আমেরিকার ডাকটিকেট বাণিজ্যঃ উদ্দেশ্য কি?

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/১০/২০১০ - ১:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[img=small][/img]

সম্প্রতি আমেরিকার ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম হিন্দু দেব-দেবী-ধর্মগুরুদের ছবিসম্বলিত ৭টা স্মারক ডাকটিকেট বাজারে ছেড়েছে। এগুলো ৪৪ সেন্ট মূল্যমানের তবে স্যুভেনির হিসেবে অনেক বেশি দামে (১৮.৯৯ ডলার) বিক্রি হচ্ছে। এখানে সবগুলো টিকেট দেখা যাবে। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম ওয়েবসাইটে এই ডাকটিকেট ছাড়া নিয়ে লিখেছে,

ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম গর্বিত যে তারাই প্রথম কোম্পানি য ...[img=auto]Shrine#2173AB[/img]

সম্প্রতি আমেরিকার ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম হিন্দু দেব-দেবী-ধর্মগুরুদের ছবিসম্বলিত ৭টা স্মারক ডাকটিকেট বাজারে ছেড়েছে। এগুলো ৪৪ সেন্ট মূল্যমানের তবে স্যুভেনির হিসেবে অনেক বেশি দামে (১৮.৯৯ ডলার) বিক্রি হচ্ছে। এখানে সবগুলো টিকেট দেখা যাবে। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম ওয়েবসাইটে এই ডাকটিকেট ছাড়া নিয়ে লিখেছে,

ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম গর্বিত যে তারাই প্রথম কোম্পানি যারা ঐশি ছবিসম্বলিত বিশেষ ধরণের ডাকটিকেট প্রবর্তন করেছে যার সুষ্পষ্ট আবেদন রয়েছে আমেরিকায় বসবাসরত ভারতীয় কমিউনিটিতে।

[img=auto]200px-ReligiousFreedomStamp[/img]

আমেরিকা সম্পর্কে আমার জ্ঞ্যান শুণ্যের কাছাকাছি, আবার বলা যেতে পারে মাইনাস লেভেলে। কারন আমেরিকা সম্পর্কে জানি তো না’ই বরঞ্চ অনেক কিছু ভুলও জেনে থাকতে পারি। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম সম্ভবতঃ আমেরিকার সরকারি ডাকবিভাগ না। আরও দুটো পোষ্টাল সার্ভিসের হদিস পেলাম গুগল থেকে। এক একটা হলো ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস এর অন্যটা হলো অফিস অব ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস। শেষেরটার ওয়েব এ্যাড্রেসে .গভ এক্সটেনশন থাকায় ধরে নেই যে এটাই সরকারি। কিন্তু আমার সীমিত জ্ঞ্যান বলে যে চাইলেই যার ইচ্ছে সে একটা ডাকটিকেট বের করে ফেলতে পারেনা। প্রস্তাবিত ডাকটিকেট সরকারের অনুমোদন পেলে তবেই বাজারে আসতে পারে। সুতরাং ধরে নেয়া যেতে পারে যে এই ডাকটিকেটগুলো আমেরিকা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত।

প্রশ্ন হচ্ছে কেনো এই ধর্মীয় অনুভূতিসম্পন্ন ডাকটিকেটের প্রকাশ? ডাইভারসিটির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞ্যাপন, নাকি অন্য কিছু? ভাবনা আসলো। যদিও এতে আমার মাথাব্যাথার কারন থাকার কথা ছিলোনা। তবুও ভাবনায় পেলো। আমি ব্যাক্তিগতভাবে একটা ধর্মের অনুসারী কিন্তু সব ধর্মের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে কারন ধর্ম অহিংসার কথা বলে, ধর্ম সাম্যের কথা বলে, ধর্ম মানবতার কথা বলে। তাছাড়া একজন হিউম্যানিটারিয়ান ওয়ার্কার হিসেবে আমার পেশাগত এথিক্স নন-সেকটারিয়ানিসম। কিন্তু আমার কাছে একটু প্রশ্নবোধক ঠেকলো যে হঠাৎ করেই আমেরিকা কেনো হিন্দু ধর্মের ঐশি ব্যাক্তিত্বদের ডাকটিকেট ছাড়তে গেলো। এনিয়েই একটু স্থুলাকারের বিশ্লেষন করতে ইচ্ছে হলো।

[img=auto]christmas-8c[/img]

প্রথম কারন হতে পারে বাণিজ্যিক। ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশনের যুগে পোষ্টাল সিষ্টেম ভিষন প্রতিযোগিতার মুখে এবং এই প্রতিযোগিতায় তাদের অবস্থান ক্রমশঃ নিম্নমূখী। বিলেতপ্রবাসী আমার ছোটনানা-নানুকে এখন তো চিঠি তেমন পোষ্ট করা হয়না। আমি দেশে থাকলে আমার নানু, বড়মামা বা আম্মার চিঠি স্ক্যান করে মামাদের ইমেইল করে দেই। মামার সেই এ্যাটাচমেন্ট প্রিন্ট করে নানা-নানুকে দেয়। কনফিডেনশিয়ালিটির সমস্য নেই, মামারা এক অক্ষরও বাংলা পড়তে পারেনা। এছাড়া ডিএইচএল, ফেডএক্স, বা এইসব বড়বড় কুরিয়ার কোম্পানিগুলোওতো সদর্পে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। গতিশীল জীবনে এখন পোষ্টাল সার্ভিস ক্রমশই কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। তার পরও মানুষ কিন্তু পোষ্টাল সার্ভিসকে একেবারে অবসোলিট ঘোষনা করে দেয়নি। বিশেষতঃ আমাদের উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিতে পোষ্টাল সার্ভিস কিন্তু এখনও আদরণীয়। ঢাকায় থাকতে দেখেছি অনেক বন্ধুর বাড়ি থেকে টাকা আসতো পোষ্টাল মানি-অর্ডারে; তারা কুরিয়ার সার্ভিসকে গ্রহন করেননি। তেমনভাবে, আমার বিশ্বাস আমেরিকার ভারতীয় উপমহাদেশীয় কমিউনিটি কিন্তু এখনও পোষ্টাল সার্ভিস ব্যবহার করে থাকেন সাংস্কৃতিক অভ্যাস থেকে। বিশেষকরে বাংলাদেশ, ইনডিয়া বা পাকিস্তানে তাদের নেটিভ এলাকায় হয়তো এখনও ডাকবিভাগই একমাত্র ভরসা। তাই ধারণা করা যেতে পারে যে আমেরিকার ডাকবিভাগ এই ষ্ট্যাম্পগুলো প্রবর্তন করে বিশালসংখ্যক ধর্মপ্রাণ হিন্দু অভিবাসীদেরকে এগুলো ব্যবহারের প্রতি উৎসাহের মাধ্যমে কিছুটা হলেও রেভিনিউ বাড়াতে পারবে। মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হিসেবে মন্দ না এটা।

[img=auto]yom_kippur_jewish_holiday_fasting_judaism_holy_day_postage-p172977875303122075anr4u_400[/img]

[img=auto]hindu_om_postage-p172197224307592993anr4n_400[/img]

[img=auto]Islam-US-Postage-Stamp-01-300x300[/img]

বিষয়টাকে স্থুলভাবে পলিটিক্যালি দেখারও অবকাশ থেকে যায়। বারাক ওবামার সরকারের সাম্প্রতিক জনপ্রিয়তায় ঘাটতি এবং গ্রাউন্ড জিরোতে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে অব্যহত বিতর্ক একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। ওবামার মুসলিম পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং এই মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত; এ দু’টোর মধ্যে কেউ যোগসূত্র স্থাপন করতে চাইলেই করতে পারেন। এখানে ব্যাপারটা এমন কি হতে পারে যে এই পোষ্টেজগুলো কিছুটা হলেও হিন্দু ধর্মের অভিবাসীদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের জন্যে সহানুভূতির জায়গা সৃষ্টি করবে?

বাকি থাকলো ডাইভার্সিটির নামে এই পোষ্টেজ প্রবর্তণ করা এবং এটার কনসিকোয়েন্স সবথেকে খারাপ। আমেরিকায় সংখ্যালঘুদের জনসংখ্যা সম্পর্কে উইকিতে পেলাম অভিবাসী হিন্দু ধর্মের জনসংখ্যা ৮ লাখের মতো। মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। সাধারনভাবে স্বীকৃত জনসংখ্যা ২৫ লাখ আর কোনও কোনও সূত্র দাবী করে ৬০ থেকে ৭০ লাখ। বৌদ্ধ জনসংখ্যা মতভেদে মোট জনসংখ্যার .৫% থেকে .৯%। ২০০৮ সালের আদমশুমারী বলছে ইহুদীর সংখ্যা ৬৫ লাখ। এছাড়া শিখ আছে, বাহায়ী আছে, আরও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আছেন। আমেরিকায় অভিবাসীদের আনাগোনা, সেও তো শতবর্ষের ইতিহাস। তাই প্রশ্ন জাগে হঠাৎ করে তারা সংখ্যালঘুদের ধর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্যাকুল হয়ে উঠলো কেনো।

আমার তো তথ্যসূত্র বলতে ইন্টারনেট সার্চ এঞ্জিন। সার্চ দিয়ে দেখলাম আমেরিকা ডাকবিভাগ এর আগে ক্রিসমাসের, জিউইশদের উৎসবের এবং ইদের ডাকটিকেট ছেড়েছিলো। এর আগে তারা রিলিজিয়াস ফ্রিডমের কথা বলে একটা ডাকটিকেট ছেড়েছিলো ১৯৫৭ সালে। কিন্তু আমি সার্চ দিয়ে পেলাম না জেসাস বা অন্য কোন ঐশি মানবের ছবিসম্বলিত ডাকটিকেট।

তাহলে কি ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াতে পারে যে আমেরিকা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কতোটা গুরুত্ব দেয় এবং শ্রদ্ধা করে এটা দেখাতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে? তাহলে কিন্তু আলামত ভালো না। দু’দিন পরে আবার কোন মুসলিম নবীর ছবি (সম্ভাবনা কম, ডেনিশ কার্টুনিষ্টের ঘটনা তো জানা আছে) দিয়ে না পোষ্টেজ ছেঁপে ফেলে, নতুবা নিদেনপক্ষে মক্কা-মদীনার ছবি তো আছেই। জেরুজালেম বা স্বর্ণমন্দিরের কথা বাদ দেই কেনো। যাইহোক, আলটিমেট উদ্দেশ্য কি সেটাই মূখ্য বিষয়। আমেরিকার সাধারন মানুষ কিন্তু পরধর্মসহিষ্ণু। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কোন ঘটনা আমি কখনও শুনিনি। ৯/১১ পরবর্তীকালে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হলেও তা উন্মাদনার রূপ তো নেয়ই নি বরং সাধারন আমেরিকানরা তাদের মুসলিম প্রতিবেশিদেরকে প্রটেক্ট করেছে, মেন্টাল সাপোর্ট দিয়েছে। সুতরাং আকষ্মিক পরধর্মপ্রেম একটু সন্দেহের উদ্রেক করে বৈ কি।


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

ওই usps ই আমেরিকার সরকারি পোস্টাপিস। এদেরটা নেহাতই ব্যবসা। তাড়ায় আছি, পরে বাকি পড়ে বিস্তারিত লিখুম নে।

অতিথি লেখক এর ছবি

অপেক্ষায় থাকলাম।

রাতঃস্মরণীয়

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি যতটুকু বলতে পারতুম তার চেয়েও ভাল ভাবে লোকজন বলে দিয়েছেন এর মধ্যেই। আর কি বলি।

তাসনীম এর ছবি

আমেরিকাতে যে কেউ পোস্টাল স্ট্যাম্প তৈরি করতে পারে...এই লিঙ্কে দেখুন। প্রাইভেটলি বের করা স্ট্যাম্পের দাম অবশ্যই বেশি পড়ে।

তবে ঈদ গ্রিটিংসের পোস্টাল স্ট্যাম্পটা মনে হয় সরকার থেকে বের করা। ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস (usps.gov এবং usps.com দুটো ডোমেনই আছে) সরকারী পোস্ট অফিস।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ তাসনীম ভাই। প্রাইভেট কোম্পানির বের করা ষ্ট্যাম্প ব্যবহার করা নিয়ে সরকারের রেগুলেশন কি? সরকার কিভাব ওই ষ্ট্যাম্প বিক্রির রেভিনিউ পায়? আর ডিজাইন-লেআউট-দাম, এগুলোর জন্যে কি সরকারের অনুমোদন লাগে? অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেললাম।

রাতঃস্মরণীয়

তাসনীম এর ছবি

স্ট্যাম্প বিক্রির রেভিন্যু নিশ্চয় সরকার পায়...এটা করা হয়েছে পয়সা আয়ের উদ্দেশ্যেই। কিন্তু রেগুলেশন যে কী সেই বিষয়ে কোন ধারণাই নেই, অশ্লীল কিছু হয়ত স্ট্যাম্পে ছাপা যাবে না, কিন্তু আমি সুন্দর একটা ছবি দিয়ে নিচে বাংলায় "মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক", লিখে দিলে হয়ত ছাপানো যাবে। মার্কিন দেশের অভিজ্ঞতায় বুঝি, এগুলো নিয়ে ওদের মাথাব্যথা কম।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাগিব এর ছবি

আপনি একটা ভুল ধারণা থেকে পোস্টটা দিয়েছেন। এগুলোর কোনোটাই মার্কিন সরকারী ডাকবিভাগের ডাকটিকিট না।

একটু বুঝিয়ে বলি - বছর দশেক আগে থেকে ফটোস্ট্যাম্প নামে একটা সার্ভিস চালু করা হয়, নানা বেসরকারী ভেন্ডর এর লাইসেন্স নেয়। আইডিয়াটা হলো, যে যা ছবি চায়, তা দিয়ে ডাকটিকিট বানাতে দেয়া, অবশ্যই একটু বেশি খরচে। এটা পুরোই ব্যবসা, এবং বেসরকারী নানা ভেন্ডরে চালায়। খুব আপত্তিকর ছবি না হলে যেকোনো ছবি দিয়েই এটা করা যায়। মানুষ নিজের ছবি, বাচ্চার ছবি, এমনকি পোষা কুকুরের ছবি দিয়েও এরকম ডাকটিকিট বানাতে পারে।

আপনার সাইটটি এরকমই একটা বেসরকারী সাইট, যা এমন স্ট্যাম্প ভেন্ডর। আপনি চাইলে zazzle.com এ গিয়ে কুরবানীর ঈদ, এমনকি পহেলা বৈশাখের ডাকটিকিটও বানাতে পারবেন।

বাংলাদেশ সহ নানা দেশে ডাক বিভাগ পুরোই সরকারী বলে আমাদের অনেকেরই বিশ্বাস হতে চায় না, ডাকটিকিট বেসরকারী হতে পারে। তাই হয়তো আপনি এখানে বিভ্রান্ত হয়েছেন। যাহোক, এরকম ফটোস্ট্যাম্প চেনার উপায় বলে দেই, ডাকটিকিটের কোনায় বারকোড দেখবেন। মার্কিন ডাকবিভাগের সরকারী ডাকটিকিটে বার কোড থাকে না। আর ২০১০ সালের ডাকটিকিট সিরিজের পুরো তালিকা এখানে পাবেন।

আশাকরি এবার ভুল ভাঙবে। দু:খজনক হলো, বাংলাদেশের মিডিয়াতে এই ভুল ভাঙবেনা, আর এটা নিয়ে হয়তো কলামের পর কলাম বা নিউজ বের করা হতে থাকবে। এটা বলছি এই কারণে, বছর দুয়েক আগে এক দেশী বাটপার তার তদবিরের জোরে মার্কিন সরকার শহীদ মিনারের টিকিট ছাপিয়েছে বলে দেশে হিরো বনে গেছিলো। বিভিন্ন পত্রিকায় ব্যাপারটা জানিয়েও কাজ হয়নি, কারণ সেই ব্যাটা ছিলো পত্রিকাওয়ালাদের পেয়ারের লোক। এমনকি মুহম্মদ জাফর ইকবাল পর্যন্ত বোকা বনে আবেগে আপ্লুত হয়ে বিশাল কলাম লিখেছিলেন। এটা নিয়ে লিখেছিলাম সেসময়, পড়ে দেখতে পারেন, কিন্তু এই ব্যাটা এখনো তার টিকিট বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। টিকিট মানেই সরকারী, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসাটা বাংলাদেশীদের জন্য বেশ কঠিন বলেই মনে হয়।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ রাগিব ভাই। বিষয়টা ক্লিয়ার হতে শুরু করেছে। তবে তাসনীম ভাইয়ের কমেন্টের পরে প্রশ্ন করেছিলাম কয়েকটা যেগুলো এখনও আসেনি। এই পোষ্টেজের আয় সরকার কিভাবে পায়? ওরা তো বলছে এই পোষ্টেজ ব্যবহার করা যায়।

আপনার ধারণা সত্যি। আমি গোটা পচিশেক দেশ ঘুরেও কোথাও বেসরকারী পোষ্টাল সার্ভিস দেখিনি। বাংলাদেশের সাধারণ জনগনের কাছে তো অবিশ্বাস্যই ঠেকবে ব্যাপারটা।

রাতঃস্মরণীয়

রাগিব এর ছবি

সরকারী ডাকবিভাগ পায় হলো টিকিটের মূল যা দাম, সেটা। আর কিছুও পেতে পারে। বেসকারী ভেন্ডরেরা ডাকটিকিটের ফেইস ভ্যালুর চেয়ে বেশ বেশি দাম রাখে (২ গুণের কাছাকাছি)। বিস্তারিত জানি না, তবে সম্ভবত এই লাভের অংশবিশেষ সরকারেই পায়।

কেবল টিকেট না, বেসকারী অনেক ভেন্ডরে ফ্র্যাংকিং মেশিনও বিক্রি করে। যাদের অনেক বেশি চিঠি/পার্সেল পাঠাতে হয়, তাদের সুবিধার্থে এই ব্যাপারটা চালু আছে। যেমন, http://stamps.com/ । এখানে রেজিস্ট্রেশন করলে চিঠির ওজন মাপার নিক্তি পর্যন্ত পাঠিয়ে দিবে, আর হয় টিকিট প্রিন্টার দিবে অথবা ওদের সাইট থেকে সরাসরি মেইল লেবেল ছাপানো যায়।

মার্কিন ডাক বিভাগ অবশ্য লসেই চলছে। ইদানিং ইউপিএস বা ফেডেক্সের সাথে চুক্তিতে এসেছে, ডাকবিভাগের অনেক চিঠি পত্র ওদের প্লেনে করে পাঠানো হয় দেশের নানা জায়গায়।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

আবারো ধন্যবাদ রাগিব ভাই, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানলাম। এগুলো সম্পর্কে আগে কোনও ধারনাই ছিলোনা।

রাতঃস্মরণীয়

শিশিরকণা এর ছবি

আমি নিজে zazzle.com থেকে প্রিন্ট করা বাংলাদেশের নদী,নৌকা, সূর্য ডোবার ছবিওয়ালা বাংলা হরফে বাংলাদেশ লেখা আছে এমন স্ট্যাম্প ব্যবহার করি দেশে চিঠি পাঠাতে। কোন সমস্যা হয়নি। বরং দেশের বন্ধুদের একটু চমকে দেয়া যায়।

USPS ফেডেক্স এর ব্যাবসা নিয়ে রাগিব ভাই যেটা বললেন, সেটা লক্ষ্য করলাম সম্প্রতি একটা প্যাকেজ ডেলিভারিতে। ট্র্যাকিং নাম্বার থেকে দেখলাম, আমার শহর পর্যন্ত ফেডেক্স এর প্লেনে এসেছে, তারপর USPS কে দিয়ে দিয়েছে ডেলিভারির জন্য। সম্ভবত এতে ফেডেক্সের গাড়ির তেল খরচা বাঁচে। কারন গুচ্ছের বাজে মেইল দিতে USPS এর গাড়িগুলা দিনে একবার করে সব বাড়িতে অবশ্যি যায়, ফেডেক্সের জিনিস তো প্রতিদিন আসে না। আর আমার সুবিধা হয়েছিল, ফেডেক্সের খাতায় (ডিজিটাল) সই করার জন্য বাড়ি বসে অপেক্ষা করতে হয়নি। USPS প্যাকেজ লকারে ঢুকিয়ে মেইলবক্সে তার চাবি দিয়ে গেছে। দু,পক্ষেরই লাভ!

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

হরফ এর ছবি

রাগিব অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি সুন্দর ভাবে গুছিয়ে যা লিখেছেন আমি সেই ধরণের-ই একটা লেখা লিখতে ঢুকে দেখলাম আপনি আগেই লিখে ফেলেছেন হাসি আমি লিঙ্ক-টিঙ্ক দেওয়ার ব্যাপারে খুব-ই অপটু, তাই প্রমাদ গুণছিলাম কিছুক্ষণ ধরে, অনেক খাটনি বাঁচিয়ে দিলেন আমার হাসি

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

তাসনীম এর ছবি

জিতু সাহেব দেখি বিরাট বাটপার...তোমার মনে আছে কিনা জানি না, এই লোকের তৈরি করা আমারিকার বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গার প্রামাণ্য চিত্র হানিফ সংকেতের "ইত্যাদিতে" দেখানো হতো...হাতে মিডিয়া থাকলে সবই সম্ভব, বাংলাদেশে অন্তত...সেটার প্রমান কম দেখছি না।

প্রাইভেট পোস্টাল স্ট্যাম্প নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ...বছর দশেক আগে এই ব্যাপারটা নিউজে এসেছিল, আমার কাছে তখনো এটা বিস্ময়কর ছিল, এখনো তাই...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাগিব এর ছবি

জিতু তার কানেকশন ব্যবহার করে খোদ ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা সার্ভিসেও এটা নিয়ে চাপাবাজি করে বেড়িয়েছিলেন। আসল ব্যাপার ছিলো প্রবাসী বাংলাদেশীদের দিয়ে ২ গুণ দামে ডাকটিকিট কিনানো।

হাতে মিডিয়া থাকলে আসলেই সব সম্ভব, তবে ইদানিং ব্লগের মতো বিকল্প মিডিয়া আসাতে সেটা কমেছে অল্প হলেও। আরো কমবে, সেটাই আশা করি।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

ও রাগিব ভাই, এ কি লিংক দিলেন ভাই! এতো দেখছি একটা 'মাল'। আমি বলতে পারি এই মাল বাসাবাড়িতে আর বেশিদিন ইলেক্ট্রনিক্স বেচবে না। হয়তো এতদিন বেচছেও না। আমি এখন তাকে স্মরণ করতে পারছি, সুন্দর উচ্চারণ, গোছানো কথা বলা সেই মাল। এরা পারে বটে। আপনাকে আবারও একটা ধন্যবাদ যে আপনি তার ভন্ডামির মুখোশ খুলে দিয়েছেন।

রাতঃস্মরণীয়

হাসিব এর ছবি

আমার মনে হলো আমি অনেকদুর ভেবে ফেলেছেন। আমি এটাকে একটা কাজ না করা মার্কেটিং ট্রিক হিসেবেই দেখছি।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক পরিষ্কার বুঝলাম না ভাই।

রাতঃস্মরণীয়

হাসিব এর ছবি

মানে বলতেছিলাম বিষয়টা এতো সিরিয়াস না মনে হয়।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমেরিকা সম্পর্কে যদি ন্যূনতম জ্ঞ্যান থাকতো তবে এ পোষ্টটাই আসতো না। স্থুলভাবনারাজি থেকেই লেখা। তবে মন্তব্যের মাধ্যমে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম।

দুনিয়ায় সব মার্কেটিং ট্রিক কাজ করেনা হাসিব ভাই। তাই যদি করতো, মার্কেটিংএ প্রথম শ্রেণীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে আমার আফগানিস্তান-সোমালিয়া কামলা খেটে বেড়ানো লাগতো না। আশা করি বুঝাতে পারলাম।

রাতঃস্মরণীয়

হাসিব এর ছবি

পোস্ট দেয়া ঠিকই আছে। আপনি কনফিউজড ছিলেন এবং প্রকাশ করেছেন। আমি এই ডাকটিকেটের বিষয়টা জানতাম। কিন্তু যারা জানতেন না তারা জানলেন এই পোস্টের মাধ্যমে।

আর মার্কেটিং বিষয়ে আমিও সেটাই বলছিলাম, এটা কাজ-না-করা মার্কেটিং ট্রিক।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

পোস্ট পড়ে মন্তব্য লিখতে গিয়ে দেখি রাগিব ভাই আর তাসনীম ভাই সব কইয়া দিছেন, এখন হা কইরা বইয়া মাথা চুলকাইতেছি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বাংলাদেশী স্ট্যাম্প, মেড ইন আমেরিকা।

বাউলিয়ানা এর ছবি

আরে! এ বিষয়েতো কিছুই জানতামনা।

রাগিব ভাইকে অনেক ধন্যবাদ বিষয়টা খোলাসা করবার জন্য।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

পোস্টে হিন্দু ট্যাগিঙের তাৎপর্য বোধগম্য নয়। আপনার পোস্টেই দেখলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবে স্ট্যাম্প আছে বলে আপনি নিজেই লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। তাহলে, আর আলাদা করে হিন্দু ট্যাগিং কেন?

আর, শেষ অনুচ্ছেদটার তাৎপর্যও বুঝলাম না। পুরোমাত্রায় স্ববিরোধী মনে হলো। সম্ভবত, আসল কথাটা স্পষ্টই হয় নি।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।