতে থাকুন। চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মেয়ে এর ছবি

অনেক ধন্যবাদং খাইছে

ওডিন এর ছবি

লেখা ভালো লাগলো। ছোট, সুন্দর, গতিময়। আপনার আরো লেখার প্রত্যাশায় থাকলাম। হাসি

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

বইখাতা এর ছবি

চলুক চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।