আসুন সবাই মিলে গাই "মুন্নি বদনাম হুয়ি"

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১১/০৮/২০১১ - ২:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশে ভারতীয় (কলকাতা + মুম্বাই) চলচ্চিত্র প্রদর্ষনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে এই বিষয়ে খবর বেরিয়েছে।সিনেমা শিল্পের খুবি effective এবং ব্যাপক একটি ধারা বলেই আমরা জানি। সিনেমা, নাটক এর মাধ্যমে যেভাবে সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করা যায় তা আর্ট এর আর কোন ধারার সাহায্যেই সম্ভব নয়।তাইত "পথের পাচালি"এর অপূর মৃত্যু, দূর্গার সাথে আমদের কেও কাদায়, "অন্তর্জলি যাত্রা" র মৃতপ্রায় বুড়োর সাথে বালিকার বিয়ে আমাদের ব্যথিত করে তুলে, একাত্ম করে দেয় সেই মেয়েটির দুঃখের সাথে। উপন্যাস , কবিতাকে ছাপিয়ে তাই সিনেমাই মানুষ্কে সম্পৃক্ত করা আর্টগুলোর মাঝে সেরা। দুয়ার বন্ধ করে শিল্প চর্চা হয় না যদি সেই শিল্পের ইংরেজী হয় 'আর্ট', কিন্তু শিল্পের ইংরেজি যদি হয় 'ইন্ডাস্ট্রি' তবে অবশ্যই দরজা বন্ধ করে হতে পারে। ইন্ডাস্ট্রি শব্দের সাথে সাথে চলে আসে 'প্রফিট','লস' এই শব্দগুলো। আর যখন আপনি শিল্পকে এই ব্যরিয়ার এর মাঝে ফেলবেন, তখন তা কতটুকু শিল্প থাকে আর কতটুকু শৈল্পিক ব্যাবসা হয় তার উদাহরন আছে ভুড়ি ভূড়ি।সে আলোচনা আরেকদিন করা যাবে, আজকে আসুন ইন্ডিয়ান সিনেমা দেশে আমদানি কতটুকু যৌক্তিক সে ব্যাপারে আলোচনা করি।সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেলেই কলকাতার কিছু সিনেমার সাথে মুম্বাইয়ের সোলে, দিলওয়ালা দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, দিল তো পাগল হ্যায়, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গম, ধুম-২, ডন, ওয়ান্টেড ও থ্রি ইডিয়টস, এই ছবি গুলো মুক্তি পাবে বলে খবর রয়েছে।যদিও আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি সহ চলচ্চিত্রাঙ্গনের কলাকুশলীদের অন্যান্য সংগঠন।

এখন কথা হচ্ছে ভারতীয় চলচ্চিত্র আনার পেছনে যুক্তি কি?? অনেকে বলছেন দেশে মানসম্মত সিনেমা হচ্ছেনা, তাই আমাদের সিনেমা নির্মাতারা আমাদের যাই দিচ্ছেন আমরা তাই হজম করছি। কথা সত্য, প্রতিযোগিতা থাকতে হবে, প্রতিযগিতা না থাকলে ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ হয় না, (শিল্পের বিকাশের জন্য তার দরকার আছে কি না তা অবশ্য আমি জানি না।)কিন্তু আমরা কোন প্রতিযগিতা আয়োজনের আগে যেটা সবচাইতে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি তা হলো LEVEL PLAYING GROUND. বাসার পোষা কুকুরটিকে আপনি যদি চিড়িয়াখানার বাঘের সাথে লড়াইইয়ে নামিয়ে দেন আর আশা করেন যে সে ১০ বার ফাইট করে একবার হলেও জিতবে তাহলে সবাই আপনার মস্তিষ্কের গঠন ও উপাদান নিয়া আলোচনা শুরু করে দিবে, এ ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।

এখন আসুন গুনগত বিচারে বাংলা, আর তথাকথিত উন্নতরুচির বলিউডি, হলিউডি মুভির একটা তুলনামূলক চিত্র দেখি। আমাদের দেশিয় সিনেমাগুলো হয় মূলত সস্তা প্রেম কাহিনি অথবা মারামারি ভায়োলেন্স এর সাথে এক চিমটি যৌনতার মিক্সচার। বা যদি আরো পরিস্কার করে বলি তাহলে আমাদের দেশীয় সিনেমগুলো নোংরা। 'নোংরা' টার্মটা একটু ক্লিয়ার করা দরকার বলে মনে করছি। নোংরা বলতে আমরা এখন বুঝি বিশাল বক্ষা, সুঠামদেহী নায়িকার উলংগ শরীর প্রদর্শনি। আর ঠিক একি কাজ যখন মোম্বাই এর ক্যাটরিনা কাইফ করেন তখন তা হয়ে যায় আর্ট, তাইত আমরা গাটের পয়সা খরচ করে 'শিলা কি জাওয়ানি' দেখতে যাই। এ যেন টানবাজারের ২০ টাকার পতিতা আর শেরাটনের society girl এর মধ্যে তুলনা করা, তাই না?? কিন্তু কার্যত কি তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে?? আছে, একজন রিকশাওয়ালাকে তৃপ্তি দেয় আর আরেকজন কোন বিজনেস ম্যাগ্নেটকে।তাহলে মূল পার্থক্য হচ্ছে প্রেজেন্টেশন(!)।সেই বিচারে টাইটানিক এর গাড়িতে সেক্স এর দৃশ্য হয়ে যায় 'শিল্প' আর পলিকে নিয়ে আলেকজান্ডার বো নাচলে হয়ে যায় 'নোংরামি'।

আমরা আমাদের দেশের নাটক নিয়ে একসময় অনেক গর্ব করতাম। ছোটবেলায় দেখা 'সংসপ্তক' নাটকের 'রমজান' চরিত্র এখোনা আমাদের নাটকের ক্লাসিক চরিত্রগুলর অন্যতম।'বহুব্রিহি' নাটকের 'মামা' আমাদের এখনো হাসায়, 'কোথায় কেউ নেই' এর বাকের ভাই এর মত কোন চরত্রের জন্য ফ্যান ক্লাব খুলে ফেলাটা এখনকার ছেলেমেইয়েদের কাছে হাসির খোরাক। বাসায় আমাদের মা বোনেরা এখন ZEE BANGLA, STAR JOLSHA বুদ থাকে আর এর আরেকটু স্মার্ট মায়েরা STAR PLUS, SONY তে।যার প্রভাব পরেছে আমাদের দেশিয় নাটক গুলোতেও, কাহিনীর কোন বিন্যাস নাই, নাটকের কোন motto নাই, ২/৩ টা character দিয়ে একটা triangle বানিয়ে অথবা মেয়েদের নিয়ে কছু সিলি জোক করে ৩০ মিনিটের নাটক শেষ। এর পেছনে মূল কারন আর কিছুই না ৯০ এর পর থেকে স্যাটেলাইট আগ্রাসন।এখানেও মুল যে পার্থক্য আছে বলে আমার ধারনা তা হলো প্রেজেন্টেশন।সুন্দরী মেয়েদের ১০ এঙ্গেল থেকে ১০বার দেখিয়ে আর মানুষের চরিত্রের নোংরামিকে উপজিব্য করে করা ঐ সিরিয়ালগুলো আমরা খালি ঐ কারনেই দেখি। শুধু নাটকই না, আমাদের দেশে ব্যান্ড সঙ্গিতের যে ধারাটা তৈরি হয়েছিল তাও হারিয়ে গেছে। এখন গানেও দেখি সেই ইন্ডিয়ান সিনেমার স্টাইল। সুমন , নচিকেতার মত মৌলিক ধারারা গান আজ কোথায়?

স্যাটেলাইট চ্যানেলের সাথে মরার উপর খরার ঘা হয়ে এসেছে এখন ইণ্টারনেট। এখন হলিউড বলিউডের সিনেমা খালি একটা ক্লিক দূরে। ডাউনলোড কর আর দেখ।আমাদের স্কুল,কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের উপর এর প্রভাব আমরা সব সময়ি দেখছি। সবচাইতে ইন্টারেস্টিং প্রমান হলো ফেসবুক এ লেংগুয়েজ অপশন এ সবার বাংলা, ইংলিশের সাথে হিন্দিকেও যুক্ত করা। আচ্ছা ভাষা জানা কোন খারাপ ব্যাপার না। কিন্তু সমস্যা বাধে তখন যখন আমরা ভাষার সাথে সাথে ঐ ভাষাভাষির কালচারকেও এডাপ্ট করে নিই।হিন্দি ভাষার আগ্রাসনে আমরা এখন বন্ধুকে বলি ইয়ার,দুলাভাই বলতে ক্ষেত ক্ষেত লাগে তাই বলি জিজু (অজান্তে হয়ত আমিও বলে ফেলি, কারন আমিও এই আগ্রাসনের বাইরে না।)

অনেক হয়ত বলবেন যেহেতু আমরা ইন্ডিয়ান মুভি ঘরে বসে দেখছি তাহলে হলে চলতে আপত্তি কেন? আপত্তি আছে , ইন্ডিয়ান মুভি ইণ্টারনেট থেকে নামিয়ে দেখলে বা পাইরেটেড সিডি কিনে দেখলে তার অর্থ ইন্ডিয়ান সরকার পাচ্ছেনা,(কে জানে এটাই হয়ত ইন্ডিয়ান সরাকারের কোন চাপের কারন হতে পারে আমাদের সরকারের উপর, যে কারনে আমারা সরকারি ভাবে আমদানি জায়েজ করছি)। কিন্তু আমদানী করার মানে হলো দেশীয় অর্থ ভারতে পাঠিয়ে তারপর বিনোদনের ব্যবস্থা করা। আর আরেকটা সবচাইতে বড় সমস্যা যেটা তা হলো আমাদের সিনেমার দর্শক বেশির ভাগি নিম্ন আয়ের মানুষ, যারা ইন্টারনেট, ডিভিডি প্লেয়ার এইসব বিলাসিতা থেকে অনেক দূরে বাস করে। ইন্ডিয়ান মুভি আনলে তারাও কারিনা কাপুরদের হাতের নাগালে পেয়ে যাবে। এখন আমাদের দেশের সিনেমার মান উন্নয়ন এর জন্য আমরা রাতারাতি কারিনাদের মত হট ফিগারের মেয়ে কোথায় পাব? আর মেকিং এর কথা না হয় বাদি দিলাম।৫কোটি টাকার বাজেটের মুভির মেকিং আর ৫০ কোটি টাকা বাজেটের মুভির মেকিং কেমনে মিলাবেন আপনি?তাহলে পরিণতিতে কি হবে বলে মনে হয়? বাংলা মুভির মান বাড়বা না বাংলা মুভি ইন্ডাস্ট্রি যেটা আছে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে? সরাকার পাটকল,চিনিকল কত কিছুই না বন্ধ করছে, শেষে তাহলে সিনেমা কল টাও যাবে?

শেষে একটা কথাই বলব, এতদিন অন্তত রাস্তায় টোকাই ছেলেটার মুখে মমতাজের 'পুলা ত নয় যেন আগুনেরি গুলারে'গানটা শুনতাম আর এখন তারা বস্তা নিয়ে ময়লা টোকবে আর গাইবে "মুন্নি বদনাম হুয়া"...

অধম


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিন্দী ভাষাটা ভালভাবে শিখতে হবে দেখি ... কে জানে কবে অফিসিয়ালি আমরা হিন্দী ভাষাও আমদানী করবে ফেলব।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অধমের কথা এর ছবি

খালি আমি আপনিই হিন্দি সিনেমার মজা নিবেন?? "সবার জন্য সমান অধিকার" আব্বাজান বলসে।

অধম

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

উত্তম জাঝা!

--------------------------------------------------------------------------------

কাজি মামুন এর ছবি

লেখকের সাথে বিনীতভাবে দ্বিমত পোষণ করছি।
লেখক ঢালিউড আর বলিউডের সিনেমার পার্থক্যকে শুধু ‘ক্যাটরিনা কাইফ’ এবং ‘পলি’র যৌন উপস্থাপনার পার্থক্য হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের বাণিজ্যিক ধারার সিনেমাগুলোর প্রায় শতভাগই বিভিন্ন হিন্দি সিনেমা থেকে আংশিক গল্প (পুরো গল্প নিতে গেলে কপিরাইটের ঝামেলা আছে) চুরি করে বানানো হয়। এই ছবিগুলোর নকল-বাজ পরিচালকরাই তৌকির আহমেদ এর মতো সৃজনশীল নির্মাতাদের বাজারে অবাধ প্রবেশে হাজারো বাঁধার প্রাচীর তৈরি করে রাখে। আবার এরাই দেশপ্রেমের ধুঁয়া তুলে হিন্দি ছবি আমদানির বিরোধিতা করে। এই নির্মাতারা যখন দেশীয় কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন করতে মঞ্চায়, এরা যেসব ছবি আমাদের উপহার দেন, তাতে কোন দেশের ঐতিহ্য তারা তুলে ধরেন? আসলে সব-ইতো হিন্দি ছবির নিকৃষ্ট আবর্জনা। সুতরাং, দর্শকদের দেখাতে হলে আসলটিও বাজারে ঢুকতে দিতে হবে, নইলে দর্শকদের সাথে প্রতারণা করা হবে যে! অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের বাজারে এহেন প্রতারণা কল্পনা করা যায় কি ?
তাছাড়া লেখক আমাদের ছোট পর্দায় হিন্দি সিরিয়ালের প্রভাবের কথা বলেছেন। কিন্তু লক্ষণীয় হলো হিন্দি সিরিয়ালের অনুকরণে নির্মিত দেশিয় সিরিয়ালগুলো তেমন সফলতা পায়নি। বরং আমাদের দেশের জনপ্রিয় ধারা হলো ফারুকির ‘৬৯’ বা লাভলুর ‘রঙের মানুষ’, যা একেবারেই আমাদের স্বকীয়। এবং হাজারো হিন্দি চ্যানেলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এইসব গুনি টিভি নির্মাতারাই আমাদের দেশিয় চ্যানেলগুলোকে সক্রিয় ও সজীব রেখেছে। যেখানে আমাদের দেশিয় চ্যানেল অসংখ্য বিদেশি চ্যানেলের সাথে প্রতিযোগিতা করে সংখ্যায় ও মানে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে দেশিয় সিনেমা আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। হিন্দি সিনেমার দুয়ার বন্ধ করে দিয়েও একে আর বাঁচানো যাচ্ছে না। আসলে স্বকীয়তা আর মেধার সংযোগ না থাকলে, হাজারো ‘প্রোটেকশন’ দিয়ে একটি শিল্পকে বাঁচানো যায় না। আমাদের সিনেমার স্বার্থেই এখন ভারতীয় ছবিকে উন্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ। এতে লাভ হবে দুটো:
(১) তথাকথিত নকল-বাজ পরিচালকরা বাজার থেকে দ্রুত বিদায় নেবে।
(২) তৌকির আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, ফারুকিরা দ্রুত বাণিজ্যিক ধারার দেশিয় চলচ্চিত্রের বাজারকে সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবেন।
আর আমাদের দেশিয় চলচ্চিত্র এভাবেই নিজের পায়ে দাড়াতে সক্ষম হবে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ওইসব আমদানি না করে বরঞ্চ গেরিলা টাইপ বা সুস্থ মুভিতে ইনভেস্টমেন্ট করলেই হয়। ভাল মুভিতো মানুষ দেখছেই। খোঁজ দ্য সার্চওতো মানুষ দেখছে!

একটা সময় (জোট সরকারের আমলে ও আগের হাসিনার আমলে) বাংলা ছবিতে কাটপিস আর ধর্ষণ ছিল বান্ধা...এখন যতদূর জানি, সুস্থ চলচ্চিত্র হচ্ছে। তবে তা মুম্বাইয়ের নকলে!

এখন মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্তরা হলে হিন্দি দেখতে যাবে কি? বলাকা-মধুমিতা-সিনেপ্লেক্সে​ ত ভাল বাংলা মুভিগুলো ভালই চলছে বলে জানি! বাকি হলগুলোর যা অবস্থা তাতে দেখতে যেতে মধ্যবিত্তদের আর উচ্চবিত্তদের আশা না করাই ভাল।

এখানে আরো কিছু পয়েন্ট আশা উচিতঃ
১। হলের অবস্থা
২। একটা সিনেমা বানাতে কত বাজেট লাগে
৩। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা কেন নেই? এর পেছনের স্টোরিটা কী?
৪। মানুষ আসলেই কী হিন্দি দেখতে চায়?
৫। তাহলে ইংরেজি মুভি নয় কেন?
৬। শিল্পী সংকট (শাকিব খান ছাড়া কোন নায়কের মুভি হিট হয় না!) কেন?
৭। চলচ্চিত্র শিল্পে আদৌ কোন ভাল ডিরেকটর আছে?
৮। সুস্থ্য আর অসুস্থ্য মুভির রেশিও কতটা? কয়টা ভাল মুভি হয়?

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অধমের কথা এর ছবি

সিনেমার বাজেট, হলের অবস্থা এই ব্যাপারগুলো কিন্তু একটা আরেকটা লিঙ্কড। হলের মান ভালো না হইলে মধ্যবিত্তরা হলে যাইবোনা, আর সিনেমা না চললে হলের মান ভালো হইবোনা, আর এই দুইটা ক্লিক না করলে প্রডিউসাররা আগায়ে আইবোনা। সরকারী অনুদানের ব্যাপারটা ত যতদূর শুনসি যে পুরা ফিল্মের ২৫% ও নাকি পাওয়া যায়না। আর এ ব্যাপারে আমার দ্বিমত ও আছে। অনুদান দিয়া সিনেমা শিল্পরে টিকায়ে রাখা যায়না। আমাদের দরকার ভালো ডিরেক্টর, ভালো অভিনেতা। আর এই কাম একদিনে সম্ভব না। বলিউড ও আজকের অবস্থায় একদিনে আসে নাই । তাই আমাদের এই ব্যাপারে কাম করতে হইব। দেশে ভালো না হোক পরিচ্ছন সিনেমার যে ধারাটা এখন চালু হইসে তাকে আগাইতা সাহায্য করতে হবে।সিনেমার উপর প্রাচিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যাবস্থা করতে হবে। আর শাকিব খান ছারা অন্য নায়কের সিনেমা কেন চলেনা তা অবশ্য ব্যাপক গবেষনার দাবি রাখে হো হো হো

স্বপ্নহারা এর ছবি

কাজী মামুন, আপনি কী বুঝে কথাগুলো বললেন নাকি আপনিও বলিউডি মুভি আমদানিকারকদের একজন?! গড়াগড়ি দিয়া হাসি
আপনার হিন্দি মুভির ব্যাপক ফ্যান মনে হয়!

বলিউডের ৯৯.৯৯৯৯৯৯৯৯৯% মুভিই হলিউড বা বিদেশী মুভির নকল!
ফারুকি একসময় জনপ্রিয় ছিল, এখন তার গ্রুপের ইতরামি-ফাতরামি খুব একটা লোকে দেখেনা! এখন হিন্দি চ্যানেলের আগ্রাসন ভয়াবহ! আমিতো বলবো দেশে সব হিন্দি চ্যানেলও বন্ধ করে দেয়া হোক! মানে আমাদের চ্যানেলগুলো খুব বেশি যুইতের মনে হয় না। তবু হিন্দির আগ্রাসন ঠেকাইতে আমি দেশী চ্যানেল দেখতেই স্বস্তি বোধ করি।

তৌকির আহমেদ-ফারুকিরা এত্ত মহান-ক্রিয়েটিভ ঝান্তাম না!!!

আপনি কবে শেষ হলে গিয়ে ছবি দেখেছেন? বলাকা-সিনেপ্লেক্স বাদে? দেশে চলচ্চিত্র শিল্প ধংসের অনেক অনেক কারণ আছে...সেগুলা খেয়াল করেছেন? হলগুলোর অবস্থা দেখেছেন?

আপনার শেষ কথাগুলো অনেকটা প্রলাপের মত মনে হল! "দেশের চলচ্চিত্রের স্বার্থে ভারতীয় ছবিকে উম্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ!!!!!" গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

আর যে দুইটা লাভের কথা কইলেন...এর চেয়ে কইতেন "দেশের চলচ্চিত্রের স্বার্থে এবং আমাদের হিন্দিপ্রেমে যাতে কোন বাধা না আসে সেজন্য দেশে সকল চলচ্চিত্র তৈরি বন্ধ করে দিতে হবে", সেইটা বেশি লজিক্যাল হইতো!!!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

কাজি মামুন এর ছবি

আপনি হিন্দি চ্যানেল বন্ধ করে আগ্রাসন রুখতে চান? এভাবে আগ্রাসন রোখা যায়? অথবা এটা কতটা সম্মানজনক? হিন্দি ছবি বন্ধ করে বাংলাদেশী সিনেমাকে বাঁচানো যাচ্ছে? আসলে একটি শিল্পের বাঁচা-মরা নির্ভর করে তার স্বকীয়তার উপর। আমাদের ছবি তার নিজস্বতা প্রমাণ করতে পারলে হিন্দি ছবির ভিড়েও নিজের জায়গা ঠিকই করে নিতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের দেশের গুটি কয়েক পরিচালক (যেমন, তৌকির আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, ফারুকি, তারেক মাসুদ যারা ভিন্ন মাত্রার ও স্বাদের বাণিজ্যিক ধারার ছবি নির্মাণে আগ্রহী) অকপটে বলেছেন কিভাবে তাদের প্রতি পদে পদে বাঁধার শিকার হতে হয় নির্মিত ছবিকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে। এই বাঁধাটি সৃষ্টি করেন মূলত গতানুগতিক পরিচালকরা যাদের একমাত্র যোগ্যতা হলো ৪-৫ টা হিন্দি সিনেমার অংশবিশেষ জুড়ে দিয়ে একটা আবর্জনার জন্ম দেয়া। হিন্দি সিনেমার আবির্ভাব এইসব নকল-বাজ পরিচালকদের বাজারের সাধারণ নিয়মেই ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে (কারণ নকল-বাজদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে পড়বে দ্রুত )। আর রুচিশীল শিক্ষিত পরিচালকরাও স্বকীয়তা প্রমাণের সুযোগ পাবে। এইজন্যই আমি হিন্দি সিনেমার প্রদর্শনের পক্ষে, যাকে আপনি ‘প্রলাপ’ বলেছেন। অথচ যদি যুক্তির খাতিরেও ধরে নেই যে, আমি হিন্দি সিনেমা ভালবাসি এবং বাংলাদেশের হলে হিন্দি সিনেমা দেখতে চাই, তা কোন যুক্তিতে কারো কাছে প্রলাপ মনে হতে পারে, তা আমার বোধগম্য নয়। বরং, আপনি সব হিন্দি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়ার যে প্রস্তাব করেছেন, তা অনেকের কাছেই যথেষ্ট উদ্ভট মনে হতে পারে।

আপনি দেশি চলচ্চিত্র ধংসের পেছনে হলগুলোর পরিবেশকে দায়ী করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি, হিন্দি সিনেমার জোড়াতালি দেয়া বস্তাপচা কাহিনী-নির্ভর ছবিগুলো আমাদের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে হল-বিমুখ করেছে; আর সেইজন্যই হল মালিকরা পরিবেশের দিকে কোন ভ্রূক্ষেপ করেন না; আর করবেনই কাদের জন্য? নোংরামি দেখার মানসিকতা নিয়ে এখন যারা হলে আসেন, তাদের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরির চিন্তা হাস্যকর নয়কি?

ফারুকির ব্যাপারে আমি আপনার সাথে একমত নই। আপনি যদি বাংলাদেশি টিভি নাটকের খোঁজ-খবর রাখেন, তাহলে নিশ্চয় স্বীকার করবেন, চ্যানেলগুলোতে এখন ফারুকি-সেলিম-লাভলুদের ধারাটির ছড়াছড়ি। আমি আমার বন্ধু, সহকর্মি, প্রতিবেশীসহ নিকটজনদের দেখেছি তারা বাংলাদেশের চ্যানেল দেখে শুধু এই ধারার নাটক এবং খবর দেখার জন্য। হিন্দি সিরিয়ালের অনুকরণে নির্মিত নাটকগুলো তাদের কাছে মোটেই জনপ্রিয় নয়। এ থেকে প্রমাণ হয়, নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও মান নিয়ে হাজির হতে পারলে, দেশি চ্যানেলও বিদেশি চ্যানেলের সাথে ভাল প্রতিযোগিতা করতে পারে। আপনার মতানুযায়ি ‘ভয়াবহ আগ্রাসনের কথা মেনে নিলে বলতে হয়, তাহলে-তো আমাদের দেশি চ্যানেলগুলোর মরে যাওয়ার কথা; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দেশি চ্যানেলগুলো ক্রমেই বাড়ছে সংখ্যায় ও মানে।

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার বক্তব্য পষ্ট হলোনা! আপনি আসলে কি বলতে চাইছেন বুঝতে পারলামনা। জাস্টিফিকেশন দিলেন কিন্তুসব যুক্তির পরেও কেন ভিনদেশী মুভি আমদানীী করতে হবে তা বুঝতে পারলামনা। আপনি ফারুকী সহ আরো অনেকের কথা বলছেন, আপনি গিয়াস উদ্দীন সেলিম, ওহিদুজ্জামানা ডায়মন্ড কিংবা নুরুল আলম আতিকের কথা বলছেননা - আপনার সমীকরনটা আমার কাছে সত্যিই পরি‹‹ার হচ্ছেনা। সাহিত্য সংসকৃতি ব্যবসার পণ্য ছিলোনা, ভারতীয়রা করে ফেলেছে, আমাদেরও তা করতে হবেই কেন? তবে হ্যা, ভিনদেশী ভাষা শেখা ভালো, তবে তা আচার হয়ে যাওয়া ভালো নয়। আমাদের আচার টিকে থাকুক, আজকাল মন্দ হতে পারে, একসময় দারুন ভালো ছিলো, আরো ভালো করার সামর্থ্য আমাদের আছে!

অধমের কথা এর ছবি

হাততালি

মানব এর ছবি

সব দোষ ভারতের।আর কারো দোষ নেই!
বাঙালী শুধু দোষ দিতে জানে। সংশোধোন করতে নয়।
আর না পারা থেকেই খোভ জন্মায়।আর শান্তি পাই দোষারোপ করে।
এই সময়টা সংস্কৃতির উপর দিলে__ আরোও উন্নত হতো চলৎচিত্র

স্বপ্নহারা এর ছবি

প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় সচলের দুইটা মারাত্মক লেখার লিংক

এক

দুই

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দেশের প্রেক্ষাগৃহে হিন্দী সিনেমা প্রদর্শনে আপনার আপত্তিতে আমার সমর্থন আছে।

কিন্তু সরকার ইতোমধ্যেই ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শনের পথ আবার বন্ধ করে দিয়েছেন। যেগুলো আসছে সেগুলো এই মধ্যবর্তী সময়ে অনুমতি নেয়াগুলো।

স্যাটেলাইট আগ্রাসনের জন্য নাটকের মান নামে নাই, নাটকের মান নামছে আমাদের নিজেদের চ্যানেলগুলোর রাজনৈতিকিকরণে। চ্যানেলগুলো পঙ্গ হয়ে যাওয়ায়।
আপনি সমস্যাগুলো ধরতে পারছেন, কিন্তু সেগুলোর দায় চাপাচ্ছেন ভুল ঘাড়ে

বাংলাদেশের ব্যান্ডগুলোর নিজস্ব ধারার কথা বলে বলেছেন সেগুলো নষ্ট হয়ে এখন হিন্দি সিনেমার স্টাইল নকল হচ্ছে। তারপর জিজ্ঞেস করছেন সুমন নচিকেতার মৌলিক ধারা আজ কোথাঁ!
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতকে সুমন নচিকেতার ধারায় কেন ফিরতে হবে? দেশের ব্যান্ড সঙ্গীতে কোথায় হিন্দী স্টাইল ঢুকছে দুয়েকটা উদাহরণ চাই
সুমন নচিকেতা কোন দেশের?

"স্যাটেলাইট চ্যানেলের সাথে মরার উপর খরার ঘা হয়ে এসেছে ইন্টারনেট!" কী বললেন এইটা? কিছু লোকের ভুল প্রয়োগের জন্য আপনি ইন্টারনেটকে মরার উপর খরার ঘা বলবেন! এখন কী করতে হবে? ইন্টারনেট বন্ধ করে দিতে হবে নাকি নিজেদের মননটাকে সমৃদ্ধ করতে হবে?

গ্রামের লোকজন ডিভিডি ভিসিডি দেখার সুযোগ কম পায় এই তথ্যই বা কোথা থেকে পেলেন? আপনি কি জানেন বাংলাদেশে এখন অডিও সিডি বিক্রি হয় না, বিক্রি হয় মিউজিক ভিডিওর সিডি? এই বাজার কতোটা রমরমা আপনি জানেন? আর এই বাজার পুরোটাই গ্রাম কেন্দ্রীক আপনি জানেন?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্বপ্নহারা এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অধমের কথা এর ছবি

ব্যান্ড সংগীতে ইন্ডিয়ান সিনেমার আছড় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন নজরুল ভাই।বাংলাদেশে ব্যান্ড সংগীতের ২টা ধারা এখন জনপ্রিয়। একটা হেভি মেটাল, রক, ঐখানে ইন্ডিয়ান গানের কোন প্রভাব থাকা সম্ভব নয় তাই নাইও। তারপর যে ধারাটা এখন সবচাইতে জনপ্রিয় তা হলো পপ, রিমিক্স, পার্টি সঙ এর। হাবিব,হৃদয় খান,ফুয়াদ এরা এখন তুমুল জনপ্রিয়। এদের গানের সাথে ইন্ডিয়ান কনভেনশনাল সিনেমার গানের মিল না পেলেও ইন্ডিয়ান পপ, রিমিক্স মিউজিকের অনেক মিলি পাই, অনেক গানে ত ডাইরেক্ট মিউজিক ও কপি পাইসি । আপনি হৃদয় খানের "প্রতিক্ষন" গানটি কি শুনেছেন? ঐ গানের অর্ধেকটাই কিন্তু পুরো হিন্দিতে গাওয়া। চাইলে আমি আপনাকে আরো উদাহরন দিতে পারি যেখানে হিপহপ মার্কা গান হচ্ছে পুরা ইন্ডায়িয়ান মিউজিকের অনুকরনে।
নাটকের মান কমে যাওয়ার পিছনে আপনি ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের কোন প্রভাব দেখেন না, এমনি এমনি আমাদের নাটকের মান খারাপ হয়ে গিয়েছে?সিনেমাতে মেধাবি ডিরেক্টর নেই,রাইটার নেই মানলাম কিন্তু ৯০ এর দশকেও যেখানে আমাদের এখানে অনেক মানসম্মত নাটক হত সেখানে হঠাত করে সেই মান কমে যাওয়ার পিছনে আমি কয়েকটা পয়েণ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি ১. ইন্ডিয়ান সিরিয়ালগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠা ২. বাজার ধরতে সস্তা হসি আর প্রেমের কাহিনী নির্ভর নাটক বানানো ৩. ভালো অভিনেতাদের অতিরিক্ত অভিনয় ৪.নির্মাতা আর লেখকদের বেশি বেশি নাটক বানানোর প্রচেষ্টা ৫.ভালো অভিনেতা সংকট।
ইন্টারনেট প্রসংগে যা বলেছি তা ভুল ব্যাখ্যা করেছেন আপনি। ইন্ডিয়ান কালচারের আগ্রাসনের জন্য কি আমরা স্যাটেলাইট বন্ধ করে দিব?? আমি তা বলতে চাইনি, আমি ইন্টারনেটের ফলে সিনেমা প্রাপ্তির সহজলভ্যতাকে বুঝিয়েছি।
গ্রামে গ্রামে ডিভিডির সহজলভ্যতা আমিও জানি। সিডিতে গ্রামের মানুষজন মিউজিক ভিডিও দেখে কিন্তু তা মমতাজের গানের; সিনেমা দেখে কিন্তু বাংলা; আর এর সাথে যা দেখে তা হচ্ছে কিছু চাইনিজ মারামারির ছবি , আর এর পিছনের লিঙ্কটা হলো আমাদের দেশের হল গুলোতে চাইনিজ মুভি চলে, অভ্যস্থতার বসে তাই তারা ভিসিডিতেও তা দেখে। হিন্দি সিনেমার সিডি আপনি গ্রামের বাজার ত অনেক দূর অনেক জেলার বাজারেও পাবেন না, আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। তাই এখন যদি হলেও হিন্দি ছবি চলে তাহলে ভিসিডিতেও তার চাহিদা বেড়ে যাবে এ কথা আমি হলফ করে বলতে পারি। আর সরকারি সিদ্ধান্ত বাদ দেয়া প্রসংগ?? ভাই বাংলাদেশের সরকার রিয়ালমাদ্রিদের ম্যানেজিং কমিটির মত। খালি মাদ্রিদ কোন প্লেয়ারের দিকে হাত বাড়াইলে তারে আইন্যা ছারে আর আমাগো গভর্মেন্ট কোন আকাম এর কথা চিন্তা করলে তা কইরা ছাড়ে।

অধমের কথা এর ছবি

নজরুল ভাই ,
আপনার জবাব টা ভুলে স্বপ্নহারার কমেন্ট এ দিইয়ে দিসি নিচে... খাইছে
অধ্ম

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমি ব্যাক্তিগতভাবে বিদেশী চলচ্চিত্র না এনে দেশে ভালো ছবি নির্মান ও প্রদর্শনের পক্ষে। সরকার যদি কঠোরভাবে কাটপিস ঠেকাতে পারে তবে মানুষ ভালো ছবিই দেখতে যাবে। সময়সাপেক্ষ হলেও কালচার বদলাতে পারলে দর্শক ভালো ছবি দেখতে যাবে। আমি অবশ্য আমদানীর পক্ষে তবে সেটা হতে হবে টেকনোলজি, ইক্যুইপমেন্টস, ট্রেনিং, ইত্যাদি। কিন্তু ভিন্ন কনটেক্সটের কাহিনী নকল করে ছবি বানানো বা বাংলাদেশে এনে হলে দেখানো, এতে আমাদেরই ক্ষতি। এ্যাডাপটেশনে ক্ষতি নেই যদি তা এমন কিছু হয় যা আমাদের নেই অথবা আমাদের থেকে গুনে-মানে অনেক ভালো। সেক্ষেত্রে এই আত্মীকৃত সংস্কৃতিকে কিন্তু আমাদের মূলধারার সাথে যুক্ত করতে হবে। তবে আমি এ্যামালগামেশনের ঘোর বিরোধি। সংস্কৃতির খিচুড়ীকরণ আমাদের সাংস্কৃতিক দৈণ্যতা ফুটিয়ে তুলবে এবং আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। চাল আর ডাল এ্যামালগাম করে যতো খুশি খিচুড়ী রাঁধতে পারেন ক্ষতি নেই কিন্তু খিড়ুড়ীতে চাল বা ডালের আলাদা স্বাদ পাবেন না। তেমনি দুধ আর মুতের এ্যামালগাম করলে কি হবে তা আর না বলি।

তিন নম্বর প্যারায় একটু কথা আছে। পাছা বলেন আর নিতম্ব বলেন, জিনিস কিন্তু একই। তাহলে আমরা কারওটাকে পাছা আর কারওটাকে নিতম্ব বলি কেনো? আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েরা এটাকে ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদের মতো আকর্ষণীয় করে প্রদর্শণ করতে পারেনা বলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদেরটা পাছা বা হোগা আর ইনডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদেরটা নিতম্ব। আমার কথা হচ্ছে, প্রদর্শণ যদি করতেই হয় তাহলে ভালোভাবে করেন, যাতে পয়সা খরচ করে আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদের নিতম্ব দেখতে যাই শিলা কি জওয়ানীর পিছনে পয়সা খরচ না করে।

আর পতিতা শব্দটা ব্যবহারের বিরোধিতা সবসময়েই করতে থাকবো। যে মেয়ে যৌনসেবা বিক্রি করে জীবন চালায় তাকে দয়া করে একটু সন্মান করে যৌনকর্মী বলুন। আর যারা স্বভাবদোষে বা সোসাইটি মেইনটেইন করতে গিয়ে যাকে তাকে দিয়ে যেখানে সেখানে চুদিয়ে বেড়ায়, তাকে যা ইচ্ছে সেই নামে ডাকুন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সাফি এর ছবি

লেখকের বক্তব্যের অন্যতম মূল প্রতিপাদ্য হলো স্থূলতা বনাম শৈল্পিকতা। দুঃখজনক হলেও সত্য আপনার মন্তব্যের কিছু অংশ পড়ে স্থূল মনে হয়েছে। এবং এটাই প্রথম নয়, এর আগেও আপনার একাধিক মন্তব্য পড়ে আমার এমন মনে হয়েছে কিন্তু বলা হয়নাই। আজকে প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় বলে গেলাম। ভাল থাকবেন।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। আমি একটু দ্বিধান্বিত, এটাকে আমার ক্যাপাসিটির সীমাবদ্ধতা বলবো, নাকি দূষিত পারস্পেকটিভ বলবো, নাকি অন্য কিছু। তবে পরিষ্কার হতো যদি বলতেন আপনার কাছে স্থুল মনে হয়েছে কোনটা, মন্তব্যের স্পিরিট নাকি শব্দচয়ন?

আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্যে বলছি না, আমি চেষ্টা করি লেখায় বা মন্তব্যে এমন কিছু লিখতে যা অর্থ বহন করে। তবে সত্যি, আমার কাছে যা অর্থবহ বলে মনে হয় তা অন্যের কাছে অর্থবহ হতে নাও পারে।

আপনিও ভালো থাকবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সাফি এর ছবি

তিন নম্বর প্যারায় একটু কথা আছে। পাছা বলেন আর নিতম্ব বলেন, জিনিস কিন্তু একই। তাহলে আমরা কারওটাকে পাছা আর কারওটাকে নিতম্ব বলি কেনো? আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েরা এটাকে ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদের মতো আকর্ষণীয় করে প্রদর্শণ করতে পারেনা বলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদেরটা পাছা বা হোগা আর ইনডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদেরটা নিতম্ব। আমার কথা হচ্ছে, প্রদর্শণ যদি করতেই হয় তাহলে ভালোভাবে করেন, যাতে পয়সা খরচ করে আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েদের নিতম্ব দেখতে যাই শিলা কি জওয়ানীর পিছনে পয়সা খরচ না করে।

--আমার কাছে এই উদাহরনটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। একটা কারণ হতে পারে আমি কখনও পাছা/নিতম্ব জাতীয় ক্লাসিফিকেশন করতে কাউকে দেখিনি এখনও

The Reader এর ছবি

নজরুল ভাই এর কমেন্ট এ গুরু গুরু হাততালি চলুক

তারেক অণু এর ছবি

আমারও চলুক

মিলু এর ছবি

ব্যান্ড সংগীতের যে ধারাটা তৈরি হয়েছিল তা হারিয়ে গেছে

একদমই মানতে পারলাম না। এই ব্যাপারে যৎসামান্য যে জ্ঞান আছে তা থেকেই বলছি, দেশে প্রচুর প্রচুর ব্যান্ড বর্তমান এবং তারা বিশ্বসংগীতের অগণিত ধারার চর্চা তো করছেই, তার সাথে নানারকম ফিউশনাল এক্সপেরিমেন্টও করে যাচ্ছে। নবীনদের ভেতর তাদের জনপ্রিয়তা দেখলেই বোঝা যায় অনেকেই সেক্ষেত্রে সফল হয়েছে, হচ্ছে। তাদের দেখে অসংখ্য কিশোর-তরুণ উৎসাহীও হচ্ছে সেসবের চর্চায়। সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই পাড়ায়-পাড়ায় প্রচুর ব্যান্ডদল গড়ে উঠছে, তাতে ভাটা পড়েনি আজও বরং আরও বেড়েছে বলা যায়। তাদের প্র্যাকটিস করার জন্য বর্তমানে রাজধানীতে যে হারে প্যাড বা রেওয়াজ কক্ষও তৈরি হচ্ছে সেটা দেখেই তা বোঝা যায়। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংস্কৃতি বিশ্বমানের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এশিয়ার ভেতরে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান নিঃসন্দেহে প্রথম সারিতে। এদেশের যেকোন ব্যান্ড ব্যাক্তিত্ব এ ব্যাপারে একমত হবেন।

এখন গানেও দেখি ইন্ডিয়ান সিনেমার স্টাইল

এটা একটু বেশি জেনারালাইজেশন করে ফেলেছেন। ওরকম সস্তা কিছু গান এদেশে সবসময়ই হয়, তবে তার বাইরে প্রচুর ভালো গানও হচ্ছে। তার আগে বলে নেই অল্প কিছু বাদে ইন্ডিয়ান সিনেমার গানগুলো বেশিরভাগই মৌলিক নয়, নানান দেশি গানের সুর-কথার জোড়াতালি। নেটে একটু ঘাটলেই এর প্রমাণ মিলবে। তবে ওরা যে বিষয়টায় প্রচন্ড দক্ষ সেটা হল গানগুলোর মাস্টারিং আর প্রেজেন্টেশন। এর সাথে তুলনায় আমরা বেশ পিছিয়ে থাকলেও গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছে, আরও হচ্ছে, হবে।

সুমন নচিকেতার মত মৌলিক ধারার গান আজ কোথায়?

সুমন-নচিকেতা বাংলা গানে নতুন ধারার স্রষ্টা এবং এদেশেও তাঁদের জনপ্রিয়তা প্রচুর, যদিও তারা কেউ এদেশের নন। ওপার বাংলাতেও তাঁদের পর আর সেভাবে কেউ উঠে আসতে পারেনি। আর বাকিটা নজরুল ভাই-ই বলে দিয়েছেন।

অধমের কথা। এর ছবি

ব্যন্ড সংগীতের এখনাকার ধারা নিয়ে আগেও বলেছি তাও আপনার কথার প্রসংগে আরো কিছু বলতে চাই। এখন অনেকেই ব্যান্ড সংগীতের চর্চা করছেন কিন্তু হাতে গোনা ২/১ জন ছাড়া যা গাচ্ছে তা হল মেটালে এর নামে চেচামেচি।বাপ মায়ের কিছু টাকা থাকলেই হ্যাটফিল্ডের মত থুতনিতে একটু দাড়ি লাগিয়ে চিল্লান দিয়াই ভাবতাসে যে মেটলিকার মত গান গায়ে ফেলসে।আর্টসেল, ব্ল্যাক ছাড়া ভালো মেটাল করে কয়েকটার নাম করেন ত আপনি।৯০ এর মাইলস, উইনিং,প্রমিথিউস,এল.আর.বি.,রেনেসা, এদের মত ক্রিয়েটিভ ব্যান্ড আপনি দেখান দেখি কয়েক্টা।মেটাল মিউজিক হচ্ছে কিন্তু তা কতটুকু up to the mark সে ব্যাপারে আমি সন্দিহান।ফিউশন ভালো কিছু হচ্ছে তা মানি।
আমি যে কারনে প্রসংগটা তুলসিলাম তা হলো mass level এ কোনটা জনপ্রিয়া সেইটা নিয়া।মেটাল,ক্লাসিকাল এইগুলা গানের দর্শক খুব কম।আর পপ, পার্টিসং এর যে ধারাটা এখন সবচাইতে জনপ্রিয় তা কিন্তু অনেকটাই ইন্ডিয়ান পপ,রিমিক্সের অনুকরন। তাই চর্চার সাথে সাথে কোনটা পোলাপান খাইতাসে ঐটাও দেখার অপেক্ষা রাখে বৈকি। আমি যেই পয়েন্টা টা বলতে চাইসি তা হল, গানের চর্চা হলেও বাজারে চলতেসে যেইগুলা তা হিন্দি চ্যানেল্গুলোর অনুকরনে করা।
নচিকেতা, সুমন এরা যে ইন্ডিয়ান শিল্পি সেই জ্ঞান আমিও রাখি। কিন্তু আমি তাগো নাম কইসিলাম বাংলা ভাষাভাষি বইলা।বাবু,পথিক নবী এরাও কিন্তু সেই ধারাটারে বাংলাদেশে নিয়া আইছিল, আমরা হলে থাকতে ওরা ভালোই জনপ্রিয় আসিল, এখনো তারা গান গায় (পথিক নবী অবশ্য এখন out of track)তাগো লগে হায়দার, সায়ান ওরাও আসছে, কিন্তু ওরা কতটা জনপ্রিয়?? আপনার কাছে জনপ্রিয়তা গুরুত্বপূর্ন না হইতে পারে, কিন্তু আমার কাছে তা ভিষন গুরুত্বপূর্ন।

অধম.........(বেয়দবি নিবেন না)

মিলু এর ছবি

আর্টসেল, ব্ল্যাক ছাড়া ভালো মেটাল করে কয়েকটার নাম করেন ত আপনি।

আপনার এই কথাটা দেখে খুব একচোট হাসলাম। এইদেশের ব্যান্ডজগত সম্পর্কে প্রাথমিক খবরটুকু রাখলে এই কথাটা বলতেন না ভুলেও। বাংলাদেশে হেভি মেটালের পথিকৃৎ কিংবদন্তি ব্যান্ড ওয়ারজফেজ এর নাম শুনেছেন? না বলবেন না যেন আবার, আরো একচোট হাসব তাহলে। আর [url=http://en.wikipedia.org/wiki/Black_(Bangladeshi_band)]ব্ল্যাক[/url] কোন মেটাল ব্যান্ড না। তারা নিজেদের পরিচয় দেয় রক/অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ড বলে। কিছু মনে করবেন না, বলতে বাধ্য হচ্ছি, কেউ যদি বাংলাদেশের মেটাল বলতে শুধু আর্টসেল-ব্ল্যাক বোঝে, তবে এ বিষয়ে কথা বলাটা বেশ হতাশাজনক। অর্থহীন, ক্রিপ্টিক ফেইট, [url=http://en.wikipedia.org/wiki/Arbovirus_(band)]আরবোভাইরাস[/url], রিবর্ণ থেকে শুরু করে হালের পাওয়ারসার্জ এদের নাম শুনেছেন কখনো? এরা তরুণদের ভেতর কতটা জনপ্রিয় তা একটু এদের কনসার্টে গেলেই বুঝতে পারবেন।

মাইলস, উইনিং, প্রমিথিউস, এল.আর.বি., রেনেসা, এদের মত ক্রিয়েটিভ ব্যান্ড আপনি দেখান দেখি কয়েক্টা

এই নামগুলোর সাথে প্রমিথিউস আসতে পারেনা কখনও। প্রমিথিউস এর গান মোটেই তেমন একটা উঁচুমানের নয়, বরং তাদের বলা যায় ব্যান্ডদের মমতাজ। সস্তা কিছু কথা আর সুর দিয়ে মমতাজের মত পাবলিক টানা আর ক্রিয়েটিভিটি এক কথা নয়।

দলছুট, বাংলা, শিরোনামহীন, অর্ণব[/url] (এন্ড ফ্রেণ্ডজ) থেকে শুরু করে হালের লালন দের এই কাতারে রাখা যায়। তারা সেই উচ্চতায় এখনও যেতে পারেনি বটে, তবে সেই পথেই যাচ্ছে। মাইলস, উইনিং, এল.আর.বি., রেনেসাও রাতারাতি জনপ্রিয় হয়নি।

এরা বাদেও প্রচুর ব্যান্ড আছে, যেমন এ মুহূর্তে মনে আসছে হালের শূন্য-র নাম। এদের জনপ্রিয়তাও টের পাবেন তাদের কনসার্টে গেলেই।

পপ, পার্টিসং এর যে ধারাটা এখন সবচাইতে জনপ্রিয় তা কিন্তু অনেকটাই ইন্ডিয়ান পপ,রিমিক্সের অনুকরন।

এর উত্তর আগেও একটু দিয়েছি। হিন্দি সিনেমার গানগুলোই যেখানে নানা বিদেশি গানের জোড়াতালি, সেখানে যে হিন্দি ছাড়া আর কিছু খুব একটা শোনেনা তার কাছে সেগুলো হিন্দির অনুকরণই মনে হবে। মোটা দাগে হিন্দির অনুকরণে কিছু গান হয় বটে, তবে সব এখনকার পপ, পার্টি সং-ই এক কথায় হিন্দির সাথে মিলিয়ে ফেলাটা অন্য দেশি গান না শোনারই অভাব বলব।

নচিকেতা, সুমন এরা যে ইন্ডিয়ান শিল্পি... বাবু,পথিক নবী এরাও কিন্তু সেই ধারাটারে বাংলাদেশে নিয়া আইছিল

এইটা পড়ে হাসব না কাঁদব বুঝলাম না। একদম থ মেরে গেছি। সুমনের কয়টা গান আপনি শুনেছেন? প্রথম কথা, সুমনের গানের সাথে নচিকেতা, অঞ্জন কাউকে মেলাতে যাবেন না। সুমনের সাথে আর কারও তুলনা তো দূরের কথা, এভাবে একসাথে নাম নেয়াটাও বিরাট অজ্ঞতার শামিল। বাবু, পথিক নবী যেসব পপ টাইপ গান করেছেন সেগুলো কো-ন-ভা-বে-ই, সু-দূ-র কল্পনাতেও সুমনের গানের হৃদয়ছোঁয়া সুক্ষ্ম জীবনবোধসম্পন্ন কথা ও সুরের সাথে মেলে না; নচিকেতা বা অঞ্জনের দুএকটা গানের সাথে মিল পেলেও পেতে পারেন, তবুও আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

তাগো লগে হায়দার, সায়ান ওরাও আসছে

সায়ান নিজেই স্বীকার করেন বব ডিলান, লেনার্ড কোহেন, ট্রেসি চ্যাপমান, ভুপেন হাজারিকাসহ তিনি সুমন দ্বারাও অনুপ্রাণিত। তবে হায়দার হোসেন এই কাতারে পড়েন না। তাঁর গানের ধারাটা একটু স্বতন্ত্র, একটু অন্যরকম।

কিন্তু ওরা কতটা জনপ্রিয়??

এটা একটা ভাল প্রশ্ন এবং এর উত্তর নিয়ে কিছুটা আলোচনার অবকাশ রয়েছে। ব্যান্ডগুলো, মেটাল, রক বা যেই ঘরানারই হোকনা কেন তরুণদের ভেতর খুবই জনপ্রিয়, কোন সন্দেহ নেই। প্রথমদিকে অল্প কিছু মানুষ শুনলেও আস্তে আস্তে ফিউশনাল ব্যান্ডগুলোর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়তে বাড়তে এখন বেশ শক্ত অবস্থানেই যাচ্ছে। আধুনিক গানের কথা এখানে আলোচনা হচ্ছে না, তবুও বলি, আধুনিক গানের শ্রোতাও কিন্তু কম নয়। তবে পপ গানগুলোর জনপ্রিয়তা কমবেশি সব শ্রোতাশ্রেণীর কাছেই বেশি, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

তবে এদেশের সঙ্গীতশিল্পের মূল শত্রু পাইরেসি। এই একটা কারণেই মূলত জায়গাটা হুমকির মুখে।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

লেখকের সাথে সম্পূর্ণ একমত।
বাংলাদেশে ভারতীয় সিনেমার আমদামী অযথাই দেশের সরকারের কিছু টাকা গচ্চা দেয়া।

দুর্দান্ত এর ছবি

একটা কথা বলুন দেখি, বাংলাদেশে কয়টা সিনেমা হলের মূল বানিজ্য় দেশী সিনেমা? আমরা ঢাকার মানুষ সিনেমা হল বলতে যা বুঝি, মানে 'সারিবদ্ধ আরামদায়ক চেয়ারের পেছন থেকে ফেলা বড় পর্দায় তীব্র আলোর ছায়াছবি' - দেশের সিংহভাগ মানুষের ছবিদেখার অভিগ্গতা কি একই? গেরিলা ছবির ওপরে এক সাক্ষাতকারে বলতে শুনলাম (সুত্র হাতে নেই) আশির দশকে যেখানে দেশে ১৬০০ সিনেমা হল ছিল, বর্তমানে সেটা ৬০০ তে এসে ঠেকেছে। অবাক হবেন শুনলে যে এইসব প্রেক্ষাগৃহের অনেকগুলোই চালায় (চালাতো) মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাস্ট। মুক্তিযোদ্ধা কল্য়ান ট্রাস্ট মুক্তিযোদ্ধাদের বা তাদের হাতে দেয়া কোন কোন শিল্পের কি কি কল্য়ান করেছে, সেটা এখানে আলোচ্য় না করলেও চলবে।

ঢাকার একটু বাইরে গেলে কি দেখি? প্রতিটি বাজারে গন্জে বেন্চপাতা-ছাপড়আ 'সিনেমা হল' গুলো আছে, সেখানে মানুষ কি দেখতে যায়? সেই ছবিগুলো ভারতীয়, নাকি সুইডিশ, তাতে কি কেউ চিন্তিত? যদি বলি সেই নীলছবিগুলো কল্য়ানে পপি-অপুর কিছু করে খাচ্ছে, তাহলে কি খুব ভুল বলা হবে? শিল্পবোধ তো বইতে পড়এ গজায়না। চারপাশে যা থাকে সেটাই মানুষের ভেতরে নাড়আ দেয়। এফ ডি সি ভাল সিনেমা বানায়না, টিভিতে ভাল নাটক হয়না বললেন, তাহলে দেশের মানুষ শিল্প শিখবে কোথায়? আর যদি দেশের মানুষ শিল্প না খায়, তাহলে এফডিসি-স্য়াটালাইট শিল্প বানাবে কেন?

আমি বলি, চলতে দিন ভাই। বলিউড, হলিউড, চীনা, সুইডিশ - চলতে দিন। চলতে দিন, আর সে উপলক্ষে এগুলো থেকে যে দু-দশজন শিল্পরস আহরন করবে, সেই শহুরে মধ্য-উচ্চবিত্তদের কাছথেকে কড়আয় গন্ডায় টেকশো আদায় করুন। সেই টেক্সো দিয়ে ইউনিয়ন-উপজেলায় পাকা না হোক ঢেউটিনের কমিউনিটি সেন্টার গড়উন, সেখানে সুশ্থ ছবি চালান, নাটক করুন, পোলাপানকে বোম্বে-আধুনিক-ন্জরুল-রবীন্দ্রনাথ ছাড়আও যে শিল্প আছে, সেটা জানান। দেশী ভাষায় বিদেশী ছবি চালান। ফিল্ম ইন্স্টিটিউট বানান।

মধ্য়বিত্তের নিচেও শিল্পরস কিছুটা গড়ইয়ে পড়তে দিন। তখন নাহয় বিদেশী ঠেকানো যাবে। এখন ছাপড়আ সিনেমার হোগলায় বসে শিল্প কপচালে অন্ধকার বাড়তে পারে।

তানিম এহসান এর ছবি

আমার কাছে মনে হয় সমস্যাটা অন্য জায়গায়। ছোটবেলায় আমাদের বাজিতপুর যেতাম, ছোট একটা উপজেলা, কিন্তু সেখানেও মা-খালাদের হাত ধরে শিল্পকলা একাডেমীতে নাটক দেখতে যাওয়ার কথা মনে আছে। বাংলাদেশে কি অসাধারণ সব ছবি তৈরী হয়নি? সেইসব অসাধারণ ছবির কি অসাধারণ সব গান হয়নি? আমাদের দেশ জুড়ে কালচারাল মোবিলিটি বলে যে জিনিসটা সেটাকে বিপন্ন করে ফেলা হয়েছে এবং আমি মনে করি সেটা খুব চিন্তা-ভাবনা করেই করা হয়েছে। কে করেছে - সে হিসেব পষ্টভাবে দিতে পারবোনা।

ব্যান্ডের গান আমাদের অনেক সমৃদ্ধ, অনেক। আমাদের হ্যাপী আখন্দ-লাকী আখন্দ আছে, আমাদের একজন কমল ভাইয়ের মত, ফুয়াদ ইবনে রাব্বির মত লিড গিটারিষ্ট আছে, আছে ’কানা মিথুন’ ভাইয়ের মত, টিপু ভাইয়ের মত ড্রামার ....আমাদের অনেক কিছু আছে।

হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় বলে যারা হিন্দি সিনেমার দিকে ঝুকে পড়েন তারা কতজন ইরানী মুভিগুলো দেখেন, সেটাওতো কাছেই। আমার কাছে মনে হয় - যদি উন্মুক্ত হতে হয় তাহলে সর্বব্যাপী উন্মুক্ত হউক, শুধুমাত্র হিন্দিতে আমাদের আবদ্ধ থাকতে হবে কেন? আর যদি উন্মুক্ত না করা হয় তাহলেও উন্মেচন ঘটুক - শিল্পের অবাধ বিকাশকে সহায়তা করা হউক।

বহুদূর গাঁয়ের একটা ছেলের যদি একটা সিনেমা দেখে আগ্রহ জাগে যে সে সিনেমা বানাবে বড় হয়ে তবে তার সে ইচ্ছেপূরণ হউক, ভাই-বেরাদর আর ক্রমাগত গোষ্ঠী বা দল তৈরী করে শিল্পের সহজাত প্রকাশকে যারা বাধা দেয় তাদের বোধোদয় ঘটুক।

বাংলাদেশে শিল্প পুরাই (বিশেষ করে সিনেমা আর নাটক) চলে গেছে ব্যবসায়ীদের হাতে, মাফিয়া গডফাদারদের হাতে। এরা ’চাকভুম চাকভুম” সব সিনেমা বানাচ্ছেন কিন্তু তারপরের লাইনে ”চান্দি রাইতে, কিছু বলবো তোমায় চোখের ভাষায়” না যেয়ে পুরোপুরি শরীরের ভাষায় সিনেমা বানাচ্ছেন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতাও ব্যাপক। কিন্তু তাই বলে মানুষকি ভালো চায়না?

আমরা খারাপটা পাই বলে খারাপ দর্শক, শ্রোতা হই - ভালোটা পেলে ভালো হবো। আমাদেরকে যা গেলানো হয় তাই আমরা খাই। আমজনতার সাধ্য খুব সীমিত, সে ভাঙচুর করার আগে দেখে তার ’আম’ কতটা নিরাপদ।

আমাদের মূল সমস্যা পাইরেসি। আমাদের নিজেদের ভেতর গান নিয়ে চর্চা আছে, আমরা নিজেরাই পাইরেসির ভয়ে গান বের করতে পারছিনা, বসে আছি। বসে থাকতেও ভালো লাগছেনা কিন্তু কি করবো? সিনেমা হলের মালিকদেরও একই সমস্যা, গোঁদের উপর বিষফোড়ার মত জুটেছে ডিভিডির।

মুন্নি বদনাম হুয়ি গাইতে সমস্যা নেই, প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে একজন ’চুলবুল পান্ডেকেও’ আমরা ফেলে দিতে পারবোনা, কিন্তু আমরা যেটা পারি তা হচ্ছে - যা ভালোভাবে শুরু হয়েছিলো তার প্রতি শ্রদ্ধা রাখা, আজকে খারাপ সময় পার করছি আমরা, আমার কাছে কেন যেন মনে হয় - জহির রায়হান, খান আতাউর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আলমগীর কবিরদের (আরও অনেক নাম আছে, ইতিহাস সাক্ষী দেবে উত্তর প্রজন্ম আমাদের হতাশ হতে দেবেনা।

ইতিহাস ফারুকী-আনিসুল হক গংদের সঠিকভাবেই মূল্যায়ন করবে বলেই আমার মনে হয়। তেমনি হিন্দিতে অর্ধেক গান গাওয়া ”... খান” সাহেবদের কিংবা শুধুমাত্র হৈ চৈ করে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে যাওয়া ষ্টারদের মূল্যায়নও সঠিকভাবেই হবে।

এটা লালন-হাসন-বিজয় সরকার-শাহ আব্দুল করিম-উকিল মুন্সী-শেফালী ঘোষ-বাউল-বৈষ্ণবদের দেশ!

শুধু মাঝে মাঝে একটা আফসোস কাজ করে - জন্মটা এই সময়েই হলো কেন!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।