আমি ব্যাকটেরিয়া বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৩/০১/২০১২ - ১০:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি ব্যাকটেরিয়া বলছি। আজ কিছু মানুষের কথা বলবো। এই মানুষগুলো আমাকে নিয়ে এত টানাহ্যাঁচড়া করেছে জীবনভর, যেন তাদের আর কাজ ছিল না। আপনারাও ফেসবুকে এত্ত সময় দেন না, যতটা তারা আমাকে ভালবেসে দিয়েছিল। চলুন দেখে আসি তারা কারা-

(১) এন্টনি ভন লিউয়েনহুক
(২৪ অক্টোবর, ১৬৩২ - ২০ আগস্ট, ১৭২৩ )

ইতিহাসঃ

কিছুই বলার নাই। আমাকে (ব্যাকটেরিয়া) যখন কেউ দেখতে পাইত না,মনের আনন্দে বাড়ির উঠানে এক্কাদোক্কা খেলতাম ঠিক তখনই আমাকে খুঁজে বের করেন এই হুক সাহেব। আমাকে দেখার জন্য তিনি প্রায় ২৫ টি অণুবীক্ষণ যন্ত্র বানিয়েছিলেন। চিন্তা করেন, আমার কি রূপটাই না ছিল। সেই আমলে যদি Lux Channel I Superstar কিংবা Pantene U Got The Look টাইপ প্রতিযোগিতা থাকতো, নির্ঘাত প্রথম হইতাম!

(২) লুইস পাস্তুর
(২৭ ডিসেম্বর, ১৮২২ - ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৫)

ইতিহাসঃ

এই লোক আমাকে একদমই দুই চোখে দেখতে পারতো না। আমার কিছু গুন্ডা টাইপ ভাই-বেরাদার (রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া) ছিল। সারাদিন মহল্লায় মারামারি করতো। এই পাস্তুর সাহেবই হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি আমার আমার নামে পুলিশের খাতায় জিডি করেছিলেন (প্রথম রোগের কারণ এবং প্রতিরক্ষা সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন)। রাতের বেলায় মা কি মজা কইরা দুধ দিয়ে হরলিক্স বানায় খাওয়াইত, পাস্তুরাইজেসন করার পর সব গেলো। পাস্তুরিত তরল দুধ খাইয়া একবার আমার কি হইছিল, ওইটা কওন যাইব না।

(৩) স্যার অ্যালেক্সান্ডার ফ্লেমিং
(৬ আগস্ট, ১৮৮১ - ৬ আগস্ট, ১৮৮১)

ইতিহাসঃ
এই সেই পুলিশ অফিসার(!), যিনি আমার নামে জিডি করেছিলেন। তিনি কমান্ডো বাহিনী (পেনিসিলিন) নিয়ে এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমাকে ধরেন এবং ক্রসফায়ার করেন। আমাদের ব্যাকটেরিয়া সমাজে সে মীরজাফর নামে পরিচিত।

(৪) হেনরিখ হারম্যান রবার্ট কচ
(১১ ডিসেম্বর, ১৮৪৩ - ২৭ মে, ১৯১০)

ইতিহাসঃ

এই লোক “কথা কম কাজ বেশি” টাইপ লোক ছিলেন। কিন্তু একবার কাজ শেষ করে ফেললে তিনি অনবরত শুধু কথাই বলতে থাকতেন। তিনি একবার কিছু কথা বলে ব্যাপক বিখ্যাত হয়ে গেলেন। মানুষ কথাগুলো একত্রিত করে নাম দিল “কচের স্বীকার্য”। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, “ভদ্রলোকের(ব্যাকটেরিয়া) জবান এক! আমি যার যে রকম ক্ষতি করি, অন্য কারো সেই ক্ষতি হলে তার জন্য আমিই দায়ী। “

- অন্ত আফ্রাদ


মন্তব্য

মিলু এর ছবি

ব্যাকটেরিয়ার নাম অন্ত আফ্রাদ! একটা ব্যাকটেরিয়ার পক্ষে বাহারি নাম বটে! যাইহোক, সচলে স্বাগতম। লেখার সাথে আবিষ্কারকদের ছবিগুলো দিলে আরো প্রাণবন্ত হত বলে মনে হয়। লিখতে থাক হাতখুলে।

অন্ত আফ্রাদ  এর ছবি

ধন্যবাদ মিলু ভাই... পরবর্তীতে এইরকম কিছু লিখলে অবশ্যই ছবি দেবার চেষ্টা করবো। হাসি

অন্ত আফ্রাদ  এর ছবি

ধন্যবাদ মিলু ভাই... পরবর্তীতে এইরকম কিছু লিখলে অবশ্যই ছবি দেবার চেষ্টা করবো। হাসি

কাজি মামুন এর ছবি

আপনার লেখাটা মজার লেগেছে! তবে শেষ লাইনটি বুঝিনি!

আমি যার যে রকম ক্ষতি করি, অন্য কারো সেই ক্ষতি হলে, তার জন্য আমিই দায়ী

এর মানে কি? কচের স্বীকার্যটাই বা কি?

অন্ত আফ্রাদ  এর ছবি

.. কচের স্বীকার্যটি হল...
“(১) রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অবশ্যই অধিক পরিমাণে রোগটির জন্য দায়ী অণুজীব পাওয়া জাবে,কিন্তু কোন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে সেই অণুজীবটি পাওয়া যাবে না।
(২) রোগের জন্য দায়ী অণুজীবটি অবশ্যই রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে পৃথক করা যাবে এবং ল্যাবে তার বংশবৃদ্ধি করা যাবে।
(৩) ল্যাবের এই অণুজীব থেকে কিছু অণুজীব নিয়ে কোন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হলে অই সুস্থ ব্যক্তিটি রোগাক্রান্ত হতে পারে।
(৪) এই নতুন ভাবে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে পুনরায় অণুজীবটিকে পৃথক যাবে এবং রোগের কারণের জন্য এই নির্দিষ্ট অণুজীবটিকে দায়ী করা যাবে।“
আশা করি ভাইয়া, আপনি শেষ লাইনটির অর্থটি এখন বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি আপনার মজার লেগেছে জানতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।

সজল এর ছবি

মজার স্টাইল। প্রথম লেখা? সচলে স্বাগতম।
কিছু সমালোচনাঃ
১। ইংরেজী শব্দগুলোও বাংলা হরফে লিখতে পারতেন, তাতে পড়ার ফ্লোটা কেটে যেত না।
২। ফ্লেমিং সাহেব ব্যাকটেরিয়া সমাজে মীরজাফর নামে পরিচিত হওয়াটা যুক্তিযুক্ত হলো না। মীরজাফর হচ্ছে "স্বজাতির সাথে বিশ্বাসঘাতক"। ফ্লেমিং সাহেব তো আর যাই হোক ব্যাকটেরিয়া না, নাকি? চোখ টিপি
৩। কচের স্বীকার্যটা আপনার লেখা থেকে বোধগম্য হলো না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্যা রিডার এর ছবি

আরে , সজল যে , অনেক দিন লেখা পাই না ? জলদি লেখা দিন একটা ... হাসি

সজল এর ছবি

ভালো আছেন রিডার? লিখব নিশ্চই, খালি মুডটা এসে নিক হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্যা রিডার এর ছবি

জলদি মুড আসুক , সুভস্য শীঘ্রম । আমি ভাল আছি , আপনি ও ভাল থাকুন হাসি

অন্ত আফ্রাদ  এর ছবি

জী ভাইয়া,এটা আমার প্রথম লেখা। আমাকে সচলে স্বাগত জানানোর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি ‘’ইংরেজি শব্দগুলো’’ বলতে কি বুঝিয়েছেন আমি ঠিক বুঝিনি। আর মীরজাফরের কথাটা নিছক আনন্দ দেবার জন্য বলা হয়েছে,কোন কিছু বোঝাতে নয়। তবুও পরবর্তীতে খেয়াল রাখবো। আর তৃতীয় সমালোচনার উত্তরটা তো এইমাত্রই মামুন ভাইকে দিলাম। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। হাসি

সজল এর ছবি

১। "লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার"
২। আনন্দ দিতে চেয়েছেন সেটাতো বুঝতে পেরেছি। কিন্তু লেখায় একটা উপমা ব্যবহার করেছেন, সেটা ঠিক অর্থ বহন করাটা দরকারী। মীরজাফর এখানে ভুল অর্থে ব্যবহার করেছেন।
৩। বুঝতে পারলাম।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্যা রিডার এর ছবি

সচলে স্বাগতম , লিখতে থাকুন হাসি
চলুক

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লেগেছে। উপরে সজল ভাইয়ের সাথে একমত।

স্বাগতম...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

হিমু এর ছবি

উচ্চারণটা কখ, কচ নয়।

অন্ত আফ্রাদ  এর ছবি

এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।

হিমু এর ছবি

কোনো মতভেদ নেই, বরং মানুষের অজ্ঞতা রয়েছে। কখ একজন জার্মান, কখ শব্দটাও জার্মান (অর্থ বাবুর্চি)। জার্মান উচ্চারণের সাথে পরিচিত নয় এমন লোকজন না জেনে কচ বলতে থাকে। সেটা সমস্যা না।

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

এরকম আরও অনেক বিজ্ঞানীর নামই একেক বইয়ে একেকভাবে দেয়া আছে। শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ে পড়ে একরকম উচ্চারণ, পত্রিকা/ম্যাগাজিনে পড়ে অন্যরকম,টিভি/রেডিওতে শোনে আরেকরকম! এতেই এত বিভ্রান্তির জন্ম নিচ্ছে।

অন্ত আফ্রাদ এর ছবি

ধন্যবাদ মিলু ভাই... পরবর্তীতে এইরকম কিছু লিখলে অবশ্যই ছবি দেবার চেষ্টা করবো। :

@ ..... মামুন ভাইয়া......
.. কচের স্বীকার্যটি হল...
“(১) রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অবশ্যই অধিক পরিমাণে রোগটির জন্য দায়ী অণুজীব পাওয়া জাবে,কিন্তু কোন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে সেই অণুজীবটি পাওয়া যাবে না।
(২) রোগের জন্য দায়ী অণুজীবটি অবশ্যই রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে পৃথক করা যাবে এবং ল্যাবে তার বংশবৃদ্ধি করা যাবে।
(৩) ল্যাবের এই অণুজীব থেকে কিছু অণুজীব নিয়ে কোন সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হলে অই সুস্থ ব্যক্তিটি রোগাক্রান্ত হতে পারে।
(৪) এই নতুন ভাবে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে পুনরায় অণুজীবটিকে পৃথক যাবে এবং রোগের কারণের জন্য এই নির্দিষ্ট অণুজীবটিকে দায়ী করা যাবে।“
আশা করি ভাইয়া, আপনি শেষ লাইনটির অর্থটি এখন বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি আপনার মজার লেগেছে জানতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।

@ সজল ভাই... জী ভাইয়া,এটা আমার প্রথম লেখা। আমাকে সচলে স্বাগত জানানোর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি ‘’ইংরেজি শব্দগুলো’’ বলতে কি বুঝিয়েছেন আমি ঠিক বুঝিনি। আর মীরজাফরের কথাটা নিছক আনন্দ দেবার জন্য বলা হয়েছে,কোন কিছু বোঝাতে নয়। তবুও পরবর্তীতে খেয়াল রাখবো। আর তৃতীয় সমালোচনার উত্তরটা তো এইমাত্রই মামুন ভাইকে দিলাম। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ দ্যা রিডার এবং সপ্নহারাকেও।

লাবণ্যপ্রভা এর ছবি

ফ্লেমিঙের DOB & DOD এক হয়ে গেছে।
লিখা মজারু হাসি

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

হাসি

ধূসর জলছবি এর ছবি

লেখাটা মজার , পড়তে ভাল লেগেছে । হাসি

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

হাসি

সাফি এর ছবি

মজার লাগলো লেখাটা। সচলায়তনে স্বাগতম।

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে... হাসি

আশালতা এর ছবি

ভালো লাগলো। পরেরটা আর একটুখানি গুছিয়ে বিস্তারিত দিলে বেশি ভালো লাগবে মনে হয়।
আর হ্যাঁ, অবশ্যই সচলে স্বাগতম। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

অবশ্যই পরবর্তীতে আমার সে চেষ্টা থাকবে। সবারই ভালো লাগছে জেনে আমারও ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

কল্যাণ এর ছবি

ইয়ে, মানে... খুবি ফাঁকিবাজি মার্কা লেখা

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

ইয়ে, মানে...

মর্ম এর ছবি

লেখার ঢংটা ভাল লাগল। ব্যাকটেরিয়াকে পারসোনালাইজ করতে গিয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছে, ধরে নিচ্ছি সেটা প্রথম লেখার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

পরের লেখায় একেও ছাড়িয়ে যাবেন অবলীলায়. সে শুভকামনা রইল।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আরি। এত পিচ্চি লিখা অ্যাঁ তবু মজার দেঁতো হাসি

ইফতি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।